Ajker Patrika

কুমিল্লা এখন মিছিলের শহর

রেজা করিম, কুমিল্লা থেকে
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২২, ১৮: ১৬
কুমিল্লা এখন মিছিলের শহর

সাংগঠনিক বিভাগ কুমিল্লায় বিভাগীয় গণসমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। আগামীকাল শনিবার বেলা ১১টায় গণসমাবেশের কার্যক্রম শুরু হবে। সমাবেশ সামনে রেখে আগে থেকেই কুমিল্লায় আসতে শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা।

আজ শুক্রবার শহরের কান্দিরপাড়ের টাউন হল মাঠে দলটির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীকে মিছিল করতে দেখা যায়। সমাবেশস্থল টাউন হল মাঠেই জুমার নামাজ আদায় করেন নেতা-কর্মীরা। কেন্দ্রীয় নেতারাও সাধারণ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, জুমার নামাজের পর থেকেই নেতা-কর্মীরা একের পর এক মিছিল নিয়ে টাউন হল মাঠে আসছেন। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা এসব মিছিলের বহরে পুরো কুমিল্লা মিছিলের শহরে পরিণত হয়েছে। এ সময় দূরদূরান্ত থেকে পিকআপ ভ্যানে করেও নেতা-কর্মীদের আসতে দেখা যায়। মিছিলের পরে মিছিল এখন কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন সড়কে। দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দেওয়া হচ্ছে এসব মিছিল থেকে।

সমাবেশ সামনে রেখে আগে থেকেই কুমিল্লায় আসতে শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা। নামাজের পর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা গণসমাবেশের দলনেতা বরকত উল্লাহ বুলু সাংবাদিকদের জানান, এবার পরিবহন ধর্মঘট ডাকা না হলেও সমাবেশে আসতে যাত্রাপথে নানাভাবে কর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানোসহ হয়রানি করা হচ্ছে।

বুলু বলেন, ‘বিএনপির নয়, এই সমাবেশ জনগণের। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সমাবেশ সফল হবে। বাধা দিয়ে কোনো কাজ হবে না।’

সমাবেশ সামনে রেখে আগে থেকেই কুমিল্লায় আসতে শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা।এর আগে সকালে গণসমাবেশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে লাল কার্ড দেখানোর হুমকি দেওয়া হয়। সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কুমিল্লা বিভাগের প্রায় প্রতিটি জেলা-উপজেলায় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকারি দল ও পুলিশ নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে। তবে তারা যতই নির্যাতন-নিপীড়ন করুক, কুমিল্লা বিভাগবাসীকে আগামীকাল কোনো অপশক্তি দমিয়ে রাখতে পারবে না। কুমিল্লা ঐক্যবদ্ধ মুক্তিকামী জনতা আগামীকাল ঐতিহাসিক টাউন হল ময়দান থেকে শেখ হাসিনার অনির্বাচিত অবৈধ সরকারকে লাল কার্ড প্রদর্শন করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘুমে পুলিশ, থানায় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার সেলফি

পটিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
থানায় ঘুমন্ত এক পুলিশের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা। ছবি: সংগৃহীত
থানায় ঘুমন্ত এক পুলিশের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা। ছবি: সংগৃহীত

‘আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি পটিয়া থানায়। দেখা হবে আবারো, ফিরবো বীরের বেশে কোন একদিন। জয় বাংলা।’ কথাগুলো পটিয়া থানার হেফাজতে থাকা গ্রেপ্তার আসামি নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিমের (২১)। গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামের পটিয়া থানা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহিম এ পোস্ট করেন। থানায় আসামির ফেসবুকে সক্রিয় থাকা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

গ্রেপ্তার মহিম পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে পটিয়া পৌর সদরের কাগজীপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে যুবলীগের একটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।

তবে গ্রেপ্তারের পরও মহিমকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। পুলিশ হেফাজতে থাকার পরও তাঁকে ওই সময় ফেসবুকে দিব্যি পোস্ট দিতে দেখা যায়। এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি পটিয়া থানায়। দেখা হবে আবারো, ফিরবো বীরের বেশে কোন একদিন। জয় বাংলা।’ পরে থানা-পুলিশের অফিসকক্ষে হাতকড়া পরা একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘এইদিন দিন নয়, দিন আরও আছে।’ এ ছাড়া ডিউটিরত অবস্থায় ঘুমন্ত এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সেলফি তুলে তা ফেসবুকে পোস্ট করেন মহিম। ছবিটির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘ঘুম ভালোবাসিরেএএএ...। জীবন যেমনই হোক বিনোদন মিস করা যাবে না।’

আরেকটি ছবিতে তাঁকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তুহিনের সঙ্গে ভিডিওকলে যোগাযোগ করতে দেখা যায়। ওই ছবির ক্যাপশনে তুহিন লেখেন—‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আপোষহীন লড়াইয়ে দখলদার বাহিনীর হাতে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারকৃত পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কর্মী মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিমের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে তিনি ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছিলেন বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবাদি জমিতে পুকুর খননে বাধা, কৃষককে এক্সকাভেটরের নিচে ফেলে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
এক্সকাভেটর রেখে পালাতে গিয়ে আটক হয়েছে চালক। ছবি: আজকের পত্রিকা
এক্সকাভেটর রেখে পালাতে গিয়ে আটক হয়েছে চালক। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় আবাদি জমিতে পুকুর খনন করতে বাধা দেওয়ায় এক তরুণকে ভেকু (এক্সকাভেটর) দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার পর পিষে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বড় পালশা বিলে গ্রামের শতাধিক মানুষের সামনেই এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশ ভেকু চালককে আটক করেছে।

নিহত তরুণের নাম আহমেদ জুবায়ের (২৩)। তাঁর বাবার নাম রফিকুল ইসলাম। আটক ভেকু চালকের নাম আব্দুল হামিদ (২৮)। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলে। ভেকুর মালিকের বাড়িও টাঙ্গাইলে।

মোহনপুরের ধুরইল ইউনিয়ন বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান বকুলসহ কয়েকজন প্রায় শতাধিক বিঘা জমি ঘিরে অবৈধভাবে পুকুর খনন শুরু করেছিলেন। উপজেলা বিএনপির এক নেতা তাঁদের প্রশ্রয় দিচ্ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েক বছর ধরেই কৃষকের জমিতে একটি চক্র জোরপূর্বক পুকুর খনন করে। কৃষক জানতেই পারে না তাঁর জমি পুকুর হয়ে যাচ্ছে। জোরপূর্বক পুকুর খননের পর চক্রটি তা মাছ চাষিদের কাছে মোটা টাকায় ইজারা দেয়। এর সামান্য একটি অংশ তখন জমির মালিককে দেওয়া হয়। আগে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এভাবে পুকুর কাটতেন। তাঁরা আত্মগোপন করলেও অবৈধ পুকুর খনন থেমে নেই।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিহত আহমেদ জুবায়েরের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে কবর খনন করা হচ্ছে। কথা হয় স্ত্রী নুসরাত জাহান মোহনা আক্তার জুঁইয়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর ওপর ভেকুর চাকা তুলে দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’

রাতে ওই ঘটনার সময় শতাধিক মানুষের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন হোসেনও। তিনি জানান, কয়েক দিন ধরেই তাঁরা শুনতে পাচ্ছিলেন যে তাঁদের জমিতে বকুলসহ কয়েকজন পুকুর কাটবেন। গ্রামবাসী এতে ‘না’ করেছেন। তাই গ্রামবাসীর চোখ এড়াতে উল্টো পথে রাতে ভেকু নামানো হয়। গ্রামের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে মসজিদে গিয়ে মুয়াজ্জিন আবদুল মান্নানকে দিয়ে মাইকে ঘোষণা দেওয়ান। মাইকে বলা হয়, ‘যারা যারা নিজেদের জমি রক্ষা করতে চান, তাঁরা এখনই বিলে নেমে যান।’ এরপর গ্রামের মানুষ জমির দিকে ছুটে যান। প্রথম দলটির সঙ্গেই জমির কাছে যান আহমেদ জুবায়ের।

আমির হোসেন জানান, তাঁরা গিয়ে দেখেন যে খগেনের জমি কাটা শুরু হয়েছে। তখন গ্রামের লোকজন ভেকু চালককে থামতে বলেন। কিন্তু তিনি থামছিলেন না। গ্রামবাসী ভেকুর দিকে এগিয়ে যেতে চাইলে তিনি ভেকুর বাকেট (সামনের অংশ) চারপাশে ঘোরাতে থাকেন, যাতে কেউ কাছে ভিড়তে না পারে। এ সময় বাকেট গিয়ে লাগে জুবায়েরের মাথায়। তিনি পড়ে যান। তখন পালাতে গিয়ে তাঁর ওপর ভেকু তুলে দেন চালক।

এরপর স্থানীয়রা জুবায়েরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর স্থানীয়রা ভেকু চালককে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে আটক করে। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বিএনপি নেতা বকুল। গ্রামবাসীর তোপের মুখে তিনি মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যান। বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁর মোটরসাইকেল ও ভেকুতে আগুন ধরিয়ে দেন।

আজ সকালে ওই বিলে গিয়ে দেখা যায়, পোড়া মোটরসাইকেল পড়ে আছে। ভেকুর নিচে তখনো আগুন জ্বলছে। দলে দলে মানুষ গিয়ে এসব দেখছেন। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আফাজ উদ্দিন। তিনি বলছিলেন, ‘মানুষ মেরে এভাবে রাজনীতি হবে না।’

কথা হয় মাঠের কৃষক জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা তো পুকুর কাটতে বলিনি। আমরা কৃষক মানুষ, ধান চাষ করব। মাছ তো চাষ করতে চাই না। তারা কেন আমাদের বিনা অনুমতিতে পুকুর কাটতে আসছে? এখানে ১০০ বিঘা জমিতে পুকুর কাটতে হলে কোটি টাকা খরচ আছে। এই টাকা বকুলকে কে দিচ্ছে? সবকিছুই তদন্ত হওয়া দরকার।’

কথা বলতে বিএনপি নেতা আনিসুজ্জামান বকুলের মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। একজন ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘রং নাম্বার।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই পুকুর খননের সঙ্গে রাকিবুল মাস্টার নামের এক ব্যক্তিও যুক্ত। আর ভেকু এনে দিয়েছেন রাজশাহীর খড়খড়ি এলাকার ব্যবসায়ী উজ্জ্বল হোসেন। উজ্জ্বলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে রাকিবুল মাস্টারই ভালো বলতে পারবে।’ রাকিবুল মাস্টারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সকালে ঘটনাস্থলে যান ধুরইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজিম উদ্দিন এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন। সাবেক চেয়ারম্যান কাজিম উদ্দিন বলেন, ‘দলের নাম ভাঙিয়ে এভাবে অপকর্ম করবে তা মেনে নেওয়া যায় না। বকুল একা নেই, তার ওপরেও কেউ আছে। সবাইকে খুঁজে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বিএনপি নেতা ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘দল এখনো ক্ষমতায় আসেনি। তার আগেই এমন কর্মকাণ্ড আমাদের জন্য বিব্রতকর। যারা এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত হলেও যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

স্থানীয় সবাই পুকুর কাটার মূল হোতা হিসেবে বিএনপি নেতা আনিসুজ্জামান বকুলের কথা জানলেও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে বিকেলে জানিয়েছেন মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈনুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘কে কে জড়িত তা আমি জানি না। শুধু ঘটনাস্থল থেকে চালককে আটক করেছি। তার কথা জানি। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা রেকর্ড হলে আসামিদের সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারব।’

তিনি জানান, নিহত জুবায়েরের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। রাতে জুবায়েরের মরদেহ পুলিশ হেফাজতে ছিল। ময়নাতদন্তের জন্য সকালে মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ঘোড়ার মৃত্যুতে দিশেহারা হালিমার পরিবার

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় হালিমার ঘোড়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় হালিমার ঘোড়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ও হাটবাজারে ভাড়া খাঁটিয়ে যার মাধ্যমে চলত হালিমা আক্তার ও তাঁর পরিবারের খরচ, সেই একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে এখন দিশেহারা তাঁরা। কয়েক বছর ধরে একটি ঘোড়াকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল পরিবারের জীবিকা। সেই ঘোড়ার হঠাৎ মৃত্যুতে থমকে গেছে তাঁদের সব স্বপ্ন ও সংগ্রাম।

গতকাল বুধবার বিকেলে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের কেরানীপাড়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় হালিমার ঘোড়াটি। হালিমা আক্তার নওগাঁর ধামরাই এলাকার ওয়াবদুল ইসলামের মেয়ে। বাবা-মেয়েসহ পরিবারটি ঘোড়া নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিযোগিতায় অংশ নিত।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রতিযোগিতা শুরুর আগে হঠাৎ ঘোড়াটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলেও তারাগঞ্জ বাজার এলাকায় পৌঁছালে ঘোড়াটির অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। পরে দ্রুত তারাগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘোড়াটি মারা যায়।

এই ঘোড়া দিয়েই হালিমার বড় বোন তাসমিনা আক্তার একসময় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। বড় বোনের হাত ধরে হালিমার ঘোড়দৌড়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। অন্যের ঘোড়া দিয়ে শুরু হলেও পরে বিভিন্ন মানুষের সহায়তায় পরিবারটি নিজস্ব একটি ঘোড়া পায়। সেই ঘোড়াই ছিল তাঁদের পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস।

হালিমার বাবা ওয়াবদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘোড়াটি দিয়ে আমাদের সংসার চলত। প্রতিযোগিতা, মালপত্র বহন সবই এই ঘোড়ার ওপর নির্ভরশীল ছিল। সুস্থ অবস্থায় নওগাঁ থেকে নিয়ে এসেছিলাম। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ায় আমরা এখন সম্পূর্ণ অসহায়।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে হালিমা আক্তার বলেন, ‘এই ঘোড়াটা আমরা নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছি। ওকে নিয়ে খেলায় যেতাম, সংসার চলত। এখন ঘোড়াটা নেই, আমাদেরও কিছু নেই। কীভাবে চলব বুঝতে পারছি না।’

ঘোড়দৌড় দেখতে আসা দর্শক মিজু সরকার হৃদয় বলেন, ‘হালিমা বেগম ও তাঁর ঘোড়াকে আমরা প্রায়ই প্রতিযোগিতায় দেখতাম। তাঁদের জীবিকার একমাত্র ভরসাটা হারিয়ে গেছে। সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ইসরাতুজ্জাহান ইমা বলেন, ‘ঘোড়াটি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আমাদের কাছে আনা হয়। প্রচণ্ড জ্বর ও ব্যথায় ভুগছিল। প্রায় দুই ঘণ্টা চিকিৎসা দেওয়া হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুবদল নেতা আরিফ হত্যা: সুব্রত বাইনের মেয়ে ৫ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৯
খাদিজা ইয়াসমিন বিথীর গ্রেপ্তারের ফাইল ছবি
খাদিজা ইয়াসমিন বিথীর গ্রেপ্তারের ফাইল ছবি

যুবদল নেতা আরিফ সিকদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা ইয়াসমিন বীথিকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আজ বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন আদালতের হাতিরঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই আরিফ রেজা।

কুমিল্লা জেলা কারাগারের সামনে থেকে ১৫ ডিসেম্বর খাদিজাকে আটক করা হয়। পরদিন তাঁকে আরিফ সিকদার হত্যার ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর ওই মামলায় খাদিজাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম।

তবে মামলার মূল নথি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে না থাকায় সেদিন খাদিজাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে ১৮ ডিসেম্বর রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ঠিক করা হয়।

খাদিজাকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে পাঁচ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তাঁর মেয়ে খাদিজা মগবাজার ও হাতিরঝিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। যুবদল নেতা আরিফকে তাঁরা প্রতিপক্ষ মনে করতেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের পরিকল্পনায় আরিফকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আসামি খাদিজা জড়িত ছিলেন বলে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল রাতে হাতিরঝিল থানার নয়াটোলা মোড়ল গলির দি ঝিল ক্যাফের সামনে আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল মারা যান ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহক্রীড়া সম্পাদক।

এ ঘটনায় নিহতের বোন রিমা আক্তার সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত