অরূপ রায়, সাভার (ঢাকা)

ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত কলকাকলী শিক্ষালয়ের ‘মিনি পার্কে’ রাইড স্থাপন করা হয়েছে—এমন তথ্য রয়েছে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাগজে। প্রকল্পটিতে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে কোনো মিনি পার্কের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে বিদ্যালয়ের পাশে উপজেলা পরিষদের মাঠের এক কোণে স্থাপিত কয়েকটি খেলনাসামগ্রী পাওয়া গেছে।
শুধু কলকাকলী শিক্ষালয়ের প্রকল্পই নয়, সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরের চারটি প্রকল্পসহ মোট পাঁচটির বিষয়ে অনুসন্ধানে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চারটি প্রকল্পে ১৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকা এবং একটিতে ১০ টন গম ব্যয় দেখানো হয়েছে। সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় থেকে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
তথ্য অধিকার আইনে সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সাভারে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় ১৬৩টি প্রকল্পের জন্য ২ কোটি ৮৫ লাখ ৪২ হাজার ৩৩৬, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় ৭৪টি প্রকল্পের জন্য ৩ কোটি ১২ লাখ ৯২ হাজার ৪৪৯ টাকা, একই কর্মসূচির (কাবিখা) আওতায় ২৯টি প্রকল্পের জন্য ২০৮ টন গম এবং ৩৪টি প্রকল্পের জন্য ২০৮ টন চালের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এসব প্রকল্পে অর্থ ও শস্য ব্যয়ের জন্য ৩০০টি প্রকল্প কমিটির গঠন করা হয়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান অথবা প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তা বা ব্যক্তিরা প্রকল্প কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সার্বিক বিষয়গুলো তদারকি ও বাস্তবায়ন করা হয়।
পিআইওর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ চত্বরের চারটি প্রকল্পের মধ্যে কলকাকলী শিক্ষালয়ের ‘মিনি পার্কে’ রাইড স্থাপনের জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার, পরিষদের জামে মসজিদের উন্নয়নের জন্য ৫ লাখ ৩ হাজার, উপজেলা পরিষদ মাঠের চার পাশের হাঁটার পথে বাতি (ওয়াকওয়ের স্ট্রিট লাইট) স্থাপনের জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার, হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে) উন্নয়নের জন্য ৩ লাখ টাকা এবং সাভার পৌর এলাকার ওয়াপদা রোডের সাভার টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১০ টন গম ব্যয় দেখানো হয়েছে।
গত বুধবার কলকাকলী শিক্ষালয়ে গিয়ে মিনি পার্কের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের পাশে উপজেলা পরিষদের মাঠের এক কোণে স্থাপিত দুটি স্টিলের দোলনা, একটি স্লিপার ও দুটি ঢেঁকি পাওয়া যায়, যেখানে কলকাকলী শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে সময় কাটাচ্ছিল।

জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের বিদ্যালয়ে কোনো মিনি পার্ক নেই। কয়েক মাস আগে বিদ্যালয়সংলগ্ন উপজেলা পরিষদ মাঠের এক কোণে খেলাধুলার পাঁচটি সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছে। এরপর থেকে সময় পেলে তারা সেখানে খেলাধুলা করে।
দুটি স্টিলের দোলনা, একটি স্লিপার ও দুটি ঢেঁকি স্থাপনে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। তাঁদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকও।
খেলাধুলার এসব সরঞ্জাম দেখে এবং মাপজোক করে সাভার শীতল অ্যান্ড সন্স ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক পবন কুমার দাস বলেন, ‘এসব খেলনাসামগ্রী তৈরিতে দেড় লাখ টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়।’
এ বিষয়ে কলকাকলী শিক্ষালয়ের প্রধান শিক্ষক ও খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য গঠিত প্রকল্প কমিটির সভাপতি সেলিমা বেগম বলেন, ‘কাগজ-কলমে আমাকে প্রকল্প কমিটির সভাপতি করা হলেও আমি কোনো টাকা খরচ করিনি। আমার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে প্রকল্পের টাকা জমা হওয়ার পর সদ্য সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বিদায়ী সভাপতি মো. আবুবকর সরকারের নির্দেশে সে টাকা উত্তোলন করি। এরপর তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ে জমা দিই। তাঁরা (পিআইওর কার্যালয়) সেই টাকা খরচ করে। আমাদের কোনো ভাউচারও দেয়নি।’
দুটি স্টিলের দোলনা, একটি স্লিপার ও দুটি ঢেঁকি স্থাপনে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে কি না—এমন প্রশ্ন করা হলে সেলিমা বেগম বলেন, ‘আমার জানা নেই। তবে এই কয়েকটা সরঞ্জামের জন্য এত টাকা খরচ হয়েছে বলে আমার মনে হয় না।’
২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের জামে মসজিদের উন্নয়নে দুই দফায় ৫ লাখ ৩ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষ হলেও মসজিদের উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দের সেই টাকা খরচ করা হয়নি বলে জানান মসজিদের খাদেম ফজলুল হক।
মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে মসজিদ উন্নয়নের জন্য প্রথম দফায় ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আমি প্রকল্প কমিটির সভাপতি হিসেবে ওই টাকা উত্তোলন করে মসজিদের ব্যাংক হিসেবে জমা রাখি। পরে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ওই টাকা খরচ করেছে কি না, তা আমার জানা নেই। এ ছাড়া একই অর্থবছরে দ্বিতীয় দফায় আরও ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। প্রকল্প কমিটির সভাপতি হিসেবে আমি ওই টাকা তুলে ব্যাংক হিসাবে জমা রেখেছি। অর্থবছর শেষ হয়ে গেলও তা এখনো খরচ করা হয়নি।’
তবে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম আব্দুল মজিদ বলেন, ‘গত অর্থবছরের বরাদ্দের টাকা এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) কিনে এবং টাইলস স্থাপন করে খরচ করা হয়েছে। কোনো টাকা আমাদের হাতে বা ব্যাংকে জমা নেই।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলা কমপ্লেক্সের মসজিদের জন্য বরাদ্দের ৫ লাখ ৩ হাজার টাকায় এসি কেনা হয়েছে। এসি কেনার পর প্রকল্প কমিটির সভাপতি মসজিদের ইমাম আমাদের ভাউচার দিয়েছেন।’ কিন্তু ভাউচার দেখতে চাইলে তিনি (অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম) কোনো ভাউচার দেখাতে পারেননি।
উপজেলা পরিষদ মাঠের চার পাশের হাঁটার পথে বাতির (ওয়াকওয়ের স্ট্রিট লাইট) খোঁজ নিতে গিয়ে আটটি বাতির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। মোটা টিনের পাত দিয়ে তৈরি খুঁটির প্রতিটিতে দুটি করে বাতি লাগানো হয়েছে, যা বিদ্যুতের সাহায্যে জ্বলে। পরিষদের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, মাঠের চার পাশের হাঁটার পথে বাতি মাসপাঁচেক আগে স্থাপন করা হয়।
সাভার শীতল অ্যান্ড সন্স ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক পবন কুমার দাস বলেন, ‘বাজারমূল্য অনুযায়ী প্রতিটি খুঁটি তৈরি করতে ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়। এর সঙ্গে লাইট স্থাপনে আরও ৫ হাজার টাকা করে খরচ হতে পারে। কিন্তু এই আটটি বাতি স্থাপনে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা খরচ হওয়ার কথা নয়।’
অন্যদিকে হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে) উন্নয়নের জন্য ৩ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হলেও তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হাঁটার পথে যে টাইলস রয়েছে, তা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আগের অর্থবছরের বরাদ্দের টাকা থেকে ব্যয় করা হয়েছে বলে পিআইওর কার্যালয় থেকে জানানো হয়।
মাঠের এক কোণে স্থাপিত ছাউনিতে পরিষদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্য বলেন, ‘মাসপাঁচেক আগে পরিষদের মাঠে বালু ফেলে কয়েক ইঞ্চি উঁচু করতে দেখেছি। এরপর মাঠে কিছু ঘাস লাগানো হয়। আর মাঠে জমে থাকা পানি বের হওয়ার জন্য এক পাশে ৫ থেকে ৬ ফুট করে ৪টি সরু নালা তৈরি করা হয়েছে। হাঁটার রাস্তার কোনো সংস্কার বা উন্নয়ন করতে দেখিনি।’
সরবরাহ করা তথ্যে সাভার ইউনিয়নের কাবিখার বরাদ্দ থেকে ‘সাভার টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট’ নামের একটি কলেজের মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১০ টন গম খরচ দেখানো হয়। কিন্তু সাভার ইউনিয়নের কোনো এলাকায় ওই নামে কোনো প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ডগরতলি গ্রামে ওই নামে একটি কলেজ রয়েছে।
কলেজের সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ হোসনে আরা বলেন, ‘সাভার পৌর এলাকার ওয়াপদা রোডের একটি ভাড়া বাসায় কলেজের কার্যক্রম চলত। পদাধিকার বলে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাঁশবাড়ী মৌজা থেকে কলেজের নামে ৫০ শতাংশ অর্পিত সম্পত্তি একসনা লিজ দেওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলেজটি সেখানে স্থানান্তর করা হয়।’
গত বৃহস্পতিবার ডগরতলিতে গিয়ে দেখা যায়, হাজী যান মোহাম্মদ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠের এক কোণে কলেজের একটি সাইনবোর্ড রয়েছে। তাঁর পাশেই ২০ বর্গফুট আয়তনের দুটি কক্ষের ছোট্ট একটি আধা পাকা ভবন রয়েছে, যা শিক্ষকদের চাঁদার টাকায় নির্মাণ করা হয় বলে শিক্ষকেরা জানান।
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক মাস আগে ওই ভবনের সামনের কয়েক বর্গফুট নিচু ভূমি বালু ফেলে ভরাট করা হয়েছে, যা কলেজের মাঠ নয়।
কলেজের সহকারী অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১০ টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই গম বিক্রি করে শ্রেণিকক্ষের সামনে বালু ফেলা হয়েছে। আমরা নিজেরা কোনো খরচ করিনি।’
জানতে চাইলে সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফাইজুল ইসলাম বলেন, ‘টিআর, কাবিটা ও কাবিখার প্রকল্প অনুমোদন হওয়ার পর বরাদ্দের টাকা, চাল বা গম প্রকল্প কমিটির সভাপতিকে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে টাকার ক্ষেত্রে প্রকল্প কমিটির সভাপতির নামে চেক দেওয়া হয়েছে। টাকা, চাল কিংবা গম পাওয়ার পর প্রকল্প কমিটি তা ব্যয় করেছে। সংগত কারণেই আমার দপ্তর থেকে টাকা খরচ বা কেনাকাটা করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ এমন তথ্য বা অভিযোগ দিয়ে থাকলে তা সত্য নয়। কোনো প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দের টাকা ও চাল বা গম নয়ছয় হয়ে থাকলে এবং তার প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাভারের সদ্য সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুবকর সরকার বলেন, ‘পদাধিকার বলে আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ছিলাম। কিন্তু কোনো প্রকল্প কমিটির সভাপতি ছিলাম না। বরাদ্দের অর্থ বা শস্য প্রকল্প কমিটির সভাপতিকে দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই ওই সব টাকা বা শস্য খরচ করেছেন। বরাদ্দের অর্থ বা শস্য ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই।’
সাভারের বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়মের বিষয়ে কথা হলে সাভারের বর্তমান ইউএনও মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করলাম। আগের কোনো প্রকল্পে অনিয়ম হলে খোঁজখবর নিয়ে দেখব।’

ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত কলকাকলী শিক্ষালয়ের ‘মিনি পার্কে’ রাইড স্থাপন করা হয়েছে—এমন তথ্য রয়েছে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাগজে। প্রকল্পটিতে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে কোনো মিনি পার্কের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে বিদ্যালয়ের পাশে উপজেলা পরিষদের মাঠের এক কোণে স্থাপিত কয়েকটি খেলনাসামগ্রী পাওয়া গেছে।
শুধু কলকাকলী শিক্ষালয়ের প্রকল্পই নয়, সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরের চারটি প্রকল্পসহ মোট পাঁচটির বিষয়ে অনুসন্ধানে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চারটি প্রকল্পে ১৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকা এবং একটিতে ১০ টন গম ব্যয় দেখানো হয়েছে। সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় থেকে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
তথ্য অধিকার আইনে সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সাভারে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় ১৬৩টি প্রকল্পের জন্য ২ কোটি ৮৫ লাখ ৪২ হাজার ৩৩৬, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় ৭৪টি প্রকল্পের জন্য ৩ কোটি ১২ লাখ ৯২ হাজার ৪৪৯ টাকা, একই কর্মসূচির (কাবিখা) আওতায় ২৯টি প্রকল্পের জন্য ২০৮ টন গম এবং ৩৪টি প্রকল্পের জন্য ২০৮ টন চালের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এসব প্রকল্পে অর্থ ও শস্য ব্যয়ের জন্য ৩০০টি প্রকল্প কমিটির গঠন করা হয়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান অথবা প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তা বা ব্যক্তিরা প্রকল্প কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সার্বিক বিষয়গুলো তদারকি ও বাস্তবায়ন করা হয়।
পিআইওর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ চত্বরের চারটি প্রকল্পের মধ্যে কলকাকলী শিক্ষালয়ের ‘মিনি পার্কে’ রাইড স্থাপনের জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার, পরিষদের জামে মসজিদের উন্নয়নের জন্য ৫ লাখ ৩ হাজার, উপজেলা পরিষদ মাঠের চার পাশের হাঁটার পথে বাতি (ওয়াকওয়ের স্ট্রিট লাইট) স্থাপনের জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার, হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে) উন্নয়নের জন্য ৩ লাখ টাকা এবং সাভার পৌর এলাকার ওয়াপদা রোডের সাভার টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১০ টন গম ব্যয় দেখানো হয়েছে।
গত বুধবার কলকাকলী শিক্ষালয়ে গিয়ে মিনি পার্কের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের পাশে উপজেলা পরিষদের মাঠের এক কোণে স্থাপিত দুটি স্টিলের দোলনা, একটি স্লিপার ও দুটি ঢেঁকি পাওয়া যায়, যেখানে কলকাকলী শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে সময় কাটাচ্ছিল।

জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের বিদ্যালয়ে কোনো মিনি পার্ক নেই। কয়েক মাস আগে বিদ্যালয়সংলগ্ন উপজেলা পরিষদ মাঠের এক কোণে খেলাধুলার পাঁচটি সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছে। এরপর থেকে সময় পেলে তারা সেখানে খেলাধুলা করে।
দুটি স্টিলের দোলনা, একটি স্লিপার ও দুটি ঢেঁকি স্থাপনে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। তাঁদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকও।
খেলাধুলার এসব সরঞ্জাম দেখে এবং মাপজোক করে সাভার শীতল অ্যান্ড সন্স ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক পবন কুমার দাস বলেন, ‘এসব খেলনাসামগ্রী তৈরিতে দেড় লাখ টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়।’
এ বিষয়ে কলকাকলী শিক্ষালয়ের প্রধান শিক্ষক ও খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য গঠিত প্রকল্প কমিটির সভাপতি সেলিমা বেগম বলেন, ‘কাগজ-কলমে আমাকে প্রকল্প কমিটির সভাপতি করা হলেও আমি কোনো টাকা খরচ করিনি। আমার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে প্রকল্পের টাকা জমা হওয়ার পর সদ্য সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বিদায়ী সভাপতি মো. আবুবকর সরকারের নির্দেশে সে টাকা উত্তোলন করি। এরপর তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ে জমা দিই। তাঁরা (পিআইওর কার্যালয়) সেই টাকা খরচ করে। আমাদের কোনো ভাউচারও দেয়নি।’
দুটি স্টিলের দোলনা, একটি স্লিপার ও দুটি ঢেঁকি স্থাপনে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে কি না—এমন প্রশ্ন করা হলে সেলিমা বেগম বলেন, ‘আমার জানা নেই। তবে এই কয়েকটা সরঞ্জামের জন্য এত টাকা খরচ হয়েছে বলে আমার মনে হয় না।’
২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের জামে মসজিদের উন্নয়নে দুই দফায় ৫ লাখ ৩ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষ হলেও মসজিদের উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দের সেই টাকা খরচ করা হয়নি বলে জানান মসজিদের খাদেম ফজলুল হক।
মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে মসজিদ উন্নয়নের জন্য প্রথম দফায় ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আমি প্রকল্প কমিটির সভাপতি হিসেবে ওই টাকা উত্তোলন করে মসজিদের ব্যাংক হিসেবে জমা রাখি। পরে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ওই টাকা খরচ করেছে কি না, তা আমার জানা নেই। এ ছাড়া একই অর্থবছরে দ্বিতীয় দফায় আরও ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। প্রকল্প কমিটির সভাপতি হিসেবে আমি ওই টাকা তুলে ব্যাংক হিসাবে জমা রেখেছি। অর্থবছর শেষ হয়ে গেলও তা এখনো খরচ করা হয়নি।’
তবে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম আব্দুল মজিদ বলেন, ‘গত অর্থবছরের বরাদ্দের টাকা এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) কিনে এবং টাইলস স্থাপন করে খরচ করা হয়েছে। কোনো টাকা আমাদের হাতে বা ব্যাংকে জমা নেই।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলা কমপ্লেক্সের মসজিদের জন্য বরাদ্দের ৫ লাখ ৩ হাজার টাকায় এসি কেনা হয়েছে। এসি কেনার পর প্রকল্প কমিটির সভাপতি মসজিদের ইমাম আমাদের ভাউচার দিয়েছেন।’ কিন্তু ভাউচার দেখতে চাইলে তিনি (অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম) কোনো ভাউচার দেখাতে পারেননি।
উপজেলা পরিষদ মাঠের চার পাশের হাঁটার পথে বাতির (ওয়াকওয়ের স্ট্রিট লাইট) খোঁজ নিতে গিয়ে আটটি বাতির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। মোটা টিনের পাত দিয়ে তৈরি খুঁটির প্রতিটিতে দুটি করে বাতি লাগানো হয়েছে, যা বিদ্যুতের সাহায্যে জ্বলে। পরিষদের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, মাঠের চার পাশের হাঁটার পথে বাতি মাসপাঁচেক আগে স্থাপন করা হয়।
সাভার শীতল অ্যান্ড সন্স ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক পবন কুমার দাস বলেন, ‘বাজারমূল্য অনুযায়ী প্রতিটি খুঁটি তৈরি করতে ১০ হাজার টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়। এর সঙ্গে লাইট স্থাপনে আরও ৫ হাজার টাকা করে খরচ হতে পারে। কিন্তু এই আটটি বাতি স্থাপনে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা খরচ হওয়ার কথা নয়।’
অন্যদিকে হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে) উন্নয়নের জন্য ৩ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হলেও তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হাঁটার পথে যে টাইলস রয়েছে, তা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আগের অর্থবছরের বরাদ্দের টাকা থেকে ব্যয় করা হয়েছে বলে পিআইওর কার্যালয় থেকে জানানো হয়।
মাঠের এক কোণে স্থাপিত ছাউনিতে পরিষদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্য বলেন, ‘মাসপাঁচেক আগে পরিষদের মাঠে বালু ফেলে কয়েক ইঞ্চি উঁচু করতে দেখেছি। এরপর মাঠে কিছু ঘাস লাগানো হয়। আর মাঠে জমে থাকা পানি বের হওয়ার জন্য এক পাশে ৫ থেকে ৬ ফুট করে ৪টি সরু নালা তৈরি করা হয়েছে। হাঁটার রাস্তার কোনো সংস্কার বা উন্নয়ন করতে দেখিনি।’
সরবরাহ করা তথ্যে সাভার ইউনিয়নের কাবিখার বরাদ্দ থেকে ‘সাভার টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট’ নামের একটি কলেজের মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১০ টন গম খরচ দেখানো হয়। কিন্তু সাভার ইউনিয়নের কোনো এলাকায় ওই নামে কোনো প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ডগরতলি গ্রামে ওই নামে একটি কলেজ রয়েছে।
কলেজের সদ্য সাবেক অধ্যক্ষ হোসনে আরা বলেন, ‘সাভার পৌর এলাকার ওয়াপদা রোডের একটি ভাড়া বাসায় কলেজের কার্যক্রম চলত। পদাধিকার বলে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাঁশবাড়ী মৌজা থেকে কলেজের নামে ৫০ শতাংশ অর্পিত সম্পত্তি একসনা লিজ দেওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলেজটি সেখানে স্থানান্তর করা হয়।’
গত বৃহস্পতিবার ডগরতলিতে গিয়ে দেখা যায়, হাজী যান মোহাম্মদ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠের এক কোণে কলেজের একটি সাইনবোর্ড রয়েছে। তাঁর পাশেই ২০ বর্গফুট আয়তনের দুটি কক্ষের ছোট্ট একটি আধা পাকা ভবন রয়েছে, যা শিক্ষকদের চাঁদার টাকায় নির্মাণ করা হয় বলে শিক্ষকেরা জানান।
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক মাস আগে ওই ভবনের সামনের কয়েক বর্গফুট নিচু ভূমি বালু ফেলে ভরাট করা হয়েছে, যা কলেজের মাঠ নয়।
কলেজের সহকারী অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১০ টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই গম বিক্রি করে শ্রেণিকক্ষের সামনে বালু ফেলা হয়েছে। আমরা নিজেরা কোনো খরচ করিনি।’
জানতে চাইলে সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফাইজুল ইসলাম বলেন, ‘টিআর, কাবিটা ও কাবিখার প্রকল্প অনুমোদন হওয়ার পর বরাদ্দের টাকা, চাল বা গম প্রকল্প কমিটির সভাপতিকে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে টাকার ক্ষেত্রে প্রকল্প কমিটির সভাপতির নামে চেক দেওয়া হয়েছে। টাকা, চাল কিংবা গম পাওয়ার পর প্রকল্প কমিটি তা ব্যয় করেছে। সংগত কারণেই আমার দপ্তর থেকে টাকা খরচ বা কেনাকাটা করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ এমন তথ্য বা অভিযোগ দিয়ে থাকলে তা সত্য নয়। কোনো প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দের টাকা ও চাল বা গম নয়ছয় হয়ে থাকলে এবং তার প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাভারের সদ্য সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুবকর সরকার বলেন, ‘পদাধিকার বলে আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ছিলাম। কিন্তু কোনো প্রকল্প কমিটির সভাপতি ছিলাম না। বরাদ্দের অর্থ বা শস্য প্রকল্প কমিটির সভাপতিকে দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই ওই সব টাকা বা শস্য খরচ করেছেন। বরাদ্দের অর্থ বা শস্য ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই।’
সাভারের বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়মের বিষয়ে কথা হলে সাভারের বর্তমান ইউএনও মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করলাম। আগের কোনো প্রকল্পে অনিয়ম হলে খোঁজখবর নিয়ে দেখব।’

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য...
৬ মিনিট আগে
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
৩৫ মিনিট আগে
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কৃষক জয়নাল আবেদীন এ বছর ৩৩ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি লাভের আশা করছেন।
১ ঘণ্টা আগেমাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।
কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।
বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।
কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।
কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।
বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।
কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত কলকাকলী শিক্ষালয়ের ‘মিনি পার্কে’ রাইড স্থাপন করা হয়েছে—এমন তথ্য রয়েছে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাগজে। প্রকল্পটিতে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে কোনো মিনি পার্কের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
১২ দিন আগে
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
৩৫ মিনিট আগে
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কৃষক জয়নাল আবেদীন এ বছর ৩৩ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি লাভের আশা করছেন।
১ ঘণ্টা আগেপঞ্চগড় প্রতিনিধি

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’
একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’
স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’
জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’
একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’
স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’
জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত কলকাকলী শিক্ষালয়ের ‘মিনি পার্কে’ রাইড স্থাপন করা হয়েছে—এমন তথ্য রয়েছে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাগজে। প্রকল্পটিতে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে কোনো মিনি পার্কের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
১২ দিন আগে
মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য...
৬ মিনিট আগে
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কৃষক জয়নাল আবেদীন এ বছর ৩৩ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি লাভের আশা করছেন।
১ ঘণ্টা আগেঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।
বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।
বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত কলকাকলী শিক্ষালয়ের ‘মিনি পার্কে’ রাইড স্থাপন করা হয়েছে—এমন তথ্য রয়েছে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাগজে। প্রকল্পটিতে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে কোনো মিনি পার্কের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
১২ দিন আগে
মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য...
৬ মিনিট আগে
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
৩৫ মিনিট আগে
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কৃষক জয়নাল আবেদীন এ বছর ৩৩ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি লাভের আশা করছেন।
১ ঘণ্টা আগেঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ( রাঙামাটি)

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কৃষক জয়নাল আবেদীন এ বছর ৩৩ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি লাভের আশা করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন ‘কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভুট্টা চাষ করেছেন তিনি।
উপজেলার ১ নম্বর চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রেশম বাগান ব্লকের বারঘোনিয়া তঞ্চঙ্গাপাড়ায় জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছেন কৃষক জয়নাল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, ৩৩ শতক কৃষি জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। চলতি বছরের বোরো মৌসুমে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ভুট্টার বীজ, সার ও সাইনবোর্ড পেয়েছেন। এ ছাড়াও একই জমিতে সাথি ফসল হিসেবে লালশাক, ফরাস শিম ও টমেটো চাষ করেছেন। বর্তমানে জমিতে ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ভুট্টা বিক্রির আশা করছেন তিনি।
এদিন কাপ্তাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবীব রেশমবাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় কৃষক জয়নাল আবেদীনের ভুট্টা চাষ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে ভুট্টা চাষ কম হলেও রেশম বাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পের আওতায় কাপ্তাই উপজেলায় চারটি ভুট্টা প্রদর্শনীর মধ্যে একটি কৃষক জয়নাল আবেদীনকে দিয়েছিলাম। ভুট্টা চাষে উনার ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। আশা করছি, উনি ভালো লাভ করতে পারবেন।’

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কৃষক জয়নাল আবেদীন এ বছর ৩৩ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি লাভের আশা করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন ‘কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভুট্টা চাষ করেছেন তিনি।
উপজেলার ১ নম্বর চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রেশম বাগান ব্লকের বারঘোনিয়া তঞ্চঙ্গাপাড়ায় জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছেন কৃষক জয়নাল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, ৩৩ শতক কৃষি জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। চলতি বছরের বোরো মৌসুমে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ভুট্টার বীজ, সার ও সাইনবোর্ড পেয়েছেন। এ ছাড়াও একই জমিতে সাথি ফসল হিসেবে লালশাক, ফরাস শিম ও টমেটো চাষ করেছেন। বর্তমানে জমিতে ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ভুট্টা বিক্রির আশা করছেন তিনি।
এদিন কাপ্তাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবীব রেশমবাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় কৃষক জয়নাল আবেদীনের ভুট্টা চাষ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে ভুট্টা চাষ কম হলেও রেশম বাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পের আওতায় কাপ্তাই উপজেলায় চারটি ভুট্টা প্রদর্শনীর মধ্যে একটি কৃষক জয়নাল আবেদীনকে দিয়েছিলাম। ভুট্টা চাষে উনার ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। আশা করছি, উনি ভালো লাভ করতে পারবেন।’

ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত কলকাকলী শিক্ষালয়ের ‘মিনি পার্কে’ রাইড স্থাপন করা হয়েছে—এমন তথ্য রয়েছে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাগজে। প্রকল্পটিতে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে কোনো মিনি পার্কের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
১২ দিন আগে
মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য...
৬ মিনিট আগে
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
৩৫ মিনিট আগে
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে