Ajker Patrika

অন্তর্বর্তী সরকার

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অস্থিরতা

  • সরকারপ্রধানের সঙ্গে তাল-লয় ঠিক রেখে চলতে পারছে না মন্ত্রণালয়।
  • সুফিউর রহমানকে মন্ত্রণালয়ে নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ায় অসন্তুষ্ট পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
  • পররাষ্ট্রসচিব পদে যেকোনো সময় পরিবর্তনের আভাস।
সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা 
আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ১২: ১৫
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অস্থিরতা

সরকারপ্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বৈদেশিক সম্পর্কের নানা দিক সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝামেলা তৈরি হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর দপ্তর মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকারের ধরন এবং সরকারপ্রধানের কাজের যে বৈচিত্র্য ও গতি, তার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাল-লয় ঠিক রেখে চলতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে সর্বশেষ উদাহরণ, প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফর সামনে রেখে টোকিওতে আজ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরামর্শমূলক সভা (এফওসি) নিয়ে একের পর এক সিদ্ধান্তে বদল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় কদিন পরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বদলানোর আওয়াজ ওঠে। মুহাম্মদ ইউনূস অবশ্য বৈদেশিক সম্পর্কের নানা দিক দেখভাল করতে উচ্চপর্যায়ে নতুন নতুন মুখ যুক্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়েছেন। এর মধ্যেও কিছু ঝামেলা তৈরি হওয়ায় অবশেষে সরকার পররাষ্ট্রসচিব বদলানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

পররাষ্ট্রসচিব বদলানো হচ্ছে কি না—প্রশ্নটি গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকা থেকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমকে করা হলে তিনি নিরুত্তর থাকেন। সেদিনই একই প্রশ্ন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অন্য এক কর্মকর্তাকে করা হলে তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব বদলানোর কথা অনেক দিন থেকেই হচ্ছে।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে গত বছরের ৫ আগস্ট। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শপথ নেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক মো. তৌহিদ হোসেনকে। তৌহিদ হোসেন ২০০৬ সালের শেষ দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে ছিলেন। পরে তাঁকে পররাষ্ট্রসচিব করা হয়। পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১৯৮১ ব্যাচের এই কর্মকর্তা কূটনৈতিক পরিসরে ‘অ্যাক্সিডেন্টাল ফরেন সেক্রেটারি’ হিসেবে পরিচিত।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, তৌহিদ হোসেনের পছন্দেই পররাষ্ট্রসচিব করে চীন থেকে উড়িয়ে আনা হয় মো. জসীম উদ্দিনকে। তিনি তখন দেশটিতে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু নোবেল বিজয়ী ইউনূসের কাজের ধরন ও গতির সঙ্গে তাল মেলানোর ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুরু থেকেই পিছিয়ে পড়ে। দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের নানা ঝামেলা সামাল দেওয়ার পাশাপাশি ইউনূসের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক কাজে লাগানো হয়ে উঠছে না।

এমন পরিস্থিতিতে ড. ইউনূস নিজের আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত হিসেবে গত সেপ্টেম্বরের নিয়োগ দেন লুৎফে সিদ্দিকীকে। উপদেষ্টা পদমর্যাদায় নিয়োগ পাওয়া লুৎফে সিদ্দিকী বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা পেশাদারদের আন্তর্জাতিক সংস্থা সিএফএ ইনস্টিটিউটের অন্যতম সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক। একই ধারাবাহিকতায় গত নভেম্বরে রোহিঙ্গা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলিসংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে ড. খলিলুর রহমানকে নিয়োগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১৯৭৭ ব্যাচের কর্মকর্তা খলিলুর রহমান এর আগে কয়েক বছর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছিলেন। পরে তিনি লিয়েনে চলে যান জাতিসংঘের চাকরিতে। লুৎফে সিদ্দিকী ও খলিলুর রহমান উভয়েই বসেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে। এর বাইরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের নিয়োগ ও বদলি তদারকির দায়িত্ব অন্য দুই উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও মাহফুজ আলমকে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

কূটনৈতিক কয়েকটি সূত্র জানায়, এত সব নিয়োগ সত্ত্বেও বৈদেশিক সম্পর্কের নানা দিক ঠিকঠাক সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা অসংগতি দেখতে পান প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর কার্যালয়। গত মার্চের মাঝামাঝি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর, একই মাসের শেষ দিকে ইউনূসের চীন সফর ও এপ্রিলের শুরুতে ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের পাশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় অনেক অসংগতি বেশি করে চোখে পড়ে।

খলিলুর রহমানের অভিযোগ, রোহিঙ্গা বিষয়ে ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সফরের সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পাননি তিনি। অনেক ক্ষেত্রে পুরোনো তথ্য দেওয়া হয়েছে তাঁকে।

বিমসটেক সম্মেলনস্থলে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন কূটনীতিক বলেন, হাসিনার পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার ব্যাংকক সফরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ। কিন্তু এই সাক্ষাৎটাই হবে কি হবে না, এমন একটা অনিশ্চয়তা মাথায় নিয়ে গত ৩ এপ্রিল সেখানে নামে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। একই দিন ব্যাংককে নামা ভারতীয় প্রতিনিধিদলের গঠন থেকে বুঝতে পারার কথা ইউনূস ও মোদির সাক্ষাৎ হচ্ছে। অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগেও বিষয়টি হয়তো জানা যেত। ইউনূস এ বৈঠকের বিষয়ে বারবার জানতে চান। কিন্তু ভারতের তরফ থেকে ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় সরাসরি নিশ্চিত করার আগপর্যন্ত মোদি-ইউনূসের সাক্ষাতের বিষয়ে অন্ধকারে ছিল বাংলাদেশ।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় ব্যাংককে নৈশভোজের সময় বাংলাদেশ ও মোদির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে খলিলুর রহমানের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক কথা বলেন। অন্যদিকে, ইউনূসের দলে উপযুক্ত লোক না পেয়ে পরদিন দুপুরে মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় নোট নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় এমন একজন কূটনীতিককে, যিনি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে যুক্ত নন। আবার কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর ব্যক্তিগত সুনামের ক্ষেত্রেও ঘাটতি আছে।

ব্যাংকক থেকে ইউনূস ঢাকা ফিরে খলিলুর রহমানের পদবি বদলে দেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজকর্মে উপদেষ্টাকে সহায়তা করার জন্য গত ২০ এপ্রিল বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক কূটনীতিক সুফিউর রহমানকে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদার পাশাপাশি তাঁকে নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়। সুফিউর জেনেভায় জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি, সুইজারল্যান্ড ও মিয়ানমারে রাষ্ট্রদূত, অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কায় হাইকমিশনার ছিলেন।

খলিলুর রহমান ও তৌহিদ হোসেন উভয়েই চেয়েছেন সুফিউর রহমান প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বসবেন, দেখবেন রোহিঙ্গাসংক্রান্ত বিষয়াবলি। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় চেয়েছে, করিতকর্মা ও দক্ষ হিসেবে পরিচিত এই কূটনীতিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি আনতে মন্ত্রণালয়েই বসবেন।

সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, লুৎফে সিদ্দিকী ও খলিলুর রহমানের নিয়োগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের নিয়োগ ও বদলি তদারকির দায়িত্ব অন্য দুই উপদেষ্টাকে দেওয়ার বিষয়টি তৌহিদ হোসেন শুরু থেকেই ভালোভাবে নেননি। রোহিঙ্গা বিষয় দেখতে সুফিউরকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি একমত ছিলেন। কিন্তু নিয়োগের আদেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার উল্লেখ থাকায় বিগড়ে যান উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর জন্য একটি কক্ষ আছে। সুফিউরের নিয়োগের আদেশ জারি হওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাঁর বসার জন্য কক্ষটি প্রস্তুত করতে শুরু করেন। কিন্তু তৌহিদ হোসেনের ইঙ্গিতে জসীম উদ্দিনের নির্দেশে কক্ষ প্রস্তুত করার কাজ থেমে যায় বলে জানা যায়। সুফিউর গতকাল বুধবার পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ে যোগ দেননি।

নতুন সরকারের সময়কার কাজের ধরন, প্রয়োজনীয়তা ও মুহাম্মদ ইউনূসের গতির সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাল মেলাতে পারছে না, এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জসীম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে গত সপ্তাহে তাঁর কার্যালয়ে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অনেককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হয়। সেটাই করে যাচ্ছি।’

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাধারণভাবে গতিশীল মন্ত্রণালয় হিসেবে পরিচিত। অন্য অনেক মন্ত্রণালয়ের চেয়ে কাজে ভালো। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের সময় এসে এর কাজের গতি শ্লথ হয়ে যাওয়ার বড় কারণ তৌহিদ হোসেন ও জসীম উদ্দিন উভয়েরই ধীরে চলার নীতি। অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন কিংবা ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ফাইল পড়ে থাকছে। অনেক সভায় পররাষ্ট্রসচিবেরই যোগ দেওয়া প্রয়োজন থাকলেও তিনি সভাগুলো এড়িয়ে চলছেন, অন্য কাউকে পাঠাচ্ছেন। সব মিলিয়ে সরকারের কাজকর্মে বেশ ঝামেলা হচ্ছে। ঢাকায় বিদেশি মিশন ও বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোর কাজেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ঘোলাটে পরিস্থিতির মধ্যে দক্ষ হিসেবে সুনাম নেই, এমন অনেকে পদপদবি বাগিয়ে নেওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন। এমন অবস্থায় পররাষ্ট্রসচিবকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি অনেক দিন ধরে বিবেচনায় রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এ মাসের শেষ দিকে জাপান সফরে যাবেন। ৩০ মে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক আছে। এর আগে আজ ১৫ মে টোকিওতে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্বনির্ধারিত পরামর্শমূলক সভা (এফওসি) হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় প্রধান উপদেষ্টার সফরের প্রস্তুতি নিয়েও আলাপ হওয়ার কথা। নিয়ম অনুযায়ী, পররাষ্ট্রসচিব এ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চলমান পরিস্থিতির কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ সভায় পররাষ্ট্রসচিবের পরিবর্তে সচিব পর্যায়ের অন্য কোনো কর্মকর্তাকে দলনেতা করার ইঙ্গিত দেওয়া হলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রসচিব জাপানের সঙ্গে পরামর্শমূলক সভাটিই স্থগিত করে দেন। সভা স্থগিতের বিষয়টি ঢাকায় দেশটির দূতাবাসকে কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে গত সোমবার জানিয়ে দেয় মন্ত্রণালয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ওই দিনই সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে লুৎফে সিদ্দিকীকেই টোকিওতে পাঠানো হবে। এ অবস্থায় এফওসি ঠিক রাখতে তৎপর হন ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত শিন-ইচি সাইদা। অবশেষে মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) ড. নজরুল ইসলামকে দলনেতা করে টোকিওতে প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়েছে। এফওসি স্থগিত না করে এ সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া যেত, এমনটা মনে করছেন কূটনীতিকেরা।

এফওসি বাতিলের বিশেষ কোনো কারণ আছে কি না, আজকের পত্রিকা থেকে সোমবার রাতে হোয়াটসঅ্যাপে জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্রসচিব নিরুত্তর থাকেন।

সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে বিদায় নিতে হবে, সরকারের এ নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা জেনে জসীম উদ্দিন তাঁর সম্মানজনক প্রস্থান নিশ্চিত করার জন্য পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন। নিয়মিত চাকরি শেষে আগামী বছর (২০২৬) ডিসেম্বরে তাঁর অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, জসীম উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা কানাডায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে যেতে চেয়েছেন। কিন্তু অসুবিধা হলো এই দুই দেশেই নতুন মিশনপ্রধান হিসেবে মাত্র কয়েক মাস আগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে আসাদ আলম সিয়াম ও নাহিদা সোবহানকে। এমন অবস্থায় বিদায়ী পররাষ্ট্রসচিবের জন্য আর কী বিকল্প হতে পারে, তা দেখা হচ্ছে। তৌহিদ হোসেন জার্মানি সফরে আছেন, তিনি ফেরার পর পররাষ্ট্রসচিবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতে পারে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যালটের নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন এসপিরা

  • দেশের নবজন্মে ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন এসপিরা: প্রধান উপদেষ্টা
  • সবাইকে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহিত করতে আইজিপির পরামর্শ।
শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ০৫
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। ছবি: পিআইডি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।

রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।

আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।

বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’

এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’

অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।

গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’

পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।

সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’

বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।

বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।

পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।

কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।

আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জিয়া পরিবারের আর কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবে না: রিজওয়ানা হাসান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫২
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।  ফাইল ছবি
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ফাইল ছবি

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।

বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোস্টাল ভোট গণনায় সংশোধনী ও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।

উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত