Ajker Patrika

উত্তরে নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বন্যার শঙ্কা

রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৪, ১৮: ১৯
উত্তরে নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বন্যার শঙ্কা

ভারতের উত্তর সিকিমে ভারী বর্ষণসহ উজান থেকে নেমে আসা ঢলে রংপুর, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার প্রধান প্রধান নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এর মধ্যে রংপুর ও কুড়িগ্রামের তিস্তা, দুধকুমার নদীর দুই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এই তিন জেলায় স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/ ২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (৯৮৯ মিলিমিটার/ ২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে।
 
এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্যা মোকাবিলায় সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরে থাকা মানুষজনকে নিরাপদে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
 
রংপুর: ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। তিস্তায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার কাউনিয়া, পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা অববাহিকার বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।
 
পাউবো কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না থাকায় ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর অনেকে নিরুপায় হয়ে বসতি সরিয়ে নিচ্ছে। কিছু চরাঞ্চলের বাড়িঘরের চারপাশে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ সড়ক। ডুবে গেছে ওই সব এলাকার সবজিখেতসহ ফসলি মাঠ।
 
প্রধান নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রংপুরের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
 
পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানা যায়, রংপুর জেলায় অবস্থিত সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) রংপুর অঞ্চলে ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার সকাল নয়টায় তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে শূন্য দশমিক ২০ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে ভোর ছয়টায় ওই পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার ধরা হয়।
 
এদিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে আজ বুধবার সকাল নয়টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখানে ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
 
তিস্তা নদীর কাউনিয়ার পাঞ্চরভাঙা গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী বলেন, ‘তিস্তা হামাক শ্যাষ করি দিছে। বছর বছর বাড়ি ভাঙে, ফসল কাড়ে, প্রাণ নেয়। আল্লাহ জানে আর কত কাল তিস্তার সঙ্গে যুদ্ধ করা নাগবে।’
 
কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর নিম্নাঞ্চল কিছুটা প্লাবিত হয়েছে। হঠাৎ করে পানি বাড়ায় গবাদি পশুপাখি নিয়ে এসব এলাকার মানুষ সমস্যায় পড়েছে। বাদাম ও শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হবে।
 
কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো পরিবার যাতে উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সরকারিভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের মানুষের পরিস্থিতির খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি যে রকম হবে, সেভাবেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
 
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না জানান, তিস্তাবেষ্টিত গঙ্গাচড়ায় এখনো প্লাবন পরিস্থিতি হয়নি। তবুও তারা সতর্ক রয়েছেন। বন্যা হলে রেসকিউ করার জন্য টিম প্রস্তুত রেখেছেন।
 
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের ঢল আর গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডালিয়া ব্যারেজের সব কটি গেটই খুলে রাখা হয়েছে। কাউনিয়া পয়েন্টে কিছুটা বাড়ছে পানি প্রবাহ। এ ছাড়া ভাটির অঞ্চলে সার্বক্ষণিক নদীপাড়ের পরিস্থিতির খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।
 
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরে থাকা মানুষজনকে নিরাপদে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
 
গাইবান্ধা: উজানের ঢলে গাইবান্ধায় সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করছে। এতে জেলার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এসব নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
 
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ঘাগোয়া ও ফুলছড়ি উপজেলার এরান্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি ও ফজলুপুর এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ও হরিপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করছে। অন্যদিকে নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সদরের মোল্লার চর ও ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
 
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নিয়ন্ত্রণকক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ৫২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে আজ বুধবার ৩টা পর্যন্ত এই পরিমাণ পানি বৃদ্ধি পায়। তবে কোনো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা এখনো অতিক্রম করেনি।
 
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।’
 
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগামীকাল জেলা ও উপজেলায় দূর্যোগকালীন মিটিং ডাকা হয়েছে। নদী বেষ্টিত যে চারটি ইউনিয়ন রয়েছে, সেই সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ প্রত্যক্ষ সদস্যদের বলে দেওয়া হয়েছে নদীর পাড়ে পার্শ্ববর্তী যে ওয়ার্ডগুলো আছে সেখানে গ্রুপ ভিত্তিক ভলান্টিয়ার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার জন্য।
 
এছাড়া ওই সব এলাকায় শুকনা খাবার বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিক সব প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান এই কর্মকর্তার।
 
কুড়িগ্রাম: ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের তিস্তা ও দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
 
এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার রাজারহাট উপজেলার তিস্তা অববাহিকার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। পাউবো কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর অনেকে নিরুপায় হয়ে বসতি সরিয়ে নিচ্ছে। ভাঙনের হুমকিতে আছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্থানীয় বাজারসহ অন্তত শতাধিক পরিবার।
 
কুড়িগ্রামে পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৩১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। একই সময়ে ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম (ধরলা ব্রিজ) পয়েন্টে ৪৭ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বেড়ে ক্রমশ বিপৎসীমার দিকে ধাবিত হচ্ছে।
 
ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যার চোখরাঙানির সঙ্গে তিস্তার তীরে শুরু হয়েছে ভাঙন। রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তীরবর্তী কয়েকটি এলাকায় তিস্তার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। পাড় ভেঙে একের পর এক বসতভিটা আর আবাদি জমি নিজের গর্ভে নিয়ে নিচ্ছে আগ্রাসী এই নদী। ভাঙনের কিনারে নিরুপায় দিন যাপন করছে অনেক দিনমজুর পরিবার। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে কুড়িগ্রামে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘নদনদীর পানি বাড়ছে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে। কয়েকটি স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করে সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’
 
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলাগুলোতে ত্রাণসহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বগুড়ায় ট্রাকচাপায় কলেজছাত্র নিহত

বগুড়া প্রতিনিধি
আগুনে জ্বলছে ট্রাক। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে জ্বলছে ট্রাক। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার শাজাহানপুরে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর সময় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে রোহান (১৮)নামের এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুজন।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের শাজাহানপুর উপজেলার বি-ব্লক এলাকায় ফ্লাইওভারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রোহান শেরপুর পৌর এলাকার নয়াপাড়ার আশু মিয়ার ছেলে এবং শেরপুর ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র।

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) তৌহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকাগামী চালবোঝাই একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট ২২-৭৯৩৭) মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। একই সময়ে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেলে দুই যুবক যাচ্ছিলেন। বি-ব্লক ফ্লাইওভারে ওঠার পর হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি ট্রাকের পেছনের চাকার নিচে ঢুকে পড়ে। এতে মোটরসাইকেলচালক নিহত হন এবং মারুফ নামের অপর একজন গুরুতর আহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই মোটরসাইকেলে আগুন ধরে যায় এবং বিকট শব্দে ট্রাকের একটি চাকা ফেটে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন ট্রাকে ছড়িয়ে পড়লে চালক ট্রাক থেকে নামার সময় আহত হন। স্থানীয় লোকজন হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

শেরপুর হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল আমিন জানান, ট্রাকটি জব্দ করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগুনে পুড়ল ৩ বাস ৪ দোকান

রাঙামাটি প্রতিনিধি 
অগ্নিকাণ্ডে চারটি দোকান ও তিনটি বাস পুড়ে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
অগ্নিকাণ্ডে চারটি দোকান ও তিনটি বাস পুড়ে গেছে। ছবি: সংগৃহীত

রাঙামাটি শহরের দোয়েল চত্বর পুরোনো বাসস্টেশন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে চারটি দোকান ও তিনটি বাস পুড়ে গেছে। গতকাল শনিবার মধ্যরাতে একটি আসবাবপত্রের কারখানা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জসিম জানান, শহরের পুরোনো বাসস্টেশনের খাগড়াছড়ি বাস টার্মিনালে মধ্যরাতে আগুন দেখতে পান ব্যবসায়ীরা।

এ সময় দ্রুত দোকান থেকে বের হয়ে রাস্তায় এসে চিৎকার করতে থাকলে লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

ফায়ার সার্ভিসের ইন্সপেক্টর মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের তিনটি ইউনিট প্রায় আধা ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এখনো আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেত্রকোনায় কৃষকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
কৃষক হেলাল মিয়ার বাড়িতে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কৃষক হেলাল মিয়ার বাড়িতে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার সদর উপজেলায় হেলাল উদ্দিন (৫৮) নামের এক কৃষকের পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে সদর উপজেলার কালিয়ারা গাবরাগাতি ইউনিয়নের নাড়িয়াপাড়া গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত হেলালউদ্দিন সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া গ্রামের মৃত আশরাফ আলী তালুকদারের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে হেলাল উদ্দিন তাঁর স্ত্রী বেদেনা আক্তারের সঙ্গে একই ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। ভোরে স্ত্রী ঘরের বাইরে শৌচাগারে যান। ফিরে এসে স্বামীর গলাকাটা লাশ দেখতে পান। তাঁর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং পুলিশকে খবর দেন।

স্ত্রী বেদেনা আক্তার বলেন, ‘ভোরে শৌচাগারে যেতে ঘরের বাইরে যাই। কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে তাঁকে (হেলাল) গলাকাটা অবস্থায় দেখতে পাই। এ সময় তাঁর পা ও মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল।’

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন সরকার বলেন, হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল রূপপুর প্রকল্পের দুই শ্রমিকের

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি 
নিহত রাব্বি হোসেন ও নিশান মুন্সি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রাব্বি হোসেন ও নিশান মুন্সি। ছবি: সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদীতে মোটরসাইকেল ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার রাতে শহরের আলহাজ মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে রাব্বি হোসেন (২৭) এবং একই ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামের গোলাম রসুল মুন্সির ছেলে নিশান মুন্সি (২২)। তাঁরা দুজনই রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন এবং ডিউটি শেষে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাব্বি ও নিশান মোটরসাইকেলে করে বাড়ির পথে রওনা দেন। ঈশ্বরদী শহরের আলহাজ মোড় এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে তাঁদের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে দুজনই গুরুতর আহত হন।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আহত দুজনকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে রাব্বি হোসেন মারা যান। আজ রোববার সকালে নিশান মুন্সির মৃত্যু হয়।

ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিস ও ওয়্যারহাউস ইনচার্জ মীর আমিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত দুজনের মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত