নেত্র নিউজের অনুসন্ধান
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডনে একটি বৈঠকে ফরাসি প্রযুক্তি সংস্থা ওবার্থারের জ্যেষ্ঠ নির্বাহীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল এক রহস্যময় ব্যক্তিকে, যার কোড নাম ছিল ‘মিস্টার জি’। আপাতদৃষ্টিতে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ হলেও, বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রকল্পের বিষয়ে তাদের সহযোগিতা অনেক আগেই নীরবে শুরু হয়ে গিয়েছিল। এই ‘মিস্টার জি’, যিনি কোটি কোটি টাকা ঘুষ পকেটে ভরতে প্রস্তুত ছিলেন, তিনিই একটি বহুস্তরীয়, সুসংগঠিত দুর্নীতির নেটওয়ার্ককে একসূত্রে গেঁথেছিলেন।
এই লন্ডন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়ার অন্তত এক মাস পর। বিশ্বব্যাংক এই নেটওয়ার্কের ওপর নজর রাখে। এখানে তারা যোগসাজশ ও ঘুষের সন্দেহ করছিল। ওবার্থারের একজন কর্মী বিশ্বব্যাংককে জানিয়েছিলেন, ‘মিস্টার জি’-কে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল এবং অনুমান করা যেতে পারে এই ব্যক্তির কিছু প্রভাব রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের সাত সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এবং একটি ফরাসি নিষ্পত্তি নথিতে তাঁকে কেবল ‘জি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জড়িতদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চিঠিপত্রে তাঁকে ‘জেনারেল’ বলা হতো। তিনি মূলত একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, যিনি প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হয়েছিলেন এবং ট্রেডমার্ক গোঁফের জন্য পরিচিত ছিলেন। তবে ‘মিস্টার জি’-এর নাম কখনো প্রকাশ্যে আসেনি।
এই ‘মিস্টার জি’ কে?
বাংলাদেশি সাংবাদিকদের পরিচালিত সুইডেন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজ বছরের পর বছর ধরে, ওয়াশিংটন, প্যারিস, লন্ডন, জেনেভা এবং ঢাকা জুড়ে এই ঘটনার ধারাবাহিকতা অনুসরণ করেছে। তারা একটি আন্তর্জাতিক দুর্নীতির পরিকল্পনার প্রতিটি অংশকে এক জায়গায় জড়ো করেছে। হাজার হাজার পৃষ্ঠার আদালতের নথি, সম্পত্তির রেকর্ড, করপোরেট পাবলিকেশন, সরকারি মেমো এবং সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে, পরিচালিত অনুসন্ধানে তারা একটি আন্তর্জাতিক ঘুষের ঘটনা উন্মোচিত করেছে। এই দুর্নীতির সঙ্গে বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার জড়িত থাকার অভিযোগ দেশের ভেতরে প্রায় অজানাই থেকে গেছে। যদিও এটি বিদেশে উন্মুক্ত রেকর্ড ও নথিপত্র এবং আইনি সিদ্ধান্তে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নেত্র নিউজের অনুসন্ধানে দেখেছে, ঘটনা পরম্পরা ও ব্যক্তির বিবরণ শুধু একজন ব্যক্তির প্রোফাইলের সঙ্গে মেলে, তিনি মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকী। তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় এবং ১৫ বছর ধরে তাঁর সবচেয়ে বিশ্বস্ত নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত সাতজন আনুষ্ঠানিক উপদেষ্টার মধ্যে—যাদের সবাই মন্ত্রীর পদমর্যাদার ছিলেন—তারেক সিদ্দিকীই একমাত্র সামরিক বাহিনীর ব্যক্তি ছিলেন। সেই সময়ে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন যার গোঁফ ছিল!
বিশ্বব্যাংকের তদন্তকারীরা কোড-নেমটিকে ই-মেল, টেক্সট মেসেজ এবং সাক্ষীর সাক্ষ্য ব্যবহার করে একজন বাস্তব ব্যক্তির সঙ্গে মিলিয়েছেন। ব্রিটিশ ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) সতর্ক করার পর ফরাসি প্রসিকিউটররা ওবার্থারের প্যারিস সদর দপ্তরে অভিযান চালান এবং আরও প্রমাণ জব্দ করেন।
যেভাবে দুর্নীতি হয়
এনআইডি প্রকল্পের ঘটনাপ্রবাহ শুরু হয় ২০১১ সালে। ওই সময় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের ডিজিটালাইজড বায়োমেট্রিক ভোটার-নিবন্ধন প্রকল্পের জন্য ১৯৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) ঋণ অনুমোদন করে। যদিও নির্বাচন কমিশন এই চুক্তির তদারকি করছিল, এর প্রকল্প ইউনিটে মূলত সামরিক কর্মকর্তারা বেসামরিক দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। এই সামরিক ব্যাক-চ্যানেলটি পরে সিদ্ধান্তমূলক ছিল বলে প্রমাণিত হয়। অর্থাৎ, নেপথ্যে থেকে তাঁরাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন।
কয়েক বছর ধরে প্রাথমিক কাজ করার পর, কমিশন ২০১৪ সালের এপ্রিলে দরপত্র আহ্বান করে। প্যারিস-ভিত্তিক নিরাপত্তা-মুদ্রণ সংস্থা ওবার্থার টেকনোলজিস এই কাজ পায়। এর বাংলাদেশি সাব-কন্ট্রাক্টর ছিল টাইগার আইটি। এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে ছিলেন জনৈক জিয়াউর রহমান। বিশ্বব্যাংকের তদন্তকারীরা পরে আবিষ্কার করেন, প্রথম দরপত্র জমা দেওয়ার অনেক আগেই সবকিছু সাজানো হয়ে গিয়েছিল।
দরপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার আট মাস আগে, জিয়াউর রহমান ওবার্থার এবং অন্য একটি সরবরাহকারীকে ভবিষ্যতের চুক্তির গোপনীয় শর্তাবলি ও বিবরণের একটি অনুলিপি ই-মেইল করেছিলেন। অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের ঠেকিয়ে দেওয়া যায় এমন ধারাগুলোতে তাদের মতামত চাওয়া হয়। তিনি উভয় কোম্পানিকে কাজে লাগিয়ে দরপত্রটিকে এত সুনির্দিষ্টভাবে পুনর্গঠন করেছিলেন যে প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলো শর্তাবলি পূরণ করা প্রায় অসম্ভব হবে।
তদন্তকারীরা উপসংহারে পৌঁছেছেন, জিয়াউর রহমানের এই বিশেষ অভ্যন্তরীণ তথ্য প্রাপ্তি তারেক সিদ্দিকীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কারণে সম্ভব হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের একজন আত্মীয় নেত্র নিউজকে জানিয়েছেন, তিনি সেই সময় জেনারেল সিদ্দিকীর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো আনুষ্ঠানিক কর্তৃত্ব না থাকা সত্ত্বেও, তারেক সিদ্দিকী সেনাবাহিনী-পরিচালিত এই প্রকল্পের ওপর প্রভাব বিস্তার করতেন।
নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে চুক্তিটি চূড়ান্ত করে এবং এক মাস পরে স্বাক্ষর করে। এর পরপরই, তারেক সিদ্দিকী মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিশ্চিত করেন, যাতে কার্ডের অর্ডার ৭০ মিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে ৯০ মিলিয়ন করা যায়। এর বিনিময়ে, ওবার্থার ৭ লাখ ৩০ হাজার ইউরো ঘুষ দিতে সম্মত হয়। কৌশল হিসেবে এই বিলটি ‘প্রশিক্ষণ কোর্স’-এর নামে দেওয়ার কথা হয়, যদিও কোনো প্রশিক্ষণ হয়নি। ফরাসি তদন্তকারীরা এই অর্থ প্রদানের তথ্য ২০১৫ সালের মার্চে খুঁজে পান।
বিশ্বব্যাংক এবং ফরাসি কর্তৃপক্ষের নথি অনুসারে, সেই সেপ্টেম্বরে একটি দ্বিতীয় এবং আরও লাভজনক চুক্তি হয়। ওবার্থার প্রাথমিকভাবে জাল-বিরোধী হলোগ্রামের জন্য ২ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ইউরো দেয়, এই খরচ ছিল বাজারের চেয়ে অনেক বেশি। এই অর্থ প্রদান জিয়াউর রহমানের মালিকানাধীন একটি যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডেকাটুরের ব্রিটিশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ফরাসি আদালতের নথিপত্র এই কৌশলটি ব্যাখ্যা করেছে এভাবে: ‘এই সেট-আপ টাইগার আইটি এবং ডেকাটুরকে ওবার্থারের কাছে উচ্চ মূল্যে উপকরণ বিক্রি করতে এবং অতিরিক্ত অর্থ “জি” হিসাবে চিহ্নিত একজন বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তার কাছে পাঠাতে সহায়তা করে।’
১০ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউরোর হলোগ্রাম চুক্তির প্রায় অর্ধেক—প্রায় ৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন ইউরো—তারেক সিদ্দিকীর জন্য নির্ধারিত ছিল বলে ফরাসি নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, ওবার্থারের জ্যেষ্ঠ নির্বাহীরা পুরো অর্থ অগ্রিম পরিশোধ করার ক্ষেত্রে সতর্ক ছিলেন। অভ্যন্তরীণ ই-মেইলগুলোতে দেখা গেছে, একজন নির্বাহী অন্যকে সতর্ক করেছিলেন: ‘আমাদের শেষ পর্যন্ত কিছু সুবিধা ধরে রাখতে হবে।’ অন্যথায়, তিনি সতর্ক করেছিলেন, জেনারেল ‘আর কোনো কিছু পরোয়া করবেন না।’ সেই অনুযায়ী, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে চারটি কিস্তিতে মোট ২ দশমিক ৪ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করা হয়েছিল, যার ফলে সেই পর্যায়ে তারেক সিদ্দিকীর সম্ভাব্য ভাগ ছিল প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ইউরো।
এদিকে, প্যারিস এবং লন্ডনে, যখন আইনজীবীরা এবং পুলিশ হিসাবপত্র এবং যোগাযোগের চেইন নিয়ে কাজ করছিল, তখন তাদের নিজ নিজ সরকার সেই জেনারেলকেই প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিল। ২০২০ সালের প্রথম দিকে—একটি চলমান দুর্নীতি তদন্তের কয়েক বছর পরেও—ফ্রান্সের বিমানবাহিনীর প্রধান জেনারেল ফিলিপ লাভিন ঢাকা সফর করেন এবং তারেক সিদ্দিকীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেন। এই সফরই পরবর্তীতে সশস্ত্র বাহিনীর মন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লির ঢাকা সফর এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর পারস্পরিক রাষ্ট্রীয় সফর, ড্যাসল্ট রাফাল যুদ্ধবিমান এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির জন্য ফ্রান্সের আগ্রাসী প্রচেষ্টার অংশ ছিল। তারেক সিদ্দিকী, কার্যত বাংলাদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা পালন করে। এই ধরনের কেনাকাটার আলোচনায় তিনি নির্ধারক প্রভাব রাখতেন।
ব্রিটিশ সরকারও বেশ তৎপর ছিল। ২০১৬ সালের শেষের দিকে, বিশ্বব্যাংকের রেফারেলের ভিত্তিতে, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জিয়াউর রহমানের মালিকানাধীন লন্ডনের অফিস এবং দুটি ফ্ল্যাটের একটিতে অভিযান চালায়। টাইগার আইটি অস্বীকার এই অভিযানের কথা অস্বীকার করলেও স্বীকার করে যে, এনসিএ সেই সময় জিয়াউর রহমানের কাঠ থেকে নথি ‘সংগ্রহ’ করেছিল। এই সম্পত্তিগুলো—যার মধ্যে ২ দশমিক ৪ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি ফ্ল্যাটও ছিল—তাঁর কোম্পানি এনআইডি চুক্তি জেতার অল্প সময়ের মধ্যে অর্জিত হয়েছিল। এনসিএ কয়েক মাস পরে ফরাসি কর্তৃপক্ষকে যখন সতর্ক করে, তখন তারা তদন্ত আরও জোরালো করে। তাদের তদন্ত আরও প্রায় পাঁচ বছর ধরে সমান্তরালভাবে চলতে থাকে। তারা লাখ লাখ কাগজের নথি এবং ইলেকট্রনিক নথি পরীক্ষা করে।
এনসিএ-এর তদন্তের অগ্রগতি সত্ত্বেও, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, ২০১৯ সালের শেষ থেকে ২০২০ সালের প্রথম দিকের মধ্যে অন্যান্য ইউরোপীয় দূতের সঙ্গে মিলে তারেক সিদ্দিকীকে ইউরোফাইটার টাইফুন কেনার তদবির করার জন্য চাপ দেন। এটি যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি এবং স্পেনের যৌথ নির্মিত একটি কনসোর্টিয়াম যুদ্ধবিমান। তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস আরও এক ধাপ এগিয়ে শেখ হাসিনাকে বরাবর একটি চিঠির অনুমোদন করেন। নেত্র নিউজ সেই চিঠি দেখেছে। বাংলাদেশ এই বিমানটি কিনলে, ‘শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সহযোগিতা’র প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে।
এই মামলার আইনি লড়াই দীর্ঘায়িত ছিল এবং একাধিক বিচারব্যবস্থায় বিস্তৃত ছিল। কারণ উভয় কোম্পানি নিজ নিজ স্বার্থ রক্ষার জন্য শীর্ষস্থানীয় আইনজীবী নিয়োগ করে। ফলে প্রসিকিউটরদের মামলার নথি তৈরিতে বেগ পেতে হয়।
২০১৬ সাল নাগাদ, ওবার্থার এবং টাইগার আইটির মধ্যে অংশীদারত্ব—যা পাঁচ বছর আগে একটি অনুরূপ সরকারি প্রকল্পের সহযোগিতার মাধ্যমে গঠিত হয়েছিল—ভেঙে পড়তে শুরু করে। বিশ্বব্যাংক বিষয়টি জানালে, যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করে এবং বছরের শেষ নাগাদ, জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে নথি চায়।
এ সময় টাইগার আইটি দ্রুত ঢাকায় তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেয়। যেখানে ওই সময় ঢাকায় প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক প্রভাব সবখানে বিস্তার লাভ করেছে। ২০১৭ সালের প্রথম দিকে, কোম্পানিটি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি স্থানীয় আদালতে ব্যবসায়িক অংশীদারের বিরুদ্ধে ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারের মামলা করে।
কয়েক মাসের মধ্যে, এনসিএ বিষয়টি ফরাসি কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপন করে। এরপর তারা দ্রুত ওবার্থারের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করে।
পরে ২০১৯ সালে, বিশ্বব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা বোর্ড তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রায় প্রকাশ করে, ঘুষের পরিকল্পনাটি বিশদভাবে তুলে ধরে। টাইগার আইটিকে নয় বছরেরও বেশি সময়, ওবার্থারকে তিন বছরের জন্য এবং জিয়াউর রহমানকে—তাঁর বেশ কয়েকটি বিদেশি-নিবন্ধিত কোম্পানিসহ—নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়।
তবে, তারেক আহমেদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।
২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে, জেনারেল (অব.) তারেক সিদ্দিকী দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার স্বামীর ভাই। শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁকেও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং দুর্নীতির অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। অবশ্য এর কোনোটিই এনআইডি সংক্রান্ত মামলা নয়।
এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিল নেত্র নিউজ। কিন্তু তারেক সিদ্দিকী মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি।
বিশ্বব্যাংকের ইনটিগ্রিটি ভাইস-প্রেসিডেন্সি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেছে। ওবার্থারের উত্তরসূরি আইডিইএমআইএ জানিয়েছে, কোম্পানিটি তদন্তে সম্পূর্ণরূপে সহযোগিতা করেছে এবং দোষ স্বীকার না করেই মামলা নিষ্পত্তি করেছে। টাইগার আইটি জানিয়েছে, তারা ‘দৃঢ়ভাবে যেকোনো ঘুষের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে।’
এদিকে, তারেক সিদ্দিকীর পরিবার দেশে এবং বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে। গত জানুয়ারিতে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাঁর স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকী, তাঁর এবং তাঁদের মেয়ের জন্য একাধিক ‘গোল্ডেন পাসপোর্ট’ পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংক স্টেটমেন্টে তাঁর নামে ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার দেখিয়ে গোল্ডেন ভিসা পাওয়া চেষ্টা করেছিলেন। নেত্র নিউজ অ্যাকাউন্টের অস্তিত্ব যাচাই করেছে এবং তাঁর নামে মালয়েশিয়ান আরও রিয়েল-এস্টেট হোল্ডিং খুঁজে পেয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ভূমি রেজিস্ট্রি রেকর্ড অনুযায়ী, তাঁদের মেয়ে বুশরা সিদ্দিকী ২০১৮ সালে তাঁর স্বামীর সঙ্গে লন্ডনে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি বাড়ি কিনেছিলেন। কলেজ শেষ করার মাত্র দুই বছর পর এবং একটি ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম শেষ করার কয়েক মাস পরেই এটি কেনা হয়। তবে, কথিত ঘুষের টাকায় সম্পত্তিটি কেনা হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেত্র নিউজ পায়নি।
এদিকে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সম্প্রতি জানিয়েছে, আনুষ্ঠানিক উপদেষ্টা হিসেবে তারেক সিদ্দিকীর বেতন বছরে ৪০ হাজার ডলারের বেশি হওয়ার কথা নয়। অথচ তিনি রাজধানীর দুটি অভিজাত এলাকা, বারিধারা এবং গুলশানে একটি বহুতল বাড়ি এবং একটি অ্যাপার্টমেন্ট, বসুন্ধরায় তিনটি আবাসিক প্লট, দুটি বাংলো এবং রাজধানীর উপকণ্ঠে ১৬ একর জমির মালিক হয়েছে। সরকারিভাবে, এই সম্পদের মূল্য ৩৮ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হয়েছে।
আরও খবর পড়ুন:

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডনে একটি বৈঠকে ফরাসি প্রযুক্তি সংস্থা ওবার্থারের জ্যেষ্ঠ নির্বাহীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল এক রহস্যময় ব্যক্তিকে, যার কোড নাম ছিল ‘মিস্টার জি’। আপাতদৃষ্টিতে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ হলেও, বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রকল্পের বিষয়ে তাদের সহযোগিতা অনেক আগেই নীরবে শুরু হয়ে গিয়েছিল। এই ‘মিস্টার জি’, যিনি কোটি কোটি টাকা ঘুষ পকেটে ভরতে প্রস্তুত ছিলেন, তিনিই একটি বহুস্তরীয়, সুসংগঠিত দুর্নীতির নেটওয়ার্ককে একসূত্রে গেঁথেছিলেন।
এই লন্ডন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়ার অন্তত এক মাস পর। বিশ্বব্যাংক এই নেটওয়ার্কের ওপর নজর রাখে। এখানে তারা যোগসাজশ ও ঘুষের সন্দেহ করছিল। ওবার্থারের একজন কর্মী বিশ্বব্যাংককে জানিয়েছিলেন, ‘মিস্টার জি’-কে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল এবং অনুমান করা যেতে পারে এই ব্যক্তির কিছু প্রভাব রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের সাত সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এবং একটি ফরাসি নিষ্পত্তি নথিতে তাঁকে কেবল ‘জি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জড়িতদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চিঠিপত্রে তাঁকে ‘জেনারেল’ বলা হতো। তিনি মূলত একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, যিনি প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হয়েছিলেন এবং ট্রেডমার্ক গোঁফের জন্য পরিচিত ছিলেন। তবে ‘মিস্টার জি’-এর নাম কখনো প্রকাশ্যে আসেনি।
এই ‘মিস্টার জি’ কে?
বাংলাদেশি সাংবাদিকদের পরিচালিত সুইডেন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজ বছরের পর বছর ধরে, ওয়াশিংটন, প্যারিস, লন্ডন, জেনেভা এবং ঢাকা জুড়ে এই ঘটনার ধারাবাহিকতা অনুসরণ করেছে। তারা একটি আন্তর্জাতিক দুর্নীতির পরিকল্পনার প্রতিটি অংশকে এক জায়গায় জড়ো করেছে। হাজার হাজার পৃষ্ঠার আদালতের নথি, সম্পত্তির রেকর্ড, করপোরেট পাবলিকেশন, সরকারি মেমো এবং সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে, পরিচালিত অনুসন্ধানে তারা একটি আন্তর্জাতিক ঘুষের ঘটনা উন্মোচিত করেছে। এই দুর্নীতির সঙ্গে বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার জড়িত থাকার অভিযোগ দেশের ভেতরে প্রায় অজানাই থেকে গেছে। যদিও এটি বিদেশে উন্মুক্ত রেকর্ড ও নথিপত্র এবং আইনি সিদ্ধান্তে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নেত্র নিউজের অনুসন্ধানে দেখেছে, ঘটনা পরম্পরা ও ব্যক্তির বিবরণ শুধু একজন ব্যক্তির প্রোফাইলের সঙ্গে মেলে, তিনি মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকী। তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় এবং ১৫ বছর ধরে তাঁর সবচেয়ে বিশ্বস্ত নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত সাতজন আনুষ্ঠানিক উপদেষ্টার মধ্যে—যাদের সবাই মন্ত্রীর পদমর্যাদার ছিলেন—তারেক সিদ্দিকীই একমাত্র সামরিক বাহিনীর ব্যক্তি ছিলেন। সেই সময়ে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন যার গোঁফ ছিল!
বিশ্বব্যাংকের তদন্তকারীরা কোড-নেমটিকে ই-মেল, টেক্সট মেসেজ এবং সাক্ষীর সাক্ষ্য ব্যবহার করে একজন বাস্তব ব্যক্তির সঙ্গে মিলিয়েছেন। ব্রিটিশ ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) সতর্ক করার পর ফরাসি প্রসিকিউটররা ওবার্থারের প্যারিস সদর দপ্তরে অভিযান চালান এবং আরও প্রমাণ জব্দ করেন।
যেভাবে দুর্নীতি হয়
এনআইডি প্রকল্পের ঘটনাপ্রবাহ শুরু হয় ২০১১ সালে। ওই সময় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের ডিজিটালাইজড বায়োমেট্রিক ভোটার-নিবন্ধন প্রকল্পের জন্য ১৯৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) ঋণ অনুমোদন করে। যদিও নির্বাচন কমিশন এই চুক্তির তদারকি করছিল, এর প্রকল্প ইউনিটে মূলত সামরিক কর্মকর্তারা বেসামরিক দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। এই সামরিক ব্যাক-চ্যানেলটি পরে সিদ্ধান্তমূলক ছিল বলে প্রমাণিত হয়। অর্থাৎ, নেপথ্যে থেকে তাঁরাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন।
কয়েক বছর ধরে প্রাথমিক কাজ করার পর, কমিশন ২০১৪ সালের এপ্রিলে দরপত্র আহ্বান করে। প্যারিস-ভিত্তিক নিরাপত্তা-মুদ্রণ সংস্থা ওবার্থার টেকনোলজিস এই কাজ পায়। এর বাংলাদেশি সাব-কন্ট্রাক্টর ছিল টাইগার আইটি। এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে ছিলেন জনৈক জিয়াউর রহমান। বিশ্বব্যাংকের তদন্তকারীরা পরে আবিষ্কার করেন, প্রথম দরপত্র জমা দেওয়ার অনেক আগেই সবকিছু সাজানো হয়ে গিয়েছিল।
দরপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার আট মাস আগে, জিয়াউর রহমান ওবার্থার এবং অন্য একটি সরবরাহকারীকে ভবিষ্যতের চুক্তির গোপনীয় শর্তাবলি ও বিবরণের একটি অনুলিপি ই-মেইল করেছিলেন। অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের ঠেকিয়ে দেওয়া যায় এমন ধারাগুলোতে তাদের মতামত চাওয়া হয়। তিনি উভয় কোম্পানিকে কাজে লাগিয়ে দরপত্রটিকে এত সুনির্দিষ্টভাবে পুনর্গঠন করেছিলেন যে প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলো শর্তাবলি পূরণ করা প্রায় অসম্ভব হবে।
তদন্তকারীরা উপসংহারে পৌঁছেছেন, জিয়াউর রহমানের এই বিশেষ অভ্যন্তরীণ তথ্য প্রাপ্তি তারেক সিদ্দিকীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কারণে সম্ভব হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের একজন আত্মীয় নেত্র নিউজকে জানিয়েছেন, তিনি সেই সময় জেনারেল সিদ্দিকীর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো আনুষ্ঠানিক কর্তৃত্ব না থাকা সত্ত্বেও, তারেক সিদ্দিকী সেনাবাহিনী-পরিচালিত এই প্রকল্পের ওপর প্রভাব বিস্তার করতেন।
নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে চুক্তিটি চূড়ান্ত করে এবং এক মাস পরে স্বাক্ষর করে। এর পরপরই, তারেক সিদ্দিকী মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিশ্চিত করেন, যাতে কার্ডের অর্ডার ৭০ মিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে ৯০ মিলিয়ন করা যায়। এর বিনিময়ে, ওবার্থার ৭ লাখ ৩০ হাজার ইউরো ঘুষ দিতে সম্মত হয়। কৌশল হিসেবে এই বিলটি ‘প্রশিক্ষণ কোর্স’-এর নামে দেওয়ার কথা হয়, যদিও কোনো প্রশিক্ষণ হয়নি। ফরাসি তদন্তকারীরা এই অর্থ প্রদানের তথ্য ২০১৫ সালের মার্চে খুঁজে পান।
বিশ্বব্যাংক এবং ফরাসি কর্তৃপক্ষের নথি অনুসারে, সেই সেপ্টেম্বরে একটি দ্বিতীয় এবং আরও লাভজনক চুক্তি হয়। ওবার্থার প্রাথমিকভাবে জাল-বিরোধী হলোগ্রামের জন্য ২ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ইউরো দেয়, এই খরচ ছিল বাজারের চেয়ে অনেক বেশি। এই অর্থ প্রদান জিয়াউর রহমানের মালিকানাধীন একটি যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডেকাটুরের ব্রিটিশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ফরাসি আদালতের নথিপত্র এই কৌশলটি ব্যাখ্যা করেছে এভাবে: ‘এই সেট-আপ টাইগার আইটি এবং ডেকাটুরকে ওবার্থারের কাছে উচ্চ মূল্যে উপকরণ বিক্রি করতে এবং অতিরিক্ত অর্থ “জি” হিসাবে চিহ্নিত একজন বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তার কাছে পাঠাতে সহায়তা করে।’
১০ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউরোর হলোগ্রাম চুক্তির প্রায় অর্ধেক—প্রায় ৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন ইউরো—তারেক সিদ্দিকীর জন্য নির্ধারিত ছিল বলে ফরাসি নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, ওবার্থারের জ্যেষ্ঠ নির্বাহীরা পুরো অর্থ অগ্রিম পরিশোধ করার ক্ষেত্রে সতর্ক ছিলেন। অভ্যন্তরীণ ই-মেইলগুলোতে দেখা গেছে, একজন নির্বাহী অন্যকে সতর্ক করেছিলেন: ‘আমাদের শেষ পর্যন্ত কিছু সুবিধা ধরে রাখতে হবে।’ অন্যথায়, তিনি সতর্ক করেছিলেন, জেনারেল ‘আর কোনো কিছু পরোয়া করবেন না।’ সেই অনুযায়ী, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে চারটি কিস্তিতে মোট ২ দশমিক ৪ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করা হয়েছিল, যার ফলে সেই পর্যায়ে তারেক সিদ্দিকীর সম্ভাব্য ভাগ ছিল প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ইউরো।
এদিকে, প্যারিস এবং লন্ডনে, যখন আইনজীবীরা এবং পুলিশ হিসাবপত্র এবং যোগাযোগের চেইন নিয়ে কাজ করছিল, তখন তাদের নিজ নিজ সরকার সেই জেনারেলকেই প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিল। ২০২০ সালের প্রথম দিকে—একটি চলমান দুর্নীতি তদন্তের কয়েক বছর পরেও—ফ্রান্সের বিমানবাহিনীর প্রধান জেনারেল ফিলিপ লাভিন ঢাকা সফর করেন এবং তারেক সিদ্দিকীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেন। এই সফরই পরবর্তীতে সশস্ত্র বাহিনীর মন্ত্রী ফ্লোরেন্স পার্লির ঢাকা সফর এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর পারস্পরিক রাষ্ট্রীয় সফর, ড্যাসল্ট রাফাল যুদ্ধবিমান এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির জন্য ফ্রান্সের আগ্রাসী প্রচেষ্টার অংশ ছিল। তারেক সিদ্দিকী, কার্যত বাংলাদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা পালন করে। এই ধরনের কেনাকাটার আলোচনায় তিনি নির্ধারক প্রভাব রাখতেন।
ব্রিটিশ সরকারও বেশ তৎপর ছিল। ২০১৬ সালের শেষের দিকে, বিশ্বব্যাংকের রেফারেলের ভিত্তিতে, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জিয়াউর রহমানের মালিকানাধীন লন্ডনের অফিস এবং দুটি ফ্ল্যাটের একটিতে অভিযান চালায়। টাইগার আইটি অস্বীকার এই অভিযানের কথা অস্বীকার করলেও স্বীকার করে যে, এনসিএ সেই সময় জিয়াউর রহমানের কাঠ থেকে নথি ‘সংগ্রহ’ করেছিল। এই সম্পত্তিগুলো—যার মধ্যে ২ দশমিক ৪ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি ফ্ল্যাটও ছিল—তাঁর কোম্পানি এনআইডি চুক্তি জেতার অল্প সময়ের মধ্যে অর্জিত হয়েছিল। এনসিএ কয়েক মাস পরে ফরাসি কর্তৃপক্ষকে যখন সতর্ক করে, তখন তারা তদন্ত আরও জোরালো করে। তাদের তদন্ত আরও প্রায় পাঁচ বছর ধরে সমান্তরালভাবে চলতে থাকে। তারা লাখ লাখ কাগজের নথি এবং ইলেকট্রনিক নথি পরীক্ষা করে।
এনসিএ-এর তদন্তের অগ্রগতি সত্ত্বেও, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, ২০১৯ সালের শেষ থেকে ২০২০ সালের প্রথম দিকের মধ্যে অন্যান্য ইউরোপীয় দূতের সঙ্গে মিলে তারেক সিদ্দিকীকে ইউরোফাইটার টাইফুন কেনার তদবির করার জন্য চাপ দেন। এটি যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি এবং স্পেনের যৌথ নির্মিত একটি কনসোর্টিয়াম যুদ্ধবিমান। তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস আরও এক ধাপ এগিয়ে শেখ হাসিনাকে বরাবর একটি চিঠির অনুমোদন করেন। নেত্র নিউজ সেই চিঠি দেখেছে। বাংলাদেশ এই বিমানটি কিনলে, ‘শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সহযোগিতা’র প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে।
এই মামলার আইনি লড়াই দীর্ঘায়িত ছিল এবং একাধিক বিচারব্যবস্থায় বিস্তৃত ছিল। কারণ উভয় কোম্পানি নিজ নিজ স্বার্থ রক্ষার জন্য শীর্ষস্থানীয় আইনজীবী নিয়োগ করে। ফলে প্রসিকিউটরদের মামলার নথি তৈরিতে বেগ পেতে হয়।
২০১৬ সাল নাগাদ, ওবার্থার এবং টাইগার আইটির মধ্যে অংশীদারত্ব—যা পাঁচ বছর আগে একটি অনুরূপ সরকারি প্রকল্পের সহযোগিতার মাধ্যমে গঠিত হয়েছিল—ভেঙে পড়তে শুরু করে। বিশ্বব্যাংক বিষয়টি জানালে, যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করে এবং বছরের শেষ নাগাদ, জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে নথি চায়।
এ সময় টাইগার আইটি দ্রুত ঢাকায় তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেয়। যেখানে ওই সময় ঢাকায় প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক প্রভাব সবখানে বিস্তার লাভ করেছে। ২০১৭ সালের প্রথম দিকে, কোম্পানিটি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি স্থানীয় আদালতে ব্যবসায়িক অংশীদারের বিরুদ্ধে ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারের মামলা করে।
কয়েক মাসের মধ্যে, এনসিএ বিষয়টি ফরাসি কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপন করে। এরপর তারা দ্রুত ওবার্থারের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করে।
পরে ২০১৯ সালে, বিশ্বব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা বোর্ড তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রায় প্রকাশ করে, ঘুষের পরিকল্পনাটি বিশদভাবে তুলে ধরে। টাইগার আইটিকে নয় বছরেরও বেশি সময়, ওবার্থারকে তিন বছরের জন্য এবং জিয়াউর রহমানকে—তাঁর বেশ কয়েকটি বিদেশি-নিবন্ধিত কোম্পানিসহ—নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়।
তবে, তারেক আহমেদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।
২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে, জেনারেল (অব.) তারেক সিদ্দিকী দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার স্বামীর ভাই। শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁকেও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং দুর্নীতির অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। অবশ্য এর কোনোটিই এনআইডি সংক্রান্ত মামলা নয়।
এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিল নেত্র নিউজ। কিন্তু তারেক সিদ্দিকী মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি।
বিশ্বব্যাংকের ইনটিগ্রিটি ভাইস-প্রেসিডেন্সি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেছে। ওবার্থারের উত্তরসূরি আইডিইএমআইএ জানিয়েছে, কোম্পানিটি তদন্তে সম্পূর্ণরূপে সহযোগিতা করেছে এবং দোষ স্বীকার না করেই মামলা নিষ্পত্তি করেছে। টাইগার আইটি জানিয়েছে, তারা ‘দৃঢ়ভাবে যেকোনো ঘুষের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে।’
এদিকে, তারেক সিদ্দিকীর পরিবার দেশে এবং বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে। গত জানুয়ারিতে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাঁর স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকী, তাঁর এবং তাঁদের মেয়ের জন্য একাধিক ‘গোল্ডেন পাসপোর্ট’ পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংক স্টেটমেন্টে তাঁর নামে ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার দেখিয়ে গোল্ডেন ভিসা পাওয়া চেষ্টা করেছিলেন। নেত্র নিউজ অ্যাকাউন্টের অস্তিত্ব যাচাই করেছে এবং তাঁর নামে মালয়েশিয়ান আরও রিয়েল-এস্টেট হোল্ডিং খুঁজে পেয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ভূমি রেজিস্ট্রি রেকর্ড অনুযায়ী, তাঁদের মেয়ে বুশরা সিদ্দিকী ২০১৮ সালে তাঁর স্বামীর সঙ্গে লন্ডনে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি বাড়ি কিনেছিলেন। কলেজ শেষ করার মাত্র দুই বছর পর এবং একটি ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম শেষ করার কয়েক মাস পরেই এটি কেনা হয়। তবে, কথিত ঘুষের টাকায় সম্পত্তিটি কেনা হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেত্র নিউজ পায়নি।
এদিকে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সম্প্রতি জানিয়েছে, আনুষ্ঠানিক উপদেষ্টা হিসেবে তারেক সিদ্দিকীর বেতন বছরে ৪০ হাজার ডলারের বেশি হওয়ার কথা নয়। অথচ তিনি রাজধানীর দুটি অভিজাত এলাকা, বারিধারা এবং গুলশানে একটি বহুতল বাড়ি এবং একটি অ্যাপার্টমেন্ট, বসুন্ধরায় তিনটি আবাসিক প্লট, দুটি বাংলো এবং রাজধানীর উপকণ্ঠে ১৬ একর জমির মালিক হয়েছে। সরকারিভাবে, এই সম্পদের মূল্য ৩৮ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হয়েছে।
আরও খবর পড়ুন:

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৬ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিশ্বব্যাংকের সাত সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এবং একটি ফরাসি নিষ্পত্তি নথিতে তাঁকে কেবল ‘জি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জড়িতদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চিঠিপত্রে তাঁকে ‘জেনারেল’ বলা হতো। তিনি মূলত একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, যিনি প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হয়েছিলেন এবং ট্রেডমার্ক গোঁফের জন্য পরিচিত ছিলেন।
১১ জুলাই ২০২৫
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিশ্বব্যাংকের সাত সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এবং একটি ফরাসি নিষ্পত্তি নথিতে তাঁকে কেবল ‘জি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জড়িতদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চিঠিপত্রে তাঁকে ‘জেনারেল’ বলা হতো। তিনি মূলত একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, যিনি প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হয়েছিলেন এবং ট্রেডমার্ক গোঁফের জন্য পরিচিত ছিলেন।
১১ জুলাই ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

বিশ্বব্যাংকের সাত সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এবং একটি ফরাসি নিষ্পত্তি নথিতে তাঁকে কেবল ‘জি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জড়িতদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চিঠিপত্রে তাঁকে ‘জেনারেল’ বলা হতো। তিনি মূলত একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, যিনি প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হয়েছিলেন এবং ট্রেডমার্ক গোঁফের জন্য পরিচিত ছিলেন।
১১ জুলাই ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

বিশ্বব্যাংকের সাত সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এবং একটি ফরাসি নিষ্পত্তি নথিতে তাঁকে কেবল ‘জি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জড়িতদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চিঠিপত্রে তাঁকে ‘জেনারেল’ বলা হতো। তিনি মূলত একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, যিনি প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা হয়েছিলেন এবং ট্রেডমার্ক গোঁফের জন্য পরিচিত ছিলেন।
১১ জুলাই ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে