আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা

দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন যাতে গতিশীল থাকে, সে জন্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অনেক কোম্পানির মাধ্যমে এ খাতের কার্যক্রমের বড় অংশ পরিচালনা করে থাকে সরকার। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কোম্পানিগুলোর কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের। কিন্তু তাঁরা নিজেরাই এসব কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে বসে আছেন। এতে সরকারের নিয়মিত কাজ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি ছাড় পেয়ে যাচ্ছে কোম্পানির নানা অনিয়ম–দুর্নীতিও।
বিদ্যুৎ খাতের ১৫টি ও জ্বালানি খাতের ১৬টি কোম্পানির তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিদ্যুৎ খাতের আটটি কোম্পানির চেয়ারম্যান হলেন বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান। জ্বালানি খাতের সাতটি কোম্পানির চেয়ারম্যান জ্বালানি সচিব মো. নূরুল আলম। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান ও সরকারের সচিব মো. আমিন উল আহসানের ভাগে আছে ছয়টি কোম্পানির চেয়ারম্যানের পদ। আর পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান সরকারের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার আছেন চারটি কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর কাজের যে ধরন, তাতে এ খাতের কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের থাকা উচিত বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, সরকারের সচিব হিসেবে শীর্ষ আমলাদের দায়িত্ব হলো, তাঁদের অধীনে থাকা কোম্পানিগুলোর অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করা। কিন্তু সচিবেরা যদি কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে বসে থাকেন, তাতে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তা হিসেবে (আপ স্ট্রিম রেগুলেটরি বডি) সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁদের পক্ষে কঠোর হওয়া সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আজকের পত্রিকা’কে বলেন, সচিবদের বোর্ডের চেয়ারম্যান হতে আইনে কোনো বাধা নেই। আইন মেনেই তাঁরা বোর্ড পরিচালনা করছেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান যে আটটি কোম্পানির চেয়ারম্যান, সেগুলো হলো পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), নর্থ–ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল), আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল), কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল), বাংলাদেশ–ভারত ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানি লিমিটেড (বিআইপিসিএল), বাংলাদেশ–চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) ও বাংলাদেশ–চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড (বিসিআরইসিএল)।
এগুলোর মধ্যে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রয়েছে পিজিসিবিতে, প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। বিসিপিসিএল, এপিএসসিএলেও উল্লেখযোগ্য কেনাকাটা রয়েছে। এ ছাড়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠান বিআইপিসিএলে প্রতিবছর কয়লা কেনা ও পরিবহনে হাজার কোটি টাকার কেনাকাটা হয়। এসব দরপত্রে বোর্ড চেয়ারম্যানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোম্পানির বোর্ড পরিচালকেরা একবার পর্ষদ সভায় হাজির হলেই ১২ হাজার টাকা সম্মানী পান। বছরে একটি কোম্পানি পরিচালকদের নিয়ে ১৫ থেকে ২০টি বৈঠক হয়। এ হিসাবে বছরে একটি কোম্পানি থেকে বোর্ড সভার বৈঠক বাবদ ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা সম্মানী পান একজন পরিচালক। সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান যেহেতু আটটি কোম্পানির চেয়ারম্যান, সে হিসেবে বছরে প্রায় ২০ লাখ টাকা সম্মানী ভাতা পাওয়ার কথা তাঁর, যা তাঁর মূল বেতনের দ্বিগুণের বেশি। উল্লেখ্য, একজন সিনিয়র বিদ্যুৎসচিবের বছরে মূল বেতন মাসে ৮২ হাজার টাকা, বছরে ৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
একাই আটটি কোম্পানির চেয়ারম্যান হওয়ার বিষয়ে বক্তব্য নিতে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
জ্বালানিসচিব মো. নূরুল আলম সরকারের সাতটি কোম্পানি এবং একটি ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান। এগুলো হলো বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স), গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল), বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল), তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, বিজিএফসিএলের মালিকানাধীন ৬টি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। দেশের সব থেকে বড় গ্যাসক্ষেত্র তিতাসের মালিকানাও বিজিএফসিএলের। এসব প্রতিষ্ঠান বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার কেনাকাটা করে, যার দরপত্রে বোর্ডের চেয়ারম্যানের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। এ ছাড়া এসব কোম্পানির পর্ষদ বৈঠক থেকেও তিনি বড় অঙ্কের সম্মানী পেয়ে থাকেন।
সরকারের সচিব পদমর্যাদায় মাসে মূল বেতন পান ৭৮ হাজার টাকা এবং বছরে ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা মূল বেতন পান মো. নূরুল আলম। অন্যদিকে ইনস্টিটিউট ও কোম্পানির পরিচালক বোর্ডের মিটিংয়ে পান প্রতিটির জন্য ১২ হাজার টাকা। বছরে ১৫ থেকে ২০টি বৈঠক করে ৮টি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা সম্মানী পান তিনিও।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে জ্বালানিসচিব নূরুল আলমকে ফোন করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান এবং এসএমএসের মাধ্যমে প্রশ্ন জানাতে বলেন। এসএমএসে প্রশ্ন জানানো হলে আর সাড়া দেননি তিনি। এরপর বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান ও সরকারের সচিব মো. আমিন উল আহসান আছেন পাঁচটি কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে। এগুলো হলো যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, এলপিজি লিমিটেড, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স পিএলসি, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল), জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড। মো. আমিন উল আহসান বছরে মূল বেতন পান ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। আর কোম্পানিগুলোর বোর্ড সভায় হাজিরা দিয়ে তার চেয়েও বেশি পান, প্রায় ১২ লাখ টাকা। এ বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যানকে ফোন ও ম্যাসেজ পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার চারটি সরকারি কোম্পানির চেয়ারম্যান। এগুলো হলো বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনার দায়িত্বে থাকা রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল), বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল), মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড ও জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড। সরকারের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দ্বিতীয় গ্রেডে জনেন্দ্র নাথ সরকার মাসে মূল বেতন পান ৭৬ হাজার ৪৯০ টাকা, বছরে তিনি বেতন পান প্রায় ৯ লাখ ১৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে চারটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে বোর্ডে হাজিরা দিয়ে বছরে পান প্রায় ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এই অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে থাকা চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরপিজিসিএল বিদেশ থেকে এলএনজি কিনে থাকে বছরে অন্তত ৪০ হাজার কোটি টাকার। বিষয়টি নিয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
আছে আরও অনেক সুযোগ
সরকারের যেসব কোম্পানি লাভে রয়েছে এবং যারা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত, সেসব কোম্পানি ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানকে নগদ অর্থ দিয়ে থাকে। তবে এই অর্থ কোনো হিসাবে থাকে না। তিতাস গ্যাস গত অর্থবছরে এ রকম ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জ্বালানি সচিবকে। আর জ্বালানি সচিব লাভজনক প্রতিটি কোম্পানি থেকে নগদ পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা করে।
তিতাস গ্যাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, কোনো নতুন শিল্প–সংযোগ ও চাপ বৃদ্ধির আবেদন মোটা অঙ্কের অর্থ ছাড়া বোর্ড সভায় পাস হয় না। এ ক্ষেত্রে একটি নতুন শিল্প–সংযোগের জন্য বোর্ড সভার অনুমোদনের জন্য ঘুষ দিতে হয় ৩ থেকে ৪ কোটি, আর চাপ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দিতে হয় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব সরকারের দেওয়া গাড়ি ব্যবহার করেন। এরপরও বিদ্যুৎসচিব মো. হাবিবুর ব্যবহার করেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) দেওয়া পাজেরো। আর জ্বালানিসচিব নূরুল আলম ব্যবহার করেন তিতাসের দেওয়া পাজেরো।
কোম্পানির গাড়ি ব্যবহার করেন যুগ্ম সচিব
সরকারি কোম্পানি বি–আর পাওয়ারজেন লিমিটেডের পরিচালক সরকারের যুগ্ম সচিব নিরোদ চন্দ্র মণ্ডল। তিনি ওই কোম্পানি থেকে নিয়েছেন দামি পাজেরো গাড়ি। নাম–পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন শীর্ষ আমলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরোদ চন্দ্র মণ্ডল বিদ্যুৎ বিভাগের নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রধান হিসেবে বহুদিন রয়েছেন। আর বি–আর পাওয়ারজেন জামালপুরের মাদারগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যু প্রকল্পের অনুমতিও নিরোদ চন্দ্র মণ্ডলের শাখা থেকে হয়েছে। এমনকি চীনা কোম্পানি সিআরইসি ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবলকে ৭০ শতাংশ মালিকানা দিয়ে এই কেন্দ্রের অনুমতি দেওয়া হয়, এটা ছিল নজিরবিহীন। এর আগে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতের সব বিদেশি কোম্পানিকে মালিকানা দেওয়া হয় ৫০ শতাংশ। এসবের প্রভাবে তিনি বি–আর পাওয়ারজেন থেকে নিয়েছেন দামি পাজেরো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোম্পানি করা হয়েছিল মূলত এটা পেশাদারেরা চালাবেন, তাতে গতি আসবে, দুর্নীতি কমবে; স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। অথচ প্রতিটি কোম্পানির চেয়ারম্যান হলেন সচিবেরা। তাঁরা এখানে দুর্নীতি করে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে আবার নিজের কোম্পানিকে রক্ষা করেন। এ রকম একটি দুর্নীতির খবর আমরা পত্রিকায় পড়েছিলাম। সেটি ছিল এপিএসসিএলের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেনের। প্রতিটি কেনাকাটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে এ রকম দুর্নীতি ও অপশাসন বেরিয়ে আসবে।
শামসুল আলম আরও বলেন, একেকটি কোম্পানি থেকে বছরে লাখ লাখ টাকা তাঁরা বোর্ড মিটিংয়ের নামে নেন, গাড়ি নেন, বছর শেষে গোপনে লভ্যাংশ নেন। আবার ওই কোম্পানির হয়ে বিদেশ সফর করেন। অথচ সচিবদের দায়িত্ব ছিল কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রক হিসেবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
নজির আছে চেয়ারম্যানদের দুর্নীতির
২০১৫ সালের মে মাসে এপিএসসিএলের চেয়ারম্যান ও তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন এবং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরুল আলমের বিরুদ্ধে ৬৪ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। এপিএসসিএলের ৪৫০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে স্পেনের দুটি কোম্পানি টেকনিকাস রিইউনিডাস ও টিএসকের কাছ থেকে এই ঘুষ নেন তাঁরা। ঘুষের টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় কেনা হয়েছে দুটি বাড়ি, একটি ফ্ল্যাট ও দামি গাড়ি। গড়ে তোলা হয়েছে দুটি কোম্পানি।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ পাওয়া দুই স্প্যানিশ কোম্পানি ২০১৪ সালের মার্চে ঘুষের অর্থ স্পেনের মাদ্রিদ থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো শহরের ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকে পাঠায়। সুনির্দিষ্ট এই অভিযোগের পর বিদ্যুৎ বিভাগ একটি তদন্ত কমিটি করে। ৩০ দিনের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেই অর্থ ফেরতও আনেনি সরকার। উল্টো আনোয়ার হোসেনকে সরকার দেশের সব থেকে বড় উন্নয়ন প্রকল্প পাবনার রূপপুরের দায়িত্বে থাকা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব বানান, পরে তিনি এই পদ থেকে অবসরে যান। আর নূরুল আলমকে পলাতক দেখায় তদন্ত কমিটি।
অতিরিক্ত দামে কেনাকাটাসহ সুনির্দিষ্ট ৮টি অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) বিরুদ্ধে। এর মধ্যে একটি ছিল অস্বাভাবিক দামে নাট–বল্টু কেনা। ভারত থেকে ৬৮ কেজি নাট, বল্টু ও ওয়াশার আমদানি করেছে পিজিসিবিএল। এর দাম হওয়ার কথা ছিল ১৪৮ ডলার বা ১৬ হাজার টাকা। সেটা তারা কিনেছে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৫ ডলার বা ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা দিয়ে। পিজিসিবিএলের চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টিবিইএ কোম্পানি লিমিটেড ভারতের স্কিপার লিমিটেড থেকে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ১ হাজার ৬১৯ গুণ বেশি দামে আমদানি করেছে এগুলো। এই কোম্পানির বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন যাতে গতিশীল থাকে, সে জন্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অনেক কোম্পানির মাধ্যমে এ খাতের কার্যক্রমের বড় অংশ পরিচালনা করে থাকে সরকার। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কোম্পানিগুলোর কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের। কিন্তু তাঁরা নিজেরাই এসব কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে বসে আছেন। এতে সরকারের নিয়মিত কাজ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি ছাড় পেয়ে যাচ্ছে কোম্পানির নানা অনিয়ম–দুর্নীতিও।
বিদ্যুৎ খাতের ১৫টি ও জ্বালানি খাতের ১৬টি কোম্পানির তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিদ্যুৎ খাতের আটটি কোম্পানির চেয়ারম্যান হলেন বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান। জ্বালানি খাতের সাতটি কোম্পানির চেয়ারম্যান জ্বালানি সচিব মো. নূরুল আলম। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান ও সরকারের সচিব মো. আমিন উল আহসানের ভাগে আছে ছয়টি কোম্পানির চেয়ারম্যানের পদ। আর পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান সরকারের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার আছেন চারটি কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর কাজের যে ধরন, তাতে এ খাতের কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের থাকা উচিত বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, সরকারের সচিব হিসেবে শীর্ষ আমলাদের দায়িত্ব হলো, তাঁদের অধীনে থাকা কোম্পানিগুলোর অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করা। কিন্তু সচিবেরা যদি কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে বসে থাকেন, তাতে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তা হিসেবে (আপ স্ট্রিম রেগুলেটরি বডি) সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁদের পক্ষে কঠোর হওয়া সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আজকের পত্রিকা’কে বলেন, সচিবদের বোর্ডের চেয়ারম্যান হতে আইনে কোনো বাধা নেই। আইন মেনেই তাঁরা বোর্ড পরিচালনা করছেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান যে আটটি কোম্পানির চেয়ারম্যান, সেগুলো হলো পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), নর্থ–ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল), আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল), কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল), বাংলাদেশ–ভারত ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানি লিমিটেড (বিআইপিসিএল), বাংলাদেশ–চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) ও বাংলাদেশ–চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড (বিসিআরইসিএল)।
এগুলোর মধ্যে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রয়েছে পিজিসিবিতে, প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। বিসিপিসিএল, এপিএসসিএলেও উল্লেখযোগ্য কেনাকাটা রয়েছে। এ ছাড়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠান বিআইপিসিএলে প্রতিবছর কয়লা কেনা ও পরিবহনে হাজার কোটি টাকার কেনাকাটা হয়। এসব দরপত্রে বোর্ড চেয়ারম্যানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোম্পানির বোর্ড পরিচালকেরা একবার পর্ষদ সভায় হাজির হলেই ১২ হাজার টাকা সম্মানী পান। বছরে একটি কোম্পানি পরিচালকদের নিয়ে ১৫ থেকে ২০টি বৈঠক হয়। এ হিসাবে বছরে একটি কোম্পানি থেকে বোর্ড সভার বৈঠক বাবদ ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা সম্মানী পান একজন পরিচালক। সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান যেহেতু আটটি কোম্পানির চেয়ারম্যান, সে হিসেবে বছরে প্রায় ২০ লাখ টাকা সম্মানী ভাতা পাওয়ার কথা তাঁর, যা তাঁর মূল বেতনের দ্বিগুণের বেশি। উল্লেখ্য, একজন সিনিয়র বিদ্যুৎসচিবের বছরে মূল বেতন মাসে ৮২ হাজার টাকা, বছরে ৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
একাই আটটি কোম্পানির চেয়ারম্যান হওয়ার বিষয়ে বক্তব্য নিতে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
জ্বালানিসচিব মো. নূরুল আলম সরকারের সাতটি কোম্পানি এবং একটি ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান। এগুলো হলো বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স), গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল), বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল), তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, বিজিএফসিএলের মালিকানাধীন ৬টি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। দেশের সব থেকে বড় গ্যাসক্ষেত্র তিতাসের মালিকানাও বিজিএফসিএলের। এসব প্রতিষ্ঠান বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার কেনাকাটা করে, যার দরপত্রে বোর্ডের চেয়ারম্যানের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। এ ছাড়া এসব কোম্পানির পর্ষদ বৈঠক থেকেও তিনি বড় অঙ্কের সম্মানী পেয়ে থাকেন।
সরকারের সচিব পদমর্যাদায় মাসে মূল বেতন পান ৭৮ হাজার টাকা এবং বছরে ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা মূল বেতন পান মো. নূরুল আলম। অন্যদিকে ইনস্টিটিউট ও কোম্পানির পরিচালক বোর্ডের মিটিংয়ে পান প্রতিটির জন্য ১২ হাজার টাকা। বছরে ১৫ থেকে ২০টি বৈঠক করে ৮টি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা সম্মানী পান তিনিও।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে জ্বালানিসচিব নূরুল আলমকে ফোন করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান এবং এসএমএসের মাধ্যমে প্রশ্ন জানাতে বলেন। এসএমএসে প্রশ্ন জানানো হলে আর সাড়া দেননি তিনি। এরপর বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান ও সরকারের সচিব মো. আমিন উল আহসান আছেন পাঁচটি কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে। এগুলো হলো যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, এলপিজি লিমিটেড, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স পিএলসি, ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল), জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড। মো. আমিন উল আহসান বছরে মূল বেতন পান ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। আর কোম্পানিগুলোর বোর্ড সভায় হাজিরা দিয়ে তার চেয়েও বেশি পান, প্রায় ১২ লাখ টাকা। এ বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যানকে ফোন ও ম্যাসেজ পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার চারটি সরকারি কোম্পানির চেয়ারম্যান। এগুলো হলো বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনার দায়িত্বে থাকা রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল), বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল), মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড ও জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড। সরকারের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দ্বিতীয় গ্রেডে জনেন্দ্র নাথ সরকার মাসে মূল বেতন পান ৭৬ হাজার ৪৯০ টাকা, বছরে তিনি বেতন পান প্রায় ৯ লাখ ১৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে চারটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে বোর্ডে হাজিরা দিয়ে বছরে পান প্রায় ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এই অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে থাকা চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরপিজিসিএল বিদেশ থেকে এলএনজি কিনে থাকে বছরে অন্তত ৪০ হাজার কোটি টাকার। বিষয়টি নিয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
আছে আরও অনেক সুযোগ
সরকারের যেসব কোম্পানি লাভে রয়েছে এবং যারা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত, সেসব কোম্পানি ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানকে নগদ অর্থ দিয়ে থাকে। তবে এই অর্থ কোনো হিসাবে থাকে না। তিতাস গ্যাস গত অর্থবছরে এ রকম ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জ্বালানি সচিবকে। আর জ্বালানি সচিব লাভজনক প্রতিটি কোম্পানি থেকে নগদ পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা করে।
তিতাস গ্যাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, কোনো নতুন শিল্প–সংযোগ ও চাপ বৃদ্ধির আবেদন মোটা অঙ্কের অর্থ ছাড়া বোর্ড সভায় পাস হয় না। এ ক্ষেত্রে একটি নতুন শিল্প–সংযোগের জন্য বোর্ড সভার অনুমোদনের জন্য ঘুষ দিতে হয় ৩ থেকে ৪ কোটি, আর চাপ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দিতে হয় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব সরকারের দেওয়া গাড়ি ব্যবহার করেন। এরপরও বিদ্যুৎসচিব মো. হাবিবুর ব্যবহার করেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) দেওয়া পাজেরো। আর জ্বালানিসচিব নূরুল আলম ব্যবহার করেন তিতাসের দেওয়া পাজেরো।
কোম্পানির গাড়ি ব্যবহার করেন যুগ্ম সচিব
সরকারি কোম্পানি বি–আর পাওয়ারজেন লিমিটেডের পরিচালক সরকারের যুগ্ম সচিব নিরোদ চন্দ্র মণ্ডল। তিনি ওই কোম্পানি থেকে নিয়েছেন দামি পাজেরো গাড়ি। নাম–পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন শীর্ষ আমলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরোদ চন্দ্র মণ্ডল বিদ্যুৎ বিভাগের নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রধান হিসেবে বহুদিন রয়েছেন। আর বি–আর পাওয়ারজেন জামালপুরের মাদারগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যু প্রকল্পের অনুমতিও নিরোদ চন্দ্র মণ্ডলের শাখা থেকে হয়েছে। এমনকি চীনা কোম্পানি সিআরইসি ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবলকে ৭০ শতাংশ মালিকানা দিয়ে এই কেন্দ্রের অনুমতি দেওয়া হয়, এটা ছিল নজিরবিহীন। এর আগে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতের সব বিদেশি কোম্পানিকে মালিকানা দেওয়া হয় ৫০ শতাংশ। এসবের প্রভাবে তিনি বি–আর পাওয়ারজেন থেকে নিয়েছেন দামি পাজেরো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোম্পানি করা হয়েছিল মূলত এটা পেশাদারেরা চালাবেন, তাতে গতি আসবে, দুর্নীতি কমবে; স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। অথচ প্রতিটি কোম্পানির চেয়ারম্যান হলেন সচিবেরা। তাঁরা এখানে দুর্নীতি করে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে আবার নিজের কোম্পানিকে রক্ষা করেন। এ রকম একটি দুর্নীতির খবর আমরা পত্রিকায় পড়েছিলাম। সেটি ছিল এপিএসসিএলের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেনের। প্রতিটি কেনাকাটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে এ রকম দুর্নীতি ও অপশাসন বেরিয়ে আসবে।
শামসুল আলম আরও বলেন, একেকটি কোম্পানি থেকে বছরে লাখ লাখ টাকা তাঁরা বোর্ড মিটিংয়ের নামে নেন, গাড়ি নেন, বছর শেষে গোপনে লভ্যাংশ নেন। আবার ওই কোম্পানির হয়ে বিদেশ সফর করেন। অথচ সচিবদের দায়িত্ব ছিল কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রক হিসেবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
নজির আছে চেয়ারম্যানদের দুর্নীতির
২০১৫ সালের মে মাসে এপিএসসিএলের চেয়ারম্যান ও তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন এবং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরুল আলমের বিরুদ্ধে ৬৪ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। এপিএসসিএলের ৪৫০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে স্পেনের দুটি কোম্পানি টেকনিকাস রিইউনিডাস ও টিএসকের কাছ থেকে এই ঘুষ নেন তাঁরা। ঘুষের টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় কেনা হয়েছে দুটি বাড়ি, একটি ফ্ল্যাট ও দামি গাড়ি। গড়ে তোলা হয়েছে দুটি কোম্পানি।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ পাওয়া দুই স্প্যানিশ কোম্পানি ২০১৪ সালের মার্চে ঘুষের অর্থ স্পেনের মাদ্রিদ থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো শহরের ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকে পাঠায়। সুনির্দিষ্ট এই অভিযোগের পর বিদ্যুৎ বিভাগ একটি তদন্ত কমিটি করে। ৩০ দিনের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেই অর্থ ফেরতও আনেনি সরকার। উল্টো আনোয়ার হোসেনকে সরকার দেশের সব থেকে বড় উন্নয়ন প্রকল্প পাবনার রূপপুরের দায়িত্বে থাকা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব বানান, পরে তিনি এই পদ থেকে অবসরে যান। আর নূরুল আলমকে পলাতক দেখায় তদন্ত কমিটি।
অতিরিক্ত দামে কেনাকাটাসহ সুনির্দিষ্ট ৮টি অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) বিরুদ্ধে। এর মধ্যে একটি ছিল অস্বাভাবিক দামে নাট–বল্টু কেনা। ভারত থেকে ৬৮ কেজি নাট, বল্টু ও ওয়াশার আমদানি করেছে পিজিসিবিএল। এর দাম হওয়ার কথা ছিল ১৪৮ ডলার বা ১৬ হাজার টাকা। সেটা তারা কিনেছে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৫ ডলার বা ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা দিয়ে। পিজিসিবিএলের চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টিবিইএ কোম্পানি লিমিটেড ভারতের স্কিপার লিমিটেড থেকে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ১ হাজার ৬১৯ গুণ বেশি দামে আমদানি করেছে এগুলো। এই কোম্পানির বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান।
আরও খবর পড়ুন:

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১১ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৬ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন যাতে গতিশীল থাকে, সে জন্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অনেক কোম্পানির মাধ্যমে এ খাতের কার্যক্রমের বড় অংশ পরিচালনা করে থাকে সরকার। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কোম্পানিগুলোর কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের। কিন্তু তাঁরা নিজেরাই এসব কো
১৫ জুলাই ২০২৪
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন যাতে গতিশীল থাকে, সে জন্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অনেক কোম্পানির মাধ্যমে এ খাতের কার্যক্রমের বড় অংশ পরিচালনা করে থাকে সরকার। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কোম্পানিগুলোর কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের। কিন্তু তাঁরা নিজেরাই এসব কো
১৫ জুলাই ২০২৪
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১১ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন যাতে গতিশীল থাকে, সে জন্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অনেক কোম্পানির মাধ্যমে এ খাতের কার্যক্রমের বড় অংশ পরিচালনা করে থাকে সরকার। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কোম্পানিগুলোর কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের। কিন্তু তাঁরা নিজেরাই এসব কো
১৫ জুলাই ২০২৪
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১১ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন যাতে গতিশীল থাকে, সে জন্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অনেক কোম্পানির মাধ্যমে এ খাতের কার্যক্রমের বড় অংশ পরিচালনা করে থাকে সরকার। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কোম্পানিগুলোর কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের। কিন্তু তাঁরা নিজেরাই এসব কো
১৫ জুলাই ২০২৪
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১১ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৫ ঘণ্টা আগে