Ajker Patrika

কারও হাত উড়ে গেছে, কারও শরীরের অর্ধেকই পোড়া

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৫ জুন ২০২২, ১১: ৫২
কারও হাত উড়ে গেছে, কারও শরীরের অর্ধেকই পোড়া

একটা অ্যাম্বুলেন্স থেকে রোগী নামানোর আগেই আরেকটা এসে হাজির। একের পর এক নামানো হচ্ছে রোগী। কারও হাত উড়ে গেছে, আবার কারও পেট ছিঁড়ে বের হয়ে গেছে নাড়িভুঁড়ি। আবার কারও কারও শরীরের অর্ধেক অংশই পোড়া। 

সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঠিক এমন দৃশ্যই দেখেছে চট্টগ্রামের মানুষ। স্বজনদের আহাজারি আর রক্তের জন্য হাহাকার ভারী করে তুলেছিল হাসপাতালের পরিবেশ। 

হতাহতদের চিকিৎসা দেওয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. কে এন তানভীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাত ১২টা থেকে রোগী আসা শুরু হয়। ৩টা পর্যন্ত এত বেশি রোগী আসে যে আমরা নিশ্বাস ফেলার সময় পর্যন্ত পাইনি। ৭০ শতাংশের বেশি রোগী দগ্ধ ছিল। বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি অনেকের হাত-পা, আবার কারও কারও পেট ছিঁড়ে নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গিয়েছিল।’  

এর আগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। চার শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি সিএমএইচ হাসপাতাল এবং নগরীর কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। 

ঘটনার পর রাত সাড়ে ১২টায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স আসছে। রাত পৌনে ১২টার দিকে হতাহতদের হাসপাতালে আনা শুরু হয়। এরপর ভোর পর্যন্ত আসে একের এক অ্যাম্বুলেন্সে, প্রাইভেট কার, সিএনজি অটোরিকশায় করে হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এভাবে সকাল পর্যন্ত অন্তত ২০০ থেকে ২৫০ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বিস্ফোরণে অনেকের হাত-পা ছিঁড়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এ সময় প্রচুর রক্তের প্রয়োজন পড়ে। তাই হাসপাতালে রক্তের জন্য হাহাকার পড়ে যায়। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাতে রক্তের জন্য অনেকে প্লাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে, অনেকে মাইকিং করছেন। চিৎকার করে বলছেন, রক্ত লাগবে রক্ত, এ পজিটিভ রক্ত, বি পজিটিভ রক্ত। স্বেচ্ছাসেবকদের ডাকে এ সময় অনেকে রক্ত দিতে আসেন। পরে একপর্যায়ে পজিটিভ রক্তের জোগাড় হলেও নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত নিয়ে বিপাকে পড়েন হতাহত রোগীদের স্বজনেরা। 

ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে হতাহতদের রক্তের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ব্যান্ডেজ লাগানো কাজে সহযোগিতা করেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণের ঘটনায় যাঁরা হাসপাতালে আসছেন, তাঁদের অনেকেরই রক্তের প্রয়োজন পড়েছে। আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অনেক ডোনার ঠিক করে দিয়েছি। এ সময় পজিটিভ গ্রুপের রক্ত পাওয়া গেলেও নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত পাওয়া গেছে কম। এখন অনেকের রক্তের প্রয়োজন পড়ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টের পর দুর্নীতিবাজদের কোটি টাকায় সীমান্ত পার করে দিয়েছেন রাজনৈতিক এলিটরা: দুদক চেয়ারম্যান

তুরস্কের গোয়েন্দা সহায়তায় যেভাবে ‘দামেস্কের আমির’ হলেন আল–শারা

কোটালীপাড়ায় এক রাতে ২টি এজেন্ট ব্যাংকসহ ৪ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চুরি

সিরাজগঞ্জে ‘মিছিল নিয়ে’ ওয়াজ মাহফিলে জামায়াত নেতা, হামলার অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, আসামি গৃহকর্মী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফেনীতে থানার পাশে দীঘিতে মিলল অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ

ফেনী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ফেনী শহরের রাজাঝির দীঘি থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির আনুমানিক বয়স ৪৫ বছর। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে মডেল থানাসংলগ্ন দীঘির পশ্চিম পাশ থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রাত পৌনে ৯টার দিকে দীঘির নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এক ব্যক্তি অজ্ঞাত এ মরদেহ দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় এক ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার করে।  

আবু কাউছার নিপু নামের দীঘির নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এক ব্যক্তি বলেন, আমি দীঘি দেখাশোনার কাজ করি। প্রতিদিনের মতো রাতে দিঘির পশ্চিম পাশে হাঁটার সময় লাইটের আলোতে পানিতে মানুষের মাথার মতো কিছু দেখতে পাই। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।  

ফেনী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুল মজিদ বলেন, মরদেহটি পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সজল কান্তি দাশ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। তার পরনে শার্ট, লুঙ্গি ও মাফলার ছিল। কয়েক দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছি। পরিচয় শনাক্তে পিবিআই কাজ করছে। মরদেহ এখানে কীভাবে এসেছে এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পুলিশ কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টের পর দুর্নীতিবাজদের কোটি টাকায় সীমান্ত পার করে দিয়েছেন রাজনৈতিক এলিটরা: দুদক চেয়ারম্যান

তুরস্কের গোয়েন্দা সহায়তায় যেভাবে ‘দামেস্কের আমির’ হলেন আল–শারা

কোটালীপাড়ায় এক রাতে ২টি এজেন্ট ব্যাংকসহ ৪ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চুরি

সিরাজগঞ্জে ‘মিছিল নিয়ে’ ওয়াজ মাহফিলে জামায়াত নেতা, হামলার অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, আসামি গৃহকর্মী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

  • মিথ্যা পরিচয়ে কাজ নিয়েছিলেন তরুণী। গ্রেপ্তার করা যায়নি।
  • বাসা থেকে খোয়া গেছে ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, টাকা।
  • দুজনের মরদেহ নাটোরের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে নিজেদের ফ্ল্যাটে মা ও মেয়ে হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন ‘গৃহকর্মী আয়েশাকে’ শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁর প্রকৃত নাম-পরিচয় ও তাঁর স্বামীর নামও জেনেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত ওই গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ওই তরুণীকে শনাক্ত ও নাম-পরিচয় বের করা হলেও তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তা প্রকাশ করা হবে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কারণ জানা যাবে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

‘আয়েশা’কে গ্রেপ্তার এবং এই জোড়া খুনের রহস্য উদ্‌ঘাটনে তদন্তে নেমেছে পুলিশ, র‍্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থা। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গৃহকর্মী তাঁর প্রকৃত নাম ও ঠিকানা দেননি। তাঁকে কেউ চিনতেও পারছিলেন না। ঘটনার সময় তাঁর সঙ্গে কোনো মোবাইল ফোনও ছিল না। বাসা থেকে তিনি যে ফোন নিয়ে গেছেন, সেটাও বের হয়েই বন্ধ করে দিয়েছেন। আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল না থাকায় ওই বাড়ির গেট থেকে বের হয়ে রিকশা নিয়ে কোনদিকে গেছেন, তা নিশ্চিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

সূত্র বলেছে, ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে ওই তরুণীর চার দিনের মোবাইল ফোনে কোনো যোগাযোগ ছিল না। সব সময় বোরকা পরে থাকায় ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরায়ও তাঁর মুখ স্পষ্টভাবে ধরা পড়েনি। ফলে তাঁকে শনাক্তে ম্যানুয়ালি কাজ করতে হয়। সম্ভাব্য সব ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করে তাঁকে শনাক্ত করা হয়।

এর আগে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গৃহকর্মীর নাম-ঠিকানা ও কোনো মোবাইল ফোন না থাকায় পরিচয় জানা যাচ্ছে না। দ্রুতই তাঁকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

জোড়া হত্যার ঘটনায় সোমবার রাতে ‘গৃহকর্মী আয়েশা’কে একমাত্র আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী স্কুলশিক্ষক আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলার এজাহারে বলা হয়, সোমবার সকাল ৭টার দিকে তিনি উত্তরায় স্কুলে চলে যান। সেখানে থাকা অবস্থায় স্ত্রীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়ের রক্তে ভেজা লাশ দেখেন। ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, আয়েশা সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে কাজ করার জন্য বাসায় আসেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস নিয়ে যান।

বাদী এজাহারে আরও বলেন, অজ্ঞাত কারণে গৃহকর্মী আয়েশা তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি অথবা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেছেন।

সুরতহাল প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর মেয়ে নাফিসার শরীরে ৪টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ অভিযুক্তকে শনাক্তের চেষ্টা করছে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে লায়লা ও তাঁর মেয়ের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সকালে তাঁদের গ্রামের বাড়ি নাটোর পৌরসভার দক্ষিণ বড়গাছায় নেওয়া হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁদের মরদেহ দাফন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টের পর দুর্নীতিবাজদের কোটি টাকায় সীমান্ত পার করে দিয়েছেন রাজনৈতিক এলিটরা: দুদক চেয়ারম্যান

তুরস্কের গোয়েন্দা সহায়তায় যেভাবে ‘দামেস্কের আমির’ হলেন আল–শারা

কোটালীপাড়ায় এক রাতে ২টি এজেন্ট ব্যাংকসহ ৪ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চুরি

সিরাজগঞ্জে ‘মিছিল নিয়ে’ ওয়াজ মাহফিলে জামায়াত নেতা, হামলার অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, আসামি গৃহকর্মী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্রাকসু নির্বাচন: মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনে অফিসে তালা, কর্মকর্তারা লাপাত্তা

বেরোবি সংবাদদাতা
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৫৮
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ব্রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তফসিল অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন থাকলেও সকাল থেকে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় বন্ধ ছিল। এতে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেল ব্রাকসু নির্বাচন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার মনোনয়নপত্র জমা নিচ্ছেন না বা নির্বাচন কমিশনার কার্যালয়ে কেন নেই, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এ বিষয়ে আপনারা নির্বাচন কমিশনারদের জিজ্ঞেস করলে সঠিক তথ্য পাবেন।’

এর আগে সকাল থেকে কমিশনের কার্যালয়ের সামনে ভিড় করেন প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কর্মকর্তাদের না দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এটি পরিকল্পিত অবহেলা, যা পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে কমিশনের অনুপস্থিতি নির্বাচনকে নির্বিঘ্ন করার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যর্থতার নগ্ন উদাহরণ। এতে নির্বাচন নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

কমিশনে আসা প্রার্থী মো. শিবলী সাদিক বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত শেষ দিনে সকাল থেকে কার্যালয়ে আছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কেউ নেই। মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনে কমিশনের অনুপস্থিতি একটি বড় প্রশাসনিক ব্যর্থতা। এতে পুরো নির্বাচনী কাঠামো দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’

ভিপি প্রার্থী আহমাদুল হক আলবীর বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে দেখি অফিসই বন্ধ। আজ শেষ দিন জানার পরও সকাল থেকে আমরা এখানে বসে আছি। কিন্তু কমিশনের কেউ নেই। এতে আমাদের অধিকার হরণ করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. শাহজামান, কমিশনার সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার সরকার ও সহযোগী অধ্যাপক মো. হাসান আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।

উল্লেখ্য, ১ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অসংগতি থাকার কারণ দেখিয়ে তফসিল স্থগিত করে ব্রাকসু নির্বাচন কমিশন। পরে ৩ ডিসেম্বর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নতুন তফসিল ঘোষণা করা হয়।

তফসিল অনুযায়ী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণ ও দাখিল (ডোপ টেস্টের রিপোর্টসহ), ১০ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই ও প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ, ১১ ডিসেম্বর প্রাথমিক তালিকা সম্পর্কে প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি এবং ২৪ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টের পর দুর্নীতিবাজদের কোটি টাকায় সীমান্ত পার করে দিয়েছেন রাজনৈতিক এলিটরা: দুদক চেয়ারম্যান

তুরস্কের গোয়েন্দা সহায়তায় যেভাবে ‘দামেস্কের আমির’ হলেন আল–শারা

কোটালীপাড়ায় এক রাতে ২টি এজেন্ট ব্যাংকসহ ৪ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চুরি

সিরাজগঞ্জে ‘মিছিল নিয়ে’ ওয়াজ মাহফিলে জামায়াত নেতা, হামলার অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, আসামি গৃহকর্মী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষিকা, উদ্ধার করল পুলিশ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
করুয়াকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
করুয়াকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝালকাঠির নলছিটিতে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষিকাকে স্কুলের কক্ষে অবরুদ্ধ করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার মগড় ইউনিয়নের করুয়াকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলিনা রানী গোস্বামীর সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নলছিটি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।

জানা গেছে, গতকাল সোমবার স্কুলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষিকা স্কুলে না আসায় পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। এতে এলাকাবাসী ও অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ হন। আজ তিনি স্কুলে এলে বিক্ষুব্ধ অভিভাবক ও এলাকাবাসী তাঁর কক্ষে তালা দিয়ে তাঁকে আটকে রাখেন।

পরে প্রধান শিক্ষিকা জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনাটি জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে উদ্ধার করে।

প্রধান শিক্ষক মলিনা রানী গোস্বামীর মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু না বলেই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিরীন আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এখন কোনো মন্তব্য করতে পারব না, কাল অফিসে আসেন।’

নলছিটি থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি, তদন্ত) আশরাফ আলী বলেন, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষিকাকে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করেছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ আগস্টের পর দুর্নীতিবাজদের কোটি টাকায় সীমান্ত পার করে দিয়েছেন রাজনৈতিক এলিটরা: দুদক চেয়ারম্যান

তুরস্কের গোয়েন্দা সহায়তায় যেভাবে ‘দামেস্কের আমির’ হলেন আল–শারা

কোটালীপাড়ায় এক রাতে ২টি এজেন্ট ব্যাংকসহ ৪ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চুরি

সিরাজগঞ্জে ‘মিছিল নিয়ে’ ওয়াজ মাহফিলে জামায়াত নেতা, হামলার অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, আসামি গৃহকর্মী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত