Ajker Patrika

‘স্যার, কেউ কথা শুনছে না, এভাবে পুলিশ চলে না’

শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭: ৫৩
‘স্যার, কেউ কথা শুনছে না, এভাবে পুলিশ চলে না’

কড়া রোদ। রাজধানীর কাকরাইলে অডিট ভবনের সামনে জনাপঞ্চাশেক পুলিশ দাঁড়িয়ে। অনেকের হাতে আইসক্রিম। অডিট ভবনের ফটকের সামনের সড়কে তখন বিক্ষোভ করছেন দেড়-দুই শ কর্মকর্তা। তাঁরা ভবনে ঢুকতে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। সেখানে দায়িত্বে থাকা ডিএমপির একজন উপকমিশনার (ডিসি) বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলেও তাতে গা করছিলেন না কোনো পুলিশ সদস্য। একপর্যায়ে সেই কর্মকর্তা পুলিশ সদস্যদের এমন আচরণ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে আক্ষেপ করেন। তিনি বলেন, ‘এভাবে ফোর্স চালানো যায় না, স্যার। কেউ কথা শুনছে না। এভাবে পুলিশও চলতে পারে না।’ অবশ্য তাঁর আক্ষেপের জবাবে ফোনের ওপারে থাকা কর্মকর্তা কী বলেছেন, তা জানা যায়নি। 

এ ঘটনা গতকাল রোববারের। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ঊর্ধ্বতনের নির্দেশ না মানার এমন ঘটনা পুলিশ বাহিনীতে নজিরবিহীন। কিন্তু গতকাল এমন ঘটনাই ঘটেছে। নিম্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা মনে করছেন, বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করা হলে একসময় তাঁরাও হয়তো ঝুঁকিতে পড়বেন। কারণ, পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও এখনো হামলা-মারধরের শিকার হচ্ছেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এ রকম নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে পুলিশের মতো শৃঙ্খলা বাহিনীতেও চেইন অব কমান্ড ঠিকমতো কাজ করছে না। ভেঙে পড়েছে পুলিশি ব্যবস্থা। 

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভেঙে পড়া পুলিশি ব্যবস্থায় চেইন অব কমান্ড প্রতিষ্ঠা করা এখন সবচেয়ে জরুরি। তা না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। 

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাকরাইলে অডিট ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) কার্যালয়ের অডিটর পদের দেড়-দুই শ বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা স্লোগান দিয়ে ভবনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছেন। পুলিশের বাধায় তাঁরা ভবনের ফটকের সামনের সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে কাকরাইল মোড় থেকে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত সড়কের এক পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধরা অডিটর পদের দুই গ্রেডে বিদ্যমান বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, ১১ তম গ্রেডের আড়াই হাজারের বেশি কর্মকর্তা দীর্ঘদিন পদোন্নতিবঞ্চিত। এ নিয়ে আদালতের নির্দেশনাও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এরই মধ্যে পিটিশন করা ৭৫২ জনের বেতন ১১ সেপ্টেম্বর বাড়ানো হয়, কিন্তু একই গ্রেডের আরও আড়াই হাজার অডিটরের বেতন বাড়েনি। অডিট ভবনের ফটকের সামনেই নিরাপত্তায় ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। 

 অডিট ভবনের সামনে বিক্ষোভরত অডিটরদের ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ডিএমপির উপকমিশনার। তবে সে নির্দেশ না মেনে দাঁড়িয়ে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। গতকাল রাজধানীর কাকরাইলে। ছবি: আজকের পত্রিকা সেখানে ডিএমপির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) নাছের ও সহকারী কমিশনার শুভ্রর নেতৃত্বে পুলিশের ৬০-৭০ জন সদস্য রয়েছেন। ওই দুই কর্মকর্তা বেলা দেড়টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধদের বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং তাঁদের সড়ক ছেড়ে দিতে বারবার অনুরোধ করেন। এরপরও তাঁরা সড়ক না ছাড়ায় সেখানে থাকা রমনা বিভাগের ডিসি সারওয়ার তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সড়ক থেকে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নেন। এ জন্য সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যদের সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়াসহ অন্যান্য প্রস্তুতি নিতে বলেন তিনি। কিন্তু সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহারে কোনো সদস্যই এগিয়ে আসছিলেন না। এ সময় ডিসি সারওয়ার ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, কে কে তাঁর সঙ্গে সামনে যাবেন। না গেলে সেটাও জানাতে বলেন। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের কেউ কিছু না বলে পেছনে সরে যান। ডিসি তখন রমনা মডেল থানার ওসি, এসি, এডিসি ও কয়েকজন উপপরিদর্শককে নিয়ে এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। 

বেলা আড়াইটার দিকে সেখানে আসেন ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) সানা শামীনুর রহমান। তিনিও পুলিশ সদস্যদের অগ্রসর করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা দাঁড়িয়ে পুলিশের মুখোমুখি অবস্থান নেন। তাঁরা ৬০-৭০ জন পুলিশ সদস্যকে একরকম ঘিরে ফেলেন। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য কর্মকর্তার উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদেরকেই শুধু জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে।’ 

সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা সব পুলিশ সদস্যের চোখে-মুখে ছিল হতাশার ছাপ। ৫ আগস্টের পর পুলিশ সদস্যদের মধ্যে যে নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে, গতকালের ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয়। 

নির্দেশনা সত্ত্বেও সদস্যদের অভিযানে না যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার শামীনুর রহমান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘ফোর্স কথা শুনবে না কেন? আমরা নিজেরাই একটু সময় নিচ্ছি।’ তবে এডিসি নাছের বলেন, ‘একটু সমস্যা তো আছেই। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ 

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সিএজি কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সড়কে এসে বিক্ষুব্ধদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং তাঁদের আলোচনার জন্য ডাকেন। এরপর বিক্ষুব্ধরা সড়ক ছেড়ে অডিট ভবনের অডিটরিয়ামের দিকে চলে যান। শেষ মুহূর্তে ঘটনাস্থলে আসেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ইসরাইল হাওলাদার। তিনি একাই বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে যান। উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারাও তখন এগিয়ে যান। ততক্ষণে বিক্ষোভকারীরা অবশ্য চলে যাচ্ছেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বান্দরবানে সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

বান্দরবান প্রতিনিধি
সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের বাসভবনে গতকাল রাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের বাসভবনে গতকাল রাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বান্দরবানে সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের বাসভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জেলা শহরে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে আজ বেলা ১১টা থেকে বীর বাহাদুর উশৈসিংকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রেড জুলাইয়ের নেতা-কর্মীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে একদল ছাত্র-জনতা বান্দরবান জেলা শহরের রাজার মাঠসংলগ্ন এলাকায় বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের পাঁচতলা বাসভবনে হামলা চালায়। পরে ভবনের একাংশে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে ভবনের বেশির ভাগ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনের নিচতলায় থাকা একটি পাজেরো, একটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন আসবাব পুড়ে যায়।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অগ্নিকাণ্ডের সময় নিরাপত্তার স্বার্থে বান্দরবান শহরের বিদ্যুৎ-সংযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।

বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমেদ জানান, অগ্নিকাণ্ডে গাড়ি ও আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষতি হলেও কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত শেষে নির্ধারণ করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাতে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলের একাংশ সাবেক মন্ত্রীর বাসভবনের সামনে পৌঁছে ভাঙচুর চালায় এবং একপর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার পর থেকে বান্দরবান জেলা শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও রাজার মাঠ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার আবদুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে গিয়ে পুলিশের একজন সদস্য আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

এদিকে সাবেক পার্বত্যমন্ত্রী ও বান্দরবান আসনে সাতবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিংকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রেড জুলাইয়ের নেতা-কর্মীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে তাঁরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার পথে ওসমান হাদির পরিবার

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ঢাকার পথে রওনা হন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ঢাকার পথে রওনা হন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ঢাকার উদ্দেশে গ্রামের বাড়ি ছেড়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১টা ২০ মিনিটে ওসমান হাদির ছোট বোন মাসুমা ও তাঁর স্বামী আমির হোসেন হাওলাদার ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওসমান হাদির বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করছে। হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার সকাল থেকে ঝালকাঠির নলছিটি শহরের খাসমহলের বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ভিড় করেন। পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আরও অনেকে।

হাদির স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁরা হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এলাকাবাসী এই বিপ্লবীকে শেষবারের মতো দেখার দাবিও জানান।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে রিকশাযোগে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা ওসমান হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনি মারা যান।

ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন আইজিপির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৩
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন করেন পুলিশের আইজি বাহারুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন করেন পুলিশের আইজি বাহারুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ও ফার্মগেট এলাকায় দ্য ডেইলি স্টারের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। আজ শুক্রবার দুপুরে এই ভবন দুটি পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের আশপাশে ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা শোনেন। তবে পরিদর্শনকালে এ বিষয়ে আইজিপিকে প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

এর আগে, গতকাল রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।

সরেজমিন দেখা গেছে, আগুনে ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর ভবন দুটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে গণমাধ্যম দুটির সব কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণাকালে রিকশায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ওই দিনই এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর তাঁকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিঙ্গাপুর থেকে ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে ঢাকার পথে বিমান বিজি ৫৮৫

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৩
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ফ্লাইটটি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩ মিনিটে (ঢাকার সময় বেলা ২টা ৩ মিনিটে) ফ্লাইট বিজি ৫৮৫ উড্ডয়ন করে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বিমানটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে।

বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, মরদেহটি মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে।

আজ দুপুরে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে গ্রহণ করতে আমরা সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান গ্রহণ করব। সেখান থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।’

ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার জোহর নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ওসমান হাদির জানাজা হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত