Ajker Patrika

যাত্রাবাড়ীতে দোকানিকে হত্যা: শেখ হাসিনা-রেহানা-জয়-পুতুলসহ আসামি ২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৪, ২১: ২৯
যাত্রাবাড়ীতে দোকানিকে হত্যা: শেখ হাসিনা-রেহানা-জয়-পুতুলসহ আসামি ২১

রাজধানী যাত্রাবাড়ী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় ফলের দোকানদার ফরিদ শেখকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহমেদের আদালতে মামলা করেন নিহতের বাবা সুলতান মিয়া। 

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলায় বাকি আসামিরা হলেন—সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ডিএসসিসির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশিদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিপ্লব কুমার, সাবেক কমিশনার ডিএমপি হাবিবুর রহমান, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, আমির হোসেন আমু, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ. আরাফাত এবং যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৪ জুলাই শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবিতে ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলন চলাকালে বিকেল সাড়ে ৩টার সময় ফরিদ শেখ যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজার দক্ষিণ পার্শ্বের রাস্তা দিয়ে তাঁর ফলের দোকানে যাচ্ছিল। শেখ হাসিনার নির্দেশে গণহত্যা চালানোর সময় পুলিশের গুলির আঘাতে মারাত্মক জখম হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। আশপাশের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফরিদ শেখকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। গুলি ফরিদ শেখের পাকস্থলীর ডান পাশে লেগে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুগদা হাসপাতালে ফরিদ শেখ গত ৬ আগস্ট বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মৃত্যুবরণ করেন।

শেখ হাসিনাসহ মামলার আরজিতে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সেই ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যারা সংস্কার বাধাগ্রস্ত করছে, তাদের সঙ্গে এনসিপির জোট সম্ভব নয়: হাসনাত আবদুল্লাহ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডে এনসিপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডে এনসিপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণ) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমাদের নাহিদ ইসলাম স্পষ্ট করে বলেছেন, যারা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নেবে, আমরা তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে পারি। সংস্কারের পক্ষে, ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষের শক্তিগুলো যদি আমাদের সঙ্গে আসতে চায়, তাদের সঙ্গে জোট করতে পারি। কিন্তু যারা দেশের সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে, তাদের সঙ্গে এনসিপির কোনো নির্বাচনী জোট সম্ভব নয়।’

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডে এনসিপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে এই মন্তব্য করেন তিনি। হাসনাত বলেন, ‘আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে। নাহিদ ইসলাম ইতিমধ্যে ১৫ নভেম্বরের কথা বলেছেন।’

আওয়ামী লীগের অগ্নিসন্ত্রাস প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক। আমাদের সামনের দিকে ভাবতে হবে। আমরা দেখেছি টক শোতে আওয়ামী লীগের ল্যাসপেন্সার, ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী, সুবিধাভোগীরা আওয়ামী লীগের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করেছিল। কিন্তু গত দুই দিনের কার্যক্রমে বোঝা উচিত, তারা কখনো গণমানুষের দল ছিল না। আওয়ামী লীগের পতন ব্যালটে হয়নি, তাকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত তখনই হয়, যখন তার রাজনৈতিক অবস্থান ফুরিয়ে যায়। এ দলটিকে ফিরিয়ে আনার পক্ষে যারা বৈধতা উৎপাদন করছে, তারা মূলত আগুন-সন্ত্রাসের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করছে। তারা বুলেট, ব্যাংক লুট, গুম, খুন, মাইনরিটি নির্যাতনের পক্ষে বৈধতা দিচ্ছে।’

সংস্কারের বিষয়ে হাসনাত বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে চাই। ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিটি দল-মতকে আমরা ধারণ করি। আবার যদি মধ্যরাতে ডিসি ভাগাভাগি হয়, পুলিশকে দাঁড় করিয়ে রেখে নির্বাচন হয়, নির্বাচন যদি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হয়, তাহলে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে না। আমরা চাই জনগণের ক্ষমতায়ন।’

গণমাধ্যম বিষয়ে হাসনাত বলেন, ‘সাংবাদিকদের মধ্যে একধরনের ব্যক্তি প্রোপাগান্ডা ও ফ্যাসিবাদের পক্ষে মতামত উৎপাদন করে। তারা আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার মতামত উৎপাদন করে। সাংবাদিকেরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও মিডিয়া মাফিয়ারা ব্যর্থ করতে চায়।’ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে হাসনাত বলেন, ‘প্রশাসনকে সতর্ক হতে হবে, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত যদি করতে না পারি, তাহলে কোনো সময়েই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব না।’

হাসনাত আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের যে ঐতিহ্য রয়েছে, সেটা রাজনৈতিকভাবে কলুষিত করা হয়েছে। গডফাদারের রাজনীতি এসব কলুষিত করেছে। এনসিপি নারায়ণগঞ্জে ঐতিহ্য অক্ষুণ্ন রেখে জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।

অনুষ্ঠানে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল আমিনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আহমেদুর রহমান তনু, জাতীয় যুবশক্তির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিন মাহমুদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পল্টনে ৮ দলের সমাবেশ: মঞ্চ প্রস্তুত, মিছিল নিয়ে আসছেন নেতাকর্মীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পল্টন মোড়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সমাবেশের আয়োজন চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন মোড়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সমাবেশের আয়োজন চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নির্বাচনের আগে গণভোট এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারিসহ পাঁচ দাবিতে পল্টনে সমাবেশের আয়োজন করেছে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ৮টি দল। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে এ সমাবেশ। এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে সমাবেশের মঞ্চ। নেতাকর্মীরাও মিছিল নিয়ে দলে দলে এসে জড়ো হচ্ছেন।

বেলা ১২টার দিকে পল্টন মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল নিয়ে পল্টন মোড় ও আশপাশে জড়ো হচ্ছেন আন্দোলনরত আট দলের নেতাকর্মীরা।

সমাবেশে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘গণভোট সরকার দেবে কি দেবে না সে সিদ্ধান্ত আজই দিতে হবে। জুলাই সনদ, সংস্কার নিয়ে অনেক টালবাহানা করেছে সরকার। আর কোনো টালবাহানা আজকের জনতা মানবে না।’

আব্দুর রাহমান নামে জামায়াতের এক কর্মী বলেন, ‘আমরা সরকারের অনেক বাহানা শুনেছি, আর শুনতে চাই না। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে যদি নির্বাচনের আগেই গণভোট হয়। অন্যথায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।’

গতকাল সোমবার আন্দোলনরত আট দলের নেতাদের বৈঠক পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ সমাবেশ।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) হাজার হাজার নয়, লাখ লাখ মানুষের জমায়েত হবে। লোকে লোকারণ্য হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। রাজধানী এবং আশপাশের মানুষই এতে যুক্ত হবে।’

তিনি আরও জানান, পল্টন মোড়ে সমাবেশের মঞ্চ তৈরি করা হবে এবং নাইটিঙ্গেল মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবন এলাকাজুড়ে আট দলের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করবেন।

পল্টন মোড়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সমাবেশের আয়োজন চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন মোড়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সমাবেশের আয়োজন চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে গত ৬ নভেম্বর পল্টন মোড়ে সমাবেশ করেন ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি জমা দিতে যমুনায় যান একটি প্রতিনিধি দল। তারপর সিদ্ধান্ত জানানো না হলে আজ ১১ নভেম্বর সমাবেশ করার কথা ঘোষণা দেওয়া হয়।

যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলো হলো—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

পল্টন মোড়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সমাবেশের আয়োজন চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন মোড়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সমাবেশের আয়োজন চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তাদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হচ্ছে—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের ওপর চলতি মাসের মধ্যে গণভোট আয়োজন করা; ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা; ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাহরাইনে ২০ তলা ভবন থেকে পড়ে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
নির্মাণাধীন এই ভবন থেকে পড়ে নিহত হন সফিক। ছবি: সংগৃহীত
নির্মাণাধীন এই ভবন থেকে পড়ে নিহত হন সফিক। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের বাহরাইনে ২০ তলা ভবনে কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে মো. সফিক (৪০) নামের এক বাংলাদেশি যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় বেলা ১টার দিকে (বাহরাইন সময় বেলা ১১টা) দেশটির ছিটমহল এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত সফিক বাহরাইনের মানামা অ্যান্ডার গলিতে বসবাস করতেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাহরাইনপ্রবাসী সুব্রত সাহা। মরদেহ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সফিকের পরিবার।

জানা গেছে, সফিক চাঁদপুরের কচুয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের (কোয়া চাঁদপুর) মিয়াজী বাড়ির বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সন্তান হারিয়ে মা-বাবাসহ স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছেলের জবানবন্দি: স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার মো. ফারুক। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার মো. ফারুক। ছবি: সংগৃহীত

নিজের স্ত্রীর সঙ্গে বাবা ও ভাইয়ের পরকীয়ার জেরে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেন ছেলে। হত্যার পর লাশের পাশে নির্বিকার বসে ছিলেন তিনি। ৯ নভেম্বর রাত ১২টার দিকে মাদারীপুরের শিবচরের বাঁশকান্দি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানা যায়, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল নিজের স্ত্রীর সঙ্গে বাবা ও ভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক।

জানা গেছে, প্রথমত নিজের পছন্দের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেয়নি পরিবার। যাঁর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে, তাঁর সঙ্গে রয়েছে ভাই ও বাবার অবৈধ সম্পর্ক। একপর্যায়ে স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এর পেছনেও ছিল বাবার হাত। বাবার সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়া মেনে নিতে না পেরে বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ছেলে ফারুক। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বাবাকে নিয়ে কাজের সন্ধানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে শিবচরে আসেন। মূলত কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তাঁর বাবা মতিউর। পরে রাতের বেলা ছেলে ফারুকের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বাবা মোবাইলে কথা বলা শেষে ঘুমিয়ে পড়লে কোদাল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর গতকাল সোমবার বিকেলে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরের আদালতে হাজির করা হলে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দিতে এমন লোমহর্ষক বর্ণনা দেন বাবাকে হত্যাকারী ছেলে মো. ফারুক (২৭)। রাত ১০টার দিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। নিহত মতিউর ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট থানার হারিয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) জাহাঙ্গীর আলম জানান,  মতিউর ও তাঁর ছেলে ফারুক কাজের সন্ধানে মাদারীপুর জেলার শিবচরের বাঁশকান্দি ইউনিয়নের পঞ্চগ্রামে এসে রসুন বপনের কাজ নেন। রোববার বাবা-ছেলে রাতের খাবার শেষে একসঙ্গে একই বিছানায় ঘুমাতে যান। রাত ১০টার পর বিছানায় শুয়ে ছেলে ফারুকের বউয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন বাবা মতিউর। এ সময় পাশের ঘরে বসে বিড়ি খাচ্ছিলেন ফারুক।

পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে ঘুমিয়ে পড়লে ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত বাবার মুখে কোদাল দিয়ে কোপ মারেন। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখ, মাথা আর বুকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। মাত্র আড়াই মিনিটে ১৭টি কোপ দেন। মতিউরের মৃত্যু নিশ্চিত হলে তাঁর লাশের পাশে বসে বিড়ি ধরিয়ে টানতে থাকেন ফারুক।

জাহাঙ্গীর আলম আরও জানান, শব্দ পেয়ে পাশের ঘর থেকে বাড়ির মালিকের ছেলে ও আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং মতিউরকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় ফারুককে অবিচল আর নিশ্চুপ থাকতে দেখে বাড়ির মালিক শিবচর থানায় ফোন দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘাতক ছেলেকে আটক করে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদাল, ফারুকের রক্তাক্ত জামাকাপড়সহ অন্যান্য আলামত জব্দ করে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মৃতদেহটি সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় মতিউরের স্ত্রী কোহিনূর বেগম বাদী হয়ে তাঁর ছেলেকে আসামি করে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সোমবার বিকেলে গ্রেপ্তার ফারুককে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরের আদালতে হাজির করা হলে তাঁর বাবা মতিউরকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। নিজের দোষ স্বীকার করে বিচারকের নিকট ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া শেষে ফারুককে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী বাবাকে হত্যার জন্য আগে থেকে পাশের রুমে একটি কোদাল লুকিয়ে রেখেছিলেন ফারুক। অপেক্ষায় ছিলেন কখন তাঁর বাবা ঘুমাতে যাবেন সেই সুযোগের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত