Ajker Patrika

ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুযোগ: পুনঃ তফসিলের আবেদন ১২৫০, সুদ মওকুফ চায় আড়াই হাজার

  • পুনঃ তফসিলের ৩০০ আবেদন প্রাথমিকভাবে বাছাই করেছে কমিটি।
  • চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চলতি মাসে ব্যাংকগুলোতে পাঠানো হবে।
  • সর্বনিম্ন ৫০ কোটি টাকার ঋণ হলে পুনর্গঠনের আবেদন করতে পারবে।
  • সুদ মওকুফে ২৫০০ আবেদন, নিজস্ব নীতিতে নিষ্পত্তি করবে ব্যাংক
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১১: ২০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ঋণ পুনঃ তফসিলের জন্য সরকারি ব্যাংকের দেওয়া বিশেষ সুযোগ নিতে ১ হাজার ২৫৩টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ আবেদন প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়েছে। এই আবেদনগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে চলতি মাসে ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো হবে।

এদিকে সুদ মওকুফের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আড়াই হাজার আবেদন জমা পড়েছে। ব্যাংকগুলো নিজস্ব নীতি অনুযায়ী এসব আবেদন নিষ্পত্তি করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

করোনা মহামারি, রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তৈরি পোশাক, ভোগ্যপণ্য আমদানি, চামড়াসহ বৃহৎ শিল্প খাতের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের ঋণ পুনঃ তফসিলের এই বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশের বৃহত্তম করপোরেট ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানকে মাত্র ১ শতাংশ এককালীন পরিশোধের মাধ্যমে ৩০০ প্রতিষ্ঠানকে ঋণ পুনঃ তফসিলের সুবিধা দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সুবিধার আওতায় প্রতিষ্ঠানগুলো মাত্র ১ শতাংশ এককালীন (ডাউন পেমেন্ট) দিয়ে সর্বোচ্চ তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ডে ১৫ বছর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সুযোগ পেতে পারে। সর্বনিম্ন ৫০ কোটি টাকার ঋণ হলে পুনর্গঠনের আবেদনযোগ্য। কিন্তু ইচ্ছাকৃত খেলাপি কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ পুনর্গঠনের (পুনঃ তফসিল) সুযোগ পাবে না। বিষয়টি এ-সংক্রান্ত বাছাই কমিটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।

ব্যাংকাররা বলছেন, ঋণ পুনঃ তফসিলের এমন সুযোগ ব্যাংক খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। খেলাপি ঋণ না কমে উল্টো বৃদ্ধির প্রবণতাকে উসকে দিতে পারে। এ সুবিধায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ পুনঃ তফসিলের সুযোগ পেলেও এতে এগুলোর ক্যাশ-ম্যানেজমেন্টে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তবে ব্যবসায়ীদের ধারণা, মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, চড়া সুদহার, করোনা মহামারি এবং রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছে। এই সুবিধা পেলে প্রতিষ্ঠানগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে। যার প্রভাব দেশের জনজীবনে প্রতিফলিত হবে।

এ-সংক্রান্ত বাছাই কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ১ হাজার ২৫০টি আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সময়ের ব্যাপার। পুনঃ তফসিলের প্রতিটি আবেদনের বিষয় ও প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আবার এমন অনেকে আবেদন করেছেন, যাঁরা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি। কিছু আবেদন আছে, যেগুলো ব্যাংক নিজেই চাইলে পুনঃ তফসিল করতে পারে। আবার কেউ কেউ সুদ মওকুফের আবেদন করেছেন, যা এই কমিটির এখতিয়ারের বাইরে। এ অবস্থায় যৌক্তিক কারণে খেলাপি গ্রাহকের আবেদন বাছাই করা চ্যালেঞ্জিং বিষয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক অডিট প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই অনুমতি দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এখন ব্যাংকগুলো সিদ্ধান্ত নেবে ঋণ পুনঃ তফসিল করবে কি না। ঋণ পুনঃ তফসিল করা হলে ব্যাংকগুলোর নগদ প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ঋণ পুনঃ তফসিলের আবেদন করা ক্ষতিগ্রস্ত একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শত শত ব্যবসায়ী নিজের আবেদন বাছাই করাতে তোড়জোড় শুরু করেছেন। দৌড়ঝাঁপের পর কমিটির সভায় তাঁর আবেদন বাছাই হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁর ঋণ পুনর্গঠন হওয়ার কথা। দুটি ব্যাংক ঋণ পুনর্গঠনে এগিয়ে এলেও ঋণদাতা অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখনো সাড়া দেয়নি। এ কারণে কমিটির সভায় বাছাইয়ের পরও ঋণখেলাপি পরিচয় থেকে নিষ্কৃতি মিলছে না। যত দ্রুত খেলাপিমুক্ত হওয়া যায়, তত মঙ্গল। দিন যত যাচ্ছে, বন্ধ কারখানার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ঋণ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত যদি নেওয়া হয়, তবে তা দ্রুততম সময়েই হওয়া দরকার। অন্যথায় পুনর্গঠনের সুযোগ পেলেও সেটি কোনো কাজে লাগবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ঋণ পুনঃ তফসিলের ১ হাজার ২৫০ আবেদন জমা পড়েছে। সেখান থেকে ২৫০টি বাছাই করা হয়েছে।

ব্যাংক আটকে যাওয়া ঋণ সুদসহ আদায়ের চেষ্টা করে। এই আলাপ-আলোচনায় প্রায় সব ঋণের ক্ষেত্রে গ্রাহকেরা সুদ মওকুফের শর্ত জুড়ে দেন। গ্রাহক মনে করেন, ব্যাংক সহযোগিতা করতে চাইলে সুদ মওকুফ হয়ে যায়। পরিচালনা পর্ষদ চাইলে সুদ মওকুফ করতে পারে। সূত্র জানায়, সম্প্রতি সুদ মওকুফের আড়াই হাজার আবেদন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে জমা পড়েছে। যা ব্যাংক নিজের মতো করে চূড়ান্ত করবে। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো নির্দেশনা লাগে না।

ব্যাংকিং কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ধারা-৪৯ (চ)-তে বলা হয়েছে, ‘ঋণ শৃঙ্খলার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক সাধারণভাবে সকল ব্যাংক-কোম্পানি বা কোনো বিশেষ ব্যাংক-কোম্পানি বা বিশেষ শ্রেণির ব্যাংক-কোম্পানির জন্য ঋণ শ্রেণিকরণ ও সঞ্চিতি সংরক্ষণ, ঋণ মওকুফ, পুনঃ তফসিলীকরণ কিংবা পুনর্গঠন-সংক্রান্ত বিষয়সমূহে বাধ্যতামূলকভাবে অনুসরণীয় নির্দেশ প্রদান করতে পারবে।’

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের স্বার্থ বিবেচনায় ঋণ পুনঃ তফসিলে গঠিত কমিটির যাচাই-বাছাইয়ের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গভর্নর নিজেই সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। তবে ঋণ পুনঃ তফসিলের বিষয়ে পুরো কাজ করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো। তাদের গ্রাহক তারা ভালো করে ডিল করতে পারবে। সুদ মওকুফের বিষয়টি ব্যাংকের নিজস্ব ইস্যু।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তেল-পেঁয়াজে দাম বাড়তি, সবজিতে ফিরছে স্বস্তি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪০
টাটকা সবজি কিনছেন একজন। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে।
টাটকা সবজি কিনছেন একজন। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।

ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।

জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’

বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।

বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।

গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।

সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।

দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।

দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।

আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।

ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।

সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’

ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।

মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরা ব্যাংকের ২৫০তম শাখার উদ্বোধন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টানা চার মাস কমল রপ্তানি আয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।

এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।

জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।

নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।

পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।

তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।

সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?

বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল সিগারেট কোম্পানি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৮
৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল  সিগারেট কোম্পানি

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।

গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।

এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত