আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায় ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন করে সমুদ্রপথ বেছে নিয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত নতুন মহাসড়ক প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। এই মহাসড়ক মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি-মডাল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মধ্যে সমুদ্রপথে একটি বিকল্প সংযোগ তৈরি হবে।
ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের (এনএইচআইডিসিএল) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা এই প্রকল্পকে ‘জবাব’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গত মার্চে বেইজিং সফরকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত ‘ভূবেষ্টিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, এই অঞ্চলের জন্য ঢাকা ‘মহাসাগরের (প্রবেশের) একমাত্র অভিভাবক।’
শিলংয়ের কাছে মাওলিনখুং থেকে শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত এনএইচ-৬ বরাবর ১৬৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের মহাসড়কটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এনএইচআইডিসিএল এটি বাস্তবায়ন করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মিয়ানমারে কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে হচ্ছে। এটি কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই সিত্তে বন্দর কালাদান নদীর মাধ্যমে মিয়ানমারের পালেতওয়া এবং সেখান থেকে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুইয়ের সঙ্গে যুক্ত।
এনএইচআইডিসিএল-এর কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনএইচআইডিসিএল এই প্রকল্পটি জোরিনপুই থেকে মিজোরামের লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এটি কেবল উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর নয়, পাহাড়ি অঞ্চলেরও এমন প্রকল্প প্রথম। শিলং-শিলচর গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিলচর হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর এবং আসামের বরাক উপত্যকার সংযোগস্থল। ফলে এটি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি প্রধান সংযোগকারী পথ হয়ে উঠবে এবং ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির জন্য এই অঞ্চলকে প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে (ওডিশার) বিশাখাপত্তনম এবং (পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে। এরপর এই উচ্চগতির করিডর সড়কপথে পণ্য পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে।’
বর্তমানে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোগাযোগের একমাত্র পথ শিলিগুড়ি করিডর, যাকে চিকেন’স নেক নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশ পথ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং এই অঞ্চলে জলপথের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। আশা করা হচ্ছে, শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই সংযোগটি পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।
গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে মেঘালয়ে ১৪৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং আসামে ২২ কিলোমিটার। চালু হলে এই নতুন পথটি ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা করবে।
এনএইচআইডিসিএল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই নতুন মহাসড়কটি শিলিগুড়ি করিডরের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অন্যতম চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প হতে চলেছে। কারণ এখানকার ভূখণ্ড খুবই কঠিন এবং বিদ্যমান রাস্তার অবস্থাও ভালো নয়।’
শিলং-শিলচর প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) একটি রূপ হাইব্রিড অ্যানুইটি মোডে (এইচএএম) বাস্তবায়িত হবে। এতে ১৯টি বড় সেতু, ১৫৩টি ছোট সেতু, ৩২৬টি কালভার্ট, ২২টি আন্ডারপাস, ২৬টি ওভারপাস, আটটি সীমিত উচ্চতার সাবওয়ে এবং ৩৪টি ভায়াডাক্ট থাকবে।
এর আগে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত তিনটি চলমান প্রকল্প থেমে গেছে এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের জরিপ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা।
এসব প্রকল্পের আকার প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি বলে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যমটি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে, নয়াদিল্লি এই পরিস্থিতিতে তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে এবং উত্তর ভারতে রেল অবকাঠামো জোরদার করার পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে বিকল্প সংযোগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। সূত্র আরও জানায়, ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির সংযোগ পরিকল্পনা বিবেচনাধীন।
স্থগিত হওয়া প্রকল্পগুলো ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর (সেভেন সিস্টার্স) জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই রাজ্যগুলোর সংযোগ স্থাপিত হলে সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডরের (চিকেন’স নেক) ওপর নির্ভরতা কমতো। এই করিডরটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে আমরা বাংলাদেশে নির্মাণ সামগ্রী বা অন্য কোনো জিনিস সরবরাহ করছি না। প্রতিবেশী দেশটির মাধ্যমে সংযোগকারী রুটের জন্য প্রকল্প তহবিলও স্থগিত রাখা হয়েছে। সেখানে প্রথমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসা প্রয়োজন। তবে ভারতের অংশে নির্মাণকাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।’
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায় ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন করে সমুদ্রপথ বেছে নিয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত নতুন মহাসড়ক প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। এই মহাসড়ক মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি-মডাল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মধ্যে সমুদ্রপথে একটি বিকল্প সংযোগ তৈরি হবে।
ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের (এনএইচআইডিসিএল) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা এই প্রকল্পকে ‘জবাব’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গত মার্চে বেইজিং সফরকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত ‘ভূবেষ্টিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, এই অঞ্চলের জন্য ঢাকা ‘মহাসাগরের (প্রবেশের) একমাত্র অভিভাবক।’
শিলংয়ের কাছে মাওলিনখুং থেকে শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত এনএইচ-৬ বরাবর ১৬৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের মহাসড়কটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এনএইচআইডিসিএল এটি বাস্তবায়ন করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মিয়ানমারে কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে হচ্ছে। এটি কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই সিত্তে বন্দর কালাদান নদীর মাধ্যমে মিয়ানমারের পালেতওয়া এবং সেখান থেকে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুইয়ের সঙ্গে যুক্ত।
এনএইচআইডিসিএল-এর কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনএইচআইডিসিএল এই প্রকল্পটি জোরিনপুই থেকে মিজোরামের লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এটি কেবল উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর নয়, পাহাড়ি অঞ্চলেরও এমন প্রকল্প প্রথম। শিলং-শিলচর গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিলচর হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর এবং আসামের বরাক উপত্যকার সংযোগস্থল। ফলে এটি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি প্রধান সংযোগকারী পথ হয়ে উঠবে এবং ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির জন্য এই অঞ্চলকে প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে (ওডিশার) বিশাখাপত্তনম এবং (পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে। এরপর এই উচ্চগতির করিডর সড়কপথে পণ্য পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে।’
বর্তমানে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোগাযোগের একমাত্র পথ শিলিগুড়ি করিডর, যাকে চিকেন’স নেক নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশ পথ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং এই অঞ্চলে জলপথের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। আশা করা হচ্ছে, শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই সংযোগটি পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।
গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে মেঘালয়ে ১৪৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং আসামে ২২ কিলোমিটার। চালু হলে এই নতুন পথটি ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা করবে।
এনএইচআইডিসিএল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই নতুন মহাসড়কটি শিলিগুড়ি করিডরের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অন্যতম চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প হতে চলেছে। কারণ এখানকার ভূখণ্ড খুবই কঠিন এবং বিদ্যমান রাস্তার অবস্থাও ভালো নয়।’
শিলং-শিলচর প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) একটি রূপ হাইব্রিড অ্যানুইটি মোডে (এইচএএম) বাস্তবায়িত হবে। এতে ১৯টি বড় সেতু, ১৫৩টি ছোট সেতু, ৩২৬টি কালভার্ট, ২২টি আন্ডারপাস, ২৬টি ওভারপাস, আটটি সীমিত উচ্চতার সাবওয়ে এবং ৩৪টি ভায়াডাক্ট থাকবে।
এর আগে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত তিনটি চলমান প্রকল্প থেমে গেছে এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের জরিপ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা।
এসব প্রকল্পের আকার প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি বলে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যমটি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে, নয়াদিল্লি এই পরিস্থিতিতে তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে এবং উত্তর ভারতে রেল অবকাঠামো জোরদার করার পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে বিকল্প সংযোগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। সূত্র আরও জানায়, ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির সংযোগ পরিকল্পনা বিবেচনাধীন।
স্থগিত হওয়া প্রকল্পগুলো ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর (সেভেন সিস্টার্স) জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই রাজ্যগুলোর সংযোগ স্থাপিত হলে সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডরের (চিকেন’স নেক) ওপর নির্ভরতা কমতো। এই করিডরটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে আমরা বাংলাদেশে নির্মাণ সামগ্রী বা অন্য কোনো জিনিস সরবরাহ করছি না। প্রতিবেশী দেশটির মাধ্যমে সংযোগকারী রুটের জন্য প্রকল্প তহবিলও স্থগিত রাখা হয়েছে। সেখানে প্রথমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসা প্রয়োজন। তবে ভারতের অংশে নির্মাণকাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।’
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।
আরও খবর পড়ুন:
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায় ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন করে সমুদ্রপথ বেছে নিয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত নতুন মহাসড়ক প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। এই মহাসড়ক মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি-মডাল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মধ্যে সমুদ্রপথে একটি বিকল্প সংযোগ তৈরি হবে।
ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের (এনএইচআইডিসিএল) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা এই প্রকল্পকে ‘জবাব’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গত মার্চে বেইজিং সফরকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত ‘ভূবেষ্টিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, এই অঞ্চলের জন্য ঢাকা ‘মহাসাগরের (প্রবেশের) একমাত্র অভিভাবক।’
শিলংয়ের কাছে মাওলিনখুং থেকে শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত এনএইচ-৬ বরাবর ১৬৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের মহাসড়কটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এনএইচআইডিসিএল এটি বাস্তবায়ন করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মিয়ানমারে কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে হচ্ছে। এটি কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই সিত্তে বন্দর কালাদান নদীর মাধ্যমে মিয়ানমারের পালেতওয়া এবং সেখান থেকে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুইয়ের সঙ্গে যুক্ত।
এনএইচআইডিসিএল-এর কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনএইচআইডিসিএল এই প্রকল্পটি জোরিনপুই থেকে মিজোরামের লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এটি কেবল উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর নয়, পাহাড়ি অঞ্চলেরও এমন প্রকল্প প্রথম। শিলং-শিলচর গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিলচর হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর এবং আসামের বরাক উপত্যকার সংযোগস্থল। ফলে এটি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি প্রধান সংযোগকারী পথ হয়ে উঠবে এবং ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির জন্য এই অঞ্চলকে প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে (ওডিশার) বিশাখাপত্তনম এবং (পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে। এরপর এই উচ্চগতির করিডর সড়কপথে পণ্য পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে।’
বর্তমানে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোগাযোগের একমাত্র পথ শিলিগুড়ি করিডর, যাকে চিকেন’স নেক নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশ পথ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং এই অঞ্চলে জলপথের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। আশা করা হচ্ছে, শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই সংযোগটি পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।
গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে মেঘালয়ে ১৪৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং আসামে ২২ কিলোমিটার। চালু হলে এই নতুন পথটি ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা করবে।
এনএইচআইডিসিএল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই নতুন মহাসড়কটি শিলিগুড়ি করিডরের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অন্যতম চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প হতে চলেছে। কারণ এখানকার ভূখণ্ড খুবই কঠিন এবং বিদ্যমান রাস্তার অবস্থাও ভালো নয়।’
শিলং-শিলচর প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) একটি রূপ হাইব্রিড অ্যানুইটি মোডে (এইচএএম) বাস্তবায়িত হবে। এতে ১৯টি বড় সেতু, ১৫৩টি ছোট সেতু, ৩২৬টি কালভার্ট, ২২টি আন্ডারপাস, ২৬টি ওভারপাস, আটটি সীমিত উচ্চতার সাবওয়ে এবং ৩৪টি ভায়াডাক্ট থাকবে।
এর আগে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত তিনটি চলমান প্রকল্প থেমে গেছে এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের জরিপ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা।
এসব প্রকল্পের আকার প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি বলে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যমটি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে, নয়াদিল্লি এই পরিস্থিতিতে তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে এবং উত্তর ভারতে রেল অবকাঠামো জোরদার করার পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে বিকল্প সংযোগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। সূত্র আরও জানায়, ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির সংযোগ পরিকল্পনা বিবেচনাধীন।
স্থগিত হওয়া প্রকল্পগুলো ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর (সেভেন সিস্টার্স) জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই রাজ্যগুলোর সংযোগ স্থাপিত হলে সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডরের (চিকেন’স নেক) ওপর নির্ভরতা কমতো। এই করিডরটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে আমরা বাংলাদেশে নির্মাণ সামগ্রী বা অন্য কোনো জিনিস সরবরাহ করছি না। প্রতিবেশী দেশটির মাধ্যমে সংযোগকারী রুটের জন্য প্রকল্প তহবিলও স্থগিত রাখা হয়েছে। সেখানে প্রথমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসা প্রয়োজন। তবে ভারতের অংশে নির্মাণকাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।’
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায় ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন করে সমুদ্রপথ বেছে নিয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত নতুন মহাসড়ক প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। এই মহাসড়ক মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি-মডাল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মধ্যে সমুদ্রপথে একটি বিকল্প সংযোগ তৈরি হবে।
ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের (এনএইচআইডিসিএল) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা এই প্রকল্পকে ‘জবাব’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গত মার্চে বেইজিং সফরকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত ‘ভূবেষ্টিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, এই অঞ্চলের জন্য ঢাকা ‘মহাসাগরের (প্রবেশের) একমাত্র অভিভাবক।’
শিলংয়ের কাছে মাওলিনখুং থেকে শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত এনএইচ-৬ বরাবর ১৬৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের মহাসড়কটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এনএইচআইডিসিএল এটি বাস্তবায়ন করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মিয়ানমারে কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে হচ্ছে। এটি কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই সিত্তে বন্দর কালাদান নদীর মাধ্যমে মিয়ানমারের পালেতওয়া এবং সেখান থেকে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুইয়ের সঙ্গে যুক্ত।
এনএইচআইডিসিএল-এর কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনএইচআইডিসিএল এই প্রকল্পটি জোরিনপুই থেকে মিজোরামের লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এটি কেবল উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর নয়, পাহাড়ি অঞ্চলেরও এমন প্রকল্প প্রথম। শিলং-শিলচর গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিলচর হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর এবং আসামের বরাক উপত্যকার সংযোগস্থল। ফলে এটি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি প্রধান সংযোগকারী পথ হয়ে উঠবে এবং ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির জন্য এই অঞ্চলকে প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে (ওডিশার) বিশাখাপত্তনম এবং (পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে। এরপর এই উচ্চগতির করিডর সড়কপথে পণ্য পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে।’
বর্তমানে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোগাযোগের একমাত্র পথ শিলিগুড়ি করিডর, যাকে চিকেন’স নেক নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশ পথ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং এই অঞ্চলে জলপথের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। আশা করা হচ্ছে, শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই সংযোগটি পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।
গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে মেঘালয়ে ১৪৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং আসামে ২২ কিলোমিটার। চালু হলে এই নতুন পথটি ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা করবে।
এনএইচআইডিসিএল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই নতুন মহাসড়কটি শিলিগুড়ি করিডরের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অন্যতম চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প হতে চলেছে। কারণ এখানকার ভূখণ্ড খুবই কঠিন এবং বিদ্যমান রাস্তার অবস্থাও ভালো নয়।’
শিলং-শিলচর প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) একটি রূপ হাইব্রিড অ্যানুইটি মোডে (এইচএএম) বাস্তবায়িত হবে। এতে ১৯টি বড় সেতু, ১৫৩টি ছোট সেতু, ৩২৬টি কালভার্ট, ২২টি আন্ডারপাস, ২৬টি ওভারপাস, আটটি সীমিত উচ্চতার সাবওয়ে এবং ৩৪টি ভায়াডাক্ট থাকবে।
এর আগে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত তিনটি চলমান প্রকল্প থেমে গেছে এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের জরিপ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা।
এসব প্রকল্পের আকার প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি বলে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যমটি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে, নয়াদিল্লি এই পরিস্থিতিতে তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে এবং উত্তর ভারতে রেল অবকাঠামো জোরদার করার পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে বিকল্প সংযোগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। সূত্র আরও জানায়, ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির সংযোগ পরিকল্পনা বিবেচনাধীন।
স্থগিত হওয়া প্রকল্পগুলো ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর (সেভেন সিস্টার্স) জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই রাজ্যগুলোর সংযোগ স্থাপিত হলে সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডরের (চিকেন’স নেক) ওপর নির্ভরতা কমতো। এই করিডরটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে আমরা বাংলাদেশে নির্মাণ সামগ্রী বা অন্য কোনো জিনিস সরবরাহ করছি না। প্রতিবেশী দেশটির মাধ্যমে সংযোগকারী রুটের জন্য প্রকল্প তহবিলও স্থগিত রাখা হয়েছে। সেখানে প্রথমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসা প্রয়োজন। তবে ভারতের অংশে নির্মাণকাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।’
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।
আরও খবর পড়ুন:

চীনা শল্যচিকিৎসকেরা এক অভাবনীয় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এক নারীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কান প্রথমে তাঁর পায়ে প্রতিস্থাপন করে, পরবর্তীকালে তা পুনরায় যথাস্থানে ফিরিয়ে এনেছেন। তাঁরা বিশ্বের প্রথম এই ধরনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন...
২ ঘণ্টা আগে
পশ্চিমবঙ্গের সুতি থানার অধিবাসী ২০ বছরের তরুণ জুয়েল রানা। মা-বাবার একমাত্র সন্তান। মাত্র পাঁচ দিন আগে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে ওডিশার সম্বলপুরে পা রেখেছিলেন। নিজ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে বাইরে কাজ করতে যাওয়া সেই প্রথম। কিন্তু এই যাওয়াই তাঁর শেষ যাওয়া।
২ ঘণ্টা আগে
চলতি বছরে ভারতের বিজেপি সরকার তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুতে বেশ সরব ছিল। নানা রাজনৈতিক বক্তব্যে এবং আলোচনায় তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুটিকে তুলে আনা হয়েছে। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার মোদ্দা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে এই তকমা। তবে ভারত সরকার সেখানেই থেকে থাকেনি।
৩ ঘণ্টা আগে
মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে অরুণাচল প্রদেশের ওপর চীনের দাবিকে তাদের ‘কোর ইন্টারেস্ট’ বা মূল স্বার্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই স্বার্থগুলোর বিষয়ে চীন কোনো ধরনের আলোচনা বা আপস করতে রাজি নয়।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চীনা শল্যচিকিৎসকেরা এক অভাবনীয় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এক নারীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কান প্রথমে তাঁর পায়ে প্রতিস্থাপন করে, পরবর্তীকালে তা পুনরায় যথাস্থানে ফিরিয়ে এনেছেন। তাঁরা বিশ্বের প্রথম এই ধরনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মেডিকেল নিউজ প্ল্যাটফর্ম মেড-জে সোমবার জানিয়েছে, গত এপ্রিলে কর্মক্ষেত্রে এক দুর্ঘটনায় ওই নারীর কান শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তাঁর মাথার খুলির চামড়ার বড় একটি অংশও উপড়ে গিয়েছিল। জিনানের শানদং প্রাদেশিক হাসপাতালের মাইক্রোসার্জারি ইউনিটের উপপরিচালক কিউ শেনকিয়াং জানান, ভারী যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ওই নারী আঘাত পেয়েছিলেন, যা ছিল প্রাণঘাতী। তাঁর মাথার চামড়া, ঘাড় এবং মুখের ত্বক ছিঁড়ে একাধিক খণ্ডে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং কানটি মাথার চামড়াসহ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মাইক্রোসার্জারিতে বিশেষজ্ঞ একদল চিকিৎসক তাৎক্ষণিকভাবে প্রচলিত পদ্ধতিতে মাথার চামড়া মেরামতের চেষ্টা করেন। কিন্তু দুর্ঘটনার ফলে মাথার টিস্যু এবং রক্তনালির জালিকা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এর ফলে মাথার টিস্যু সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত কানটি পুনরায় স্থাপন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় কানটিকে বাঁচিয়ে রাখার বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য হন চিকিৎসকেরা। অবশেষে কিউয়ে দল সিদ্ধান্ত নেয়, কানটিকে ওই নারীর পায়ের উপরিভাগে প্রতিস্থাপন করার। এরপর শুরু হয় মাসব্যাপী পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া।
চিকিৎসকদের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ—পায়ের ধমনি ও শিরাগুলোর গঠন কান প্রতিস্থাপনের জন্য উপযুক্ত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ছাড়া পায়ের ত্বক ও নরম টিস্যু মাথার ত্বকের মতোই পাতলা, যা স্থানান্তরের পর সামান্য কাটাছেঁড়াতেই মানিয়ে যায়।
অত্যন্ত জটিল এই প্রক্রিয়ার কোনো পূর্ববর্তী নজির বা নথিবদ্ধ সফল ঘটনা ছিল না। প্রতিবেদন অনুযায়ী, কানটি পায়ে প্রতিস্থাপনের প্রাথমিক ধাপটি সম্পন্ন করতে সময় লেগেছিল দশ ঘণ্টা। কিউ জানান, কানের রক্তনালীগুলো অত্যন্ত সূক্ষ্ম—ব্যাস মাত্র ০.২ থেকে ০.৩ মিলিমিটার। এগুলোকে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত করা ছিল এক বিশাল চ্যালেঞ্জ, যার জন্য প্রয়োজন ছিল উচ্চতর দক্ষতা ও মাইক্রোসার্জারির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা।
অস্ত্রোপচারের পাঁচ দিন পর দলটি আরও একটি সংকটময় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। শিরার রক্ত সঞ্চালনে সমস্যার কারণে কানের রক্ত সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং কানটি কালচে-বেগুনি রং ধারণ করে। কানটিকে বাঁচাতে চিকিৎসকেরা রক্তক্ষরণ করানোর এক শ্রমসাধ্য কৌশল অবলম্বন করেন, যা পাঁচ দিনে প্রায় ৫০০ বার প্রয়োগ করতে হয়েছিল।
এরই মধ্যে চিকিৎসকেরা রোগীর পেট থেকে চামড়া নিয়ে মাথায় প্রতিস্থাপন করে মাথার খুলির ক্ষত সারিয়ে তোলেন। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর যখন প্রতিস্থাপিত মাথার চামড়া ও ঘাড়ের ত্বক সুস্থ হয়ে ওঠে, ফোলা কমে যায় এবং পা ও কানের ক্ষত সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়, তখন চিকিৎসকেরা কানটিকে পুনরায় যথাস্থানে স্থাপনের উদ্যোগ নেন। গত অক্টোবরে কিউয়ে নেতৃত্বে সফলভাবে ৬ ঘণ্টার এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়, যা বিশ্বজুড়ে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সান ছদ্মনামের ওই রোগী এখন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁর মুখমণ্ডল ও টিস্যুর কার্যক্ষমতা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে তাঁর এখনো কিছু ছোটখাটো অস্ত্রোপচার বাকি রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভ্রু পুনর্গঠন এবং পায়ের ক্ষতচিহ্ন কমানো।

চীনা শল্যচিকিৎসকেরা এক অভাবনীয় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এক নারীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কান প্রথমে তাঁর পায়ে প্রতিস্থাপন করে, পরবর্তীকালে তা পুনরায় যথাস্থানে ফিরিয়ে এনেছেন। তাঁরা বিশ্বের প্রথম এই ধরনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মেডিকেল নিউজ প্ল্যাটফর্ম মেড-জে সোমবার জানিয়েছে, গত এপ্রিলে কর্মক্ষেত্রে এক দুর্ঘটনায় ওই নারীর কান শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তাঁর মাথার খুলির চামড়ার বড় একটি অংশও উপড়ে গিয়েছিল। জিনানের শানদং প্রাদেশিক হাসপাতালের মাইক্রোসার্জারি ইউনিটের উপপরিচালক কিউ শেনকিয়াং জানান, ভারী যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ওই নারী আঘাত পেয়েছিলেন, যা ছিল প্রাণঘাতী। তাঁর মাথার চামড়া, ঘাড় এবং মুখের ত্বক ছিঁড়ে একাধিক খণ্ডে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং কানটি মাথার চামড়াসহ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মাইক্রোসার্জারিতে বিশেষজ্ঞ একদল চিকিৎসক তাৎক্ষণিকভাবে প্রচলিত পদ্ধতিতে মাথার চামড়া মেরামতের চেষ্টা করেন। কিন্তু দুর্ঘটনার ফলে মাথার টিস্যু এবং রক্তনালির জালিকা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এর ফলে মাথার টিস্যু সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত কানটি পুনরায় স্থাপন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় কানটিকে বাঁচিয়ে রাখার বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য হন চিকিৎসকেরা। অবশেষে কিউয়ে দল সিদ্ধান্ত নেয়, কানটিকে ওই নারীর পায়ের উপরিভাগে প্রতিস্থাপন করার। এরপর শুরু হয় মাসব্যাপী পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া।
চিকিৎসকদের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ—পায়ের ধমনি ও শিরাগুলোর গঠন কান প্রতিস্থাপনের জন্য উপযুক্ত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ছাড়া পায়ের ত্বক ও নরম টিস্যু মাথার ত্বকের মতোই পাতলা, যা স্থানান্তরের পর সামান্য কাটাছেঁড়াতেই মানিয়ে যায়।
অত্যন্ত জটিল এই প্রক্রিয়ার কোনো পূর্ববর্তী নজির বা নথিবদ্ধ সফল ঘটনা ছিল না। প্রতিবেদন অনুযায়ী, কানটি পায়ে প্রতিস্থাপনের প্রাথমিক ধাপটি সম্পন্ন করতে সময় লেগেছিল দশ ঘণ্টা। কিউ জানান, কানের রক্তনালীগুলো অত্যন্ত সূক্ষ্ম—ব্যাস মাত্র ০.২ থেকে ০.৩ মিলিমিটার। এগুলোকে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত করা ছিল এক বিশাল চ্যালেঞ্জ, যার জন্য প্রয়োজন ছিল উচ্চতর দক্ষতা ও মাইক্রোসার্জারির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা।
অস্ত্রোপচারের পাঁচ দিন পর দলটি আরও একটি সংকটময় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। শিরার রক্ত সঞ্চালনে সমস্যার কারণে কানের রক্ত সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং কানটি কালচে-বেগুনি রং ধারণ করে। কানটিকে বাঁচাতে চিকিৎসকেরা রক্তক্ষরণ করানোর এক শ্রমসাধ্য কৌশল অবলম্বন করেন, যা পাঁচ দিনে প্রায় ৫০০ বার প্রয়োগ করতে হয়েছিল।
এরই মধ্যে চিকিৎসকেরা রোগীর পেট থেকে চামড়া নিয়ে মাথায় প্রতিস্থাপন করে মাথার খুলির ক্ষত সারিয়ে তোলেন। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর যখন প্রতিস্থাপিত মাথার চামড়া ও ঘাড়ের ত্বক সুস্থ হয়ে ওঠে, ফোলা কমে যায় এবং পা ও কানের ক্ষত সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়, তখন চিকিৎসকেরা কানটিকে পুনরায় যথাস্থানে স্থাপনের উদ্যোগ নেন। গত অক্টোবরে কিউয়ে নেতৃত্বে সফলভাবে ৬ ঘণ্টার এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়, যা বিশ্বজুড়ে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সান ছদ্মনামের ওই রোগী এখন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁর মুখমণ্ডল ও টিস্যুর কার্যক্ষমতা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে তাঁর এখনো কিছু ছোটখাটো অস্ত্রোপচার বাকি রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভ্রু পুনর্গঠন এবং পায়ের ক্ষতচিহ্ন কমানো।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায়, ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন...
১৭ মে ২০২৫
পশ্চিমবঙ্গের সুতি থানার অধিবাসী ২০ বছরের তরুণ জুয়েল রানা। মা-বাবার একমাত্র সন্তান। মাত্র পাঁচ দিন আগে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে ওডিশার সম্বলপুরে পা রেখেছিলেন। নিজ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে বাইরে কাজ করতে যাওয়া সেই প্রথম। কিন্তু এই যাওয়াই তাঁর শেষ যাওয়া।
২ ঘণ্টা আগে
চলতি বছরে ভারতের বিজেপি সরকার তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুতে বেশ সরব ছিল। নানা রাজনৈতিক বক্তব্যে এবং আলোচনায় তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুটিকে তুলে আনা হয়েছে। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার মোদ্দা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে এই তকমা। তবে ভারত সরকার সেখানেই থেকে থাকেনি।
৩ ঘণ্টা আগে
মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে অরুণাচল প্রদেশের ওপর চীনের দাবিকে তাদের ‘কোর ইন্টারেস্ট’ বা মূল স্বার্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই স্বার্থগুলোর বিষয়ে চীন কোনো ধরনের আলোচনা বা আপস করতে রাজি নয়।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পশ্চিমবঙ্গের সুতি থানার অধিবাসী ২০ বছরের তরুণ জুয়েল রানা। মা-বাবার একমাত্র সন্তান। মাত্র পাঁচ দিন আগে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে ওডিশার সম্বলপুরে পা রেখেছিলেন। নিজ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে বাইরে কাজ করতে যাওয়া সেই প্রথম। কিন্তু এই যাওয়াই তাঁর শেষ যাওয়া। গত মঙ্গলবার রাতে একদল উন্মত্ত জনতার হাতে প্রাণ হারাতে হয়েছে তাঁকে। অভিযোগ—জুয়েল রানা ‘বাংলাদেশি’।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, জুয়েল রানার সঙ্গে থাকা পশ্চিমবঙ্গের আরও দুই পরিযায়ী শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এই ঘটনায় ওডিশা পুলিশ এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সুতি থানায় দেওয়া এক লিখিত অভিযোগে জুয়েল রানার মা নাজমা বিবি জানিয়েছেন, ২০ ডিসেম্বর তাঁর ছেলে সম্বলপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। তিনি বলেন, ‘২৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ একটা ফোন পাই। জানতে পারি ওডিশায় যেখানে ওরা থাকত, তার কাছেই সাত-আটজন স্থানীয় লোক আমার ছেলে আর ওর সহকর্মীদের ওপর চড়াও হয়েছে। ওরা আমার ছেলেকে ‘বাংলা বলা বাংলাদেশি’ বলে গালি দিচ্ছিল আর মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল।’
নাজমা বিবি আরও বলেন, ‘এ কথা বলতে বলতেই ওরা লাঠি, লোহার রড আর ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমার ছেলে আর ওর বন্ধুদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমার ছেলে ওখানেই মারা যায়, অন্যরা এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।’ জুয়েলের বাবা জিয়াউল হক নিজেও একজন রাজমিস্ত্রি। তিনি বর্তমানে কেরালায় কর্মরত।
ওডিশা পুলিশের দাবি, দানিপালি এলাকায় একটি নির্মীয়মাণ ভবনে এই ঝামেলার সূত্রপাত। স্থানীয় কিছু যুবক ওই শ্রমিকদের কাছে বিড়ি চেয়েছিল। এরপর তর্কের মাঝেই যুবকেরা শ্রমিকদের আধার কার্ড দেখতে চায় এবং মুহূর্তেই সেই বিবাদ সহিংস রূপ নেয়। সম্বলপুরের এসপি মুকেশ ভামু বলেন, ‘একজন মারা গেছেন এবং দুজন আহত। পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও ছাড়া হবে না।’
নওশাদ আলি নামে মুর্শিদাবাদের এক যুবক এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি জানান, শ্রমিকেরা আগুনের পাশে বসে শরীর গরম করছিল। তখন কিছু স্থানীয় যুবক এসে বিড়ি চায়। বিড়ি নেওয়ার পরপরই তারা লোকগুলোকে বাংলাদেশি বলে গালি দিতে শুরু করে এবং মারধর শুরু করে।
বৃহস্পতিবার সুতি ব্লকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পুলিশ এবং তৃণমূল বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস নিহত জুয়েলের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। বিধায়ক অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা শ্রমিকদের ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে বাধ্য করেছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত মরদেহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’
এই ঘটনায় সম্বলপুরে থাকা বাঙালি শ্রমিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মাজহার খান নামে অন্য এক রাজমিস্ত্রি আক্ষেপ করে বললেন, ‘আমাদের প্রায়ই বাংলাদেশি মনে করে হেনস্তা করা হয়। মানুষ সন্দেহ করে, গালি দেয়, আক্রমণ করে। আমরা সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাইছি।’
পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘আবারও বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের ওপর হামলা হলো। বিজেপি গুন্ডারা তাদের ওপর আক্রমণ করে অনুপ্রবেশকারী তকমা দিচ্ছে। আর কত প্রাণ চায় ওরা? বাঙালিদের প্রতি বিজেপির মনোভাব ঠিক কেমন, এটা তারই প্রমাণ।’
রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালি শ্রমিকেরা ক্রমাগত নিগৃহীত হচ্ছে, খুন হচ্ছে। বিজেপির নেতারা কেন চুপ? কেন বারবার এমন জঘন্য অপরাধ ঘটছে?’ তবে ওডিশার আইজিপি হিমাংশু লাল দাবি করেছেন, ঝামেলার মূলে ছিল টাকার লেনদেন নিয়ে কোনো বিবাদ, যা হুট করেই চরমে পৌঁছায়। তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পেছনে সাম্প্রদায়িক বা ভাষাগত কোনো কারণ নেই এবং সায়েন্টিফিক তদন্ত চলছে।

পশ্চিমবঙ্গের সুতি থানার অধিবাসী ২০ বছরের তরুণ জুয়েল রানা। মা-বাবার একমাত্র সন্তান। মাত্র পাঁচ দিন আগে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে ওডিশার সম্বলপুরে পা রেখেছিলেন। নিজ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে বাইরে কাজ করতে যাওয়া সেই প্রথম। কিন্তু এই যাওয়াই তাঁর শেষ যাওয়া। গত মঙ্গলবার রাতে একদল উন্মত্ত জনতার হাতে প্রাণ হারাতে হয়েছে তাঁকে। অভিযোগ—জুয়েল রানা ‘বাংলাদেশি’।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, জুয়েল রানার সঙ্গে থাকা পশ্চিমবঙ্গের আরও দুই পরিযায়ী শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এই ঘটনায় ওডিশা পুলিশ এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সুতি থানায় দেওয়া এক লিখিত অভিযোগে জুয়েল রানার মা নাজমা বিবি জানিয়েছেন, ২০ ডিসেম্বর তাঁর ছেলে সম্বলপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। তিনি বলেন, ‘২৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ একটা ফোন পাই। জানতে পারি ওডিশায় যেখানে ওরা থাকত, তার কাছেই সাত-আটজন স্থানীয় লোক আমার ছেলে আর ওর সহকর্মীদের ওপর চড়াও হয়েছে। ওরা আমার ছেলেকে ‘বাংলা বলা বাংলাদেশি’ বলে গালি দিচ্ছিল আর মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল।’
নাজমা বিবি আরও বলেন, ‘এ কথা বলতে বলতেই ওরা লাঠি, লোহার রড আর ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমার ছেলে আর ওর বন্ধুদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমার ছেলে ওখানেই মারা যায়, অন্যরা এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।’ জুয়েলের বাবা জিয়াউল হক নিজেও একজন রাজমিস্ত্রি। তিনি বর্তমানে কেরালায় কর্মরত।
ওডিশা পুলিশের দাবি, দানিপালি এলাকায় একটি নির্মীয়মাণ ভবনে এই ঝামেলার সূত্রপাত। স্থানীয় কিছু যুবক ওই শ্রমিকদের কাছে বিড়ি চেয়েছিল। এরপর তর্কের মাঝেই যুবকেরা শ্রমিকদের আধার কার্ড দেখতে চায় এবং মুহূর্তেই সেই বিবাদ সহিংস রূপ নেয়। সম্বলপুরের এসপি মুকেশ ভামু বলেন, ‘একজন মারা গেছেন এবং দুজন আহত। পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও ছাড়া হবে না।’
নওশাদ আলি নামে মুর্শিদাবাদের এক যুবক এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি জানান, শ্রমিকেরা আগুনের পাশে বসে শরীর গরম করছিল। তখন কিছু স্থানীয় যুবক এসে বিড়ি চায়। বিড়ি নেওয়ার পরপরই তারা লোকগুলোকে বাংলাদেশি বলে গালি দিতে শুরু করে এবং মারধর শুরু করে।
বৃহস্পতিবার সুতি ব্লকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পুলিশ এবং তৃণমূল বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস নিহত জুয়েলের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। বিধায়ক অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা শ্রমিকদের ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে বাধ্য করেছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত মরদেহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’
এই ঘটনায় সম্বলপুরে থাকা বাঙালি শ্রমিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মাজহার খান নামে অন্য এক রাজমিস্ত্রি আক্ষেপ করে বললেন, ‘আমাদের প্রায়ই বাংলাদেশি মনে করে হেনস্তা করা হয়। মানুষ সন্দেহ করে, গালি দেয়, আক্রমণ করে। আমরা সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাইছি।’
পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘আবারও বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের ওপর হামলা হলো। বিজেপি গুন্ডারা তাদের ওপর আক্রমণ করে অনুপ্রবেশকারী তকমা দিচ্ছে। আর কত প্রাণ চায় ওরা? বাঙালিদের প্রতি বিজেপির মনোভাব ঠিক কেমন, এটা তারই প্রমাণ।’
রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালি শ্রমিকেরা ক্রমাগত নিগৃহীত হচ্ছে, খুন হচ্ছে। বিজেপির নেতারা কেন চুপ? কেন বারবার এমন জঘন্য অপরাধ ঘটছে?’ তবে ওডিশার আইজিপি হিমাংশু লাল দাবি করেছেন, ঝামেলার মূলে ছিল টাকার লেনদেন নিয়ে কোনো বিবাদ, যা হুট করেই চরমে পৌঁছায়। তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পেছনে সাম্প্রদায়িক বা ভাষাগত কোনো কারণ নেই এবং সায়েন্টিফিক তদন্ত চলছে।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায়, ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন...
১৭ মে ২০২৫
চীনা শল্যচিকিৎসকেরা এক অভাবনীয় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এক নারীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কান প্রথমে তাঁর পায়ে প্রতিস্থাপন করে, পরবর্তীকালে তা পুনরায় যথাস্থানে ফিরিয়ে এনেছেন। তাঁরা বিশ্বের প্রথম এই ধরনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন...
২ ঘণ্টা আগে
চলতি বছরে ভারতের বিজেপি সরকার তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুতে বেশ সরব ছিল। নানা রাজনৈতিক বক্তব্যে এবং আলোচনায় তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুটিকে তুলে আনা হয়েছে। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার মোদ্দা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে এই তকমা। তবে ভারত সরকার সেখানেই থেকে থাকেনি।
৩ ঘণ্টা আগে
মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে অরুণাচল প্রদেশের ওপর চীনের দাবিকে তাদের ‘কোর ইন্টারেস্ট’ বা মূল স্বার্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই স্বার্থগুলোর বিষয়ে চীন কোনো ধরনের আলোচনা বা আপস করতে রাজি নয়।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চলতি বছরে ভারতের বিজেপি সরকার তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুতে বেশ সরব ছিল। নানা রাজনৈতিক বক্তব্যে এবং আলোচনায় তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুটিকে তুলে আনা হয়েছে। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার মোদ্দা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে এই তকমা। তবে ভারত সরকার সেখানেই থেকে থাকেনি। কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই তারা ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে অন্তত ২ হাজার ২০০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, তথাকথিত ‘অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযানে ২০২৫ সালে রেকর্ড সংখ্যক ২ হাজার ২০০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে দিল্লি পুলিশ।’ সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা। বৈধ অনুমতি ছাড়া দেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের শনাক্ত ও প্রত্যাবাসনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশের পরই এই তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।
বিগত বছরগুলোর পরিসংখ্যানের তুলনায় এবারের অভিযানের ব্যাপকতা নজিরবিহীন। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৪ সালে ১৪ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল, ২০২৩ সালে ৫ জন এবং ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫০ জন। ২০২৫ সালে এই নাটকীয় বৃদ্ধি এটাই প্রমাণ করে, জাতীয় রাজধানীর সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের নামে দিল্লি পুলিশ লক্ষ্যবস্তু করে তথাকথিত অভিযান চালায়।
দিল্লি পুলিশের মতে, যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তারা জাল নথিপত্র ব্যবহার করে দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছিল। তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে, এই ব্যক্তিরা স্থানীয় জনসমষ্টির সঙ্গে মিশে যেতে এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে ভুয়া আধার কার্ড, জাল ভোটার আইডি কার্ড এবং অন্যান্য জাল সরকারি পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছিল।
তবে কোনো তথ্যপ্রমাণ হাজির করেনি দিল্লি পুলিশ। এমনকি দিল্লি পুলিশ বা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো কখনোই যাদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে তাদের পরিচয়ের ব্যাপারে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেয়নি; বরং এমনও একাধিক ঘটনা আছে, যেখানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম বাঙালিদের বাংলাদেশের ভেতরে ঠেলে পাঠানো হয়েছিল। এমনকি আসামেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে প্রমাণ আছে। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের সোনালী খাতুন এবং আসামের সকিনা বিবি ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে জোর করে ভারতীয় বাংলাভাষী মুসলিমদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর জাজ্জ্বল্যমান প্রমাণ।
খোদ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যই বলছে, অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নাগরিক সোনালী খাতুন এবং তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয় চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে। প্রায় চার মাস ধরে চরম দুর্ভোগ পোহানোর পর অবশেষে বিচারিক আদেশে তাঁদের ভারতে প্রত্যাবর্তনের পথ প্রশস্ত হয়। চলতি মাসের শুরুর দিকে তিনি ভারতেও ফিরে যান। আদালতের আদেশ থেকে স্পষ্ট যে, দিল্লিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করা পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের এই দরিদ্র বাসিন্দাদের ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে আধার কার্ড থাকা সত্ত্বেও দিল্লি পুলিশ তাঁদের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছিল।
একইভাবে সকিনা বিবিকেও বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। বাংলাভাষী ভারতীয় মুসলিম এই নারী ২০১৬ সাল থেকে সকিনা কোকরাঝাঁড় ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন। ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁকে নিয়মিতভাবে নলবাড়ি থানায় হাজিরা দিতে হতো। তিনি সর্বশেষ এই বছরের ২৫ মে থানায় হাজিরা দেন—এরপর থেকে তাঁর পরিবার তাঁকে খুঁজে পায়নি।
আসামের নলবাড়ি জেলার বারকুরা গ্রামের বাসিন্দা সকিনা বেগমকে গত মে মাসে তাঁর বাড়ি থেকে হেফাজতে নেয় আসাম পুলিশ। এরপর তিনি দীর্ঘদিন নিখোঁজ ছিলেন এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। জুনের প্রথম সপ্তাহে সকিনাকে ঢাকার মিরপুর ভাষানটেক এলাকায় রাস্তার পাশে একজন পথচারী খুঁজে পান। এরপর তিনি কাশিমপুর কারাগারে কিছুদিন বন্দী ছিলেন। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে তাঁর মুক্তির পথ প্রশস্ত হয়।

চলতি বছরে ভারতের বিজেপি সরকার তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুতে বেশ সরব ছিল। নানা রাজনৈতিক বক্তব্যে এবং আলোচনায় তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুটিকে তুলে আনা হয়েছে। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার মোদ্দা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে এই তকমা। তবে ভারত সরকার সেখানেই থেকে থাকেনি। কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই তারা ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে অন্তত ২ হাজার ২০০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, তথাকথিত ‘অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযানে ২০২৫ সালে রেকর্ড সংখ্যক ২ হাজার ২০০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে দিল্লি পুলিশ।’ সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা। বৈধ অনুমতি ছাড়া দেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের শনাক্ত ও প্রত্যাবাসনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশের পরই এই তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।
বিগত বছরগুলোর পরিসংখ্যানের তুলনায় এবারের অভিযানের ব্যাপকতা নজিরবিহীন। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৪ সালে ১৪ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল, ২০২৩ সালে ৫ জন এবং ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫০ জন। ২০২৫ সালে এই নাটকীয় বৃদ্ধি এটাই প্রমাণ করে, জাতীয় রাজধানীর সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের নামে দিল্লি পুলিশ লক্ষ্যবস্তু করে তথাকথিত অভিযান চালায়।
দিল্লি পুলিশের মতে, যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তারা জাল নথিপত্র ব্যবহার করে দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছিল। তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে, এই ব্যক্তিরা স্থানীয় জনসমষ্টির সঙ্গে মিশে যেতে এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে ভুয়া আধার কার্ড, জাল ভোটার আইডি কার্ড এবং অন্যান্য জাল সরকারি পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছিল।
তবে কোনো তথ্যপ্রমাণ হাজির করেনি দিল্লি পুলিশ। এমনকি দিল্লি পুলিশ বা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো কখনোই যাদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে তাদের পরিচয়ের ব্যাপারে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেয়নি; বরং এমনও একাধিক ঘটনা আছে, যেখানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম বাঙালিদের বাংলাদেশের ভেতরে ঠেলে পাঠানো হয়েছিল। এমনকি আসামেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে প্রমাণ আছে। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের সোনালী খাতুন এবং আসামের সকিনা বিবি ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে জোর করে ভারতীয় বাংলাভাষী মুসলিমদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর জাজ্জ্বল্যমান প্রমাণ।
খোদ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যই বলছে, অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নাগরিক সোনালী খাতুন এবং তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয় চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে। প্রায় চার মাস ধরে চরম দুর্ভোগ পোহানোর পর অবশেষে বিচারিক আদেশে তাঁদের ভারতে প্রত্যাবর্তনের পথ প্রশস্ত হয়। চলতি মাসের শুরুর দিকে তিনি ভারতেও ফিরে যান। আদালতের আদেশ থেকে স্পষ্ট যে, দিল্লিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করা পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের এই দরিদ্র বাসিন্দাদের ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে আধার কার্ড থাকা সত্ত্বেও দিল্লি পুলিশ তাঁদের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছিল।
একইভাবে সকিনা বিবিকেও বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। বাংলাভাষী ভারতীয় মুসলিম এই নারী ২০১৬ সাল থেকে সকিনা কোকরাঝাঁড় ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন। ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁকে নিয়মিতভাবে নলবাড়ি থানায় হাজিরা দিতে হতো। তিনি সর্বশেষ এই বছরের ২৫ মে থানায় হাজিরা দেন—এরপর থেকে তাঁর পরিবার তাঁকে খুঁজে পায়নি।
আসামের নলবাড়ি জেলার বারকুরা গ্রামের বাসিন্দা সকিনা বেগমকে গত মে মাসে তাঁর বাড়ি থেকে হেফাজতে নেয় আসাম পুলিশ। এরপর তিনি দীর্ঘদিন নিখোঁজ ছিলেন এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। জুনের প্রথম সপ্তাহে সকিনাকে ঢাকার মিরপুর ভাষানটেক এলাকায় রাস্তার পাশে একজন পথচারী খুঁজে পান। এরপর তিনি কাশিমপুর কারাগারে কিছুদিন বন্দী ছিলেন। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে তাঁর মুক্তির পথ প্রশস্ত হয়।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায়, ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন...
১৭ মে ২০২৫
চীনা শল্যচিকিৎসকেরা এক অভাবনীয় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এক নারীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কান প্রথমে তাঁর পায়ে প্রতিস্থাপন করে, পরবর্তীকালে তা পুনরায় যথাস্থানে ফিরিয়ে এনেছেন। তাঁরা বিশ্বের প্রথম এই ধরনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন...
২ ঘণ্টা আগে
পশ্চিমবঙ্গের সুতি থানার অধিবাসী ২০ বছরের তরুণ জুয়েল রানা। মা-বাবার একমাত্র সন্তান। মাত্র পাঁচ দিন আগে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে ওডিশার সম্বলপুরে পা রেখেছিলেন। নিজ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে বাইরে কাজ করতে যাওয়া সেই প্রথম। কিন্তু এই যাওয়াই তাঁর শেষ যাওয়া।
২ ঘণ্টা আগে
মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে অরুণাচল প্রদেশের ওপর চীনের দাবিকে তাদের ‘কোর ইন্টারেস্ট’ বা মূল স্বার্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই স্বার্থগুলোর বিষয়ে চীন কোনো ধরনের আলোচনা বা আপস করতে রাজি নয়।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে অরুণাচল প্রদেশের ওপর চীনের দাবিকে তাদের ‘কোর ইন্টারেস্ট’ বা মূল স্বার্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই স্বার্থগুলোর বিষয়ে চীন কোনো ধরনের আলোচনা বা আপস করতে রাজি নয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চীনের নেতৃত্ব তাদের ‘মূল স্বার্থে’র পরিধি আরও বাড়িয়ে এখন তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগরের সার্বভৌমত্ব ও সামুদ্রিক বিরোধ, সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, ২০৪৯ সালের মধ্যে ‘চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণের’ জন্য চীন ও এই বিতর্কিত অঞ্চলগুলোর একীকরণ একটি ‘স্বাভাবিক আবশ্যকতা।’ এই ‘পুনর্জাগরণ’ সম্পন্ন হলে চীন বিশ্বমঞ্চে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে এবং এমন এক ‘বিশ্বমানের’ সামরিক বাহিনী গড়ে তুলবে, যা যেকোনো যুদ্ধে ‘লড়তে ও জিততে’ সক্ষম হবে। একই সঙ্গে এই বাহিনী বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থ অত্যন্ত ‘দৃঢ়ভাবে রক্ষা’ করবে।
নথিতে চীনের পুনর্জাগরণের জন্য তিনটি মূল স্বার্থের কথা বলা হয়েছে, যেখানে কোনো সমঝোতার সুযোগ নেই। এর মধ্যে রয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা, অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসার এবং চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক দাবির প্রতিরক্ষা ও সম্প্রসারণ।
মূল্যায়নে আরও দেখা গেছে, সিপিসি তাদের শাসনের প্রতি যেকোনো অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক হুমকি বা সমালোচনার বিষয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল। বিশেষ করে চীনা স্বার্থ রক্ষায় তারা ব্যর্থ হচ্ছে, এমন কোনো সমালোচনা তারা সহ্য করে না।
ভারত-চীন সম্পর্কের বিষয়ে প্রতিবেদনে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) পরিস্থিতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের দুই দিন আগে ভারত সরকার চীনের সঙ্গে এলএসির অমীমাংসিত স্থানগুলো থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার চুক্তির কথা ঘোষণা করে।
এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের মাসিক আলোচনার পথ উন্মুক্ত হয়। যেখানে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সরাসরি বিমান চলাচল, ভিসা সুবিধা সহজীকরণ এবং শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের বিনিময়ের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
যদিও চীন এলএসিতে উত্তেজনা কমিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে চায়, যার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ভারত-মার্কিন সম্পর্ক যেন আরও গভীর হতে না পারে। তবে প্রতিবেদনটিতে এ-ও বলা হয়েছে, ভারত সম্ভবত চীনের কাজ ও উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান থাকবে। পারস্পরিক অবিশ্বাস ও অন্যান্য অস্বস্তিকর বিষয়গুলো দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতিকে সীমিত করে রাখবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে পেন্টাগনের এই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। তাদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা বয়ান ছড়িয়ে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে। তারা দাবি করেছে, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা হ্রাসের বিষয়টি ব্যবহার করে বেইজিং ভারত-মার্কিন সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইছে—পেন্টাগনের এমন দাবি ভিত্তিহীন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘পেন্টাগনের এই প্রতিবেদন চীনের প্রতিরক্ষা নীতিকে বিকৃত করেছে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে চীনের বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। মূলত নিজেদের সামরিক আধিপত্য বজায় রাখতেই যুক্তরাষ্ট্র এমন অজুহাত খুঁজছে।’ চীন এই প্রতিবেদনের তীব্র বিরোধিতা করছে বলে তিনি জানান।
পৃথকভাবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাং শিয়াওগাংও এই প্রতিবেদনের নিন্দা জানিয়েছেন। প্রতিবেদনে পাকিস্তান ও চীনের প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ গবেষণার সহযোগিতা এবং সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনার যে উল্লেখ রয়েছে, ঝাং সেটিকে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বছরের পর বছর ধরে এসব মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। তারা চীনের প্রতিরক্ষা নীতিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছে এবং আমাদের সামরিক বাহিনীর স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডকে কলঙ্কিত করছে।’
ঝাং আরও বলেন, প্রতিবেদনটি ভূরাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে ‘চীনা সামরিক হুমকি’র বিষয়টি বাড়িয়ে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে এই ধরনের মিথ্যা বয়ান এবং উসকানি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে লিন জিয়ান জানান, বেইজিং দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ককে কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ শক্তিশালী করতে, পারস্পরিক আস্থা বাড়াতে এবং মতপার্থক্য সঠিকভাবে পরিচালনা করে একটি স্থিতিশীল সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রস্তুত।’
এলএসি প্রসঙ্গে লিন স্পষ্ট করে বলেন, ‘সীমান্ত সমস্যা চীন ও ভারতের নিজস্ব বিষয়। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি মোটের ওপর স্থিতিশীল এবং দুই দেশের যোগাযোগের পথও খোলা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো দেশের ভিত্তিহীন মন্তব্য চীন মেনে নেবে না।’
২০২৫ সালের জন্য প্রকাশিত এই বার্ষিক প্রতিবেদনে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ আরও বলেছে, চীন সম্ভবত পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে অতিরিক্ত সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। পাকিস্তানের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সেখানে বেইজিং সামরিক সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।

মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে অরুণাচল প্রদেশের ওপর চীনের দাবিকে তাদের ‘কোর ইন্টারেস্ট’ বা মূল স্বার্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই স্বার্থগুলোর বিষয়ে চীন কোনো ধরনের আলোচনা বা আপস করতে রাজি নয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চীনের নেতৃত্ব তাদের ‘মূল স্বার্থে’র পরিধি আরও বাড়িয়ে এখন তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগরের সার্বভৌমত্ব ও সামুদ্রিক বিরোধ, সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, ২০৪৯ সালের মধ্যে ‘চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণের’ জন্য চীন ও এই বিতর্কিত অঞ্চলগুলোর একীকরণ একটি ‘স্বাভাবিক আবশ্যকতা।’ এই ‘পুনর্জাগরণ’ সম্পন্ন হলে চীন বিশ্বমঞ্চে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে এবং এমন এক ‘বিশ্বমানের’ সামরিক বাহিনী গড়ে তুলবে, যা যেকোনো যুদ্ধে ‘লড়তে ও জিততে’ সক্ষম হবে। একই সঙ্গে এই বাহিনী বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থ অত্যন্ত ‘দৃঢ়ভাবে রক্ষা’ করবে।
নথিতে চীনের পুনর্জাগরণের জন্য তিনটি মূল স্বার্থের কথা বলা হয়েছে, যেখানে কোনো সমঝোতার সুযোগ নেই। এর মধ্যে রয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা, অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসার এবং চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক দাবির প্রতিরক্ষা ও সম্প্রসারণ।
মূল্যায়নে আরও দেখা গেছে, সিপিসি তাদের শাসনের প্রতি যেকোনো অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক হুমকি বা সমালোচনার বিষয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল। বিশেষ করে চীনা স্বার্থ রক্ষায় তারা ব্যর্থ হচ্ছে, এমন কোনো সমালোচনা তারা সহ্য করে না।
ভারত-চীন সম্পর্কের বিষয়ে প্রতিবেদনে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) পরিস্থিতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের দুই দিন আগে ভারত সরকার চীনের সঙ্গে এলএসির অমীমাংসিত স্থানগুলো থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার চুক্তির কথা ঘোষণা করে।
এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের মাসিক আলোচনার পথ উন্মুক্ত হয়। যেখানে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সরাসরি বিমান চলাচল, ভিসা সুবিধা সহজীকরণ এবং শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের বিনিময়ের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
যদিও চীন এলএসিতে উত্তেজনা কমিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে চায়, যার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ভারত-মার্কিন সম্পর্ক যেন আরও গভীর হতে না পারে। তবে প্রতিবেদনটিতে এ-ও বলা হয়েছে, ভারত সম্ভবত চীনের কাজ ও উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান থাকবে। পারস্পরিক অবিশ্বাস ও অন্যান্য অস্বস্তিকর বিষয়গুলো দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতিকে সীমিত করে রাখবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে পেন্টাগনের এই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। তাদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা বয়ান ছড়িয়ে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে। তারা দাবি করেছে, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা হ্রাসের বিষয়টি ব্যবহার করে বেইজিং ভারত-মার্কিন সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইছে—পেন্টাগনের এমন দাবি ভিত্তিহীন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘পেন্টাগনের এই প্রতিবেদন চীনের প্রতিরক্ষা নীতিকে বিকৃত করেছে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে চীনের বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। মূলত নিজেদের সামরিক আধিপত্য বজায় রাখতেই যুক্তরাষ্ট্র এমন অজুহাত খুঁজছে।’ চীন এই প্রতিবেদনের তীব্র বিরোধিতা করছে বলে তিনি জানান।
পৃথকভাবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাং শিয়াওগাংও এই প্রতিবেদনের নিন্দা জানিয়েছেন। প্রতিবেদনে পাকিস্তান ও চীনের প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ গবেষণার সহযোগিতা এবং সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনার যে উল্লেখ রয়েছে, ঝাং সেটিকে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বছরের পর বছর ধরে এসব মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। তারা চীনের প্রতিরক্ষা নীতিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছে এবং আমাদের সামরিক বাহিনীর স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডকে কলঙ্কিত করছে।’
ঝাং আরও বলেন, প্রতিবেদনটি ভূরাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে ‘চীনা সামরিক হুমকি’র বিষয়টি বাড়িয়ে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে এই ধরনের মিথ্যা বয়ান এবং উসকানি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে লিন জিয়ান জানান, বেইজিং দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ককে কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ শক্তিশালী করতে, পারস্পরিক আস্থা বাড়াতে এবং মতপার্থক্য সঠিকভাবে পরিচালনা করে একটি স্থিতিশীল সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রস্তুত।’
এলএসি প্রসঙ্গে লিন স্পষ্ট করে বলেন, ‘সীমান্ত সমস্যা চীন ও ভারতের নিজস্ব বিষয়। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি মোটের ওপর স্থিতিশীল এবং দুই দেশের যোগাযোগের পথও খোলা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো দেশের ভিত্তিহীন মন্তব্য চীন মেনে নেবে না।’
২০২৫ সালের জন্য প্রকাশিত এই বার্ষিক প্রতিবেদনে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ আরও বলেছে, চীন সম্ভবত পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে অতিরিক্ত সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। পাকিস্তানের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সেখানে বেইজিং সামরিক সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায়, ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন...
১৭ মে ২০২৫
চীনা শল্যচিকিৎসকেরা এক অভাবনীয় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এক নারীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কান প্রথমে তাঁর পায়ে প্রতিস্থাপন করে, পরবর্তীকালে তা পুনরায় যথাস্থানে ফিরিয়ে এনেছেন। তাঁরা বিশ্বের প্রথম এই ধরনের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন। হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন...
২ ঘণ্টা আগে
পশ্চিমবঙ্গের সুতি থানার অধিবাসী ২০ বছরের তরুণ জুয়েল রানা। মা-বাবার একমাত্র সন্তান। মাত্র পাঁচ দিন আগে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে ওডিশার সম্বলপুরে পা রেখেছিলেন। নিজ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে বাইরে কাজ করতে যাওয়া সেই প্রথম। কিন্তু এই যাওয়াই তাঁর শেষ যাওয়া।
২ ঘণ্টা আগে
চলতি বছরে ভারতের বিজেপি সরকার তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুতে বেশ সরব ছিল। নানা রাজনৈতিক বক্তব্যে এবং আলোচনায় তথাকথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুটিকে তুলে আনা হয়েছে। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার মোদ্দা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে এই তকমা। তবে ভারত সরকার সেখানেই থেকে থাকেনি।
৩ ঘণ্টা আগে