Ajker Patrika

টাঙ্গাইলে মারধরের জেরে মুখোমুখি বণিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠন, পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
টাঙ্গাইলের সখীপুরে পরিবহনশ্রমিকের বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
টাঙ্গাইলের সখীপুরে পরিবহনশ্রমিকের বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে পরিবহনশ্রমিককে মারধরের জেরে বণিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। সংগঠন দুটি পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

দুই পক্ষের সমাবেশ থেকে প্রতিপক্ষ সংগঠনের সভাপতির বিরুদ্ধে কটাক্ষমূলক বক্তব্য দিয়ে তাঁদের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। দুই দিন ধরে চলা এই অবস্থার কারণে পৌর শহরের তালতলা চত্বরে উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করছে।

ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা গেছে, সখীপুর বাজার বণিক বহুমুখী সমবায় সমিতির নিয়োগ করা নৈশপ্রহরী লুৎফর রহমান প্রায় তিন সপ্তাহ আগে গভীর রাতে জহিরুল ইসলাম নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালককে মারধর করেন। বিষয়টি পরে উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে বণিক সমিতিতে জানানো হয়। পরে অভিযুক্ত লুৎফরকে নৈশপ্রহরীর চাকরি থেকে বরখাস্তের প্রতিশ্রুতি দেয় সমিতি। সম্প্রতি ওই প্রহরীকে পুনরায় দায়িত্ব পালন করতে দেখে সিএনজি শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মতিনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন অটোরিকশাশ্রমিকেরা। মিছিলে বণিক সমিতির সভাপতি বিল্লাল হোসেনকে আওয়ামী লীগের দালাল দাবি করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর পদত্যাগের আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

এর পাল্টা হিসেবে আজ বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বণিক সমিতি। এ সময় ব্যবসায়ীরা উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মতিনকে পদ থেকে অপসারণের দাবি জানান।

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
টাঙ্গাইলের সখীপুরে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ বিষয়ে মতিন বলেন, ‘একজন শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় বণিক সমিতির সভাপতি বলেছিলেন ওই নাইটগার্ড আর চাকরি করতে পারবে না। কিন্তু তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেন নাই। ওই নাইটগার্ড মোটরসাইকেল আটকিয়ে টাকা রেখে দেয়। এটা নাইটগার্ডের কাজ না। ‌এ কারণেই আমরা বণিক সমিতির সভাপতির পদত্যাগ চেয়েছি।’

জানতে চাইলে বণিক সমিতির সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের অনুরোধে আমরা ওই নৈশপ্রহরীকে দায়িত্বে পাঠিয়েছি। শ্রমিকদের নেতৃত্ব দেওয়া আব্দুল মতিন প্রকাশ্যে বণিকদের অপমান করেছেন। এরপর তাঁরা বাজারে মিছিল-সমাবেশ করতে চাইলে প্রতিহত করা হবে। আমরা তাঁকে (মতিন) আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা ইউএনও অফিস ও থানায় স্মারকলিপি দেব।’

যোগাযোগ করা হলে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পৌরসভার বর্জ্যে নদী পরিণত হচ্ছে নর্দমায়

গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীতে। সম্প্রতি তোলা ছবি। 	আজকের পত্রিকা
পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীতে। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাঁচকৈড় রসুনহাট, গরুর হাট ও গুরুদাসপুর বাজারঘাট এলাকার আবর্জনা গাড়িতে তুলে এনে নদীর তীরে বা সরাসরি পানিতে ফেলে দিচ্ছে। শুধু ঘরবাড়ির বর্জ্য নয়, বিভিন্ন কারখানা ও ক্লিনিক থেকে আসা রাসায়নিক বর্জ্য এবং পয়োনিষ্কাশনের নালা-পাইপের বর্জ্যও নন্দকুঁজা নদীতে পড়ছে। এতে নদীর পানি যেমন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। তবু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।

রসুনহাটসংলগ্ন নদীপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, শহরজুড়ে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ফেলা নানান আবর্জনা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জমে থাকে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেসব বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌরসভার গাড়িতে করে এনে নদীর ধারে ফেলে রাখেন। এতে এতটাই দুর্গন্ধ ছড়ায় যে আশপাশে বসবাস করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন নদীপারের বাসিন্দা জানান, একসময় এই নদীতে দল বেঁধে গোসল করতেন তাঁরা, মাছ ধরতেন, শিশুদের খেলাধুলার জায়গা ছিল এটি। এখন নদীতে নামাই যায় না। দূষিত পানিতে শরীর চুলকায়, আগের মতো মাছও আর মেলে না। নদীর প্রতি মানুষের নির্ভরতা কমে যাচ্ছে, তারা চান, আগের সেই স্বাভাবিক নদী ফিরে আসুক।

জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘নদী রক্ষায় বহুবার আন্দোলন করেছি, পৌর মেয়রকেও অনুরোধ জানিয়েছিলাম; তবু নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি তাঁর নজরে আসেনি। এখন তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নির্দেশ দেবেন, যেন নদীতে আর আবর্জনা ফেলা না হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঠান্ডাজনিত রোগে সাতদিনে পাঁচ শিশুর মৃত্যু

মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, সুবর্ণচর (নোয়াখালী) 
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায়ও ভর্তি রোগীর ভিড়। গতকাল তোলা ছবি। 	আজকের পত্রিকা
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায়ও ভর্তি রোগীর ভিড়। গতকাল তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। এক সপ্তাহে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েক শ শিশু জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে উপজেলায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চলতি (ডিসেম্বর) মাসের প্রথম আট দিনে (১ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত) মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৮৪ জনের মধ্যে শিশু ৬৭২ জন। এদের সবাই ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই আট দিনে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬১৯টি শিশু। গতকাল সোমবার ভর্তি ছিল ৪৮ জন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নার্সরা ব্যস্ত রোগীর চাপ সামলাতে। শিশু ওয়ার্ডে কথা হয় গৃহবধূ আসমা আক্তারের সঙ্গে। চার দিন ধরে তাঁর সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে মুনতাহা জ্বরে আক্রান্ত। প্রথমে বাড়িতে রেখে পল্লিচিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা দিলেও জ্বর কমেনি। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে আসেন। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে রেখে মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন।

আসমা বলেন, ‘বাচ্চাটা চার দিনের জ্বরে কাহিল হয়ে গেছে। ঘাড় তুলতে পারছে না। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ঠান্ডাজনিত রোগ (নিউমোনিয়া) প্রতিদিন অনেক শিশু ভর্তি হচ্ছে। এখন ইনজেকশন ও অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। শয্যা পাচ্ছি না। বলতে পারছি না কবে সন্তানকে সুস্থ করে বাড়িতে ফিরতে পারব।’

চর আলাউদ্দিনের বাসিন্দা শেফালী আক্তারের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সৈকত ছয় দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে জোসনার চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। তিনি জানান, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে, আগে বুঝতে পারেননি। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন সাধারণ জ্বর। কিন্তু হাসপাতালে দুই দফায় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। এখন চিকিৎসা চলছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. সোহেল সারওয়ার জানান, সুবর্ণচরের চরাঞ্চল থেকে শিশুরা বেশি আসছে। প্রতিবছরের মতো এ বছর তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। ফলে ঠান্ডাজনিত রোগও দেখা দিয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, ‘যে শিশুগুলো মারা যাচ্ছে, বেশির ভাগ নবজাতক ও পাঁচ বছরের মধ্যে। পল্লিচিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে তাদের অবস্থা যখন বেশি খারাপ হয়, তখন হাসপাতালে আসেন এতে আমাদেরও কিছু করার থাকে না। আমরা সাধ্য অনুযায়ী এ হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করছি।’

এদিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলামের কাছে তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার কোনো রেকর্ড আমাদের কাছে নেই। আগামীকাল (৯ ডিসেম্বর) জানাতে পারব।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে অনেক শিশুকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় নিয়ে আসে। আমরা সেসব শিশুকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাই। অনেক রোগীর অভিভাবক আছেন, জেলা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তখন সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে মারা যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাওরের ফসল রক্ষা: বাঁধের কাজে কচ্ছপগতি

  • পিআইসি গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি।
  • শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও।
  • কাজের এই গতি বিপদে ফেলতে পারে হাওরবাসীকে: বিশেষজ্ঞ
  • ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরুর কথা জানান পাউবো কর্মকর্তা।

বিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ
তাহিরপুরের সাহেবনগর গ্রামের পূর্ব দিকে শনির হাওরের ভয়ংকর একটি ক্লোজার (ভাঙন)। শুক্রবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
তাহিরপুরের সাহেবনগর গ্রামের পূর্ব দিকে শনির হাওরের ভয়ংকর একটি ক্লোজার (ভাঙন)। শুক্রবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত শুক্রবার তাহিরপুরের শনির হাওর এবং জামালগঞ্জের হালি হাওর ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গা দিয়ে পানি নামছে নদীতে। অধিকাংশ বাঁধ এলাকায় কাজ শুরুর মতো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। শনির হাওরের সাহেবনগর, জালালপুর, নয়ানগর, মারালা, ইগ্রামপুর, নিশ্চিন্তপুর, মুরাদনগর, শ্রীপুর হয়ে তাহিরপুর পর্যন্ত যেসব জায়গায় প্রতিবছর বাঁধের কাজ হয়, সেসব জায়গায় বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার মতো কোনো আলামত চোখে পড়েনি। শুধু তা-ই নয়, হালি হাওরের একাংশ ঘুরে একই রকম পরিস্থিতি দেখা গেছে।

হাওর-সচেতন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাওরের রাজধানীখ্যাত সুনামগঞ্জ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। ওই বোরো ফসল হাতছাড়া হলে দুঃখের সীমা থাকে না এখানকার মানুষের। টেকসই ঝুঁকিমুক্ত বাঁধই পারে এক ফসলি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ রাখতে। এর মধ্যে বাঁধের কাজে ব্যত্যয় ঘটলে গোটা হাওরাঞ্চল ঝুঁকিতে পড়বে।

কথা হয় তাহিরপুরের শনির হাওর পারের নয়ানগর গ্রামের কৃষক বাপ্পি মিয়ার সঙ্গে। বাঁধের প্রাক্কলন-জরিপের কাজ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরার গেরামের আশপাশে প্রতিবছরই পিআইসিরা বাঁধের কাজ করে। এই বছর জরিপের কাজ এখনো হইছে না, কয়দিনের মধ্যে হয়তো করব। সময় তো চইল্যা যাইতাছে (চলে যাচ্ছে)। তাড়াতাড়ি (দ্রুত) কাজ না করলে তো পরে আমরার দৌড়াদৌড়ি করন (করা) লাগে।’

জানা যায়, ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে ভয়াবহ হাওর বিপর্যয়ের পর নড়েচড়ে বসে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ওই বছর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়। সেই দুর্নীতি ঠেকাতে নতুন কাবিটা নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। এই নীতিমালার আলোকে বিলুপ্ত হয় আগের ঠিকাদারি প্রথা। হাওরপারের কৃষিজীবী মানুষের সমন্বয়ে পিআইসি গঠন করে বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার নতুন নির্দেশনা জারি করা হয় নীতিমালায়। কিন্তু পুরোনো প্রথাই বলবৎ আছে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে।

নীতিমালায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন; ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা বলা আছে। কিন্তু পিআইসি গঠন দূরের কথা, এখন পর্যন্ত প্রাক্কলন ও জরিপের কাজই শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে কৃষক ও হাওর-সচেতন মানুষের মাঝে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার ও মেরামতে এ বছর ৬৯০টি পিআইসি গঠন করা হতে পারে। এ কাজে প্রাথমিক বরাদ্দ হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। জেলার ৯৫টি হাওরের মধ্যে বাঁধের কাজ হবে ৫৩টি হাওরে। চলতি বছরে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার বাঁধ এলাকায় সংস্কার ও মেরামতের কাজ হবে। ধর্মপাশা ও শাল্লায় বাঁধের কাজ সবচেয়ে বেশি।

শাল্লা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি তরুণ কান্তি দাস বলেন, ‘২০১৭ সালের প্রলয়ংকরী হাওর বিপর্যয়ের পর বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ আসেনি। যে কারণে বাঁধ হওয়া না হওয়া নিয়ে তেমন প্রভাব পড়েনি। যদি অকালবন্যা পেয়ে বসে, তাহলে কৃষকের সর্বনাশ হবে। এখনো প্রাক্কলন-জরিপের কাজই চলছে। কাজের এই মন্থরগতি বিপদে ফেলতে পারে হাওরবাসীকে।’

পিআইসি গঠনপ্রক্রিয়া চলমান আছে জানিয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, হাওরে এখন পর্যন্ত ৮৬টি ক্লোজার (বাঁধের বড় ভাঙা) শনাক্ত করা হয়েছে। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জেলার ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার বাঁধে জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। প্রাক্কলনের কাজও ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দল মনোনয়ন দিল পটুয়াখালী-১, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ঘোষণা দিলেন পটুয়াখালী-৪ আসনে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

তবে তিনি কোন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচন করবেন, তা এখনো নিশ্চিত করেননি।

আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন কলাপাড়া উপজেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি পাওয়া জেড এম কাওসার, মাওলানা মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান ইউসুফসহ মুফতি হাবিবুর রহমানের অনুসারীরা।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণার মাধ্যমে পটুয়াখালী-১ ও ৪ আসনে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

লিখিত বক্তব্যে হাবিবুর রহমান জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁর ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও আমির পটুয়াখালী-১ আসনে নির্বাচন করার জন্য নির্ধারণ করে দেন। এ কারণে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং স্ট্রোক করে তিনি বুঝতে পারেন, এই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ায় তাঁর হৃদয়ের রক্তনালি ছিঁড়ে গেছে। তাই তিনি ফিরে এসেছেন।

হাবিবুর রহমান আরও জানান, তিনি এমপি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার মানুষের পাশে থাকবেন এবং আগামী দিনে তিনি এই অঞ্চলের চাঁদাবাজ, দখলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দাঁড়াবেন। বর্তমানে যেভাবে তিনি সাধারণ জীবন যাপন করছেন, এরচেয়ে বেশি বিলাসী জীবন যাপন করবেন না, গাড়ি হবে না, বাড়ি হবে না, তিনি যা আছেন, তা-ই থাকবেন।

এর আগে বিকেলে তিনি শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে কলাপাড়া পৌর শহরে শোডাউন দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত