Ajker Patrika

এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের খাতা দেখছেন প্রধান পরীক্ষক বাবা

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের খাতা দেখছেন প্রধান পরীক্ষক বাবা

সন্তান চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও বাবা যশোর বোর্ডের ইংরেজি প্রথম পত্রের প্রধান পরীক্ষক হয়েছেন। এমন অভিযোগ উঠেছে যশোরের চৌগাছার ঝাউতলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়নাল হকের বিরুদ্ধে। 

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর পরীক্ষক নিয়োগপত্রে ১১টি শর্ত দিয়ে বলা হয়েছে, শর্তাবলি পালন সাপেক্ষে আপনাকে যশোর বোর্ডের উপর্যুক্ত বিষয় ও পত্রের একজন পরীক্ষক নিয়োগ করা হলো (তবে সন্তান/পোষ্য পরীক্ষার্থী হলে প্রধান পরীক্ষক/পরীক্ষক/নিরীক্ষক হতে পারবেন না এবং এই নিয়োগপত্রটি বাতিল হবে)। ব্রাকেটের ভেতরের অংশটুকু বোল্ড করে লেখা হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক আয়নাল হকের ছেলে চৌগাছা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে চৌগাছা ছারা পাইলট বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এরপরও তিনি তথ্য গোপন করে যশোর বোর্ডের ইংরেজি ১ম পত্রের প্রধান পরীক্ষক হয়েছেন এবং এরই মধ্যে বোর্ড থেকে খাতাও নিয়ে এসেছেন। 

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি বোর্ডের আওতাধীন সকল পরীক্ষক/প্রধান পরীক্ষক/নিরীক্ষকদের নিয়োগপত্র বোর্ডের ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরা সেখান থেকে নিয়োগপত্রটি ডাউনলোড করে নিয়োগপত্রের ওপরে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককের স্বাক্ষর করে বোর্ডে নিয়ে গিয়ে উত্তরপত্র নিয়ে আসতে হবে।

আয়নাল হক এই সুযোগে নিজের ছেলে পরীক্ষার্থী—বিষয়টি গোপন করে ইংরেজি ১ম পত্রের প্রধান পরীক্ষক হিসেবে ৪০০ খাতা দেখার জন্য নিয়ে এসেছেন। বিষয়টি নিয়ে চৌগাছার শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর পরীক্ষক নিয়োগপত্র। ছবি: সংগৃহীত জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আয়নাল হক প্রথমে অস্বীকার করার চেষ্টা করলেও পরে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘এই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। জানার পর আজই বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সাহেবের পিএকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। প্রধান পরীক্ষক হিসেবে ইংরেজি প্রথম পত্রের ৪০০ খাতা পেয়েছিলাম। আমি অনুরোধ করেছি অন্য কাউকে খাতা দিয়ে দেওয়ার জন্য। আপনাদের (সাংবাদিক) কারণে এই খাতা দেখতে পারিনি।’

স্থানীয় এক সাংবাদিকের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চেয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি যা বলবেন সেটাই করব অর্থাৎ আপনি বললে খাতা দেখব।’ পরে তার অফিশিয়াল বক্তব্য চাইলে বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। আপনার মাধ্যমে জানলাম। বিষয়টি বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জানাব। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই হবে।’

তবে এ বিষয়ে জানতে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদের ফোন নম্বরে একাধিকার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চবির বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
চবিতে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চবিতে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক বিবৃতিতে এবার মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী হিসেবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অবশ্য সেই সঙ্গে নেতৃত্বদানকারী হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম. এ. জি ওসমানীর নামও উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যাসহ বিবৃতিতে এসব বলা হয়েছে। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, তাঁর বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান তাঁর বক্তব্যে শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডকে শুধু পাকিস্তানি বাহিনীর কাজ নয়, বরং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করেছেন। এই নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে এবং জাতিকে সঠিক ইতিহাস জানাতে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর ২০২৫) বেলা ১১টায় চবি উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবি জাদুঘরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘যে সময় আমি (পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী) দেশ থেকে পালানোর জন্য চেষ্টা করছি, আমি জীবিত থাকব না মৃত থাকব, সে বিষয়ে কোনো ফয়সালা হয়নি; সে সময় পাকিস্তানি যোদ্ধারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, এটি আমি মনে করি রীতিমতো অবান্তর।’ এ ছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন।

অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের এ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পরই সমালোচনা হতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলসহ ছয়টি সংগঠন তাঁর পদত্যাগের দাবি করে। এ দাবিতে তাঁরা গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে রাখেন। ফলে রাত প্রায় পৌনে ৯টা পর্যন্ত ভবনটিতে আটকা ছিলেন সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দেওয়া বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭১’র স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ২৪’র জুলাই আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম. এ. জি ওসমানীসহ সকল শহীদকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

ড. শামীম উদ্দিন খান একাডেমিক আলোচনার অংশ হিসেবে তাঁর বক্তব্যের সপক্ষে বেশ কয়েকটি রেফারেন্স টেনে আনেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল কাদিরের লেখা ‘দুশো ছেষট্টি দিনে স্বাধীন’ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘৬ ডিসেম্বর থেকে দৌঁড়ের উপর থাকা পাকিস্তানি বাহিনী ১৪ তারিখ এতগুলো লোকের বাসায় গিয়ে গিয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’ এ ছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনির চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনিরের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের উল্লেখ করে বলেছেন, ‘পাকিস্তানিরা আমার বাবাকে হত্যা করেনি।’

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যায় জানিয়েছে, বক্তব্য পেশ করার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে উপ-উপাচার্য ‘পাকিস্তানি বাহিনী’র পরিবর্তে ‘পাকিস্তানি যোদ্ধা’ এবং ‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’ বলতে গিয়ে ‘অবান্তর’ শব্দ ব্যবহার করেন, যা বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। এটি ছিল অনিচ্ছাকৃত এবং তাৎক্ষণিক আলোচনার অংশ।

উল্লেখ্য, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গণতন্ত্রের মানসপুত্র খ্যাত উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনৈতিক নেতা। ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর লেবাননের বৈরুতের এক হোটেলকক্ষে নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যান তিনি। অন্যদিকে জাতীয় নেতা শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক প্রথিতযশা বাঙালি রাজনীতিবিদ। তিনি ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষের কাছে শেরেবাংলা (বাংলার বাঘ) এবং ‘হক সাহেব’ নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মহান এ দুই নেতার একজনের মৃত্যুর নয় বছর ও অন্যজনের আট বছর পর মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। ফলে কীভাবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিলেন এ প্রশ্ন তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই সমালোচনা করছেন। তাঁরা বলছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিহাস বিকৃতি করছে। এক বিকৃতির ব্যাখ্যায় আরেক বিকৃতি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পরিবেশ সৃষ্টি হলে নির্বাচনে যাব, পাতানো নির্বাচনে যাব না: কাদের সিদ্দিকী

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, ‘স্বাধীনতা যার জন্য, সেই মর্যাদা এখনো হয় নাই। এ দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। ভালো নির্বাচন হয়নি বলেই শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। ভালো নির্বাচন হলে শেখ হাসিনা সরকারের এইভাবে নির্মম পতন হতো না।’

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী এসব কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূসের সরকারের যে কর্মকাণ্ড, যাদের নিয়ে উনি ওঠেন বসেন, তারাই বাংলাদেশ না। তারা বাংলাদেশের হয়তো ২৫ ভাগও না। সেই জন্য সার্বিকভাবে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে আমরা অবশ্যই নির্বাচন করব। কিন্তু কোনো পাতানো নির্বাচনে আমরা যাব না।’ এ সময় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যা বললেন মুফতি আমির হামজা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৭
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুফতি আমির হামজা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুফতি আমির হামজা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মুফতি আমির হামজা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ১৯৭১ সালের যে ভূমিকা, এত দিন পর্যন্ত যে মিথ্যা রচনা, আপনারা বদরুদ্দীন উমরের ইতিহাস পড়বেন। তাঁর লিখিত বইতে আমরা পড়েছি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে সমস্ত কল্পকাহিনি লেখা, এগুলো ১০০ ভাগের ৯০ ভাগ মিথ্যা। সুতরাং জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ওই সময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, তারা ছিল ভারতের বিরুদ্ধে। এখন আমরা এটা জেনেছি। এত দিন আমাদের এই সত্য জানতে দেওয়া হয়নি।’

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বিজয় দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বিজয় র‍্যালিতে আমির হামজা এসব কথা বলেন।

আমির হামজা বলেন, ‘আজকের এই বিজয়ের র‍্যালি এই কারণে যে আমরা ১৯৭১ সালে এই দেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম। ভারতের যে আগ্রাসন, এর বিরুদ্ধে ছিলাম এ কারণে আমাদের এরা বিরোধী বানিয়ে রেখেছিল। আগামীর বাংলাদেশকে আমরা ভারতের তাঁবেদারমুক্ত করব। আজকের এই র‍্যালির এটাই উদ্দেশ্য। আগামীতে দেশ ঐক্যবদ্ধ থাকবে, ইনশা আল্লাহ।’

জামায়াতের প্রার্থী আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, দল মত জাতি বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে এ দেশে যারাই জন্ম নেবে, তারাই যেহেতু সম্মানিত নাগরিক, সুতরাং সবাইকে নিয়ে আমরা আবার এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমার মনে হয়, পেছনের ইতিহাস পেছন দিকে টানা ঠিক না। পেছনের সব ইতিহাস ভুলে আমরা নতুন ইতিহাস তৈরি করব। এখানে কোনো দল-মত না থাকাই ভালো, সবাই আমরা এক।’

এ সময় বিজয় র‍্যালিতে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দীন জোয়ার্দ্দার, সহকারী সেক্রেটারি মাজহারুল হক, শহর জামায়াতের আমির এনামুল হকসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

এদিকে আমির হামজার এমন মন্তব‌্যের বিষ‌য়ে কুষ্টিয়া জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার র‌ফিকুল ইসলাম টুকু আজ‌কের প‌ত্রিকা‌কে ব‌লেন, ‘রাজ‌নৈ‌তিক বক্তব‌্য আমরা আম‌লে নিই না, আর এগু‌লো নি‌য়ে আমা‌দের সমা‌লোচনা করারও প্রয়োজন প‌ড়ে না। মু‌ক্তিযু‌দ্ধের ইতিহাস চিরসত‌্য, সেটা সবাই জানে। উনি নির্বাচ‌নে জেতার জন‌্য অনেক কিছু ব‌লেন, আবার ক্ষমাও চান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই রেভেলস সদস্যকে হত্যাচেষ্টা: প্রধান আসামি ঠোঁটকাটা আলতাফ গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‎জুলাই রেভেলসের এক সদস্যকে হত্যাচেষ্টার মামলার প্রধান আসামি আলতাফসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। ছবি: র‍্যাব-১
‎জুলাই রেভেলসের এক সদস্যকে হত্যাচেষ্টার মামলার প্রধান আসামি আলতাফসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। ছবি: র‍্যাব-১

‎জুলাই রেভেলস সংগঠনের এক সদস্যকে হত্যাচেষ্টা মামলায় প্রধান আসামি আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফসহ (৪৬) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকার বিসিক শিল্পনগরী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

‎গ্রেপ্তার হওয়া অন্য দু’জন হলেন—সাইফুল ইসলাম (৩৭) ও মো. আমির হোসেন ফিরোজ (৪৭)।

‎র‍্যাব-১ এর মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাকিব হাসান জানান, শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের পাবলিক কলেজ-সংলগ্ন জুলাই রেভেলসের অফিসে সংগঠনটির প্রস্তাবিত সহসংগঠক ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও সদস্য মো. ইয়াসিনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত সাড়ে ৭টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৬ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে সংগঠনটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায় আসামিরা। একপর্যায়ে আলতাফ জুলাই রেভেলসের সদস্য ইউসুফ আলী রেদোয়ানের মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। এ সময় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের পর হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আহত ইউসুফ আলী রেদোয়ান বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এর ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাতে র‍্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

‎র‍্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ একজন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে দক্ষিণখান, বিমানবন্দর, উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র, মাদক, ডাকাতি, অগ্নিসংযোগসহ অন্তত ১৬টি মামলা রয়েছে। ‎গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। ‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত