কামরুল হাসান

২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর, শুক্রবারের সকালটা ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। একটু দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছিল না। হাইওয়ের গাড়িগুলো চলছিল কুয়াশা বাতি জ্বালিয়ে, ধীরগতিতে। সে রকম কচ্ছপগতিতে তিনটি গাড়ি এসে থামল কাশিমপুর-২ কারাগারের সামনে। ছুটির দিনে কারাগারের সামনে লোকজনের ভিড় নেই। তবু গাড়ির আরোহীরা কেউই নামলেন না, ঠায় বসে থাকলেন গাড়ির ভেতরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকার পর একজন এসে ইশারা করতেই সবাই নড়েচড়ে বসলেন। ততক্ষণে সকাল আটটা বেজে কুড়ি মিনিট।
একটু পরে কারাগারের নিরাপত্তায় বসানো সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল। খুলে গেল কারাগারের মূল ফটক। এরপর মাঝারি উচ্চতার একহারা গড়নের এক ব্যক্তি মাথা নিচু করে ফটক থেকে বেরিয়ে বাইরে এলেন। এদিক-ওদিক তাকালেন, সোজা গিয়ে উঠলেন মাঝখানের গাড়িটিতে।
কারও মুখে কোনো কথা নেই, গাড়িগুলো কারাগার চত্বর থেকে বেরিয়ে হাইওয়েতে উঠে গেল। ততক্ষণে কুয়াশা কমতে শুরু করেছে, গাড়িগুলোও গতি পেয়ে গেল।
যাঁর জন্য এই মহা আয়োজন, তিনি শীর্ষস্থানীয় কোনো রাজনৈতিক নেতা বা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নন। তিনি ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন, রাজধানীর শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ কুমার বিশ্বাস ওরফে বিকাশ। সহোদরের নামের সঙ্গে মিলিয়ে যাঁদের একমাত্র পরিচয় ‘বিকাশ-প্রকাশ’ গ্রুপ।
ঢাকায় যখন ক্রাইম রিপোর্টিং শুরু করি, তখন রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ডে সহোদর সন্ত্রাসী গ্রুপ ছিল দুটি। এর একটি হলো হারিস-জোসেফ, অন্যটি বিকাশ-প্রকাশ। তবে হারিস-জোসেফের সঙ্গে এঁদের পার্থক্য হলো, হারিস-জোসেফদের যোগাযোগ ছিল সমাজের উঁচু স্তরে; সেই তুলনায় বিকাশ-প্রকাশের চলাচল নিচুতলায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁরা কাজ করতেন ভাড়াটে হিসেবে। যে কারণে এলাকার এক এমপি ছাড়া আর কারও কোনো পৃষ্ঠপোষকতা তাঁরা পাননি। সর্বশেষ বিকাশকে জেল থেকে বেরোতেও ‘সুপারি’ থেকে পাওয়া কোটি কোটি টাকা ঢালতে হয়েছে। তবে সে কথায় পরে আসছি, তার আগে দুই ভাইয়ের ঠিকুজিটা একটু ঝালাই করে নেওয়া যাক।
দুই ভাইয়ের পিতার নাম বিমল চন্দ্র বিশ্বাস। বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শিবনগরে। প্রকাশ বড়, বিকাশ ছোট। তাঁদের আরও দুই ভাই আছে—রনি ও প্রতাপ। রনি কয়েক বছর আগে মাদকাসক্ত হয়ে মারা গেছে। প্রতাপ এখন কালীগঞ্জ বাজারে ওষুধের ব্যবসা করে। আর আছেন বৃদ্ধ মা। ৮০ বছরের এই নারী গ্রামের বাড়িতে একাই থাকেন।
বিমল চন্দ্র বিশ্বাসের জীবন শুরু হয়েছিল ঢাকায়, ছোটখাটো চাকরি দিয়ে। চার ছেলেকে নিয়ে ভালোই চলছিল। থাকতেন মিরপুর পাইকপাড়া এলাকায়। বড় ছেলে বিকাশ কলেজে উঠেই বেপরোয়া হয়ে পড়েন। শুরু হয় পাইকপাড়াকেন্দ্রিক মাস্তানি। সঙ্গে আরও কিছু তরুণ জুটে যায়। এরপর পায় কে। ১৯৮৫ সালের দিকে এশিয়া সিনেমা হলের টিকিট বিক্রি নিয়ে হলের কালোবাজারি রমজানের সঙ্গে বিরোধ বাধে। একদিন রমজানকে খুন করে ফেলেন। রমজান খুন হওয়ার পর প্রকাশের ‘নামডাক’ হয়ে যায়। ছোট ভাই বিকাশ তখন পড়তেন মিরপুর বাঙলা কলেজে। দাদার (কু) খ্যাতি তাঁকেও স্পর্শ করে। দেখা যায়, পথঘাটে লোকজন প্রকাশের ভাই হওয়ার কারণে তাঁকে বেশ খাতির-যত্ন করে। এই লোভ আর ছাড়তে পারেন না বিকাশ। তিনিও ভাইয়ের পথ ধরেন। একপর্যায়ে প্রকাশ-বিকাশ বাহিনী হিসেবে তাঁদের নাম চলে আসে পুলিশের খাতায়।
আগারগাঁও এলাকায় সে সময় জমজমাট ঠিকাদারি ব্যবসা। ই-টেন্ডার তখনো শুরু হয়নি। ভয় দেখিয়ে বা টেন্ডার বাক্স দখল করা ছিল প্রাচীন আমলের রাজ্য দখল করার মতো। কিছু ঠিকাদার সেই সুযোগ কাজে লাগাতেন। একদল ঠিকাদার টেন্ডার দখল করতে প্রকাশ ও বিকাশকে ভাড়ায় নিয়ে আসেন। এভাবে আগারগাঁও পিডব্লিউডির দপ্তর তাঁদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এ সময় বাধা হয়ে দাঁড়ান প্রতিপক্ষ ঠিকাদারের ভাড়াটে আরেক সন্ত্রাসী শামীম। একদিন পিডব্লিউডি দপ্তরের ভেতরেই শামীমকে গুলি করে হত্যা করেন দুই ভাই। সঙ্গে শামীমের সহযোগী মামুনও খুন হয়। এই খুনের পর রাতারাতি ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের হিরো বনে যান দুই ভাই। বিকাশ-প্রকাশের নাম ছড়িয়ে পড়ে। তখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। তাঁদের ঠিকাদারি কাজে ছাত্রলীগ নেতা জরিপ বাধা হয়ে দাঁড়ান। এরপর তাঁরা জরিপকেও খুন করেন। একে একে ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত আলী মিস্টার, গুদারাঘাটের টিপু, কল্যাণপুরে মুদিদোকানি রুহুল আমিন, মিরপুরে খাজা মার্কেটের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, শিল্পপতি আজহারুল ইসলাম, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আবদুস সামাদ, ভিডিও সেন্টারের মালিক মাহবুবসহ অনেকে খুন হন তাঁদের হাতে। তখন দেখা যেত, প্রতি মাসেই কেউ না কেউ তাঁদের হাতে খুন হচ্ছে।
প্রকাশ-বিকাশ এরপর মিরপুর-আগারগাঁও এলাকা থেকে বাসাবোতে আস্তানা গাড়েন। ঢাকায় তখন সুইডেন আসলাম, হারেস, জোসেফ, সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, টিক্কা, মুরগি মিলন ও লিয়াকত হোসেনের দাপট চরমে। আধিপত্য নিয়ে শুরু হয় সংঘাত। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থাকায় লিয়াকত ও মুরগি মিলন এগিয়ে যান। পিছিয়ে পড়েন প্রকাশ-বিকাশ।
১৯৯৭ সালে ঢাকা মহানগর পুলিশ শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একটি তালিকা তৈরি করে। সেই তালিকায় প্রথম দুই ভাইয়ের নাম আসে। এই তালিকা প্রকাশের পর ১৯৯৭ সালে মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন গোয়েন্দা পুলিশের এসি আকরাম হোসেন নারায়ণগঞ্জ থেকে বিকাশকে গ্রেপ্তার করেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে ১২টি খুনের মামলা ছিল। সেই থেকে জেলেই ছিলেন বিকাশ। আর প্রকাশ তখনো বাইরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর ছবি, পরিচয়সহ তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকা বেরোলে প্রকাশ পালিয়ে ভারতে চলে যান। সেখান থেকে ফ্রান্সে। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন। তবে ফ্রান্সে থাকলেও তাঁর নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় হচ্ছে ঢাকায়। এরপর ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে। এতেও তাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়। জেলে থাকলেও বিকাশ কখনো থেমে থাকেননি। কারাগারে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছিলেন। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তাঁর লোকেরা সক্রিয় ছিল। সর্বশেষে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু হত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন সুমন শিকদার ওরফে মুসা ঘটনার কয়েক দিন আগে দেশ ছাড়েন। পুলিশের মতে, সেই মুসাও ছিলেন প্রকাশ-বিকাশ গ্রুপের সদস্য।
বিকাশের সেই গোপন মুক্তির খবর আমরা জেনেছিলাম অনেক পরে, ওই দিন বিকেলের দিকে। ততক্ষণে তিনি নির্বিঘ্নেই পৌঁছে গেছেন গন্তব্যে। শুনেছি, বেনাপোল সীমান্ত হয়ে প্রথমে যান ভারতের হরিদাসপুরে, তারপর কলকাতায়। সম্ভবত এখন তিনি ফ্রান্সে আছেন। তখন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, বিকাশের এই মুক্তির পেছনে পাঁচ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছিল। কারা সেই টাকার ভাগ পেয়েছিলেন, সেটা পুরো গল্পটি পড়লেই আঁচ করা যাবে। তবে প্রমাণ ছাড়া তো কাউকে অভিযুক্ত করা যায় না।
যেমন, বিকাশকে মুক্তির সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় খুব গোপনে, যাতে কাকপক্ষীও টের না পায়। সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধের কথা তো আগেই বলেছি। এমনিতে কারাগারের নিয়ম অনুসারে সকাল ১০টা থেকে সূর্যাস্তের আগের সময় ছাড়া অন্য সময়ে কোনো বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয় না। কিন্তু সেই রীতি ভেঙে বিকাশকে মুক্তি দেওয়া হয় সকাল ৮টা ২০ মিনিটে। আবার শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্তি পেলে সেটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হয়।
তখন গাজীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন আবদুল বাতেন। তিনি এখন ডিআইজি। আমি ঘটনার দিন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, ‘এটা আমাদের নলেজে নেই।’ গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তো সারা দিন মানিকগঞ্জে ভাই’। গাজীপুর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ছিলেন কানিজ জাহান। তিনি বলেছিলেন, ‘তাই নাকি? জানি না তো ভাই।’
এবার আসি কারাগারের কথায়। কাশিমপুর কারাগার-২-এর কারাধ্যক্ষ ছিলেন সুভাষ চন্দ্র ঘোষ। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘নিয়ম মেনেই আমরা তাঁকে মুক্তি দিয়েছি।’ আর কারা মহাপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম খান বলেছিলেন, ‘আমাকে কেন বলছেন ভাই, আপনাদের মন্ত্রীর কাছে জানতে চান।’
ফোন দিয়েছিলাম তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে। তিনি বলেছিলেন, ‘একটা লোক ১৫ বছর জেলে ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে নতুন আর কী অভিযোগ আসতে পারে? জেলের ভেতরে থেকে সে কী অপরাধ করবে? তুমি বললেই তো হবে না।’
মন্ত্রীর এই কথার পর আর কিছু কি বলার আছে? আশা করি পাঠকের কাছে সব খোলাসা হয়ে গেছে। আরেকটু বলে রাখি, ওই দিন গাজীপুর জেলা পুলিশের দুজন কর্মকর্তা বিকাশের মুক্তির সময় কারাগারের আশপাশেই ছিলেন। অন্য কোনো সংস্থা যাতে বিকাশকে কারা ফটক থেকে ধরে নিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছিলেন তাঁরা।
আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখা শেষ করার আগে প্রকাশ-বিকাশের পরিবারের খোঁজ নিতে আজকের পত্রিকার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি মো. আবদুর রহিম গিয়েছিলেন শিবনগর গ্রামে। তিনি খোঁজ নিয়ে বললেন, মহাপ্রতাপশালী এই সন্ত্রাসীদের পরিবার গ্রামে একেবারে বিচ্ছিন্ন। তাদের সঙ্গে কেউ মেলামেশা করে না, আত্মীয়তাও করে না। তাদের আত্মীয়স্বজনও নিজেদের পরিচয় দেন না। বিকাশ-প্রকাশের এক খালাতো ভাই তাঁকে বলেছেন, ‘ওরা সন্ত্রাসী, সন্ত্রাসী কারও স্বজন হতে পারে না, আমারও না। তারা আমাদের কেউ না।’
আরও পড়ুন:

২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর, শুক্রবারের সকালটা ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। একটু দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছিল না। হাইওয়ের গাড়িগুলো চলছিল কুয়াশা বাতি জ্বালিয়ে, ধীরগতিতে। সে রকম কচ্ছপগতিতে তিনটি গাড়ি এসে থামল কাশিমপুর-২ কারাগারের সামনে। ছুটির দিনে কারাগারের সামনে লোকজনের ভিড় নেই। তবু গাড়ির আরোহীরা কেউই নামলেন না, ঠায় বসে থাকলেন গাড়ির ভেতরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকার পর একজন এসে ইশারা করতেই সবাই নড়েচড়ে বসলেন। ততক্ষণে সকাল আটটা বেজে কুড়ি মিনিট।
একটু পরে কারাগারের নিরাপত্তায় বসানো সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল। খুলে গেল কারাগারের মূল ফটক। এরপর মাঝারি উচ্চতার একহারা গড়নের এক ব্যক্তি মাথা নিচু করে ফটক থেকে বেরিয়ে বাইরে এলেন। এদিক-ওদিক তাকালেন, সোজা গিয়ে উঠলেন মাঝখানের গাড়িটিতে।
কারও মুখে কোনো কথা নেই, গাড়িগুলো কারাগার চত্বর থেকে বেরিয়ে হাইওয়েতে উঠে গেল। ততক্ষণে কুয়াশা কমতে শুরু করেছে, গাড়িগুলোও গতি পেয়ে গেল।
যাঁর জন্য এই মহা আয়োজন, তিনি শীর্ষস্থানীয় কোনো রাজনৈতিক নেতা বা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নন। তিনি ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন, রাজধানীর শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ কুমার বিশ্বাস ওরফে বিকাশ। সহোদরের নামের সঙ্গে মিলিয়ে যাঁদের একমাত্র পরিচয় ‘বিকাশ-প্রকাশ’ গ্রুপ।
ঢাকায় যখন ক্রাইম রিপোর্টিং শুরু করি, তখন রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ডে সহোদর সন্ত্রাসী গ্রুপ ছিল দুটি। এর একটি হলো হারিস-জোসেফ, অন্যটি বিকাশ-প্রকাশ। তবে হারিস-জোসেফের সঙ্গে এঁদের পার্থক্য হলো, হারিস-জোসেফদের যোগাযোগ ছিল সমাজের উঁচু স্তরে; সেই তুলনায় বিকাশ-প্রকাশের চলাচল নিচুতলায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁরা কাজ করতেন ভাড়াটে হিসেবে। যে কারণে এলাকার এক এমপি ছাড়া আর কারও কোনো পৃষ্ঠপোষকতা তাঁরা পাননি। সর্বশেষ বিকাশকে জেল থেকে বেরোতেও ‘সুপারি’ থেকে পাওয়া কোটি কোটি টাকা ঢালতে হয়েছে। তবে সে কথায় পরে আসছি, তার আগে দুই ভাইয়ের ঠিকুজিটা একটু ঝালাই করে নেওয়া যাক।
দুই ভাইয়ের পিতার নাম বিমল চন্দ্র বিশ্বাস। বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শিবনগরে। প্রকাশ বড়, বিকাশ ছোট। তাঁদের আরও দুই ভাই আছে—রনি ও প্রতাপ। রনি কয়েক বছর আগে মাদকাসক্ত হয়ে মারা গেছে। প্রতাপ এখন কালীগঞ্জ বাজারে ওষুধের ব্যবসা করে। আর আছেন বৃদ্ধ মা। ৮০ বছরের এই নারী গ্রামের বাড়িতে একাই থাকেন।
বিমল চন্দ্র বিশ্বাসের জীবন শুরু হয়েছিল ঢাকায়, ছোটখাটো চাকরি দিয়ে। চার ছেলেকে নিয়ে ভালোই চলছিল। থাকতেন মিরপুর পাইকপাড়া এলাকায়। বড় ছেলে বিকাশ কলেজে উঠেই বেপরোয়া হয়ে পড়েন। শুরু হয় পাইকপাড়াকেন্দ্রিক মাস্তানি। সঙ্গে আরও কিছু তরুণ জুটে যায়। এরপর পায় কে। ১৯৮৫ সালের দিকে এশিয়া সিনেমা হলের টিকিট বিক্রি নিয়ে হলের কালোবাজারি রমজানের সঙ্গে বিরোধ বাধে। একদিন রমজানকে খুন করে ফেলেন। রমজান খুন হওয়ার পর প্রকাশের ‘নামডাক’ হয়ে যায়। ছোট ভাই বিকাশ তখন পড়তেন মিরপুর বাঙলা কলেজে। দাদার (কু) খ্যাতি তাঁকেও স্পর্শ করে। দেখা যায়, পথঘাটে লোকজন প্রকাশের ভাই হওয়ার কারণে তাঁকে বেশ খাতির-যত্ন করে। এই লোভ আর ছাড়তে পারেন না বিকাশ। তিনিও ভাইয়ের পথ ধরেন। একপর্যায়ে প্রকাশ-বিকাশ বাহিনী হিসেবে তাঁদের নাম চলে আসে পুলিশের খাতায়।
আগারগাঁও এলাকায় সে সময় জমজমাট ঠিকাদারি ব্যবসা। ই-টেন্ডার তখনো শুরু হয়নি। ভয় দেখিয়ে বা টেন্ডার বাক্স দখল করা ছিল প্রাচীন আমলের রাজ্য দখল করার মতো। কিছু ঠিকাদার সেই সুযোগ কাজে লাগাতেন। একদল ঠিকাদার টেন্ডার দখল করতে প্রকাশ ও বিকাশকে ভাড়ায় নিয়ে আসেন। এভাবে আগারগাঁও পিডব্লিউডির দপ্তর তাঁদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এ সময় বাধা হয়ে দাঁড়ান প্রতিপক্ষ ঠিকাদারের ভাড়াটে আরেক সন্ত্রাসী শামীম। একদিন পিডব্লিউডি দপ্তরের ভেতরেই শামীমকে গুলি করে হত্যা করেন দুই ভাই। সঙ্গে শামীমের সহযোগী মামুনও খুন হয়। এই খুনের পর রাতারাতি ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের হিরো বনে যান দুই ভাই। বিকাশ-প্রকাশের নাম ছড়িয়ে পড়ে। তখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। তাঁদের ঠিকাদারি কাজে ছাত্রলীগ নেতা জরিপ বাধা হয়ে দাঁড়ান। এরপর তাঁরা জরিপকেও খুন করেন। একে একে ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত আলী মিস্টার, গুদারাঘাটের টিপু, কল্যাণপুরে মুদিদোকানি রুহুল আমিন, মিরপুরে খাজা মার্কেটের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, শিল্পপতি আজহারুল ইসলাম, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আবদুস সামাদ, ভিডিও সেন্টারের মালিক মাহবুবসহ অনেকে খুন হন তাঁদের হাতে। তখন দেখা যেত, প্রতি মাসেই কেউ না কেউ তাঁদের হাতে খুন হচ্ছে।
প্রকাশ-বিকাশ এরপর মিরপুর-আগারগাঁও এলাকা থেকে বাসাবোতে আস্তানা গাড়েন। ঢাকায় তখন সুইডেন আসলাম, হারেস, জোসেফ, সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, টিক্কা, মুরগি মিলন ও লিয়াকত হোসেনের দাপট চরমে। আধিপত্য নিয়ে শুরু হয় সংঘাত। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থাকায় লিয়াকত ও মুরগি মিলন এগিয়ে যান। পিছিয়ে পড়েন প্রকাশ-বিকাশ।
১৯৯৭ সালে ঢাকা মহানগর পুলিশ শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একটি তালিকা তৈরি করে। সেই তালিকায় প্রথম দুই ভাইয়ের নাম আসে। এই তালিকা প্রকাশের পর ১৯৯৭ সালে মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন গোয়েন্দা পুলিশের এসি আকরাম হোসেন নারায়ণগঞ্জ থেকে বিকাশকে গ্রেপ্তার করেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে ১২টি খুনের মামলা ছিল। সেই থেকে জেলেই ছিলেন বিকাশ। আর প্রকাশ তখনো বাইরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর ছবি, পরিচয়সহ তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকা বেরোলে প্রকাশ পালিয়ে ভারতে চলে যান। সেখান থেকে ফ্রান্সে। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন। তবে ফ্রান্সে থাকলেও তাঁর নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় হচ্ছে ঢাকায়। এরপর ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে। এতেও তাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়। জেলে থাকলেও বিকাশ কখনো থেমে থাকেননি। কারাগারে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছিলেন। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তাঁর লোকেরা সক্রিয় ছিল। সর্বশেষে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু হত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন সুমন শিকদার ওরফে মুসা ঘটনার কয়েক দিন আগে দেশ ছাড়েন। পুলিশের মতে, সেই মুসাও ছিলেন প্রকাশ-বিকাশ গ্রুপের সদস্য।
বিকাশের সেই গোপন মুক্তির খবর আমরা জেনেছিলাম অনেক পরে, ওই দিন বিকেলের দিকে। ততক্ষণে তিনি নির্বিঘ্নেই পৌঁছে গেছেন গন্তব্যে। শুনেছি, বেনাপোল সীমান্ত হয়ে প্রথমে যান ভারতের হরিদাসপুরে, তারপর কলকাতায়। সম্ভবত এখন তিনি ফ্রান্সে আছেন। তখন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, বিকাশের এই মুক্তির পেছনে পাঁচ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছিল। কারা সেই টাকার ভাগ পেয়েছিলেন, সেটা পুরো গল্পটি পড়লেই আঁচ করা যাবে। তবে প্রমাণ ছাড়া তো কাউকে অভিযুক্ত করা যায় না।
যেমন, বিকাশকে মুক্তির সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় খুব গোপনে, যাতে কাকপক্ষীও টের না পায়। সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধের কথা তো আগেই বলেছি। এমনিতে কারাগারের নিয়ম অনুসারে সকাল ১০টা থেকে সূর্যাস্তের আগের সময় ছাড়া অন্য সময়ে কোনো বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয় না। কিন্তু সেই রীতি ভেঙে বিকাশকে মুক্তি দেওয়া হয় সকাল ৮টা ২০ মিনিটে। আবার শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্তি পেলে সেটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হয়।
তখন গাজীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন আবদুল বাতেন। তিনি এখন ডিআইজি। আমি ঘটনার দিন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, ‘এটা আমাদের নলেজে নেই।’ গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তো সারা দিন মানিকগঞ্জে ভাই’। গাজীপুর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ছিলেন কানিজ জাহান। তিনি বলেছিলেন, ‘তাই নাকি? জানি না তো ভাই।’
এবার আসি কারাগারের কথায়। কাশিমপুর কারাগার-২-এর কারাধ্যক্ষ ছিলেন সুভাষ চন্দ্র ঘোষ। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘নিয়ম মেনেই আমরা তাঁকে মুক্তি দিয়েছি।’ আর কারা মহাপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম খান বলেছিলেন, ‘আমাকে কেন বলছেন ভাই, আপনাদের মন্ত্রীর কাছে জানতে চান।’
ফোন দিয়েছিলাম তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে। তিনি বলেছিলেন, ‘একটা লোক ১৫ বছর জেলে ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে নতুন আর কী অভিযোগ আসতে পারে? জেলের ভেতরে থেকে সে কী অপরাধ করবে? তুমি বললেই তো হবে না।’
মন্ত্রীর এই কথার পর আর কিছু কি বলার আছে? আশা করি পাঠকের কাছে সব খোলাসা হয়ে গেছে। আরেকটু বলে রাখি, ওই দিন গাজীপুর জেলা পুলিশের দুজন কর্মকর্তা বিকাশের মুক্তির সময় কারাগারের আশপাশেই ছিলেন। অন্য কোনো সংস্থা যাতে বিকাশকে কারা ফটক থেকে ধরে নিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছিলেন তাঁরা।
আজকের ‘আষাঢ়ে নয়’ লেখা শেষ করার আগে প্রকাশ-বিকাশের পরিবারের খোঁজ নিতে আজকের পত্রিকার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি মো. আবদুর রহিম গিয়েছিলেন শিবনগর গ্রামে। তিনি খোঁজ নিয়ে বললেন, মহাপ্রতাপশালী এই সন্ত্রাসীদের পরিবার গ্রামে একেবারে বিচ্ছিন্ন। তাদের সঙ্গে কেউ মেলামেশা করে না, আত্মীয়তাও করে না। তাদের আত্মীয়স্বজনও নিজেদের পরিচয় দেন না। বিকাশ-প্রকাশের এক খালাতো ভাই তাঁকে বলেছেন, ‘ওরা সন্ত্রাসী, সন্ত্রাসী কারও স্বজন হতে পারে না, আমারও না। তারা আমাদের কেউ না।’
আরও পড়ুন:

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৯ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৩ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর, শুক্রবারের সকালটা ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। একটু দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছিল না। হাইওয়ের গাড়িগুলো চলছিল কুয়াশা বাতি জ্বালিয়ে, ধীরগতিতে। সে রকম কচ্ছপগতিতে তিনটি গাড়ি এসে থামল কাশিমপুর-২ কারাগারের
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৯ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৩ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর, শুক্রবারের সকালটা ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। একটু দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছিল না। হাইওয়ের গাড়িগুলো চলছিল কুয়াশা বাতি জ্বালিয়ে, ধীরগতিতে। সে রকম কচ্ছপগতিতে তিনটি গাড়ি এসে থামল কাশিমপুর-২ কারাগারের
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
১ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৩ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর, শুক্রবারের সকালটা ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। একটু দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছিল না। হাইওয়ের গাড়িগুলো চলছিল কুয়াশা বাতি জ্বালিয়ে, ধীরগতিতে। সে রকম কচ্ছপগতিতে তিনটি গাড়ি এসে থামল কাশিমপুর-২ কারাগারের
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৯ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ নভেম্বর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর, শুক্রবারের সকালটা ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। একটু দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছিল না। হাইওয়ের গাড়িগুলো চলছিল কুয়াশা বাতি জ্বালিয়ে, ধীরগতিতে। সে রকম কচ্ছপগতিতে তিনটি গাড়ি এসে থামল কাশিমপুর-২ কারাগারের
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৯ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৩ দিন আগে