Ajker Patrika

যে কারণে মরিচের ফলন পাচ্ছেন না যশোরের চাষিরা

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৩, ১৯: ৫৭
যে কারণে মরিচের ফলন পাচ্ছেন না যশোরের চাষিরা

যশোরে এ বছর ৫৯০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হলেও উৎপাদন নেই। যশোরের স্থানীয় কৃষকদের খেতের মরিচ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে দাম বাড়ছে হু হু করে। যশোরের বাজারের চাহিদা মেটানো হচ্ছে ফরিদপুরের মরিচ দিয়ে।

কৃষকেরা বলছেন, তীব্র দাবদাহ ও খরার কারণে উৎপাদন নেই বললেই চলে। এ কারণেই সরবরাহ নেই। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন গুণ।

যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বৃহৎ সবজির হাট যশোরের সাতমাইল বারিনগর। এসব হাট থেকে ব্যাপারীরা পাইকারি দামে সবজি কিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে বিক্রি করেন। যশোর শহরের বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, রেল বাজারসহ বিভিন্ন বাজারের বেশির ভাগ সবজি আসে এ হাট থেকে। 

বারিনগরের এই হাটে সব ধরনের গ্রীষ্মকালীন সবজি সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কাঁচা মরিচের তীব্র সংকট চলছে। স্থানীয় কৃষকদের খেতে মরিচ উৎপাদন না হওয়াতে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। গেল দুই সপ্তাহে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বৃহৎ সবজির এই বাজারে মরিচ সরবরাহ কমেছে কয়েক গুণ। 

হাটের ইজারাদার আব্দুস সুবহান আজকের পত্রিকাকে বলের, ‘মাস দু-এক আগে বাজারে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি মরিচ উঠত। এখন সেই মরিচ উঠছে ২০-২৫ কেজি। তীব্র দাবদাহে উৎপাদন কমে গেছে। মরিচ ছাড়া বাজারে সব ধরনের সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। একসময় যশোরের মরিচ সারা দেশে সরবরাহ করা হতো। আর এখন ফরিদপুরের মধুখালী এলাকার মরিচ দিয়ে যশোরে বাজারের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।’ 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মনজুরুল আলম বলেন, ‘এ বছর যশোর জেলায় ৫৯০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। গত বছর ছিল ৫৭০ হেক্টর। এ বছর ২০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হলেও তীব্র খরার কারণে মরিচখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে উৎপাদন এমনিতেই কম হয়। তার ওপর খরা। দুই মিলে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আশা করছি, মাসখানেক সময়ের মধ্যে উৎপাদন স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’ 

বড়হৈবতপুর গ্রামের চাষি আলাউদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘সম্প্রতি যশোরে দীর্ঘ সময় ধরে রেকর্ড তাপমাত্রা বিরাজ করেছে। এতে তীব্র খরার সৃষ্টি হয়েছে। খরায় পুড়ে কৃষকের মরিচের খেত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই ক্ষতির প্রভাব পড়েছে। কৃষকের খেতে এই মুহূর্তে মরিচ নেই। দু-এক মাস পর থেকে মরিচের ফলন পাওয়া যাবে।’ 

মরিচের সংকট থাকলেও যশোরের বাজারে সবজির সরবরাহ যথেষ্টসদর উপজেলার তীরের হাট গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘১০ শতক জমিতে এ বছর মরিচের আবাদ করেছি। এই মুহূর্তে খেতে মরিচ নেই বললেই চলে। অল্প যা হচ্ছে তা দিয়ে নিজেদের খাওয়াটা চলছে।’ রহমতপুর গ্রামের আইনাল মণ্ডল বলেন, ‘নয় শতক জমিতে চাষ করেছি। মাঝে তীব্র খরায় খেত পুড়ে নষ্ট হয়েছে। পরিচর্যা করে আবার ঠিক করা হয়েছে। আরও কিছুদিন পরে ফলন পাওয়া যাবে।’ 

আজ রোববার যশোর শহরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচের কেজি মানভেদে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে। তবে আড়তে পাইকারি ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা। বড় বাজারের সবজির আড়ত মা ভান্ডারের প্রতিনিধি বিধান সাহা বলেন, ‘যশোরের স্থানীয় কৃষকদের মরিচ বাজারে নেই। ফরিদপুরের মধুখালীর মরিচ যশোরে আসছে। আজ ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা কেজি দরে পাইকারি কেনাবেচা হয়েছে। এলসির মাধ্যমে আমদানি করা মরিচ বাজারে ঢুকলে দাম অর্ধেকে নেমে যাবে। সেটা করা এখন খুব জরুরি।’ 

ঈদের কয়েক দিন আগেই থেকে মরিচের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে দাম। রেকর্ড দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। বলছেন, তদারকি বিহীন বাজারে আধিপত্য বাড়ছে সিন্ডিকেটের। 

শওকত হোসেন নামে এক কলেজশিক্ষক বলেন, ‘নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতায় যখন নাভিশ্বাস ভোক্তার, তখনই আগুন কাঁচা মরিচের বাজারে। মাসখানেক আগেও মাত্র ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া মরিচ এখন খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। হঠাৎ এমন দাম বৃদ্ধিতে নাজেহাল অবস্থা ভোক্তাদের।’ 

শহিদুজ্জামান নামে এক চাকরিজীবী বলেন, ‘কাঁচা মরিচের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারে মরিচ কিনতে এসে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বেশি কেনাও সম্ভব না; আবার পরিমাণে অল্পও বিক্রি করতে চাইছেন না দোকানিরা। বেশ কিছুদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী কাঁচা মরিচের দাম। অন্যান্য সবজি না হলেও চলে; তবে মরিচ ছাড়া তরকারির স্বাদ হয় না। বাধ্য হয়েই বাড়তি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুর খবরে নওফেলের বাসায় অগ্নিসংযোগ, ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ২৩
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভকারীরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসায় ভাঙচুর ও বাড়ির সামনে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় ইন্ডিয়ান হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১ থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেট চশমা হিলে নওফেলের বাসার সামনে অবস্থান করে। একপর্যায়ে তারা বাসার ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। বাসার পার্কিংয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।

একই সময়ে আরেকটি দল নগরীর খুলশী এলাকায় ভারতীয় হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, ঘটনাস্থলে টিম রয়েছে। পুলিশ বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে থামানোর চেষ্টা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাংবাদিক নিহত, প্রাণিচিকিৎসক আশঙ্কাজনক

খুলনা প্রতিনিধি
নিহত সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলন। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন সলুয়া বাজারে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আড়ংঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সলুয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন (৪৫) নিহত হয়েছেন। এ সময় দেবাশীষ নামের এক প্রাণিচিকিৎসক গুলিবিদ্ধ হন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে সলুয়া বাজারের একটি চায়ের দোকানে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ সময় ওই দুজন চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে দুজনকে গুলি করে।

নিহত ইমদাদুল হক মিলন ওই এলাকার মো. বজলুর ছেলে। কয়েক মাস আগে তিনি একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এ ছাড়া মিলন খুলনার স্থানীয় একটি দৈনিকে আড়ংঘাটা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। পরে নিজেই ‘বর্তমান সময়’ নামের একটি অনলাইন পোর্টাল বের করেন। জমি নিয়ে তাঁর সঙ্গে একটি পক্ষের বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে।

আহত দেবাশীষকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

জানতে চাইলে আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, ‘ইমদাদুল হক মিলন গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রাণিচিকিৎসক দেবাশীষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছে বলে জানতে পেরেছি।’

ওসি আরও বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চরমপন্থী হুমায়ূন কবির হুমা গ্রুপ এই হামলা চালাতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি।

একটি সূত্র জানায়, প্রাণিচিকিৎসক দেবাশীষ ওরফে দীবা বিশ্বাসের বুকে ও মাথায় আগে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। পরেরটা সাংবাদিক মিলনের মাথায়। সেখানে পাঁচ রাউন্ড গুলি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল শাহবাগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩৫
হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল শাহবাগ

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের কর্মী-সমর্থকেরা। আজ বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও বিক্ষোভ শুরু হয়।

আজ রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীরা হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান ও বিক্ষোভ-মিছিল করছেন। তাঁরা ‘হাদি’ ‘হাদি’ বলে স্লোগানও দেন।

একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে আসা বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন।

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার গণসংযোগের উদ্দেশ্যে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে তিনি হামলার শিকার হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, চলন্ত রিকশায় থাকা হাদিকে চলন্ত একটি মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা আততায়ী গুলি করেন। গুলিটি তাঁর মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর রাতেই তাঁকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।

ঢাকায় হাদির অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া নিউরোসার্জন অধ্যাপক আবদুল আহাদ আজ রাতে এক ভিডিওবার্তায় জানান, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তায় বলা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদীকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আপত্তিকর টিকটক ভিডিও, তিন যুবককে খুঁজছে পুলিশ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

নেত্রকোনার পূর্বধলায় আপত্তিকর টিকটক ভিডিও বানিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিন যুবক। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

পূর্বধলা উপজেলার নারায়ণডহর গ্রামে ধারণ করা ১২ সেকেন্ডের ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, উপজেলার নারায়ণডহর এলাকার একটি মহিলা মাদ্রাসার সামনে এক যুবক স্কেটিং করতে করতে ভ্যানের পেছনে বসা এক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছেন। একপর্যায়ে মেয়েটির পোশাক টেনে খোলার চেষ্টা করেন ওই যুবক। আপত্তিকর ভিডিওটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। ১৫ ডিসেম্বর ভিডিওটি ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই এমন কাজকে সমাজের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভিডিওতে দেখানো বিষয়টি অভিনয়ের অংশ। আলোচনায় আসার জন্যই মূলত এমন আপত্তিকর ভিডিওটি করা হয়েছে। ভিডিওটি করেছেন রোমান নামের এক যুবক, স্কেটিং করেছেন রাকিব হাসান (২০) এবং মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন হানিফ (২০)। হানিফ ও রোমান সম্পর্কে আপন দুই ভাই। তাঁরা পূর্বধলা উপজেলার নারায়ণডহর গ্রামের ওয়াসিম মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে রয়েছেন এবং তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে পূর্বধলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বুলবুল বলেন, ‘এ ধরনের ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করেছে। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি দাবি করছি।’

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, ভিডিওটি মূলত অভিনয়। এতে মেয়ের পোশাকে ছিলেন হানিফ নামের এক যুবক। তবে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেকেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঘটনার পর থেকে ওই তিন যুবক আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে।

এ বিষয়ে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান খান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরপরই তাঁদের গ্রেপ্তারে জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত