Ajker Patrika

পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা, নিহত ২

ঢামেক ও মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ২৩: ৩১
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা, নিহত ২

পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর প্রথম দিনেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। আজ রোববার রাতে জাজিরা প্রান্তে সেতুর ২৭ ও ২৮ নম্বর পিলারের মাঝের স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন— আলমগীর (২৫) ও ফজলু (২৪)।

আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা বন্ধু জয়দেব রায় জানান, তাঁরা সবাই ঢাকার নবাবগঞ্জে থাকেন। মোটরসাইকেল মেকানিক আলমগীর নবাবগঞ্জের সমসাবাদ এলাকায় থাকেন আর বিদেশ ফেরত ফজলু  থাকেন হরিশকুল এলাকায়।

জয়দেব বলেন, পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ায় আজ তাঁরা তিনটি মোটরসাইকেলে ছয় বন্ধু মিলে ঘুরতে যান। তাঁরা দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে আগে চলে যান। আর তাঁদের পেছনের দিকের মোটরসাইকেলে ছিলেন ওই দুজন। কিছুক্ষণ পর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দুর্ঘটনার খবর পান তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের একটি পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া দুইজনের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছেন। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

এর আগে আজ সন্ধ্যায় পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেলের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় দুজন পড়ে আছেন। পাশে ছড়িয়ে আছে জুতা।

এ ঘটনার পর জানতে চাইলে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, ‘আমরা শুনেছি পদ্মা সেতুর ২৭ ও ২৮ নম্বর পিলারে মাঝে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে এটা পদ্মা সেতু (উত্তর) থানার আওতাধীন নয়। ১৫ নম্বর পিলার পর্যন্ত আওতাধীন। দুর্ঘটনার স্থান অন্য থানায় হবে।’

গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর আজ রোববার সকাল থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ঘোড়ার মৃত্যুতে দিশেহারা হালিমার পরিবার

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় হালিমার ঘোড়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় হালিমার ঘোড়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ও হাটবাজারে ভাড়া খাঁটিয়ে যার মাধ্যমে চলত হালিমা আক্তার ও তাঁর পরিবারের খরচ, সেই একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে এখন দিশেহারা তাঁরা। কয়েক বছর ধরে একটি ঘোড়াকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল পরিবারের জীবিকা। সেই ঘোড়ার হঠাৎ মৃত্যুতে থমকে গেছে তাঁদের সব স্বপ্ন ও সংগ্রাম।

গতকাল বুধবার বিকেলে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের কেরানীপাড়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় হালিমার ঘোড়াটি। হালিমা আক্তার নওগাঁর ধামরাই এলাকার ওয়াবদুল ইসলামের মেয়ে। বাবা-মেয়েসহ পরিবারটি ঘোড়া নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিযোগিতায় অংশ নিত।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রতিযোগিতা শুরুর আগে হঠাৎ ঘোড়াটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলেও তারাগঞ্জ বাজার এলাকায় পৌঁছালে ঘোড়াটির অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। পরে দ্রুত তারাগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘোড়াটি মারা যায়।

এই ঘোড়া দিয়েই হালিমার বড় বোন তাসমিনা আক্তার একসময় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। বড় বোনের হাত ধরে হালিমার ঘোড়দৌড়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। অন্যের ঘোড়া দিয়ে শুরু হলেও পরে বিভিন্ন মানুষের সহায়তায় পরিবারটি নিজস্ব একটি ঘোড়া পায়। সেই ঘোড়াই ছিল তাঁদের পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস।

হালিমার বাবা ওয়াবদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘোড়াটি দিয়ে আমাদের সংসার চলত। প্রতিযোগিতা, মালপত্র বহন সবই এই ঘোড়ার ওপর নির্ভরশীল ছিল। সুস্থ অবস্থায় নওগাঁ থেকে নিয়ে এসেছিলাম। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ায় আমরা এখন সম্পূর্ণ অসহায়।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে হালিমা আক্তার বলেন, ‘এই ঘোড়াটা আমরা নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছি। ওকে নিয়ে খেলায় যেতাম, সংসার চলত। এখন ঘোড়াটা নেই, আমাদেরও কিছু নেই। কীভাবে চলব বুঝতে পারছি না।’

ঘোড়দৌড় দেখতে আসা দর্শক মিজু সরকার হৃদয় বলেন, ‘হালিমা বেগম ও তাঁর ঘোড়াকে আমরা প্রায়ই প্রতিযোগিতায় দেখতাম। তাঁদের জীবিকার একমাত্র ভরসাটা হারিয়ে গেছে। সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ইসরাতুজ্জাহান ইমা বলেন, ‘ঘোড়াটি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আমাদের কাছে আনা হয়। প্রচণ্ড জ্বর ও ব্যথায় ভুগছিল। প্রায় দুই ঘণ্টা চিকিৎসা দেওয়া হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুবদল নেতা আরিফ হত্যা: সুব্রত বাইনের মেয়ে ৫ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১১
খাদিজা ইয়াসমিন বিথীর গ্রেপ্তারের ফাইল ছবি
খাদিজা ইয়াসমিন বিথীর গ্রেপ্তারের ফাইল ছবি

যুবদল নেতা আরিফ সিকদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা ইয়াসমিন বীথিকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আজ বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন আদালতের হাতিরঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই আরিফ রেজা।

কুমিল্লা জেলা কারাগারের সামনে থেকে ১৫ ডিসেম্বর খাদিজাকে আটক করা হয়। পরদিন তাঁকে আরিফ সিকদার হত্যার ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর ওই মামলায় খাদিজাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম।

তবে মামলার মূল নথি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে না থাকায় সেদিন খাদিজাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে ১৮ ডিসেম্বর রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ঠিক করা হয়।

খাদিজাকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে পাঁচ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তাঁর মেয়ে খাদিজা মগবাজার ও হাতিরঝিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। যুবদল নেতা আরিফকে তাঁরা প্রতিপক্ষ মনে করতেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের পরিকল্পনায় আরিফকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আসামি খাদিজা জড়িত ছিল বলে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল রাতে হাতিরঝিল থানার নয়াটোলা মোড়ল গলির দি ঝিল ক্যাফের সামনে আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল মারা যান ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহক্রীড়া সম্পাদক।

এ ঘটনায় নিহতের বোন রিমা আক্তার সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইউপি সদস্যের কার্যালয়ে আটকে রাখা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার, নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কাশিরা বাজারে এক ইউপি সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে সুজন মণ্ডল (মাইক্রোবাসচালক) নামের এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত সুজন মণ্ডলের স্ত্রী মারুফা আক্তারের অভিযোগ, টাকা চুরির অভিযোগে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন তাঁর স্বামীকে রাতভর আটকে রেখে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন। পরে ঘটনাটি আড়াল করতে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন রেজা বলেন, ইউপি সদস্য সেলিম হোসেনের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে সুজন মণ্ডলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথায় ব্যান্ডেজ ও শরীরের পেছনের অংশে কালশিটে দাগ দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে মারধরের আলামত পাওয়া গেছে।

নিহত সুজন মণ্ডল উপজেলার কাশিরা পুকুরিয়া গ্রামের ওসমান মণ্ডলের ছেলে। তিনি পেশায় মাইক্রোবাসচালক ছিলেন। এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও চুরির অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার পাকুরদাড়িয়া গ্রামে বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই দিন বিকেলে সুজন মণ্ডল তাঁর খালাতো বোন সোনাভানের বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে ৭০ হাজার টাকা চুরি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে সন্ধ্যার দিকে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেনের সহায়তায় তাঁকে আটক করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে সুজন টাকা চুরির কথা স্বীকার করেন এবং চুরি হওয়া টাকার ৪৫ হাজার টাকা ফেরত দেন।

এরপর ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন সুজন মণ্ডলকে কাশিরা বাজারে তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নিয়ে যান। তিনি থানায় খবর দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তি দেওয়ার কথা জানান। তবে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে না যাওয়ায় দুজন গ্রাম পুলিশ দিয়ে তাঁকে কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়।

আজ সকালে সুজন মণ্ডল তাঁর স্ত্রী মারুফা আক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। কিছু সময় পর পাহারায় থাকা গ্রাম পুলিশরা তাঁর আত্মহত্যার খবর দেন। পরে স্বজনেরা গিয়ে দেখেন, কার্যালয়ের ফ্যানের হুকের সঙ্গে রশি প্যাঁচানো অবস্থায় সুজন মণ্ডলের লাশ ঝুলে আছে।

নিহতের স্ত্রী মারুফা আক্তার বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন আমার স্বামীকে ডেকে এনে রাতভর দফায় দফায় লাঠিপেটা করেছেন। তাঁর মাথায় ব্যান্ডেজ ছিল। নির্যাতনের কারণেই আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। থানা থাকতে কেন তাঁকে সারা রাত আটকে রাখা হলো? আমি জড়িত সবার বিচার চাই।’

তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, ‘সুজন টাকা চুরি করেছিল। গ্রামবাসী তাকে মারধর করেছে। পরে তাকে আমার কার্যালয়ে এনে রাত ১০টার পর পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত হবে না জানালে দুজন গ্রাম পুলিশ পাহারায় রেখে আমি বাড়িতে চলে যাই। পাহারার দায়িত্বে থাকা গ্রাম পুলিশ প্রকৃতির ডাকে বাইরে গেলে সে আত্মহত্যা করে।’

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ইউপি সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে কাউকে আটকে রাখার বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। ইউপি সদস্যের এমন ক্ষমতা নেই। ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত মরদেহ দেখি।’

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, সকালে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা মনে হলেও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাচ্ছে না। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় বাস ধর্মঘটে অচল গণপরিবহন, চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
বাস বন্ধ রেখে সড়কে বিক্ষোভ করছেন পরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাস বন্ধ রেখে সড়কে বিক্ষোভ করছেন পরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করে জাঙ্গালিয়া বাস টার্মিনাল থেকে নতুন বাস সার্ভিস চালু করার প্রতিবাদে কুমিল্লা নগরীর তিনটি প্রধান বাস টার্মিনাল থেকে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছে কুমিল্লা বাস মালিক সমিতি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির ফলে নগরীসহ জেলার অন্তত ৪০টি সড়কে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কর্মজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী ও দূরপাল্লার যাত্রীরা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই নগরীর জাঙ্গালিয়া, শাসনগাছা ও চকবাজার বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এতে কুমিল্লা-ঢাকা, কুমিল্লা-চট্টগ্রাম, কুমিল্লা-সিলেট, কুমিল্লা-চাঁদপুরসহ গুরুত্বপূর্ণ আন্তজেলা ও অভ্যন্তরীণ রুটগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

পরিবহন-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাঙ্গালিয়া বাস টার্মিনাল ব্যবহার করে কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়কে আইদি পরিবহনের বাস চলাচল বন্ধের দাবিতে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।

বাস বন্ধ রাখায় দুর্ভোগে যাত্রীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাস বন্ধ রাখায় দুর্ভোগে যাত্রীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা বাস মালিক সমিতির নেতারা অভিযোগ করেন, আইদি পরিবহন প্রয়োজনীয় রুট পারমিট ছাড়াই কুমিল্লার টার্মিনাল ব্যবহার করতে চাইছে, যা পরিবহন আইন ও বিদ্যমান নিয়মের পরিপন্থী।

আইদি পরিবহনের চেয়ারম্যান মীর পারভেজ আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ২০২৩ সালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে কুমিল্লা-চাঁদপুর রুটে তাঁদের বাস চলাচল শুরু হয়। তবে শুরু থেকেই একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট তাঁদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে আসছে। তিনি দাবি করেন, এসব বাধার কারণেই কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে রুট পারমিট ও অনাপত্তিপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জাঙ্গালিয়া বাস টার্মিনাল ব্যবহার বন্ধ রেখে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকা থেকে বাস সার্ভিস পরিচালনা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে কুমিল্লা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদপুর জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি থাকলেও কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের রুট পারমিট ছাড়া কোনো পরিবহন কুমিল্লার টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারে না। এর আগেও আমরা তাদের একাধিকবার সতর্ক করেছি। কিন্তু বিজয় দিবস ও বুধবার হঠাৎ প্রভাব বিস্তার করে টার্মিনালে বাস ঢুকিয়ে চলাচল শুরু করে। বৃহস্পতিবার আবার একই চেষ্টা করলে বাধ্য হয়ে ধর্মঘট পালন করা হয়।’

এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকায় যাত্রীদের দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। অনেকে নিরুপায় হয়ে অটোরিকশা, মাইক্রোবাস কিংবা অন্যান্য বিকল্প যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে রওনা হন। শিক্ষার্থী ও অফিসগামীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ পায়।

পরিবহন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও সমন্বিত সিদ্ধান্ত না এলে এই সংকট আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে, যার সরাসরি ভুক্তভোগী হবে সাধারণ যাত্রীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত