ইশতিয়াক হাসান

গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!

গল্পটা বেশ কয়েক বছর আগের। দুই বন্ধুসহ মৌলভীবাজারের জুড়ি থেকে যাচ্ছিলাম লাঠিটিলার জঙ্গলের দিকে। পথের মাঝামাঝি আসতেই চা-বাগান ঘেরা আশ্চর্য সুন্দর এক জায়গায় আবিষ্কার করলাম নিজেদের। রাস্তা চলে গেছে সেতু হয়ে ছড়ার ওপর দিয়ে। সবুজ টিলায় চা-বাগান, সমতলের ধানি জমি, মাঝখানের এই রাস্তা—সব মিলিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ি সৌন্দর্যে। গাড়িটা ওখানে দাঁড় করাই। বেশ কতকটা সময় দাঁড়িয়ে থাকি জায়গাটিতে। বর্ষায় চা-বাগান এভাবেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আমাকে।
আজ ৪ জুন, জাতীয় চা দিবস। তৃতীয়বারের মতো চা দিবস হিসেবে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে দেশে। অবশ্য আন্তর্জাতিকভাবে চা দিবস হিসেবে পালিত হয় ২১ মে তারিখটা। তাই চা, চা-বাগান ও বাগান এলাকায় একসময় ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণীদের গল্প বলব আজ। এক কাপ চা হাতে যোগ দিতে পারেন চাইলে আমাদের সঙ্গে।
আবার চা-বাগানের রাজ্যে প্রবেশের আগে চা নিয়ে কয়েকটি তথ্য দিয়ে নিই। কিংবদন্তি অনুসারে চা প্রথম আবিষ্কার করেন চীনা সম্রাট শেন নাং, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে। ওই সময় তাঁর গরম পানির পাত্রে বুনো গাছের কিছু পাতা পড়ে, তিনি যেটি পান করলেন সেটাই চা।
পৃথিবীতে কত জাতের চা আছে শুনলে চমকে উঠবেন। সংখ্যাটা আনুমানিক ৩০০০। পানিকে বাদ দিলে এটি হলো পৃথিবীতে বেশি পান করা পানীয়। ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, হোয়াইট টি, ওলং টি—সব ধরনের চা আসে ক্যামেলিয়া সিনেসিস নামের উদ্ভিদ থেকে। তাদের স্বাদ, চেহারা আর গন্ধে ভিন্নতার কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা।
চা-বাগানের প্রথম স্মৃতিটা কিন্তু আমার চা-রাজ্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে নয়। নয় সিলেটেও! বরং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। তখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। জিপে করে ঘুরেছিলাম ফটিকছড়ির এক চা-বাগানে। তখন বাগানটার কাজ শেষ হয়নি, বড় অংশ নিয়েই জঙ্গল। মুগ্ধ চোখে চা-বাগান দেখার ফাঁকে টি স্টেটের ম্যানেজারের কথা গিলছিলাম। বলছিলেন জঙ্গল সাফ করে বাগান করা হয়েছে। এখনো মায়া হরিণ, ভালুক এমনকি সাম্বারও আছে এই চা-গাছের রাজ্যে। এই কথা শোনার পর চা-গাছের চেয়ে আশপাশের জঙ্গলের দিকেই আমার নজর ছিল বেশি। আহ! একটা ভালুক কিংবা সাম্বারের দেখা যদি পেয়ে যেতাম!
আমাদের দেশের অনেক চা-বাগানই তৈরি হয়েছে পাহাড়ের মাঝে, জঙ্গল সাফ করে। আবার চা-বাগান লগোয়া জঙ্গলও আগে ছিল অনেক বেশি। কোনো কোনো চা-বাগানের নিজস্ব জঙ্গলের কথাও শুনেছি। একসময় চা-বাগানগুলো তাই ছিল চিতা বাঘসহ নানা বুনো প্রাণের আড্ডাখানা।
আবারও বেশ অনেকগুলো বছর পেছনে চলে যাই। লক্কড়ঝক্কড় এক বাসে চেপে রওনা দিয়েছি। হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ার কাছাকাছি ভূপ্রকৃতি বদলে গেল, রাস্তার দুই পাশে গাছপালা, ছোট ছোট টিলা। তার পরই ঢুকে পড়লাম আশ্চর্য সুন্দর এক চা-বাগান এলাকায়। সিজন না, তাই হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ছে বাগানে কাজ করা এক-দুজন মানুষ। ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। তবে বর্ষার মৌসুম না হওয়ায় পানি কম, কোথাও বালুর রাজ্য। বাগানের ভেতরে হঠাৎ হঠাৎ ঢুকে পড়েছে সরু পথ। চা-বাগানের এক নারী কর্মীকে হেঁটে যেতে দেখলাম। বাসে বসেই ইচ্ছা হচ্ছিল হারিয়ে যেতে সুদূরে, ওই মাটির পথ ধরে। পাশে বসা এক বুড়ো আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘এইডা সুরমা চা-বাগান। পাশেরটা সাতছড়ি চা-বাগান।’
চা-বাগানে ভ্রমণ থেকে বের হয়ে আবারও কিছু তথ্য দেওয়া যাক। এখন পৃথিবীর ৫০টির বেশি দেশে চা জন্মে। সবচেয়ে বয়স্ক গাছ আছে চীনে, বয়স প্রায় ৩ হাজার ২০০ বছর। পানীয় হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চা ব্যবহার হতো ওষুধ হিসেবে। চায়ের পাতা কিন্তু মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চা-পাতা শুকিয়ে পোড়ালে যে ধোঁয়া হয়, তা মশাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
চা-পাতা নিয়ে এবার একটা টিপস। চা-পাতা তার চারপাশের সৌরভ শোষণ করতে পারে। তাই রুম টেম্পারেচারে বায়ুশূন্য একটি পাত্রে চা-পাতা সংরক্ষণ করুন। না হলে আর্দ্রতা শোষণ করে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এবার বরং দেশ ছাড়িয়ে একটু ভিনদেশি চা-বাগানের রাজ্যে ভ্রমণ হয়ে যাক। দার্জিলিংয়ের হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। বছর কয়েক আগে যাওয়া হয়েছিল সুন্দর ওই চা-বাগানে। শুরুতেই চা-বাগানের রেস্তোরাঁয় মজা করে চা পান করেছিলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করি বাগানের মাঝখানের সরু, ঢালু পথ ধরে। সিলেট, চট্টগ্রামে চা-বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা-বাগানগুলোর একটি এটি। ওপর থেকে পাহাড়ের গায়ে বাগানগুলো দেখতে ভারি সুন্দর লাগছিল। এখানে প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কিছু চা-ঝাড় আছে। আমার মেয়ে ওয়াফিকা তো ভারি অবাক, অন্য দেশেও চা-বাগান থাকতে পারে কল্পনাও করেনি। বলল, ‘বাপি, ইন্ডিয়ায়ও চা-বাগান আছে!’
ভারতের বাইরে আর চা-বাগান ভ্রমণ হয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেটি ক্যামেরন হাইল্যান্ডের ‘ক্যামেরন ভ্যালি টি’। পাহাড়ের গায়ে সবুজ চা-বাগান, বাগানের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাওয়া ছড়া আর সবুজের মাঝখানে ছোট্ট এক বাংলো বাড়ি মিলিয়ে অসাধারণ লেগেছিল জায়গাটি। চাও পান করেছিলাম চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে। আরও আনন্দ পাই যখন জানতে পারি বাগানের দুই গার্ডের বাড়ি সিলেটে।
এবার মালয়েশিয়ার চা-বাগান থেকে চীনের চায়ের গল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চায়ের একটি চীনের ডা হাং পাও। এই ব্ল্যাক টির দাম একই ওজনের সোনার চেয়ে বেশ কয়েক গুণ। এক গ্রামের জন্য গুনতে হবে ১ হাজার ৪০০ ডলার। কারণ এই চা-পাতা যে গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো ৩০০ বছরের বেশি বয়সী, জন্মে দুর্গম পাহাড়ে। দামি চায়ের তালিকায় ওপরের দিকে থাকা আরেকটি চা পান্ডা ডাং টি। একে সিভেটের মল থেকে তৈরি বিখ্যাত কপি লুয়াক কফির ‘চা সংস্করণ’ বলতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি একটু ভিন্ন। এক্ষেত্রে চা-পাতার পুষ্টি বাড়াতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় পান্ডার মল। প্রতি পাউন্ড চা-পাতার দাম পড়বে ৩৫ হাজার পাউন্ড।
জঙ্গল-পাহাড় আমার ভারি পছন্দ। তেমনি টানে চা-বাগানও। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের নয়াপাড়া-সাতছড়ি, সিলেটের জাফলং, লালাখাল, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ির ফটিকছড়ি-মানিকছড়ি, রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কত চা-বাগানে যে ঘুরেছি। চা-বাগানে ঘুরতে গিয়ে এর রূপে মজে গিয়েও কখনো কখনো একটু বিষণ্ন তাও আঁকড়ে ধরে। আহহা, একটা সময় চা-বাগানগুলোয় চিতা বাঘেরা কী মহানন্দে ঘুরে বেড়াত! আসলে তখন চা-বাগানগুলো ঘেঁষেই ছিল গহিন অরণ্য। চিতা বাঘসহ নানা বন্যপ্রাণী বিচরণের জায়গা ছিল চা-বাগান।
এনায়েত মাওলার ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে মৌলভীবাজারের রত্না ও সাগরনাল চা-বাগান এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের রোমাঞ্চকর কাহিনির বর্ণনা মেলে। বাংলাদেশের চা-বাগান থেকে হলুদ-কালোর মিশেলের আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীরা কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? যদি মৌলভীবাজার, সিলেট কিংবা চট্টগ্রামের কোনো চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর সময় হঠাৎ একটা হাজির হয়ে যেত সামনে! কী মজাটাই না হতো!
বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা-বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও ভারতের অনেক চা-বাগানেই এদের নিয়মিত হাজির হতে দেখা যায়। বছর কয়েক আগে যেমন শুনলাম, দার্জিলিংয়ের ম্যালের মাত্র দুই মাইলের মধ্যে হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেটে চিতা বাঘ দেখা যাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী পর্যটকেরা। তেমনি ভারতের ডুয়ার্সের চা-বাগান রাজ্যেও আনাগোনা আছে চিতা বাঘেদের।
অন্তত পঞ্চাশ-ষাটটা চা-বাগানে পা পড়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের চা-বাগান বাছতে দিলে বিপদে পড়ব। তবে শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জে যাওয়ার লাউয়াছড়ার পথটা না ধরে চা-বাগান রাজ্যের নুরজাহান টি স্টেটের ভেতরের পথটা যদি ধরেন, মুগ্ধ হয়ে যাবেন সন্দেহ নেই। শ্রীমঙ্গলে গেলে ওই পথ দিয়ে একবার যাওয়া চাই আমার। লালাখাল চা-বাগানটার কথাও বড় বেশি মনে পড়ছে। তেমনি সিলেটের কানাইঘাটের লোভাছড়া চা-বাগান, মৌলভীবাজারের জুড়ির চা-বাগানগুলো কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। আবার সিলেটের খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার পথে দুই পাশে যে চায়ের রাজ্যকে রেখে যেতে হয়, সেগুলোরও জুড়ি মেলা ভার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত সিলেটের মালনীছড়া কিংবা তার কাছের লাক্কাতুরা চা-বাগানের কথাও বা কীভাবে ভুলি!
ভোর হয়েছে সাজেকের পাহাড়রাজ্যে। রিসোর্টের বারান্দাটা এমন, মনে হয় যেন পাহাড়ের ওপর ঝুলে আছে। ওখানে বসে বসে মিজোরামের পাহাড়রাজ্য দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম আমাদের কাসালং-সাজেক আর ওদিকে ডাম্পা টাইগার রিজার্ভসহ ভারতের মিজোরাম অংশ মিলিয়ে এখনো কি দুই-চারটি বাঘ টিকে আছে? হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। খুলতেই দেখলাম রিসোর্টে চাকরি করা মারমা তরুণ দাঁড়িয়ে, হাতে ধরা দুটো চায়ের কাপ। তারপর, হাতে কাপটা নিয়ে চলে এলাম বারান্দায়। মেঘের রাজ্যে গরম ধোঁয়া ওঠা চা পান করতে করতে বুঁদ হয়ে গেলাম রহস্যময় পাহাড়রাজ্য দর্শনে। আসলেই চা এমন এক পানীয়, যা আপনার শরীর-মন দুটিকেই চনমনে করে দেবে।
কী পাঠক, লেখাটি পড়ে চায়ের তৃষ্ণা পেয়ে বসেছে? একটু পরেই হয়তো আপনার হাতে থাকবে এক কাপ চা, আয়েশ করে চুমুক দিতে দিতে শুরু করবেন চা-বাগান ভ্রমণের পরিকল্পনা!

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
১১ ঘণ্টা আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৪ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৪ দিন আগে
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস।
৪ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৪ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৪ দিন আগে
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়েছে।
অক্সফোর্ড জানিয়েছে, চলতি বছর ‘রেজ বেইট’ শব্দের ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ এখন আগের চেয়ে দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যালগরিদম প্রভাবিত বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। ক্ষুদ্র কোনো বিষয়ও মুহূর্তের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ ও বিভাজন তৈরি করছে—যা মূলত এনগেজমেন্ট বাড়ানোর কৌশল।
‘রেজ বেইট’ সব সময় যে বিপজ্জনক হবে, এমন নয়। কখনো এটি হতে পারে অদ্ভুত কোনো রেসিপি বা এমন ভিডিও যেখানে কেউ নিজের পোষা প্রাণী বা পরিবারের সদস্যকে মজার ছলে বিরক্ত করছে। তবে রাজনীতি ও জনপরিসরেও এখন এটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কারণ প্ররোচিত ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার ঢেউ অনেক সময়ই রাজনৈতিক প্রচারণাকে আরও উসকে দেয়।
শুধু অক্সফোর্ড নয়, প্রায় সব বড় অভিধানই এবার ইন্টারনেট-সম্পর্কিত শব্দকেই ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এবার কলিন্স ডিকশনারির বেছে নেওয়া শব্দটি হলো ‘ভয়েস কোডিং’। যেখানে এআই ব্যবহার করে মানুষের ভাষাকে কম্পিউটার কোডে রূপান্তর করা হয়। অন্যদিকে ক্যামব্রিজ ডিকশনারি বেছে নিয়েছে ‘প্যারাসোশ্যাল’ শব্দটি, যা অনলাইনে অপরিচিত কারও সঙ্গে গড়ে ওঠা একতরফা সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
গত বছর (২০২৪) অক্সফোর্ড বেছে নিয়েছিল ‘ব্রেইন রট’ শব্দটি, যা ছিল মূলত অবিরাম স্ক্রলিংয়ে মানসিক ক্লান্তির রূপকার্থ। অক্সফোর্ড ল্যাংগুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্র্যাথওহলের মতে, ‘রেজ বেইট’ এবং ‘ব্রেন রট’—দুটি শব্দই দেখায় কীভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের চিন্তা ও আচরণকে বদলে দিচ্ছে। একটি প্ররোচিত রাগ বাড়ায়, অন্যটি সেই রাগের মধ্যেই মানুষকে আবিষ্ট রাখে।
এ বছর অক্সফোর্ড সাধারণ মানুষের ভোটে ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচন করেছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল আরও দুটি শব্দ—‘অরা ফার্মিং’ ও ‘বায়োহ্যাক’। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তৈরি করার কৌশলকে বোঝাতে ‘অরা ফার্মিং’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়, আর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে জীবনযাপনে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘বায়োহ্যাক’।
শেষ পর্যন্ত ‘রেজ বেইট’ শব্দটিই জিতেছে—যে শব্দের মধ্য দিয়ে আজকের অনলাইন জীবনের রাগ, প্রতিক্রিয়া এবং ক্লান্তির বাস্তবতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়েছে।
অক্সফোর্ড জানিয়েছে, চলতি বছর ‘রেজ বেইট’ শব্দের ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ এখন আগের চেয়ে দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যালগরিদম প্রভাবিত বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। ক্ষুদ্র কোনো বিষয়ও মুহূর্তের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ ও বিভাজন তৈরি করছে—যা মূলত এনগেজমেন্ট বাড়ানোর কৌশল।
‘রেজ বেইট’ সব সময় যে বিপজ্জনক হবে, এমন নয়। কখনো এটি হতে পারে অদ্ভুত কোনো রেসিপি বা এমন ভিডিও যেখানে কেউ নিজের পোষা প্রাণী বা পরিবারের সদস্যকে মজার ছলে বিরক্ত করছে। তবে রাজনীতি ও জনপরিসরেও এখন এটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কারণ প্ররোচিত ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়ার ঢেউ অনেক সময়ই রাজনৈতিক প্রচারণাকে আরও উসকে দেয়।
শুধু অক্সফোর্ড নয়, প্রায় সব বড় অভিধানই এবার ইন্টারনেট-সম্পর্কিত শব্দকেই ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। এবার কলিন্স ডিকশনারির বেছে নেওয়া শব্দটি হলো ‘ভয়েস কোডিং’। যেখানে এআই ব্যবহার করে মানুষের ভাষাকে কম্পিউটার কোডে রূপান্তর করা হয়। অন্যদিকে ক্যামব্রিজ ডিকশনারি বেছে নিয়েছে ‘প্যারাসোশ্যাল’ শব্দটি, যা অনলাইনে অপরিচিত কারও সঙ্গে গড়ে ওঠা একতরফা সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
গত বছর (২০২৪) অক্সফোর্ড বেছে নিয়েছিল ‘ব্রেইন রট’ শব্দটি, যা ছিল মূলত অবিরাম স্ক্রলিংয়ে মানসিক ক্লান্তির রূপকার্থ। অক্সফোর্ড ল্যাংগুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্র্যাথওহলের মতে, ‘রেজ বেইট’ এবং ‘ব্রেন রট’—দুটি শব্দই দেখায় কীভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের চিন্তা ও আচরণকে বদলে দিচ্ছে। একটি প্ররোচিত রাগ বাড়ায়, অন্যটি সেই রাগের মধ্যেই মানুষকে আবিষ্ট রাখে।
এ বছর অক্সফোর্ড সাধারণ মানুষের ভোটে ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচন করেছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল আরও দুটি শব্দ—‘অরা ফার্মিং’ ও ‘বায়োহ্যাক’। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তৈরি করার কৌশলকে বোঝাতে ‘অরা ফার্মিং’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়, আর শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বাড়াতে জীবনযাপনে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘বায়োহ্যাক’।
শেষ পর্যন্ত ‘রেজ বেইট’ শব্দটিই জিতেছে—যে শব্দের মধ্য দিয়ে আজকের অনলাইন জীবনের রাগ, প্রতিক্রিয়া এবং ক্লান্তির বাস্তবতা সবচেয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
১১ ঘণ্টা আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৪ দিন আগে
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান। সেই মর্মান্তিক ঘটনা, গারফিল্ডের জীবন ও তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে এবার নেটফ্লিক্স-এ আসছে চার পর্বের ড্রামা সিরিজ, ‘ডেথ বাই লাইটনিং’।
প্রেসিডেন্টের উত্থান ও প্রগতিশীল এজেন্ডা
১৮৮০ সালে আমেরিকা এক কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছিল। সদ্য দাসপ্রথা বিলুপ্তির পর আফ্রিকান-আমেরিকানরা কি নাগরিক হিসেবে পূর্ণ অধিকার পাবেন? নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারি চাকরি বণ্টনের সেই দীর্ঘদিনের দুর্নীতিগ্রস্ত ‘পচে যাওয়ার ব্যবস্থা’ অব্যাহত থাকবে? রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে ওহাইও-এর জনপ্রিয় কংগ্রেসম্যান জেমস গারফিল্ড এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার আহ্বান জানান। দারিদ্র্য থেকে উঠে আসা, গৃহযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখানো এই কমান্ডার নভেম্বরে দেশের ২০ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে গারফিল্ড উচ্চাভিলাষী এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ছিল: মার্কিন নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ, লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো এবং বিশেষত নাগরিক অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করা। তিনি সাবেক ক্রীতদাস ফ্রেডরিক ডগলাসকে ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার রেকর্ডার অব ডিডস পদে নিযুক্ত করেন। একজন আফ্রিকান-আমেরিকানের জন্য প্রথম সারির একটি কেন্দ্রীয় পদ পাওয়ার বিরল ঘটনা ছিল এটি।
হত্যার নেপথ্যে
১৮৮১ সালের ২ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসি-র রেলওয়ে স্টেশনে চার্লস এল. গুইটো নামক এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি গারফিল্ডকে গুলি করে। গুইটো তার জীবনকাল ধরে একজন ব্যর্থ আইনজীবী, সাংবাদিক, ধর্মপ্রচারক এবং ফ্রি লাভ কমিউনের সদস্য হিসেবে এক ব্যর্থ অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি বিশ্বাস করতেন, ঈশ্বর তাকে মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন। গারফিল্ডের মনোনয়নের পর তিনি তাঁর সমর্থনের বিনিময়ে প্যারিসে গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার পদ দাবি করে হোয়াইট হাউসে ধরনা করতেন। প্রেসিডেন্ট ‘প্যাট্রোনেজ সিস্টেম’-এর ঘোর বিরোধী হওয়ায় তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরই গুইটো সিদ্ধান্ত নেন—গারফিল্ডকে হত্যা করে ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থারকে ক্ষমতায় আনার ‘ঈশ্বর প্রদত্ত নির্দেশ’ তাঁর ওপর বর্তেছে।
আসল খুনি কে?
লেখক ক্যান্ডিস মিলার্ড তাঁর বেস্ট সেলিং বই ডেসটিনি অব দ্য রিপাবলিক-এ তুলে ধরেছেন, গারফিল্ডের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল চিকিৎসার চরম অব্যবস্থা। ড. উইলফ্রেড ব্লিস নামক দাম্ভিক চিকিৎসক গারফিল্ডের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি ব্রিটিশ সার্জন জোসেফ লিস্টার কর্তৃক প্রবর্তিত আধুনিক অ্যান্টিসেপটিক পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেন। ব্লিস জীবাণুমুক্ত নয় এমন যন্ত্র এবং খালি হাত ব্যবহার করে প্রেসিডেন্টের মেরুদণ্ডের কাছে থাকা গুলিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। এর ফলে সংক্রমণ (সেপসিস) ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, গুলি খুঁজতে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল তাঁর সদ্য আবিষ্কৃত প্রারম্ভিক মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু ব্লিসের অসহযোগিতার কারণে সেটিও ব্যর্থ হয়। শট নেওয়ার প্রায় আশি দিন পর প্রেসিডেন্ট মারা যান এবং এই মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায় ড. ব্লিসের ওপর বর্তায়।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও গারফিল্ডকে নিউইয়র্কের প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর রোসকো কনকলিং-এর বিরোধিতা মোকাবিলা করতে হয়েছিল। কনকলিং প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক ছিলেন এবং গারফিল্ডের প্রগতিশীল ভাবধারা পছন্দ করতেন না। মাকোভস্কি বিবিসিকে জানান, এই সিরিজের মূল আকর্ষণ হলো ইতিহাসের সেই ‘যদি’ প্রশ্নটি—যদি প্রেসিডেন্ট গারফিল্ড বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি হয়তো আমেরিকার অন্যতম সেরা প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন। মাকোভস্কির মতে, ‘গারফিল্ডের অসাধারণ মেধা ছিল। তাঁকে যে আজ ইতিহাসে একটি অস্পষ্ট পাদটীকা হিসেবে স্থান দেওয়া হয়, তা এক ট্র্যাজেডি।’
অভিনেতা মাইকেল শ্যানন গারফিল্ডের ‘ঐশ্বর্য ও মর্যাদা, বিশেষ করে তাঁর শালীনতা’ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন লেখক মিলার্ড।
গারফিল্ডের উত্তরাধিকার ও আইন সংস্কার
মাত্র ৪৯ বছর বয়সে গারফিল্ডের মৃত্যু পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দেয় এবং দেশজুড়ে সরকারি চাকরি সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। জনগণের ক্ষোভের কারণেই ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থার, যিনি একসময় প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনিই ১৮৮৩ সালে ‘পেন্ডলটন অ্যাক্ট’-এ স্বাক্ষর করেন। এই আইনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ‘যোগ্যতা-ভিত্তিক’ নিয়োগের নীতি শুরু হয়, যা মার্কিন সরকারি আমলাতন্ত্রের পেশাদারি নিশ্চিত করার পথ দেখায়। এইভাবে, এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড আমেরিকার শাসনব্যবস্থার ইতিহাসে এক স্থায়ী প্রগতিশীল পরিবর্তন এনে দেয়।

উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান। সেই মর্মান্তিক ঘটনা, গারফিল্ডের জীবন ও তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে এবার নেটফ্লিক্স-এ আসছে চার পর্বের ড্রামা সিরিজ, ‘ডেথ বাই লাইটনিং’।
প্রেসিডেন্টের উত্থান ও প্রগতিশীল এজেন্ডা
১৮৮০ সালে আমেরিকা এক কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছিল। সদ্য দাসপ্রথা বিলুপ্তির পর আফ্রিকান-আমেরিকানরা কি নাগরিক হিসেবে পূর্ণ অধিকার পাবেন? নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারি চাকরি বণ্টনের সেই দীর্ঘদিনের দুর্নীতিগ্রস্ত ‘পচে যাওয়ার ব্যবস্থা’ অব্যাহত থাকবে? রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে ওহাইও-এর জনপ্রিয় কংগ্রেসম্যান জেমস গারফিল্ড এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার আহ্বান জানান। দারিদ্র্য থেকে উঠে আসা, গৃহযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখানো এই কমান্ডার নভেম্বরে দেশের ২০ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে গারফিল্ড উচ্চাভিলাষী এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ছিল: মার্কিন নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ, লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো এবং বিশেষত নাগরিক অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করা। তিনি সাবেক ক্রীতদাস ফ্রেডরিক ডগলাসকে ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার রেকর্ডার অব ডিডস পদে নিযুক্ত করেন। একজন আফ্রিকান-আমেরিকানের জন্য প্রথম সারির একটি কেন্দ্রীয় পদ পাওয়ার বিরল ঘটনা ছিল এটি।
হত্যার নেপথ্যে
১৮৮১ সালের ২ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসি-র রেলওয়ে স্টেশনে চার্লস এল. গুইটো নামক এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি গারফিল্ডকে গুলি করে। গুইটো তার জীবনকাল ধরে একজন ব্যর্থ আইনজীবী, সাংবাদিক, ধর্মপ্রচারক এবং ফ্রি লাভ কমিউনের সদস্য হিসেবে এক ব্যর্থ অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি বিশ্বাস করতেন, ঈশ্বর তাকে মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন। গারফিল্ডের মনোনয়নের পর তিনি তাঁর সমর্থনের বিনিময়ে প্যারিসে গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার পদ দাবি করে হোয়াইট হাউসে ধরনা করতেন। প্রেসিডেন্ট ‘প্যাট্রোনেজ সিস্টেম’-এর ঘোর বিরোধী হওয়ায় তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরই গুইটো সিদ্ধান্ত নেন—গারফিল্ডকে হত্যা করে ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থারকে ক্ষমতায় আনার ‘ঈশ্বর প্রদত্ত নির্দেশ’ তাঁর ওপর বর্তেছে।
আসল খুনি কে?
লেখক ক্যান্ডিস মিলার্ড তাঁর বেস্ট সেলিং বই ডেসটিনি অব দ্য রিপাবলিক-এ তুলে ধরেছেন, গারফিল্ডের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল চিকিৎসার চরম অব্যবস্থা। ড. উইলফ্রেড ব্লিস নামক দাম্ভিক চিকিৎসক গারফিল্ডের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি ব্রিটিশ সার্জন জোসেফ লিস্টার কর্তৃক প্রবর্তিত আধুনিক অ্যান্টিসেপটিক পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেন। ব্লিস জীবাণুমুক্ত নয় এমন যন্ত্র এবং খালি হাত ব্যবহার করে প্রেসিডেন্টের মেরুদণ্ডের কাছে থাকা গুলিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। এর ফলে সংক্রমণ (সেপসিস) ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, গুলি খুঁজতে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল তাঁর সদ্য আবিষ্কৃত প্রারম্ভিক মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু ব্লিসের অসহযোগিতার কারণে সেটিও ব্যর্থ হয়। শট নেওয়ার প্রায় আশি দিন পর প্রেসিডেন্ট মারা যান এবং এই মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায় ড. ব্লিসের ওপর বর্তায়।
রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও গারফিল্ডকে নিউইয়র্কের প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর রোসকো কনকলিং-এর বিরোধিতা মোকাবিলা করতে হয়েছিল। কনকলিং প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক ছিলেন এবং গারফিল্ডের প্রগতিশীল ভাবধারা পছন্দ করতেন না। মাকোভস্কি বিবিসিকে জানান, এই সিরিজের মূল আকর্ষণ হলো ইতিহাসের সেই ‘যদি’ প্রশ্নটি—যদি প্রেসিডেন্ট গারফিল্ড বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি হয়তো আমেরিকার অন্যতম সেরা প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন। মাকোভস্কির মতে, ‘গারফিল্ডের অসাধারণ মেধা ছিল। তাঁকে যে আজ ইতিহাসে একটি অস্পষ্ট পাদটীকা হিসেবে স্থান দেওয়া হয়, তা এক ট্র্যাজেডি।’
অভিনেতা মাইকেল শ্যানন গারফিল্ডের ‘ঐশ্বর্য ও মর্যাদা, বিশেষ করে তাঁর শালীনতা’ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন লেখক মিলার্ড।
গারফিল্ডের উত্তরাধিকার ও আইন সংস্কার
মাত্র ৪৯ বছর বয়সে গারফিল্ডের মৃত্যু পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দেয় এবং দেশজুড়ে সরকারি চাকরি সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। জনগণের ক্ষোভের কারণেই ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থার, যিনি একসময় প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনিই ১৮৮৩ সালে ‘পেন্ডলটন অ্যাক্ট’-এ স্বাক্ষর করেন। এই আইনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ‘যোগ্যতা-ভিত্তিক’ নিয়োগের নীতি শুরু হয়, যা মার্কিন সরকারি আমলাতন্ত্রের পেশাদারি নিশ্চিত করার পথ দেখায়। এইভাবে, এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড আমেরিকার শাসনব্যবস্থার ইতিহাসে এক স্থায়ী প্রগতিশীল পরিবর্তন এনে দেয়।

সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
১১ ঘণ্টা আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৪ দিন আগে
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস।
৪ দিন আগেসম্পাদকীয়

ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস। ঘাতকেরা এ জায়গাকে বেছে নিয়েছিল বধ্যভূমি হিসেবে।
স্বাধীনতার পরপরই এই বধ্যভূমির সন্ধান যখন পাওয়া যায়, তখন প্রত্যক্ষদর্শীরা সেখানে অসংখ্য বাঙালির কঙ্কাল দেখতে পান। স্থানীয় জনগণ জল্লাদখানার পাশে সে কঙ্কালগুলো দাফন করেন। এ পাম্পহাউসের ভেতরে উঁচু এক বেদিতে লেখা ছিল ‘জল্লাদখানা’। এখানে অনেক বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল।
তথ্য: সংগ্রামের নোটবুক

ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস। ঘাতকেরা এ জায়গাকে বেছে নিয়েছিল বধ্যভূমি হিসেবে।
স্বাধীনতার পরপরই এই বধ্যভূমির সন্ধান যখন পাওয়া যায়, তখন প্রত্যক্ষদর্শীরা সেখানে অসংখ্য বাঙালির কঙ্কাল দেখতে পান। স্থানীয় জনগণ জল্লাদখানার পাশে সে কঙ্কালগুলো দাফন করেন। এ পাম্পহাউসের ভেতরে উঁচু এক বেদিতে লেখা ছিল ‘জল্লাদখানা’। এখানে অনেক বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল।
তথ্য: সংগ্রামের নোটবুক

সকালে উঠে এক কাপ চা না হলে আমাদের চলেই না। আবার বর্ষায় সবুজ চা-বাগানে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। জাতীয় চা দিবসে তাই চা-বাগান ভ্রমণের গল্পের পাশাপাশি থাকছে চা নিয়ে জানা-অজানা নানা তথ্য।
০৪ জুন ২০২৩
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
১১ ঘণ্টা আগে
ইন্টারনেটে স্ক্রল করতে করতে এমন কিছু কনটেন্ট হঠাৎই চোখে পড়ে, যা দেখে মনে হয়—ইচ্ছে করেই আপনাকে রাগীয়ে তুলতে চাইছে! এই ধরনের প্ররোচনামূলক উপাদানকেই বলা হয় ‘রেজ বেইট’। অনলাইন দুনিয়ায় এর ব্যাপক বিস্তার ও প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি ২০২৫ সালের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে এই শব্দটিকেই বেছে নিয়
৪ দিন আগে
উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান।
৪ দিন আগে