Ajker Patrika

কাজ ফেলে টাকা নিয়ে ঠিকাদার লাপাত্তা, চুক্তি বাতিল

খুলনা প্রতিনিধি
সাড়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক সংস্কার প্রকল্পের কাজ। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচাল করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাড়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক সংস্কার প্রকল্পের কাজ। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচাল করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও অনিয়মের কারণে প্রায় ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের শিপইয়ার্ড সড়ক প্রকল্প সাড়ে তিন বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে। প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন খুলনা নাগরিক সমাজের নেতারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) প্রকল্প প্রস্তাবের ভিত্তিতে সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। সড়কটি খুলনা মহানগরীর অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার ও বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় শুধু এ এলাকার মানুষের নয়, নগরবাসীও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখনো নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় এই অঞ্চলের বাসিন্দাসহ নগরবাসীর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় এ প্রকল্প।

সূত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহাবুব ব্রাদার্স সড়কটির সংস্কারকাজ দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রেখে জনদুর্ভোগ তৈরি করেছে। এর ফলে ৭ আগস্ট মাহাবুব ব্রাদার্সের সঙ্গে কাজের চুক্তি বাতিল করে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। এতে মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক সংস্কার, লবণচরা সেতু ও মতিয়াখালী স্লুইসগেটের নির্মাণকাজ। কবে এ কাজ শুরু হবে, কেউ বলতে পারছে না। ফলে ওই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ আরও দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

কেডিএ থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আতাউর রহমান লিমিটেড অ্যান্ড মাহাবুব ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেডকে (জয়েন্ট ভেঞ্চার) কার্যাদেশ দেয় কেডিএ। পরে টাকার পরিমাণ বেড়ে ১৫৫ কোটি টাকা নির্ধারণ হয়। জমি অধিগ্রহণ ব্যয় ও নির্মাণব্যায় মিলে মোট খরচ দাঁড়ায় ২৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা।

সূত্রটি জানায়, প্রকল্পে ৩ দশমিক ৭৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি চার লেনে প্রশস্ত করে পুনর্নির্মাণ, দুই পাশে ড্রেন ও ফুটপাত, সড়কের মাঝে দশমিক ৯২ মিটার ডিভাইডার নির্মাণ, লবণচরায় ৬৬ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ এবং মতিয়াখালীতে স্লুইসগেট ও কালভার্ট নির্মাণের কথা ছিল। ইতিমধ্যে তারা ৭০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। কিন্তু অর্ধেকের বেশি কাজ এখনো বাকি।

একই অবস্থা লবণচরা সেতুর। ৬৬ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুর পাইলিং শেষ করেছে ঠিকাদার। ১০টি গার্ডারের মধ্যে মাত্র একটির কাজ শেষ হয়েছে। ৯টি বাকি রয়েছে। এখানেও মাটির নিচে লাভজনক কাজটুকু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। মতিয়াখালীতে দুই স্তরের স্লুইসগেটের মধ্যে এক স্তর শেষ করেছে মাহাবুব ব্রাদার্স। অন্য স্তর স্থাপন না করায় জোয়ারের সময় ওই গেট দিয়ে শহরের ভেতরে পানি প্রবেশ করছে।

সাড়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক সংস্কার প্রকল্পের কাজ। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচাল করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাড়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক সংস্কার প্রকল্পের কাজ। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচাল করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

এলাকাবাসী জানান, ঠিকাদার কাজ শুরুর পর তাঁদের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। সড়কের দুই পাশে খনন করে প্রায় এক বছর ধরে ফেলে রেখেছে।

এদিকে আজ দুপুরে নির্মাণাধীন খুলনা শিপইয়ার্ড সড়কস্থ দাদা ম্যাচ কোম্পানির সামনে সংবাদ সম্মেলন করে খুলনা নাগরিক সমাজ। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, সড়ক সংস্কারের জন্য বিভিন্ন স্থানে ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। বৃষ্টিতে খোয়া সরে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে পরিপূর্ণ সে গর্তে পড়ে উল্টে যাচ্ছে যানবাহনের চাকা। রূপসা সেতুর দুই সংযোগসড়কের অবস্থা খুবই খারাপ।

দেখা গেছে, সড়কের পাশে রূপসা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়, দাদা ম্যাচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শিপইয়ার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আল আমিন একাডেমি, লবণচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজী মালেক দাখিল মাদ্রাসা, ইব্রাহিম ক্যাডেট মাদ্রাসা, সরকারি সালাউদ্দিন ইউসুফ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও হাজী মালেক কলেজ রয়েছে।

সড়কের লবণচরা এলাকায় অবস্থিত বান্দা বাজারে প্রায় ৪৫০টি দোকান রয়েছে। এ বাজারের ব্যবসায়ীদের সংগঠনের নাম লবণচরা বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। সংগঠনের সভাপতি এনামুল কবির বলেন, ‘ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে পণ্য আনা যায় না। দূরের কেউ আমাদের কাছ থেকে পণ্য কেনেও না। শুধু রাস্তার কারণে অসংখ্য ব্যবসায়ী পথে বসে গেছে। প্রথম দিকে রাস্তার দুপাশে খাল কেটে ফেলে রেখেছিল দেড় বছর। তখনই কেনাবেচা বন্ধ হয়ে অনেকে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে। আমি নিজেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলাম।’

খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক মো. আরমান হোসেন জানান, সড়কের ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রেখেছিল ঠিকাদার। সাবেক গৃহায়ণ উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা একাধিকবার ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিলেও তারা শোনেনি। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। তাদের জামানতের ১২ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইজাদুর রহমান বলেন, ঠিকাদার কাজে গাফিলতি ও বিলম্ব করায় এবং কর্মপরিকল্পনা মোতাবেক কাজ না করায় ঠিকাদারকে বিভিন্ন সময়ে মোট ১৪টি ওয়ার্নিং লেটার দেওয়া হয়। এরপর তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পর অবশিষ্ট কাজের জন্য গত রোববার ২৪ আগস্ট টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর টেন্ডার ওপেনিং ও টেন্ডার অনুমোদন করে পুনরায় কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মো. ইজাদুর রহমান বলেন, কেডিএ হতে জনদুর্ভোগ লাঘবের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা হলেও ইতিপূর্বে নিয়োজিত ও চুক্তি বাতিল করা ঠিকাদার মাহাবুর ব্রাদার্স জেলা জজ আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা রুজুর মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

এদিকে মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহাবুব ব্রাদার্সের প্রকল্প ম্যানেজার মো. আশরাফ আলী বলেন, ‘যেহেতু আমাদের সঙ্গে কার্যাদেশের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে, সেহেতু প্রকল্প স্থানে থাকা সব মালামাল ও যন্ত্রপাতি ফেরত পাওয়ার জন্য আমরা মামলা করেছি।’

রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে খুলনা সাগরিক সমাজের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, নির্মাণকাজ অতিদ্রুত সম্পন্ন করা না হলে ভুক্তভোগী এলাকাবাসীসহ নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত