Ajker Patrika

ছেলের অপূর্ণতা ঘুচিয়েছিলেন মেয়ের জামাই, আন্দোলনে আমিরুলের মৃত্যুতে দিশেহারা পরিবার 

সাইফুল আলম তুহিন, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ)
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১: ৪৪
ছেলের অপূর্ণতা ঘুচিয়েছিলেন মেয়ের জামাই, আন্দোলনে আমিরুলের মৃত্যুতে দিশেহারা পরিবার 

সোহরাব-আমেনা দম্পতির ঘরে একে একে জন্ম নেয় চার কন্যাসন্তান। ছেলের অভাব পূরণ করতে বড় মেয়ের স্বামী হাফেজ আমিরুল ইসলাম রাজি হয়ে চলে আসেন ঘরজামাই হয়ে তাঁদের সংসারে। মা–বাবা হারা আমিরুল ক্রমেই ভরসা হয়ে উঠেন পরিবারটির। ৯ মাস আগে হঠাৎ হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান সোহরাব আলী। শ্বশুরের হঠাৎ মৃত্যুতে পরিবারের চরম বিপদের মুখে মেয়ের জামাই হিসেবে সংসারের হাল ধরেন তিনি। 

চরম দুর্ভোগে পরিবারটির হাল ধরা সেই আমিরুল গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার উত্তরা আজিমপুর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান। আমিরুল-তনজিন আক্তার দম্পতির ঘরে রয়েছে তিন শিশুসন্তান। দুই মেয়ের মধ্যে সবার বড় মেয়ের বয়স সাড়ে চার বছর। ছোট মেয়ের বয়স আড়াই বছর এবং সবার ছোট ছেলের বয়স দেড় বছর। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অভিভাবক শূন্য পরিবারটি এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে, হয়ে পড়েছে দিশেহারা। 

অল্প বয়সে স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ আমিরুলের স্ত্রী তনজিন আক্তার। নিজের এক প্রতিবন্ধী মেয়েসহ চার মেয়ে ও মেয়ের ঘরের তিন শিশুসহ মোট ৯ সদস্যের পরিবার নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আমিরুলের শাশুড়ি আমেনা খাতুন। এই শিশুসন্তানদের মানুষ করতে সরকারি সহযোগিতার আশায় দিন গুনছেন পরিবারটি। 

জানা গেছে, ঘরজামাই থাকার শর্তে প্রায় ১০ বছর আগে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ছলিমপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মরহুম জাফর আলীর ছেলে আমিরুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফুলবাড়িয়ার ধুরধুরিয়া গ্রামের সোহরাব-আমেনা দম্পতির বড় মেয়ে তনজিন আক্তারকে বিয়ে করেন। 

শিশু বয়সেই মা–বাবা হারা আমিরুল সেই থেকেই শ্বশুরের সংসারে মিলেমিশে সুখে-শান্তিতে বসবাস করে আসছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সে ঢাকার উত্তরা আজমপুর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে মারা যান। 

সেখানকার স্থানীয় একটি মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকান করতেন। শ্বশুর মারা যাওয়ার পর তাঁর আয়েই নিজের এবং শ্বশুরের পরিবারের লোকজন চলত। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার দিন দুপুরে গ্রামের বাড়ির নলকূপের মোটর ঠিক করাতে টাকা পাঠানোর বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। পরে বিকেলে আবার কল দেন। কথা বলতে চাইলে তখন আর কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে তাঁর পরিবারের লোকজন। 

অনেক খোঁজাখুঁজির তিন দিন পর স্থানীয় একটি হাসপাতালে তাঁর মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে ২২ জুলাই সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় তাঁর শ্বশুরবাড়ির কবরস্থানে শ্বশুরের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

হাফেজ আমিরুল ইসলামের পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা আমিরুল ইসলামের শাশুড়ি মোছা. আমেনা খাতুন আজকের পত্রিকাকে কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘ছেলেসন্তানের অভাব পূরণ করতে বড় মেয়ের জামাইকে নিজের সংসারে আনছিলাম। সুখে–শান্তিতেই কাটছিল আমাদের জীবন। ৯ মাস আগে আমিরুলের শ্বশুর স্ট্রোক করে মারা যায়। আর এহন আন্দোলনে সেও মারা গেল। আমার জামাই বাবা আমাকে ছেলের অভাব কোনো সময় বুঝতে দেয়নি। এহন আমার সংসারে আর কোনো অভিভাবক রইল না। এহন কে দেখব এই এতিম শিশুদের। গুলিবিদ্ধ হওয়ার দিন বিকেলেও সে আমার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছে। বাড়িতে পানির মোটর ঠিক করতে মিস্ত্রি আসার খোঁজখবর নিয়ে বিকাশে টাকা পাঠানোর কথা বলেছে। সন্ধ্যার কিছু সময় আগে থেকে আর মোবাইল যোগাযোগ করে পাওয়া যাচ্ছিল না তাকে। পরের দিন পর্যন্তও মোবাইল বন্ধ থাকায় আমরা বেশি চিন্তায় পড়ি। অনেক খোঁজাখুঁজির তিন দিন পর ওইখানের একটি হাসপাতালে মরদেহের খোঁজ মেলে। হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আরও এক দিন পরে আমার জামাই বাবার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে এসে দাফন করা হয়। সরকার সহযোগিতা না করলে এই এতিম শিশুদের নিয়ে আমাদের মরা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’

আমিরুলের চাচা শ্বশুর মো. আলী হোসেন বলেন, ‘আমিরুল অনেক ভালো ছিল। ওর মতো নম্র, ভদ্র ছেলে হয় না। আমার ভাইয়ের সঙ্গে তার বন্ধুর মতো সম্পর্ক ছিল। কেমনে কী হয়ে গেলো। তার বাড়ি ত্রিশালের ছলিমপুর হলেও সে আমাদের ধুরধুরিয়ার জামাই হওয়ার পর থেকে এখানেই স্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করে। তার পাঁচ বছরের কম বয়সী তিনটি শিশুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। ওদের পাশে সকলের এগিয়ে আসা উচিত।’

আমিরুল ইসলামের জন্মভিটা ত্রিশালের ছলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. দুলাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমিরুল অনেক ভালো মনের মানুষ ছিলেন। শিশু বয়সেই তার মা–বাবা মারা গেছে। সে ঘরজামাই হয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফুলবাড়িয়ার ধুরধুরিয়া গ্রামে প্রায় ১০ বছর ধরে থাকছে। শুনছি সে ঢাকার একটি মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করত। তার মৃত্যুতে আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যৌথ অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ গাংনীতে গ্রেপ্তার ১

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৬
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনীতে অস্ত্র ও গুলিসহ মোশারফ হোসেন (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নের জোড়পুকুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মোশারফ হোসেন উপজেলার জোড়পুকুর গ্রামের মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে।

যৌথ বাহিনী জানায়, গাংনী উপজেলার জোড়পুকুর গ্রামে মেহেরপুর সেনাক্যাম্প ও র‍্যাব-১২-এর সদস্যরা মোশারফ হোসেনের বাড়ি তল্লাশি করে ভারতীয় একটি ওয়ান শুটার পিস্তল ও দুটি তাজা গুলি উদ্ধার করে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা (মাদক, অবৈধ অস্ত্র ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড) রয়েছে বলে যৌথ বাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়। মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, অস্ত্রসহ মোশারফ গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় গাংনী থানায় মামলা হয়েছে। তাঁকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎সাত শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে কুবিতে ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচি

কুবি প্রতিনিধি 
আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কুবির ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচি শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কুবির ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচি শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎‘ইন্সপায়ারিং ইউনিটি, রান ফর ভিক্টোরি’ স্লোগানকে ধারণ করে ‘রান উইথ শিবির’ কর্মসূচির আয়োজন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। ‎শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে দক্ষিণ মোড় দিয়ে ম্যাজিক প্যারাডাইস ও সিসিএন রোড অতিক্রম করে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে এসে শেষ হয়।

‎‎জানা যায়, এই কর্মসূচিতে দেড় হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অংশ নিতে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেন। এর মধ্যে সাত শতাধিক শিক্ষার্থী উপহার গ্রহণ করেন এবং কর্মসূচিতে অংশ নেন। যাঁরা রেজিস্ট্রেশন করেছেন, কিন্তু অংশ নিতে পারেননি; তাঁদের কাছেও উপহার পৌঁছে দেওয়া হবে।

‎‎ইংরেজি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাকসুদ নুর বলেন, ‘আজকে শিবিরের এই উদ্যোগকে আমি সমর্থন করি। আজকের “রান উইথ শিবির” প্রোগ্রাম আমাদের মননশীলতা ও মেধার বিকাশে সহায়তা করবে। এটিকে ধারণ ও সমর্থন করার জন্য আমরা ভোরে উঠে গেছি। আশা করি, সব রাজনৈতিক সংগঠন আমাদের সৃজনশীল কাজে সহযোগিতা ও অনুপ্রাণিত করবে।’

‎কুবি শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসাইন বলেন, ‘আমাদের মন আজ খুব বেশি খারাপ। কারণ, আমরা গতকাল দেখেছি জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী, ফ্যাসিবাদের ভিত যারা কাঁপিয়ে তুলেছিল এবং জুলাই আন্দোলনের পরেও যারা থেমে নেই, তাদের মধ্যে অন্যতম শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। হাদি গুলিবিদ্ধ হয় নাই, গুলিবিদ্ধ হয়েছি আমরা তার হাজারো, লাখো সাথি, গুলিবিদ্ধ হয়েছে জুলাই আন্দোলন, গুলিবিদ্ধ হয়েছে সারা বাংলাদেশ।’

‎শাহাদাত হোসাইন আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি, স্বৈরাচারী শক্তি ইন্ডিয়া পালিয়ে গিয়েও তাদের কার্যক্রম থামায় নাই। এই শক্তিকে চিরতরে নির্মূল করার জন্য সকল ছাত্রসংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই। তারা খুন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদ সাইফুল্লাকে, তারা পাহাড় থেকে ফেলে দিয়েছিল সাইফুল ইসলাম ভুট্টোকে।’

‎‎ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কলেজ সম্পাদক ও কুবি শাখার সাবেক সভাপতি হাফেজ ইউসুফ ইসলাহি বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য হলো গতকাল নির্মমভাবে গুলিবিদ্ধ হওয়া শরিফ ওসমান হাদির জন্য দোয়া করা। শরিফ ওসমান হাদি জুলাই বিপ্লবের অন্যতম নায়ক এবং রাজপথের একজন লড়াকু সৈনিক। আমাদের দেশে বারবার দেশপ্রেমিক ও সচেতন ভাইয়েরা হামলার শিকার হচ্ছেন। এর ফলে দেশ বারবার মূল পথ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। যাঁরা দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের বিভিন্নভাবে দমন করা হয়েছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রভাব ও হস্তক্ষেপের কারণে অনেক সময় দেশপ্রেমিক শক্তিকে সামনে এগোতে দেওয়া হয়নি।’

‎‎কুবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ইসলামী ছাত্রশিবির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কতৃক আয়োজিত আজকের রান উইথ শিবির কর্মসূচিতে যারা অংশগ্রহণ করেছেন, সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি। আমাদের আরও অনেক ভাই রেজিষ্ট্রেশন করেছেন, কিন্তু এত সকালে গাড়ি না পাওয়ার কারণে শহর থেকে আসতে পারছেন না। আমরা তাঁদের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির গ্রামের বাড়িতে চুরি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৩
ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটিতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে শহরের খাসমহল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে নলছিটি থানা-পুলিশ জানিয়েছে।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলেই পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় রওনা দেন। এই সুযোগেই ফাঁকা বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে।

ওসমান হাদির চাচাতো ভাই সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেউ না থাকার সুযোগে জানালা ভেঙে চোর ঘরে প্রবেশ করে। এখন কী পরিমাণ মালামাল নিয়েছে, সেটা আমরা জানতে পারিনি।’

নলছিটি থানার ওসি আরিফুল আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। আমাদের তদন্ত চলছে।’

গতকাল শুক্রবার বেলা সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। দুপুরবেলা মতিঝিলের একটি মসজিদে প্রচার শেষে সঙ্গীদের নিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।

চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় পেছন দিক থেকে মোটরসাইকেলে করে আসা দুই যুবকের একজন তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। গুলি সরাসরি তাঁর মাথায় আঘাত করে।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মস্তিষ্কে একটি অস্ত্রোপচার শেষে খুলি খুলে রেখে তাঁকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হাদির জীবন সংকটাপন্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে গুলি: সন্দেহভাজনের তথ্য চেয়ে পুরস্কার ঘোষণা ডিএমপির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৭
হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন। ছবি: ডিএমপি
হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন। ছবি: ডিএমপি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা চালানো সন্দেহভাজনদের ব্যাপারে তথ্য চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ–ডিএমপি। হামলাকারীদের ব্যাপারে কারও কাছে কোনো তথ্য থাকলে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল করে পুলিশকে অথবা মতিঝিল জোনের ডিসি এবং পল্টন থানার ওসিকে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার তালেবুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেছেন, গতকাল শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে।

সন্দেহভাজন খুনির বিষয়ে তথ্য চেয়েছে ডিএমপি। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সন্দেহভাজন খুনির বিষয়ে তথ্য চেয়েছে ডিএমপি। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাঁকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে বা তাঁর সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।

ডিএমপি উক্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে কেউ কোনো তথ্য জানাতে চাইলে ডিএমপির মতিঝিল জোনের ডিসির ০১৩২০০৪০০০৮০ নম্বরে অথবা পল্টন থানার ওসির ০১৩২০০৪০১৩২ নম্বরে কল করে জানানোর অনুরোধ জানিয়েছে। তারা আরও বলেছে, সন্ধানদাতার পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং উপযুক্ত পুরস্কৃত করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত