Ajker Patrika

গ্রাম থেকে চাচাতো ভাইকে এনে কোটি টাকার কাজ করাচ্ছেন ইউএনও

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ২৯
গ্রাম থেকে চাচাতো ভাইকে এনে কোটি টাকার কাজ করাচ্ছেন ইউএনও

গ্রাম থেকে চাচাতো ভাইকে এনে প্রায় কোটি টাকার কাজ করাচ্ছেন রাজশাহীর পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত। এর মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০টি বাড়িই নির্মাণ করাচ্ছেন ৯১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে। এ ছাড়া ডরমিটরি ও শিল্পকলা একাডেমি অফিস সংস্কারের কাজও করছেন ইউএনওর চাচাতো ভাই রাজীব রনক। এদিকে ঘরগুলো নির্মাণের ইট একটি ভাটায় পুকুর কাটতে দেওয়ার জন্য ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের এই ঘর নির্মাণ দরপত্র প্রক্রিয়ায় ঠিকাদারের মাধ্যমে হয় না। একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনই কাজটি বাস্তবায়ন করে। এই কমিটির আহ্বায়ক ইউএনও। আর সদস্যসচিব থাকেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)। এ ছাড়া কমিটিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের থাকার কথা। কিন্তু কমিটির অংশগ্রহণ ছাড়াই চাচাতো ভাইকে এনে কাজ করাচ্ছেন ইউএনও আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত। নির্মাণ শেষ হতে চললেও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির কোনো সভাও হয়নি। 

পবা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় অনেক আগেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০টি বাড়ি নির্মাণ হয়েছিল। ঘরগুলো ছিল টিন দিয়ে তৈরি। এগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় ইট দিয়ে বাড়ি তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের অর্থ দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রতিটি বাড়ির জন্য বরাদ্দ তিন লাখ পাঁচ হাজার টাকা। গত অর্থবছরের এই কাজ শুরু হয়েছে জুন মাসে। বর্তমানে কাজ প্রায় শেষের দিকে। নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়েও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, পিলারের ওপরের অংশে শুধু একটি করে রড দেখা যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, পিলারের নিচে পুটিং ঢালাই দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সেটিও করা হয়নি। নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই এসব পিলার ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, নিম্নমানের কাজ তাঁরা দেখছেন। ঘরগুলো নির্মাণে বরাদ্দের অন্তত অর্ধেক টাকা লুটপাট হচ্ছে। কিন্তু ইউএনওর চাচাতো ভাই রাজীব রনক কাজ করছেন বলে তাঁরা প্রতিবাদ করার সাহস পান না। 

উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউএনও আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর আত্রাই উপজেলায়। প্রায় এক বছর আগে তিনি পবার ইউএনও হিসেবে যোগ দেন। কিছুদিন পরই তিনি গ্রাম থেকে চাচাতো ভাই রাজীব রনককে নিয়ে আসেন। রনক এখন উপজেলা ক্যাম্পাসে ইউএনওর সরকারি বাসভবনেই থাকেন। এখন ইউএনও সব নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ তাঁর চাচাতো ভাইকে দিয়েই করান। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, কাশিয়াডাঙ্গার ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০টি ঘর নির্মাণের জন্য ইটও ঘুষ নেওয়া হয়েছে পবার হরিয়ান এলাকার একটি ইটভাটা থেকে। ওই ইটভাটার ভেতর মালিক এবং অন্য এক ব্যক্তিকে তিনটি পুকুর খনন করতে দেওয়ার বিনিময়ে ওই ইট ঘুষ নেওয়া হয়। ইট ঘুষ দিয়ে ইতিমধ্যে ওই ভাটার ভেতরে আইন লঙ্ঘন করে একটি পুকুর কাটা শেষ হয়েছে। যোগাযোগ করা হলে ইটভাটার মালিক মো. রুনু মোবাইল ফোনে কথা বলতে রাজি হননি। 

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো নির্মাণের ব্যাপারে মোবাইল ফোনে প্রথমে ছদ্মবেশে কথা হয় ইউএনওর চাচাতো ভাই রনকের সঙ্গে। তিনি তখন স্বীকার করেন, ঘরগুলো নির্মাণের কাজ তিনি একাই করাচ্ছেন। এ সময় রড লাগবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন আর রড লাগবে না। পরে পরিচয় দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে রনক বলেন, চাচাতো ভাইয়ের কাছে বেড়াতে এসে তিনি শুধু কাজটি দেখাশোনা করছেন। নিম্নমানের কাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা কর্মকর্তারা দেখবেন। 

আশ্রয়ণ প্রকল্পের এই ৩০টি ঘর নির্মাণের বিষয়ে কোনো সভা হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু বাশির কোনো মন্তব্য করতে চাননি। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি হয়েছে কি না সে বিষয়েও তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি হলে এই কর্মকর্তারই সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালনের কথা। 

প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি বাদ দিয়ে চাচাতো ভাইকে দিয়ে কাজ করানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, ‘এটা সত্য নয়। কাজ কমিটির মাধ্যমেই করা হচ্ছে। আমার চাচাতো ভাই কাজ করবে কেন? ও কিছুদিনের জন্য বেড়াতে এসেছে। কাজ করছে মিস্ত্রি।’ ডরমিটরি ও শিল্পকলা একাডেমি সংস্কার চাচাতো ভাইকে দিয়ে করানোর অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘এটাও সত্য না। কে বলেছে এসব কথা?’ 

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘কাজটা যদি ঠিকাদারের মাধ্যমে হতো এবং ইউএনওর চাচাতো ভাই যদি যোগ্যতাসম্পন্ন বৈধ ঠিকাদার হতেন, তাহলে কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু যেহেতু কাজটা দরপত্র প্রক্রিয়ায় ঠিকাদারের মাধ্যমে হচ্ছে না, সেহেতু তিনি চাচাতো ভাইকে দিয়ে কাজ করাতে পারেন না। এ বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত