কামরুল হাসান

তারাগঞ্জ থেকে খালি রিকশা নিয়ে চালক ঝন্টু আসছিলেন সৈয়দপুরের দিকে। কাছাকাছি আসার পর লাল রঙের একটি প্রাইভেট কার আচমকা রিকশাটির সামনে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে দুজন নেমে বড় আকারের একটি স্যুটকেস রিকশায় তুলে দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বলেন, ‘এটা নিয়ে রেলস্টেশনে অপেক্ষা করো, আমরা আসছি।’ তাঁরা রিকশাওয়ালার হাতে কিছু টাকাও গুঁজে দেন। এরপর মুখ উল্টো দিকে ঘুরিয়ে গাড়িটা হাইওয়ে ধরে চলে যায়।
রিকশাওয়ালা ঝন্টু সৈয়দপুর রেলস্টেশনে এসে অপেক্ষা করতে থাকেন, গাড়ি আর আসে না। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। ঝন্টু কিছুটা চিন্তিত হয়ে রিকশা সমিতির এক নেতার কাছে বিষয়টি জানান। তিনি বিপদের ভয় দেখিয়ে ঝন্টুকে পাঠিয়ে দেন আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে। চেয়ারম্যান পদের বেশির ভাগ লোকই সাধারণত খুব বুদ্ধিমান হন। আলমপুর ইউপি চেয়ারম্যান স্যুটকেসটি দেখেই সন্দেহ করেন। তিনি লক্ষ করেন, এই স্যুটকেসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ট্যাগ লাগানো আছে। তার মানে, স্যুটকেসটি বিমানে করেই ঢাকা থেকে সৈয়দপুরে এসেছে। এরপর তিনি আর কোনো ঝুঁকি না নিয়ে সোজা চলে যান তারাগঞ্জ থানায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) উপস্থিতিতে স্যুটকেস খোলা হয়। দেখা যায়, ভেতরে কম উচ্চতার একজনের মৃতদেহ। পরদিন সব কাগজে সেই খবর ছাপা হয়। কয়েকটি কাগজে মৃতদেহের ছবিও ছাপা হয়। এটা ছিল ২০০১ সালের ৯ আগস্ট।
এই খবর যেদিন ছাপা হলো, সেদিন সকালে ডিএমপির পূর্ব বিভাগের ডিসি মোখলেসুর রহমান (অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে অবসরে) আমাকে ফোন দিলেন। বললেন, ‘আমাদের মিলন খুন হয়েছে। সৈয়দপুরে স্যুটকেসে যে লাশ পাওয়া গেছে, সেটা মিলনের।’ আমি বললাম, সেই লাশ শনাক্ত করল কে? তিনি বললেন, ‘মিলনের বউ ফোন করে কান্নাকাটি করছিল। রাজশাহী থেকে তাঁর এক ভাই সৈয়দপুরে গিয়ে মৃতদেহ শনাক্ত করেছে।’ মোখলেসুর রহমানের খুব মন খারাপ, আমারও। পরিচিত মানুষের এমন মৃত্যু খুবই কষ্টের।
মিলনের পুরো নাম সাইদুল হক মিলন। তিনি ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে ‘বঙ্গবন্ধু সম্প্রচার সেল’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি ছিলেন সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ভাষণ, তাঁকে নিয়ে গান, কবিতা—এসব তিনি সংগ্রহ করে বেড়াতেন। পূর্ব বিভাগের ডিসি মোখলেসুর রহমানের টিকাটুলীর অফিসেই তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ। কথায় কথায় বেরিয়ে এল, আমার জেলাতেই তিনি বিয়ে করেছেন। আর তাঁকে পায় কে! এক মিনিটেই আত্মীয় বানিয়ে ছাড়লেন।
একদিন মোহাম্মদপুরে আমার বন্ধু লিটন হায়দারের বাসা থেকে বেরিয়ে শের শাহ সুরি রোডের মুখে এসেছি, দেখি মিলন দাঁড়িয়ে। মোটরসাইকেলে আমাকে দেখেই বরিশালের আঞ্চলিক উচ্চারণে এক চিৎকার। এরপর টানতে টানতে বাসায় নিয়ে গেলেন। তাঁর স্ত্রী সিরাজুম মুনিরা সরকারি চাকরি করেন। ছেলে সৌরভ (৮) আর মেয়ে সৃষ্টিকে (৬) নিয়ে তাঁদের সুখের সংসার। সেদিন স্বামী-স্ত্রী মিলে অতিথিকে আপ্যায়ন করেই ছাড়লেন।
সপ্তাহ দুয়েক পর মিলন আমার অফিসে হাজির। টেলিভিশনের জন্য তিনি একটি গানের প্যাকেজ অনুষ্ঠান করবেন, আমাকে এর স্ক্রিপ্ট লিখে দিতে হবে। সাবিনা ইয়াসমীন, রথীন্দ্রনাথ রায়, শেফালী ঘোষসহ নামকরা শিল্পীরা তাতে গান গাইবেন।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন অভিনেত্রী শমী কায়সার। এ রকম অনুষ্ঠানের স্ক্রিপ্ট সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না, পরে বন্ধু আশীষ-উর-রহমান শুভর সহযোগিতা নিয়ে একটা স্ক্রিপ্ট তৈরি করে দিলাম। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একদিন সেই অনুষ্ঠানের শুটিং হলো। পল্টন লাইনের একটি ভবনে ম হামিদের প্যানেলে অনুষ্ঠানটির এডিটিং করলেন ফিরোজ মাহমুদ। সম্ভবত এটাই বিটিভির প্রথম গানের প্যাকেজ অনুষ্ঠান। এই গানগুলো নিয়ে পরে তিনি একটি অডিও ক্যাসেট বাজারে ছেড়েছিলেন।
এ রকম একজন পরিচিত মানুষ খুন হওয়ার কারণ নিয়ে আমারও খুব আগ্রহ ছিল। সে কারণে সাধ্যমতো খোঁজখবর শুরু করলাম। কিন্তু এসব করতে গিয়ে গানের সঙ্গে যুক্ত কিছু মানুষের এমন সব তথ্য পেলাম, যার সবকিছু প্রকাশ্যে বলা সম্ভব নয়। শুধু এটুকু বলি, এই খুনের পর সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিলেন এই সময়ের জনপ্রিয় মিউজিক কম্পোজার প্রতীক হাসান ও প্রীতম হাসানের বাবা খালিদ হাসান মিলু ও তাঁর পরিবার।
মিলন কীভাবে খুন হলেন, তা বলার আগে খালিদ হাসান মিলুর গল্পটা বলি। মিলুর জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে। একের পর এক গান আসছে আর বাজার মাত করছে। তরুণদের কাছে মিলু হার্টথ্রব। ছেলে প্রতীক, প্রীতম আর স্ত্রী ফাতেমা পারভিন পলাশকে নিয়ে মিলুর সুখের সংসার। একদিন সেই সংসারে ঝড়ের মতো ঢুকে পড়লেন এক বিমানবালা। অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় ইসমাত আরা তারা নামের ওই বিমানবালার সঙ্গে মিলুর পরিচয় হয় উড়োজাহাজে। কিছুদিনের মধ্যে তিনি সেই বিমানবালার প্রেমে পড়ে যান। এরপর যা হওয়ার তা-ই হয়; প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের ফেলে বিমানবালাকে বিয়ে করে সিদ্ধেশ্বরীর হোপ টাওয়ারে ইসমাত আরার ফ্ল্যাটে ওঠেন মিলু। তাঁর প্রথম স্ত্রী ফাতেমা পারভিন পলাশ এ নিয়ে টঙ্গী থানায় মামলা করেন। মিলু ও তাঁর বিমানবালা স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁরা জামিনে বেরিয়ে আসেন। দুই পরিবারের মধ্যে এ নিয়ে বিরোধ বাড়তে থাকে। মিলুর গানে ভাটা পড়ে। এ অবস্থায় এগিয়ে আসেন মিলন। তিনি দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা করার উদ্যোগ নেন। একটি বৈঠকে সমঝোতা হয় বটে, তবে বিমানবালার ভেতরে ক্ষোভ থেকেই যায়।
কিছুদিন পর এই বিমানবালার বাসায় মিলু অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর চিকিৎসায় বিপুল অর্থ খরচ হয়। বিমানবালা আর কুলিয়ে উঠতে পারছিলেন না। মিলুর বন্ধুরা তাঁর চিকিৎসার জন্য কনসার্ট করে অর্থ সংগ্রহের আয়োজন করেন। এ রকম একটি কনসার্ট হয় পিরোজপুরে। কিন্তু সেই কনসার্টের টাকা আর মিলু পাননি। পিরোজপুর সমিতির কিছু লোক আর মিলুর সহযোগীরা সব টাকা মেরে দেন। এ নিয়ে আবার গন্ডগোল শুরু হয়। এই সালিসেও মিলন ঢুকে পড়েন। এবার তাঁর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন মিলুর গানের কম্পোজার গায়িকা আঁখি আলমগীরের প্রথম স্বামী সাইরাস আলতাফ শাশা, মিলুর ড্রামবাদক পলাশ সাউ, বাবু, ফারুক, পিরোজপুর সমিতির জিয়াসহ অনেকে। ইসমাত আরার সঙ্গে মিলনের পুরোনো বিরোধ তো আছেই; সেই সঙ্গে যুক্ত হয় পিরোজপুরের ঘটনা। এরই প্রেক্ষাপটে ২০০১ সালের ৪ আগস্ট রাতে বেইলি রোড থেকে নিখোঁজ হন মিলন।
মিলনের স্ত্রী মুনিরা আমাকে বলেছিলেন, ঘটনার দিন রাতে মিলন বেইলি রোডে আযম বাবুর ‘ডিজিটন’ স্টুডিওতে গিয়েছিলেন গান রেকর্ডের কাজে। রাত ১০টার দিকে তাঁকে ফোন করে বলেন, ফিরতে দেরি হবে। এরপর মিলনকে আর ফোনে পাননি। বেইলি রোডে এখন যেখানে ক্যাপিটাল টাওয়ার, তার ঠিক পাশের ভবনেই ছিল স্টুডিওটি। টাওয়ারের সামনে ‘চমচম’ নামে একটি মিষ্টির দোকান ছিল। ঘটনার দিন রাতে স্টুডিওর এক কর্মচারী মিলনকে হেঁটে সিদ্ধেশ্বরীর ভেতরে ঢুকতে দেখেছিলেন।
মিলন খুন হওয়ার ঘটনায় মুনিরা কয়েকজনের নাম দিয়ে ৮ আগস্ট (২০০১) রমনা থানায় অপহরণ ও হত্যা মামলা করেন। মোজাম্মেল হোসেন তখন রমনা থানার ওসি। তিনি আমার উপস্থিতিতে ডিএমপির কমিশনার আনোয়ারুল ইকবালকে বলেছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে, বিমানবালা ইসমাত আরার বাসাতেই মিলন খুন হন। লাশ উদ্ধারের সময় স্যুটকেসে বিমানের সিল থাকা একটি বালিশ ও ব্যাগ পাওয়া যায়। তা ছাড়া লাশ উদ্ধারের পরপরই ওই বিমানবালা গা ঢাকা দেন। কমিশনারের কাছে দেওয়া ওসির সেই বক্তব্য পত্রিকায় ছাপাও হয়েছিল।
এই বক্তব্য যেদিন ছাপা হয়, সেদিন বিমানবালা ইসমাত আরা অজ্ঞাত স্থান থেকে আমাকে ফোন করে বলেন, তিনি মিলনকে খুন করেননি, খুন করেছেন আঁখি আলমগীরের স্বামী শাশা। তিনি বললেন, পিরোজপুর কনসার্টের টাকা মেরে দেওয়ার পর মিলনের সঙ্গে শাশার অনেক তর্কাতর্কি হয়। মিলন তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। শাশাও তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন।
কিন্তু মিলুর প্রথম স্ত্রী পলাশ আমাকে ফোনে বলেন, মিলু তাঁর মায়ের কাছে বলেছেন, মিলনকে গোপনে আটকে রেখেছিলেন বিমানবালা ইসমাত আরা।
অনেক দিন ধরে মিলন খুনের মামলার তদন্ত করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। কিন্তু তারা কখনোই ইসমাত আরাকে ধরতে পারেনি। লাশ উদ্ধারের পর থেকে তিনি আর প্রকাশ্যে আসেননি। ইসমাত আরার বাসায় দুই দফা তল্লাশিও করেছিল ডিবি। তার পরও ডিবি এই মামলার কোনো কিনারা করতে পারেনি। গত বৃহস্পতিবার মোখলেসুর রহমানের কাছ থেকে শুনলাম, সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় ডিবি একপর্যায়ে এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল।
আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে মিলনের স্ত্রী মুনিরা, তাঁর দুই সন্তান সৌরভ আর সৃষ্টির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম। তাঁদের আর খুঁজে পেলাম না। সে সময় তাঁরা মোহাম্মদপুরের যে বাসায় ছিলেন, সেখানে আর নেই। জানি না কোথায় আছেন, কেমন আছেন।
মিলনের দুই সন্তান এত দিনে হয়তো অনেক বড় হয়েছেন। আর তাঁরা এটা জেনে বড় হয়েছেন, সারা দিন সভা-সেমিনারে আইনের শাসনের যে বুলি আওড়ানো হয়, সবই বাকোয়াজ, মিথ্যে। বাবার হত্যা মামলা তো তাঁদের তা-ই বলে।
আরও পড়ুন:

তারাগঞ্জ থেকে খালি রিকশা নিয়ে চালক ঝন্টু আসছিলেন সৈয়দপুরের দিকে। কাছাকাছি আসার পর লাল রঙের একটি প্রাইভেট কার আচমকা রিকশাটির সামনে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে দুজন নেমে বড় আকারের একটি স্যুটকেস রিকশায় তুলে দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বলেন, ‘এটা নিয়ে রেলস্টেশনে অপেক্ষা করো, আমরা আসছি।’ তাঁরা রিকশাওয়ালার হাতে কিছু টাকাও গুঁজে দেন। এরপর মুখ উল্টো দিকে ঘুরিয়ে গাড়িটা হাইওয়ে ধরে চলে যায়।
রিকশাওয়ালা ঝন্টু সৈয়দপুর রেলস্টেশনে এসে অপেক্ষা করতে থাকেন, গাড়ি আর আসে না। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। ঝন্টু কিছুটা চিন্তিত হয়ে রিকশা সমিতির এক নেতার কাছে বিষয়টি জানান। তিনি বিপদের ভয় দেখিয়ে ঝন্টুকে পাঠিয়ে দেন আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে। চেয়ারম্যান পদের বেশির ভাগ লোকই সাধারণত খুব বুদ্ধিমান হন। আলমপুর ইউপি চেয়ারম্যান স্যুটকেসটি দেখেই সন্দেহ করেন। তিনি লক্ষ করেন, এই স্যুটকেসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ট্যাগ লাগানো আছে। তার মানে, স্যুটকেসটি বিমানে করেই ঢাকা থেকে সৈয়দপুরে এসেছে। এরপর তিনি আর কোনো ঝুঁকি না নিয়ে সোজা চলে যান তারাগঞ্জ থানায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) উপস্থিতিতে স্যুটকেস খোলা হয়। দেখা যায়, ভেতরে কম উচ্চতার একজনের মৃতদেহ। পরদিন সব কাগজে সেই খবর ছাপা হয়। কয়েকটি কাগজে মৃতদেহের ছবিও ছাপা হয়। এটা ছিল ২০০১ সালের ৯ আগস্ট।
এই খবর যেদিন ছাপা হলো, সেদিন সকালে ডিএমপির পূর্ব বিভাগের ডিসি মোখলেসুর রহমান (অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে অবসরে) আমাকে ফোন দিলেন। বললেন, ‘আমাদের মিলন খুন হয়েছে। সৈয়দপুরে স্যুটকেসে যে লাশ পাওয়া গেছে, সেটা মিলনের।’ আমি বললাম, সেই লাশ শনাক্ত করল কে? তিনি বললেন, ‘মিলনের বউ ফোন করে কান্নাকাটি করছিল। রাজশাহী থেকে তাঁর এক ভাই সৈয়দপুরে গিয়ে মৃতদেহ শনাক্ত করেছে।’ মোখলেসুর রহমানের খুব মন খারাপ, আমারও। পরিচিত মানুষের এমন মৃত্যু খুবই কষ্টের।
মিলনের পুরো নাম সাইদুল হক মিলন। তিনি ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে ‘বঙ্গবন্ধু সম্প্রচার সেল’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি ছিলেন সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ভাষণ, তাঁকে নিয়ে গান, কবিতা—এসব তিনি সংগ্রহ করে বেড়াতেন। পূর্ব বিভাগের ডিসি মোখলেসুর রহমানের টিকাটুলীর অফিসেই তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ। কথায় কথায় বেরিয়ে এল, আমার জেলাতেই তিনি বিয়ে করেছেন। আর তাঁকে পায় কে! এক মিনিটেই আত্মীয় বানিয়ে ছাড়লেন।
একদিন মোহাম্মদপুরে আমার বন্ধু লিটন হায়দারের বাসা থেকে বেরিয়ে শের শাহ সুরি রোডের মুখে এসেছি, দেখি মিলন দাঁড়িয়ে। মোটরসাইকেলে আমাকে দেখেই বরিশালের আঞ্চলিক উচ্চারণে এক চিৎকার। এরপর টানতে টানতে বাসায় নিয়ে গেলেন। তাঁর স্ত্রী সিরাজুম মুনিরা সরকারি চাকরি করেন। ছেলে সৌরভ (৮) আর মেয়ে সৃষ্টিকে (৬) নিয়ে তাঁদের সুখের সংসার। সেদিন স্বামী-স্ত্রী মিলে অতিথিকে আপ্যায়ন করেই ছাড়লেন।
সপ্তাহ দুয়েক পর মিলন আমার অফিসে হাজির। টেলিভিশনের জন্য তিনি একটি গানের প্যাকেজ অনুষ্ঠান করবেন, আমাকে এর স্ক্রিপ্ট লিখে দিতে হবে। সাবিনা ইয়াসমীন, রথীন্দ্রনাথ রায়, শেফালী ঘোষসহ নামকরা শিল্পীরা তাতে গান গাইবেন।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন অভিনেত্রী শমী কায়সার। এ রকম অনুষ্ঠানের স্ক্রিপ্ট সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না, পরে বন্ধু আশীষ-উর-রহমান শুভর সহযোগিতা নিয়ে একটা স্ক্রিপ্ট তৈরি করে দিলাম। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একদিন সেই অনুষ্ঠানের শুটিং হলো। পল্টন লাইনের একটি ভবনে ম হামিদের প্যানেলে অনুষ্ঠানটির এডিটিং করলেন ফিরোজ মাহমুদ। সম্ভবত এটাই বিটিভির প্রথম গানের প্যাকেজ অনুষ্ঠান। এই গানগুলো নিয়ে পরে তিনি একটি অডিও ক্যাসেট বাজারে ছেড়েছিলেন।
এ রকম একজন পরিচিত মানুষ খুন হওয়ার কারণ নিয়ে আমারও খুব আগ্রহ ছিল। সে কারণে সাধ্যমতো খোঁজখবর শুরু করলাম। কিন্তু এসব করতে গিয়ে গানের সঙ্গে যুক্ত কিছু মানুষের এমন সব তথ্য পেলাম, যার সবকিছু প্রকাশ্যে বলা সম্ভব নয়। শুধু এটুকু বলি, এই খুনের পর সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিলেন এই সময়ের জনপ্রিয় মিউজিক কম্পোজার প্রতীক হাসান ও প্রীতম হাসানের বাবা খালিদ হাসান মিলু ও তাঁর পরিবার।
মিলন কীভাবে খুন হলেন, তা বলার আগে খালিদ হাসান মিলুর গল্পটা বলি। মিলুর জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে। একের পর এক গান আসছে আর বাজার মাত করছে। তরুণদের কাছে মিলু হার্টথ্রব। ছেলে প্রতীক, প্রীতম আর স্ত্রী ফাতেমা পারভিন পলাশকে নিয়ে মিলুর সুখের সংসার। একদিন সেই সংসারে ঝড়ের মতো ঢুকে পড়লেন এক বিমানবালা। অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় ইসমাত আরা তারা নামের ওই বিমানবালার সঙ্গে মিলুর পরিচয় হয় উড়োজাহাজে। কিছুদিনের মধ্যে তিনি সেই বিমানবালার প্রেমে পড়ে যান। এরপর যা হওয়ার তা-ই হয়; প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের ফেলে বিমানবালাকে বিয়ে করে সিদ্ধেশ্বরীর হোপ টাওয়ারে ইসমাত আরার ফ্ল্যাটে ওঠেন মিলু। তাঁর প্রথম স্ত্রী ফাতেমা পারভিন পলাশ এ নিয়ে টঙ্গী থানায় মামলা করেন। মিলু ও তাঁর বিমানবালা স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁরা জামিনে বেরিয়ে আসেন। দুই পরিবারের মধ্যে এ নিয়ে বিরোধ বাড়তে থাকে। মিলুর গানে ভাটা পড়ে। এ অবস্থায় এগিয়ে আসেন মিলন। তিনি দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা করার উদ্যোগ নেন। একটি বৈঠকে সমঝোতা হয় বটে, তবে বিমানবালার ভেতরে ক্ষোভ থেকেই যায়।
কিছুদিন পর এই বিমানবালার বাসায় মিলু অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর চিকিৎসায় বিপুল অর্থ খরচ হয়। বিমানবালা আর কুলিয়ে উঠতে পারছিলেন না। মিলুর বন্ধুরা তাঁর চিকিৎসার জন্য কনসার্ট করে অর্থ সংগ্রহের আয়োজন করেন। এ রকম একটি কনসার্ট হয় পিরোজপুরে। কিন্তু সেই কনসার্টের টাকা আর মিলু পাননি। পিরোজপুর সমিতির কিছু লোক আর মিলুর সহযোগীরা সব টাকা মেরে দেন। এ নিয়ে আবার গন্ডগোল শুরু হয়। এই সালিসেও মিলন ঢুকে পড়েন। এবার তাঁর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন মিলুর গানের কম্পোজার গায়িকা আঁখি আলমগীরের প্রথম স্বামী সাইরাস আলতাফ শাশা, মিলুর ড্রামবাদক পলাশ সাউ, বাবু, ফারুক, পিরোজপুর সমিতির জিয়াসহ অনেকে। ইসমাত আরার সঙ্গে মিলনের পুরোনো বিরোধ তো আছেই; সেই সঙ্গে যুক্ত হয় পিরোজপুরের ঘটনা। এরই প্রেক্ষাপটে ২০০১ সালের ৪ আগস্ট রাতে বেইলি রোড থেকে নিখোঁজ হন মিলন।
মিলনের স্ত্রী মুনিরা আমাকে বলেছিলেন, ঘটনার দিন রাতে মিলন বেইলি রোডে আযম বাবুর ‘ডিজিটন’ স্টুডিওতে গিয়েছিলেন গান রেকর্ডের কাজে। রাত ১০টার দিকে তাঁকে ফোন করে বলেন, ফিরতে দেরি হবে। এরপর মিলনকে আর ফোনে পাননি। বেইলি রোডে এখন যেখানে ক্যাপিটাল টাওয়ার, তার ঠিক পাশের ভবনেই ছিল স্টুডিওটি। টাওয়ারের সামনে ‘চমচম’ নামে একটি মিষ্টির দোকান ছিল। ঘটনার দিন রাতে স্টুডিওর এক কর্মচারী মিলনকে হেঁটে সিদ্ধেশ্বরীর ভেতরে ঢুকতে দেখেছিলেন।
মিলন খুন হওয়ার ঘটনায় মুনিরা কয়েকজনের নাম দিয়ে ৮ আগস্ট (২০০১) রমনা থানায় অপহরণ ও হত্যা মামলা করেন। মোজাম্মেল হোসেন তখন রমনা থানার ওসি। তিনি আমার উপস্থিতিতে ডিএমপির কমিশনার আনোয়ারুল ইকবালকে বলেছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে, বিমানবালা ইসমাত আরার বাসাতেই মিলন খুন হন। লাশ উদ্ধারের সময় স্যুটকেসে বিমানের সিল থাকা একটি বালিশ ও ব্যাগ পাওয়া যায়। তা ছাড়া লাশ উদ্ধারের পরপরই ওই বিমানবালা গা ঢাকা দেন। কমিশনারের কাছে দেওয়া ওসির সেই বক্তব্য পত্রিকায় ছাপাও হয়েছিল।
এই বক্তব্য যেদিন ছাপা হয়, সেদিন বিমানবালা ইসমাত আরা অজ্ঞাত স্থান থেকে আমাকে ফোন করে বলেন, তিনি মিলনকে খুন করেননি, খুন করেছেন আঁখি আলমগীরের স্বামী শাশা। তিনি বললেন, পিরোজপুর কনসার্টের টাকা মেরে দেওয়ার পর মিলনের সঙ্গে শাশার অনেক তর্কাতর্কি হয়। মিলন তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। শাশাও তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন।
কিন্তু মিলুর প্রথম স্ত্রী পলাশ আমাকে ফোনে বলেন, মিলু তাঁর মায়ের কাছে বলেছেন, মিলনকে গোপনে আটকে রেখেছিলেন বিমানবালা ইসমাত আরা।
অনেক দিন ধরে মিলন খুনের মামলার তদন্ত করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। কিন্তু তারা কখনোই ইসমাত আরাকে ধরতে পারেনি। লাশ উদ্ধারের পর থেকে তিনি আর প্রকাশ্যে আসেননি। ইসমাত আরার বাসায় দুই দফা তল্লাশিও করেছিল ডিবি। তার পরও ডিবি এই মামলার কোনো কিনারা করতে পারেনি। গত বৃহস্পতিবার মোখলেসুর রহমানের কাছ থেকে শুনলাম, সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় ডিবি একপর্যায়ে এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল।
আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে মিলনের স্ত্রী মুনিরা, তাঁর দুই সন্তান সৌরভ আর সৃষ্টির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম। তাঁদের আর খুঁজে পেলাম না। সে সময় তাঁরা মোহাম্মদপুরের যে বাসায় ছিলেন, সেখানে আর নেই। জানি না কোথায় আছেন, কেমন আছেন।
মিলনের দুই সন্তান এত দিনে হয়তো অনেক বড় হয়েছেন। আর তাঁরা এটা জেনে বড় হয়েছেন, সারা দিন সভা-সেমিনারে আইনের শাসনের যে বুলি আওড়ানো হয়, সবই বাকোয়াজ, মিথ্যে। বাবার হত্যা মামলা তো তাঁদের তা-ই বলে।
আরও পড়ুন:

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১২ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

তারাগঞ্জ থেকে খালি রিকশা নিয়ে চালক ঝন্টু আসছিলেন সৈয়দপুরের দিকে। কাছাকাছি আসার পর লাল রঙের একটি প্রাইভেট কার আচমকা রিকশাটির সামনে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে দুজন নেমে বড় আকারের একটি স্যুটকেস রিকশায় তুলে দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বলেন, ‘এটা নিয়ে রেলস্টেশনে অপেক্ষা
১৯ নভেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১২ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

তারাগঞ্জ থেকে খালি রিকশা নিয়ে চালক ঝন্টু আসছিলেন সৈয়দপুরের দিকে। কাছাকাছি আসার পর লাল রঙের একটি প্রাইভেট কার আচমকা রিকশাটির সামনে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে দুজন নেমে বড় আকারের একটি স্যুটকেস রিকশায় তুলে দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বলেন, ‘এটা নিয়ে রেলস্টেশনে অপেক্ষা
১৯ নভেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১২ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

তারাগঞ্জ থেকে খালি রিকশা নিয়ে চালক ঝন্টু আসছিলেন সৈয়দপুরের দিকে। কাছাকাছি আসার পর লাল রঙের একটি প্রাইভেট কার আচমকা রিকশাটির সামনে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে দুজন নেমে বড় আকারের একটি স্যুটকেস রিকশায় তুলে দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বলেন, ‘এটা নিয়ে রেলস্টেশনে অপেক্ষা
১৯ নভেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

তারাগঞ্জ থেকে খালি রিকশা নিয়ে চালক ঝন্টু আসছিলেন সৈয়দপুরের দিকে। কাছাকাছি আসার পর লাল রঙের একটি প্রাইভেট কার আচমকা রিকশাটির সামনে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে দুজন নেমে বড় আকারের একটি স্যুটকেস রিকশায় তুলে দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বলেন, ‘এটা নিয়ে রেলস্টেশনে অপেক্ষা
১৯ নভেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১২ দিন আগে