Ajker Patrika

বাংকার বাস্টার নাকি কূটনীতির পথে ট্রাম্প

  • একেকটি বাংকার বাস্টারের ওজন ৩০ হাজার পাউন্ড।
  • বাংকার বাস্টার বহনে সক্ষম শুধু মার্কিন বি২ বোমারু বিমান।
  • ফোরদো ধ্বংসে নিখুঁতভাবে ঠিক একই জায়গায় কয়েকটি বোমা ফেলতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত গতকাল মঙ্গলবার পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। হামলা শুরু করা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দাবি, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করাই তাঁদের লক্ষ্য। তবে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের মতে, পাথুরে পাহাড়ের গহিনে লুকিয়ে থাকা ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের সক্ষমতা ইসরায়েলের নেই। তা আছে দেশটির প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের। দৃশ্যত এ কারণেই নেতানিয়াহু শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে এ সংঘাতে সরাসরি জড়ানোর চেষ্টা করছেন। এই অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোন পথে হাঁটবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি কি কূটনীতির পথ বেছে নেবেন, নাকি ইসরায়েলের উসকানিতে বাংকার বাস্টার বোমা জোগাবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

ইরানের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক কেন্দ্র কোম শহরের অদূরে অবস্থিত ফোরদোয়। এখানে পাথুরে মাটির অনেক নিচে আর কংক্রিটের পুরু আবরণের নিরাপত্তায় পরমাণু কর্মসূচি চলছে। তা ধ্বংস করার ক্ষমতা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী ‘বাংকার বাস্টার’ বোমারই রয়েছে। তার কেতাবি নাম ‘ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনেট্রেটর’ বা ‘জিবিইউ-৫৭’। এই বোমা ফেলতেও ব্যবহার করতে হবে বিশেষ ধরনের বি-২ বোমারু বিমান, যা ইসরায়েলের নেই।। ট্রাম্প যদি বাংকার বাস্টারের পথই বেছে নেন, তাহলে তাঁর দেশ মধ্যপ্রাচ্যের নতুন এই সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়বে। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি ছিল, তিনি আর ইরাক বা আফগানিস্তানের মতো কোনো বিদেশি সংঘাতে জড়াবেন না।

মার্কিন কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, ট্রাম্প তাঁর মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফকে ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। সম্ভবত ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকেও বৈঠকে যোগ দিতে বলেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গত সোমবার তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ‘তেহরানের সব বাসিন্দাকে অবিলম্বে সরে যেতে’ বলেন। ট্রাম্পের এই পোস্ট আভাস দিচ্ছে, নেপথ্যে বিশেষ কূটনৈতিক কোনো অগ্রগতি এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়নি।

সোমবার রাতে হোয়াইট হাউস জানায়, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির কারণে কানাডায় চলমান জি৭ সম্মেলন থেকে আগেভাগেই দেশে ফিরছেন প্রেসিডেন্ট। সে সময় ট্রাম্প বলেন, ‘এখান থেকে বিদায় নিয়েই আমরা কিছু একটা করতে চলেছি। আমাকে যেতে হবে।’ তবে ট্রাম্প ঠিক কী করবেন, তা গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত পরিষ্কার হয়নি।

এদিকে সোমবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক বিবৃতিতে আভাস দিয়েছেন, তাঁরা আলোচনায় বসতে এবং চুক্তি করতে প্রস্তুত। আরাগচি বলেন, ‘নেতানিয়াহুর মতো ব্যক্তিকে থামাতে ওয়াশিংটন থেকে একটা ফোনকলই যথেষ্ট। সেটা করলেই কেবল কূটনৈতিক প্রচেষ্টা পুনরায় শুরুর পথ খুলবে।’

কিন্তু কূটনৈতিক প্রচেষ্টা যদি ব্যর্থ হয় কিংবা ইরানের শাসকগোষ্ঠী যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোদমে বন্ধে রাজি না হয়, তাহলে কী ঘটবে? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো তখন ইরানের ফোরদো এবং অন্যান্য পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংসে বোমারু বিমান ওড়ানোর কথা ভাববেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ থেকে জো বাইডেন পর্যন্ত টানা চার সরকারের মেয়াদে মধ্যপ্রাচ্য ইস্যু নিয়ে কাজ করেছেন ব্রেট ম্যাকগার্ক। তাঁর মতে, ‘ফোরদো সব সময়ই কঠিন এক সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। ইসরায়েলের অভিযান যদি ফোরদোকে ঠেকাতে না পারে, তাহলে কোনো কৌশলগত অর্জন থাকবে না।’

মার্কিন সামরিক বাহিনী ফোরদোর বিষয়টি মাথায় রেখেই দুই বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই প্রস্তুতিতে যেসব মহড়া হয়েছে তার সারমর্ম হলো, কেবল একটি বাংকার বাস্টার বোমা দিয়ে ফোরদো ধ্বংস করা সম্ভব নয়। কয়েকটি বি২ বোমারু বিমান থেকে নিখুঁতভাবে একই জায়গায় একের পর এক বোমা ফেলতে হবে। অর্থাৎ আগের বোমার সৃষ্টি করা গর্তে পরের বোমাটি পড়ে আরও তা গভীরে ঢুকবে। আর এ অভিযানে মার্কিন পাইলট ও ক্রুদের সরাসরি অংশ নিতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পর্যন্ত মার্কিন সামরিক বাহিনীর সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিকল্পনায় এটাই ছিল। কিন্তু এর মধ্যেই নেতানিয়াহু ‘ইসরায়েলের জন্য বিপদ আসন্ন’ দাবি করে ইরানে হামলার নির্দেশ দেন। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, ইরানের পরমাণুবিজ্ঞানীরা দ্রুত একটি বোমা বানানোর চেষ্টা করছেন ঠিকই। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁরা বড় কোনো সাফল্য পাননি। ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও ব্রেট ম্যাকগার্কের সুরে সুর মিলিয়ে বলেছেন, ফোরদো যদি এবারের সংঘাতে টিকে যায়, তাহলে ইরান ঠিকই একদিন পারমাণবিক বোমার অধিকারী হবে। তবে তার আগে তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত পারমাণবিক অবকাঠামোগুলো মেরামত ও পুনর্গঠন করতে হবে।

ট্রাম্পের সামনে বোমা ছাড়াও আরেকটি বিকল্প রয়েছে। কিন্তু সেই বিকল্প কতটা সফল হবে, তা বলা কঠিন। ফোরদোর বিদ্যুৎ-সংযোগ কোনোভাবে বিচ্ছিন্ন করা গেলে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ সেন্ট্রিফিউজগুলো ধ্বংস করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলেছে, এরই মধ্যে সম্ভবত বড় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতাঞ্জে এ ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় নাতাঞ্জের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্র ২০০৪ সালে বাংকার বাস্টার তৈরি শুরু করে। লক্ষ্য ছিল, তা দিয়ে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার পাহাড়ে লুকানো সুরক্ষিত পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করা। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই বোমার প্রথম পরীক্ষা করা হয় এবং সামরিক বাহিনীতে এটি যুক্ত হয়। নেতানিয়াহু জর্জ বুশের সময় থেকেই তাঁদের বাংকার বাস্টার দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছেন। এ পর্যন্ত তিনি সফল না হলেও চাপ এখন অনেক বেড়েছে। নেতানিয়াহুর সঙ্গে বিরোধের জেরে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা জোয়াভ গালান্ট সোমবার সিএনএনকে বলেছেন, ‘কাজটা করতেই হবে, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রকেই করতে হবে।’ মার্কিন রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম গত রোববার সিবিএসকে বলেছেন, ‘কূটনীতি সফল না হলে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাবেন, যাতে এই অভিযান শেষে ইরানে পরমাণু কর্মসূচির ছিটেফোঁটাও না থাকে। তার অর্থ যদি হয় বোমা (বাংকার বাস্টার) সরবরাহ করা, সেটাই করতে হবে।’

কিন্তু সব রিপাবলিকান লিন্ডসে গ্রাহামের সঙ্গে একমত নন। দলের যুদ্ধবিরোধী অংশটি মনে করে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়ালে তার ফল ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো হতে পারে। অর্জনের বদলে তা বোঝা হয়ে উঠতে পারে। মার্কিন রাজনৈতিক ভাষ্যকার টাকার কার্লসন গত শুক্রবার রিপাবলিকান পার্টির যুদ্ধবিরোধী এই অংশের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে ত্যাগ করো, ওদের যুদ্ধ ওদেরই লড়তে দাও।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধর্ষণের শিকার নারীকে বিজেপি নেত্রীর স্বামী বললেন, ‘আমার কিছুই হবে না’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অশোক সিং। ছবি: এনডিটিভি
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অশোক সিং। ছবি: এনডিটিভি

এক নারীকে ছুরির মুখে ধর্ষণ, সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পরে বারবার যৌন সম্পর্কে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার এক বিজেপি কাউন্সিলরের স্বামীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ওই নারী যখন ক্যামেরার সামনে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন এবং তাঁদের কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের কথা বলেন তখন ওই ব্যক্তি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমার কিছুই হবে না।’

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অশোক সিং। তিনি রামপুর বাঘেলান নগর পরিষদের এক বিজেপি কাউন্সিলরের স্বামী। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে অশোক সিংকে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করতে এবং ভুক্তভোগী নারীকে হুমকি দিতে দেখা যায়। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া ওই ক্লিপটিতে অভিযুক্তকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার কী হবে? কিছুই হবে না। যেখানে খুশি অভিযোগ করো, আমার কিছুই হবে না।’ ভিডিওর নেপথ্যে ভুক্তভোগী নারীকে কাঁদতে কাঁদতে অভিযোগ দায়েরের কথা বলতে শোনা যায়।

গত সোমবার সাতনার পুলিশ সুপার (এসপি) হংসরাজ সিংয়ের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই নারী। অভিযোগে তিনি বলেন, প্রায় ছয় মাস আগে ওই ঘটনা ঘটেছে। নিজের ও পরিবারের প্রাণনাশের হুমকির কারণে এতদিন তিনি মুখ খোলেননি। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই এসপি তদন্তের দায়িত্ব ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (ডিএসপি) মনোজ ত্রিবেদীর কাছে হস্তান্তর করেন।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ অনুযায়ী, কারহি এলাকার বাসিন্দা অশোক সিং তাঁর বাড়িতে ঢুকে ছুরির মুখে তাঁকে ধর্ষণ করে। মোবাইল ফোনে সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে এবং এই বিষয়ে মুখ খুললে নারী ও তাঁর পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

ওই নারী অভিযোগে আরও বলেন, গত ২০ ডিসেম্বর অশোক সিং আবার তাঁর কাছে আসেন, তাঁর শ্লীলতাহানি করেন এবং আবারও ভিডিওটি প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকি দেন। বলেন, তাঁর কথামতো না চললে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

ভুক্তভোগীর দাবি, অশোক সিংয়ের বিরুদ্ধে আগেও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ছিল এবং একসময় তাঁকে জেলা থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। এই কারণেই সে নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে মনে করে প্রকাশ্যে তাঁকে হুমকি দিতে সাহস পেয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগী নারী জানান, অশোক সিং নিয়মিত তাঁর দোকানে এসে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বারবার হুমকি দেন। এতে তিনি ও তাঁর পরিবার ভীতি ও হয়রানির মধ্যে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।

ওই নারী আরও অভিযোগ করেছেন, পাঁচ দিন আগে পুলিশের কাছে যাওয়ার পরও এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত তিনি। তিনি বলেন, তাঁর বা তাঁর পরিবারের কোনো ক্ষতি হলে এর জন্য পুলিশই দায়ী থাকবে।

এদিকে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে এবং সব প্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এখনো পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাপানে তুষারপাতে পিচ্ছিল রাস্তায় ৫০টি গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত ২

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫১
পরপর অনেকগুলো গাড়ির সংঘর্ষের অন্তত ১০টি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। ছবি: সংগৃহীত
পরপর অনেকগুলো গাড়ির সংঘর্ষের অন্তত ১০টি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। ছবি: সংগৃহীত

তীব্র তুষারপাত ও পিচ্ছিল রাস্তার কারণে জাপানের মধ্যাঞ্চলে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ২ জন নিহত এবং ২৬ জন আহত হয়েছেন। দেশটির কান-এৎসু এক্সপ্রেসওয়েতে অন্তত ৫০টি গাড়ির স্তূপ তৈরি হয়েছে। সংঘর্ষের ফলে বেশ কয়েকটি যানবাহনে আগুন ধরে যায়।

স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, ২৬ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টোকিও থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে গুনমা প্রিফেকচারের মিনাকামিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে দুটি ট্রাকের মধ্যে সংঘর্ষ হলে পেছনে থাকা গাড়িগুলো একের পর এক ধাক্কা খেতে থাকে। এই চেইন রিঅ্যাকশনের ফলে অন্তত ১০টি গাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন ধরে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাড়ে সাত ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে টোকিওর একজন ৭৭ বছর বয়সী নারী রয়েছেন। এ ছাড়া একটি পুড়ে যাওয়া ট্রাকের চালকের আসন থেকে আরও একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত ২৬ জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকি ২১ জন সামান্য আঘাত পেয়েছেন।

দুর্ঘটনার সময় ওই এলাকায় ভারী তুষারপাতের সতর্কতা জারি ছিল। পুলিশের ধারণা, রাস্তার ওপর বরফ জমে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকগুলো পিছলে যায়। যার ফলে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

ষাটোর্ধ্ব এক প্রত্যক্ষদর্শী জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে-কে জানান, সংঘর্ষের সময় তিনি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন এবং দেখেন সামনের গাড়িগুলোতে আগুন ধরে গেছে। দ্রুত সেই আগুন অন্যান্য গাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও জানান, তাঁকেসহ প্রায় ৫০ জনকে নিকটবর্তী একটি টোল প্লাজায় সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সেখানে তাঁরা সারা রাত অবস্থান করেন।

দুর্ঘটনার পর এক্সপ্রেসওয়ের একটি অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুড়ে যাওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। রাস্তা পরিচালনাকারী সংস্থা নেক্সকো জানিয়েছে, আগুনের তাপে রাস্তার কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সংস্থাটি আপাতত ওই রুট ব্যবহার না করার জন্য ভ্রমণকারীদের সতর্ক করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজা স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগ দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান, তবে আপত্তি হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্তে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক বাহিনীতে যোগ দিতে নীতিগতভাবে সম্মতি জানিয়েছে পাকিস্তান। তবে এই বাহিনীর ম্যান্ডেটে যদি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্ত থাকে, তবে পাকিস্তান তাতে অংশ নেবে না। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার এ কথা বলেছেন।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেসের ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সাফল্য পর্যালোচনা করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়াজন করা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে ইশাক দার বলেন, গাজা শান্তি চুক্তির আওতায় ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স’ (আইএসএফ) গঠন একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। পাকিস্তান যেকোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে ‘পিস এনফোর্সমেন্ট’ (শান্তি বলবৎকরণ) নয়, বরং ‘পিসকিপিং’ (শান্তি রক্ষা) শব্দ ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে।

হামাসকে নিরস্ত্র করা প্রসঙ্গে ইশাক দার স্পষ্ট করে বলেন, ‘যদি এই বাহিনীর ম্যান্ডেটে হামাসকে নিরস্ত্র করার কোনো ভূমিকা থাকে, তবে আমরা তাতে অংশ নেব না। এটি আমাদের কাজ নয়। হামাসকে নিরস্ত্র করার দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা সেখানকার স্থানীয় সরকারের।’

ইশাক দার আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের ভূমিকা শুধু শান্তি বজায় রাখায় সহায়তা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। বলপ্রয়োগের মাধ্যমে কাউকে নিরস্ত্র করার কোনো অভিযানে পাকিস্তান তার সৈন্যদের জড়াতে চায় না।’

ইশাক দার জানান, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নীতিগতভাবে সৈন্য পাঠানোর বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিলেও, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পাকিস্তান এই বাহিনীর ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ (টিওআর) এবং ম্যান্ডেট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করবে।

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি রেজল্যুশন পাস হয়। পাকিস্তানসহ ১৩টি দেশ এর পক্ষে ভোট দিলেও রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত ছিল। ওই পরিকল্পনারই একটি অন্যতম অংশ হলো এই ‘আইএসএফ’ গঠন। এখানে মূলত মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সৈন্যদের প্রাধান্য থাকবে।

ইশাক দার জানান, ইন্দোনেশিয়া এই বাহিনীতে ২০ হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রস্তাব দিলেও তারাও হামাসকে নিরস্ত্র করার বিষয়ে পাকিস্তানের মতোই আপত্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং অভিজ্ঞ সামরিক বাহিনীর অধিকারী হওয়ায় গাজা শান্তি মিশনে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ ওয়াশিংটনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে দেশের অভ্যন্তরে ধর্মীয় দলগুলোর প্রতিবাদ এবং হামাসের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এড়াতে পাকিস্তান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এই পথে এগোচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইশাক দার দাবি করেন, একসময় পাকিস্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন’ বলে বিবেচিত হলেও বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় দেশটি পুনরায় বিশ্বমঞ্চে শক্তিশালী অবস্থানে ফিরে এসেছে। তিনি জানান, প্রধান বৈশ্বিক ইস্যুগুলোতে পাকিস্তানের নীতিগত ও দৃঢ় অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে ইসলামাবাদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রুশ হামলায় রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
রুশ হামলায় রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ঠিক আগে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ভাষ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতভর চালানো এই হামলায় প্রায় ৫০০ ড্রোন ও ৪০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এতে কিয়েভের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলেনস্কি এই হামলাকে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় চলমান শান্তি প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে রাশিয়ার ‘সরাসরি জবাব’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর এটিই তাদের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নজিরবিহীন।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল পর্যন্ত হামলা অব্যাহত ছিল। রাজধানী কিয়েভে প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে চলা বিমান হামলার সতর্কতা স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২০ মিনিটে প্রত্যাহার করা হয়। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪৬ জন, যাদের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ইউক্রেনারগো জানায়, দেশজুড়ে জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। ফলে রাজধানী কিয়েভে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে।

এই হামলার প্রভাব ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডেও পড়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে দক্ষিণ-পূর্ব পোল্যান্ডের রেশজো ও লুবলিন বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে বিমানবন্দর দুটি আবার চালু করা হয়।

ট্রাম্প-জেলেনস্কি আলোচনার টেবিলে কী আছে

জেলেনস্কি বর্তমানে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টের উদ্দেশে বিমানে রয়েছেন। এক অডিও বার্তায় তিনি জানান, পথে কানাডায় থামবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করবেন।

এর আগে শুক্রবার কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি হওয়া ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনার ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুদ্ধ শেষে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হবে।’

জেলেনস্কির মতে, যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কী দিতে প্রস্তুত, কখন দিতে প্রস্তুত এবং কত দিনের জন্য।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বলেছেন, এই শান্তি প্রক্রিয়ায় মূল চালিকাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রই। পলিটিকোকে তিনি বলেন, ‘আমার অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত তাঁর (জেলেনস্কির) কিছুই চূড়ান্ত নয়। দেখা যাক, সে কী নিয়ে আসে।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রোববারের বৈঠক ভালো হবে। তিনি আরও জানান, খুব শিগগির তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও কথা বলতে চান।

দোনেৎস্কের ভবিষ্যৎই এখন মূল প্রশ্ন

মস্কো দাবি করছে, ইউক্রেনকে দোনেৎস্কের একটি বড় ও ঘনবসতিপূর্ণ অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই অঞ্চল রুশ বাহিনী প্রায় চার বছরের যুদ্ধেও পুরোপুরি দখল করতে পারেনি। অন্যদিকে কিয়েভ চায়, বর্তমান ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ থামানো হোক।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত এক সমঝোতার আওতায়, ইউক্রেনীয় বাহিনী দোনেৎস্কের কিছু এলাকা থেকে সরে গেলে সেখানে একটি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কথা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত ঠিক হয়নি।

জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি চুক্তিতে বড় ধরনের আঞ্চলিক ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন আসে, তবে তিনি তা গণভোটের মাধ্যমে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে পারেন। তবে যুদ্ধের এমন পরিস্থিতিতে গণভোট আয়োজন অসম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ জানিয়েছেন, কিয়েভের ২০ দফা পরিকল্পনা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন, তবে শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বা মোড় আসার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। এখন সবার নজর রোববার ফ্লোরিডায় হতে যাওয়া ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের দিকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত