অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায় ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন করে সমুদ্রপথ বেছে নিয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত নতুন মহাসড়ক প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। এই মহাসড়ক মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি-মডাল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মধ্যে সমুদ্রপথে একটি বিকল্প সংযোগ তৈরি হবে।
ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের (এনএইচআইডিসিএল) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা এই প্রকল্পকে ‘জবাব’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গত মার্চে বেইজিং সফরকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত ‘ভূবেষ্টিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, এই অঞ্চলের জন্য ঢাকা ‘মহাসাগরের (প্রবেশের) একমাত্র অভিভাবক।’
শিলংয়ের কাছে মাওলিনখুং থেকে শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত এনএইচ-৬ বরাবর ১৬৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের মহাসড়কটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এনএইচআইডিসিএল এটি বাস্তবায়ন করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মিয়ানমারে কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে হচ্ছে। এটি কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই সিত্তে বন্দর কালাদান নদীর মাধ্যমে মিয়ানমারের পালেতওয়া এবং সেখান থেকে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুইয়ের সঙ্গে যুক্ত।
এনএইচআইডিসিএল-এর কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনএইচআইডিসিএল এই প্রকল্পটি জোরিনপুই থেকে মিজোরামের লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এটি কেবল উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর নয়, পাহাড়ি অঞ্চলেরও এমন প্রকল্প প্রথম। শিলং-শিলচর গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিলচর হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর এবং আসামের বরাক উপত্যকার সংযোগস্থল। ফলে এটি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি প্রধান সংযোগকারী পথ হয়ে উঠবে এবং ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির জন্য এই অঞ্চলকে প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে (ওডিশার) বিশাখাপত্তনম এবং (পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে। এরপর এই উচ্চগতির করিডর সড়কপথে পণ্য পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে।’
বর্তমানে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোগাযোগের একমাত্র পথ শিলিগুড়ি করিডর, যাকে চিকেন’স নেক নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশ পথ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং এই অঞ্চলে জলপথের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। আশা করা হচ্ছে, শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই সংযোগটি পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।
গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে মেঘালয়ে ১৪৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং আসামে ২২ কিলোমিটার। চালু হলে এই নতুন পথটি ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা করবে।
এনএইচআইডিসিএল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই নতুন মহাসড়কটি শিলিগুড়ি করিডরের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অন্যতম চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প হতে চলেছে। কারণ এখানকার ভূখণ্ড খুবই কঠিন এবং বিদ্যমান রাস্তার অবস্থাও ভালো নয়।’
শিলং-শিলচর প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) একটি রূপ হাইব্রিড অ্যানুইটি মোডে (এইচএএম) বাস্তবায়িত হবে। এতে ১৯টি বড় সেতু, ১৫৩টি ছোট সেতু, ৩২৬টি কালভার্ট, ২২টি আন্ডারপাস, ২৬টি ওভারপাস, আটটি সীমিত উচ্চতার সাবওয়ে এবং ৩৪টি ভায়াডাক্ট থাকবে।
এর আগে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত তিনটি চলমান প্রকল্প থেমে গেছে এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের জরিপ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা।
এসব প্রকল্পের আকার প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি বলে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যমটি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে, নয়াদিল্লি এই পরিস্থিতিতে তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে এবং উত্তর ভারতে রেল অবকাঠামো জোরদার করার পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে বিকল্প সংযোগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। সূত্র আরও জানায়, ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির সংযোগ পরিকল্পনা বিবেচনাধীন।
স্থগিত হওয়া প্রকল্পগুলো ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর (সেভেন সিস্টার্স) জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই রাজ্যগুলোর সংযোগ স্থাপিত হলে সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডরের (চিকেন’স নেক) ওপর নির্ভরতা কমতো। এই করিডরটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে আমরা বাংলাদেশে নির্মাণ সামগ্রী বা অন্য কোনো জিনিস সরবরাহ করছি না। প্রতিবেশী দেশটির মাধ্যমে সংযোগকারী রুটের জন্য প্রকল্প তহবিলও স্থগিত রাখা হয়েছে। সেখানে প্রথমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসা প্রয়োজন। তবে ভারতের অংশে নির্মাণকাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।’
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।
আরও খবর পড়ুন:
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ শীতল হয় পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর যোগাযোগের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়ে। এই অবস্থায় ভারত কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নতুন করে সমুদ্রপথ বেছে নিয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত নতুন মহাসড়ক প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। এই মহাসড়ক মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ মাল্টি-মডাল পরিবহন প্রকল্পের সম্প্রসারণ। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো ও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মধ্যে সমুদ্রপথে একটি বিকল্প সংযোগ তৈরি হবে।
ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের (এনএইচআইডিসিএল) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা এই প্রকল্পকে ‘জবাব’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গত মার্চে বেইজিং সফরকালে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত ‘ভূবেষ্টিত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, এই অঞ্চলের জন্য ঢাকা ‘মহাসাগরের (প্রবেশের) একমাত্র অভিভাবক।’
শিলংয়ের কাছে মাওলিনখুং থেকে শিলচরের কাছে পাঁচগ্রাম পর্যন্ত এনএইচ-৬ বরাবর ১৬৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের মহাসড়কটি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এনএইচআইডিসিএল এটি বাস্তবায়ন করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মিয়ানমারে কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে হচ্ছে। এটি কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। এই সিত্তে বন্দর কালাদান নদীর মাধ্যমে মিয়ানমারের পালেতওয়া এবং সেখান থেকে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুইয়ের সঙ্গে যুক্ত।
এনএইচআইডিসিএল-এর কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনএইচআইডিসিএল এই প্রকল্পটি জোরিনপুই থেকে মিজোরামের লংলাই হয়ে আইজল পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এটি কেবল উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর নয়, পাহাড়ি অঞ্চলেরও এমন প্রকল্প প্রথম। শিলং-শিলচর গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিলচর হলো মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মণিপুর এবং আসামের বরাক উপত্যকার সংযোগস্থল। ফলে এটি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য একটি প্রধান সংযোগকারী পথ হয়ে উঠবে এবং ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির জন্য এই অঞ্চলকে প্রবেশদ্বার হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘কালাদান প্রকল্পের সহায়তায় পণ্যসামগ্রী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে (ওডিশার) বিশাখাপত্তনম এবং (পশ্চিমবঙ্গের) কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছাবে। এরপর এই উচ্চগতির করিডর সড়কপথে পণ্য পরিবহনের নিশ্চয়তা দেবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে।’
বর্তমানে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোগাযোগের একমাত্র পথ শিলিগুড়ি করিডর, যাকে চিকেন’স নেক নামেও পরিচিত। অন্য দুটি প্রবেশ পথ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে এবং এই অঞ্চলে জলপথের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তাই বিকল্প হিসেবে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে কালাদান প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। আশা করা হচ্ছে, শিলং-শিলচর মহাসড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই সংযোগটি পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।
গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে মেঘালয়ে ১৪৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং আসামে ২২ কিলোমিটার। চালু হলে এই নতুন পথটি ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে মাত্র পাঁচ ঘণ্টা করবে।
এনএইচআইডিসিএল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই নতুন মহাসড়কটি শিলিগুড়ি করিডরের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অন্যতম চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প হতে চলেছে। কারণ এখানকার ভূখণ্ড খুবই কঠিন এবং বিদ্যমান রাস্তার অবস্থাও ভালো নয়।’
শিলং-শিলচর প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) একটি রূপ হাইব্রিড অ্যানুইটি মোডে (এইচএএম) বাস্তবায়িত হবে। এতে ১৯টি বড় সেতু, ১৫৩টি ছোট সেতু, ৩২৬টি কালভার্ট, ২২টি আন্ডারপাস, ২৬টি ওভারপাস, আটটি সীমিত উচ্চতার সাবওয়ে এবং ৩৪টি ভায়াডাক্ট থাকবে।
এর আগে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রেল সংযোগ প্রকল্পের অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত তিনটি চলমান প্রকল্প থেমে গেছে এবং আরও পাঁচটি প্রকল্পের জরিপ কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রকল্পগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা।
এসব প্রকল্পের আকার প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি বলে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যমটি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়েছে জানিয়েছে, নয়াদিল্লি এই পরিস্থিতিতে তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে এবং উত্তর ভারতে রেল অবকাঠামো জোরদার করার পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে বিকল্প সংযোগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। সূত্র আরও জানায়, ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার কোটি রুপির সংযোগ পরিকল্পনা বিবেচনাধীন।
স্থগিত হওয়া প্রকল্পগুলো ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর (সেভেন সিস্টার্স) জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই রাজ্যগুলোর সংযোগ স্থাপিত হলে সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডরের (চিকেন’স নেক) ওপর নির্ভরতা কমতো। এই করিডরটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে আমরা বাংলাদেশে নির্মাণ সামগ্রী বা অন্য কোনো জিনিস সরবরাহ করছি না। প্রতিবেশী দেশটির মাধ্যমে সংযোগকারী রুটের জন্য প্রকল্প তহবিলও স্থগিত রাখা হয়েছে। সেখানে প্রথমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসা প্রয়োজন। তবে ভারতের অংশে নির্মাণকাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।’
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।
আরও খবর পড়ুন:
ইরাকের শীর্ষ শিয়া ধর্মীয় নেতা গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ আলি আল-সিস্তানি সতর্ক করেছেন, ইরানের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হলে পুরো অঞ্চলের ওপর ভয়াবহ পরিণতি নেমে আসবে।
১৬ মিনিট আগেইরানের বিয়ারশেভা শহরের ওপর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি সরাসরি বলেছেন, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করাই এখন ইসরায়েলের যুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য।
১ ঘণ্টা আগেচলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি তাঁর দেশের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য জেনেভায় যাচ্ছেন। আগামীকাল শুক্রবার (২০ জুন) সেখানে তিনি ইউরোপের প্রধান তিন শক্তি—ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
১ ঘণ্টা আগেইসরায়েলি সেনাবাহিনী-আইডিএফের তথ্যমতে, এই নাম নেওয়া হয়েছে ধর্মীয় গ্রন্থ বাইবেল থেকে। বাইবেলের একটি শ্লোকে ইসরায়েলের বিজয়সংক্রান্ত একটি ভবিষ্যদ্বাণীতে বলা হয়, ‘দেখো, এই জাতি এক মহাসিংহের মতো জেগে উঠবে এবং নিজেকে মেলে ধরবে এক যুবক সিংহের মতো। যতক্ষণ না শিকারের রক্ত পান করবে, ততক্ষণ সে থামবে না।’
২ ঘণ্টা আগে