কামরুল হাসান

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে। লোকটা কে? যে কর্মকর্তার কক্ষে বসে ছিলাম, তাঁকে প্রশ্ন করতেই একটু থতমত খেয়ে তিনি বললেন, ‘নাম জানি না ভাই। শুনেছি, সে নাকি বুকি (ক্রিকেট জুয়াড়ি)।’
এতটুকু শুনেই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল। জীবনে বহু চোর, ডাকাত, অস্ত্রবাজ, ছিনতাইকারী দেখেছি। শীর্ষ সন্ত্রাসীর সামনে বসে কথা বলেছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়াল কিলারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। কিন্তু ক্রিকেট জুয়াড়ি! ভাবতেই আরাম লাগছে। কথায় কথায় আবদার করলাম, সেই জুয়াড়িকে দেখতে চাই। কর্মকর্তা আমার আবদার এড়াতে পারেন না। শুধু বললেন, ‘এটা তো ভাই এডিজি স্যার দেখছেন।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) তখন জিয়াউল আহসান। গেলাম তাঁর কক্ষে। তিনি আমার আবদার শুনে একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘আচ্ছা, বসেন।’ মিনিট ত্রিশেক পর আমার সামনে আনা হলো টেকো মাথার মাঝারি উচ্চতার সেই ব্যক্তিকে। আমি নাম-ঠিকানা জানতে চাইলাম। বললেন, নাম অতনু দত্ত। পিতার নাম মণীন্দ্র দত্ত। কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার ৯৯ নম্বর সড়কের ড্রিমটপ রেসিডেন্সিতে থাকেন। এরপর যত প্রশ্ন করি, একটারও কোনো জবাব দেন না; বিশেষ করে আমার মাথায় ঘুরছিল, জুয়াটা কী করে হয়, সেটা জানা। কিন্তু তিনি সে সম্পর্কে কিছুই বললেন না। তবে অতনু দত্ত না বললেও আমি হাল ছাড়িনি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে এল।
তার আগে বলি, ক্রিকেট খেলা যাঁরা দেখেন, তাঁরা সবাই আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) পাশাপাশি আরও একটি নামের সঙ্গে বেশ পরিচিত, তা হলো ‘আকসু’। আইসিসির অঙ্গসংগঠন ‘অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট’ বা আকসুকে ক্রিকেটাররা ডরান যমের মতো। এর কারণও আছে। জুয়া ঠেকিয়ে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে আকসু সব সময় থাকে পুলিশের ভূমিকায়। সেই আকসু আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ঢাকার ক্রিকেটে জুয়া হবে বলে।
আমি যে ঘটনা বলছি, সেটা ২০১৪ সালের। এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা নিয়ে বেটিং (বাজি) করার অপরাধে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানা শহরের একটি বাড়ি থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোনসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যুবকেরাই প্রথম ফাঁস করেছিলেন নতুন ধরনের ক্রিকেট জুয়ার ছক। এরপর পাঞ্জাব পুলিশ সেই ছকের কথা জানিয়েছিল আকসুকে। প্রথম দফায় এই গল্প শুনে আমার কাছেও খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল বিষয়টা।
এবার সেই পদ্ধতিটা বলি, ক্রিকেট নিয়ে কোটি কোটি টাকার জুয়ার গল্প নতুন কিছু নয়। সেই জুয়াড়িদের কেউই কিন্তু মাঠে যান না। তাঁরা থাকেন মাঠের বাইরে দিল্লি, ঢাকা বা দুবাইয়ের মতো শহরে। কিন্তু তাঁদের লোক থাকে খেলার মাঠে। সেই লোকদের কানে লাগানো থাকে মোবাইল ফোন। মাঠের খেলার সব তথ্য তাঁরা হালনাগাদ টেলিফোনে জানিয়ে দেন ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা লোকটিকে। জুয়াড়িরা যেহেতু টেলিভিশন বা ইন্টারনেটে খেলা দেখে বাজি ধরেন, কাজেই তাঁরা বাড়তি কিছু সময় হাতে পান। এই সময়টা কাজে লাগিয়েই জুয়া জেতেন। বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, মিরপুর মাঠে কোনো খেলোয়াড় আউট হলো, সেটা টেলিভিশনের পর্দায় আসতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে, কিন্তু টেলিফোনে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বলা যায়। এটাই হলো জুয়ার সময়ের পার্থক্য।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৪ সালের ২১ মার্চ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচের সময় গোয়েন্দারা লক্ষ করলেন, মাঠে বসে কিছু লোক সার্বক্ষণিক টেলিফোনে কথা বলছিলেন। খেলার পুরো সময় তাঁদের ফোনের সংযোগ সচল। এ রকম কয়েকজনকে সন্দেহ করার সময় তাঁরাও বিষয়টি টের পান। এরপর দ্রুত সটকে পড়েন। কিন্তু সেই দলের অতনু দত্ত আর সরতে পারেননি। র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠ থেকেই তাঁকে পাকড়াও করেন। ওই সময় আকসুর প্রধান ছিলেন যোগীন্দ্র পল সিং। তিনিও উপস্থিত ছিলেন মিরপুরের মাঠে। অতনুকে আটক করতে দেখে আকসুর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক ধরমবীর সিং যাদব এগিয়ে যান। তিনি র্যাবের গোয়েন্দাকে বলেন, অতনু হলো তাঁর গোপন তথ্যদাতা (সোর্স)। এরপর র্যাব তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ছেড়ে দিলেও র্যাব অতনুর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে।
দেখা যায়, অতনু ব্যবসায়ী ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর নিজেকে ‘ক্রিকেট ফ্যান’ পরিচয় দিয়ে মিরপুরে গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলে ওঠেন। অতনুর ফোন নম্বর অনুসরণ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় তিনি যখন ফোনে কথা বলছিলেন, তখন ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন কলকাতার জুয়াড়ি কুনাল দাগা। পরে হোটেল থেকে অতনুর পাসপোর্টের কপি নিয়ে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অতনু বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন।
গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলের ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান আমাকে বলেছিলেন, গোয়েন্দারা পিছু নিয়েছেন দেখে ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে খেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে হোটেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অতনু। তিনি সব মালপত্র হোটেলে ফেলে যান, যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বললেন, পালানোর আগের দিন ধরমবীর সিং যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে অতনুর কথা হয়েছিল। যাদব তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে ফলো করা হচ্ছে। একবার বাঁচাতে পারলেও দ্বিতীয়বার বাঁচানো যাবে না। তুমি দ্রুত বাংলাদেশ ছেড়ে যাও।’ এরপর ৩ এপ্রিল (২০১৪) রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ইমিগ্রেশনের ওসি মনিরুজ্জামান তাঁকে আটক করেন।
কয়েক দিন পর মিরপুর থানার অপারেশন কর্মকর্তা আফজাল হোসেন আমাকে বললেন, অতনুর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় মামলা হয়। সেই মামলায় অতনুকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় আদালতে। এরপর মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান তাঁকে জামিন দেন। জামিন পেয়ে গা ঢাকা দেন অতনু। আজও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি।
মনে আছে, বেশ কয়েকজন আইনজীবী অতনু দত্তের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁদের একজন এমদাদ হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ঢাকার নামকরা এক ক্রীড়া সংগঠক অতনুর জামিনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই ক্রীড়া সংগঠকের নাম তিনি বলতে চাননি।
রিপোর্টার হিসেবে এ বিষয়ে আরও জানতে আকসুর প্রধান যোগীন্দ্র পল সিং (ওয়াই পি সিং) ও ধরমবীর সিং যাদবকে আকসুর ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছিলাম। দুজনই আমার ফোন সিরিভ করেছিলেন। ফোনে সব কথা শুনে বলেছিলেন, ‘না, না, আমি সে লোক নই। রং নম্বর।’ পরে আইসিসি ও আকসুকে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে ই-মেইল করেছিলাম, কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি। দুদিন পর আকসুর আরেক আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন সিং বার্ক আমাকে ফোন করেন। তিনি তখনকার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তাঁর কথা অনুযায়ী যোগাযোগও করেছিলাম।
বেশ কয়েক মাস পর র্যাব ওই ঘটনার তদন্ত গুছিয়ে এনেছিল। একদিন র্যাবের তখনকার এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান আমাকে বললেন, জুয়াড়ি অতনু দত্তের সঙ্গে আকসুর সেই কর্মকর্তা ধরমবীর সিং যাদবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁরা একসঙ্গে এই কাজ করেন। এ ঘটনার কয়েক বছর পর বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে তিন ভারতীয় জুয়াড়িকে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) আটক করে তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। এরপর শুনলাম, দীপ আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ি বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকেও ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আইসিসির এক কর্মকর্তা একবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ৫০টি ম্যাচ পাতানোর ঘটনা তাঁরা তদন্ত করছেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ভারত-সংশ্লিষ্ট। সবার কথায় আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে এল, ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটা বা পাতানো খেলার যে অভিযোগ আমরা হরহামেশা শুনি, তার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আকসু এবং ক্রীড়া সংস্থাগুলোর লোকজনও জড়িত। ‘বেড়ায় ক্ষেত খায়’ বা ‘শর্ষের ভেতরে ভূত’ থাকার যে গল্প আছে, এ ক্ষেত্রে তা শতভাগ সত্যি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে। লোকটা কে? যে কর্মকর্তার কক্ষে বসে ছিলাম, তাঁকে প্রশ্ন করতেই একটু থতমত খেয়ে তিনি বললেন, ‘নাম জানি না ভাই। শুনেছি, সে নাকি বুকি (ক্রিকেট জুয়াড়ি)।’
এতটুকু শুনেই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল। জীবনে বহু চোর, ডাকাত, অস্ত্রবাজ, ছিনতাইকারী দেখেছি। শীর্ষ সন্ত্রাসীর সামনে বসে কথা বলেছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়াল কিলারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। কিন্তু ক্রিকেট জুয়াড়ি! ভাবতেই আরাম লাগছে। কথায় কথায় আবদার করলাম, সেই জুয়াড়িকে দেখতে চাই। কর্মকর্তা আমার আবদার এড়াতে পারেন না। শুধু বললেন, ‘এটা তো ভাই এডিজি স্যার দেখছেন।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) তখন জিয়াউল আহসান। গেলাম তাঁর কক্ষে। তিনি আমার আবদার শুনে একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘আচ্ছা, বসেন।’ মিনিট ত্রিশেক পর আমার সামনে আনা হলো টেকো মাথার মাঝারি উচ্চতার সেই ব্যক্তিকে। আমি নাম-ঠিকানা জানতে চাইলাম। বললেন, নাম অতনু দত্ত। পিতার নাম মণীন্দ্র দত্ত। কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার ৯৯ নম্বর সড়কের ড্রিমটপ রেসিডেন্সিতে থাকেন। এরপর যত প্রশ্ন করি, একটারও কোনো জবাব দেন না; বিশেষ করে আমার মাথায় ঘুরছিল, জুয়াটা কী করে হয়, সেটা জানা। কিন্তু তিনি সে সম্পর্কে কিছুই বললেন না। তবে অতনু দত্ত না বললেও আমি হাল ছাড়িনি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে এল।
তার আগে বলি, ক্রিকেট খেলা যাঁরা দেখেন, তাঁরা সবাই আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) পাশাপাশি আরও একটি নামের সঙ্গে বেশ পরিচিত, তা হলো ‘আকসু’। আইসিসির অঙ্গসংগঠন ‘অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট’ বা আকসুকে ক্রিকেটাররা ডরান যমের মতো। এর কারণও আছে। জুয়া ঠেকিয়ে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে আকসু সব সময় থাকে পুলিশের ভূমিকায়। সেই আকসু আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ঢাকার ক্রিকেটে জুয়া হবে বলে।
আমি যে ঘটনা বলছি, সেটা ২০১৪ সালের। এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা নিয়ে বেটিং (বাজি) করার অপরাধে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানা শহরের একটি বাড়ি থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোনসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যুবকেরাই প্রথম ফাঁস করেছিলেন নতুন ধরনের ক্রিকেট জুয়ার ছক। এরপর পাঞ্জাব পুলিশ সেই ছকের কথা জানিয়েছিল আকসুকে। প্রথম দফায় এই গল্প শুনে আমার কাছেও খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল বিষয়টা।
এবার সেই পদ্ধতিটা বলি, ক্রিকেট নিয়ে কোটি কোটি টাকার জুয়ার গল্প নতুন কিছু নয়। সেই জুয়াড়িদের কেউই কিন্তু মাঠে যান না। তাঁরা থাকেন মাঠের বাইরে দিল্লি, ঢাকা বা দুবাইয়ের মতো শহরে। কিন্তু তাঁদের লোক থাকে খেলার মাঠে। সেই লোকদের কানে লাগানো থাকে মোবাইল ফোন। মাঠের খেলার সব তথ্য তাঁরা হালনাগাদ টেলিফোনে জানিয়ে দেন ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা লোকটিকে। জুয়াড়িরা যেহেতু টেলিভিশন বা ইন্টারনেটে খেলা দেখে বাজি ধরেন, কাজেই তাঁরা বাড়তি কিছু সময় হাতে পান। এই সময়টা কাজে লাগিয়েই জুয়া জেতেন। বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, মিরপুর মাঠে কোনো খেলোয়াড় আউট হলো, সেটা টেলিভিশনের পর্দায় আসতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে, কিন্তু টেলিফোনে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বলা যায়। এটাই হলো জুয়ার সময়ের পার্থক্য।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৪ সালের ২১ মার্চ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচের সময় গোয়েন্দারা লক্ষ করলেন, মাঠে বসে কিছু লোক সার্বক্ষণিক টেলিফোনে কথা বলছিলেন। খেলার পুরো সময় তাঁদের ফোনের সংযোগ সচল। এ রকম কয়েকজনকে সন্দেহ করার সময় তাঁরাও বিষয়টি টের পান। এরপর দ্রুত সটকে পড়েন। কিন্তু সেই দলের অতনু দত্ত আর সরতে পারেননি। র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠ থেকেই তাঁকে পাকড়াও করেন। ওই সময় আকসুর প্রধান ছিলেন যোগীন্দ্র পল সিং। তিনিও উপস্থিত ছিলেন মিরপুরের মাঠে। অতনুকে আটক করতে দেখে আকসুর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক ধরমবীর সিং যাদব এগিয়ে যান। তিনি র্যাবের গোয়েন্দাকে বলেন, অতনু হলো তাঁর গোপন তথ্যদাতা (সোর্স)। এরপর র্যাব তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ছেড়ে দিলেও র্যাব অতনুর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে।
দেখা যায়, অতনু ব্যবসায়ী ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর নিজেকে ‘ক্রিকেট ফ্যান’ পরিচয় দিয়ে মিরপুরে গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলে ওঠেন। অতনুর ফোন নম্বর অনুসরণ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় তিনি যখন ফোনে কথা বলছিলেন, তখন ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন কলকাতার জুয়াড়ি কুনাল দাগা। পরে হোটেল থেকে অতনুর পাসপোর্টের কপি নিয়ে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অতনু বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন।
গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলের ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান আমাকে বলেছিলেন, গোয়েন্দারা পিছু নিয়েছেন দেখে ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে খেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে হোটেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অতনু। তিনি সব মালপত্র হোটেলে ফেলে যান, যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বললেন, পালানোর আগের দিন ধরমবীর সিং যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে অতনুর কথা হয়েছিল। যাদব তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে ফলো করা হচ্ছে। একবার বাঁচাতে পারলেও দ্বিতীয়বার বাঁচানো যাবে না। তুমি দ্রুত বাংলাদেশ ছেড়ে যাও।’ এরপর ৩ এপ্রিল (২০১৪) রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ইমিগ্রেশনের ওসি মনিরুজ্জামান তাঁকে আটক করেন।
কয়েক দিন পর মিরপুর থানার অপারেশন কর্মকর্তা আফজাল হোসেন আমাকে বললেন, অতনুর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় মামলা হয়। সেই মামলায় অতনুকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় আদালতে। এরপর মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান তাঁকে জামিন দেন। জামিন পেয়ে গা ঢাকা দেন অতনু। আজও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি।
মনে আছে, বেশ কয়েকজন আইনজীবী অতনু দত্তের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁদের একজন এমদাদ হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ঢাকার নামকরা এক ক্রীড়া সংগঠক অতনুর জামিনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই ক্রীড়া সংগঠকের নাম তিনি বলতে চাননি।
রিপোর্টার হিসেবে এ বিষয়ে আরও জানতে আকসুর প্রধান যোগীন্দ্র পল সিং (ওয়াই পি সিং) ও ধরমবীর সিং যাদবকে আকসুর ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছিলাম। দুজনই আমার ফোন সিরিভ করেছিলেন। ফোনে সব কথা শুনে বলেছিলেন, ‘না, না, আমি সে লোক নই। রং নম্বর।’ পরে আইসিসি ও আকসুকে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে ই-মেইল করেছিলাম, কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি। দুদিন পর আকসুর আরেক আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন সিং বার্ক আমাকে ফোন করেন। তিনি তখনকার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তাঁর কথা অনুযায়ী যোগাযোগও করেছিলাম।
বেশ কয়েক মাস পর র্যাব ওই ঘটনার তদন্ত গুছিয়ে এনেছিল। একদিন র্যাবের তখনকার এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান আমাকে বললেন, জুয়াড়ি অতনু দত্তের সঙ্গে আকসুর সেই কর্মকর্তা ধরমবীর সিং যাদবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁরা একসঙ্গে এই কাজ করেন। এ ঘটনার কয়েক বছর পর বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে তিন ভারতীয় জুয়াড়িকে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) আটক করে তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। এরপর শুনলাম, দীপ আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ি বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকেও ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আইসিসির এক কর্মকর্তা একবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ৫০টি ম্যাচ পাতানোর ঘটনা তাঁরা তদন্ত করছেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ভারত-সংশ্লিষ্ট। সবার কথায় আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে এল, ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটা বা পাতানো খেলার যে অভিযোগ আমরা হরহামেশা শুনি, তার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আকসু এবং ক্রীড়া সংস্থাগুলোর লোকজনও জড়িত। ‘বেড়ায় ক্ষেত খায়’ বা ‘শর্ষের ভেতরে ভূত’ থাকার যে গল্প আছে, এ ক্ষেত্রে তা শতভাগ সত্যি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে। লোকটা কে? যে কর্মকর্তার কক্ষে বসে ছিলাম, তাঁকে প্রশ্ন করতেই একটু থতমত খেয়ে তিনি বললেন, ‘নাম জানি না ভাই। শুনেছি, সে নাকি বুকি (ক্রিকেট জুয়াড়ি)।’
এতটুকু শুনেই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল। জীবনে বহু চোর, ডাকাত, অস্ত্রবাজ, ছিনতাইকারী দেখেছি। শীর্ষ সন্ত্রাসীর সামনে বসে কথা বলেছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়াল কিলারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। কিন্তু ক্রিকেট জুয়াড়ি! ভাবতেই আরাম লাগছে। কথায় কথায় আবদার করলাম, সেই জুয়াড়িকে দেখতে চাই। কর্মকর্তা আমার আবদার এড়াতে পারেন না। শুধু বললেন, ‘এটা তো ভাই এডিজি স্যার দেখছেন।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) তখন জিয়াউল আহসান। গেলাম তাঁর কক্ষে। তিনি আমার আবদার শুনে একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘আচ্ছা, বসেন।’ মিনিট ত্রিশেক পর আমার সামনে আনা হলো টেকো মাথার মাঝারি উচ্চতার সেই ব্যক্তিকে। আমি নাম-ঠিকানা জানতে চাইলাম। বললেন, নাম অতনু দত্ত। পিতার নাম মণীন্দ্র দত্ত। কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার ৯৯ নম্বর সড়কের ড্রিমটপ রেসিডেন্সিতে থাকেন। এরপর যত প্রশ্ন করি, একটারও কোনো জবাব দেন না; বিশেষ করে আমার মাথায় ঘুরছিল, জুয়াটা কী করে হয়, সেটা জানা। কিন্তু তিনি সে সম্পর্কে কিছুই বললেন না। তবে অতনু দত্ত না বললেও আমি হাল ছাড়িনি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে এল।
তার আগে বলি, ক্রিকেট খেলা যাঁরা দেখেন, তাঁরা সবাই আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) পাশাপাশি আরও একটি নামের সঙ্গে বেশ পরিচিত, তা হলো ‘আকসু’। আইসিসির অঙ্গসংগঠন ‘অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট’ বা আকসুকে ক্রিকেটাররা ডরান যমের মতো। এর কারণও আছে। জুয়া ঠেকিয়ে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে আকসু সব সময় থাকে পুলিশের ভূমিকায়। সেই আকসু আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ঢাকার ক্রিকেটে জুয়া হবে বলে।
আমি যে ঘটনা বলছি, সেটা ২০১৪ সালের। এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা নিয়ে বেটিং (বাজি) করার অপরাধে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানা শহরের একটি বাড়ি থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোনসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যুবকেরাই প্রথম ফাঁস করেছিলেন নতুন ধরনের ক্রিকেট জুয়ার ছক। এরপর পাঞ্জাব পুলিশ সেই ছকের কথা জানিয়েছিল আকসুকে। প্রথম দফায় এই গল্প শুনে আমার কাছেও খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল বিষয়টা।
এবার সেই পদ্ধতিটা বলি, ক্রিকেট নিয়ে কোটি কোটি টাকার জুয়ার গল্প নতুন কিছু নয়। সেই জুয়াড়িদের কেউই কিন্তু মাঠে যান না। তাঁরা থাকেন মাঠের বাইরে দিল্লি, ঢাকা বা দুবাইয়ের মতো শহরে। কিন্তু তাঁদের লোক থাকে খেলার মাঠে। সেই লোকদের কানে লাগানো থাকে মোবাইল ফোন। মাঠের খেলার সব তথ্য তাঁরা হালনাগাদ টেলিফোনে জানিয়ে দেন ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা লোকটিকে। জুয়াড়িরা যেহেতু টেলিভিশন বা ইন্টারনেটে খেলা দেখে বাজি ধরেন, কাজেই তাঁরা বাড়তি কিছু সময় হাতে পান। এই সময়টা কাজে লাগিয়েই জুয়া জেতেন। বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, মিরপুর মাঠে কোনো খেলোয়াড় আউট হলো, সেটা টেলিভিশনের পর্দায় আসতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে, কিন্তু টেলিফোনে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বলা যায়। এটাই হলো জুয়ার সময়ের পার্থক্য।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৪ সালের ২১ মার্চ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচের সময় গোয়েন্দারা লক্ষ করলেন, মাঠে বসে কিছু লোক সার্বক্ষণিক টেলিফোনে কথা বলছিলেন। খেলার পুরো সময় তাঁদের ফোনের সংযোগ সচল। এ রকম কয়েকজনকে সন্দেহ করার সময় তাঁরাও বিষয়টি টের পান। এরপর দ্রুত সটকে পড়েন। কিন্তু সেই দলের অতনু দত্ত আর সরতে পারেননি। র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠ থেকেই তাঁকে পাকড়াও করেন। ওই সময় আকসুর প্রধান ছিলেন যোগীন্দ্র পল সিং। তিনিও উপস্থিত ছিলেন মিরপুরের মাঠে। অতনুকে আটক করতে দেখে আকসুর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক ধরমবীর সিং যাদব এগিয়ে যান। তিনি র্যাবের গোয়েন্দাকে বলেন, অতনু হলো তাঁর গোপন তথ্যদাতা (সোর্স)। এরপর র্যাব তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ছেড়ে দিলেও র্যাব অতনুর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে।
দেখা যায়, অতনু ব্যবসায়ী ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর নিজেকে ‘ক্রিকেট ফ্যান’ পরিচয় দিয়ে মিরপুরে গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলে ওঠেন। অতনুর ফোন নম্বর অনুসরণ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় তিনি যখন ফোনে কথা বলছিলেন, তখন ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন কলকাতার জুয়াড়ি কুনাল দাগা। পরে হোটেল থেকে অতনুর পাসপোর্টের কপি নিয়ে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অতনু বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন।
গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলের ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান আমাকে বলেছিলেন, গোয়েন্দারা পিছু নিয়েছেন দেখে ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে খেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে হোটেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অতনু। তিনি সব মালপত্র হোটেলে ফেলে যান, যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বললেন, পালানোর আগের দিন ধরমবীর সিং যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে অতনুর কথা হয়েছিল। যাদব তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে ফলো করা হচ্ছে। একবার বাঁচাতে পারলেও দ্বিতীয়বার বাঁচানো যাবে না। তুমি দ্রুত বাংলাদেশ ছেড়ে যাও।’ এরপর ৩ এপ্রিল (২০১৪) রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ইমিগ্রেশনের ওসি মনিরুজ্জামান তাঁকে আটক করেন।
কয়েক দিন পর মিরপুর থানার অপারেশন কর্মকর্তা আফজাল হোসেন আমাকে বললেন, অতনুর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় মামলা হয়। সেই মামলায় অতনুকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় আদালতে। এরপর মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান তাঁকে জামিন দেন। জামিন পেয়ে গা ঢাকা দেন অতনু। আজও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি।
মনে আছে, বেশ কয়েকজন আইনজীবী অতনু দত্তের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁদের একজন এমদাদ হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ঢাকার নামকরা এক ক্রীড়া সংগঠক অতনুর জামিনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই ক্রীড়া সংগঠকের নাম তিনি বলতে চাননি।
রিপোর্টার হিসেবে এ বিষয়ে আরও জানতে আকসুর প্রধান যোগীন্দ্র পল সিং (ওয়াই পি সিং) ও ধরমবীর সিং যাদবকে আকসুর ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছিলাম। দুজনই আমার ফোন সিরিভ করেছিলেন। ফোনে সব কথা শুনে বলেছিলেন, ‘না, না, আমি সে লোক নই। রং নম্বর।’ পরে আইসিসি ও আকসুকে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে ই-মেইল করেছিলাম, কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি। দুদিন পর আকসুর আরেক আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন সিং বার্ক আমাকে ফোন করেন। তিনি তখনকার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তাঁর কথা অনুযায়ী যোগাযোগও করেছিলাম।
বেশ কয়েক মাস পর র্যাব ওই ঘটনার তদন্ত গুছিয়ে এনেছিল। একদিন র্যাবের তখনকার এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান আমাকে বললেন, জুয়াড়ি অতনু দত্তের সঙ্গে আকসুর সেই কর্মকর্তা ধরমবীর সিং যাদবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁরা একসঙ্গে এই কাজ করেন। এ ঘটনার কয়েক বছর পর বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে তিন ভারতীয় জুয়াড়িকে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) আটক করে তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। এরপর শুনলাম, দীপ আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ি বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকেও ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আইসিসির এক কর্মকর্তা একবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ৫০টি ম্যাচ পাতানোর ঘটনা তাঁরা তদন্ত করছেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ভারত-সংশ্লিষ্ট। সবার কথায় আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে এল, ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটা বা পাতানো খেলার যে অভিযোগ আমরা হরহামেশা শুনি, তার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আকসু এবং ক্রীড়া সংস্থাগুলোর লোকজনও জড়িত। ‘বেড়ায় ক্ষেত খায়’ বা ‘শর্ষের ভেতরে ভূত’ থাকার যে গল্প আছে, এ ক্ষেত্রে তা শতভাগ সত্যি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে। লোকটা কে? যে কর্মকর্তার কক্ষে বসে ছিলাম, তাঁকে প্রশ্ন করতেই একটু থতমত খেয়ে তিনি বললেন, ‘নাম জানি না ভাই। শুনেছি, সে নাকি বুকি (ক্রিকেট জুয়াড়ি)।’
এতটুকু শুনেই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল। জীবনে বহু চোর, ডাকাত, অস্ত্রবাজ, ছিনতাইকারী দেখেছি। শীর্ষ সন্ত্রাসীর সামনে বসে কথা বলেছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিরিয়াল কিলারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। কিন্তু ক্রিকেট জুয়াড়ি! ভাবতেই আরাম লাগছে। কথায় কথায় আবদার করলাম, সেই জুয়াড়িকে দেখতে চাই। কর্মকর্তা আমার আবদার এড়াতে পারেন না। শুধু বললেন, ‘এটা তো ভাই এডিজি স্যার দেখছেন।’
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) তখন জিয়াউল আহসান। গেলাম তাঁর কক্ষে। তিনি আমার আবদার শুনে একটু মুচকি হেসে বললেন, ‘আচ্ছা, বসেন।’ মিনিট ত্রিশেক পর আমার সামনে আনা হলো টেকো মাথার মাঝারি উচ্চতার সেই ব্যক্তিকে। আমি নাম-ঠিকানা জানতে চাইলাম। বললেন, নাম অতনু দত্ত। পিতার নাম মণীন্দ্র দত্ত। কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার ৯৯ নম্বর সড়কের ড্রিমটপ রেসিডেন্সিতে থাকেন। এরপর যত প্রশ্ন করি, একটারও কোনো জবাব দেন না; বিশেষ করে আমার মাথায় ঘুরছিল, জুয়াটা কী করে হয়, সেটা জানা। কিন্তু তিনি সে সম্পর্কে কিছুই বললেন না। তবে অতনু দত্ত না বললেও আমি হাল ছাড়িনি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার কাছে সব পরিষ্কার হয়ে এল।
তার আগে বলি, ক্রিকেট খেলা যাঁরা দেখেন, তাঁরা সবাই আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) পাশাপাশি আরও একটি নামের সঙ্গে বেশ পরিচিত, তা হলো ‘আকসু’। আইসিসির অঙ্গসংগঠন ‘অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট’ বা আকসুকে ক্রিকেটাররা ডরান যমের মতো। এর কারণও আছে। জুয়া ঠেকিয়ে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে আকসু সব সময় থাকে পুলিশের ভূমিকায়। সেই আকসু আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ঢাকার ক্রিকেটে জুয়া হবে বলে।
আমি যে ঘটনা বলছি, সেটা ২০১৪ সালের। এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা নিয়ে বেটিং (বাজি) করার অপরাধে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানা শহরের একটি বাড়ি থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোনসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। যুবকেরাই প্রথম ফাঁস করেছিলেন নতুন ধরনের ক্রিকেট জুয়ার ছক। এরপর পাঞ্জাব পুলিশ সেই ছকের কথা জানিয়েছিল আকসুকে। প্রথম দফায় এই গল্প শুনে আমার কাছেও খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল বিষয়টা।
এবার সেই পদ্ধতিটা বলি, ক্রিকেট নিয়ে কোটি কোটি টাকার জুয়ার গল্প নতুন কিছু নয়। সেই জুয়াড়িদের কেউই কিন্তু মাঠে যান না। তাঁরা থাকেন মাঠের বাইরে দিল্লি, ঢাকা বা দুবাইয়ের মতো শহরে। কিন্তু তাঁদের লোক থাকে খেলার মাঠে। সেই লোকদের কানে লাগানো থাকে মোবাইল ফোন। মাঠের খেলার সব তথ্য তাঁরা হালনাগাদ টেলিফোনে জানিয়ে দেন ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা লোকটিকে। জুয়াড়িরা যেহেতু টেলিভিশন বা ইন্টারনেটে খেলা দেখে বাজি ধরেন, কাজেই তাঁরা বাড়তি কিছু সময় হাতে পান। এই সময়টা কাজে লাগিয়েই জুয়া জেতেন। বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করি। ধরুন, মিরপুর মাঠে কোনো খেলোয়াড় আউট হলো, সেটা টেলিভিশনের পর্দায় আসতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে, কিন্তু টেলিফোনে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বলা যায়। এটাই হলো জুয়ার সময়ের পার্থক্য।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৪ সালের ২১ মার্চ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচের সময় গোয়েন্দারা লক্ষ করলেন, মাঠে বসে কিছু লোক সার্বক্ষণিক টেলিফোনে কথা বলছিলেন। খেলার পুরো সময় তাঁদের ফোনের সংযোগ সচল। এ রকম কয়েকজনকে সন্দেহ করার সময় তাঁরাও বিষয়টি টের পান। এরপর দ্রুত সটকে পড়েন। কিন্তু সেই দলের অতনু দত্ত আর সরতে পারেননি। র্যাবের গোয়েন্দারা মাঠ থেকেই তাঁকে পাকড়াও করেন। ওই সময় আকসুর প্রধান ছিলেন যোগীন্দ্র পল সিং। তিনিও উপস্থিত ছিলেন মিরপুরের মাঠে। অতনুকে আটক করতে দেখে আকসুর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক ধরমবীর সিং যাদব এগিয়ে যান। তিনি র্যাবের গোয়েন্দাকে বলেন, অতনু হলো তাঁর গোপন তথ্যদাতা (সোর্স)। এরপর র্যাব তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ছেড়ে দিলেও র্যাব অতনুর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে।
দেখা যায়, অতনু ব্যবসায়ী ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর নিজেকে ‘ক্রিকেট ফ্যান’ পরিচয় দিয়ে মিরপুরে গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলে ওঠেন। অতনুর ফোন নম্বর অনুসরণ করতে গিয়ে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময় তিনি যখন ফোনে কথা বলছিলেন, তখন ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন কলকাতার জুয়াড়ি কুনাল দাগা। পরে হোটেল থেকে অতনুর পাসপোর্টের কপি নিয়ে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অতনু বিষয়টি বুঝতে পেরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন।
গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলের ব্যবস্থাপক জাহিদ হাসান আমাকে বলেছিলেন, গোয়েন্দারা পিছু নিয়েছেন দেখে ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে খেলা দেখতে যাওয়ার কথা বলে হোটেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অতনু। তিনি সব মালপত্র হোটেলে ফেলে যান, যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বললেন, পালানোর আগের দিন ধরমবীর সিং যাদবের সঙ্গে টেলিফোনে অতনুর কথা হয়েছিল। যাদব তাঁকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে ফলো করা হচ্ছে। একবার বাঁচাতে পারলেও দ্বিতীয়বার বাঁচানো যাবে না। তুমি দ্রুত বাংলাদেশ ছেড়ে যাও।’ এরপর ৩ এপ্রিল (২০১৪) রাতে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ইমিগ্রেশনের ওসি মনিরুজ্জামান তাঁকে আটক করেন।
কয়েক দিন পর মিরপুর থানার অপারেশন কর্মকর্তা আফজাল হোসেন আমাকে বললেন, অতনুর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় মামলা হয়। সেই মামলায় অতনুকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় আদালতে। এরপর মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান তাঁকে জামিন দেন। জামিন পেয়ে গা ঢাকা দেন অতনু। আজও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি।
মনে আছে, বেশ কয়েকজন আইনজীবী অতনু দত্তের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। তাঁদের একজন এমদাদ হোসেন আমাকে বলেছিলেন, ঢাকার নামকরা এক ক্রীড়া সংগঠক অতনুর জামিনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই ক্রীড়া সংগঠকের নাম তিনি বলতে চাননি।
রিপোর্টার হিসেবে এ বিষয়ে আরও জানতে আকসুর প্রধান যোগীন্দ্র পল সিং (ওয়াই পি সিং) ও ধরমবীর সিং যাদবকে আকসুর ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছিলাম। দুজনই আমার ফোন সিরিভ করেছিলেন। ফোনে সব কথা শুনে বলেছিলেন, ‘না, না, আমি সে লোক নই। রং নম্বর।’ পরে আইসিসি ও আকসুকে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে ই-মেইল করেছিলাম, কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি। দুদিন পর আকসুর আরেক আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন সিং বার্ক আমাকে ফোন করেন। তিনি তখনকার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তাঁর কথা অনুযায়ী যোগাযোগও করেছিলাম।
বেশ কয়েক মাস পর র্যাব ওই ঘটনার তদন্ত গুছিয়ে এনেছিল। একদিন র্যাবের তখনকার এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান আমাকে বললেন, জুয়াড়ি অতনু দত্তের সঙ্গে আকসুর সেই কর্মকর্তা ধরমবীর সিং যাদবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাঁরা একসঙ্গে এই কাজ করেন। এ ঘটনার কয়েক বছর পর বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে তিন ভারতীয় জুয়াড়িকে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) আটক করে তুলে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। এরপর শুনলাম, দীপ আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ি বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকেও ম্যাচ গড়াপেটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আইসিসির এক কর্মকর্তা একবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ৫০টি ম্যাচ পাতানোর ঘটনা তাঁরা তদন্ত করছেন, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ভারত-সংশ্লিষ্ট। সবার কথায় আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে এল, ক্রিকেট ম্যাচ গড়াপেটা বা পাতানো খেলার যে অভিযোগ আমরা হরহামেশা শুনি, তার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আকসু এবং ক্রীড়া সংস্থাগুলোর লোকজনও জড়িত। ‘বেড়ায় ক্ষেত খায়’ বা ‘শর্ষের ভেতরে ভূত’ থাকার যে গল্প আছে, এ ক্ষেত্রে তা শতভাগ সত্যি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:

গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

কুর্মিটোলা র্যাব হেডকোয়ার্টার্সে এক কর্মকর্তার রুমে বসে খোশগল্প করছি। কথায় কথায় কানে এল, বেনাপোল থেকে নাকি এক ভারতীয়কে আটক করে এখানে আনা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যস্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে