Ajker Patrika

দুদকের মামলার আসামি তাঁরা, লেগেছেন শরীফের পিছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২২, ২১: ১৫
দুদকের মামলার আসামি তাঁরা, লেগেছেন শরীফের পিছে

গ্যাস জালিয়াতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তারাই সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এসব মামলা মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক বলে দাবি করে তাঁরা দুষলেন দুদকের বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনকে। এদিকে সংবাদ সম্মেলনটি শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে হলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি মূলত দুদকের বিরুদ্ধেই। কারণ দুদকের কোনো কর্মকর্তা কমিশনের অনুমোদন ছাড়া মামলার সুপারিশ করতে পারে না।

আজ বুধবার (১৬ নভেম্বর) প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে দেড় বছর পর হঠাৎ সংবাদ সম্মেলন করেন গ্যাস জালিয়াতিতে অভিযুক্ত ও দুদকের মামলার আসামি কর্ণফুলী গ্যাসের সদ্য সাবেক প্রকৌশলী সারোয়ার হোসেন, একই মামলার আসামি দিদারুল আলম, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলার আসামি আরএফ বিল্ডার্সের মালিক হাজী দেলোয়ার হোসেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার বাদী ছিলেন দুদকের শরীফ উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে সারোয়ার হোসেন দাবি করেন, শরীফের এক আত্মীয়ের বাসায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন। শরীফ কয়েকজন আত্মীয়কেও প্রভাব খাঁটিয়ে কেজিডিসিএলে চাকরি দেন বলে দাবি করেন তিনি।

অথচ ২০২১ সালে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ প্রদান করায় সাবেক প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলামের (বিএসসি) বড় ছেলে আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য মো. মুজিবুর রহমান, কর্ণফুলী গ্যাসের মো. সারওয়ার হোসেন, সাবেক ব্যবস্থাপক মো. মজিবুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সার্ভেয়ার মো. দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন শরীফ উদ্দিন। এই মামলায় সারওয়ার, মজিবুর ও দিদারুলকে গ্রেপ্তার করে দুদক। পরে কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ অবৈধ এসব সংযোগ বিচ্ছিন্নও করে।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘আমার কোনো আত্মীয়ের পক্ষ নিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে তদবির করিনি। এটি পুরো মিথ্যা। সারোয়ার সাহেব অবৈধ গ্যাস অনুমোদন দেওয়ায় মামলা করেছিলাম। যার প্রমাণ প্রতিষ্ঠানটি পেয়ে ওই সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আখতার কবির চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিচারাধীন মামলার অভিযুক্তরা কোনোভাবেই সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন না। দুর্নীতিবাজরা-তো পারেনও না। তাদের কী রকম সাহস বা তাদের হাত কত লম্বা হলে দুদকের বিরুদ্ধেই সংবাদ সম্মেলন করল। এই থেকে বোঝা যায়, দুদকের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে।’

আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনটি যারা করেছে তারা সবাই দুদকের মামলার আসামি। কেউ কেউ জেলও খেটেছেন। তারা সাবেক একজন দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করলেও, মূলত এটি দুদকের বিরুদ্ধেই। দুদকের উচিত এখনই অ্যাকশন নেওয়া।’

সংবাদ সম্মেলনটি শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে হলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি মূলত দুদকের বিরুদ্ধেই।আরএফ বিল্ডার্সের মালিক হাজী দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, মাত্র দুটি দোকান না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়।

বিষয়টিকে ‘একেবারেই হাস্যকর’ বলছেন দুদকের শরীফ। দুদকের অনুসন্ধানে শত কোটি টাকা লুটপাটের চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে হাজী দেলোয়ার হোসেন বিরুদ্ধে। দুদকের তথ্য মতে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে তিনি দুদকের মামলায়ও জেল খাটেন। তবে তাঁর বিভিন্ন ‘স্বপ্নফাঁদ’ প্রকল্পে বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত পাননি শত শত গ্রাহক।

দুদকের তথ্য মতে আরও জানা যায়, ওয়েসিস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড ৩৮ হাজার ৯৮০ জন শেয়ার হোল্ডার থেকে ৫৫৭ কোটি টাকা হাতানোর টার্গেট নিয়ে সাব কবলায় ফ্ল্যাট বিক্রি শুরু করে ২০১২ সালে। চড়কদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে ফেলে সারা দেশের গ্রাহকদের স্বপ্ন দেখিয়ে অন্তত শতকোটি টাকা লুটপাট করার পরে সেই প্রতিষ্ঠানটিই গায়েব করে ফেলার অভিযোগ রয়েছে।

নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আবুল খায়ের নামের একজন গ্রাহক ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর (আইডি- ২২৯ ই) ২৯০ স্কয়ার ফিটের রুম বুকিং দিয়ে ১৬ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধ করেছেন ২০১৪ সাল পর্যন্ত। হুমায়ুন কবীর নামের আরেকজন গ্রাহক একই বছরের ১১ জুন ৩০৫ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট বুকিং দিয়েছিলেন (৫২০ ই-২); বিনিময়ে ২০১৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পরিশোধ করেছেন ৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৮৫ টাকা। ফারহানা চৌধুরী লুসি ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর (১২১৮ এফ) ২৪৫ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাটের জন্য ১০ লাখ ৫৮ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। কিন্তু এখনো তাঁরা কোনো কিছু পাননি।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে হাজী দেলোয়ার বলেন, ‘আমি বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়ে আমার স্ত্রীর নামে জায়গা বা সম্পদ কিনেছি। এটি আমার অপরাধ। দোকান না দেওয়ায় আমি, আমার স্ত্রী ও সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করে শরীফ।’

অভিযোগের বিষয়ে শরীফ উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ একেবারে মনগড়া। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা চলছে ঢাকায়। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। তবে, আমাকে যখন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তখন টাকা নিয়ে দোকান বা ফ্ল্যাট তাঁরা বুঝিয়ে দিতেন না বলে শত শত গ্রাহক অভিযোগ করেছিলেন।’

এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভৈরবে গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুন, ১০ শিশুসহ দগ্ধ ১৫

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ও ভৈরব সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ১০ শিশুসহ ১৫ জন দগ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া চরপাড়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দগ্ধদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১২ জনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোকান মালিক, লুন্দিয়া টুকচানপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির মিয়া পুরি ও রুটি ভাজি বিক্রি শেষে সকালে ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাড়ি যান। তিনি ভুলে গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ বন্ধ করেননি। দীর্ঘ সময় ধরে দোকানের ভেতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। পরে এক পর্যায়ে গ্যাসের বিস্ফোরণে দোকানে আগুন ধরে যায়। এসময় দোকানের সামনে থাকা পথচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দগ্ধ হন।

আহতরা হলেন—হারুন মিয়া (৪০), সোহাগ মিয়া (১০), ওয়াসিবুল (১০), সামিউল (৯), আল আমিন (৮), শুভ (৮), নিরব (১৫), রাহাত (১২), ফাহিম (১০), আমিন (১০), হেকিম মিয়া (৫৫), সেরাজুল (১০), ছিদ্দিক মিয়া (৫৮), মোর্শিদ মিয়া (৫০) ও নাছির মিয়া (৪০)।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, আহতদের মধ্যে হারুন মিয়ার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তাঁর অবস্থা সংকটজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ রাস্তার ওপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চোখের সামনে কয়েকজন মানুষ আগুনে পুড়তে দেখি। পরে জানতে পারি গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন ছড়িয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী হাসপাতালে আসে। একজনের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং অন্যদের ২০–৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যুবকের

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি 
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার একটি গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামির নাম দুলাল মিয়া (২৮)। তিনি ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক আশরাফুল আলম আসামির জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামির জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ জানান, গত মঙ্গলবার রাতে দুলাল মিয়া আট বছরের ওই শিশুকে ঘর থেকে ডেকে নেন। এরপর তাকে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করেন দুলাল।

মাকছুদ আহাম্মদ জানান, এদিকে ওই রাতেই শিশুকে না পেয়ে তার পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সে সময় সন্ধান চেয়ে মাইকে প্রচারও করা হয়। তখন দুলাল মিয়াও শিশুটির বাবার সঙ্গে খোঁজাখুঁজিতে যোগ দেন। পরদিন গত বুধবার সকালে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত একটি ঘর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দুলাল মিয়া ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় দুলাল মিয়ার আচরণে আমাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আল সরকারের সঙ্গে কথা হয়। পরে বুধবার রাতে শিশুটির বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। মামলার পরই দ্রুত তদন্ত শুরু করে ঘটনাস্থলসংলগ্ন বিভিন্ন আলামত পর্যালোচনা শেষে ওই রাতেই দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামলা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হয়েছে। পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন ও অভিযুক্তদের খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ শুক্রবার সকালে চাটমোহর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মামলার ১ নম্বর বিবাদী, ছাইকোলা ইউনিয়নের কুবড়াগাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন।

জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে কুবড়াগাড়ি গ্রামের আব্দুর রহিম (৬৫) নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তাঁকে ঘর থেকে বাইরে ডেকে শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে দেয়। এতে তিনি দগ্ধ হন। প্রথমে তাঁকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আব্দুর রহিমের ভাই আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে প্রতিবেশী সাতজনকে বিবাদী করে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। মামলার ছয়জন জামিন পেলেও ১ নম্বর বিবাদী শফিকুল ইসলাম এখনো কারাগারে।

সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া খাতুন দাবি করেন, ঘটনার দিন ওই সময়ে তাঁর স্বামী চাটমোহরে ছিলেন না। তাঁরা দুজনই সেদিন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ছিলেন, যেখানে তাঁরা ফুটপাতে বিরিয়ানি বিক্রি করেন। তা সত্ত্বেও তাঁর স্বামীকে মামলার ১ নম্বর বিবাদী করা হয়েছে। এ ছাড়া শফিকুলের পিতা শহিদ সরদারসহ আরও দুই ভাইকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।

সুমাইয়ার ভাষ্য, ‘আমার স্বামী গ্রামে থাকেন না। আমরা তিন সন্তান নিয়ে হাটহাজারীতেই থাকি। প্রতিপক্ষ আমাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করেছে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করা হয়নি। আমরা অন্যায়ের শিকার।’ তিনি অভিযোগ করেন, মামলার তদন্তে গাফিলতি থাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার। তিন সন্তানসহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মামলাটি পুনঃতদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে শফিকুল ইসলামের পিতা শহিদ সরদার, তাঁর মা ও অন্যান্য স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশানে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেপ্তার ১

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব

রাজধানীর গুলশানে মদের চালানসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম (২১) নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভিটি গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. রাকিব হাসান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গুলশানে অভিযান চালিয়ে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যানসহ রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত