মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশে দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিনা মূল্যে টিকা দিচ্ছে সরকার। শুরুর প্রায় পাঁচ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা আমদানি করে দেওয়া হয়েছে। এক দশক ধরে দেওয়া হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকা।
জানা গেছে, এক দশক ধরে দেশীয় ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের তৈরি র্যাবিক্স-ভিসি টিকা কিনছে সরকার। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবদেহে প্রয়োগ করা টিকার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, জলাতঙ্কের বর্তমান টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলেও এটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত।
অবশ্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস বলেছে, কোনো দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলে ডব্লিউএইচও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে এই সনদ দেয় না। তাদের এই টিকা বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ আসেনি।
দেশে জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের জন্য ২০১০ সালে ‘জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি’ নেয় সরকার। পরের বছর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে প্রাণিসম্পদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ যুক্ত হয়। সেই থেকে দেশে বিনা মূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে টিকা দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি)। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জুনোটিক ডিজিজ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সূত্র জানায়, কুকুর, বিড়াল, বেজি, বানর, খ্যাঁকশিয়ালসহ বিভিন্ন প্রাণীর কামড়, আঁচড়ের কারণে র্যাবিস ভাইরাসের (জলাতঙ্ক) সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে তিন থেকে চার ডোজ র্যাবিস টিকা দিতে হয়। প্রাণীর আক্রমণে রক্তাক্ত আহতদের অতিরিক্ত হিসেবে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) দেওয়া হয়। এক ভায়াল টিকার দাম স্থানীয় বাজারে ৫০০ টাকা। আরআইজির দাম ১ হাজার টাকা। সারা দেশে উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর চার শতাধিক টিকাকেন্দ্রে প্রাণীর আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের বিনা মূল্যে এই টিকা দেওয়া হয়।
সরকারের হিসাবে, গত বছর কুকুরসহ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে আসে সোয়া ৫ লাখ মানুষ। গত বছর জলাতঙ্কের কারণে মারা যায় ৫৬ জন।
সূত্র জানায়, ২০১২ সালে এক লাখ রোগীকে এআরভি দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে এই টিকা নিতে হয়েছে ছয় লাখের বেশি রোগীকে। স্বাস্থ্যের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে জলাতঙ্কের টিকা দিত অধিদপ্তর। ওপির মাধ্যমে সিডিসি সরাসরি টিকা কিনত। গত জুনে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি) শেষ হলেও পঞ্চম এইচপিএনএসপি বা ওপি অনুমোদন হয়নি। ফলে ওপি না থাকায় সরকারের বিশেষ বরাদ্দে এই টিকা কিনছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমএসডি সোয়া এক লাখ টিকা কেনে। সেই টিকা শেষের পথে। এখন প্রায় তিন লাখ টিকা কেনার প্রক্রিয়া চলছে। সরকার এখন আরআইজি কিনছে না।
শুরুতে দেওয়া হয় বিদেশি টিকা
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচির শুরুতে আমদানি করা রাবিপুর ও ভেরোরাভ টিকা দেওয়া হতো। ভেরোরাভ টিকা ফ্রান্সের সানোফি এসএর এবং রাবিপুর ভারতের চিরন বেহরিং ভ্যাকসিন প্রাইভেট লিমিটেডের তৈরি। এই দুই টিকাই ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড। গত দেড় দশকে দেশে প্রায় ৪০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে রাবিপুর ও ভেরোরাভ টিকা দেওয়া হয় পৌনে ৯ লাখ।
২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ছিলেন অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। জাতীয় টিকাদান-সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটির সাবেক এই সদস্য জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার সময় র্যাবিসের টিকা হিসেবে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের (আইপিএইচ) নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন (এনটিভি) পেটে দেওয়া হতো। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে সেই টিকা প্রয়োগ বন্ধ করে আরও কার্যকর ও নিরাপদ টিস্যু কালচারভিত্তিক ভ্যাকসিন (টিসিভি) প্রয়োগের পরামর্শ দেয় ডব্লিউএইচও।
ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, টিকাগুলো যেন ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড হয়, সে জন্য প্রকিউরমেন্টের স্পেসিফিকেশনে (ক্রয়সংক্রান্ত উপকরণের বিবরণ) বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জলাতঙ্ক নির্মূলের জাতীয় কমিটি তা নির্ধারণ করে। এটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। আমরা সে অনুযায়ী টিকা কিনি। দরপত্রে ইনসেপ্টাও অংশ নিলেও প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকায় তাদের টিকা আমরা নিইনি। কেননা, প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকায় এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০১৫ সাল থেকে ইনসেপ্টার ‘র্যাবিক্স-ভিসি’ টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। তবে সে সময় এই টিকা প্রয়োগের জন্য জাতীয় কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ক্রয় বিবরণ থেকে ‘প্রি-কোয়ালিফিকেশন’ শর্ত তুলে নেওয়া হয়।
ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, ভেরোরাব ২০০৫ সালের জুনে প্রি-কোয়ালিফিকেশনের তালিকায় স্থান পায়। কয়েক বছর ধরে রাবিপুর টিকা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। টিকাটি বর্তমানে চিরোরাভ নামে বিশ্ববাজারে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন বলছে, ডব্লিউএইচওর টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনপ্রক্রিয়া, পরীক্ষাগার, গবেষণা, টিকা প্রস্তুতের সব পর্যায়ের সূক্ষ্ম নিরাপত্তাসহ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো কোম্পানি টিকা তৈরির আগে ডব্লিউএইচওকে জানায়। তারা তখন উৎপাদনপ্রক্রিয়ার সব ধাপ পর্যালোচনা করে। বিশ্বের সব ওষুধ কোম্পানি টিকা তৈরি করে না। বাংলাদেশে যেসব টিকা তৈরি হয়, তা মূলত আমদানি করা তৈরি পণ্য (ফিনিশড প্রোডাক্ট) বোতলজাতকরণের মাধ্যমে। ভারত সবচেয়ে বেশি টিকা উৎপাদন করে।
ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না পাওয়ার কারণ জাতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (এনআরএ) প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকা। অর্থাৎ একটি দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাগারকে প্রথমে এই মানদণ্ডে উন্নীত হতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ন্যাশনাল ড্রাগ কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি (এনডিসিএল) ওষুধের প্রি-কোয়ালিফিকেশন অর্জন করেছে, তবে টিকার জন্য হয়নি। এনআরএ মানদণ্ডে উন্নীত না হলে কোনো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রি-কোয়ালিফিকেশন দেয় না ডব্লিউএইচও।’
সূত্র বলেছে, সরকার এক দশক ধরে র্যাবিক্স-ভিসি টিকা কিনছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত কেনা হয় ওপির মাধ্যমে। বর্তমানে সরকারের বিশেষ বরাদ্দে কিনছে সিএমএসডি। র্যাবিক্স-ভিসি ব্র্যান্ড নামে র্যাবিসের এই টিকা ২০১১ সালের নভেম্বরে দেশের বাজারে আনে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) সূত্র জানায়, ডিজিডিএর অনুমোদন পেতে হলে ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড হওয়ার শর্ত নেই। ইপিআইয়ের টিকাগুলো দেয় জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। তারা প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা সংগ্রহ করে। স্থানীয় টিকা উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, বিদেশ থেকে আমদানিতে ডিজিডিএর অনুমোদন লাগে।
দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধ ও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন এমন একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান টিকা প্রি-কোয়ালিফায়েড নয়, এটি ডিজিডিএ অনুমোদিত। তবে প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকার নিরাপত্তা সর্বোচ্চ।
অবশ্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস বলছে, দেশের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলে ডব্লিউএইচও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে দেয় না। তাদের এই টিকা বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ নেই।
ইনসেপ্টার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশে ওষুধ বা টিকা উৎপাদন ও বাজারজাতের বিষয়টি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনের ওপর নির্ভর করে। প্রি-কোয়ালিফিকেশন ঔষধ প্রশাসনকে আগে নিতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যদি ডব্লিউএইচওর ম্যাচিউরিটি লেভেল-৩ অর্জন করে, তবে অধিদপ্তর যাদের টিকার অনুমোদন দিয়েছে, তাদেরকেও প্রি-কোয়ালিফিকেশনের জন্য বিবেচনা করবে তারা। তিনি বলেন, ‘আমরা গোড়া থেকে ডব্লিউএইচওর নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু বানিয়েছি। ওষুধের জন্য আমাদের প্রি-কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর টিকার জন্য এমএল-৩ অর্জন করলে আমরাও প্রি-কোয়ালিফিকেশনের অনুমোদন পাব। টিকা আমদানির ক্ষেত্রে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাগে, দেশীয় টিকার ক্ষেত্রে লাগে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ডা. মো. হালিমুর রশিদ বলেন, ‘যেকোনো প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকাই ভালো। কিন্তু দরপত্র আহ্বান করা হলে সেসব প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেয় না। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের রায় আছে, যে টিকা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়, সেই টিকা আমদানি করা যাবে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইনসেপ্টার টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন নেই। টিকাটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত। ইউনিসেফ প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা কেনার শর্ত দিয়েছিল। তবে শর্ত ছাড়াই এই টিকা অনেক বছর ধরে কেনা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। এই টিকা পরীক্ষার জন্য নমুনা বিদেশে পাঠানো হয়েছে, এমন একটি চিঠি তারা আমাদের দিয়েছে।’
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিনা মূল্যে টিকা দিচ্ছে সরকার। শুরুর প্রায় পাঁচ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা আমদানি করে দেওয়া হয়েছে। এক দশক ধরে দেওয়া হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকা।
জানা গেছে, এক দশক ধরে দেশীয় ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের তৈরি র্যাবিক্স-ভিসি টিকা কিনছে সরকার। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবদেহে প্রয়োগ করা টিকার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, জলাতঙ্কের বর্তমান টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলেও এটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত।
অবশ্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস বলেছে, কোনো দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলে ডব্লিউএইচও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে এই সনদ দেয় না। তাদের এই টিকা বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ আসেনি।
দেশে জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের জন্য ২০১০ সালে ‘জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি’ নেয় সরকার। পরের বছর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে প্রাণিসম্পদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ যুক্ত হয়। সেই থেকে দেশে বিনা মূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে টিকা দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি)। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জুনোটিক ডিজিজ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সূত্র জানায়, কুকুর, বিড়াল, বেজি, বানর, খ্যাঁকশিয়ালসহ বিভিন্ন প্রাণীর কামড়, আঁচড়ের কারণে র্যাবিস ভাইরাসের (জলাতঙ্ক) সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে তিন থেকে চার ডোজ র্যাবিস টিকা দিতে হয়। প্রাণীর আক্রমণে রক্তাক্ত আহতদের অতিরিক্ত হিসেবে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) দেওয়া হয়। এক ভায়াল টিকার দাম স্থানীয় বাজারে ৫০০ টাকা। আরআইজির দাম ১ হাজার টাকা। সারা দেশে উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর চার শতাধিক টিকাকেন্দ্রে প্রাণীর আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের বিনা মূল্যে এই টিকা দেওয়া হয়।
সরকারের হিসাবে, গত বছর কুকুরসহ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে আসে সোয়া ৫ লাখ মানুষ। গত বছর জলাতঙ্কের কারণে মারা যায় ৫৬ জন।
সূত্র জানায়, ২০১২ সালে এক লাখ রোগীকে এআরভি দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে এই টিকা নিতে হয়েছে ছয় লাখের বেশি রোগীকে। স্বাস্থ্যের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে জলাতঙ্কের টিকা দিত অধিদপ্তর। ওপির মাধ্যমে সিডিসি সরাসরি টিকা কিনত। গত জুনে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি) শেষ হলেও পঞ্চম এইচপিএনএসপি বা ওপি অনুমোদন হয়নি। ফলে ওপি না থাকায় সরকারের বিশেষ বরাদ্দে এই টিকা কিনছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমএসডি সোয়া এক লাখ টিকা কেনে। সেই টিকা শেষের পথে। এখন প্রায় তিন লাখ টিকা কেনার প্রক্রিয়া চলছে। সরকার এখন আরআইজি কিনছে না।
শুরুতে দেওয়া হয় বিদেশি টিকা
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচির শুরুতে আমদানি করা রাবিপুর ও ভেরোরাভ টিকা দেওয়া হতো। ভেরোরাভ টিকা ফ্রান্সের সানোফি এসএর এবং রাবিপুর ভারতের চিরন বেহরিং ভ্যাকসিন প্রাইভেট লিমিটেডের তৈরি। এই দুই টিকাই ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড। গত দেড় দশকে দেশে প্রায় ৪০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে রাবিপুর ও ভেরোরাভ টিকা দেওয়া হয় পৌনে ৯ লাখ।
২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ছিলেন অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। জাতীয় টিকাদান-সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটির সাবেক এই সদস্য জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার সময় র্যাবিসের টিকা হিসেবে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের (আইপিএইচ) নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন (এনটিভি) পেটে দেওয়া হতো। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে সেই টিকা প্রয়োগ বন্ধ করে আরও কার্যকর ও নিরাপদ টিস্যু কালচারভিত্তিক ভ্যাকসিন (টিসিভি) প্রয়োগের পরামর্শ দেয় ডব্লিউএইচও।
ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, টিকাগুলো যেন ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড হয়, সে জন্য প্রকিউরমেন্টের স্পেসিফিকেশনে (ক্রয়সংক্রান্ত উপকরণের বিবরণ) বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জলাতঙ্ক নির্মূলের জাতীয় কমিটি তা নির্ধারণ করে। এটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। আমরা সে অনুযায়ী টিকা কিনি। দরপত্রে ইনসেপ্টাও অংশ নিলেও প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকায় তাদের টিকা আমরা নিইনি। কেননা, প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকায় এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০১৫ সাল থেকে ইনসেপ্টার ‘র্যাবিক্স-ভিসি’ টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। তবে সে সময় এই টিকা প্রয়োগের জন্য জাতীয় কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ক্রয় বিবরণ থেকে ‘প্রি-কোয়ালিফিকেশন’ শর্ত তুলে নেওয়া হয়।
ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, ভেরোরাব ২০০৫ সালের জুনে প্রি-কোয়ালিফিকেশনের তালিকায় স্থান পায়। কয়েক বছর ধরে রাবিপুর টিকা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। টিকাটি বর্তমানে চিরোরাভ নামে বিশ্ববাজারে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন বলছে, ডব্লিউএইচওর টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনপ্রক্রিয়া, পরীক্ষাগার, গবেষণা, টিকা প্রস্তুতের সব পর্যায়ের সূক্ষ্ম নিরাপত্তাসহ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো কোম্পানি টিকা তৈরির আগে ডব্লিউএইচওকে জানায়। তারা তখন উৎপাদনপ্রক্রিয়ার সব ধাপ পর্যালোচনা করে। বিশ্বের সব ওষুধ কোম্পানি টিকা তৈরি করে না। বাংলাদেশে যেসব টিকা তৈরি হয়, তা মূলত আমদানি করা তৈরি পণ্য (ফিনিশড প্রোডাক্ট) বোতলজাতকরণের মাধ্যমে। ভারত সবচেয়ে বেশি টিকা উৎপাদন করে।
ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না পাওয়ার কারণ জাতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (এনআরএ) প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকা। অর্থাৎ একটি দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাগারকে প্রথমে এই মানদণ্ডে উন্নীত হতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ন্যাশনাল ড্রাগ কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি (এনডিসিএল) ওষুধের প্রি-কোয়ালিফিকেশন অর্জন করেছে, তবে টিকার জন্য হয়নি। এনআরএ মানদণ্ডে উন্নীত না হলে কোনো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রি-কোয়ালিফিকেশন দেয় না ডব্লিউএইচও।’
সূত্র বলেছে, সরকার এক দশক ধরে র্যাবিক্স-ভিসি টিকা কিনছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত কেনা হয় ওপির মাধ্যমে। বর্তমানে সরকারের বিশেষ বরাদ্দে কিনছে সিএমএসডি। র্যাবিক্স-ভিসি ব্র্যান্ড নামে র্যাবিসের এই টিকা ২০১১ সালের নভেম্বরে দেশের বাজারে আনে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) সূত্র জানায়, ডিজিডিএর অনুমোদন পেতে হলে ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড হওয়ার শর্ত নেই। ইপিআইয়ের টিকাগুলো দেয় জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। তারা প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা সংগ্রহ করে। স্থানীয় টিকা উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, বিদেশ থেকে আমদানিতে ডিজিডিএর অনুমোদন লাগে।
দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধ ও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন এমন একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান টিকা প্রি-কোয়ালিফায়েড নয়, এটি ডিজিডিএ অনুমোদিত। তবে প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকার নিরাপত্তা সর্বোচ্চ।
অবশ্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস বলছে, দেশের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলে ডব্লিউএইচও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে দেয় না। তাদের এই টিকা বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ নেই।
ইনসেপ্টার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশে ওষুধ বা টিকা উৎপাদন ও বাজারজাতের বিষয়টি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনের ওপর নির্ভর করে। প্রি-কোয়ালিফিকেশন ঔষধ প্রশাসনকে আগে নিতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যদি ডব্লিউএইচওর ম্যাচিউরিটি লেভেল-৩ অর্জন করে, তবে অধিদপ্তর যাদের টিকার অনুমোদন দিয়েছে, তাদেরকেও প্রি-কোয়ালিফিকেশনের জন্য বিবেচনা করবে তারা। তিনি বলেন, ‘আমরা গোড়া থেকে ডব্লিউএইচওর নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু বানিয়েছি। ওষুধের জন্য আমাদের প্রি-কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর টিকার জন্য এমএল-৩ অর্জন করলে আমরাও প্রি-কোয়ালিফিকেশনের অনুমোদন পাব। টিকা আমদানির ক্ষেত্রে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাগে, দেশীয় টিকার ক্ষেত্রে লাগে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ডা. মো. হালিমুর রশিদ বলেন, ‘যেকোনো প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকাই ভালো। কিন্তু দরপত্র আহ্বান করা হলে সেসব প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেয় না। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের রায় আছে, যে টিকা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়, সেই টিকা আমদানি করা যাবে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইনসেপ্টার টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন নেই। টিকাটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত। ইউনিসেফ প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা কেনার শর্ত দিয়েছিল। তবে শর্ত ছাড়াই এই টিকা অনেক বছর ধরে কেনা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। এই টিকা পরীক্ষার জন্য নমুনা বিদেশে পাঠানো হয়েছে, এমন একটি চিঠি তারা আমাদের দিয়েছে।’
আরও খবর পড়ুন:
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশে দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিনা মূল্যে টিকা দিচ্ছে সরকার। শুরুর প্রায় পাঁচ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা আমদানি করে দেওয়া হয়েছে। এক দশক ধরে দেওয়া হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকা।
জানা গেছে, এক দশক ধরে দেশীয় ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের তৈরি র্যাবিক্স-ভিসি টিকা কিনছে সরকার। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবদেহে প্রয়োগ করা টিকার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, জলাতঙ্কের বর্তমান টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলেও এটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত।
অবশ্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস বলেছে, কোনো দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলে ডব্লিউএইচও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে এই সনদ দেয় না। তাদের এই টিকা বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ আসেনি।
দেশে জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের জন্য ২০১০ সালে ‘জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি’ নেয় সরকার। পরের বছর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে প্রাণিসম্পদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ যুক্ত হয়। সেই থেকে দেশে বিনা মূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে টিকা দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি)। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জুনোটিক ডিজিজ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সূত্র জানায়, কুকুর, বিড়াল, বেজি, বানর, খ্যাঁকশিয়ালসহ বিভিন্ন প্রাণীর কামড়, আঁচড়ের কারণে র্যাবিস ভাইরাসের (জলাতঙ্ক) সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে তিন থেকে চার ডোজ র্যাবিস টিকা দিতে হয়। প্রাণীর আক্রমণে রক্তাক্ত আহতদের অতিরিক্ত হিসেবে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) দেওয়া হয়। এক ভায়াল টিকার দাম স্থানীয় বাজারে ৫০০ টাকা। আরআইজির দাম ১ হাজার টাকা। সারা দেশে উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর চার শতাধিক টিকাকেন্দ্রে প্রাণীর আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের বিনা মূল্যে এই টিকা দেওয়া হয়।
সরকারের হিসাবে, গত বছর কুকুরসহ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে আসে সোয়া ৫ লাখ মানুষ। গত বছর জলাতঙ্কের কারণে মারা যায় ৫৬ জন।
সূত্র জানায়, ২০১২ সালে এক লাখ রোগীকে এআরভি দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে এই টিকা নিতে হয়েছে ছয় লাখের বেশি রোগীকে। স্বাস্থ্যের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে জলাতঙ্কের টিকা দিত অধিদপ্তর। ওপির মাধ্যমে সিডিসি সরাসরি টিকা কিনত। গত জুনে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি) শেষ হলেও পঞ্চম এইচপিএনএসপি বা ওপি অনুমোদন হয়নি। ফলে ওপি না থাকায় সরকারের বিশেষ বরাদ্দে এই টিকা কিনছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমএসডি সোয়া এক লাখ টিকা কেনে। সেই টিকা শেষের পথে। এখন প্রায় তিন লাখ টিকা কেনার প্রক্রিয়া চলছে। সরকার এখন আরআইজি কিনছে না।
শুরুতে দেওয়া হয় বিদেশি টিকা
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচির শুরুতে আমদানি করা রাবিপুর ও ভেরোরাভ টিকা দেওয়া হতো। ভেরোরাভ টিকা ফ্রান্সের সানোফি এসএর এবং রাবিপুর ভারতের চিরন বেহরিং ভ্যাকসিন প্রাইভেট লিমিটেডের তৈরি। এই দুই টিকাই ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড। গত দেড় দশকে দেশে প্রায় ৪০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে রাবিপুর ও ভেরোরাভ টিকা দেওয়া হয় পৌনে ৯ লাখ।
২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ছিলেন অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। জাতীয় টিকাদান-সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটির সাবেক এই সদস্য জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার সময় র্যাবিসের টিকা হিসেবে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের (আইপিএইচ) নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন (এনটিভি) পেটে দেওয়া হতো। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে সেই টিকা প্রয়োগ বন্ধ করে আরও কার্যকর ও নিরাপদ টিস্যু কালচারভিত্তিক ভ্যাকসিন (টিসিভি) প্রয়োগের পরামর্শ দেয় ডব্লিউএইচও।
ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, টিকাগুলো যেন ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড হয়, সে জন্য প্রকিউরমেন্টের স্পেসিফিকেশনে (ক্রয়সংক্রান্ত উপকরণের বিবরণ) বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জলাতঙ্ক নির্মূলের জাতীয় কমিটি তা নির্ধারণ করে। এটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। আমরা সে অনুযায়ী টিকা কিনি। দরপত্রে ইনসেপ্টাও অংশ নিলেও প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকায় তাদের টিকা আমরা নিইনি। কেননা, প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকায় এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০১৫ সাল থেকে ইনসেপ্টার ‘র্যাবিক্স-ভিসি’ টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। তবে সে সময় এই টিকা প্রয়োগের জন্য জাতীয় কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ক্রয় বিবরণ থেকে ‘প্রি-কোয়ালিফিকেশন’ শর্ত তুলে নেওয়া হয়।
ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, ভেরোরাব ২০০৫ সালের জুনে প্রি-কোয়ালিফিকেশনের তালিকায় স্থান পায়। কয়েক বছর ধরে রাবিপুর টিকা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। টিকাটি বর্তমানে চিরোরাভ নামে বিশ্ববাজারে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন বলছে, ডব্লিউএইচওর টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনপ্রক্রিয়া, পরীক্ষাগার, গবেষণা, টিকা প্রস্তুতের সব পর্যায়ের সূক্ষ্ম নিরাপত্তাসহ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো কোম্পানি টিকা তৈরির আগে ডব্লিউএইচওকে জানায়। তারা তখন উৎপাদনপ্রক্রিয়ার সব ধাপ পর্যালোচনা করে। বিশ্বের সব ওষুধ কোম্পানি টিকা তৈরি করে না। বাংলাদেশে যেসব টিকা তৈরি হয়, তা মূলত আমদানি করা তৈরি পণ্য (ফিনিশড প্রোডাক্ট) বোতলজাতকরণের মাধ্যমে। ভারত সবচেয়ে বেশি টিকা উৎপাদন করে।
ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না পাওয়ার কারণ জাতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (এনআরএ) প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকা। অর্থাৎ একটি দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাগারকে প্রথমে এই মানদণ্ডে উন্নীত হতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ন্যাশনাল ড্রাগ কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি (এনডিসিএল) ওষুধের প্রি-কোয়ালিফিকেশন অর্জন করেছে, তবে টিকার জন্য হয়নি। এনআরএ মানদণ্ডে উন্নীত না হলে কোনো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রি-কোয়ালিফিকেশন দেয় না ডব্লিউএইচও।’
সূত্র বলেছে, সরকার এক দশক ধরে র্যাবিক্স-ভিসি টিকা কিনছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত কেনা হয় ওপির মাধ্যমে। বর্তমানে সরকারের বিশেষ বরাদ্দে কিনছে সিএমএসডি। র্যাবিক্স-ভিসি ব্র্যান্ড নামে র্যাবিসের এই টিকা ২০১১ সালের নভেম্বরে দেশের বাজারে আনে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) সূত্র জানায়, ডিজিডিএর অনুমোদন পেতে হলে ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড হওয়ার শর্ত নেই। ইপিআইয়ের টিকাগুলো দেয় জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। তারা প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা সংগ্রহ করে। স্থানীয় টিকা উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, বিদেশ থেকে আমদানিতে ডিজিডিএর অনুমোদন লাগে।
দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধ ও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন এমন একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান টিকা প্রি-কোয়ালিফায়েড নয়, এটি ডিজিডিএ অনুমোদিত। তবে প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকার নিরাপত্তা সর্বোচ্চ।
অবশ্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস বলছে, দেশের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলে ডব্লিউএইচও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে দেয় না। তাদের এই টিকা বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ নেই।
ইনসেপ্টার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশে ওষুধ বা টিকা উৎপাদন ও বাজারজাতের বিষয়টি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনের ওপর নির্ভর করে। প্রি-কোয়ালিফিকেশন ঔষধ প্রশাসনকে আগে নিতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যদি ডব্লিউএইচওর ম্যাচিউরিটি লেভেল-৩ অর্জন করে, তবে অধিদপ্তর যাদের টিকার অনুমোদন দিয়েছে, তাদেরকেও প্রি-কোয়ালিফিকেশনের জন্য বিবেচনা করবে তারা। তিনি বলেন, ‘আমরা গোড়া থেকে ডব্লিউএইচওর নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু বানিয়েছি। ওষুধের জন্য আমাদের প্রি-কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর টিকার জন্য এমএল-৩ অর্জন করলে আমরাও প্রি-কোয়ালিফিকেশনের অনুমোদন পাব। টিকা আমদানির ক্ষেত্রে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাগে, দেশীয় টিকার ক্ষেত্রে লাগে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ডা. মো. হালিমুর রশিদ বলেন, ‘যেকোনো প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকাই ভালো। কিন্তু দরপত্র আহ্বান করা হলে সেসব প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেয় না। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের রায় আছে, যে টিকা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়, সেই টিকা আমদানি করা যাবে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইনসেপ্টার টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন নেই। টিকাটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত। ইউনিসেফ প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা কেনার শর্ত দিয়েছিল। তবে শর্ত ছাড়াই এই টিকা অনেক বছর ধরে কেনা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। এই টিকা পরীক্ষার জন্য নমুনা বিদেশে পাঠানো হয়েছে, এমন একটি চিঠি তারা আমাদের দিয়েছে।’
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিনা মূল্যে টিকা দিচ্ছে সরকার। শুরুর প্রায় পাঁচ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা আমদানি করে দেওয়া হয়েছে। এক দশক ধরে দেওয়া হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকা।
জানা গেছে, এক দশক ধরে দেশীয় ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের তৈরি র্যাবিক্স-ভিসি টিকা কিনছে সরকার। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবদেহে প্রয়োগ করা টিকার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, জলাতঙ্কের বর্তমান টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলেও এটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত।
অবশ্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস বলেছে, কোনো দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলে ডব্লিউএইচও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে এই সনদ দেয় না। তাদের এই টিকা বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ আসেনি।
দেশে জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের জন্য ২০১০ সালে ‘জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি’ নেয় সরকার। পরের বছর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে প্রাণিসম্পদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ যুক্ত হয়। সেই থেকে দেশে বিনা মূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে টিকা দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি)। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে জলাতঙ্কমুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জুনোটিক ডিজিজ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সূত্র জানায়, কুকুর, বিড়াল, বেজি, বানর, খ্যাঁকশিয়ালসহ বিভিন্ন প্রাণীর কামড়, আঁচড়ের কারণে র্যাবিস ভাইরাসের (জলাতঙ্ক) সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে তিন থেকে চার ডোজ র্যাবিস টিকা দিতে হয়। প্রাণীর আক্রমণে রক্তাক্ত আহতদের অতিরিক্ত হিসেবে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) দেওয়া হয়। এক ভায়াল টিকার দাম স্থানীয় বাজারে ৫০০ টাকা। আরআইজির দাম ১ হাজার টাকা। সারা দেশে উপজেলা, জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর চার শতাধিক টিকাকেন্দ্রে প্রাণীর আক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের বিনা মূল্যে এই টিকা দেওয়া হয়।
সরকারের হিসাবে, গত বছর কুকুরসহ প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়ে চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে আসে সোয়া ৫ লাখ মানুষ। গত বছর জলাতঙ্কের কারণে মারা যায় ৫৬ জন।
সূত্র জানায়, ২০১২ সালে এক লাখ রোগীকে এআরভি দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে এই টিকা নিতে হয়েছে ছয় লাখের বেশি রোগীকে। স্বাস্থ্যের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে জলাতঙ্কের টিকা দিত অধিদপ্তর। ওপির মাধ্যমে সিডিসি সরাসরি টিকা কিনত। গত জুনে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি) শেষ হলেও পঞ্চম এইচপিএনএসপি বা ওপি অনুমোদন হয়নি। ফলে ওপি না থাকায় সরকারের বিশেষ বরাদ্দে এই টিকা কিনছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি)। গত ফেব্রুয়ারিতে সিএমএসডি সোয়া এক লাখ টিকা কেনে। সেই টিকা শেষের পথে। এখন প্রায় তিন লাখ টিকা কেনার প্রক্রিয়া চলছে। সরকার এখন আরআইজি কিনছে না।
শুরুতে দেওয়া হয় বিদেশি টিকা
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচির শুরুতে আমদানি করা রাবিপুর ও ভেরোরাভ টিকা দেওয়া হতো। ভেরোরাভ টিকা ফ্রান্সের সানোফি এসএর এবং রাবিপুর ভারতের চিরন বেহরিং ভ্যাকসিন প্রাইভেট লিমিটেডের তৈরি। এই দুই টিকাই ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড। গত দেড় দশকে দেশে প্রায় ৪০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে রাবিপুর ও ভেরোরাভ টিকা দেওয়া হয় পৌনে ৯ লাখ।
২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ছিলেন অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। জাতীয় টিকাদান-সংক্রান্ত কারিগরি পরামর্শক কমিটির সাবেক এই সদস্য জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার সময় র্যাবিসের টিকা হিসেবে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের (আইপিএইচ) নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন (এনটিভি) পেটে দেওয়া হতো। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে সেই টিকা প্রয়োগ বন্ধ করে আরও কার্যকর ও নিরাপদ টিস্যু কালচারভিত্তিক ভ্যাকসিন (টিসিভি) প্রয়োগের পরামর্শ দেয় ডব্লিউএইচও।
ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, টিকাগুলো যেন ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড হয়, সে জন্য প্রকিউরমেন্টের স্পেসিফিকেশনে (ক্রয়সংক্রান্ত উপকরণের বিবরণ) বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জলাতঙ্ক নির্মূলের জাতীয় কমিটি তা নির্ধারণ করে। এটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। আমরা সে অনুযায়ী টিকা কিনি। দরপত্রে ইনসেপ্টাও অংশ নিলেও প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকায় তাদের টিকা আমরা নিইনি। কেননা, প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকায় এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০১৫ সাল থেকে ইনসেপ্টার ‘র্যাবিক্স-ভিসি’ টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। তবে সে সময় এই টিকা প্রয়োগের জন্য জাতীয় কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ক্রয় বিবরণ থেকে ‘প্রি-কোয়ালিফিকেশন’ শর্ত তুলে নেওয়া হয়।
ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, ভেরোরাব ২০০৫ সালের জুনে প্রি-কোয়ালিফিকেশনের তালিকায় স্থান পায়। কয়েক বছর ধরে রাবিপুর টিকা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। টিকাটি বর্তমানে চিরোরাভ নামে বিশ্ববাজারে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন বলছে, ডব্লিউএইচওর টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনপ্রক্রিয়া, পরীক্ষাগার, গবেষণা, টিকা প্রস্তুতের সব পর্যায়ের সূক্ষ্ম নিরাপত্তাসহ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো কোম্পানি টিকা তৈরির আগে ডব্লিউএইচওকে জানায়। তারা তখন উৎপাদনপ্রক্রিয়ার সব ধাপ পর্যালোচনা করে। বিশ্বের সব ওষুধ কোম্পানি টিকা তৈরি করে না। বাংলাদেশে যেসব টিকা তৈরি হয়, তা মূলত আমদানি করা তৈরি পণ্য (ফিনিশড প্রোডাক্ট) বোতলজাতকরণের মাধ্যমে। ভারত সবচেয়ে বেশি টিকা উৎপাদন করে।
ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না পাওয়ার কারণ জাতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (এনআরএ) প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকা। অর্থাৎ একটি দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাগারকে প্রথমে এই মানদণ্ডে উন্নীত হতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ন্যাশনাল ড্রাগ কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি (এনডিসিএল) ওষুধের প্রি-কোয়ালিফিকেশন অর্জন করেছে, তবে টিকার জন্য হয়নি। এনআরএ মানদণ্ডে উন্নীত না হলে কোনো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রি-কোয়ালিফিকেশন দেয় না ডব্লিউএইচও।’
সূত্র বলেছে, সরকার এক দশক ধরে র্যাবিক্স-ভিসি টিকা কিনছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত কেনা হয় ওপির মাধ্যমে। বর্তমানে সরকারের বিশেষ বরাদ্দে কিনছে সিএমএসডি। র্যাবিক্স-ভিসি ব্র্যান্ড নামে র্যাবিসের এই টিকা ২০১১ সালের নভেম্বরে দেশের বাজারে আনে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) সূত্র জানায়, ডিজিডিএর অনুমোদন পেতে হলে ডব্লিউএইচওর প্রি-কোয়ালিফায়েড হওয়ার শর্ত নেই। ইপিআইয়ের টিকাগুলো দেয় জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। তারা প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা সংগ্রহ করে। স্থানীয় টিকা উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, বিদেশ থেকে আমদানিতে ডিজিডিএর অনুমোদন লাগে।
দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধ ও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন এমন একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান টিকা প্রি-কোয়ালিফায়েড নয়, এটি ডিজিডিএ অনুমোদিত। তবে প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকার নিরাপত্তা সর্বোচ্চ।
অবশ্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস বলছে, দেশের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন না থাকলে ডব্লিউএইচও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে দেয় না। তাদের এই টিকা বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ নেই।
ইনসেপ্টার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশে ওষুধ বা টিকা উৎপাদন ও বাজারজাতের বিষয়টি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনের ওপর নির্ভর করে। প্রি-কোয়ালিফিকেশন ঔষধ প্রশাসনকে আগে নিতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যদি ডব্লিউএইচওর ম্যাচিউরিটি লেভেল-৩ অর্জন করে, তবে অধিদপ্তর যাদের টিকার অনুমোদন দিয়েছে, তাদেরকেও প্রি-কোয়ালিফিকেশনের জন্য বিবেচনা করবে তারা। তিনি বলেন, ‘আমরা গোড়া থেকে ডব্লিউএইচওর নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু বানিয়েছি। ওষুধের জন্য আমাদের প্রি-কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর টিকার জন্য এমএল-৩ অর্জন করলে আমরাও প্রি-কোয়ালিফিকেশনের অনুমোদন পাব। টিকা আমদানির ক্ষেত্রে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাগে, দেশীয় টিকার ক্ষেত্রে লাগে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) ডা. মো. হালিমুর রশিদ বলেন, ‘যেকোনো প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকাই ভালো। কিন্তু দরপত্র আহ্বান করা হলে সেসব প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেয় না। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের রায় আছে, যে টিকা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়, সেই টিকা আমদানি করা যাবে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইনসেপ্টার টিকার প্রি-কোয়ালিফিকেশন নেই। টিকাটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত। ইউনিসেফ প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা কেনার শর্ত দিয়েছিল। তবে শর্ত ছাড়াই এই টিকা অনেক বছর ধরে কেনা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। এই টিকা পরীক্ষার জন্য নমুনা বিদেশে পাঠানো হয়েছে, এমন একটি চিঠি তারা আমাদের দিয়েছে।’
আরও খবর পড়ুন:

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত...
৪ ঘণ্টা আগে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।
আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।
আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।
আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।
আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।
আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।
আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।
আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।
আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

দেশে দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিনা মূল্যে টিকা দিচ্ছে সরকার। শুরুর প্রায় পাঁচ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা আমদানি করে দেওয়া হয়েছে। এক দশক ধরে দেওয়া হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকা।
১৮ মে ২০২৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত...
৪ ঘণ্টা আগে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।
এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।
আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।
এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।
আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

দেশে দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিনা মূল্যে টিকা দিচ্ছে সরকার। শুরুর প্রায় পাঁচ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা আমদানি করে দেওয়া হয়েছে। এক দশক ধরে দেওয়া হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকা।
১৮ মে ২০২৫
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
২ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত...
৪ ঘণ্টা আগে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।
লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’
বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’
জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।
লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’
বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’
জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

দেশে দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিনা মূল্যে টিকা দিচ্ছে সরকার। শুরুর প্রায় পাঁচ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা আমদানি করে দেওয়া হয়েছে। এক দশক ধরে দেওয়া হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকা।
১৮ মে ২০২৫
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।
তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।
তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

দেশে দেড় দশক ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিনা মূল্যে টিকা দিচ্ছে সরকার। শুরুর প্রায় পাঁচ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রি-কোয়ালিফায়েড টিকা আমদানি করে দেওয়া হয়েছে। এক দশক ধরে দেওয়া হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকা।
১৮ মে ২০২৫
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত...
৪ ঘণ্টা আগে