Ajker Patrika

শেষ সময়ে মার্তিনেজ-জাদু, আর্জেন্টিনার রেকর্ড কোপা জয়

অয়ন রায়, ঢাকা 
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৪, ১১: ৪৮
শেষ সময়ে মার্তিনেজ-জাদু, আর্জেন্টিনার রেকর্ড কোপা জয়

দর্শকদের উত্তেজনা, লিওনেল মেসির কান্না, খেলোয়াড়দের হাতাহাতি—মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া ফাইনালে কী ছিল না আজ! সব ছাপিয়ে শেষ হাসি হাসে আর্জেন্টিনা। লাওতারো মার্তিনেজের শেষ সময়ের ম্যাজিকে কোপা আমেরিকায় রেকর্ড ১৬ বার শিরোপা জয়ের কীর্তি গড়ে আকাশী-নীলরা। অন্যদিকে ২৩ বছর পর শিরোপার  কাছাকাছি এসেও ফিরে আসতে হয়েছে কলম্বিয়াকে।  

বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল কোপার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। তবে কলম্বিয়ার দর্শকদের বিশৃঙ্খলার কারণে দফায় দফায় পিছিয়ে যায় ম্যাচ শুরুর সময়। ৮০ মিনিটে দেরিতে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ২০ মিনিটে শুরু হয় আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া ফাইনাল। ৯০ মিনিটের লড়াইয়েও কোনো দল গোলমুখ খুলতে পারেনি। সেখানে অতিরিক্ত সময়ে লাওতারো মার্তিনেজের দুর্দান্ত গোল করে আর্জেন্টিনাকে এনে দেন উদযাপনের উপলক্ষ্য। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা নিজেদের কাছে রাখার মিশনে সফল হলো লিওনেল স্কালোনির দল। ডাগআউটে বসে থাকা মেসির কান্না রূপ নিয়েছে হাসিতে। সুদূর ফ্লোরিডায় আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ের আনন্দ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ঢাকায়।

ম্যাচের একেবারে শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। ১ মিনিটে গঞ্জালো মন্তিয়েলের ক্রস থেকে ডান পায়ে শট নিলেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি হুলিয়ান আলভারেজ। শুরুতে আকাশী-নীলদের ব্যর্থতার পরপরই আর্জেন্টিনার ওপর পাল্টা আক্রমণ করে কলম্বিয়া। ৫ মিনিটে রিকার্ডো রিওসের অ্যাসিস্টে ডান পায়ে শট নেন কলম্বিয়ার ফরোয়ার্ড লুইস দিয়াজ। তবে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ তা প্রতিহত করেছেন। 

পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল কলম্বিয়া। ৭ মিনিটে সান্টিয়াগো আরিয়াসের হেড থেকে পাস রিভিস করে ডান পায়ে শটও নেন জন কর্ডোবা। তবে কর্ডোবার শট গোলপোস্টের বাঁ পাশে লেগে ফিরে যায়। কলম্বিয়ার সুযোগ মিসের মহড়ায় পাল্টা আক্রমণে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। ২০ মিনিটে দি মারিয়ার পাস রিসিভ করে মেসি শট নেন। তবে বক্সের মধ্যে আলভারেজের পা লেগে যাওয়ার পর খুব সহজেই সেটা প্রতিহত করেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ক্যামিলো ভার্গাস।

আর্জেন্টিনার সহজ সুযোগ হারানোর পর কলম্বিয়া লাগাতার আক্রমণ করেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। নিজেদের ফিনিশিং দুর্বলতা তো ছিলই, পাশাপাশি মার্তিনেজ গোলপোস্টের সামনে বরাবরের মতোই ‘চীনের মহাপ্রাচীর’ হিসেবে আগলে রেখেছেন। প্রথমার্ধের শেষে অবশ্য গোল পেতে পারত আর্জেন্টিনা। ৪৪ মিনিটের সময় সেটপিস থেকে মেসির ক্রসে নিকোলাস তাগলিয়াফিকো হেড দিলেও তা বক্সের অনেক ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ড্রয়ে।

কোপা আমেরিকায় রেকর্ড ১৬তম শিরোপা জয়ের পর আর্জেন্টিনার উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপিদ্বিতীয়ার্ধেও দুই দল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে। ৪৭ মিনিটে আরিয়াসের শট একটু এদিক-ওদিক হলেই গোল পেতে পারত কলম্বিয়া। তবে আর্জেন্টিনা গোলমুখ খোলার চেষ্টায় আর্জেন্টিনা বেশি প্রেসিং শুরু করে। দি মারিয়া কলম্বিয়ার রক্ষণদুর্গ কাঁপিয়ে দেন ক্ষণে ক্ষণে। তবে কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভারগাসের দৃঢ়তায় ৪৮ ও ৫৮ মিনিটে দুই বার গোল করতে পারেননি দি মারিয়া। উপরন্তু বিদায়ী ম্যাচে দি মারিয়াকে বাজে ট্যাকল করায় ডাগআউটে উত্তেজিত অবস্থায় দেখা গেছে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিকে।

একের পর এক সুযোগ মিসের মহড়ার মধ্যে আর্জেন্টিনা বড়সড় এক ধাক্কা খায়। ৬৫ মিনিটে গোঁড়ালির চোটের কাছে হার মেনে মাঠেই পড়ে যান মেসি। ফিজিও এসে সেবা শুশ্রূষা করার পর আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলারকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়। ডাগআউটে হতাশায় বুট ছুড়ে মারলেন, মুখ ঢেকে অঝোরে কাঁদতে লাগলেন। সে কান্না ছুঁয়ে গেল সব আর্জেন্টাইন সমর্থকদের।

ডাগআউটে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর দুঃখ ভোলার উপলক্ষ প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন মেসি। ৭৫ মিনিটে আর্জেন্টিনার গোলের পর তাঁর মুখে হাসিও দেখা যায়। তবে সেটা সাময়িক সময়ের জন্য। আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার নিকোলাস তাগলিয়াফিকো অফসাইডে থাকলে গোল বাতিল করা হয়। আবারও মেসির মুখে ফিরে আসে হতাশা। ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত ৫ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ হলেও কোনো দলই গোল করতে পারেনি।

নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তখন আরও জোর গতিতে প্রেসিং করে আর্জেন্টিনা। তবে কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভার্গাস যে ‘ধনুক ভাঙা পণ’ করে নেমেছেন। অতন্দ্র প্রহরীর মতো গোলপোস্ট পাহারা দিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা দি মারিয়া একের পর এক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারছিলেন না। ১১২ মিনিটে জিওভান্নি লো সেলসোর থ্রু বল থেকে ডান পায়ের শটে দারুণ এক লক্ষ্যভেদ করেন লাওতারো। শেষ পর্যন্ত ১৬তম কোপা আমেরিকা জয়ের আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।

কোপা আমেরিকায় সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ডের পাশাপাশি শিরোপা নিজেদের কাছে রেখে দিল আর্জেন্টিনা। ২০২১ কোপা জিতেই দীর্ঘ ২৮ বছরের শিরোপাখরা কাটিয়েছিল আকাশী-নীল জার্সিধারীরা। ক্লাব ফুটবলে একের পর এক শিরোপা জয়ী মেসিরও সেটা  আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রথম শিরোপা। সেই ধারাবাহিকতায় আর্জেন্টিনা এরপর জিতল ২০২২ ফিনালিসিমা, ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ ও ২০২৪ কোপা আমেরিকা। আলবিসেলেস্তের ৩ বছরে সবশেষ ৪টি শিরোপা জয়ে জড়িয়ে আছেন মেসি। ফুটবল যে এমনই। কখনো কাঁদায়, কখনো হাসায়। ২০২১ কোপা জয়ের আগে হয়তো আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের কাছে স্বপ্নই মনে হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘রোনালদোর ক্ষুধা কখনোই শেষ হওয়ার নয়’

ক্রীড়া ডেস্ক    
প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে ৯৫০-এর বেশি গোল করে ফেলেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।  ছবি: এএফপি
প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে ৯৫০-এর বেশি গোল করে ফেলেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ছবি: এএফপি

বয়স শুধুই একটি সংখ্যা—ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে স্বাভাবিকভাবেই এই কথা মনে হবে সবার আগে। পর্তুগাল দল, আল নাসর—সব জায়গায় তিনি গোলের পর গোল করে চলেছেন। একের পর এক রেকর্ড গড়েও পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ক্ষান্ত হচ্ছেন না। পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকা রোনালদোকে দেখে রীতিমতো মুগ্ধ পর্তুগাল জাতীয় দলের কোচ রবার্তো মার্তিনেজ।

আল নাসরের হয়ে এ বছর রোনালদো সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলে ১২ ম্যাচে করেছেন ১১ গোল। অ্যাসিস্ট করেছেন ২ গোলে। সৌদি প্রো লিগে সবশেষ তিন ম্যাচে করেছেন চার গোল। যার মধ্যে ২৩ নভেম্বর আল খালিজের বিপক্ষে বাইসাইকেল কিকে গোল করে চমকে দিয়েছেন তিনি। ৪০ বছর বয়সে শরীরটাকে শূন্যে ভাসিয়ে উল্টো দিকে গোল করা তো চাট্টিখানি কথা নয়। রোনালদোকে প্রশংসায় ভাসিয়ে এক পডকাস্টে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছেন মার্তিনেজ। পর্তুগিজ কোচ বলেন,‘আমার কাছে এ ব্যাপারে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে সে সফল হওয়ার পর থেমে যায় না। আরও কিছু করতে চায়। যখন আপনি কোনো কিছু জেতেন, পরের দিন আপনার ক্ষুধা কমে যায়। ক্রিস্টিয়ানো এমনই এক ব্যক্তি, গতকাল তার সঙ্গে যা ঘটেছে সেটা আজ প্রভাব ফেলে না।’

আন্তর্জাতিক ফুটবল ও ক্লাব ফুটবল মিলিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত রোনালদো করেছেন ৯৫৪ গোল। সংখ্যাটাকে ১০০০ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় ইচ্ছা রয়েছে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের। মাঝেমধ্যে সহজ গোল মিসের পর তৎক্ষণাৎ হতাশা প্রকাশ করেন ঠিকই। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে তাঁর বেশি সময় লাগে না। এ বছর পর্তুগালের হয়ে তিনি ৮ গোল করে ফেলেছেন। জুনে স্পেনকে হারিয়ে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো জিতেছেন নেশনস লিগের শিরোপা।

মাঠে যখন রোনালদো নামেন, তখন ক্ষিপ্র গতিতে দৌড়ে থাকেন। ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে এমন সব গোল করেন, তখন গোলরক্ষকও শত চেষ্টা করে গোল ঠেকাতে পারেন না। চোটের কারণে ম্যাচ মিস করার ঘটনাও তাঁর খুব কম। রোনালদোর হার না মানা মানসিকতা দেখে মুগ্ধ মার্তিনেজ এক পডকাস্টে বলেন,

‘আমি জানি না এটা জিনগত কি না। এটাই বাস্তবতা। সে প্রতিনিয়ত নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যেতে চায়। সেটা অনুশীলন, চোট থেকে সেরে ওঠা, মাঠের পারফরম্যান্স—যেটা নিয়ে মনে হয় তার কাজ করা দরকার, তা নিয়ে যথেষ্ট মনোযোগী থাকে। সে হ্যাটট্রিক করল বা তিনটা সুযোগ মিস করল কি না, তাতে কিছু যায় আসে না। শেষ বাঁশি বাজার পর পরের দিনের জন্য প্রস্তুতি নেয়। এটাই তাকে অনেক চঞ্চল করে রেখেছে।’

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে আগামী বছর হতে যাচ্ছে ২৩তম ফুটবল বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপে রোনালদোর বয়স হবে ৪১ বছর। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে এরপর আর ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে’র মঞ্চে দেখা যাবে না। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারকে কবে বিদায় বলবেন, সেটা তিনি জানাননি। ৩৫-৩৬ বছর হলেই যেখানে অনেকে বুটজোড়া তুলে রাখেন, রোনালদোর এমন মানসিকতায় মুগ্ধ মার্তিনেজ। ফুটবলারদের অবসর নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাই রোনালদোর উদাহরণ দিয়েছেন তিনি (মার্তিনেজ)। পডকাস্টে পর্তুগিজ কোচ বলেন,‘‘ফুটবলাররা অবসরের সময় শরীর মস্তিষ্ককে বলে, ‘আমি আর পেরে উঠছি না।’ ক্রিস্টিয়ানোকে দেখে তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। তার ব্যাপারে তার মস্তিষ্ক শরীরকে বলে এখনই থেমে যেতে হবে। তার প্রতিনিয়ত নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যাওয়ার সামর্থ্য রয়েছে।’

লিওনেল মেসি, রোনালদো—দুজনেরই বিশ্বকাপে পথচলা ২০০৬ সালে। ২০২৬ বিশ্বকাপে তাঁরা দুজনই ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছেন। আজ এই দুজনের নিশ্চয়ই চোখ থাকবে ফিফার ওয়েবসাইটের দিকে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় শুরু হবে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এবারই প্রথম খেলতে যাচ্ছে ৪৮ দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বীতশোক-ক্যাসপারদের লাতিন বাংলা সুপার কাপ দেখাবে না টিভিতে, দেখবেন কোথায়

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৫
লাতিন বাংলা সুপার কাপ শুরুর আগে অনুশীলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
লাতিন বাংলা সুপার কাপ শুরুর আগে অনুশীলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশে আসা প্রবাসী ফুটবলারদের খেলা দেখতে অপেক্ষায় আছেন অনেক ফুটবলপ্রেমী। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বীতশোক চাকমা, ইংল্যান্ডপ্রবাসী কাসপার হক, ইব্রাহীম নাওয়াজ ও অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী ইশান মালিক—এই চার প্রবাসী ফুটবলার আছেন রেড গ্রিন ফিউচার স্টার দলে।

ব্রাজিলের সাও বার্নার্দো ক্লাবের বিপক্ষে সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে রেড গ্রিন ফিউচার স্টার। এই ম্যাচ দেখতে অনেকে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করলেও তা কোনো টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে না। এএফ বক্সিং প্রমোশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, তাঁরা টি-স্পোর্টসের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেটা যে চূড়ান্ত হয়নি, তা তো বোঝাই গেল। এখন তারা খেলা দেখাবে তাদের অফিশিয়াল দুই পেজ আরটিভি স্পোর্টস ও এএফ বক্সিং প্রমোশন

লাতিন বাংলা সুপার কাপের চেয়ে বড় আকর্ষণ অপেক্ষা করছে রাত ১১টার সময়। ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান ফিফা প্লাস সরাসরি সম্প্রচার করবে। ফুটবলে দুপুরে বাংলাদেশ ফুটবল লিগের ব্রাদার্স-বসুন্ধরা কিংস মুখোমুখি হবে। অ্যাশেজে গোলাপি বলের টেস্টের ব্রিসবেনে দ্বিতীয় দিনের খেলা চলছে। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৩৩৪ রানে গুটিয়ে গেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ২৬ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৬ রান করেছে। এক নজরে দেখে নিন টিভিতে কী কী খেলা রয়েছে।

ক্রিকেট খেলা সরাসরি

ব্রিসবেন টেস্ট: ২য় দিন

অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড

সকাল ১০টা

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস ১

নারী বিগ ব্যাশ

মেলবোর্ন রেনেগেডস-সিডনি সিক্সার্স

বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

ফুটবল খেলা সরাসরি

ফিফা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্র

রাত ১১টা

সরাসরি

ফিফা+

বাংলাদেশ ফুটবল লিগ

ব্রাদার্স-বসুন্ধরা

বেলা ২টা ৩০ মিনিট

সরাসরি

টি স্পোর্টস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুলারদের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিতে তর সইছে না মেসির

ক্রীড়া ডেস্ক    
থমাস মুলারের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে মুখিয়ে আসেন লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি
থমাস মুলারের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে মুখিয়ে আসেন লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি

লিওনেল মেসি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন ট্রফির দিকে। কাছে এসেও পরম্য আরাধ্য বিশ্বকাপ শিরোপা ছুঁতে না পারার তীব্র আক্ষেপ কাজ করছে তাঁর। অনেকেই হয়তো বুঝতে পেরেছেন ২০১৪ ফুটবল বিশ্বকাপে মারাকানায় মেসির রানার্সআপ হওয়ার গল্প শোনা যাচ্ছে। মেসি যখন আক্ষেপে পুড়ছিলেন, টমাস মুলার তখন চ্যাম্পিয়ন জার্মানির হয়ে উল্লাস করতে ছিলেন ব্যস্ত।

১১ বছর পর এবার মুলারের বিপক্ষে প্রতিশোধ নেওয়ার অপেক্ষায় মেসি। এবারের মঞ্চ মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) কাপ ফাইনাল। চেজ স্টেডিয়ামে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় রাত দেড়টায় শুরু হবে এমএলএস কাপের ইন্টার মায়ামি-ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস ফাইনাল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের আগে মুলারকে এমএলএসে স্বাগত জানিয়েছেন মেসি। আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী ফরোয়ার্ড বলেন, ‘সবার আগে এটা শুনে ভালো লাগলা যে মুলার মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) খেলতে এসেছে। ফাইনালে মুখোমুখি হতে পেরে ভালো লাগছে। আবারও ফের মুখোমুখি হচ্ছি। আমরা ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে আগে খেলেছি। তারা কেমন দল, আমরা জানি।’

মেসি অবশ্য ২০১৪ সালের ফাইনালে জার্মানির কাছে হারের প্রতিশোধের দিকে ইঙ্গিত করেননি। এ বছরের ১ মে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ভ্যাঙ্কুভারের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছিল মায়ামি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলে হেরে টুর্নামেন্টের সেমি থেকেই বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল মেসির দলের। তখন মুলার ভ্যাঙ্কুভারে যোগদানও করেননি। জার্মান এই কিংবদন্তি এ বছরের আগস্টে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ভ্যাঙ্কুভারে এসেছেন।

আগামীকাল এমএলএস কাপ ফাইনালের আগে মে মাসে ভ্যাঙ্কুভারের কাছে হারের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মেসি। একই সঙ্গে আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড ফের উল্লেখ করেছেন মুলারের আগেও। ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে ফাইনালের আগে গত রাতে মেসি বলেন,‘কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে তারা (ভ্যাঙ্কুভার) আমাদের বিদায় করে দিয়েছিল। পুরো বছরজুড়ে দুর্দান্ত খেলেছিল। সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে শেষ অব্দি লড়ে গিয়েছিল। আশা করি, অনেক কঠিন একটা ম্যাচ হবে। মুলারের যোগ হওয়া দলকে আরও দারুণ করে তুলেছে। ম্যাচে কী করতে হবে, সেক্ষেত্রে দল (ইন্টার মায়ামি) আরও সচেতন থাকবে। বিশেষ একটা ফাইনাল হতে যাচ্ছে ও ফল আমাদের পক্ষে আসবে বলে আশা করি।’

ভ্যাঙ্কুভারে আসার পর সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ১২ ম্যাচ খেলে মুলার করেছেন ৯ গোল। অ্যাসিস্ট করেছেন ৪ গোলে। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছরে বায়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে তিনি খেলেছেন ৭৫৬ ম্যাচ। জার্মান ক্লাবটির হয়ে করেছেন ২৫০ গোল ও অ্যাসিস্ট করেছেন ২৭৬ গোলে। বায়ার্নের হয়ে ১৩ বার বুন্দেসলিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছেন দুইবার। এদিকে মেসি আগামীকাল ইন্টার মায়ামির হয়ে তৃতীয় শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে নামছেন। ২০২৩ লিগস কাপ, ২০২৪ সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটির জার্সিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিজেদের ইতিহাস নতুন করে লেখার সামনে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৫
চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শাই হোপ। ১৮৩ বলে ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ছবি: ক্রিকইনফো
চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শাই হোপ। ১৮৩ বলে ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ছবি: ক্রিকইনফো

ইতিহাস নিজেই নিজের পুনরাবৃত্তি ঘটায়—বহুল প্রচলিত প্রবাদের বেশির ভাগ সময় বাস্তব প্রতিফলন দেখা গেলেও অনেক সময় হয়ে ওঠে না। খেলার মাঠে এটা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ক্রিকেটে যেকোনো সময় ম্যাচের মোড় ঘুরে যেতে পারে।

টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জয়ের কীর্তি এখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজের দখলে। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্যারিবীয়রা এই রান তাড়া করে জিতেছিল। ২২ বছরে এর চেয়ে বড় লক্ষ্য বারবার চতুর্থ ইনিংসে দলগুলোর সামনে এসেছিল। কিন্তু কেউই সফল হয়নি। ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে এখন সেই ইতিহাস নতুন করে লেখার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ৫৩১ রানের লক্ষ্যে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৪ ওভারে ৪ উইকেটে ২১২ রানে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে। শাই হোপ আগামীকাল শেষ দিনে ১১৬ রানে ব্যাটিং করবেন। জাস্টিন গ্রিভস অপরাজিত ৫৫ রানে।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৫ ওভারে ৪ উইকেটে ৪১৭ রানে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে নিউজিল্যান্ড। এই দিনে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৯ রান যোগ করেছে কিউইরা। ১০৯তম ওভারের শেষ বলে জ্যাকব ডাভিকে (১০) কট এন্ড বোল্ড করেন কেমার রোচ। ডাফি আউট হওয়ার পর ১০৯ ওভারে ৮ উইকেটে ৪৬৬ রান হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে কিউইরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোচ ৭৮ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। টেস্টে এই নিয়ে ইনিংসে ১২ বার ৫ উইকেট নিয়েছেন ক্যারিবীয় এই পেসার।

নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৭৬ রান করেন রাচীন রবীন্দ্র। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪৫ রান আসে অধিনায়ক টম লাথামের ব্যাট থেকে। ৬৪ রান লিড যোগ হওয়ায় কিউইদের রান হয়েছে ৫৩০। ৫৩১ রানের লক্ষ্যে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর হয়ে যায় ২৮.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ৭২ রান। যেভাবে মুড়ি-মুড়কির মতো উইকেট পড়ছিল, তাতে আজই সফরকারীদের অলআউট হওয়ার শঙ্কা ছিল। তখনই প্রতিরোধ গড়েন শাই হোপ ও জাস্টিন গ্রিভস। পঞ্চম উইকেটে ২৭৫ বলে ১৪০ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন তাঁরা (হোপ-গ্রিভস)। জুটির ৫০.৯১ স্ট্রাইকরেটই বলে দেয়, প্রথাগত টেস্ট মেজাজে খেলে ইতিহাস গড়ার পথেই তারা এগোচ্ছে।

টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলতে হোপ খেলেছেন ১৩৯ বল। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর তিনি খেলতে থাকেন ধীরস্থির গতিতে। আজ চতুর্থ দিনের খেলা যখন শেষ করেছেন, তখন তাঁর নামের পাশে স্কোর ১৮৩ বলে ১১৬ রান। তাঁর সঙ্গী গ্রিভস টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি করেছেন। ১৪৩ বলে ১৬ চারে করেছেন ৫৫ রান। নিউজিল্যান্ডের জ্যাকব ডাফি নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল ও ম্যাট হেনরি। ডাফি এর আগে প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। তাঁর আগুনে বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে ১৬৭ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে করেছিল ২৩১ রান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত