Ajker Patrika

আনোয়ারায় নিখোঁজের ৯ দিন পর খালে মিলল বৃদ্ধের লাশ

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আবু সৈয়দ। ছবি: সংগৃহীত
আবু সৈয়দ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় নিখোঁজের ৯ দিন পর ইছামতী নদীর খাল থেকে আবু সৈয়দ (৬৮) নামের এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় উপজেলার খাদ্যগুদামের পাশের ইছামতী খাল থেকে লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত আবু সৈয়দ উপজেলার হাইলধর ইউনিয়নের পীরখাইন গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক চৌকিদারের বাড়ির মালেকুজ্জামানের ছেলে। তিনি আনোয়ারা থানাধীন সদর এলাকার কেজি ভবনে ভাড়া বাসায় থাকতেন। গত মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘর থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফেরেননি এই বৃদ্ধ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার ভোরে খালে একটি লাশ ভাসতে দেখেন মিলু আকতার নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা। খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়। পরে বিষয়টি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হলে আনোয়ারা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে তাঁর পরিবারের সদস্যরা লাশটি আবু সৈয়দের বলে শনাক্ত করেন।

স্বজনদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন আবু সৈয়দ। কয়েক মাস আগে ব্রেন স্ট্রোক করে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছিলেন।

নিহত ব্যক্তির ছেলে হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘৯ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে আমার বাবা আনোয়ারা থানাধীন ভাড়া বাসা থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফেরেননি। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাইনি। পরে আমার মা আনোয়ারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বাবার পরনে লুঙ্গি ও গলার তাবিজ দেখে লাশ শনাক্ত করতে পেরেছি।’

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুনায়েদ চৌধুরী বলেন, খাল থেকে লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঠাকুরগাঁওয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূর নাম মোছা. স্বপ্না আক্তার সাথী (২১)। তিনি পঞ্চগড় জেলার বাসিন্দা মোছা. কহিনুর বেগমের মেয়ে।

ছয়-সাত মাস আগে ঠাকুরগাঁওয়ের জগদল বাজার এলাকার মো. সাবু ইসলামের ছেলে মো. লিয়নের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর দম্পতি শান্তিনগর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন।

নিহত ব্যক্তির মা কহিনুর বেগম জানান, দাম্পত্য জীবনে পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই কলহ হতো। এসব বিষয় তাঁর মেয়ে নিয়মিত তাঁকে ফোনে জানাতেন। ঘটনার দিন তিনি একাধিকবার মেয়েকে ফোন করলেও সাড়া পাননি। পরে জানতে পারেন, তাঁর মেয়ে ঘরের বারান্দায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

খবর পেয়ে তিনি দ্রুত মেয়ের ভাড়া বাসায় এসে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ দেখতে পান। এরপর বিষয়টি আত্মীয়স্বজনকে জানিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় খবর দেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানা গেছে, ঘটনার সময় বাসায় কেউ উপস্থিত ছিলেন না। পাশের বাসার এক নারী প্রথম ঘটনাটি লক্ষ করেন।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতের পিঠায় জীবনের ভার টানছেন মা-মেয়ে

গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
পিঠা তৈরি করছেন সাজেদা বেগম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিঠা তৈরি করছেন সাজেদা বেগম। ছবি: আজকের পত্রিকা

৬০ বছরের সাজেদা বেগম ও তাঁর ৪০ বছর বয়সী মেয়ে সোনাভান—দুজনই স্বামী পরিত্যক্তা। জীবনের প্রয়োজনে নিরুপায় হয়ে তাঁরা বেছে নিয়েছেন পিঠা বিক্রির পেশা। শীতের পিঠা বিক্রি করে চলছে মা-মেয়ের সংসার।

নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের আনন্দনগর মহল্লার বাসিন্দা এই মা-মেয়ে। মহল্লার মোড়ে বসে তাঁদের ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। পথচারীসহ নানা বয়সী মানুষ এখানে পিঠা কিনলেও শিশুদের ভিড় বেশি।

সাজেদা বেগম জানান, একসময় তাঁর সুখের সংসার ছিল। তবে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ছেলেসন্তানের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় অশান্তি শুরু হয়। মেয়ে সোনাভানের জন্মের এক বছরের মধ্যেই স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর শিশুসন্তানকে নিয়ে তিনি চরম সংকটে পড়েন। অন্যের বাড়ি ও খেতখামারে কাজ করে মেয়েকে বড় করেছেন।

কিন্তু সোনাভানের সংসারও বেশি দিন টেকেনি। যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় তাঁর সংসার ভেঙে যায়। শেষ পর্যন্ত জীবন-জীবিকার তাগিদে মা-মেয়ে দুজনই পিঠা বিক্রির পেশায় নামেন। শীতের মৌসুমের প্রায় চার মাস এই পিঠা বিক্রির আয়ে তাঁদের সংসার চলে।

সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, মহল্লার মোড়ে সাজেদার চুলা জ্বলছে। চুলায় বসানো হাঁড়িতে গরম হচ্ছে পানি, আর সেই পানির ভাপে সেদ্ধ হচ্ছে ভাপা পিঠা। পাঁচ টাকায় প্রতিটি ভাপা পিঠা পেতে চুলার সামনে ভিড় করছে শিশুরা। কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে শীতের সকালে গরম পিঠার স্বাদ নিচ্ছে। আবার কেউ কেউ বাসার জন্য প্যাকেট করে নিয়ে যাচ্ছে।

সাজেদা জানান, ঢেঁকিছাঁটা চালের গুঁড়ার সঙ্গে খেজুরের গুড় মিশিয়ে গরম পানির ভাপে তৈরি হয় ভাপা পিঠা। আর চালের গুঁড়ার সঙ্গে পানি মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করে মাটির তাওয়ায় ঢাকনা দিয়ে নির্দিষ্ট সময় রাখলেই তৈরি হয় চিতই পিঠা। চিতই পিঠার সঙ্গে ধনেপাতা, কালিজিরা, সরিষা বাটা, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি ভর্তা দেওয়া হয়, যা পিঠার স্বাদ বাড়িয়ে দেয়।

তিনি জানান, প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ কেজি চালের গুঁড়ার পিঠা তৈরি করেন। চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড়, জ্বালানি ও অন্যান্য উপকরণ বাবদ দৈনিক খরচ পড়ে প্রায় ৮০০ টাকা। গড়ে প্রতিদিন বিক্রি হয় দেড় হাজার টাকার পিঠা। খরচ বাদে লাভ থাকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এতে মোটামুটি ভালোভাবেই সংসার চলছে। এ কাজে মেয়ে সোনাভান সব সময় সহযোগিতা করেন।

পিঠা খেতে আসা যুবক মুন্না বলেন, ‘বাড়িতে সব সময় পিঠা বানানো সম্ভব হয় না। তাই মাঝেমধ্যে এখান থেকে পিঠা খাই। নিজে খাই, আবার পরিবারের জন্যও নিয়ে যাই। এখানে প্রতিটি পিঠা মাত্র পাঁচ টাকায় পাওয়া যায়।’

সাজেদা বেগমের মতো শীতের মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও সড়কের মোড়ে পিঠা তৈরি করে বাড়তি আয় করছেন অনেকে। অস্থায়ী এসব দোকানে সকাল ৬টা থেকে ৯টা এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি হয়। রস পিঠা, ঝাল পিঠা ও তেলে ভাজা পিঠা বিক্রি হলেও চিতই ও ভাপা পিঠার চাহিদাই সবচেয়ে বেশি।

খুবজীপুর এম হক কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বেলাল হোসেন বলেন, শীত ও পিঠা বাঙালির ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শীতের পিঠা বাঙালির অন্যতম প্রিয় খাবার। কর্মব্যস্ত মানুষের পক্ষে বাড়িতে পিঠা তৈরির সময় বের করা কঠিন। তাই পথের ধারের এসব পিঠার দোকানই অনেকের জন্য শীতের পিঠা উপভোগের সহজ ও উপযুক্ত স্থান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভিক্ষুকের টাকা ছিনতাই করার অভিযোগে একজন আটক

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
আটক ফারুক সরকার। ছবি: সংগৃহীত
আটক ফারুক সরকার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাসে ভিক্ষুকের টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে মো. ফারুক সরকার (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মঙ্গলকান্দি গ্রাম থেকে তাঁকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাঁকে তিতাস থানায় নিয়ে যায়। আটক ফারুক সরকার মঙ্গলকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল বারেক সরকারের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জগতপুর-মঙ্গলকান্দি ব্রিজের ওপরে ভিক্ষুক আমির হোসেন (৭০) ও তাঁর স্ত্রী সেলিনা আক্তারের (৫৫) পথরোধ করে তাঁদের সারা দিনের উপার্জিত ৯০০ টাকা ছিনতাই হয়। বিষয়টি ভিক্ষুক দম্পতি এলাকাবাসীকে জানান।

ভিক্ষুক আমির হোসেন বলেন, ‘আমাদের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার আমিরাবাদ গ্রামে। আমরা স্বামী-স্ত্রী তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি টেগুরা পাড়া আলি মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকি। মঙ্গলবার দুপুরে মঙ্গলকান্দি হয়ে জগতপুর যাওয়ার পথে ব্রিজে উঠলে তারা কয়েকজন আমাদের আটক করে এবং আমাদের সঙ্গে থাকা ৯০০ টাকা রেখে দেয়। অনেক কান্নাকাটি করেছি তবু টাকাগুলো দেয় নাই। তারা বলে ভিক্ষুকের টাকা না খাইলে বড়লোক হওয়া যায় না, তাই নিয়ে নিলাম।’

এদিকে আটক ফারুক তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তবে আমি জগতপুর থেকে আসার পথে ব্রিজের ওপর তাদেরকে দেখেছি এবং ছিনতাইকারীদেরকে চিনি।’

তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ভিক্ষুকের টাকা ছিনিয়ে নেওয়ায় ফারুক নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। এ ব্যাপারে যাচাই-বাছাই চলছে। ফারক বর্তমানে থানা হেফাজতে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীর লালবাগে প্লাস্টিক গুদামে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১০ ইউনিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ০৪
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

পুরান ঢাকার লালবাগে প্লাস্টিকের একটি গুদামে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট কাজ করছে।

আজ বুধবার বেলা দেড়টার দিকে লালবাগে ইসলামবাগের চেয়ারম্যানঘাটের ওই গুদামে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।

দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রোজিনা আক্তার বলেন, ইসলামবাগের চেয়ারম্যানঘাট এলাকায় প্লাস্টিকের একটি গুদামে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে লালবাগ, হাজারীবাগ ও পলাশী ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি করে মোট ৬টি ইউনিট পাঠানো হয়।

পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশন থেকে আরও ৩টি ইউনিট যাচ্ছে বলে জানান তিনি।‎

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও জানান, আগুনের উৎপত্তি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত