Ajker Patrika

ব্যাংক ও আর্থিক খাতে অনিয়ম

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্তাদের পেছনে দুদক

  • ঋণখেলাপি ডজনের বেশি শিল্প গ্রুপের বিষয়েও তথ্য চাওয়া হয়েছে।
  • খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৯ ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার তথ্য।
সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা 
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, ১২: ২৮
আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত
আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের টানা দেড় দশকের শাসনামলে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য দায়ী ব্যক্তি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন শিল্প গ্রুপ ও খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর অংশ হিসেবে আর্থিক খাতের বড় অনিয়মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর, চার ডেপুটি গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা খুঁজছে সংস্থাটি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এ-সংক্রান্ত অন্তত ২৩ ধরনের তথ্য চেয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। দুদকের উপপরিচালক মোমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে গত ১৫ বছরে ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের অভিযোগসংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।

চিঠিতে দুদক যাঁদের বিষয়ে তথ্য চেয়েছে, তাঁরা হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, এস এম মনিরুজ্জামান, আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান ও আবু ফরাহ মোহাম্মদ নাছের এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস ও কাজী সায়েদুর রহমান। এই ৯ জন গত ১৫ বছরের বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের দায়িত্ব পালনকালীন নতুন ব্যাংকের অনুমোদন-সংক্রান্ত তথ্য, জারি করা সব ঋণ নীতিমালা, ঋণ প্রদানের তথ্য, অর্থ পাচারসংক্রান্ত তথ্য, রিজার্ভ থেকে ব্যবসায়ীদের ডলার প্রদানসংক্রান্ত নোটিশসহ নথি এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অভ্যন্তরীণ তদন্ত হয়ে থাকলে সেসব প্রতিবেদনের সত্যায়িত কপি চেয়েছে দুদক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান এবং অন্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম, ঋণখেলাপিদের ছাড় দিয়ে নীতিমালা জারি, রিজার্ভ চুরি, হলমার্ক জালিয়াতি, এস আলম গ্রুপের ঋণ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতির সুযোগ দিয়ে বিগত ১৫ বছরে ব্যাংক খাতকে ধ্বংস করার অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘আর্থিক অনিয়ম নিয়ে কমিশনে অনেকগুলো টিম কাজ করছে। ১১টি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যেখানে দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি সংস্থা কাজ করছে। এ ছাড়া আরও অনেকগুলো টিম কাজ করছে, বিশেষ করে অর্থ পাচার ও আর্থিক অনিয়ম-সংক্রান্ত। এসব অনুসন্ধান শেষ হলে আমরা সব গণমাধ্যমে তুলে ধরব।’

২০০৯ সাল থেকে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার জন্য জারি করা নীতিমালা ও নতুন নীতিমালা চালু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সুবিধা পাওয়া বেক্সিমকো গ্রুপ, এম আর গ্রুপ, রতনপুর গ্রুপ, কেয়া গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, থার্মেক্স গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, বিপিএস গ্রুপ, আব্দুল মোনেম লিমিটেড, অ্যানন টেক্স গ্রুপসহ যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সুবিধা পেয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম, মালিকের নাম, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, ঋণের পরিমাণ ও ঋণের বর্তমান অবস্থার তথ্য চেয়েছে দুদক। এ ছাড়া ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অনুমোদন পাওয়া মেঘনা ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও দ্য ফারমার্স ব্যাংকের অনুমোদন-সংক্রান্ত নোটিশ, নথি ও পরিপত্র প্রজ্ঞাপনের তথ্য জানতে চেয়েছে সংস্থাটি।

অন্যদিকে সালমান এফ রহমানের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ পুনর্গঠন-সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০১৫ প্রণয়নের নোটিশ ও নথি; ২০০৯ সালের পর জারিকৃত ব্যাংক পরিদর্শন-সংক্রান্ত নীতিমালার সত্যায়িত কপি এবং উক্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও জারি-সংক্রান্ত নথি, ইসলামী ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় ও মালিকানা নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত নোটিশ ও পরিপত্রের সত্যায়িত কপি এবং এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত হলে তার প্রতিবেদনও চাওয়া হয়েছে দুদকের চিঠিতে। একইভাবে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের ঋণপ্রাপ্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শাখা, ঋণগ্রহীতার নাম, ঠিকানা, ঋণের পরিমাণ, খেলাপি ঋণের অবস্থা ও বর্তমান পরিস্থিতি-সম্পর্কিত তথ্যও চাওয়া হয়েছে।

দেশের অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর ও বিএফআইইউর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হলে একটি দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা এমন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। আইনের শাসন না থাকা এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেওয়ার কারণে দিনের পর দিন দুর্নীতি বেড়েছে। সুশাসনই পারে এর থেকে পরিত্রাণ দিতে। এসব বিষয়ে দুদককেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রোজার আগে কমেছে খেজুরের আমদানি শুল্ক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩১
বিভিন্ন ধরনের খেজুরের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতা। গতকাল রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা।
বিভিন্ন ধরনের খেজুরের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতা। গতকাল রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা।

রমজান মাস উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে বড় ধরনের শুল্কছাড় দিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রোজার অন্যতম ইফতারসামগ্রী খেজুরের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে বলে আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে এনবিআর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসে খেজুরের সরবরাহ ও বাজারমূল্য স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে খেজুর আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে এনবিআর। এই শুল্ক অব্যাহতি আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এর ফলে খেজুরের আমদানি বাড়বে এবং দামও কমবে বলে আশা করছেন এনবিআর কর্মকর্তারা।

গত বছরও রোজার আগে নভেম্বর মাসে আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ ও অগ্রিম আয়কর ১০ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছিল।

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকে সব ধরনের খেজুর আমদানিতে সব মিলিয়ে ৫৭ দশমিক ২০ শতাংশ শুল্ক-কর ছিল। এর মধ্যে আমদানি শুল্ক (সিডি) ২৫ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, অগ্রিম কর ৫ শতাংশ ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩ শতাংশ।

এখন ১০ শতাংশ কমানোর ফলে মোট শুল্ক-কর ৪৭ দশমিক ২০ শতাংশে দাঁড়াল। তবে এই সার্কুলার এখনো এনবিআরের সার্ভারে যুক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকেরা। তিন দিন ছুটি থাকায় আগামী রোববারে নতুন সার্কুলারে পণ্য শুল্কায়ন শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

এ ছাড়া এই শুল্ক কামানোর ফলে প্রতি কেজি খেজুরের দাম কত কমতে পারে, এ বিষয়ে এখনই কোনো ধারণা দিতে পারেননি আমদানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, ১০ শতাংশ শুল্ক কমার ফলে দাম কিছুটা কমবে। তবে কতটুকু কমবে, তা শুল্কায়ন শুরু হলে বোঝা যাবে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমদানি শুল্ক কমানোর সঙ্গে সঙ্গে অগ্রিম কর ও রেগুলেটরি ডিউটি কমানোর দাবিও ছিল আমাদের। কিন্তু সরকার তা মানেনি। আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমানোর ফলে খেজুরের দাম সামান্য কমতে পারে। তবে এটি বাজারে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের খেজুর আমদানিতে মূল সমস্যা হলো ট্যারিফ হার বা শুল্কায়ন মূল্য। আমরা যে দামে আমদানি করি, শুল্ক ধরা হয় তার চেয়ে অনেক বেশি দামের ওপর। এতেই ট্যাক্সের হার বেড়ে যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০১৭ সালের পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে ডলার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার দুর্বল অবস্থানে রয়েছে এবং ২০১৭ সালের পর সবচেয়ে বড় বার্ষিক পতনের পথে। বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, মূল্যস্ফীতি কমতির দিকে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ আগামী বছরও সুদহার কমানোর সুযোগ পাবে, যেখানে অধিকাংশ বড় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিমধ্যে শিথিল নীতিতে রয়েছে। খবর রয়টার্সের।

গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী জিডিপি তথ্য সুদহার-সংক্রান্ত প্রত্যাশায় তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। ফলে বিনিয়োগকারীরা এখন ২০২৬ সালে ফেডের আরও প্রায় দুই দফা সুদহার কমানোর সম্ভাবনা হিসাব করছেন।

গোল্ডম্যান স্যাকসের যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভিড মেরিকল বলেন, ‘আমরা আশা করছি নীতিনির্ধারকেরা আরও দুটি ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহার কমিয়ে হার ৩ থেকে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশে নামাবে। তবে ঝুঁকির দিকটা আরও কমার দিকেই।’

গতকাল বুধবার ইউরো ও ব্রিটিশ পাউন্ড তিন মাসের নতুন উচ্চতায় উঠলেও দিনের শেষে প্রায় স্থিতিশীল ছিল। ইউরো লেনদেন হয়েছে ১.১৮০ ডলার, পাউন্ড ১.৩৫২২ ডলারে।

ডলার সূচক নেমে আসে আড়াই মাসের সর্বনিম্ন ৯৭.৭৬৭ পয়েন্টে। চলতি বছরে ডলারের দরপতন প্রায় ৯.৮ শতাংশ, যা ২০১৭ সালের পর সবচেয়ে বড় বার্ষিক ক্ষতি। বছরের শেষ সপ্তাহে আরও দুর্বল হলে ২০০৩ সালের পর সবচেয়ে খারাপ ফলও হতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনিয়মিত শুল্কনীতি ও ফেডের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ ডলারের ওপর আস্থার সংকট তৈরি করেছে। এর বিপরীতে ইউরো এ বছর ১৪ শতাংশের বেশি শক্তিশালী, যা ২০০৩ সালের পর সেরা পারফরম্যান্সের পথে।

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) গত সপ্তাহে সুদহার অপরিবর্তিত রেখে প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। এতে নিকট ভবিষ্যতে সুদ কমানোর সম্ভাবনা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাবে ইউরোপের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সুদহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা মূল্যায়ন করছেন ট্রেডাররা।

ফলে অস্ট্রেলীয় ডলার ও নিউজিল্যান্ডের ডলার শক্তিশালী হয়েছে। অস্ট্রেলীয় ডলার এ বছর এখন পর্যন্ত ৮.৪ শতাংশ বেড়ে গতকাল বুধবার তিন মাসের সর্বোচ্চ ০.৬৭১০ ডলারে পৌঁছায়। নিউজিল্যান্ড ডলারও আড়াই মাসের সর্বোচ্চ ০.৫৮৪৭৫ ডলার ছুঁয়েছে।

ব্রিটিশ পাউন্ড এ বছর ৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে অন্তত একবার সুদ কমাবে এবং বছরের শেষ নাগাদ দ্বিতীয়বার কমানোর সম্ভাবনাও প্রায় ৫০ শতাংশ।

ডলার নরওয়েজিয়ান ক্রোনের বিপরীতে ১২ শতাংশ, সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে ১৩ শতাংশ এবং সুইডিশ ক্রোনার বিপরীতে ১৭ শতাংশ দুর্বল হয়েছে। গতকাল সুইডিশ ক্রোনার বিপরীতে ডলার নেমে আসে ৯.১৬৭ ক্রোনায়, যা ২০২২ সালের পর সর্বনিম্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মেট্রোরেল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সরকার জনগুরুত্ব বিবেচনায় এবং পরিবেশবান্ধব ও দূরনিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক গণপরিবহন মেট্রোরেলকে অধিক জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বে মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর আরোপিত ভ্যাট ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহতি দিয়েছে। মেট্রোরেল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন করের বিদ্যমান অব্যাহতি চালু রাখার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জনস্বার্থে ওই অব্যাহতির মেয়াদ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা অব্যাহত রাখা হবে। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে এনবিআর গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

বর্তমান ভ্যাট আইন অনুযায়ী, যেকোনো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত রেলের টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বিধান আছে। মেট্রোরেল পুরোপুরি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ও গণপরিবহন। কিন্তু মেট্রোরেল চালুর পর শুরু থেকেই এর মালিক কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) অনুরোধে এই সেবার ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়নি।

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে মেট্রোরেল চলাচল মতিঝিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ভবিষ্যতে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে। মেট্রোরেলের যাত্রীদের কোনো ক্লাস বা শ্রেণিবিন্যাস নেই। সব যাত্রী একই ভাড়ায় নির্ধারিত গন্তব্যে আসা-যাওয়া করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে শুরু হয়েছে চার দিনের আবাসন মেলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

শুরু হলো আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন রিহ্যাব ফেয়ার-২০২৫। আজ বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (এনএইচএ) চেয়ারম্যান মোছা. ফেরদৌসী বেগম।

চার দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের মেলায় ২২০টি স্টল থাকছে। মেলায় রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিয়েছে রিহ্যাব।

মেলায় আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্ল্যাট বা প্লট বিক্রির প্রস্তাবের সঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক জীবনযাত্রার ধারণাও তুলে ধরছেন। এবারের মেলার অন্যতম আকর্ষণ আবাসন খাতে ডিজিটাল রূপান্তর, যা ক্রেতাদের অভিজ্ঞতায় আনছে নতুন মাত্রা। থ্রি-ডি ও ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি (ভিআর) প্রযুক্তির মাধ্যমে মেলা প্রাঙ্গণেই পছন্দের ফ্ল্যাটটি ঘুরে দেখছেন ক্রেতারা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে ফ্ল্যাট কেমন হবে, তা বুঝতে ক্রেতাদের ব্রশিউর ও নকশার ওপর নির্ভর করতে হতো। তবে এবার থ্রি-ডি ও ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি (ভিআর) প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্রেতারা মেলা প্রাঙ্গণেই তাঁদের পছন্দের ফ্ল্যাটটি ঘুরে দেখছেন। এতে ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ও বাস্তবসম্মত হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এবার নিজস্ব ডিজিটাল সেলস প্ল্যাটফর্মও চালু করেছে।   

এ ছাড়া মেলায় এমন বহু প্রকল্প প্রদর্শিত হচ্ছে, যেখানে স্মার্ট লক, অটোমেটেড লাইটিং, স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তার ব্যবস্থা। এই প্রযুক্তির ফলে স্মার্টফোন ব্যবহার করে বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম বলেন, দেশ গঠনে ভবন নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তা ও নির্মাণকারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আবাসন খাতে নানা পেশাজীবী সংগঠন যুক্ত থাকলেও বাস্তবে ভবন নির্মাণের মূল দায়িত্ব উদ্যোক্তা ও নির্মাতাদের। দীর্ঘদিন ধরে আবাসন খাত নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এসেছে। বর্তমানে কিছুটা মন্দা থাকলেও এটি স্থায়ী নয়, সুদিন অবশ্যই ফিরে আসবে।

ডেভেলপারদের বিষয়ে প্রচলিত ভুল ধারণার কথা তুলে ধরে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, ডেভেলপাররা শুধু নিজেদের ব্যবসার কথা ভাবেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই ধারণা সঠিক নয়। হয়তো হাতে গোনা কয়েকজন ব্যতিক্রম থাকতে পারেন, তবে সবাই একটি সুন্দর, পরিকল্পিত ও নিয়মের মধ্যে গড়ে ওঠা শহরই চান।’

বিশেষ অতিথি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের (এনএইচএ) চেয়ারম্যান মোছা. ফেরদৌসী বেগম নিয়ম অনুযায়ী ভবন নির্মাণের কথা বলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট মো. ওয়াহিদুজ্জামান। সদস্য ও ক্রেতাদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে মানুষের ভালো জায়গায় সুন্দর একটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকার আগ্রহ বাড়ছে। আমরা নাগরিকদের স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাচ্ছি।’

রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত্ আলী ভূঁইয়া আবাসন খাতের বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন নাগরিকের পক্ষে হাউজিং লোন ছাড়া ফ্ল্যাট বা প্লট ক্রয় করা প্রায় অসম্ভব। ক্রেতারা যাতে খুব সহজে এই ঋণ পেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করার জন্য জানান তিনি। পরিকল্পিত ও আধুনিক বাসস্থান তৈরিতে গৃহঋণের অবদান অনস্বীকার্য।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রিহ্যাবের পরিচালক ও মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান মিরাজ মোক্তাদিরসহ আরও অনেকে।

প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। মেলায় দুই ধরনের টিকিট থাকছে। একটি সিঙ্গেল এন্ট্রি, অপরটি মাল্টিপল। সিঙ্গেল টিকিটের প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা আর মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিটের প্রবেশমূল্য ১০০ টাকা। মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিট দিয়ে একজন দর্শনার্থী মেলার সময় পাঁচবার প্রবেশ করতে পারবেন। এন্ট্রি টিকিটের প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ দুস্থদের সাহায্যার্থে ব্যয় করা হবে। এ বছরের মেলায় প্রতিদিন র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত