Ajker Patrika

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর

ধান কেনায় অনিয়ম, ক্ষতির মুখে প্রান্তিক চাষি

  • অভিযোগের তির উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দিকে।
  • নির্বাচিত প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে তিন টন ধান কেনার কথা।
  • প্রতিটি কার্ডের বিনিময়ে ব্যবসায়ীদের থেকে উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ।
আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
জুনায়েদ কবীর। ছবি: সংগৃহীত
জুনায়েদ কবীর। ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বোরো মৌসুমে কৃষি অফিসের তালিকাভুক্ত কৃষকদের পরিবর্তে বহিরাগত সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খাদ্যগুদাম (এলএসডি) কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অনলাইনে আবেদন করে প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ধান নেওয়ার কথা থাকলেও এই উপজেলায় হয়েছে উল্টো। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বোরো মৌসুমে সরকারের কাছে ধান বিক্রির জন্য ‘কৃষকের অ্যাপ (নতুন অ্যাপ)’-এর মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করেন কৃষকেরা। অনলাইন থেকে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করা হয়। গোমস্তাপুর উপজেলার আটটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা থেকে ১ হাজার ৮৩৩ জন কৃষকের আবেদনের বিপরীতে ৩৬২ জন কৃষক নির্বাচিত হন। প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে তিন টন হিসাবে ১ হাজার ৮৫ টন ধান ক্রয়ের কথা খাদ্যগুদামের। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গত ২৫ মে থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হয়; যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩১ আগস্ট। কিন্তু সেটা না করে সিন্ডিকেটের কাছ থেকে ধান ক্রয় করেছেন খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা।

এমনকি নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ২২ জুন থেকে উন্মুক্ত করে ধান ক্রয় করেন ৩০ জুনের মধ্যে।

অভিযোগ রয়েছে, গোমস্তাপুর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুনায়েদ কবীর বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে অবৈধ সুযোগ নিয়ে ধান ক্রয় করেছেন। প্রতিটি কার্ডের বিনিময়ে দুই হাজার টাকা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়েছেন এলএসডি কর্মকর্তা। সেই সিন্ডিকেটে ছিলেন ধান-চাল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম ওরফে কোয়েল, সেরাজুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম ওরফে বকুল। এদিকে তালিকাভুক্ত কয়েকজন কৃষক গুদামে একাধিকবার ধান বিক্রি করতে গেলে বরাদ্দের ধান কেনা শেষ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

লটারিতে নাম ওঠা গোমস্তাপুর ইউনিয়নের কৃষক জুলমাত আলী বলেন, ‘আমরা চারজন বন্ধু ধান দেওয়ার জন্য অনলাইন অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদন করেছিলাম। সময়ও ছিল। কিন্তু ধান দিতে গিয়ে শুনি, ধান নেবে না। গুদাম কর্মকর্তা বলেন, আগে কেন আসোনি। এখন ধান নিতে পারব না, ধান নেওয়া শেষ হয়ে গেছে।’

কৃষাণী কুবেরা বেগম বলেন, ‘সরকারি শর্ত পূরণ করে ধান রেডি করে গুদামে বিক্রি করতে গেলে বলে, ধান কেনা শেষের পথে। খুব অনুরোধ করে তিন টনের মধ্যে ২৫ বস্তা ধান কম নিয়েছে। শুনেছি, সিন্ডিকেটের ধান ঘুষের বিনিময়ে গুদাম কর্মকর্তা কিনে নিয়েছেন। এতে আমার মতো আরও বহু প্রান্তিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর এমন ঘটনা আশা করিনি।’

আলীনগর এলাকার কৃষক মনজুর রহমান জানান, তিনি নিজে খাদ্যগুদামে ধান দেননি। টাকার বিনিময়ে অন্যের কাছে কার্ড বিক্রি করেছেন। তবে কত টাকায় বিক্রি করেছেন, সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি কৃষক মনজুর।

একই এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার কার্ড নিয়ে ধান দিয়েছে এলাকার এক চাচাতো ভাই। আমি নিজের ধান দিইনি।’

গোমস্তাপুর এলাকার কৃষক ইউসুফ আলী বলেন, ‘দেড় মাস আগে ধান দিয়েছি। সরকারি গুদামে ধান দিতে গিয়ে আমি অনেক হয়রানির শিকার হয়েছি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কৃষক জানান, সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে গেলে গুদামের লোকজন অনেক অজুহাত দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে গোমস্তাপুর এলএসডি গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুনায়েদ কবীরের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া দেননি তিনি।

এ বিষয়ে কথা হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাঁচ উপজেলায় ৩ হাজার ৮২০ টন ধান নেওয়ার কথা ছিল। সেটা ১৫ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত অফিশিয়াল নির্দেশনা ছিল। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ৩০ জুনের মধ্যে ধান কেনা শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়।’ নির্বাচিত কৃষকের বাইরে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহন আহমেদ বলেন, ‘কোনো কৃষক যদি লিখিত অভিযোগ করেন, সে ক্ষেত্রে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। গুদাম পরিদর্শন করে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লঞ্চ দুর্ঘটনা: চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় পৌঁছা হলো না জেলে হানিফের

শিমুল চৌধুরী, ভোলা 
লঞ্চ দুর্ঘটনা নিহত হানিফ মাঝির পরিবারের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
লঞ্চ দুর্ঘটনা নিহত হানিফ মাঝির পরিবারের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎মো. হানিফ মাঝি (৪২), পেশায় জেলে। বাড়ি উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়। হতদরিদ্র এ জেলে সারা জীবন নদীতে জাল টেনে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। অসুস্থ স্ত্রী রহিমা বেগমের চিকিৎসার জন্য রওনা হয়ে চাঁদপুরের মেঘনায় ‎লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঘন কুয়াশার কারণে মেঘনা নদীতে ঢাকা থেকে বরিশালগামী একটি যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে অনেকে নদীতে ঝাঁপ দেন।

নদীতে ভাসমান জাকির সম্রাট-৩ থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় হানিফসহ কয়েক যাত্রীকে এমভি কর্ণফুলী-৯ লঞ্চযোগে ঢাকার সদরঘাটে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

হানিফ মাঝি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদাবাদ গ্রামের মো. গেদু শনির ছেলে।

স্থানীয় লোকজন জানান, চার সন্তান ও স্ত্রীর সংসারে নদীতে মাছ শিকারই হানিফ মাঝির একমাত্র আয়ের পথ। সম্প্রতি স্ত্রী রহিমা বেগম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসায় সুস্থ না হওয়ায় ধারদেনা করে তাঁকে ঢাকায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জেলে হানিফ।

গতকাল বিকেলে স্ত্রীকে নিয়ে চরফ্যাশন উপজেলার ঘোষেরহাট লঞ্চঘাট থেকে এমভি জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চে উঠে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু রাত ২টার দিকে সন্তানেরা খবর পান, তাঁর বাবা হানিফ মাঝি আর নেই।

এ খবর ফরিদাবাদ গ্রামে পৌঁছালে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। আজ শুক্রবার বিকেলে নিহত হানিফ মাঝির বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবাকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন হানিফের সন্তানেরা। বসতঘরের সামনে সন্তানেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তাঁরা বলেন, ‘আমাদের মা অনেক দিন ধরে অসুস্থ। বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী। ধারদেনা করে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাচ্ছিলেন। রাত ১টার দিকে ফোনে খবর পাই, দুর্ঘটনায় বাবা মারা গেছেন।’ বরিশালগামী এমভি অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চ ও জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চচালকের বিচার দাবি করেন তাঁরা।

‎নিহত হানিফের ভাই আক্তার বলেন, চিকিৎসার জন্য যাত্রা করা মানুষটি শেষপর্যন্ত লাশ হলেন। নদীর বুকে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষ শুধু দুটি লঞ্চের নয়, এটি গরিব জেলে পরিবারের জীবনের সঙ্গে নিয়তির ভয়াবহ সংঘর্ষ। নিহত হানিফ মাঝির পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আহাম্মদপুর ইউনিয়নের হানিফ নামের একজনের নিহতের খবর পেয়েছি। পরিবারের সার্বিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তবে নৌ পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় পিকআপচাপায় দুই কিশোর নিহত

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
পিকআপ ভ্যানের নিচে চাপা পড়া মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিকআপ ভ্যানের নিচে চাপা পড়া মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় পিকআপ ভ্যানের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই কিশোর নিহত হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ষোল দাগ ক্যানেলপাড়া হাসপাতাল রোডে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো মিরপুর উপজেলার বিজনগর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে সিয়াম শেখ (১৬) এবং একই এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আ. রশিদ (১৬)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আজ বিকেলে সিয়াম ও রশিদ মটরসাইকেল নিয়ে ভেড়ামারার লালন শাহ সেতু, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও মনি পার্ক এলাকায় ঘুরতে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ষোল দাগ ক্যানেলপাড়া এলাকায় এলে কুষ্টিয়া থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যান তাদের মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়।

এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেলচালক সিয়াম নিহত হয়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত আরেক কিশোর রশিদকে উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ জাহেদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, পিকআপ ভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলা: ফয়সালকে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুজন কারাগারে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুজনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রিপন হোসেন তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।

বিকেলে দুজনকে পাঁচ দিনের দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

২১ ডিসেম্বর দুজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর তাঁদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর আগে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট থেকে দুজনকে আটক করে ডিবি পুলিশ।

১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় শরিফ ওসমান বিন হাদি একটি রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল করে আসা দুজনের একজন তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিতে হাদি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার পর এখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান হাদি।

১৪ ডিসেম্বর রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের। হাদির মৃত্যুর পর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় ভয়ংকর মেঘনা, এক রাতে একাধিক প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করা অ্যাডভেঞ্চার-৯। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করা অ্যাডভেঞ্চার-৯। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতটি মেঘনা নদীতে নৌ চলাচলের জন্য ছিল বেশ ভয়ংকর। ওই রাতে অ্যাডভেঞ্চার-৯ এবং জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চের সংঘর্ষসহ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে মেঘনায়। এসব দুর্ঘটনায় অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। বিএনপির জনসভা শেষে নেতা-কর্মীদের নিয়ে অনেক লঞ্চ এই রাতে বরিশালে ফিরছিল। রাতের আঁধারে ঘন কুয়াশায় বেপরোয়া লঞ্চ চলানোয় এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গতকাল দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ভোলা থেকে ঢাকাগামী জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চের সঙ্গে ঢাকা-বরিশাল রুটের অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে চারজনের মৃত্যু হয়। চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ও হরিণা এলাকার মাঝামাঝি স্থানে মেঘনা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

একই রাতে চাঁদপুর এলাকার মেঘনায় কুয়াশায় দিক হারিয়ে এম খান-৭ ও ঈগল-৪ নামে দুটি লঞ্চের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। ঢাকা-বরিশাল রুটের এম খান-৭ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. শুভ জানান, চাঁদপুরের আমিরাবাদ এলাকায় কুয়াশায় দিক হারিয়ে ঈগল-৪ লঞ্চ দিক হারিয়ে তাদের লঞ্চের ডান পাশে ধাক্কা দেয়। এতে এম খান-৭-এর চারটি টেক্সিন ও খুঁটি ভেঙে গেছে। লঞ্চটি নিরাপদে আজ শুক্রবার সকালে পৌঁছেছে।

একই রাতে মেঘনায় বরিশালগামী সুরভী-৭ ও ঢাকাগামী ফারহান-৭ লঞ্চের মধ্যে মৃদু সংঘর্ষ হয়। এ ছাড়া সুন্দরবন-১৬ লঞ্চের সঙ্গে বাল্কহেডের ধাক্কা লেগেছে। এ ঘটনায় আজ বিকেলে ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের ভেতর থেকে দুই স্টাফের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

ঢাকা থেকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়াগামী কুয়াকাটা-১ লঞ্চ দিক হারিয়ে চরে ওঠে গিয়েছিল। লঞ্চের সুপারভাইজার মো. হুমায়ন কবীর জানান, জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেলে আজ সকাল ১০টায় লঞ্চটি চর থেকে নামানো সম্ভব হয়। পরে নিরাপদে মঠবাড়িয়ায় পৌঁছেছে। এ লঞ্চের যাত্রীরা ছিলেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। রাজধানীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গণসংবর্ধনা কর্মসূচিতে অংশ নিতে তাঁরা লঞ্চটি রিজার্ভ নিয়েছিলেন।

বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লঞ্চের চালকেরা আইন মানছে না। কুয়াশার মধ্যেও তাঁরা লঞ্চ চালান। যে কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে।

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক সোলায়মান হোসেন বলেন, গতকাল নদীতে অনেক বেশি লঞ্চ ছিল। বিএনপির জনসভার পর লঞ্চগুলো ফিরেছে, নিয়মিত লঞ্চও ছিল। গত রাতে কুয়াশাও ছিল অতি ঘন। যে কারণে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটে একই রাতে। দুর্ঘটনার জেরে সুন্দরবন-১৬-এর রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে। অ্যাডভেঞ্চার-৯ এবং জাকির সম্রাট-৩-এর রুট পারমিটও বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, কুয়াশার বিষয়ে সাবধান করে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ঘাটে ঘাটে মাইকিংও করা হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু লঞ্চ বেপরোয়া গতিতে চলায় এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত