Ajker Patrika

সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না মিললে আর পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার নয়

  • বিভিন্ন মামলায় পুলিশের ১,০৫৯ সদস্য আসামি।
  • গত ৩০ মার্চ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫৪ জন পুলিশ সদস্য।
  • অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রমাণ খুঁজছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
  • পুলিশের অপরাধ তদন্তে পুলিশ নয়, স্বাধীন কমিশন চায় এনসিপি।
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ২২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জুলাই আন্দোলনে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে করা মামলায় পুলিশের ১ হাজার ৫৯ জন সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র ৫৪ জন। স্বাধীন তদন্ত কমিশন করে বাকি দায়ী পুলিশ সদস্যদেরও গ্রেপ্তারের চাপ দিয়ে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) জুলাই আন্দোলনের শরিক দলগুলো। কিন্তু পুলিশ বলছে, অভিযোগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না মিললে এখনই আর কোনো সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হবে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে গত বছরের জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। সরকারি গেজেট অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানে হামলা ও গুলিতে ৮৩৪ জন শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০১ জন।

আন্দোলন চলাকালে রংপুরে গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে শহীদ হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এ ঘটনায় আবু সাঈদের ভাইয়ের করা মামলায় ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হলেও গ্রেপ্তার হয়েছেন ২ জন। বাকিরা সবাই পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাঈদ হত্যা মামলার মতো অন্যান্য হত্যা মামলায়ও অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ এনসিপির। তাঁরা এ নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরকে নানাভাবে চাপে রেখেছেন বলে জানা গেছে।

জুলাই হত্যাকাণ্ডে হওয়া মামলার কার্যক্রম দেখভাল করার জন্য আইজিপি বাহারুল আলমের নেতৃত্বে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। এতে অতিরিক্ত আইজিপি ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান ও ডিআইজিরাও রয়েছেন। মনিটরিং সেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের নজরদারিতে রাখলেও এখনই আর কোনো সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে রাজি নন।

একাধিক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন তাঁরা। প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাঁদের এখনই গ্রেপ্তার করতে চাচ্ছেন না। বিভিন্ন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের এ বক্তব্য সুপারভাইজার কর্মকর্তারা পুলিশ সদর দপ্তরকে জানিয়েছেন।

ঢাকার বিভিন্ন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মামলার অভিযোগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ মিললে তারপর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করলেই হবে। এখনই আর গ্রেপ্তারের প্রয়োজন নেই।

জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ, ইউনিট ও শাখার প্রধানদের দায় রয়েছে। মামলার অভিযোগপত্রে তাঁদের দায় কীভাবে উল্লেখ করা হবে এবং তাঁদের গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি পুলিশ। এসব বিষয়ে তদন্তের শেষ দিকে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।

তবে এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন মামলার উদাহরণ টেনে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা পুলিশের অপরাধের তদন্ত পুলিশ দিয়েই হোক, এমনটি চাইছেন না। এ জন্য আলাদা কমিশন বা সংস্থা দিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডে যাঁরাই জড়িত থাকুন, তাঁদের শাস্তি হতে হবে। এটি জাতিসংঘের মানবাধিকার রিপোর্ট থেকেও প্রতীয়মান। কাউকেই বিশেষ আনুকূল্য দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা চাই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার করতে হবে। এতে করে পুলিশের ইমেজই ভালো হবে। জনমনে পুলিশের প্রতি যে ক্ষোভ, তা প্রশমনের একমাত্র উপায় দোষী পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার ও বিচার করা।’ সরকার বা পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগের কথা অস্বীকার করলেও পুলিশের অপরাধ পুলিশ দিয়ে তদন্ত করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এনসিপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘পুলিশের অপরাধ অন্য কোনো স্বাধীন কমিশন বা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করা উচিত। আমরা সে দাবি সব সময় জানাচ্ছি। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তদন্ত করলে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট সৃষ্টি হয়।’

তবে বিভিন্ন রকম জনমত সৃষ্টি করে চাপ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স (জেআরএ) মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে এবং ফুটেজ চেক করে গণহত্যাকারী পুলিশদের পরিচয় বের করি এবং আমাদের পেজ থেকে পাবলিশ করি। আমাদের পেজে পাবলিক এনগেজমেন্ট বেশি থাকায় জনমত সৃষ্টি করা যায়। আর এভাবেই প্রেসার ক্রিয়েট করে আমরা গণহত্যার বিচারের কাজে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি।’

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, জুলাই আন্দোলন ঘিরে হওয়া মামলায় পুলিশের ১ হাজার ৫৯ সদস্য আসামি। তাঁদের মধ্যে সাবেক আইজিপি ৫, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ৪১, সাবেক ডিআইজি (উপ-মহাপরিদর্শক) ১২, বর্তমান ডিআইজি ১২, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি ২, বর্তমান অতিরিক্ত ডিআইজি ৪২, সাবেক এসপি (পুলিশ সুপার) ৩, বর্তমান এসপি ৫৯, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ৫৬, সহকারী পুলিশ সুপার ২১ ও পরিদর্শক ১৬৮ জন রয়েছেন। বাকি ৬৩৮ জন এসআই (উপপরিদর্শক), সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), নায়েক ও কনস্টেবল।

পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এনামুল হক সাগর জানিয়েছেন, জুলাইয়ের ঘটনায় সাবেক-বর্তমান ৫৪ পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার রয়েছেন। মামলাগুলো তদন্তাধীন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, পুলিশ তার অস্ত্র ব্যবহার করবে জনস্বার্থে এবং আইনি কাঠামোর ভিত্তিতে। আইন সবার জন্য সমান। ন্যায়ানুগভাবে এসব মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করা উচিত। দোষী-নির্দোষ চিহ্নিত করতে বিলম্ব হলে বাহিনীর সদস্যদের মনোবলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তবে তদন্ত কর্মকর্তার কাজে কেউ যাতে হস্তক্ষেপ না করেন, সে বিষয়ে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৪
খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত