Ajker Patrika

প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ঠিকাদারকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা বিএনপি নেতা-কর্মীদের

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ১৩: ০৬
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঠিকাদারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের অগ্নিসংযোগ। ছবি: আজকের পত্রিকা
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঠিকাদারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের অগ্নিসংযোগ। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্থানীয় এক ঠিকাদারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও কার্যালয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁরা সেখানে ভাঙচুর ও ঠিকাদারকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন। এ সময় রামদার কোপে ১০-১২ জন আহত হন।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ধানখালী ইউনিয়নের মরিচবুনিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। সেখানকার বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (আরএনপিএল) কয়লা খালাসের জেটিঘাটে শ্রমিক সরবরাহ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঠিকাদার শাহীন মৃধার প্রতিষ্ঠানে এই হামলা হয়। শাহীন বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে শ্রমিকসহ বিভিন্ন মালামাল সরবরাহের কাজে যুক্ত।

হামলাকারীদের রামদার কোপে স্থানীয় বাসিন্দা দোলন মৃধা, মিরাজ হোসেন, শাহীনের গাড়িচালক রানাসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হন। তাঁরা পাশের উপজেলা আমতলীতে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, হামলায় নেতৃত্ব দেন কলাপাড়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান কাজল তালুকদার। উপস্থিত ছিলেন ধানখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ তালুকদার, বিএনপি নেতা বশির মৃধা, হানিফ মেম্বারসহ তাঁদের অনুসারীরা। হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মহসিনকে দায়ী করছেন শাহীন ও তাঁর পরিবার।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শতাধিক মোটরসাইকেলে করে অস্ত্রসহ মরিচবুনিয়া এলাকায় যান কামরুজ্জামানসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা শাহীনের শ্রমিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়, তাঁর আবাসগৃহ ও শ্রমিকদের বসবাসের ছাউনি রয়েছে। হামলাকারীরা এগুলো ভাঙচুর করেন। এ সময় কয়েকজন শাহীনকে তাঁর ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেন। তিনি ঘরের কোণের একটি টিন খুলে বের হয়ে আত্মরক্ষা করেন। তবে আগুনে ঘরে থাকা দুটি এসি, টিভি, ১০টি সিসি ক্যামেরা, দুটি ফ্রিজ, খাট, তিনটি সোফা সেটসহ অন্যান্য আসবাব ও ডাম্পট্রাক পুড়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগুনের খবর পেয়ে কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট রওনা হলে পথে ছয় লেন সড়ক এলাকায় গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। শেষে সেনাবাহিনীর একটি দল ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

শাহীন অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার ইন্দনে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসীরা লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ দলবল নিয়ে এসে আমার কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। একপর্যায়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ভস্মীভূত করেছে। এমনকি আমার ব্যক্তিগত গাড়িটিও ভাঙচুর করেছে। আমাকে তালাবদ্ধ করে হামলাকারী চক্র আগুন লাগিয়ে দেয়। আমি বের হতে না পারলে পুড়ে ছাই হয়ে যেতাম। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছে। এমন জাহেলি কাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার চাই।’ হামলায় কয়েক কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন শাহীন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা শাহীনের ভাই রুবেল মৃধা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা মোশাররফ মিয়া পরিকল্পিতভাবে আজকে তাঁর লোকজন দিয়ে আমার ভাইকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছেন। কাজল তালুকদার মোটরসাইকেলবহর নিয়ে হামলা চালিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফিরোজ তালুকদার, হানিফ মেম্বার, বশির মৃধাসহ স্থানীয় ছাত্রদল ও বিএনপির নেতারা। আমরা বিএনপি পরিবারের সন্তান, কিন্তু তিনি আজকে যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা আওয়ামী লীগের সময়েও হয়নি।’

রুবেল আরও বলেন, ‘কয়লার ঘাট থেকে মোশাররফ মিয়াকে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দিতাম। মহসিনের (স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা) ভাগনে লিওনকে দিয়ে তিনি টাকা নিতেন। ঢাকায় গিয়েও দিয়ে আসতাম। জাহাজ আসলেই তাঁকে টাকা দেওয়া লাগবে। এখন তিনি মহসিনের নামে ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) বানিয়ে আমাদের সরিয়ে দিতে চান। আজকের ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

হামলা ও অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
হামলা ও অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানতে চাইলে মহসিন বলেন, ‘আসলে শাহীন মৃধা আওয়ামী লীগের লোক। তার সঙ্গে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের সুসম্পর্ক ছিল। সে নিজে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। এলাকার মানুষজন এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে সব সময় অভিযোগ করে আসছে। তা ছাড়া আমি আরএনপিএল নামের নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে মালামাল সরবরাহ করার জন্য কার্যাদেশ পেয়েছি। এতে শাহীন মৃধা ক্ষুব্ধ হয়ে আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। এমনকি আমার শ্রমিকদের মালামাল সরবরাহে বাধা দিয়েছে। এসব নিয়ে শাহীন মৃধার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগও দিয়েছি।’

হামলার বিষয়ে মহসিন বলেন, ‘আমি এলাকায় থাকি না, ঢাকায় বসবাস করি। এখন ওই এলাকায় যে ঘটনা ঘটেছে, এর সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা আমি জানি না। আমাকে নিয়ে কোনো কথা বলে থাকলে তা উদ্দেশ্যমূলক। আমি এর সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই।’

একই দাবি করে বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি শাহীন মৃধার নিজের ওয়ার্ক অর্ডার নেই। আর এ বিষয়ে (হামলা) আমি কিছু জানি না। তবে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।’

এদিকে হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এ বিষয়ে অবগত নই। আমি সেখানে যাইনি।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটির পাশের স্থাপনায় চিহ্নিত একদল সন্ত্রাসী হামলা, তাণ্ডব, নাশকতা চালায়। বর্তমানে সেখানকার আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভালুকায় সহকর্মীর গুলিতে আনসার সদস্য নিহত, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বজেন্দ্র দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বজেন্দ্র দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক কারখানায় সহকর্মীর গুলিতে বজেন্দ্র বিশ্বাস (৪০) নামের এক আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত ৭টায় উপজেলার মেহরাবাড়ি এলাকায় লাবিব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সহকর্মী আনসার সদস্য নোমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত আনসার সদস্য বজেন্দ্র বিশ্বাস সিলেট সদর উপজেলার কাদিরপুর গ্রামের প্রবিত্র বিশ্বাসের ছেলে। অভিযুক্ত নোমান মিয়া সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর থানার বালুটুরি বাজার এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে। দুজনই সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেড কারখানায় কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কারখানাটিতে ২০ জন আনসার সদস্য কর্মরত ছিলেন। ঘটনার সময় আনসার সদস্য নোমান মিয়া ও বজেন্দ্র দাস একসঙ্গে বসেছিলেন। এ সময় অসাবধানতাবশত নোমান মিয়ার হাতে থাকা শটগান থেকে গুলি বের হলে বজেন্দ্র দাসের বাঁ ঊরুতে গুলি লাগে এবং তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্ত নোমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নড়াইলে দুটি আসনে ২৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

নড়াইল প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৪
নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ড. এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ মনোনয়নপত্র জমা দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ড. এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ মনোনয়নপত্র জমা দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নড়াইলের দুটি সংসদীয় আসনে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয় পার্টি, স্বতন্ত্রসহ মোট ২৪ জন প্রার্থী গতকাল সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ডক্টর মোহাম্মদ আবদুল ছালাম জানান, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২৪ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে নড়াইল-১ আসনে ১৫ জন প্রার্থী এবং নড়াইল-২ আসনে ৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নড়াইল-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে মাওলানা মো. ওবায়দুল্লাহ কায়সার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে মাওলানা আব্দুল আজিজ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মিলটন মোল্যা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এস এম সাজ্জাদ হোসেন, সুকেশ সাহা আনন্দসহ ১৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ড. এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আতাউর রহমান বাচ্চু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা তাজুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ প্রার্থী হিসেবে নূর ইসলাম, জাতীয় পার্টির প্রার্থী খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনিরুল ইসলাম, ফরিদা ইয়াসমিনসহ ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আচরণবিধি মেনে প্রার্থীরা তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাইরে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় দেশীয় অস্ত্র, গুলি ও মাদকসহ গ্রেপ্তার ৫

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনায় দেশীয় অস্ত্র, গুলি ও মাদকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল সোমবার ভোরে নগরীর লবণচরা থানার মতিয়াখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তাঁরা পুলিশি হেফাজতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন লবণচরা থানার মতিয়াখালী এলাকার বাসিন্দা আবুল বাশারের ছেলে ইমন শরীফ, একই এলাকার বাসিন্দা আজিজুলের ছেলে সবুজ সাহা, সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার বাসিন্দা হাবিব হাওলাদারের ছেলে ফারুখ হোসেন, পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার কাউখালী এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলীর ছেলে শাহরিয়ার এবং জয়কুল এলাকার বাসিন্দা হারুনুর রশিদের ছেলে সজল খান।

জানতে চাইলে লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তুহিনুজ্জামান বলেন, মেজর মাসুকের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী শিপইয়ার্ড এলাকার মতিয়াখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে উল্লিখিত আসমিদের আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে শটগানের ৬টি গুলি, ২টি বিদেশি মদের বোতল, ২টি ধারলো ছুরি এবং ১১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধ মামলা দায়ের করে। আসামিরা শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তাঁদেরকে পুলিশি হেফাজতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হারিয়ে যাওয়া কনাই নদ উদ্ধার উদ্‌যাপন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
আবদুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ থেকে বাউনিয়া খাল পর্যন্ত ৩ দশমিক ১৮ কিলোমিটার খননের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার হওয়া কনাই নদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আবদুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ থেকে বাউনিয়া খাল পর্যন্ত ৩ দশমিক ১৮ কিলোমিটার খননের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার হওয়া কনাই নদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর হারিয়ে যাওয়া কনাই নদ উদ্ধার করে আবারও প্রবাহ ফিরিয়ে এনেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এ উপলক্ষে গতকাল সোমবার দুপুরে উত্তরায় ডিএনসিসি আয়োজন করে ‘হারিয়ে যাওয়া কনাই নদ উদ্ধার উদ্‌যাপন অনুষ্ঠান’।

অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘আমরা হারিয়ে যাওয়া কনাই নদ উদ্ধার করে দেখিয়ে দিয়েছি যে চাইলেই ঢাকার ভেতরে ওয়াটারওয়ে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’ তিনি বলেন, ডিএনসিসির পক্ষ থেকে কনাই নদ উদ্ধার করে নৌচলাচল উপযোগী ৯ কিলোমিটার নদে প্রবাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আগে ফিল্ড স্টাডি ও পরে উচ্ছেদ এবং পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।

উত্তরাবাসীর পক্ষে বক্তব্যে কাজী মোহাম্মদ ফেরদাউস ডিএনসিসির প্রশাসকের এই উদ্যোগকে প্রশংসনীয় উল্লেখ করে হারিয়ে যাওয়া কনাই নদের প্রবাহ ফিরিয়ে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।

পাউবোর বোর্ড সদস্য আমিনুর রসুল বলেন, নতুন করে ৯ কিলোমিটার নৌপথ যুক্ত হলো। এখন এটি রক্ষার দায়িত্ব এলাকাবাসীর।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, ‘আমরা থাইল্যান্ডে ফ্লোটিং মার্কেট দেখতে যাই, অথচ ঢাকার চারপাশের নদ-নদীগুলো উদ্ধার করে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুললে এর চেয়েও সুন্দর পর্যটন এলাকা তৈরি করা সম্ভব।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এ বি এম শামসুল আলমসহ ডিএনসিসির কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, ঢাকা গ্যাজেটিয়ার এবং ১৯৬০ সালের ঢাকা ম্যাপে রাজধানীর ভেতরে কনাই, নড়াই, দেবদোলাই, জিরানি প্রভৃতি নদ-নদীর অস্তিত্বের উল্লেখ থাকলেও সময়ের ব্যবধানে এসব নদী হারিয়ে যায়। ডিএনসিসির উদ্যোগে আবদুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ থেকে বাউনিয়া খাল পর্যন্ত ৩ দশমিক ১৮ কিলোমিটার নদ খনন কার্যক্রমের মাধ্যমে মোট ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ কনাই নদ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়দের কাছে নদটি ‘খিদির খাল’ নামে পরিচিত। কনাই নদ আবদুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ থেকে গড়ান চটবাড়ি হয়ে দ্বিগুণ খাল অতিক্রম করে তুরাগ নদে মিলিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত