পাভেল পার্থ

আজকের পত্রিকায় ৬ এপ্রিল শিরোনাম হয়েছে, ‘পানি উঠছে না শত শত নলকূপে’। প্রতিবেদনটি জানায়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শত শত নলকূপে পানি উঠছে না ঝিনাইদহে। ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না; বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধানের জমিতে সেচকাজের জন্য পানি তোলায় পানির স্তর নিচে নেমে চাপ পড়ছে অগভীর নলকূপে। আগে ২০-৩০ ফুট মাটির নিচে পানির স্তর পাওয়া গেলেও এখন ৩০-৩৫ ফুট নিচেও পানির স্তর মিলছে না।
জেলার ছয় উপজেলায় ৫০ হাজারের বেশি নলকূপে সামান্য পানি উঠছে। কেবল ভূগর্ভস্থ নয়, ভূ-উপরিস্থ প্রাকৃতিক পানির আধারগুলোও এই দক্ষিণ-পশ্চিমের গুরুত্বপূর্ণ ভূগোলে প্রতিদিন উধাও হচ্ছে। খাল-বিল, বাঁওড়, ডোবা, পুকুর, নদ-নদী সবই আজ দখল ও দূষণে চুরমার। জেলার শৈলকুপা, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, হরিণাকুণ্ডু এবং ঝিনাইদহ সদরে প্রবাহিত ১০ নদী ও ২ নদের প্রায় ৮০ ভাগ শুকিয়ে গেছে শুষ্ক মৌসুমে। চিত্রা, নবগঙ্গা, কুমার, বেগবতী, কপোতাক্ষ, ইছামতী, কালীগঙ্গা কিংবা ডাকুয়ার মতো ঐতিহাসিক নদ-নদীগুলোর সবই আজ মুমূর্ষু ও রুগ্ণ। নিখোঁজ নদীতে কৃষিকাজও হচ্ছে। ভূ-উপরিস্থ এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির আধারের পাশাপাশি জলবায়ু বিপর্যয়জনিত কারণে বাড়তে থাকা অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং বৃষ্টিহীনতাও এলাকায় প্রাকৃতিক পানির প্রাপ্যতাকে অনিশ্চিত করে তুলছে দিন দিন।
তাহলে কীভাবে নিশ্চিত হবে কৃষিকাজের পানি? কম পানি ও কম সেচনির্ভর কৃষি হয়তো সম্ভব, কিন্তু একেবারে পানি বিনা কৃষিকাজ অসম্ভব। যদিও এ ঘটনা কেবল ঝিনাইদহসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল নয় কিংবা দীর্ঘস্থায়ী খরাপীড়িত দেশের উত্তরাঞ্চল নয়; দেশের সব কৃষি প্রতিবেশ অঞ্চলেই পানির আকাল তৈরি হচ্ছে। কৃষিকাজ, খাবার ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত পানি—সবই আজ নিদারুণভাবে অধরা হয়ে পড়ছে। এক দুঃসহ পানিসংকট প্রবল হয়ে উঠছে চারপাশে।
প্রতিদিন দখল, ছিনতাই, খুন হচ্ছে প্রাকৃতিক ও উন্মুক্ত জলাধার। প্রতিদিন নিচে নামছে পাতাল পানির স্তর। এমনকি জলবায়ু-সংকটের কারণে মেঘের দেখাও মিলছে না আকাশে, আসমান থেকেও ঝরছে না পানি। কেবল কৃষি বা উৎপাদন নয়, পানির এই সংকট গভীরভাবে যন্ত্রণা তৈরি করছে জীবনযাপনের প্রতিটি স্তরে।
পানি নিয়ে বাড়ছে দ্বন্দ্ব, সংঘাত ও নানামুখী উত্তেজনা। গ্রামের এক কৃষকের সঙ্গে প্রতিবেশী কৃষকের পানি-দ্বন্দ্ব আজ গ্রাম ছাপিয়ে দেশ, দেশ ছাপিয়ে রাষ্ট্র কী করপোরেট এজেন্সির একতরফা খবরদারি হয়ে উঠছে। সেচের পানিপ্রাপ্যতা অনিশ্চিত হওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে উৎপাদনে এবং খাদ্যনিরাপত্তায়; সর্বোপরি জাতীয় অর্থনীতি এবং সামাজিক জীবনে।
ঝিনাইদহের খবরটি প্রমাণ করছে, কোনো এলাকায় পাতাল পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নীতি অস্পষ্ট এবং এ ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং তদারকি নেই। অপরিকল্পিতভাবে পাতাল পানির ব্যবহার এবং একই সঙ্গে ওপরের পানির নিশ্চিহ্নকরণ কোন বিপদের মুখে দাঁড় করাচ্ছে—এ বিষয়ে ভাবার সময় হয়তো আমাদের কাছে নেই। পানি ও সেচ ব্যবস্থাপনায় দরকার সদিচ্ছা, দায়িত্বশীলতা এবং জবাবদিহি। আশা করব, ঝিনাইদহের স্থানীয় সরকার, জনপ্রতিনিধি, কৃষি বিভাগ, কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হবে।
কেন কোনো এলাকায় একের পর এক যন্ত্র বসিয়ে পাতাল পানি তুলবে মানুষ? একটি এলাকার আয়তন, জনগোষ্ঠী, ঋতুভিত্তিক চাহিদা এবং পানির প্রাপ্যতা সবকিছু বিবেচনায় এনে অংশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা কেন গড়ে তোলা হবে না? ঝিনাইদহের এই নিদারুণ চিত্র দেশের সর্বত্রই দেখা যায়। কিন্তু এই অবস্থা এমনি এমনি হয়নি। একে পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। ষাটের দশকের সবুজবিপ্লব অ্যাজেন্ডার মাধ্যমে এই বিপজ্জনক কৃষিভিত্তিক বাণিজ্য চাঙা হয়েছে। মাটির তলার পাতাল পানি যন্ত্র দিয়ে টেনে তোলা যায়, এ কথা দেশের কৃষকসমাজ প্রথমে বিশ্বাসই করেনি। কিন্তু আজ যন্ত্রচালিত সেচের পানির জন্য দেশের কৃষক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় প্রায় ৩৭ হাজার ৫০০ নলকূপ আছে, যদিও এর ভেতর সরকারি নলকূপ ১ হাজার ৫০০টি। কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের বরাতে গণমাধ্যম জানাচ্ছে, অনুমতি নিয়ে জেলায় ১৭০টি গভীর এবং ৭ হাজার ৯২১টি অগভীর নলকূপ আছে। বাদবাকি হাজার হাজার নলকূপের কোনো সরকারি অনুমোদন নেই। তাহলে এই সব যন্ত্রপাতির উৎপাদন এবং বিক্রিকে কেন প্রশ্ন করা হচ্ছে না? প্রতিদিন কেন সেচ যন্ত্রপাতির বাজার বাড়ে? মাটির তলায় নামে পানির স্তর, কিন্তু মুনাফা বাড়ে সেচযন্ত্র কোম্পানির। কৃষিকে ঘিরে বহাল থাকা করপোরেট বাজার এবং এর প্রবল নিয়ন্ত্রণকে প্রশ্ন না করে কোনোভাবেই ঝিনাইদহ কি, দেশের কোথাও কৃষিতে পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
একটা মুখস্থ বুলি আছে—দুনিয়ার চার ভাগের তিন ভাগ পানি। কিন্তু সেখানে পান ও ব্যবহারযোগ্য মিঠাপানির পরিমাণ খুবই অল্প। এর ভেতর মিঠাপানির প্রায় ৭০ ভাগই কৃষিতে এবং কারখানায় ২০ ও গৃহস্থালি কাজে বাকি ১০ ভাগ ব্যবহৃত হয়। সামগ্রিকভাবে পৃথিবীতে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন কিউবিক কিলোমিটার পানি আছে। যদিও এর ভেতর ৪৫ হাজার কিউবিক কিলোমিটার পানি ব্যবহারযোগ্য। এই ব্যবহারযোগ্য পানির ভেতর মাত্র ৯ থেকে ১৪ হাজার কিউবিক কিলোমিটার পানি কেবল মানুষের উপযোগী। সৌরজগতের অন্য কোনো গ্রহে পানি আছে কি না, আমাদের জানা নেই। কিন্তু পৃথিবীতেই যে পানি আছে তা মানুষের জন্য খুবই নিতান্ত; মানে মানুষের ব্যবহারযোগ্য পানি আছে মোট পানির মাত্র ০.০০১ ভাগ। আর এই পানির যাচ্ছেতাই অপরিকল্পিত ব্যবহার কিংবা এমন ধরনের কৃষি প্রকল্প জারি রাখা জরুরি কি না, যা লাগাতার পানির আধারকে বিনষ্ট করে? এসব ভাবতেই হবে এবং এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক অঙ্গীকার জোরালো করতে হবে।
আবার দুনিয়ার সব পানি ছড়িয়ে আছে নানা জায়গায়। দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়াটারের প্রতিবেদনমতে, বিশ্বের পানযোগ্য পানির ৬৫ ভাগই আছে ১৩টি দেশে। ব্রাজিলে ১৪ দশমিক ৯, রাশিয়ায় ৮ দশমিক ২, কানাডায় ৬, যুক্তরাষ্ট্রে ৫ দশমিক ৬, ইন্দোনেশিয়ায় ৫ দশমিক ২, চীনে ৫ দশমিক ১, কলম্বিয়ায় ৩ দশমিক ৯, ভারত ও পেরুতে ৩ দশমিক ৫, কঙ্গোতে ২ দশমিক ৩, ভেনেজুয়েলা ও বাংলাদেশে ২ দশমিক ২ ভাগ পানি আছে। কিন্তু বিপজ্জনক বার্তাটি হলো, বাংলাদেশ এই পানির আধার থেকেই মূলত কৃষিতে সেচকাজে পানি ব্যবহার করে। এই পানির আধারই দেশের শিল্পকারখানায় ও মানুষের দৈনন্দিন কাজেও ব্যবহৃত হয়। একই আধার থেকে পানি নানা কাজে ব্যবহার করলে কেবল কৃষিজমির জন্য নলকূপ কেন, ভবিষ্যতে পান করার জন্য এক গ্লাস পানিও আর খুঁজে পাওয়া যাবে কি না, সন্দেহ।অবশ্যই পাতাল পানি এবং ভূ-উপরিস্থ পানির আধার বাড়াতে হবে। ভূ-উপরিস্থ পানিকে কৃষি ও শিল্পে ব্যবহার করে পাতিল পানিকে ভবিষ্যতের জন্য সুরক্ষিত রাখতে হবে।
১৯৫৯-৬০ সালে মোট কৃষিজমির প্রায় ৭ ভাগ প্রচলিত সেচের আওতায় ছিল; বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহের হাওরাঞ্চল এবং রাজশাহীর মতো বরেন্দ্র অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে বোরো আবাদের জন্য ভূ-উপরিস্থ পানি প্রচলিত সেচের জন্য ব্যবহৃত হতো। কিন্তু দিনে দিনে যন্ত্রনির্ভর ভূগর্ভস্থ সেচ বেড়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে এক বিশাল বাণিজ্যিক কার্যক্রম। সেচযন্ত্র পরিচালনা, কারিগরি ও ব্যবস্থাপনার বিষয়টি দেশের কেবল কৃষক নন, কৃষিবিদদের জন্যও ছিল নতুন অভিজ্ঞতা।
প্রথমদিকে সেচযন্ত্রভিত্তিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নানা ধরনের কারিগরি প্রশিক্ষণও সম্পন্ন হয়েছে। বহুপক্ষীয় ব্যাংক এবং বৈশ্বিক ক্ষমতাকাঠামোর মাধ্যমে পরিচালিত সেচ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক প্রকল্প এবং কার্যক্রমগুলো বারবার সেচব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রমকে বেসরকারীকরণের জন্য সুপারিশ করেছে এবং বৈশ্বিক মুক্তবাজার ও নয়া উদারবাদীব্যবস্থার ক্ষমতার নীতি এ ক্ষেত্রে দেশের সেচব্যবস্থাপনাকেও প্রভাবিত করেছে। সেচযন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ, সেচকাজে বিদ্যুৎ কিংবা জীবাশ্ম জ্বালানির (ডিজেল) ব্যবহার সরাসরি বৈশ্বিক বাজার এবং রাষ্ট্রীয় বিবেচনা ও নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। দেখা যায় বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি স্থানীয় সেচকার্যকে প্রভাবিত করছে কিংবা কখনো কোনো সরকার সেচযন্ত্র-সম্পর্কিত বাণিজ্যকে শুল্কমুক্ত করছে বা করপোরেট কোম্পানির সেচযন্ত্র বাণিজ্য প্রসারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
এক বা দুই দিনে নয়, ঝিনাইদহের নলকূপে পানি না আসার ইতিহাস দীর্ঘ। এর সঙ্গে কৃষিভিত্তিক করপোরেট বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বৈশ্বিক রাজনীতি এবং কৃষকের প্রতি কাঠামোগত বৈষম্য—সবকিছুই জড়িয়ে আছে। রাষ্ট্র কি কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদনির্ভর এসব বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেবে? দেশের নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমও কি এসব বিষয়ে তৎপর ও সক্রিয় হবে? কারণ এই কৃষি উৎপাদনব্যবস্থাই এখনো আমাদের খাদ্য, বেঁচে থাকা এবং ভবিষ্যৎ বিকাশের মৌলভিত্তি।
লেখক ও গবেষক

আজকের পত্রিকায় ৬ এপ্রিল শিরোনাম হয়েছে, ‘পানি উঠছে না শত শত নলকূপে’। প্রতিবেদনটি জানায়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শত শত নলকূপে পানি উঠছে না ঝিনাইদহে। ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না; বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধানের জমিতে সেচকাজের জন্য পানি তোলায় পানির স্তর নিচে নেমে চাপ পড়ছে অগভীর নলকূপে। আগে ২০-৩০ ফুট মাটির নিচে পানির স্তর পাওয়া গেলেও এখন ৩০-৩৫ ফুট নিচেও পানির স্তর মিলছে না।
জেলার ছয় উপজেলায় ৫০ হাজারের বেশি নলকূপে সামান্য পানি উঠছে। কেবল ভূগর্ভস্থ নয়, ভূ-উপরিস্থ প্রাকৃতিক পানির আধারগুলোও এই দক্ষিণ-পশ্চিমের গুরুত্বপূর্ণ ভূগোলে প্রতিদিন উধাও হচ্ছে। খাল-বিল, বাঁওড়, ডোবা, পুকুর, নদ-নদী সবই আজ দখল ও দূষণে চুরমার। জেলার শৈলকুপা, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, হরিণাকুণ্ডু এবং ঝিনাইদহ সদরে প্রবাহিত ১০ নদী ও ২ নদের প্রায় ৮০ ভাগ শুকিয়ে গেছে শুষ্ক মৌসুমে। চিত্রা, নবগঙ্গা, কুমার, বেগবতী, কপোতাক্ষ, ইছামতী, কালীগঙ্গা কিংবা ডাকুয়ার মতো ঐতিহাসিক নদ-নদীগুলোর সবই আজ মুমূর্ষু ও রুগ্ণ। নিখোঁজ নদীতে কৃষিকাজও হচ্ছে। ভূ-উপরিস্থ এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির আধারের পাশাপাশি জলবায়ু বিপর্যয়জনিত কারণে বাড়তে থাকা অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং বৃষ্টিহীনতাও এলাকায় প্রাকৃতিক পানির প্রাপ্যতাকে অনিশ্চিত করে তুলছে দিন দিন।
তাহলে কীভাবে নিশ্চিত হবে কৃষিকাজের পানি? কম পানি ও কম সেচনির্ভর কৃষি হয়তো সম্ভব, কিন্তু একেবারে পানি বিনা কৃষিকাজ অসম্ভব। যদিও এ ঘটনা কেবল ঝিনাইদহসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল নয় কিংবা দীর্ঘস্থায়ী খরাপীড়িত দেশের উত্তরাঞ্চল নয়; দেশের সব কৃষি প্রতিবেশ অঞ্চলেই পানির আকাল তৈরি হচ্ছে। কৃষিকাজ, খাবার ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত পানি—সবই আজ নিদারুণভাবে অধরা হয়ে পড়ছে। এক দুঃসহ পানিসংকট প্রবল হয়ে উঠছে চারপাশে।
প্রতিদিন দখল, ছিনতাই, খুন হচ্ছে প্রাকৃতিক ও উন্মুক্ত জলাধার। প্রতিদিন নিচে নামছে পাতাল পানির স্তর। এমনকি জলবায়ু-সংকটের কারণে মেঘের দেখাও মিলছে না আকাশে, আসমান থেকেও ঝরছে না পানি। কেবল কৃষি বা উৎপাদন নয়, পানির এই সংকট গভীরভাবে যন্ত্রণা তৈরি করছে জীবনযাপনের প্রতিটি স্তরে।
পানি নিয়ে বাড়ছে দ্বন্দ্ব, সংঘাত ও নানামুখী উত্তেজনা। গ্রামের এক কৃষকের সঙ্গে প্রতিবেশী কৃষকের পানি-দ্বন্দ্ব আজ গ্রাম ছাপিয়ে দেশ, দেশ ছাপিয়ে রাষ্ট্র কী করপোরেট এজেন্সির একতরফা খবরদারি হয়ে উঠছে। সেচের পানিপ্রাপ্যতা অনিশ্চিত হওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে উৎপাদনে এবং খাদ্যনিরাপত্তায়; সর্বোপরি জাতীয় অর্থনীতি এবং সামাজিক জীবনে।
ঝিনাইদহের খবরটি প্রমাণ করছে, কোনো এলাকায় পাতাল পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নীতি অস্পষ্ট এবং এ ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং তদারকি নেই। অপরিকল্পিতভাবে পাতাল পানির ব্যবহার এবং একই সঙ্গে ওপরের পানির নিশ্চিহ্নকরণ কোন বিপদের মুখে দাঁড় করাচ্ছে—এ বিষয়ে ভাবার সময় হয়তো আমাদের কাছে নেই। পানি ও সেচ ব্যবস্থাপনায় দরকার সদিচ্ছা, দায়িত্বশীলতা এবং জবাবদিহি। আশা করব, ঝিনাইদহের স্থানীয় সরকার, জনপ্রতিনিধি, কৃষি বিভাগ, কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হবে।
কেন কোনো এলাকায় একের পর এক যন্ত্র বসিয়ে পাতাল পানি তুলবে মানুষ? একটি এলাকার আয়তন, জনগোষ্ঠী, ঋতুভিত্তিক চাহিদা এবং পানির প্রাপ্যতা সবকিছু বিবেচনায় এনে অংশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা কেন গড়ে তোলা হবে না? ঝিনাইদহের এই নিদারুণ চিত্র দেশের সর্বত্রই দেখা যায়। কিন্তু এই অবস্থা এমনি এমনি হয়নি। একে পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। ষাটের দশকের সবুজবিপ্লব অ্যাজেন্ডার মাধ্যমে এই বিপজ্জনক কৃষিভিত্তিক বাণিজ্য চাঙা হয়েছে। মাটির তলার পাতাল পানি যন্ত্র দিয়ে টেনে তোলা যায়, এ কথা দেশের কৃষকসমাজ প্রথমে বিশ্বাসই করেনি। কিন্তু আজ যন্ত্রচালিত সেচের পানির জন্য দেশের কৃষক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় প্রায় ৩৭ হাজার ৫০০ নলকূপ আছে, যদিও এর ভেতর সরকারি নলকূপ ১ হাজার ৫০০টি। কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের বরাতে গণমাধ্যম জানাচ্ছে, অনুমতি নিয়ে জেলায় ১৭০টি গভীর এবং ৭ হাজার ৯২১টি অগভীর নলকূপ আছে। বাদবাকি হাজার হাজার নলকূপের কোনো সরকারি অনুমোদন নেই। তাহলে এই সব যন্ত্রপাতির উৎপাদন এবং বিক্রিকে কেন প্রশ্ন করা হচ্ছে না? প্রতিদিন কেন সেচ যন্ত্রপাতির বাজার বাড়ে? মাটির তলায় নামে পানির স্তর, কিন্তু মুনাফা বাড়ে সেচযন্ত্র কোম্পানির। কৃষিকে ঘিরে বহাল থাকা করপোরেট বাজার এবং এর প্রবল নিয়ন্ত্রণকে প্রশ্ন না করে কোনোভাবেই ঝিনাইদহ কি, দেশের কোথাও কৃষিতে পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
একটা মুখস্থ বুলি আছে—দুনিয়ার চার ভাগের তিন ভাগ পানি। কিন্তু সেখানে পান ও ব্যবহারযোগ্য মিঠাপানির পরিমাণ খুবই অল্প। এর ভেতর মিঠাপানির প্রায় ৭০ ভাগই কৃষিতে এবং কারখানায় ২০ ও গৃহস্থালি কাজে বাকি ১০ ভাগ ব্যবহৃত হয়। সামগ্রিকভাবে পৃথিবীতে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন কিউবিক কিলোমিটার পানি আছে। যদিও এর ভেতর ৪৫ হাজার কিউবিক কিলোমিটার পানি ব্যবহারযোগ্য। এই ব্যবহারযোগ্য পানির ভেতর মাত্র ৯ থেকে ১৪ হাজার কিউবিক কিলোমিটার পানি কেবল মানুষের উপযোগী। সৌরজগতের অন্য কোনো গ্রহে পানি আছে কি না, আমাদের জানা নেই। কিন্তু পৃথিবীতেই যে পানি আছে তা মানুষের জন্য খুবই নিতান্ত; মানে মানুষের ব্যবহারযোগ্য পানি আছে মোট পানির মাত্র ০.০০১ ভাগ। আর এই পানির যাচ্ছেতাই অপরিকল্পিত ব্যবহার কিংবা এমন ধরনের কৃষি প্রকল্প জারি রাখা জরুরি কি না, যা লাগাতার পানির আধারকে বিনষ্ট করে? এসব ভাবতেই হবে এবং এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক অঙ্গীকার জোরালো করতে হবে।
আবার দুনিয়ার সব পানি ছড়িয়ে আছে নানা জায়গায়। দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়াটারের প্রতিবেদনমতে, বিশ্বের পানযোগ্য পানির ৬৫ ভাগই আছে ১৩টি দেশে। ব্রাজিলে ১৪ দশমিক ৯, রাশিয়ায় ৮ দশমিক ২, কানাডায় ৬, যুক্তরাষ্ট্রে ৫ দশমিক ৬, ইন্দোনেশিয়ায় ৫ দশমিক ২, চীনে ৫ দশমিক ১, কলম্বিয়ায় ৩ দশমিক ৯, ভারত ও পেরুতে ৩ দশমিক ৫, কঙ্গোতে ২ দশমিক ৩, ভেনেজুয়েলা ও বাংলাদেশে ২ দশমিক ২ ভাগ পানি আছে। কিন্তু বিপজ্জনক বার্তাটি হলো, বাংলাদেশ এই পানির আধার থেকেই মূলত কৃষিতে সেচকাজে পানি ব্যবহার করে। এই পানির আধারই দেশের শিল্পকারখানায় ও মানুষের দৈনন্দিন কাজেও ব্যবহৃত হয়। একই আধার থেকে পানি নানা কাজে ব্যবহার করলে কেবল কৃষিজমির জন্য নলকূপ কেন, ভবিষ্যতে পান করার জন্য এক গ্লাস পানিও আর খুঁজে পাওয়া যাবে কি না, সন্দেহ।অবশ্যই পাতাল পানি এবং ভূ-উপরিস্থ পানির আধার বাড়াতে হবে। ভূ-উপরিস্থ পানিকে কৃষি ও শিল্পে ব্যবহার করে পাতিল পানিকে ভবিষ্যতের জন্য সুরক্ষিত রাখতে হবে।
১৯৫৯-৬০ সালে মোট কৃষিজমির প্রায় ৭ ভাগ প্রচলিত সেচের আওতায় ছিল; বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহের হাওরাঞ্চল এবং রাজশাহীর মতো বরেন্দ্র অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে বোরো আবাদের জন্য ভূ-উপরিস্থ পানি প্রচলিত সেচের জন্য ব্যবহৃত হতো। কিন্তু দিনে দিনে যন্ত্রনির্ভর ভূগর্ভস্থ সেচ বেড়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে এক বিশাল বাণিজ্যিক কার্যক্রম। সেচযন্ত্র পরিচালনা, কারিগরি ও ব্যবস্থাপনার বিষয়টি দেশের কেবল কৃষক নন, কৃষিবিদদের জন্যও ছিল নতুন অভিজ্ঞতা।
প্রথমদিকে সেচযন্ত্রভিত্তিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নানা ধরনের কারিগরি প্রশিক্ষণও সম্পন্ন হয়েছে। বহুপক্ষীয় ব্যাংক এবং বৈশ্বিক ক্ষমতাকাঠামোর মাধ্যমে পরিচালিত সেচ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক প্রকল্প এবং কার্যক্রমগুলো বারবার সেচব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রমকে বেসরকারীকরণের জন্য সুপারিশ করেছে এবং বৈশ্বিক মুক্তবাজার ও নয়া উদারবাদীব্যবস্থার ক্ষমতার নীতি এ ক্ষেত্রে দেশের সেচব্যবস্থাপনাকেও প্রভাবিত করেছে। সেচযন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ, সেচকাজে বিদ্যুৎ কিংবা জীবাশ্ম জ্বালানির (ডিজেল) ব্যবহার সরাসরি বৈশ্বিক বাজার এবং রাষ্ট্রীয় বিবেচনা ও নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। দেখা যায় বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি স্থানীয় সেচকার্যকে প্রভাবিত করছে কিংবা কখনো কোনো সরকার সেচযন্ত্র-সম্পর্কিত বাণিজ্যকে শুল্কমুক্ত করছে বা করপোরেট কোম্পানির সেচযন্ত্র বাণিজ্য প্রসারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
এক বা দুই দিনে নয়, ঝিনাইদহের নলকূপে পানি না আসার ইতিহাস দীর্ঘ। এর সঙ্গে কৃষিভিত্তিক করপোরেট বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বৈশ্বিক রাজনীতি এবং কৃষকের প্রতি কাঠামোগত বৈষম্য—সবকিছুই জড়িয়ে আছে। রাষ্ট্র কি কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদনির্ভর এসব বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেবে? দেশের নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমও কি এসব বিষয়ে তৎপর ও সক্রিয় হবে? কারণ এই কৃষি উৎপাদনব্যবস্থাই এখনো আমাদের খাদ্য, বেঁচে থাকা এবং ভবিষ্যৎ বিকাশের মৌলভিত্তি।
লেখক ও গবেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আজকের পত্রিকায় ৬ এপ্রিল শিরোনাম হয়েছে, ‘পানি উঠছে না শত শত নলকূপে’। প্রতিবেদনটি জানায়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শত শত নলকূপে পানি উঠছে না ঝিনাইদহে। ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না; বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধানের জমিতে সেচকাজের জন্য পানি তোলায় পানির স্তর নিচে নেমে চাপ পড়ছে অগভীর
১৭ এপ্রিল ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আজকের পত্রিকায় ৬ এপ্রিল শিরোনাম হয়েছে, ‘পানি উঠছে না শত শত নলকূপে’। প্রতিবেদনটি জানায়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শত শত নলকূপে পানি উঠছে না ঝিনাইদহে। ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না; বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধানের জমিতে সেচকাজের জন্য পানি তোলায় পানির স্তর নিচে নেমে চাপ পড়ছে অগভীর
১৭ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আজকের পত্রিকায় ৬ এপ্রিল শিরোনাম হয়েছে, ‘পানি উঠছে না শত শত নলকূপে’। প্রতিবেদনটি জানায়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শত শত নলকূপে পানি উঠছে না ঝিনাইদহে। ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না; বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধানের জমিতে সেচকাজের জন্য পানি তোলায় পানির স্তর নিচে নেমে চাপ পড়ছে অগভীর
১৭ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আজকের পত্রিকায় ৬ এপ্রিল শিরোনাম হয়েছে, ‘পানি উঠছে না শত শত নলকূপে’। প্রতিবেদনটি জানায়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শত শত নলকূপে পানি উঠছে না ঝিনাইদহে। ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না; বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধানের জমিতে সেচকাজের জন্য পানি তোলায় পানির স্তর নিচে নেমে চাপ পড়ছে অগভীর
১৭ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫