Ajker Patrika

শরীয়তপুরের জাজিরা

পদ্মায় বাল্কহেডে ভিড়তে সহায়তার নামে চাঁদাবাজি

  • প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই বালুবোঝাই জাহাজ এসে জাজিরার মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্টে যাত্রাবিরতি করে।
  • পাবনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের যমুনা নদী থেকে বালু বোঝাই করে শত শত বালুবাহী জাহাজ এখানে আসে।
  • পদ্মার তীরে ভিড়তে সহায়তার নামে প্রতিটি বাল্কহেড থেকে ২০০-৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়।
বেলাল হোসাইন, শরীয়তপুর
শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতুর কাছে যাত্রাবিরতি করে আছে সারি সারি বালুবহনকারী জাহাজ। ছবিটি গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তোলা। আজকের পত্রিকা
শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতুর কাছে যাত্রাবিরতি করে আছে সারি সারি বালুবহনকারী জাহাজ। ছবিটি গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তোলা। আজকের পত্রিকা

শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতুর কাছে যাত্রাবিরতি করা শত শত বালুবহনকারী জাহাজ থেকে প্রতিদিন চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। নদীর তীরে যাত্রাবিরতি করার সুযোগ করে দেওয়ার নামে প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই এই চাঁদাবাজি শুরু হয়। একেকটি বালুবহনকারী জাহাজ থেকে ২০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তুলছে স্থানীয় একটি চক্র।

বালুবহনকারী জাহাজের শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি চক্র ও নৌ পুলিশের অসাধু কয়েকজন সদস্য এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। তবে পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জানা গেছে, পাবনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের যমুনা নদী থেকে বালু বোঝাই করে প্রতিদিন শত শত বালুবহনকারী জাহাজে করে পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়। যাত্রাপথে বালুবহনকারী জাহাজগুলো পদ্মা সেতু থেকে ২ কিলোমিটার ভাটিতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্টে যাত্রাবিরতি করে। সারা রাত সেখানে থাকার পর ভোরে বালুবহনকারী জাহাজগুলো গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা ও শ্রমিকদের অভিযোগ, বালুবহনকারী জাহাজগুলো রাতে পদ্মার পাড়ে ভিড়িয়ে রাখতে সহায়তার নামে স্থানীয় সুরুজ মাদবর, জসিম মাদবর, শাজাহান চৌকিদার, রাজ্জাজ চৌকিদারসহ একটি চক্র চাঁদা তুলছে। প্রতিটি বালুবহনকারী জাহাজ থেকে ২০০-৫০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট গিয়ে দেখা যায়, বালুবোঝাই শত শত জাহাজ পদ্মার পাড়ে এসে একের পর এক ভিড়ছে। এ সময় বালুবহনকারী জাহাজের কাছে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা-পুলিশের দুজন সদস্যকে দেখা যায়।

জানতে চাইলে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফুয়াদ বলেন, ‘কেউ কোনো জামেলা করছে কি না, তা দেখার জন্য এখানে এসেছি।’ চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফুয়াদ বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই। কারা চাঁদাবাজি করছেন, তা আমরা জানি না।’

এ সময় উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা বাচ্চু ফরাজি বলেন, প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শত শত বালুবোঝাই জাহাজ এসে এখানে ভেড়ে। ভোরের আলো ফুটলে নৌযানগুলো আবার যার যার গন্তব্যে চলে যায়। এসব বালুবহনকারী জাহাজ থেকে সুরুজ মাদবর, জসিম মাদবর, শাজাহান চৌকিদার, রাজ্জাজ চৌকিদারসহ স্থানীয় একটি চক্র চাঁদা তুলছে। প্রতিটি জাহাজ থেকে ২০০-৫০০ টাকা আদায় করা হয়। চাঁদা না দিলে ভিড়তে বাধা দেওয়া হয়। এই চাঁদাবাজির সঙ্গে মাঝিরঘাট নৌ ফাঁড়ির পুলিশ ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা-পুলিশ জড়িত। তারা প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এসে এখান থেকে চাঁদা নিয়ে যায়।

বাচ্চু ফরাজি বলেন, ‘এই এলাকা পদ্মার ভাঙনকবলিত। প্রতিদিন শত শত বালুবহনকারী জাহাজ এখানে ভিড়তে দেওয়ায় নদীর তীরে আবারও ভাঙনের ঝুঁকি রয়েছে। তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের পদ্মাপারের মানুষের দাবি, এখানে যেন বালুবহনকারী জাহাজ ভিড়তে না দেওয়া হয়।’

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা হাজী কাশেম মাদবর বলেন, ‘পদ্মারপাড়ে বালু বোঝাই জাহাজগুলো নোঙর করায় তীর ভাঙনের উপক্রম হয়েছে। আমরা আতঙ্কে থাকি, কখন জানি আমাদের বাড়িঘর ভেঙে যায়। কিছু দুষ্কৃতকারী বালুবহনকারী জাহাজ থেকে টাকা খেয়ে এখানে যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। আমরা চাই, এখানে যেন কোনো বালুবহনকারী জাহাজ ভিড়তে না পারে।’

ওই এলাকার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মঙ্গল মাদবর বলেন, ‘একটি চক্র প্রতিটি বালুবহনকারী জাহাজ থেকে ২০০-৫০০ টাকা চাঁদা নিয়ে শত শত জাহাজ আমাদের এই পদ্মার পাড়ে ভেড়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।’

মহিউদ্দিন নামের বালুবহনকারী জাহাজের এক কর্মচারী বলেন, ‘আমরা যমুনা থেকে বালু নিয়ে এসেছি, ঢাকায় যাব। রাতে আমরা এখানে যাত্রাবিরতি করব। এজন্য এখানকার কিছু লোক আমাদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে।’

চাঁদা তোলার অভিযোগের বিষয়ে সুরুজ মাদবর বলেন, ‘স্থানীয় কিছু লোক বালুবহনকারী জাহাজ খুঁটি দিয়ে বেঁধে রাখতে সহায়তা করে এবং পাহারা দিয়ে রাখেন। তাই জাহাজের লোকজন খুশি হয়ে কিছু টাকা দেন। এখানে কেউ চাঁদাবাজি করে না।’

অভিযোগের বিষয়ে মাঝিরঘাট নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মোশারফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার নৌ ফাঁড়ির কেউ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়। যদি কারও জড়িত থাকার প্রমাণ পাই, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতু ও আশপাশে ভাঙনকবলিত এলাকায় কোনো বালুবহনকারী জাহাজ যেন ভিড়তে না পারে এবং সেগুলো সরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের ডিউটি থাকে। নিয়মিত ডিউটির অংশ হিসেবে পুলিশ সেখানে গিয়েছিল। আমাদের পুলিশের কেউ বালুবহনকারী জাহাজ থেকে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়। এ ছাড়া অন্য কেউ চাঁদাবাজি করছেন কি না, তা আমার জানা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনে ব্যালটের কাগজ কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে কিনছে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট ছাপানোর কাগজ কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনার কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড (কেপিএম) থেকে কিনছে নির্বাচন কমিশন। এ জন্য ইসি থেকে ৯১৫ টন কাগজের অর্ডার দেওয়া হয়েছে। কর্ণফুলী পেপার মিলস কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে ১৭৮.০০৯ টন কাগজ নির্বাচন কমিশনে সরবরাহ করেছে। বাকি ৭৩৬ টন ধাপে ধাপে উৎপাদন করে ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে সরবরাহ করা হবে। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী পেপার মিলসের (কেপিএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নির্বাচন কমিশন থেকে রঙিন (সবুজ, গোলাপি, অ্যাজুরলেইড) এবং বাদামি সালফেট কাগজ মিলে সর্বমোট ৯১৪.০০৯ টন কাগজের অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এর বাজারমূল্য প্রায় ১১.১১ কোটি টাকা। তিনি আরও জানান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কেপিএমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৫০০ টন, যার মূল্য ৪০-৪৫ কোটি টাকা। চলতি বছরের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১০৯৩ টন কাগজ উৎপাদিত হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি নির্বাচন কমিশনসহ বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিস (বিএসও), বিভিন্ন বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ২ হাজার ৮৯৪ টন কাগজ সরবরাহের আদেশ পাওয়া গেছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩৭.৩৩ কোটি টাকা। ৮ নভেম্বর পর্যন্ত কাগজ বিক্রি হয়েছে ৯২৩ টন।

প্রসঙ্গত, ১৯৫৩ সালে ৬৮ একর জমি এবং ৪৩১ একর আবাসিক স্থাপনায় প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি উপমহাদেশের বৃহত্তম কাগজ কল হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল। সাত দশকের পুরোনো এই প্রতিষ্ঠানে এখনো কাগজ উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘দামি মোবাইল ফোন কেনার টাকা না পেয়ে’ কলেজছাত্রের আত্মহত্যা

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা )প্রতিনিধি
রাব্বি হাসান অনিক। ছবি: সংগৃহীত
রাব্বি হাসান অনিক। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় রাব্বি হাসান অনিক (১৭) নামের কলেজছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পরিবারের কাছে থেকে দামি মোবাইল ফোন কেনার টাকা চেয়ে না পেয়ে কীটনাশক পান করে অনিক। গতকাল রোববার রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় সে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

অনিক কেন্দুয়া পৌরসভার বাদেআঠারবাড়ী গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে। সে ময়মনসিংহের সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

জানা গেছে, অনিক কয়েক দিন আগে বাড়িতে আসে। দামি মোবাইল ফোন কেনার জন্য পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা আবদার করে সে। কিন্তু অভিভাবকেরা এতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে রাগ করে গত শনিবার রাতে সে কীটনাশক পান করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল রাত ৯টার দিকে সে মারা যায়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রামের বাড়িতে আনার পর আজ তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিহির রঞ্জন দেব বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা মুখ খুলছে না। তবে শুনেছি, দামি মোবাইল ফোন কেনার টাকা চেয়ে না পাওয়ায় এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শরীয়তপুরে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশু। ছবি: আজকের পত্রিকা
পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশু। ছবি: আজকের পত্রিকা

শরীয়তপুরের জাজিরায় পুকুরে ডুবে সিয়াম (৩) ও আবদুল্লাহ (৪) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের হাজী তাহের মল্লিকেরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সিয়াম ওই গ্রামের মাদ্রাসাশিক্ষক আবু নাঈমের ছেলে এবং আবদুল্লাহ একই গ্রামের দুলাল মল্লিকের ছেলে। তারা সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানা গেছে, সকালে শিশু দুটি বাড়ির আঙিনায় খেলছিল। একপর্যায়ে পরিবারের অগোচরে তারা বাড়ির পেছনের পুকুরে পড়ে যায়। এদিকে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন স্বজনেরা। পরে পুকুর থেকে শিশু দুটির নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের জাজিরা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় বাসিন্দা আজহার মোল্লা বলেন, বাচ্চা দুইটা প্রতিদিন সকালে একসঙ্গে খেলত।

আরেক স্থানীয় নারী রুবিনা বেগম জানান, ‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম বাচ্চারা হয়তো পাশের বাড়িতে গেছে। পরে সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করে পুকুর থেকে তাদের উদ্ধার করি।’

নিহত শিশু সিয়ামের বাবা আবু নাঈম বলেন, ‘আমার বাবাটা খুব শান্ত ছিল। কে জানত এটাই শেষ সকাল ছিল ওর জীবনের। আল্লাহ যেন এই কষ্ট কাউকে না দেন।’

এ বিষয়ে নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর ঢালী বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করছি এবং সবাইকে শিশুদের নিরাপত্তায় আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল বলেন, ‘তাহের মল্লিকেরকান্দি গ্রামে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বকেয়া বেতনের দাবিতে ডিইপিজেড শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

সাভার(ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ২১
বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) চারটি বন্ধ কারখানা চালু ও বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। আজ সোমবার ডিইপিজেডের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। পরে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস শেল নিক্ষেপ ও জলকামান দিয়ে গরম পানি ছিটিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বকেয়া বেতনের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিক্ষোভকারীরা জানান, গত ২২ অক্টোবর হঠাৎ করে একই মালিকানাধীন গোল্ড টেক্স লিমিটেড, গোল্ড টেক্স গার্মেন্টস, সাউথ চায়না ব্লিচিং অ্যান্ড ডাইং ফ্যাক্টরি লিমিটেড এবং অ্যাক্টর স্পোর্টিং লিমিটেড সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বন্ধ ঘোষণার আগে তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়নি। কয়েকবার আশ্বাস দিলেও বেতন পরিশোধ করা হয়নি।

আজ সোমবার সকাল ৮টার দিকে বকেয়া বেতন ও বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকেরা ডিইপিজেডের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং একপর্যায়ে মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস শেল নিক্ষেপ ও জলকামান দিয়ে গরম পানি ছিটিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ বিষয়ে ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, সাউথ চায়না ব্লিচিং অ্যান্ড ডাইং ফ্যাক্টরি লিমিটেড, গোল্ড টেক্স লিমিটেড, গোল্ড টেক্স গার্মেন্টস ও অ্যাক্টর স্পোর্টিং লিমিটেড সাময়িকভাবে বন্ধ এই চারটি কারখানার মধ্যে তিনটির শ্রমিকদের আড়াই মাসের এবং অন্য একটির দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বন্ধ কারখানাগুলো চালুর চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ। যদি তাঁরা ব্যর্থ হন তবে নির্দিষ্ট সময় পর সরকারি নিয়ম অনুসারে কারখানা বিক্রি করে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করা হবে।

আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরাতে গেলে শ্রমিকেরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় জলকামান দিয়ে পানিয়ে ছিটিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে মহাসড়ক অবরোধ করলে কয়েকটি কাঁদানে গ্যাস শেল নিক্ষেপ করে তাদের সরাতে হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত