Ajker Patrika

সেতু ভেঙে নদীতে সিমেন্টবোঝাই ট্রাক, চালকসহ দুজনের মরদেহ উদ্ধার

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৩, ২০: ২০
সেতু ভেঙে নদীতে সিমেন্টবোঝাই ট্রাক, চালকসহ দুজনের মরদেহ উদ্ধার

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সুনামগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে বেইলি সেতু ভেঙে নদী পড়ে যায় একটি সিমেন্টবোঝাই ট্রাক। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দুই ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে চালক ও সহকারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। তবে ট্রাকটি উদ্ধার হয়নি। 

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ইছাগাঁও এলাকার নলজুর নদের কাটাগাঙ্গের ওপর এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ গ্রামের ট্রাকচালক ফারুক মিয়া (৪২) ও তার সহকারী সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ধুপাতল এলাকার বাসিন্দা জাকির আহমদ কলিন্স (৩৫)। 

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ঢাকা থেকে আসা ৫০০ বস্তা সিমেন্টভর্তি একটি বড় ট্রাক বেইলি সেতু পার হওয়ার সময় উত্তর পাড়ের অ্যাপ্রোচে অতিরিক্ত স্টিল দিয়ে তৈরি করা বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাকটি নলজুর নদীতে ডুবে যায়। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। 
পরে সুনামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. তারেক হাসান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ডুবুরি নবীর উদ্দিন ও জুম্মন আহমদ উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। দুই ঘণ্টা পর পানির প্রায় ৫০ ফুট নিচে থাকা ট্রাক থেকে ওই চালক ও তাঁর সহযোগীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

এ বিষয়ে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। 

এদিকে সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ওই সড়ক দিয়ে সারা দেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সরাসরি যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। 

ট্রাকের চালক ও তার সহকারীকে উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। ছবি: আজকের পত্রিকাউপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিয়ান বিন ইব্রাহিম ভূঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সেতুটি মেরামতের কাজ করে চালু করা হবে।’ 

উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ-পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি-ঢাকা আঞ্চলিক এ মহাসড়কে জগন্নাথপুর উপজেলার ইছাগাঁও নামক স্থানে বহমান নলজুর নদীর (কাটাগাঙ্গ) ওপর ২০১২ সালে বেইলি সেতুটি নির্মাণ করা হয়। পরে ২০১৭ সালের ১৩ জুন সেতুটির দক্ষিণ অংশের অ্যাপ্রোচের মাটি ধসে গর্তের সৃষ্টি হয়। একই বছরে ১৩ জুলাই আবার মাটি ধসে একই স্থানে দ্বিতীয়বার গর্তের সৃষ্টি হলে অ্যাপ্রোচে অতিরিক্ত স্টিল দিয়ে মেরামত কাজ করা হয়। পরে আবার ২০২২ সালে ১৫ জুলাই সেতুটির উত্তর অংশের অ্যাপ্রোচের মাটি ধসে গর্তের সৃষ্টি হলে অ্যাপ্রোচে অতিরিক্ত স্টিল দিয়ে মেরামত কাজ করা হয়। 

এ ছাড়া কয়েক দিন পরপর সেতুটির পাটাতন খুলে গেলে মেরামত করা হয়। পরে আবার ১১ মার্চ রাতে সেতুটির একটি পাটাতন খুলে নদীতে পড়ে গেলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন নতুন পাটাতন লাগানো হলে যানচলাচল শুরু হয়। সর্বশেষ গত ১৬ জুলাই আবার পাটাতন খুলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টাঙ্গাইলে দুই দিনে কুকুরের কামড়ে আহত ৪০

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইলের সখীপুরে গত দুই দিনে কুকুরের কামড়ে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে চারটি শিশু রয়েছে। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ও গতকাল মঙ্গলবার আহত ব্যক্তিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কুকুরের কামড়ে আহত রোগীরা উপজেলার বড়চওনা, পৌরসভা ও বহুরিয়া চতলবাইদ এলাকার বাসিন্দা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে শাহনাজ আক্তার (৩৫), জাহানারা বেগম (৫৫), চার বছরের শিশু মাহিরাসহ তিনজন কুকুরে কামড়ানো রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। আজ সকালেই উপজেলার বড়চওনা ও পৌর এলাকার দুই শিশুসহ ১৮ জন কুকুরে কামড়ানো রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে।

এর আগে গতকাল ২২ জন রোগী কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে বলে হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে উল্লেখ রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানো রোগীর ভ্যাকসিন বরাদ্দ নেই। তাই আহত ব্যক্তিরা বাইরের ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে চিকিৎসা নিয়েছে। দুই দিনে অন্তত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মোস্তফা কামাল আরও বলেন, এর আগে ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে ২০ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে। তিনি কুকুরের বিষয়ে উপজেলার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেভিল হান্ট অভিযানে শ্রীমঙ্গল আ.লীগের সহসভাপতি গ্রেপ্তার

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
হরিপদ রায়। ছবি: সংগৃহীত
হরিপদ রায়। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হরিপদ রায়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে শহরের কলেজ রোডের জয়নগরপাড়া আবাসিক এলাকার নিজ বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ জহিরুল ইসলাম মুন্না এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডেভিল হান্ট ফেইজ-২-এর অভিযানের অংশ হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হরিপদ রায়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৩ ও ৪ আগস্ট শ্রীমঙ্গলের চৌমুহনা চত্বরে প্রকাশ্যে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুরগি মারার অভিযোগে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মামলা

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৩
মুরগি। ছবি: সংগৃহীত
মুরগি। ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর বদলগাছীতে চালে বিষ মিশিয়ে প্রতিবেশীর মুরগি মারার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে থানায় এই মামলা করা হয়। মুরগিগুলো মারা যায় গত শনিবার (১৩ ডিসেম্বর)।

আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান বলেন, মামলা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

বদলগাছী উপজেলার কটকবাড়ী গ্রামের গৃহবধূ শাপলা বেগম জানান, মুরগিগুলোই ছিল সংসারের আয়ের অন্যতম ভরসা। মুরগি ও ডিম বিক্রি করে চলত তাঁর সংসারের খরচ। দীর্ঘদিন প্রতিবেশী আনিছুর রহমানের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে চালে বিষ মিশিয়ে উঠানে রাখেন আনিছুর। ওই চাল খেয়ে মুরগিগুলো মারা যায়। তিনি বলেন, ‘মানুষে-মানুষে শত্রুতা থাকতে পারে, কিন্তু মুরগিগুলো কী অপরাধ করেছে। আমার স্বামী একজন কৃষক। আমি ছাগল ও হাঁস-মুরগি লালন-পালন করি। আমার এই ক্ষতির জন্য বিচার চাই।’

শাপলার জা কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘আমার ও শাপলার মিলে প্রায় ১৮টি মুরগি বিষ দিয়ে মেরে ফেলেছে আনিছুর রহমান। সে আমাদের প্রতিবেশী। তার সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে, তাই বলে সে আমার বাড়ির উঠানে খাবারের সঙ্গে বিষ ছিটিয়ে মুরগি মেরে ফেলবে। আমি এর বিচার দাবি করছি।’

আনিছুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তাঁকে ফাঁসানোর জন্য মুরগিগুলো মেরে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা রিপা রাণী বলেন, মরা মুরগিগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সার্বিক বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেরানীগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেপ্তার ৪

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার কেরানীগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রোহিতপুর ইউনিয়নের পুরাতন সোনাকান্দা মোল্লাবাড়ি এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান (৩৪), মিজানুর রহমান (৩০), বদিউর রহমান (৪০) ও মামুন হোসেন (৩৪। অভিযানের সময় তাঁদের সঙ্গে থাকা অন্য ডাকাতেরা কৌশলে পালিয়ে যায়।

এ সময় তাঁদের কাছ থেকে রড, চাপাতি, কাটার, দড়ি, স্কচটেপ, মুখ বাঁধার কাপড়সহ ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তাঁরা বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা এবং পেশাদার ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইলিয়াস হোসেন জানান, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি বিশেষ টহল দল রোহিতপুর, শাক্তা, জিনজিরা, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। দায়িত্ব পালনকালে রোহিতপুরের সোনাকান্দা মোল্লাবাড়ির তিন রাস্তার মোড়ে একটি নীল রঙের গাড়িকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে থামানোর সংকেত দেয়। এ সময় গাড়িটি সংকেত অমান্য করে দ্রুতগতিতে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আনুমানিক ২০০ গজ সামনে গিয়ে ব্যারিকেডের মাধ্যমে গাড়িটি আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধভাবে মহাসড়কে ডাকাতির উদ্দেশ্যে অবস্থান করছিল বলে স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত