সৌগত বসু, ঢাকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে ক্যাম্পাসের প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা কার্যালয়ের পাশেই কয়েক দফা মারধর করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরো ঘটনার দায় এড়িয়ে গেছে। যদিও ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা শাখা ও প্রক্টর অফিসে সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ছিল প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের।
এ ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মামলার তিন নম্বর আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এর আগে গত ১৫ জুলাই মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তৎকালীন উপাচার্য নুরুল আলমের বাসভবনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছিলেন। সেদিন পুলিশ, শিক্ষক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হামলা করেছিল ছাত্রলীগ ও বহিরাগতরা। উপাচার্যের বাসভবনেও ওই দিন নিরাপদ ছিলেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য দরজা আটকিয়ে বাসভবনে বসে ছিলেন, কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (ডেপুটি রেজিস্ট্রার) সুদীপ্ত শাহীন ২০ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার কাছে শামীম মোল্লাকে মারধরের ঘটনার বর্ণনা করেন। সুদীপ্ত শাহীন প্রক্টরিয়াল বডির কিছু না করতে পারা ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান আসার পর মারধরকারী সাঈদ ভূইয়া উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এমন তথ্য দিয়েছিলেন। সেটি নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য। পরদিন জনসংযোগ দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রশাসনের অবস্থান জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক ব্যতিরেকে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দোষারোপ করা দুরভিসন্ধিমূলক।
প্রশাসনের উপস্থিতি ছিল সার্বক্ষণিক
আজকের পত্রিকা শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা কার্যালয়ে মারধরের দিনের বিভিন্ন সময়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতি জানার চেষ্টা করেছে। শামীম মোল্লার মারধরের সময়ে প্রক্টরিয়াল বডির তিনজন ও নিরাপত্তা শাখার সাতজন উপস্থিত ছিলেন। প্রক্টর ছাড়াও দুজন সহকারী প্রক্টর—ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল রকিব, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আল-আমিন খান উপস্থিত ছিলেন। আর নিরাপত্তা শাখার উপস্থিত ছিলেন— প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন (নিরাপত্তা-১), মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল (নিরাপত্তা-২), নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ. এস. এম রাশিদুল হাসান রাসেল, মো. রাসেল মিয়া স্বাধীন, নিরাপত্তা কর্মী রিয়াজুল, মনির ও সালাম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাদের বক্তব্য এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেটে (প্রান্তিক গেট) একাই অবস্থান করছিলেন। বিকেল আনুমানিক সোয়া ৫টার দিকে তাঁকে সেখানে আটক করে মারধর করেন কিছু শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে নিরাপত্তা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা একটি ফোন কলে বিষয়টি জানতে পারেন। ৫টা ৫৭ মিনিটে ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ অন্যরা প্রান্তিক গেটে হাজির হন। সেখানে প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলমও ছিলেন। নিরাপত্তা কর্মীরা শামীম মোল্লাকে একটি রিকশায় করে প্রক্টর অফিসে নেন। আরেকটি রিকশায় প্রক্টর ও সেই নিরাপত্তা কর্মকর্তাও সেখানে যান। শামীম মোল্লাকে প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনের একটা কক্ষে রাখা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয় বলে জানান প্রক্টর। এর মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী ওই কক্ষ থেকে শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা শাখার নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষের সামনের করিডরে নিয়ে যায়।
প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো রেজিস্ট্রার ভবনে। দুই দপ্তরের মধ্যে দূরত্ব আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ ফুট। করিডরে নিয়ে যাওয়ার পর শামীম মোল্লাকে আবার মারধর করা হয়। তিনি চিৎকার করছিলেন। সেসময় প্রক্টর তাঁর কার্যালয়েই ছিলেন। একপর্যায়ে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা এসে মারধরকারীদের নিবৃত্ত করেন। সেখানে ৮–১০ জনের উপস্থিতি দেখা গেছে। এরপর শামীমকে গুরুতর আহত অবস্থায় রেখেই সামনের কলাপসিবল গেটে তালা মেরে একজন নিরাপত্তাকর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বাকিরা আবার প্রক্টরের অফিসে ফিরে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই কিছু শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হয়ে মারমুখী আচরণ করলে নিরাপত্তা কর্মীরা শিক্ষার্থীদের বাধা দিলে নিরাপত্তা শাখার দুই কর্মকর্তা এ. এস. এম রাশিদুল হাসান ও মো. রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়। তখন প্রক্টরের অফিসে থাকা সহকর্মীদের ডাকে ওই দুই কর্মকর্তা অন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। শিক্ষার্থীরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে ওই দুই কর্মকর্তা একপর্যায়ে বাথরুমে আশ্রয় নেন।
শিক্ষার্থীরা আবার শামীমকে মারতে আসে। তারা শামীমের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মী রিয়াজুলের কাছ থেকে চাবি চায়। রিয়াজুল দৌড়ে প্রক্টর অফিসের দিকে গেলে সেখানে গিয়ে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তারা তালা খুলতে পারেনি। এরপর সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ফেলে শামীমকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা গিয়ে মারধরকারীদের সরিয়ে দেন। শামীম তখন নিথর অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিলেন। তাঁকে সেভাবে রেখেই কলাপসিবল গেটে আরেকটি তালা মেরে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা স্থান ত্যাগ করেন।
শামীমকে পুলিশের হাতে দিতেও দেরি
আনুমানিক ৭টা ২০ মিনিটে উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, উপাচার্যের একান্ত সচিব মো. মঞ্জুরুল করিমসহ আরও কিছু কর্মকর্তা। উপাচার্য প্রক্টর অফিসে গেলে সাবেক কিছু শিক্ষার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। রাত পৌনে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। উপাচার্য তখনো সেখানে ছিলেন। পুলিশ শামীম মোল্লাকে নিয়ে যায় রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে। উপাচার্য ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন রাত আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটে। রাত ৯টায় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে শামীমকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পুলিশের কাছে শামীমকে হস্তান্তর করা হয় পৌনে এক ঘণ্টা পর। কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে এ নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়। ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মামলা না থাকায় শামীমের নামে আগের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাত সোয়া ৮টার দিকে উপাচার্য চলে যাওয়ার পর শামীম মোল্লাকে পুলিশের কাছ হস্তান্তরের জন্য নিরাপত্তা অফিসের পাশের করিডর থেকে প্রক্টর অফিসে নেওয়া হয়। মারধরকারীরা সেসময় শামীমকে আবার ওই করিডরে নিয়ে প্রায় ১৫ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধর করে। পরে প্রক্টর, নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশ শামীমকে ছাড়িয়ে নিয়ে গাড়িতে তোলে।
আশুলিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, দুই পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে শামীম মোল্লা পুলিশ ভ্যানে ওঠেন। তখনো পেছন থেকে তাঁকে ধাক্কা ও কিলঘুষি মারা হচ্ছিল। গাড়িতে উঠেই শামীম পড়ে যান। এরপর পুলিশের গাড়ি সরাসরি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যায়।
গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, আনার পর পরীক্ষা করে দেখা যায় শামীম মোল্লা মৃত। অর্থাৎ তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এন্ট্রি বইয়ে শামীম মোল্লাকে রাত ৯টায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে তথ্য রয়েছে।
ঘটনার দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের বর্ণনা দিয়েছেন জহির রায়হান ফিল্ম সোসাইটির দপ্তর সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ। তিনি জাবি প্রেস ক্লাবের সদস্য।
জুবায়ের আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীম মোল্লাকে প্রক্টর অফিসে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি প্রক্টর অফিসে যান। নিরাপত্তা অফিসের সামনে তিনি প্রক্টর ও সহকারীদের প্রক্টরদের দেখতে পান। নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাঁকে জানান শামীম মোল্লাকে করিডরে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। অনুরোধ করে গেটের তালা খুলিয়ে ভেতরে গিয়ে দেখেন শামীম মোল্লা অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছেন। ওই সময় প্রক্টর অফিসের সামনে কয়েকজন সাংবাদিক ছিলেন। একটু দূরে প্রায় ২০ জনের একটি জটলা ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীমকে মারধর থেকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল ও স্বাধীন। এ জন্য তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল মারধরকারীরা। শামীমকে নিরাপত্তা কার্যালয়ের সামনে আনলে এই দুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয় মারধরকারীরা। তখন ওই দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে সরিয়ে প্রক্টর অফিসের মধ্যে নেওয়া হয়। রাতে শামীম মোল্লাকে পুলিশ নিয়ে গেলে তাঁরা বের হয়েছেন।
শামীম মোল্লার বড় ভাই শাহীন মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জানতে পারেন তাঁর ভাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর খোঁজ নিয়ে জানেন, তাঁকে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। তখন তিনি সাভার থানা ও এনাম মেডিকেলে যান। সেখানে না পেয়ে আশুলিয়া থানায় যান রাত ১১টার দিকে। থানা থেকে তাঁকে জানানো হয়, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে নেওয়া হয়নি। তখন জানতে পারেন তার ভাইকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পৌনে ১২টার দিকে তিনি সেখানে পৌঁছে জানতে পারেন ভাই আর নেই! ভাইয়ের শরীরে হাত দিয়ে দেখেন ঠান্ডা। তার মানে কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি মারা গেছেন।
শাহীন বলেন, শামীমকে ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি হাসপাতালে নেওয়া হয়। থানায় নেওয়া হয়নি।
মারধরের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকজন ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকলেও তাঁরা ঘটনার দায় এড়িয়েছেন—এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহীন বলেন, ‘এখন তাঁরা যদি দায় এড়িয়ে যান, তাহলে কিছু বলার নেই! তবে (তাঁরা) মামলা দিয়েছেন। প্রক্টর ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, এটা শুনেছি। মামলা অনুযায়ী বিচার হলেই হবে। কেউ যদি তাঁকে রক্ষা করতে না পারে তবে আর কী করার আছে!’
শামীম মোল্লা নিহতের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটিতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন। তবে তিনি এই কমিটিতে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
চিঠির বিষয়ে আনিছা পারভীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, অপারগতার কারণ হিসেবে হত্যার শিকার শামীম মোল্লাকে পেটানোর সময় স্বয়ং উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার তথ্য পত্রিকার সংবাদের বরাতে চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন। সেই তথ্য উপাচার্য সরাসরি মৌখিক আলাপে অস্বীকার করেছেন। উপাচার্য হিসেবে তাঁর বক্তব্যের প্রতি তিনি (আনিছা পারভীন) আস্থা রাখতে চান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজন প্রকাশ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রভাবিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো নানা ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত। সংশ্লিষ্ট দায়িত্ববান ব্যক্তিদের (প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরেরা) ঘটনার বিভিন্ন পর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার খবরাখবরও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায়, তদন্ত কমিটির কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে, প্রভাব ও চাপ মুক্ত থেকে পরিচালনা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে তাঁর সংশয় ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আনিছা পারভীন উপাচার্যকে দেওয়া চিঠিতেও একই কথা বলেছেন।
ওই দিনের বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শামীমকে আমার কার্যালয়ে নয়, নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলাম। তবে পুলিশ আসতে দেরি করে। আমরা সোয়া ৬টায় পুলিশকে জানিয়েছিলাম। পুলিশ এসেছিল পৌনে ৮টায়। শামীমকে পুলিশ নিয়ে গেছে প্রায় পৌনে ৯টার দিকে।’
পুলিশ আসার পরেও কেন শামীমকে হস্তান্তরে সময়ক্ষেপণ করা হয়—এ প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, ‘পুলিশ ওখানে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছে।’
শামীম মোল্লাকে মারধরের সময় প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি থাকলেও প্রশাসন দায় এড়িয়ে গেছে—এ প্রসঙ্গে প্রক্টর বলেন, ‘এখানে যেসব সাংবাদিক উপস্থিত ছিল তাদের কাছে শুনলে বোঝা যাবে আমরা কতটুকু চেষ্টা করেছি। আমি এখানে একদম ওনাকে (শামীম) আনা থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি কেউ যেন তাকে প্রহার না করে। শিক্ষক হিসেবে অনেকে আমার কথা শুনেছে, আবার কেউ কেউ শোনেনি।’
তাহলে কি ঘটনাস্থলে মারধরকারীদের তুলনায় প্রক্টরিয়াল বডি বা নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সংখ্যা কম থাকায় সাহস নিয়ে দাঁড়াতে পারেননি—এমন প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, ‘আমার দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটা হয়েছে। আমাদের সদস্য মাত্র চারজন। একটা মবে এই কয়েকজন যথেষ্ট নয়। আবার নিরাপত্তা শাখার যারা ছিলেন তাঁরা নির্লিপ্ত ছিলেন। এইজন্য তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, তাঁরা সেখানে বলবেন কেন নির্লিপ্ত ছিলেন।’
অনেকটা একই কথা বলেছেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বে অবহেলা ছিল। সে জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রক্টরিয়াল টিমের যে তদন্ত প্রতিবেদন তাঁরা করেছেন, সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, (এজাহারে) অভিযুক্তদের ক্রম পরিবর্তন হয়েছে। সেটাও অত্যন্ত দুরূহ কাজ। প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা যেটি মামলার জন্য জমা দিয়েছে সেখানে তিনি ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। সাময়িক ভাবে তাঁকে ট্রান্সফার করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল টিমটা ইনকমপ্লিট (অসম্পূর্ণ) : এখানে প্রক্টর আর তিনজন। শামীম মোল্লাকে পুরোটা সময় নিরাপত্তা কার্যালয়ে রাখা হয়েছিল। আমাকে এই ভাবেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এটা তদন্ত সাপেক্ষে আরও পরিষ্কার হবে।’
ক্যাম্পাসের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় নিজের পদক্ষেপ সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, ‘শামীম মোল্লা একজন মানুষ হিসেবে অন্যায়ের শিকার হয়েছে। প্রত্যেকটা মানুষকে সে যে দল, যে মত তাকে বিচারের আওতায় আসতে হবে। সে জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আমি প্রক্টরিয়াল রিপোর্ট নিয়ে যে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে তাদের চিহ্নিত করে বরখাস্ত করেছি, সনদ স্থগিত করেছি। মামলাও করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি (উপস্থিত) থাকা অবস্থায় (শামীমের ওপর) কোনো আঘাত হয়নি। এর বাইরে যেগুলো হয়েছে সেগুলো সবাই আমাকে বলেছে, কিন্তু সঠিক বলেছে কিনা সেটা তদন্ত করার পর বলা যাবে।’
ঘটনার সময় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নির্লিপ্ততার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি একদম সত্যি নয়। ওখানে প্রক্টর ছিলেন, তিনি যে আদেশ দেবেন আমাদের সেটিই করার কথা। তবে তেমন কিছু হয়নি। বরং সাবেক ছাত্রকে প্রক্টরিয়াল বডি (প্রান্তিক গেট থেকে) ক্যাম্পাসে এনেছেন এবং তাঁর নিজের কক্ষে না রেখে সামনের কক্ষে রেখেছেন। তাঁদের সামনে থেকে শামীমকে নিরাপত্তা শাখার করিডরে নেওয়া হয়। এসব কিছুই প্রক্টরের উপস্থিতিতেই ঘটেছে। এগুলো মিথ্যা অভিযোগ।’
[তথ্য নিয়ে সহযোগিতা করেছেন জাবি সংবাদদাতা]

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে ক্যাম্পাসের প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা কার্যালয়ের পাশেই কয়েক দফা মারধর করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরো ঘটনার দায় এড়িয়ে গেছে। যদিও ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা শাখা ও প্রক্টর অফিসে সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ছিল প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের।
এ ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মামলার তিন নম্বর আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এর আগে গত ১৫ জুলাই মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তৎকালীন উপাচার্য নুরুল আলমের বাসভবনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছিলেন। সেদিন পুলিশ, শিক্ষক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হামলা করেছিল ছাত্রলীগ ও বহিরাগতরা। উপাচার্যের বাসভবনেও ওই দিন নিরাপদ ছিলেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য দরজা আটকিয়ে বাসভবনে বসে ছিলেন, কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (ডেপুটি রেজিস্ট্রার) সুদীপ্ত শাহীন ২০ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার কাছে শামীম মোল্লাকে মারধরের ঘটনার বর্ণনা করেন। সুদীপ্ত শাহীন প্রক্টরিয়াল বডির কিছু না করতে পারা ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান আসার পর মারধরকারী সাঈদ ভূইয়া উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এমন তথ্য দিয়েছিলেন। সেটি নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য। পরদিন জনসংযোগ দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রশাসনের অবস্থান জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক ব্যতিরেকে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দোষারোপ করা দুরভিসন্ধিমূলক।
প্রশাসনের উপস্থিতি ছিল সার্বক্ষণিক
আজকের পত্রিকা শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা কার্যালয়ে মারধরের দিনের বিভিন্ন সময়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতি জানার চেষ্টা করেছে। শামীম মোল্লার মারধরের সময়ে প্রক্টরিয়াল বডির তিনজন ও নিরাপত্তা শাখার সাতজন উপস্থিত ছিলেন। প্রক্টর ছাড়াও দুজন সহকারী প্রক্টর—ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল রকিব, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আল-আমিন খান উপস্থিত ছিলেন। আর নিরাপত্তা শাখার উপস্থিত ছিলেন— প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন (নিরাপত্তা-১), মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল (নিরাপত্তা-২), নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ. এস. এম রাশিদুল হাসান রাসেল, মো. রাসেল মিয়া স্বাধীন, নিরাপত্তা কর্মী রিয়াজুল, মনির ও সালাম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাদের বক্তব্য এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেটে (প্রান্তিক গেট) একাই অবস্থান করছিলেন। বিকেল আনুমানিক সোয়া ৫টার দিকে তাঁকে সেখানে আটক করে মারধর করেন কিছু শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে নিরাপত্তা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা একটি ফোন কলে বিষয়টি জানতে পারেন। ৫টা ৫৭ মিনিটে ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ অন্যরা প্রান্তিক গেটে হাজির হন। সেখানে প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলমও ছিলেন। নিরাপত্তা কর্মীরা শামীম মোল্লাকে একটি রিকশায় করে প্রক্টর অফিসে নেন। আরেকটি রিকশায় প্রক্টর ও সেই নিরাপত্তা কর্মকর্তাও সেখানে যান। শামীম মোল্লাকে প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনের একটা কক্ষে রাখা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয় বলে জানান প্রক্টর। এর মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী ওই কক্ষ থেকে শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা শাখার নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষের সামনের করিডরে নিয়ে যায়।
প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো রেজিস্ট্রার ভবনে। দুই দপ্তরের মধ্যে দূরত্ব আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ ফুট। করিডরে নিয়ে যাওয়ার পর শামীম মোল্লাকে আবার মারধর করা হয়। তিনি চিৎকার করছিলেন। সেসময় প্রক্টর তাঁর কার্যালয়েই ছিলেন। একপর্যায়ে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা এসে মারধরকারীদের নিবৃত্ত করেন। সেখানে ৮–১০ জনের উপস্থিতি দেখা গেছে। এরপর শামীমকে গুরুতর আহত অবস্থায় রেখেই সামনের কলাপসিবল গেটে তালা মেরে একজন নিরাপত্তাকর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বাকিরা আবার প্রক্টরের অফিসে ফিরে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই কিছু শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হয়ে মারমুখী আচরণ করলে নিরাপত্তা কর্মীরা শিক্ষার্থীদের বাধা দিলে নিরাপত্তা শাখার দুই কর্মকর্তা এ. এস. এম রাশিদুল হাসান ও মো. রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়। তখন প্রক্টরের অফিসে থাকা সহকর্মীদের ডাকে ওই দুই কর্মকর্তা অন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। শিক্ষার্থীরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে ওই দুই কর্মকর্তা একপর্যায়ে বাথরুমে আশ্রয় নেন।
শিক্ষার্থীরা আবার শামীমকে মারতে আসে। তারা শামীমের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মী রিয়াজুলের কাছ থেকে চাবি চায়। রিয়াজুল দৌড়ে প্রক্টর অফিসের দিকে গেলে সেখানে গিয়ে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তারা তালা খুলতে পারেনি। এরপর সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ফেলে শামীমকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা গিয়ে মারধরকারীদের সরিয়ে দেন। শামীম তখন নিথর অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিলেন। তাঁকে সেভাবে রেখেই কলাপসিবল গেটে আরেকটি তালা মেরে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা স্থান ত্যাগ করেন।
শামীমকে পুলিশের হাতে দিতেও দেরি
আনুমানিক ৭টা ২০ মিনিটে উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, উপাচার্যের একান্ত সচিব মো. মঞ্জুরুল করিমসহ আরও কিছু কর্মকর্তা। উপাচার্য প্রক্টর অফিসে গেলে সাবেক কিছু শিক্ষার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। রাত পৌনে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। উপাচার্য তখনো সেখানে ছিলেন। পুলিশ শামীম মোল্লাকে নিয়ে যায় রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে। উপাচার্য ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন রাত আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটে। রাত ৯টায় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে শামীমকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পুলিশের কাছে শামীমকে হস্তান্তর করা হয় পৌনে এক ঘণ্টা পর। কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে এ নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়। ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মামলা না থাকায় শামীমের নামে আগের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাত সোয়া ৮টার দিকে উপাচার্য চলে যাওয়ার পর শামীম মোল্লাকে পুলিশের কাছ হস্তান্তরের জন্য নিরাপত্তা অফিসের পাশের করিডর থেকে প্রক্টর অফিসে নেওয়া হয়। মারধরকারীরা সেসময় শামীমকে আবার ওই করিডরে নিয়ে প্রায় ১৫ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধর করে। পরে প্রক্টর, নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশ শামীমকে ছাড়িয়ে নিয়ে গাড়িতে তোলে।
আশুলিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, দুই পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে শামীম মোল্লা পুলিশ ভ্যানে ওঠেন। তখনো পেছন থেকে তাঁকে ধাক্কা ও কিলঘুষি মারা হচ্ছিল। গাড়িতে উঠেই শামীম পড়ে যান। এরপর পুলিশের গাড়ি সরাসরি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যায়।
গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, আনার পর পরীক্ষা করে দেখা যায় শামীম মোল্লা মৃত। অর্থাৎ তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এন্ট্রি বইয়ে শামীম মোল্লাকে রাত ৯টায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে তথ্য রয়েছে।
ঘটনার দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের বর্ণনা দিয়েছেন জহির রায়হান ফিল্ম সোসাইটির দপ্তর সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ। তিনি জাবি প্রেস ক্লাবের সদস্য।
জুবায়ের আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীম মোল্লাকে প্রক্টর অফিসে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি প্রক্টর অফিসে যান। নিরাপত্তা অফিসের সামনে তিনি প্রক্টর ও সহকারীদের প্রক্টরদের দেখতে পান। নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাঁকে জানান শামীম মোল্লাকে করিডরে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। অনুরোধ করে গেটের তালা খুলিয়ে ভেতরে গিয়ে দেখেন শামীম মোল্লা অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছেন। ওই সময় প্রক্টর অফিসের সামনে কয়েকজন সাংবাদিক ছিলেন। একটু দূরে প্রায় ২০ জনের একটি জটলা ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীমকে মারধর থেকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল ও স্বাধীন। এ জন্য তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল মারধরকারীরা। শামীমকে নিরাপত্তা কার্যালয়ের সামনে আনলে এই দুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয় মারধরকারীরা। তখন ওই দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে সরিয়ে প্রক্টর অফিসের মধ্যে নেওয়া হয়। রাতে শামীম মোল্লাকে পুলিশ নিয়ে গেলে তাঁরা বের হয়েছেন।
শামীম মোল্লার বড় ভাই শাহীন মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জানতে পারেন তাঁর ভাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর খোঁজ নিয়ে জানেন, তাঁকে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। তখন তিনি সাভার থানা ও এনাম মেডিকেলে যান। সেখানে না পেয়ে আশুলিয়া থানায় যান রাত ১১টার দিকে। থানা থেকে তাঁকে জানানো হয়, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে নেওয়া হয়নি। তখন জানতে পারেন তার ভাইকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পৌনে ১২টার দিকে তিনি সেখানে পৌঁছে জানতে পারেন ভাই আর নেই! ভাইয়ের শরীরে হাত দিয়ে দেখেন ঠান্ডা। তার মানে কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি মারা গেছেন।
শাহীন বলেন, শামীমকে ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি হাসপাতালে নেওয়া হয়। থানায় নেওয়া হয়নি।
মারধরের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকজন ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকলেও তাঁরা ঘটনার দায় এড়িয়েছেন—এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহীন বলেন, ‘এখন তাঁরা যদি দায় এড়িয়ে যান, তাহলে কিছু বলার নেই! তবে (তাঁরা) মামলা দিয়েছেন। প্রক্টর ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, এটা শুনেছি। মামলা অনুযায়ী বিচার হলেই হবে। কেউ যদি তাঁকে রক্ষা করতে না পারে তবে আর কী করার আছে!’
শামীম মোল্লা নিহতের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটিতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন। তবে তিনি এই কমিটিতে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
চিঠির বিষয়ে আনিছা পারভীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, অপারগতার কারণ হিসেবে হত্যার শিকার শামীম মোল্লাকে পেটানোর সময় স্বয়ং উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার তথ্য পত্রিকার সংবাদের বরাতে চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন। সেই তথ্য উপাচার্য সরাসরি মৌখিক আলাপে অস্বীকার করেছেন। উপাচার্য হিসেবে তাঁর বক্তব্যের প্রতি তিনি (আনিছা পারভীন) আস্থা রাখতে চান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজন প্রকাশ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রভাবিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো নানা ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত। সংশ্লিষ্ট দায়িত্ববান ব্যক্তিদের (প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরেরা) ঘটনার বিভিন্ন পর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার খবরাখবরও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায়, তদন্ত কমিটির কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে, প্রভাব ও চাপ মুক্ত থেকে পরিচালনা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে তাঁর সংশয় ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আনিছা পারভীন উপাচার্যকে দেওয়া চিঠিতেও একই কথা বলেছেন।
ওই দিনের বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শামীমকে আমার কার্যালয়ে নয়, নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলাম। তবে পুলিশ আসতে দেরি করে। আমরা সোয়া ৬টায় পুলিশকে জানিয়েছিলাম। পুলিশ এসেছিল পৌনে ৮টায়। শামীমকে পুলিশ নিয়ে গেছে প্রায় পৌনে ৯টার দিকে।’
পুলিশ আসার পরেও কেন শামীমকে হস্তান্তরে সময়ক্ষেপণ করা হয়—এ প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, ‘পুলিশ ওখানে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছে।’
শামীম মোল্লাকে মারধরের সময় প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি থাকলেও প্রশাসন দায় এড়িয়ে গেছে—এ প্রসঙ্গে প্রক্টর বলেন, ‘এখানে যেসব সাংবাদিক উপস্থিত ছিল তাদের কাছে শুনলে বোঝা যাবে আমরা কতটুকু চেষ্টা করেছি। আমি এখানে একদম ওনাকে (শামীম) আনা থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি কেউ যেন তাকে প্রহার না করে। শিক্ষক হিসেবে অনেকে আমার কথা শুনেছে, আবার কেউ কেউ শোনেনি।’
তাহলে কি ঘটনাস্থলে মারধরকারীদের তুলনায় প্রক্টরিয়াল বডি বা নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সংখ্যা কম থাকায় সাহস নিয়ে দাঁড়াতে পারেননি—এমন প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, ‘আমার দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটা হয়েছে। আমাদের সদস্য মাত্র চারজন। একটা মবে এই কয়েকজন যথেষ্ট নয়। আবার নিরাপত্তা শাখার যারা ছিলেন তাঁরা নির্লিপ্ত ছিলেন। এইজন্য তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, তাঁরা সেখানে বলবেন কেন নির্লিপ্ত ছিলেন।’
অনেকটা একই কথা বলেছেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বে অবহেলা ছিল। সে জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রক্টরিয়াল টিমের যে তদন্ত প্রতিবেদন তাঁরা করেছেন, সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, (এজাহারে) অভিযুক্তদের ক্রম পরিবর্তন হয়েছে। সেটাও অত্যন্ত দুরূহ কাজ। প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা যেটি মামলার জন্য জমা দিয়েছে সেখানে তিনি ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। সাময়িক ভাবে তাঁকে ট্রান্সফার করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল টিমটা ইনকমপ্লিট (অসম্পূর্ণ) : এখানে প্রক্টর আর তিনজন। শামীম মোল্লাকে পুরোটা সময় নিরাপত্তা কার্যালয়ে রাখা হয়েছিল। আমাকে এই ভাবেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এটা তদন্ত সাপেক্ষে আরও পরিষ্কার হবে।’
ক্যাম্পাসের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় নিজের পদক্ষেপ সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, ‘শামীম মোল্লা একজন মানুষ হিসেবে অন্যায়ের শিকার হয়েছে। প্রত্যেকটা মানুষকে সে যে দল, যে মত তাকে বিচারের আওতায় আসতে হবে। সে জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আমি প্রক্টরিয়াল রিপোর্ট নিয়ে যে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে তাদের চিহ্নিত করে বরখাস্ত করেছি, সনদ স্থগিত করেছি। মামলাও করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি (উপস্থিত) থাকা অবস্থায় (শামীমের ওপর) কোনো আঘাত হয়নি। এর বাইরে যেগুলো হয়েছে সেগুলো সবাই আমাকে বলেছে, কিন্তু সঠিক বলেছে কিনা সেটা তদন্ত করার পর বলা যাবে।’
ঘটনার সময় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নির্লিপ্ততার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি একদম সত্যি নয়। ওখানে প্রক্টর ছিলেন, তিনি যে আদেশ দেবেন আমাদের সেটিই করার কথা। তবে তেমন কিছু হয়নি। বরং সাবেক ছাত্রকে প্রক্টরিয়াল বডি (প্রান্তিক গেট থেকে) ক্যাম্পাসে এনেছেন এবং তাঁর নিজের কক্ষে না রেখে সামনের কক্ষে রেখেছেন। তাঁদের সামনে থেকে শামীমকে নিরাপত্তা শাখার করিডরে নেওয়া হয়। এসব কিছুই প্রক্টরের উপস্থিতিতেই ঘটেছে। এগুলো মিথ্যা অভিযোগ।’
[তথ্য নিয়ে সহযোগিতা করেছেন জাবি সংবাদদাতা]
সৌগত বসু, ঢাকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে ক্যাম্পাসের প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা কার্যালয়ের পাশেই কয়েক দফা মারধর করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরো ঘটনার দায় এড়িয়ে গেছে। যদিও ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা শাখা ও প্রক্টর অফিসে সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ছিল প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের।
এ ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মামলার তিন নম্বর আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এর আগে গত ১৫ জুলাই মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তৎকালীন উপাচার্য নুরুল আলমের বাসভবনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছিলেন। সেদিন পুলিশ, শিক্ষক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হামলা করেছিল ছাত্রলীগ ও বহিরাগতরা। উপাচার্যের বাসভবনেও ওই দিন নিরাপদ ছিলেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য দরজা আটকিয়ে বাসভবনে বসে ছিলেন, কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (ডেপুটি রেজিস্ট্রার) সুদীপ্ত শাহীন ২০ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার কাছে শামীম মোল্লাকে মারধরের ঘটনার বর্ণনা করেন। সুদীপ্ত শাহীন প্রক্টরিয়াল বডির কিছু না করতে পারা ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান আসার পর মারধরকারী সাঈদ ভূইয়া উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এমন তথ্য দিয়েছিলেন। সেটি নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য। পরদিন জনসংযোগ দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রশাসনের অবস্থান জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক ব্যতিরেকে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দোষারোপ করা দুরভিসন্ধিমূলক।
প্রশাসনের উপস্থিতি ছিল সার্বক্ষণিক
আজকের পত্রিকা শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা কার্যালয়ে মারধরের দিনের বিভিন্ন সময়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতি জানার চেষ্টা করেছে। শামীম মোল্লার মারধরের সময়ে প্রক্টরিয়াল বডির তিনজন ও নিরাপত্তা শাখার সাতজন উপস্থিত ছিলেন। প্রক্টর ছাড়াও দুজন সহকারী প্রক্টর—ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল রকিব, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আল-আমিন খান উপস্থিত ছিলেন। আর নিরাপত্তা শাখার উপস্থিত ছিলেন— প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন (নিরাপত্তা-১), মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল (নিরাপত্তা-২), নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ. এস. এম রাশিদুল হাসান রাসেল, মো. রাসেল মিয়া স্বাধীন, নিরাপত্তা কর্মী রিয়াজুল, মনির ও সালাম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাদের বক্তব্য এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেটে (প্রান্তিক গেট) একাই অবস্থান করছিলেন। বিকেল আনুমানিক সোয়া ৫টার দিকে তাঁকে সেখানে আটক করে মারধর করেন কিছু শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে নিরাপত্তা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা একটি ফোন কলে বিষয়টি জানতে পারেন। ৫টা ৫৭ মিনিটে ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ অন্যরা প্রান্তিক গেটে হাজির হন। সেখানে প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলমও ছিলেন। নিরাপত্তা কর্মীরা শামীম মোল্লাকে একটি রিকশায় করে প্রক্টর অফিসে নেন। আরেকটি রিকশায় প্রক্টর ও সেই নিরাপত্তা কর্মকর্তাও সেখানে যান। শামীম মোল্লাকে প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনের একটা কক্ষে রাখা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয় বলে জানান প্রক্টর। এর মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী ওই কক্ষ থেকে শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা শাখার নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষের সামনের করিডরে নিয়ে যায়।
প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো রেজিস্ট্রার ভবনে। দুই দপ্তরের মধ্যে দূরত্ব আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ ফুট। করিডরে নিয়ে যাওয়ার পর শামীম মোল্লাকে আবার মারধর করা হয়। তিনি চিৎকার করছিলেন। সেসময় প্রক্টর তাঁর কার্যালয়েই ছিলেন। একপর্যায়ে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা এসে মারধরকারীদের নিবৃত্ত করেন। সেখানে ৮–১০ জনের উপস্থিতি দেখা গেছে। এরপর শামীমকে গুরুতর আহত অবস্থায় রেখেই সামনের কলাপসিবল গেটে তালা মেরে একজন নিরাপত্তাকর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বাকিরা আবার প্রক্টরের অফিসে ফিরে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই কিছু শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হয়ে মারমুখী আচরণ করলে নিরাপত্তা কর্মীরা শিক্ষার্থীদের বাধা দিলে নিরাপত্তা শাখার দুই কর্মকর্তা এ. এস. এম রাশিদুল হাসান ও মো. রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়। তখন প্রক্টরের অফিসে থাকা সহকর্মীদের ডাকে ওই দুই কর্মকর্তা অন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। শিক্ষার্থীরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে ওই দুই কর্মকর্তা একপর্যায়ে বাথরুমে আশ্রয় নেন।
শিক্ষার্থীরা আবার শামীমকে মারতে আসে। তারা শামীমের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মী রিয়াজুলের কাছ থেকে চাবি চায়। রিয়াজুল দৌড়ে প্রক্টর অফিসের দিকে গেলে সেখানে গিয়ে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তারা তালা খুলতে পারেনি। এরপর সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ফেলে শামীমকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা গিয়ে মারধরকারীদের সরিয়ে দেন। শামীম তখন নিথর অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিলেন। তাঁকে সেভাবে রেখেই কলাপসিবল গেটে আরেকটি তালা মেরে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা স্থান ত্যাগ করেন।
শামীমকে পুলিশের হাতে দিতেও দেরি
আনুমানিক ৭টা ২০ মিনিটে উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, উপাচার্যের একান্ত সচিব মো. মঞ্জুরুল করিমসহ আরও কিছু কর্মকর্তা। উপাচার্য প্রক্টর অফিসে গেলে সাবেক কিছু শিক্ষার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। রাত পৌনে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। উপাচার্য তখনো সেখানে ছিলেন। পুলিশ শামীম মোল্লাকে নিয়ে যায় রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে। উপাচার্য ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন রাত আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটে। রাত ৯টায় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে শামীমকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পুলিশের কাছে শামীমকে হস্তান্তর করা হয় পৌনে এক ঘণ্টা পর। কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে এ নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়। ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মামলা না থাকায় শামীমের নামে আগের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাত সোয়া ৮টার দিকে উপাচার্য চলে যাওয়ার পর শামীম মোল্লাকে পুলিশের কাছ হস্তান্তরের জন্য নিরাপত্তা অফিসের পাশের করিডর থেকে প্রক্টর অফিসে নেওয়া হয়। মারধরকারীরা সেসময় শামীমকে আবার ওই করিডরে নিয়ে প্রায় ১৫ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধর করে। পরে প্রক্টর, নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশ শামীমকে ছাড়িয়ে নিয়ে গাড়িতে তোলে।
আশুলিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, দুই পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে শামীম মোল্লা পুলিশ ভ্যানে ওঠেন। তখনো পেছন থেকে তাঁকে ধাক্কা ও কিলঘুষি মারা হচ্ছিল। গাড়িতে উঠেই শামীম পড়ে যান। এরপর পুলিশের গাড়ি সরাসরি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যায়।
গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, আনার পর পরীক্ষা করে দেখা যায় শামীম মোল্লা মৃত। অর্থাৎ তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এন্ট্রি বইয়ে শামীম মোল্লাকে রাত ৯টায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে তথ্য রয়েছে।
ঘটনার দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের বর্ণনা দিয়েছেন জহির রায়হান ফিল্ম সোসাইটির দপ্তর সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ। তিনি জাবি প্রেস ক্লাবের সদস্য।
জুবায়ের আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীম মোল্লাকে প্রক্টর অফিসে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি প্রক্টর অফিসে যান। নিরাপত্তা অফিসের সামনে তিনি প্রক্টর ও সহকারীদের প্রক্টরদের দেখতে পান। নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাঁকে জানান শামীম মোল্লাকে করিডরে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। অনুরোধ করে গেটের তালা খুলিয়ে ভেতরে গিয়ে দেখেন শামীম মোল্লা অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছেন। ওই সময় প্রক্টর অফিসের সামনে কয়েকজন সাংবাদিক ছিলেন। একটু দূরে প্রায় ২০ জনের একটি জটলা ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীমকে মারধর থেকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল ও স্বাধীন। এ জন্য তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল মারধরকারীরা। শামীমকে নিরাপত্তা কার্যালয়ের সামনে আনলে এই দুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয় মারধরকারীরা। তখন ওই দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে সরিয়ে প্রক্টর অফিসের মধ্যে নেওয়া হয়। রাতে শামীম মোল্লাকে পুলিশ নিয়ে গেলে তাঁরা বের হয়েছেন।
শামীম মোল্লার বড় ভাই শাহীন মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জানতে পারেন তাঁর ভাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর খোঁজ নিয়ে জানেন, তাঁকে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। তখন তিনি সাভার থানা ও এনাম মেডিকেলে যান। সেখানে না পেয়ে আশুলিয়া থানায় যান রাত ১১টার দিকে। থানা থেকে তাঁকে জানানো হয়, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে নেওয়া হয়নি। তখন জানতে পারেন তার ভাইকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পৌনে ১২টার দিকে তিনি সেখানে পৌঁছে জানতে পারেন ভাই আর নেই! ভাইয়ের শরীরে হাত দিয়ে দেখেন ঠান্ডা। তার মানে কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি মারা গেছেন।
শাহীন বলেন, শামীমকে ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি হাসপাতালে নেওয়া হয়। থানায় নেওয়া হয়নি।
মারধরের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকজন ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকলেও তাঁরা ঘটনার দায় এড়িয়েছেন—এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহীন বলেন, ‘এখন তাঁরা যদি দায় এড়িয়ে যান, তাহলে কিছু বলার নেই! তবে (তাঁরা) মামলা দিয়েছেন। প্রক্টর ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, এটা শুনেছি। মামলা অনুযায়ী বিচার হলেই হবে। কেউ যদি তাঁকে রক্ষা করতে না পারে তবে আর কী করার আছে!’
শামীম মোল্লা নিহতের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটিতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন। তবে তিনি এই কমিটিতে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
চিঠির বিষয়ে আনিছা পারভীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, অপারগতার কারণ হিসেবে হত্যার শিকার শামীম মোল্লাকে পেটানোর সময় স্বয়ং উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার তথ্য পত্রিকার সংবাদের বরাতে চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন। সেই তথ্য উপাচার্য সরাসরি মৌখিক আলাপে অস্বীকার করেছেন। উপাচার্য হিসেবে তাঁর বক্তব্যের প্রতি তিনি (আনিছা পারভীন) আস্থা রাখতে চান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজন প্রকাশ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রভাবিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো নানা ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত। সংশ্লিষ্ট দায়িত্ববান ব্যক্তিদের (প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরেরা) ঘটনার বিভিন্ন পর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার খবরাখবরও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায়, তদন্ত কমিটির কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে, প্রভাব ও চাপ মুক্ত থেকে পরিচালনা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে তাঁর সংশয় ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আনিছা পারভীন উপাচার্যকে দেওয়া চিঠিতেও একই কথা বলেছেন।
ওই দিনের বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শামীমকে আমার কার্যালয়ে নয়, নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলাম। তবে পুলিশ আসতে দেরি করে। আমরা সোয়া ৬টায় পুলিশকে জানিয়েছিলাম। পুলিশ এসেছিল পৌনে ৮টায়। শামীমকে পুলিশ নিয়ে গেছে প্রায় পৌনে ৯টার দিকে।’
পুলিশ আসার পরেও কেন শামীমকে হস্তান্তরে সময়ক্ষেপণ করা হয়—এ প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, ‘পুলিশ ওখানে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছে।’
শামীম মোল্লাকে মারধরের সময় প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি থাকলেও প্রশাসন দায় এড়িয়ে গেছে—এ প্রসঙ্গে প্রক্টর বলেন, ‘এখানে যেসব সাংবাদিক উপস্থিত ছিল তাদের কাছে শুনলে বোঝা যাবে আমরা কতটুকু চেষ্টা করেছি। আমি এখানে একদম ওনাকে (শামীম) আনা থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি কেউ যেন তাকে প্রহার না করে। শিক্ষক হিসেবে অনেকে আমার কথা শুনেছে, আবার কেউ কেউ শোনেনি।’
তাহলে কি ঘটনাস্থলে মারধরকারীদের তুলনায় প্রক্টরিয়াল বডি বা নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সংখ্যা কম থাকায় সাহস নিয়ে দাঁড়াতে পারেননি—এমন প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, ‘আমার দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটা হয়েছে। আমাদের সদস্য মাত্র চারজন। একটা মবে এই কয়েকজন যথেষ্ট নয়। আবার নিরাপত্তা শাখার যারা ছিলেন তাঁরা নির্লিপ্ত ছিলেন। এইজন্য তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, তাঁরা সেখানে বলবেন কেন নির্লিপ্ত ছিলেন।’
অনেকটা একই কথা বলেছেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বে অবহেলা ছিল। সে জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রক্টরিয়াল টিমের যে তদন্ত প্রতিবেদন তাঁরা করেছেন, সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, (এজাহারে) অভিযুক্তদের ক্রম পরিবর্তন হয়েছে। সেটাও অত্যন্ত দুরূহ কাজ। প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা যেটি মামলার জন্য জমা দিয়েছে সেখানে তিনি ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। সাময়িক ভাবে তাঁকে ট্রান্সফার করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল টিমটা ইনকমপ্লিট (অসম্পূর্ণ) : এখানে প্রক্টর আর তিনজন। শামীম মোল্লাকে পুরোটা সময় নিরাপত্তা কার্যালয়ে রাখা হয়েছিল। আমাকে এই ভাবেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এটা তদন্ত সাপেক্ষে আরও পরিষ্কার হবে।’
ক্যাম্পাসের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় নিজের পদক্ষেপ সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, ‘শামীম মোল্লা একজন মানুষ হিসেবে অন্যায়ের শিকার হয়েছে। প্রত্যেকটা মানুষকে সে যে দল, যে মত তাকে বিচারের আওতায় আসতে হবে। সে জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আমি প্রক্টরিয়াল রিপোর্ট নিয়ে যে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে তাদের চিহ্নিত করে বরখাস্ত করেছি, সনদ স্থগিত করেছি। মামলাও করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি (উপস্থিত) থাকা অবস্থায় (শামীমের ওপর) কোনো আঘাত হয়নি। এর বাইরে যেগুলো হয়েছে সেগুলো সবাই আমাকে বলেছে, কিন্তু সঠিক বলেছে কিনা সেটা তদন্ত করার পর বলা যাবে।’
ঘটনার সময় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নির্লিপ্ততার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি একদম সত্যি নয়। ওখানে প্রক্টর ছিলেন, তিনি যে আদেশ দেবেন আমাদের সেটিই করার কথা। তবে তেমন কিছু হয়নি। বরং সাবেক ছাত্রকে প্রক্টরিয়াল বডি (প্রান্তিক গেট থেকে) ক্যাম্পাসে এনেছেন এবং তাঁর নিজের কক্ষে না রেখে সামনের কক্ষে রেখেছেন। তাঁদের সামনে থেকে শামীমকে নিরাপত্তা শাখার করিডরে নেওয়া হয়। এসব কিছুই প্রক্টরের উপস্থিতিতেই ঘটেছে। এগুলো মিথ্যা অভিযোগ।’
[তথ্য নিয়ে সহযোগিতা করেছেন জাবি সংবাদদাতা]

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে ক্যাম্পাসের প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা কার্যালয়ের পাশেই কয়েক দফা মারধর করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরো ঘটনার দায় এড়িয়ে গেছে। যদিও ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা শাখা ও প্রক্টর অফিসে সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ছিল প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের।
এ ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মামলার তিন নম্বর আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এর আগে গত ১৫ জুলাই মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তৎকালীন উপাচার্য নুরুল আলমের বাসভবনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছিলেন। সেদিন পুলিশ, শিক্ষক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হামলা করেছিল ছাত্রলীগ ও বহিরাগতরা। উপাচার্যের বাসভবনেও ওই দিন নিরাপদ ছিলেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য দরজা আটকিয়ে বাসভবনে বসে ছিলেন, কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (ডেপুটি রেজিস্ট্রার) সুদীপ্ত শাহীন ২০ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার কাছে শামীম মোল্লাকে মারধরের ঘটনার বর্ণনা করেন। সুদীপ্ত শাহীন প্রক্টরিয়াল বডির কিছু না করতে পারা ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান আসার পর মারধরকারী সাঈদ ভূইয়া উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এমন তথ্য দিয়েছিলেন। সেটি নিয়ে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য। পরদিন জনসংযোগ দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রশাসনের অবস্থান জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক ব্যতিরেকে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দোষারোপ করা দুরভিসন্ধিমূলক।
প্রশাসনের উপস্থিতি ছিল সার্বক্ষণিক
আজকের পত্রিকা শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা কার্যালয়ে মারধরের দিনের বিভিন্ন সময়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতি জানার চেষ্টা করেছে। শামীম মোল্লার মারধরের সময়ে প্রক্টরিয়াল বডির তিনজন ও নিরাপত্তা শাখার সাতজন উপস্থিত ছিলেন। প্রক্টর ছাড়াও দুজন সহকারী প্রক্টর—ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল রকিব, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আল-আমিন খান উপস্থিত ছিলেন। আর নিরাপত্তা শাখার উপস্থিত ছিলেন— প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন (নিরাপত্তা-১), মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল (নিরাপত্তা-২), নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ. এস. এম রাশিদুল হাসান রাসেল, মো. রাসেল মিয়া স্বাধীন, নিরাপত্তা কর্মী রিয়াজুল, মনির ও সালাম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাদের বক্তব্য এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেটে (প্রান্তিক গেট) একাই অবস্থান করছিলেন। বিকেল আনুমানিক সোয়া ৫টার দিকে তাঁকে সেখানে আটক করে মারধর করেন কিছু শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে নিরাপত্তা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা একটি ফোন কলে বিষয়টি জানতে পারেন। ৫টা ৫৭ মিনিটে ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ অন্যরা প্রান্তিক গেটে হাজির হন। সেখানে প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলমও ছিলেন। নিরাপত্তা কর্মীরা শামীম মোল্লাকে একটি রিকশায় করে প্রক্টর অফিসে নেন। আরেকটি রিকশায় প্রক্টর ও সেই নিরাপত্তা কর্মকর্তাও সেখানে যান। শামীম মোল্লাকে প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনের একটা কক্ষে রাখা হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয় বলে জানান প্রক্টর। এর মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী ওই কক্ষ থেকে শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা শাখার নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষের সামনের করিডরে নিয়ে যায়।
প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো রেজিস্ট্রার ভবনে। দুই দপ্তরের মধ্যে দূরত্ব আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ ফুট। করিডরে নিয়ে যাওয়ার পর শামীম মোল্লাকে আবার মারধর করা হয়। তিনি চিৎকার করছিলেন। সেসময় প্রক্টর তাঁর কার্যালয়েই ছিলেন। একপর্যায়ে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা এসে মারধরকারীদের নিবৃত্ত করেন। সেখানে ৮–১০ জনের উপস্থিতি দেখা গেছে। এরপর শামীমকে গুরুতর আহত অবস্থায় রেখেই সামনের কলাপসিবল গেটে তালা মেরে একজন নিরাপত্তাকর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বাকিরা আবার প্রক্টরের অফিসে ফিরে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই কিছু শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হয়ে মারমুখী আচরণ করলে নিরাপত্তা কর্মীরা শিক্ষার্থীদের বাধা দিলে নিরাপত্তা শাখার দুই কর্মকর্তা এ. এস. এম রাশিদুল হাসান ও মো. রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়। তখন প্রক্টরের অফিসে থাকা সহকর্মীদের ডাকে ওই দুই কর্মকর্তা অন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। শিক্ষার্থীরা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে ওই দুই কর্মকর্তা একপর্যায়ে বাথরুমে আশ্রয় নেন।
শিক্ষার্থীরা আবার শামীমকে মারতে আসে। তারা শামীমের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মী রিয়াজুলের কাছ থেকে চাবি চায়। রিয়াজুল দৌড়ে প্রক্টর অফিসের দিকে গেলে সেখানে গিয়ে চাবি ছিনিয়ে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তারা তালা খুলতে পারেনি। এরপর সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ফেলে শামীমকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা গিয়ে মারধরকারীদের সরিয়ে দেন। শামীম তখন নিথর অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিলেন। তাঁকে সেভাবে রেখেই কলাপসিবল গেটে আরেকটি তালা মেরে প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীরা স্থান ত্যাগ করেন।
শামীমকে পুলিশের হাতে দিতেও দেরি
আনুমানিক ৭টা ২০ মিনিটে উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, উপাচার্যের একান্ত সচিব মো. মঞ্জুরুল করিমসহ আরও কিছু কর্মকর্তা। উপাচার্য প্রক্টর অফিসে গেলে সাবেক কিছু শিক্ষার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। রাত পৌনে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। উপাচার্য তখনো সেখানে ছিলেন। পুলিশ শামীম মোল্লাকে নিয়ে যায় রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে। উপাচার্য ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন রাত আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটে। রাত ৯টায় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে শামীমকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পুলিশের কাছে শামীমকে হস্তান্তর করা হয় পৌনে এক ঘণ্টা পর। কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে এ নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়। ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মামলা না থাকায় শামীমের নামে আগের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাত সোয়া ৮টার দিকে উপাচার্য চলে যাওয়ার পর শামীম মোল্লাকে পুলিশের কাছ হস্তান্তরের জন্য নিরাপত্তা অফিসের পাশের করিডর থেকে প্রক্টর অফিসে নেওয়া হয়। মারধরকারীরা সেসময় শামীমকে আবার ওই করিডরে নিয়ে প্রায় ১৫ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধর করে। পরে প্রক্টর, নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশ শামীমকে ছাড়িয়ে নিয়ে গাড়িতে তোলে।
আশুলিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, দুই পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে শামীম মোল্লা পুলিশ ভ্যানে ওঠেন। তখনো পেছন থেকে তাঁকে ধাক্কা ও কিলঘুষি মারা হচ্ছিল। গাড়িতে উঠেই শামীম পড়ে যান। এরপর পুলিশের গাড়ি সরাসরি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যায়।
গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, আনার পর পরীক্ষা করে দেখা যায় শামীম মোল্লা মৃত। অর্থাৎ তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এন্ট্রি বইয়ে শামীম মোল্লাকে রাত ৯টায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে তথ্য রয়েছে।
ঘটনার দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের বর্ণনা দিয়েছেন জহির রায়হান ফিল্ম সোসাইটির দপ্তর সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ। তিনি জাবি প্রেস ক্লাবের সদস্য।
জুবায়ের আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীম মোল্লাকে প্রক্টর অফিসে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি প্রক্টর অফিসে যান। নিরাপত্তা অফিসের সামনে তিনি প্রক্টর ও সহকারীদের প্রক্টরদের দেখতে পান। নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাঁকে জানান শামীম মোল্লাকে করিডরে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। অনুরোধ করে গেটের তালা খুলিয়ে ভেতরে গিয়ে দেখেন শামীম মোল্লা অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছেন। ওই সময় প্রক্টর অফিসের সামনে কয়েকজন সাংবাদিক ছিলেন। একটু দূরে প্রায় ২০ জনের একটি জটলা ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীমকে মারধর থেকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল ও স্বাধীন। এ জন্য তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল মারধরকারীরা। শামীমকে নিরাপত্তা কার্যালয়ের সামনে আনলে এই দুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয় মারধরকারীরা। তখন ওই দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে সরিয়ে প্রক্টর অফিসের মধ্যে নেওয়া হয়। রাতে শামীম মোল্লাকে পুলিশ নিয়ে গেলে তাঁরা বের হয়েছেন।
শামীম মোল্লার বড় ভাই শাহীন মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জানতে পারেন তাঁর ভাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর খোঁজ নিয়ে জানেন, তাঁকে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। তখন তিনি সাভার থানা ও এনাম মেডিকেলে যান। সেখানে না পেয়ে আশুলিয়া থানায় যান রাত ১১টার দিকে। থানা থেকে তাঁকে জানানো হয়, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে নেওয়া হয়নি। তখন জানতে পারেন তার ভাইকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পৌনে ১২টার দিকে তিনি সেখানে পৌঁছে জানতে পারেন ভাই আর নেই! ভাইয়ের শরীরে হাত দিয়ে দেখেন ঠান্ডা। তার মানে কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি মারা গেছেন।
শাহীন বলেন, শামীমকে ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি হাসপাতালে নেওয়া হয়। থানায় নেওয়া হয়নি।
মারধরের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকজন ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকলেও তাঁরা ঘটনার দায় এড়িয়েছেন—এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহীন বলেন, ‘এখন তাঁরা যদি দায় এড়িয়ে যান, তাহলে কিছু বলার নেই! তবে (তাঁরা) মামলা দিয়েছেন। প্রক্টর ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, এটা শুনেছি। মামলা অনুযায়ী বিচার হলেই হবে। কেউ যদি তাঁকে রক্ষা করতে না পারে তবে আর কী করার আছে!’
শামীম মোল্লা নিহতের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটিতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন। তবে তিনি এই কমিটিতে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
চিঠির বিষয়ে আনিছা পারভীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, অপারগতার কারণ হিসেবে হত্যার শিকার শামীম মোল্লাকে পেটানোর সময় স্বয়ং উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার তথ্য পত্রিকার সংবাদের বরাতে চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন। সেই তথ্য উপাচার্য সরাসরি মৌখিক আলাপে অস্বীকার করেছেন। উপাচার্য হিসেবে তাঁর বক্তব্যের প্রতি তিনি (আনিছা পারভীন) আস্থা রাখতে চান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজন প্রকাশ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রভাবিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো নানা ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত। সংশ্লিষ্ট দায়িত্ববান ব্যক্তিদের (প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরেরা) ঘটনার বিভিন্ন পর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার খবরাখবরও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায়, তদন্ত কমিটির কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে, প্রভাব ও চাপ মুক্ত থেকে পরিচালনা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে তাঁর সংশয় ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আনিছা পারভীন উপাচার্যকে দেওয়া চিঠিতেও একই কথা বলেছেন।
ওই দিনের বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শামীমকে আমার কার্যালয়ে নয়, নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলাম। তবে পুলিশ আসতে দেরি করে। আমরা সোয়া ৬টায় পুলিশকে জানিয়েছিলাম। পুলিশ এসেছিল পৌনে ৮টায়। শামীমকে পুলিশ নিয়ে গেছে প্রায় পৌনে ৯টার দিকে।’
পুলিশ আসার পরেও কেন শামীমকে হস্তান্তরে সময়ক্ষেপণ করা হয়—এ প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, ‘পুলিশ ওখানে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছে।’
শামীম মোল্লাকে মারধরের সময় প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি থাকলেও প্রশাসন দায় এড়িয়ে গেছে—এ প্রসঙ্গে প্রক্টর বলেন, ‘এখানে যেসব সাংবাদিক উপস্থিত ছিল তাদের কাছে শুনলে বোঝা যাবে আমরা কতটুকু চেষ্টা করেছি। আমি এখানে একদম ওনাকে (শামীম) আনা থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি কেউ যেন তাকে প্রহার না করে। শিক্ষক হিসেবে অনেকে আমার কথা শুনেছে, আবার কেউ কেউ শোনেনি।’
তাহলে কি ঘটনাস্থলে মারধরকারীদের তুলনায় প্রক্টরিয়াল বডি বা নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সংখ্যা কম থাকায় সাহস নিয়ে দাঁড়াতে পারেননি—এমন প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, ‘আমার দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটা হয়েছে। আমাদের সদস্য মাত্র চারজন। একটা মবে এই কয়েকজন যথেষ্ট নয়। আবার নিরাপত্তা শাখার যারা ছিলেন তাঁরা নির্লিপ্ত ছিলেন। এইজন্য তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, তাঁরা সেখানে বলবেন কেন নির্লিপ্ত ছিলেন।’
অনেকটা একই কথা বলেছেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বে অবহেলা ছিল। সে জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রক্টরিয়াল টিমের যে তদন্ত প্রতিবেদন তাঁরা করেছেন, সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, (এজাহারে) অভিযুক্তদের ক্রম পরিবর্তন হয়েছে। সেটাও অত্যন্ত দুরূহ কাজ। প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা যেটি মামলার জন্য জমা দিয়েছে সেখানে তিনি ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। সাময়িক ভাবে তাঁকে ট্রান্সফার করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল টিমটা ইনকমপ্লিট (অসম্পূর্ণ) : এখানে প্রক্টর আর তিনজন। শামীম মোল্লাকে পুরোটা সময় নিরাপত্তা কার্যালয়ে রাখা হয়েছিল। আমাকে এই ভাবেই রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এটা তদন্ত সাপেক্ষে আরও পরিষ্কার হবে।’
ক্যাম্পাসের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় নিজের পদক্ষেপ সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, ‘শামীম মোল্লা একজন মানুষ হিসেবে অন্যায়ের শিকার হয়েছে। প্রত্যেকটা মানুষকে সে যে দল, যে মত তাকে বিচারের আওতায় আসতে হবে। সে জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আমি প্রক্টরিয়াল রিপোর্ট নিয়ে যে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে তাদের চিহ্নিত করে বরখাস্ত করেছি, সনদ স্থগিত করেছি। মামলাও করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি (উপস্থিত) থাকা অবস্থায় (শামীমের ওপর) কোনো আঘাত হয়নি। এর বাইরে যেগুলো হয়েছে সেগুলো সবাই আমাকে বলেছে, কিন্তু সঠিক বলেছে কিনা সেটা তদন্ত করার পর বলা যাবে।’
ঘটনার সময় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নির্লিপ্ততার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি একদম সত্যি নয়। ওখানে প্রক্টর ছিলেন, তিনি যে আদেশ দেবেন আমাদের সেটিই করার কথা। তবে তেমন কিছু হয়নি। বরং সাবেক ছাত্রকে প্রক্টরিয়াল বডি (প্রান্তিক গেট থেকে) ক্যাম্পাসে এনেছেন এবং তাঁর নিজের কক্ষে না রেখে সামনের কক্ষে রেখেছেন। তাঁদের সামনে থেকে শামীমকে নিরাপত্তা শাখার করিডরে নেওয়া হয়। এসব কিছুই প্রক্টরের উপস্থিতিতেই ঘটেছে। এগুলো মিথ্যা অভিযোগ।’
[তথ্য নিয়ে সহযোগিতা করেছেন জাবি সংবাদদাতা]

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে ক্যাম্পাসের প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা কার্যালয়ের পাশেই কয়েক দফা মারধর করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরো ঘটনার দায় এড়িয়ে গেছে। যদিও ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা শ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে ক্যাম্পাসের প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা কার্যালয়ের পাশেই কয়েক দফা মারধর করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরো ঘটনার দায় এড়িয়ে গেছে। যদিও ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা শ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে ক্যাম্পাসের প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা কার্যালয়ের পাশেই কয়েক দফা মারধর করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরো ঘটনার দায় এড়িয়ে গেছে। যদিও ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা শ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে ক্যাম্পাসের প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা কার্যালয়ের পাশেই কয়েক দফা মারধর করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরো ঘটনার দায় এড়িয়ে গেছে। যদিও ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা শ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে