Ajker Patrika

স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, ১৯: ৫৩
স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বিচার শুরু

চট্টগ্রামে মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তাঁর স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত। আজ সোমবার চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ৯ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করে আদালত।

আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের শুনানি গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিতিতে ছিলেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত মহানগর পিপি প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলাটির শুনানির সময় কাঠগড়ায় বাবুল আক্তারসহ (৪৬) পাঁচ আসামি উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা আসামিরা হলেন–এহতেশামুল হক ভোলা (৫৪), মোতালেব মিয়া ওয়াসিম (৩৩), আনোয়ার হোসেন (২৮) ও শাহজাহান মিয়া (২৮)। এই মামলায় আরও দুই আসামি পলাতক রয়েছেন। চার্জ গঠনের আগে আদালতে উপস্থিত আসামিদের দোষী নাকি নির্দোষ-তা জানতে চেয়েছিল আদালত।’ এ সময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেন।

প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য আরও বলেন, ‘একই সময় আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রামে না রেখে অন্যত্র কারাগারে রাখার বিষয়ে একটি আবেদন করেন। এ সময় নারাজি দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ বলেছেন, একাধিক মামলার আসামি ও সাক্ষী বাবুল আক্তার। বিভিন্ন মামলার ধার্য তারিখে তাঁকে অন্য কারাগার থেকে এখানে নিয়ে আসা সময়সাপেক্ষ ও ঝামেলায় পড়তে হয়।

অন্যদিকে আসামিপক্ষ বলেছেন, বাবুল আক্তার চট্টগ্রাম কারাগারে নিরাপদবোধ করছেন না। পুলিশে কর্মরত থাকাবস্থায় তিনি কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছেন। তাঁরা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। পরে আদালত বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কারাগারে রাখার আদেশ দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসামিপক্ষ বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কারাগারে রাখা হলে তাঁকে আলাদা কোনো সেলে বা শ্রেণিতে রাখার বিষয়ে আদালতে আবেদন করেন। এ ছাড়া তার অসুস্থতার কথাও বলা হয়। পরে আদালত বাবুল আক্তারকে জেল কোড অনুযায়ী চিকিৎসাসহ সব সুবিধা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। কোনো সমস্যা হলে পরে আদালতে একটা পিটিশন দাখিল করতে বলেন আসামিপক্ষকে।’

আসামি বাবুল আক্তারের আইনজীবী শিশির মনির আদালতে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিযোগ গঠন থেকে বাবুল আক্তারকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছিল। আদালত সেটা খারিজ করে দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রথম মামলাটির বাদী ছিলেন বাবুল আক্তার নিজে। পরে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন। পরে দ্বিতীয় মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর প্রথম মামলায় অভিযোগপত্র দিল। এ মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ নেই।’

আইনজীবী শিশির মনির আরও বলেন, ‘মিতু হত্যার পরে ২৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল, তা বর্তমানে মামলার নথিতে নেই। কারণ তাঁরা বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। ঘটনার সময় বাবুল ছিলেন ঢাকায়। মুছাকে দিয়ে হত্যা করানোর অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই মুছা কোথায়। গায়ত্রী নামের একজনের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে স্ত্রী মিতুকে হত্যা করিয়েছেন বলে অভিযোগ। গায়ত্রী কোথায়। তাহলে কীভাবে বিচার করবেন। 

এর আগে বিকেলে আদালতের অনুমতি নিয়ে আসামি বাবুল আক্তার এডিসি প্রসিকিউশন কার্যালয়ে তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে এক ঘণ্টা কথা বলার সুযোগ পান। এ ছাড়া আজ একই আদালতে আসামির আরও দুটি মামলার ধার্য তারিখ ছিল। ২০০৮ সালে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের হওয়া পৃথক ওই দুটি মামলায় বাবুল আক্তারের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। 

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে নগরীর জিইসি এলাকায় মাহমুদা খানম মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন মাহমুদার স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘদিন ডিবি পুলিশ মামলাটির তদন্তের কাজ করেন। 

পরে ডিবির হাত ঘুরে মামলাটি পিবিআই এর হাতে আসে। ২০২১ সালে ১১ মে মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়। পরদিন ১২ মে বুধবার পিবিআই প্রধান সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, বাবুল নিজেই তাঁর স্ত্রী হত্যার সঙ্গে ‘জড়িত’। 

বাবুলের দায়ের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা। একইদিন বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় বাবুলকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে নতুন করে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর বাবুল কারাগারে রয়েছেন। 

 ২০২১ সালে ৩ নভেম্বর বাবুলের করা মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ না করে মামলাটির অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০২২ সালে ১০ অক্টোবর পিবিআই বাবুলকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। 

ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকাকালে বাবুলের সঙ্গে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের এক নারী কর্মকর্তার সম্পর্ক হয়। এ সম্পর্কের জেরে বাবুলের পরিকল্পনায় মাহমুদাকে খুন করা হয়। এ জন্য বাবুল তাঁর সোর্স মুসার মাধ্যমে তিন লাখ টাকায় খুনিদের ভাড়া করেন। তবে ঘটনার শুরু থেকে আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার প্রকাশ মুসা ও খায়রুল ইসলাম প্রকাশ কালু পলাতক রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হত্যা মামলায় নাসা গ্রুপের নজরুল তিন দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। ফাইল ছবি
নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। ফাইল ছবি

নাসা গ্রুপের কর্ণধার ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারকে আবারও তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নজরুল ইসলামকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নজরুল ইসলামের পক্ষে রিমান্ড বাতিল করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানিয়ে শুনানি করেন তাঁর আইনজীবী। কিন্তু আদালত রিমান্ড বাতিলের ওই আবেদন নামঞ্জুর করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই দুপুরের দিকে রাজধানীর গুলশান থানার শাহজাদপুর এলাকায় গুলিতে নিহত হন কামাল হোসেন সবুজ। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের গাড়িচালক ছিলেন। এ ঘটনায় গত বছরের ৭ ডিসেম্বর গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।

গত বছরের ১ অক্টোবর নজরুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁকে বৈষম্যবিরোধী বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং দফায় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একাংশের সংবাদ সম্মেলন: রাজশাহী জেলা এনসিপির কমিটি পুনর্গঠনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহী জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির একাংশের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির একাংশের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একাংশ সংবাদ সম্মেলন করেছে। আজ সোমবার বেলা আড়াইটায় রাজশাহী নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন করে রাজশাহী জেলা এনসিপির সদ্যঘোষিত কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজশাহী জেলা এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম সাজু। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার জন্য রাজশাহী এনসিপিকে নিয়ে যে নোংরামি চলছে, সেটি আমরা বরদাশত করব না। আমাদের ক্লিয়ার মেসেজ, জাতীয় নাগরিক পার্টি আপনারা রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠিত বা পরিচিত করেননি। এনসিপি প্রতিষ্ঠায় আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী জেলার প্রতিটি ভাইয়ের শ্রম, ঘাম, পরিশ্রম ও ত্যাগ রয়েছে। এ দলকে সামনে রেখে নোংরামি বন্ধ করুন। তা না হলে কালো শক্তির বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে এবং তাদের রাজশাহী থেকে বিতাড়িত করা হবে।’

নাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, এই বাংলাদেশ এখনো পরিশ্রমীদের সঠিক মূল্যায়ন দিতে শেখেনি। যদি শিখত, তাহলে সব ঝামেলা উপেক্ষা করে সঠিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাজশাহীতে সংগঠনটি সুন্দরভাবে সাজাতে পারত।

লিখিত বক্তব্যে জেলা এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজু আরও বলেন, ‘একটা প্রশ্ন প্রিয় কেন্দ্রীয় ভাইদের কাছে, যোগ্যতা কি বয়সের মাপকাঠিতে হয়? যদি হতো, তাহলে তো নাহিদ ইসলাম ভাইয়ের নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা লাভ করত না। প্রিয় ভাইয়েরা ঢাকায় নেতৃত্ব দিয়েছেন আর আমরা রাজশাহীতে, পার্থক্য এটাই। আফসোস যারা নিজের জন্য রাজনীতি করে, তারাই আজ যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। মাঠে-ময়দানে লড়াই-সংগ্রামে না থেকেও।’

সাজু বলেন, ‘রাজনীতিকে নষ্ট করবেন না প্রিয় অভিভাবকবৃন্দ। আমরা তরুণ প্রজন্ম রাজশাহীতে এনসিপি নিয়ে সম্ভাবনা ও সুন্দর স্বপ্ন দেখি। ব্যক্তিস্বার্থের জন্য দলটাকে ধ্বংস করবেন না। কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ, রাজশাহী জেলা কমিটি যোগ্যতার ভিত্তিতে পুনর্মূল্যায়ন করবেন এবং যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে, সেগুলো সমাধান করবেন। অন্যথায় আমাদের ছুটি দেবেন। আমরা কোনো কালো শক্তি, লোভ-লালসা ও ক্ষমতার চেয়ারের জন্য নিজেদের আদর্শকে বিসর্জন দিতে চাই না।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল আলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইফাত উদ্দিন আবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি আব্দুল বাসির, এনসিপির জেলার সদস্য নিজাম উদ্দিন রাজা, আজিজুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, এনসিপির রাজশাহী জেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকে দলটির একটি অংশ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের অভিযোগে জেলার আহ্বায়ক সাইফুলকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে আসছে। এর মধ্যে কর্মসূচি ও পাল্টা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজশাহী জেলা ও মহানগর। এসব ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাঁচজনকে বিশৃঙ্খলার দায়ে শোকজও করেছে। শোকজের পরদিনই এই সংবাদ সম্মেলন করল জেলা এনসিপির একাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধর্ষণ মামলায় পলাতক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ২৩ বছর পর গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হাফিজুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হাফিজুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ায় ২৩ বছর ধরে পলাতক থাকা ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হাফিজুর রহমান (৫৫) অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। তিনি গাবতলী উপজেলার পদ্মপাড়া গ্রামের মৃত আফজাল হোসেনের ছেলে। গত রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বগুড়া শহরতলির শাকপালা মোড় এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, পরিদর্শক লাল মিয়ার নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে হাফিজুরকে গ্রেপ্তার করে গাবতলী থানায় হস্তান্তর করেছে।

পরিদর্শক লাল মিয়া বলেন, রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ হওয়া অপহরণ করে ধর্ষণ মামলায় ২০০২ সালে হাফিজুরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি ছিল। কিন্তু আদালতে আত্মসমর্পণ না করে তিনি দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়ান। তিনি কয়েক বছর ধরে শাজাহানপুর উপজেলার ডোমনপুকুর গুচ্ছগ্রামে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন এবং শহরতলির শাকপালায় ভাঙারির ব্যবসা করতেন।

পুলিশ জানায়, ১৯৯৭ সালে রংপুরের এক তরুণীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন হাফিজুর। এ ঘটনার পর তরুণীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। কিছুদিন পর হাফিজুর ওই তরুণীকে তালাক দিয়ে নিজ এলাকায় ফিরে আরেকটি বিয়ে করে এলাকা ছেড়ে দেন।

গ্রেপ্তারের পর হাফিজুর পুলিশকে জানান, রায় ঘোষণার পর তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা এবং চট্টগ্রামে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। কয়েক বছর আগে বগুড়ায় ফিরে গুচ্ছগ্রামে ঘর নিয়ে বসবাস শুরু করেন এবং ভাঙারির ব্যবসা করতেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুশিয়ারায় গোসল করতে নেমে নারী নিখোঁজ

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি 
কুশিয়ারা নদী। ছবি: সংগৃহীত
কুশিয়ারা নদী। ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীতে গোসল করতে নেমে হাসিনা আক্তার বুলু (২২) নামের এক নারী নিখোঁজ হয়েছেন।

আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের রাণীনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ ওই নারী রাণীনগর গ্রামের তামিম মিয়ার স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ বেলা ১টার দিকে ওই গৃহবধূ বসতবাড়ির পাশে কুশিয়ারা নদীতে গোসল করতে নেমে ডুবে যান। এর পর থেকে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও উদ্ধার করতে পারেননি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ করছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জগন্নাথপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুর উদ্দিন বলেন, স্থানীয়ভাবে ওই গৃহবধূকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। সুনামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত