Ajker Patrika

৮ মাস ধরে বেতন নেই, মানবেতর জীবন রাজশাহীর সাকোয়াটেক্সের শ্রমিকদের 

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
৮ মাস ধরে বেতন নেই, মানবেতর জীবন রাজশাহীর সাকোয়াটেক্সের শ্রমিকদের 

কেউ তিন মাস, কেউ আট মাস ধরে বেতন পাননি। তাই দিতে পারেননি বাড়ি ভাড়া, দোকানে ভরেছে বাকির খাতা। কারও কারও সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। অসুখ-বিসুখে কেউ নিজের চিকিৎসাটা পর্যন্ত করতে পারছেন না। বেতন না পেয়ে এ রকম বিপদে পড়েছেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সদ্য সাবেক এমপি এনামুল হকের সোয়েটার কারখানা সাকোয়াটেক্সের প্রায় ৩০০ শ্রমিক।

অবশেষে বেতন আদায়ে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে কারখানার ভেতরে অনশন শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। সারা রাত তারা কারখানার ভেতরেই ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তারা ভেতরেই অবস্থান করে বিক্ষোভ করছিলেন।

রাজশাহী নগরীর বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত সাকোয়াটেক্স নামের এই কারখানাটি। এটি তিনবারের সাবেক এমপি এনামুল হকের এনা গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্রায় ৩০০ শ্রমিক কর্মরত আছেন এই সোয়েটার কারখানায়। সবার বেতন বকেয়া পড়েছে। 

কারখানার লিংকিং অপারেটর আশা বেগম বলেন, ‘এখানে শ্রমিকেরা উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে পারিশ্রমিক পান। মাসে গড়ে তারা ১৭ হাজার টাকা করে বেতন পান। কারখানার ২০০ শ্রমিকের কেউ সর্বনিম্ন তিন মাস এবং সর্বোচ্চ আট মাসের বেতন পাবেন। আমি নিজে পাব চার মাসের বেতন। প্রতি মাসে বেতন না পাওয়ার কারণে বাড়িভাড়া বাকি পড়েছে। দোকানে অনেক টাকা বাকি পড়েছে। এখন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছি না। নতুন বছরে বাচ্চাদের স্কুলড্রেস করে দেওয়ার মতো টাকাও নেই। খুব বিপদে আছি।’ 

সম্পা খাতুন নামের আরেক নারী শ্রমিক বলেন, ‘কেউ বেতন চাইতে গেলে কারখানার কর্মকর্তারা দুর্ব্যবহার করে। যারা বেতন চায়, তাদের নামের তালিকা করা হয়। এর পরদিন থেকে গেট দিয়ে আর ওই শ্রমিকদের কারখানায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। এভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। সম্প্রতি এভাবে ১৫ থেকে ২০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এবার আমরা এক জোট হয়ে আন্দোলন শুরু করেছি। আমাদের আর চাকরির দরকার নাই, বেতনের দরকার।’ 

সেলিনা বেগম নামের আরেক নারী কর্মী বলেন, ‘বেতন চাইতে গেলে জোর করে সাদা কাগজে সই নেয়। বলে, এটা রিজাইনের কাগজ। বেতন দিয়ে দেবে। তারপর বাইর করে দেয়। ওই বেতন আর দেয় না। তিন মাসের বেতনও মেরে খেয়ে নেয়। গত ঈদেও আমার এতিম বাচ্চাকে নিয়ে খালিমুখে কাটিয়েছি। বেতন দেয়নি। এখানে কাজ করে শ্রমিকদের এই অবস্থা।’ 

কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পিয়ারা বেগম নামের এক নারী শ্রমিক। তিনি বলেন, ‘আমি আর আমার ছেলে তুষার এখানে কাজ করি। তিন মাস-চার মাস হয়ে যাচ্ছে বেতন বন্ধ। দুই মা-ব্যাটারই বেতন বন্ধ। আমরা চলব কী করে? এই দুঃখের কথা তো কাউকে বলা যায় না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এই ভোটের সময় বেতন চাইতে গেলে বলল, মালিক (এনামুল হক) নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। ভোট পার হলে বেতন দেবে। ভোটে তিনি হেরে গেছেন। বেতনের খবর নাই।’ 

শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানায় তারা বেতনের দাবিতে অবস্থান নিলে পুলিশ আসে। কিন্তু তারা কারখানার পক্ষ নিয়েই কথা বলে। অবস্থান নিলে লাঠিপেটা করে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। 

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক শ্রমিক বলেন, ‘মালিকের অনেক টাকা আছে, তাই পুলিশ তাদেরই পক্ষ নেয়। আমাদের টাকা নেই, তারা আমাদের লাঠিপেটা করতে চায়।’ 

শ্রমিকেরা জানান, তিন-চার মাস ধরেই প্রতি সপ্তাহে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়। সপ্তাহে সোমবার কিংবা বৃহস্পতিবার বেতন দেওয়া হবে বলে কর্মকর্তারা জানান। কিন্তু বেতন দেওয়া হয় না। মাসের পর মাস তারা এভাবে বেতন ছাড়া মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। 

শ্রমিকেরা যখন এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন সেখানে আসেন আইটি ইনচার্জ মো. শামীম। তিনি বলেন, বিকেলের মধ্যে বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। শ্রমিকদের এসব কথা যেন প্রচার করা না হয়। 

এ সময় শ্রমিকদের তোপের মুখে পড়েন শামীম। শ্রমিকেরা বলেন, প্রতি সপ্তাহে দুই দিন তাদের বেতন পরিশোধ করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেতন দেওয়া হয় না। 

এ সময় শামীম বলেন, ‘বাংলাদেশের কারখানায় এমনই হয়।’

শ্রমিকেরা তিন থেকে আট মাসের বেতন বকেয়া থাকার কথা বললেও এনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাবেক এমপি এনামুল হক বলেন, ‘শ্রমিকদের মাত্র এক মাসের বেতন বাকি আছে। সম্প্রতি কারখানার সোয়েটার রপ্তানি নিয়ে একটু ঝামেলা হওয়ায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা যায়নি। আজ বিকেলের মধ্যেই শ্রমিকদের বেতন দিয়ে দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় এসে মারা যাওয়া নিরব জনকণ্ঠের সাবেক কর্মী

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
মো. নিরব হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
মো. নিরব হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে এসে মারা যাওয়া মো. নিরব হোসেন (৫৬) দৈনিক জনকণ্ঠের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে। রাজধানীর বড় মগবাজারে তিনি পরিবারসহ বসবাস করতেন। মৃতের বড় ভাই মো. বাহাদুর হোসেন আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাহাদুর হোসেন জানান, খালেদা জিয়ার জানাজায় শরিক হতে নিরব হোসেন তাঁর এক বন্ধুকে নিয়ে রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় যান। জানাজার সময় অতিরিক্ত মানুষের ভিড়ের চাপে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হলেও ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, কর্মজীবনে মো. নিরব হোসেন ১৯৯৮ সাল থেকে পাঁচ বছরের বেশি সময় দৈনিক জনকণ্ঠে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

চব্বিশের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে নিরব হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পরে সরকারিভাবে চিকিৎসার জন্য তাঁকে থাইল্যান্ড পাঠানো হয় এবং চিকিৎসা শেষে সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি সই না করলে ইউএনও সই করবে না’—এলজিইডি প্রকৌশলীর ভিডিও ভাইরাল

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১১
প্রকৌশলী আব্দুল খালেক । ছবি: সংগৃহীত
প্রকৌশলী আব্দুল খালেক । ছবি: সংগৃহীত

‘আমি সই না করলে ইউএনও (ফাইলে) সই করবে না’—ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) প্রকৌশলী আব্দুল খালেকের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে চাহিদামতো ঘুষের টাকা না পেয়ে ওই প্রকৌশলীকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির (ঠিকাদার প্রতিনিধি) সঙ্গে এমন কথা বলতে শোনা গেছে।

৩১ সেকেন্ডের ভিডিওটি গোপনে তাঁর কার্যালয় থেকে ধারণ করা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিওটি প্রথম পোস্ট করা হয় স্থানীয় সাংবাদিক নিজাম নকিবের ‘নগদ খবর’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে।

জানতে চাইলে নিজাম নকিব জানান, গত মঙ্গলবার এক ব্যক্তি তাঁকে ভিডিওটি পাঠিয়েছেন এবং এটি আজকে ধারণ করা বলে জানান তিনি। তবে ওই ব্যক্তি নিজের নাম ইমতিয়াজ আসিফ বললেও অন্য পরিচয় গোপন রাখেন।

ভিডিওতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির (ঠিকাদার প্রতিনিধি) সঙ্গে কথা বলার আগে কাজের বিলের ফাইল স্বাক্ষর করার সময় ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে। এ ছাড়া নতুন করে আরও পাঁচ হাজার টাকা না দেওয়ায় গড়িমসি করতে থাকেন ওই প্রকৌশলী। একপর্যায়ে তাঁকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে পকেটে রাখতে দেখা যায়।

নগরকান্দা এলজিইডি প্রকৌশলী। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
নগরকান্দা এলজিইডি প্রকৌশলী। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

এ সময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘স্যার, রাখেন এইটা স্যার, বিলের ফাইল ছাড়ার সময় ৪৫ হাজার টাকা নিলেনই আপনি আমার কাছ থেকে। রাখেন স্যার, তিন হাজার টাকা রাখেন, পাঁচ হাজার টাকা নাই।’

পরে প্রকৌশলী আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমি সই করব, তারপর ইউএনও সই করবে। আমি সই না করলে ইউএনও (ফাইলে) সই করবে না।’

ভিডিওটির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী আব্দুল খালেক মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক বদমাশ ভিডিওটি করেছে। আমি তাকে চিনিও না, জানিও না। আন্দাজে কী কয় কী হয়, যা পারে করুক। এগুলো নিয়ে এখন আর কিছু বলার নেই।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহরাজ শারবীন বলেন, ‘ভিডিওটি পূর্বের, আমি দেখেছি। এ ছাড়া আমি নতুন এসেছি। এসব বিষয়ে তাদের ডিপার্টমেন্ট (এলজিইডি) থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনোয়ারায় সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার দুই শিশুর পরিচয় মিলেছে, বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আনোয়ারায় দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আনোয়ারায় দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কনকনে শীতের মধ্যে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাদের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলায়। আজ বুধবার দুপুরে খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ওই শিশুদের বাবা দাবি করে আনোয়ারার ইউএনও ও থানার ওসির সঙ্গে দেখা করেন। এ ছাড়া আদালতের নির্দেশে দুই শিশুর বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রশাসন।

এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের মাজারগেট এলাকা থেকে আয়শা (৪) ও মোরশেদ (২) নামের শিশু দুটিকে উদ্ধার করে নিজের হেফাজতে রাখেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মহিম উদ্দিন। গত সোমবার সারা দিন আনোয়ারা থানা ও উপজেলা প্রশাসন ওই শিশুদের পরিবার ও অভিভাবকদের তথ্য পেতে চেষ্টা করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই দুই শিশুকে নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে যান আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার। জেলা প্রশাসক তাদের চিকিৎসা ও যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নেন। পরে দুই শিশুর মধ্যে আয়শাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়। গুরুতর অসুস্থ মোরশেদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আজ দুপুরে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন শিশুদের বাবা খোরশেদ। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েদ চৌধুরী।

পুলিশের হেফাজতে থাকা খোরশেদ আলমের বরাতে পুলিশ জানায়, খোরশেদ পেশায় একজন অটোরিকশাচালক। পাশাপাশি বাঁশখালীর একটি ভাঙারির দোকানেও কাজ করেন। খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার মহামনি এলাকায় তাঁর বাড়ি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাঁশখালীর মিয়ার বাজার লস্করপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তাঁর স্ত্রীর বাড়ি সাতকানিয়া। ৫-৬ মাস আগে তাঁর স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যান। স্ত্রী তাঁর ছোট প্রতিবন্ধী শিশুটিকে দিয়ে ভিক্ষা করাতেন। এটা নিয়েও স্বামী-স্ত্রীর একাধিকবার ঝগড়া হয়েছিল।

এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিশু দুটিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আমলে নিয়ে আজ চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাখাওয়াত হোসেন আনোয়ারা থানাকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আনোয়ারা থানার শিশুবিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তা শিশু আইন-২০১৩-এর বিধান অনুযায়ী কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সে সম্পর্কে ৫ জানুয়ারির মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালতের আদেশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে আনোয়ারা থানার ওসি মো. জুনায়েত চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শিশুদের বাবার খোঁজ পেয়েছি। বিস্তারিত জানার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘আদালত জানতে চেয়েছেন শিশুদের ব্যাপারে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছি।’

ইউএনও তাহমিনা আক্তার বলেন, সড়কের পাশে পাওয়া দুই শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তাদের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বড় শিশুকে আশ্রয়দানকারী মহিম উদ্দিনের হেফাজতে রাখা হয়। তিনি বলেন, আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং প্রশাসন স্বামী-স্ত্রী দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াত প্রার্থী মাসুদের বাড়ি নেই, পেশা ব্যবসা ও পরামর্শক

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের প্রার্থী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের কোনো বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট নেই। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী ও পরামর্শক। বছরে আয় ১০ লাখ ১২ হাজার ৮৩০ টাকা।

নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

হলফনামা অনুযায়ী, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৬৪ টাকা। তাঁর বার্ষিক আয় ১০ লাখ ১২ হাজার ৮৩০ টাকা। এর বিপরীতে তিনি ৪৫ হাজার ৪২৫ টাকা আয়কর পরিশোধ করেছেন।

হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁর হাতে নগদ রয়েছে ৪৩ হাজার ২৫০ টাকা। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে তাঁর জমা রয়েছে ১৬ লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ টাকা। পেশা হিসেবে তিনি নিজেকে পরামর্শক উল্লেখ করেছেন।

এ ছাড়া বন্ড, ঋণপত্র এবং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর ৩ লাখ ৫ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে।

হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নামে কোনো জমি, বাড়ি কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট নেই। তবে তাঁর পরিবারের মোট ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

তাঁর স্ত্রী পেশায় একজন চিকিৎসক। সর্বশেষ আয়কর বিবরণী অনুযায়ী, তাঁর স্ত্রীর বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৪১ হাজার ৮৭৫ টাকা এবং মোট সম্পদের পরিমাণ ১২ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৩ টাকা।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের মালিকানায় রয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকার বৈদ্যুতিকসামগ্রী এবং ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র। তবে তাঁর বা তাঁর পরিবারের নামে কোনো যানবাহন বা ব্যক্তিগত গাড়ি নেই।

হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর আয়ের প্রধান উৎস ব্যবসা ও পরামর্শক পেশা। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ ২ হাজার ৮৩০ টাকা এবং পরামর্শক পেশা থেকে আয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খাত থেকে তাঁর আয় রয়েছে ৩০ হাজার টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত