নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীতে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় লিফলেট বিতরণের সময় মোটরসাইকেলে আসা দুজন অস্ত্রধারী খুব কাছ থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তিনি এখন লাইফ সাপোর্টে আছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন।
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে। বিএনপি ঘটনাটিকে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ উল্লেখ করে আজ শনিবার ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে এ ধরনের সহিংসতা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ‘দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত’ চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। হামলার পর ঢাকাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল জুমার পর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট সড়কে বাইতুস সালাহ জামে মসজিদের উল্টো দিকের ‘ডক্টর টাওয়ার’-এর সামনে দিয়ে হাদি ব্যাটারিচালিত রিকশায় লিফলেট বিতরণ করে যাচ্ছিলেন। পেছন থেকে মোটরসাইকেল এসে রিকশার একদম কাছে গিয়ে চলন্ত অবস্থায় হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলিটি তাঁর বাঁ কানের পাশ দিয়ে মাথায় বিদ্ধ হয়। ঘটনার পর তাঁর সহকর্মীরা রিকশাতে করেই তাঁকে দ্রুত ঢামেকে নিয়ে যান।
গুলির সময় সাজ্জাদ খান নামের এক ব্যক্তি ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী এই ব্যক্তি বলেন, ওসমান হাদি ফকিরাপুলের দিক থেকে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় চড়ে পশ্চিমে বিজয়নগরের দিকে যাচ্ছিলেন। রিকশার পাশের আসনে আরেকজন ছিলেন। দুই ব্যক্তি একটি মোটরসাইকেলে করে অটোরিকশার পিছু নিয়ে তাঁদের অনুসরণ করছিল। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তির গায়ে কালো চাদর ছিল, যা দিয়ে তার হাত দুটি ঢাকা ছিল। অটোরিকশার পাশে এলে পেছনে বসা ব্যক্তি একটি আগ্নেয়াস্ত্র বের করে খুব কাছ থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে। মুহূর্তের মধ্যে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে বিজয়নগরের দিকে চলে যায়।
সাজ্জাদ খান বলেন, গুলির শব্দে রাস্তায় থাকা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রিকশা থামালে ভিড় জমে যায়। এই সময় হাদির মাথা ও কান থেকে রক্ত গড়িয়ে রাস্তায় পড়ছিল।
হাদির একজন সহযোদ্ধা বলেন, জুমার নামাজের পর মসজিদে তাঁদের লিফলেট বিলি কর্মসূচি ছিল। কথা ছিল, লিফলেট বিলি শেষে সবাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হয়ে দুপুরের খাবার খাবেন, আলোচনা করবেন। এর মধ্যেই হাদির ওপর হামলার খবর আসে।
ঘটনার পর পুলিশ, র্যাব, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীও যোগ দেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ডক্টর (ডিআর) টাওয়ারে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ব্যবহার করে হামলাকারীদের শনাক্তের কাজ শুরু করে।
গুলির একটি সিসিটিভির ভিডিওতে দেখা যায়, হাদির রিকশার খুব কাছে মোটরসাইকেলটি আসে, মুহূর্তেই আরোহী অস্ত্র বের করে গুলি করে এবং ফাঁকা রাস্তায় দ্রুতগতিতে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসাও উদ্ধার করে পুলিশ। জানতে চাইলে মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কে বা কারা কোন উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
তবে ইনকিলাব মঞ্চের একজন সদস্য গণমাধ্যমে দাবি করেছেন, যারা ওসমান হাদির ওপর গুলি চালিয়েছে, তারা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তাঁর প্রচারণা টিমে যোগ দিয়েছিল। সংগঠনের সদস্য মোহাম্মদ ওসামা জানান, একটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুজনের মধ্যে একজন ওসমান হাদির ওপর গুলি ছোড়ে। মাঝখানে কয়েক দিন তাদের দেখা যায়নি। কিছুদিন আগে তারা আবার এসে প্রচারণার কাজে যুক্ত হয়। গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ইতিমধ্যে ঘটনার ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা সব তথ্য যাচাই-বাছাই করছেন।
বিদেশি ফোন নম্বর থেকে হত্যার হুমকি
হাদি আগে থেকেই জানিয়ে আসছিলেন, তাঁকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়া হচ্ছে। গত নভেম্বর মাসে ৩০টি বিদেশি নম্বর থেকে ফোন ও বার্তার মাধ্যমে হুমকি পাওয়ার অভিযোগ করে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে দেওয়া সেই পোস্টে আওয়ামী লীগকে দায়ী করে হাদি লেখেন, ‘গত তিন ঘণ্টায় আমার নম্বরে আওয়ামী লীগের খুনিরা অন্তত ৩০টি বিদেশি নম্বর থেকে কল ও টেক্সট করেছে; যার সারমর্ম হলো—আমাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। তারা আমার বাড়িতে আগুন দেবে, আমার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণ করবে এবং আমাকে হত্যা করবে।’
ঢামেক ছেড়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, হাদির মাথার ভেতরে গুলি রয়েছে এবং তাঁর সার্জারি চলছিল। হাসপাতালে আনা স্বজনেরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা মাত্র একটি গুলিই ছোড়ে, সেটিই তাঁর মাথায় লাগে।
ওসমান হাদির সতীর্থরা ঢাকা মেডিকেলে ‘বি নেগেটিভ’ রক্ত খুঁজছিলেন। তাঁরা বলছেন, ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে হাদির প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। চিকিৎসকেরা রক্ত জোগাড় করতে বলেছেন। ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের সামনে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়।
সন্ধ্যার পর হাদির পরিবার তাঁকে ঢামেক হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক আসাদুজ্জামান জানান, প্রাথমিক অস্ত্রোপচারের পর পরিবারের অনুরোধে তাঁকে এভারকেয়ারে পাঠানো হচ্ছে এবং সেখানে চিকিৎসার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
যেভাবে আলোচনায় আসেন ওসমান হাদি
জুলাই আন্দোলন এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত ওসমান হাদি সম্প্রতি নজরকাড়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তাঁর তীব্র ভাষার বক্তব্যও আলোচনায় আসে। হাদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য তিনি খ্যাতি পান। হাদির গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটিতে। তাঁর পিতা ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক। হাদির শিক্ষাজীবন শুরু হয় নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায়, পরে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। একসময় ইংরেজি শেখার কোচিং সেন্টার ‘সাইফুরস’-এ শিক্ষকতা করেছেন।
সর্বশেষ তিনি ‘ইউনিভার্সিটি অব স্কলারস’ নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন বলে ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা জানিয়েছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ওসমান হাদির উদ্যোগে গড়ে ওঠে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। এবারের ডাকসু নির্বাচনে শিবির নেতৃত্বাধীন প্যানেল থেকে ভোট করে ইনকিলাব মঞ্চের ফাতিমা তাসনিম জুমা মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
ওসমান হাদি পরিবার নিয়ে ঢাকার পশ্চিম রামপুরায় থাকেন। তার স্ত্রী রাবেয়া ইসলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করেছেন। তাদের একটি সন্তান রয়েছে।
ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়ার পর ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তার ভগ্নিপতিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। হাদির বোন মাছুমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তিন বছর আগে ওসমান হাদিকে বলেছিলাম, ‘তোকেও কিন্তু ভারতের ‘‘র’’ বাঁচাতে দেবে না। আবরারকে যেভাবে মেরে ফেলেছে, তোকে-ও সেভাবে মেরে ফেলবে। দেশপ্রেমিক মানুষকে তারা বাঁচতে দেয় না।’
রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা
হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় এই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাদির ওপর হামলাকে অশনিসংকেত হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন একজন প্রার্থীকে গুলি করা হয়েছে। এটি স্পষ্ট একটি সংকেত, নির্বাচন বানচাল করার জন্য কোনো শক্তি আবার চক্রান্ত শুরু করেছে।
এর আগে হাদিকে দেখতে হাসপাতালে আসার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁকে নিরাপদে হাসপাতালে প্রবেশ করান।
সন্ধ্যায় ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যদি কেউ নতুন করে দেশে ফ্যাসিজম বা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়, তাহলে জনগণ তা প্রতিহত করবে এবং যথাযথ জবাব দেবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দলটি মনে করছে, এই হামলা শুধু একজন প্রার্থীর ওপর নয়, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার হওয়া গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার ওপরও সরাসরি আঘাত। হাদির প্রাণনাশের হুমকি থাকা সত্ত্বেও তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের ব্যর্থতা, দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতার উদাহরণ বলে এনসিপি মন্তব্য করেছে। ঢাকা-১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দেওয়া আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও এ ঘটনায় গতকাল ধানমন্ডি এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল করেছেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীতে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় লিফলেট বিতরণের সময় মোটরসাইকেলে আসা দুজন অস্ত্রধারী খুব কাছ থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তিনি এখন লাইফ সাপোর্টে আছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন।
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে। বিএনপি ঘটনাটিকে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ উল্লেখ করে আজ শনিবার ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে এ ধরনের সহিংসতা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ‘দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত’ চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। হামলার পর ঢাকাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল জুমার পর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট সড়কে বাইতুস সালাহ জামে মসজিদের উল্টো দিকের ‘ডক্টর টাওয়ার’-এর সামনে দিয়ে হাদি ব্যাটারিচালিত রিকশায় লিফলেট বিতরণ করে যাচ্ছিলেন। পেছন থেকে মোটরসাইকেল এসে রিকশার একদম কাছে গিয়ে চলন্ত অবস্থায় হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলিটি তাঁর বাঁ কানের পাশ দিয়ে মাথায় বিদ্ধ হয়। ঘটনার পর তাঁর সহকর্মীরা রিকশাতে করেই তাঁকে দ্রুত ঢামেকে নিয়ে যান।
গুলির সময় সাজ্জাদ খান নামের এক ব্যক্তি ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী এই ব্যক্তি বলেন, ওসমান হাদি ফকিরাপুলের দিক থেকে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় চড়ে পশ্চিমে বিজয়নগরের দিকে যাচ্ছিলেন। রিকশার পাশের আসনে আরেকজন ছিলেন। দুই ব্যক্তি একটি মোটরসাইকেলে করে অটোরিকশার পিছু নিয়ে তাঁদের অনুসরণ করছিল। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তির গায়ে কালো চাদর ছিল, যা দিয়ে তার হাত দুটি ঢাকা ছিল। অটোরিকশার পাশে এলে পেছনে বসা ব্যক্তি একটি আগ্নেয়াস্ত্র বের করে খুব কাছ থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে। মুহূর্তের মধ্যে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে বিজয়নগরের দিকে চলে যায়।
সাজ্জাদ খান বলেন, গুলির শব্দে রাস্তায় থাকা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রিকশা থামালে ভিড় জমে যায়। এই সময় হাদির মাথা ও কান থেকে রক্ত গড়িয়ে রাস্তায় পড়ছিল।
হাদির একজন সহযোদ্ধা বলেন, জুমার নামাজের পর মসজিদে তাঁদের লিফলেট বিলি কর্মসূচি ছিল। কথা ছিল, লিফলেট বিলি শেষে সবাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হয়ে দুপুরের খাবার খাবেন, আলোচনা করবেন। এর মধ্যেই হাদির ওপর হামলার খবর আসে।
ঘটনার পর পুলিশ, র্যাব, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীও যোগ দেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ডক্টর (ডিআর) টাওয়ারে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ব্যবহার করে হামলাকারীদের শনাক্তের কাজ শুরু করে।
গুলির একটি সিসিটিভির ভিডিওতে দেখা যায়, হাদির রিকশার খুব কাছে মোটরসাইকেলটি আসে, মুহূর্তেই আরোহী অস্ত্র বের করে গুলি করে এবং ফাঁকা রাস্তায় দ্রুতগতিতে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসাও উদ্ধার করে পুলিশ। জানতে চাইলে মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কে বা কারা কোন উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
তবে ইনকিলাব মঞ্চের একজন সদস্য গণমাধ্যমে দাবি করেছেন, যারা ওসমান হাদির ওপর গুলি চালিয়েছে, তারা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তাঁর প্রচারণা টিমে যোগ দিয়েছিল। সংগঠনের সদস্য মোহাম্মদ ওসামা জানান, একটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুজনের মধ্যে একজন ওসমান হাদির ওপর গুলি ছোড়ে। মাঝখানে কয়েক দিন তাদের দেখা যায়নি। কিছুদিন আগে তারা আবার এসে প্রচারণার কাজে যুক্ত হয়। গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ইতিমধ্যে ঘটনার ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা সব তথ্য যাচাই-বাছাই করছেন।
বিদেশি ফোন নম্বর থেকে হত্যার হুমকি
হাদি আগে থেকেই জানিয়ে আসছিলেন, তাঁকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়া হচ্ছে। গত নভেম্বর মাসে ৩০টি বিদেশি নম্বর থেকে ফোন ও বার্তার মাধ্যমে হুমকি পাওয়ার অভিযোগ করে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে দেওয়া সেই পোস্টে আওয়ামী লীগকে দায়ী করে হাদি লেখেন, ‘গত তিন ঘণ্টায় আমার নম্বরে আওয়ামী লীগের খুনিরা অন্তত ৩০টি বিদেশি নম্বর থেকে কল ও টেক্সট করেছে; যার সারমর্ম হলো—আমাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। তারা আমার বাড়িতে আগুন দেবে, আমার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণ করবে এবং আমাকে হত্যা করবে।’
ঢামেক ছেড়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, হাদির মাথার ভেতরে গুলি রয়েছে এবং তাঁর সার্জারি চলছিল। হাসপাতালে আনা স্বজনেরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা মাত্র একটি গুলিই ছোড়ে, সেটিই তাঁর মাথায় লাগে।
ওসমান হাদির সতীর্থরা ঢাকা মেডিকেলে ‘বি নেগেটিভ’ রক্ত খুঁজছিলেন। তাঁরা বলছেন, ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে হাদির প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। চিকিৎসকেরা রক্ত জোগাড় করতে বলেছেন। ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের সামনে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়।
সন্ধ্যার পর হাদির পরিবার তাঁকে ঢামেক হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক আসাদুজ্জামান জানান, প্রাথমিক অস্ত্রোপচারের পর পরিবারের অনুরোধে তাঁকে এভারকেয়ারে পাঠানো হচ্ছে এবং সেখানে চিকিৎসার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
যেভাবে আলোচনায় আসেন ওসমান হাদি
জুলাই আন্দোলন এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত ওসমান হাদি সম্প্রতি নজরকাড়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তাঁর তীব্র ভাষার বক্তব্যও আলোচনায় আসে। হাদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য তিনি খ্যাতি পান। হাদির গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটিতে। তাঁর পিতা ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক। হাদির শিক্ষাজীবন শুরু হয় নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায়, পরে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। একসময় ইংরেজি শেখার কোচিং সেন্টার ‘সাইফুরস’-এ শিক্ষকতা করেছেন।
সর্বশেষ তিনি ‘ইউনিভার্সিটি অব স্কলারস’ নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন বলে ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা জানিয়েছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ওসমান হাদির উদ্যোগে গড়ে ওঠে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। এবারের ডাকসু নির্বাচনে শিবির নেতৃত্বাধীন প্যানেল থেকে ভোট করে ইনকিলাব মঞ্চের ফাতিমা তাসনিম জুমা মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
ওসমান হাদি পরিবার নিয়ে ঢাকার পশ্চিম রামপুরায় থাকেন। তার স্ত্রী রাবেয়া ইসলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করেছেন। তাদের একটি সন্তান রয়েছে।
ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়ার পর ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তার ভগ্নিপতিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। হাদির বোন মাছুমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তিন বছর আগে ওসমান হাদিকে বলেছিলাম, ‘তোকেও কিন্তু ভারতের ‘‘র’’ বাঁচাতে দেবে না। আবরারকে যেভাবে মেরে ফেলেছে, তোকে-ও সেভাবে মেরে ফেলবে। দেশপ্রেমিক মানুষকে তারা বাঁচতে দেয় না।’
রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা
হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় এই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাদির ওপর হামলাকে অশনিসংকেত হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন একজন প্রার্থীকে গুলি করা হয়েছে। এটি স্পষ্ট একটি সংকেত, নির্বাচন বানচাল করার জন্য কোনো শক্তি আবার চক্রান্ত শুরু করেছে।
এর আগে হাদিকে দেখতে হাসপাতালে আসার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁকে নিরাপদে হাসপাতালে প্রবেশ করান।
সন্ধ্যায় ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যদি কেউ নতুন করে দেশে ফ্যাসিজম বা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়, তাহলে জনগণ তা প্রতিহত করবে এবং যথাযথ জবাব দেবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দলটি মনে করছে, এই হামলা শুধু একজন প্রার্থীর ওপর নয়, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার হওয়া গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার ওপরও সরাসরি আঘাত। হাদির প্রাণনাশের হুমকি থাকা সত্ত্বেও তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের ব্যর্থতা, দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতার উদাহরণ বলে এনসিপি মন্তব্য করেছে। ঢাকা-১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দেওয়া আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও এ ঘটনায় গতকাল ধানমন্ডি এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল করেছেন।

পানির স্তর নিচে নামছে। নামতে নামতে একটা সময় আর পানিই পাওয়া যাচ্ছে না। তখন অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) তুলে অন্য জায়গায় বসানো হচ্ছে। কিন্তু পুরোনো নলকূপের গর্তটি সেভাবেই পড়ে থাকছে অনেক জায়গায়। আবার নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রেও পানি পেতে একাধিক জায়গায় খনন করার প্রয়োজন পড়ছে।
৫ মিনিট আগে
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম নকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ঘুষ- বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
৫ মিনিট আগে
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। ফলে প্রতিদিন পথচারীদের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মূল রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তাতে কাজ হচ্ছে না। দু-এক দিন পরই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আবার ফুটপাত দখল করছে।
৩৫ মিনিট আগে
চা-বাগান ও প্রবাসী-অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজার। জেলার প্রায় ১৬ লাখ ভোটারকে কাছে টানতে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। ভোটারদের মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজারই ৯২টি চা-বাগানের। সাধারণত ভোটও সবচেয়ে বেশি পড়ে তাঁদের। এ ছাড়া রয়েছেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন ভোটার।
৩৫ মিনিট আগেরিমন রহমান, রাজশাহী

পানির স্তর নিচে নামছে। নামতে নামতে একটা সময় আর পানিই পাওয়া যাচ্ছে না। তখন অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) তুলে অন্য জায়গায় বসানো হচ্ছে। কিন্তু পুরোনো নলকূপের গর্তটি সেভাবেই পড়ে থাকছে অনেক জায়গায়। আবার নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রেও পানি পেতে একাধিক জায়গায় খনন করার প্রয়োজন পড়ছে। তখনো পড়ে থাকছে পরিত্যক্ত গর্তটি। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও নাচোল এবং নওগাঁর নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার উপজেলায় এ রকম শত শত পরিত্যক্ত গর্ত রয়েছে। এগুলোর ব্যাসার্ধ ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি। গত বুধবার এমন একটি মৃত্যুকূপে পড়েই মারা যায় রাজশাহীর তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের দুই বছরের সন্তান সাজিদ।
বরেন্দ্র অঞ্চলে মূলত কৃষকদের সেচ দেওয়ার কাজটি করে থাকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। কৃষিজমিতে সেচের জন্য এই অঞ্চলে তাদের কয়েক হাজার গভীর নলকূপ রয়েছে। এর পাশাপাশি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আরও কয়েক হাজার সেমিডিপ বসে গেছে ব্যক্তিমালিকানায়।
পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নামতে থাকায় ২০১৫ সালে বিএমডিএ সিদ্ধান্ত নেয়, তারা নতুন করে আর কোনো গভীর নলকূপ বসাবে না। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা আর গভীর নলকূপ বসাচ্ছেও না। কিন্তু ব্যক্তিমালিকানায় সেমিডিপ বসানোর কাজ থেমে নেই।
বিদ্যমান সেচ আইন অনুযায়ী বিএমডিএর অধিক্ষেত্রে ব্যক্তিমালিকানার গভীর বা অগভীর নলকূপ স্থাপনের কোনো সুযোগ নেই। তারপরও ব্যক্তিমালিকানার সেমিডিপের অনুমোদন দেওয়া হয় সেখানে। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে উপজেলা সেচ কমিটিকে ম্যানেজ করে এসব অনুমোদন দেওয়া হয়। সবশেষ গত বছর তানোরে ৩২টি সেমিডিপ বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুমোদন না নিয়েও সেমিডিপ
কৃষি দপ্তর থেকে জানা গেছে, তানোর উপজেলায় সেচযন্ত্র আছে ২ হাজার ১৯৫টি। এগুলোর মধ্যে বিএমডিএর গভীর নলকূপ ৫২৯টি। ব্যক্তিমালিকানায় গভীর নলকূপ আছে ১৬টি, বাকিগুলো অগভীর। এর বাইরে প্রায় আড়াই হাজার অনুমোদনহীন সেমিডিপ রয়েছে। শুধু তানোর নয়, গোটা রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ছাড়াও শত শত সেমিডিপ চলছে। এসব সেমিডিপ থেকে ৩০ থেকে ৪০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে সেচ দেওয়া যায়। কোথাও মুরগির খামার, কোথাও আবাসিক কিংবা ক্ষুদ্রশিল্পের নামে বিদ্যুৎ-সংযোগ নিয়ে নলকূপ বসিয়ে সেচপাম্প চালাচ্ছেন অনেকে।
নিহত শিশু সাজিদের বাড়ি যাওয়ার রাস্তায় পড়ে দুবইল গ্রাম। সরেজমিন দেখা যায়, এই গ্রামের একটি বাড়ির পাশে ‘মোহাম্মদ আলী পোলট্রি খামার’ লেখা সাইনবোর্ড। এর মালিক শফিকুল ইসলাম। খামারে কোনো মুরগি নেই। এর পাশেই বসানো হয়েছে সেমিডিপ। শফিকুল ইসলাম জানান, মুরগির খামারের বিদ্যুৎ-সংযোগ নিয়ে তিনি সেমিডিপ চালাচ্ছেন। তাঁর মতো আরও অনেকে এভাবে সেমিডিপ চালান বলে তিনি জানান।
সংকটের মধ্যে রমরমা ব্যবসা
রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূগর্ভস্থ পানি কমছেই। কোথাও কোথাও মাটির ২০০ ফুট গভীরে পানির স্তর পাওয়া যায় না। তাই এই তিন জেলার ৪ হাজার ৯১১ মৌজায় এখন খাওয়ার পানি ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য ভূগর্ভস্থ পানি তোলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। গত ৬ নভেম্বর এ-সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হয়।
তবে পানিসংকট নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, এই সংকটের মধ্যেও অবৈধভাবে নতুন নতুন সেমিডিপ ব্যক্তিমালিকানায়। উন্নয়নকর্মী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বরেন্দ্র অঞ্চলে পানি একটি দামি ব্যবসা। এখান থেকে ভালো মুনাফা হয়। অন্তত ৭৫ শতাংশ লাভ থাকে। তাই অবৈধভাবে সেমিডিপ বসানোর প্রতিযোগিতা চলছে। বিভিন্ন আলোচনায় বিএমডিএ দাবি করে, তাদের যত গভীর নলকূপ রয়েছে, তারও বেশি আছে অগভীর নলকূপ।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এমনিতে মাটির নিচে পানি নেই। তাই মাঝে মাঝে আমরা দেখি, দুই বছর পর এক স্থান থেকে সেমিডিপ সরিয়ে অন্য জায়গায় বসানো হচ্ছে। এটাকে রিবোরিং বলা হয়। খুঁজলে দেখা যাবে, তিন ভাগের এক ভাগ সেমিডিপ এভাবে স্থান বদল করেছে। স্থান পরিবর্তনের পর পাইপের গর্তটিও অনেক স্থানে থেকে গেছে। আবার নতুন সেমিডিপ বসানোর সময় নিচে পানির লেয়ার পাওয়া যায় না। তখন এক স্থান বোরহোলের পর আবার অন্য স্থানে বোরহোল করতে হয়। এভাবে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর সংকটাপন্ন এলাকাগুলোতে বহু গর্ত আছে। এমন একটি গর্তেই ছোট বাচ্চাটা পড়ে যায়।’

পানির স্তর নিচে নামছে। নামতে নামতে একটা সময় আর পানিই পাওয়া যাচ্ছে না। তখন অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) তুলে অন্য জায়গায় বসানো হচ্ছে। কিন্তু পুরোনো নলকূপের গর্তটি সেভাবেই পড়ে থাকছে অনেক জায়গায়। আবার নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রেও পানি পেতে একাধিক জায়গায় খনন করার প্রয়োজন পড়ছে। তখনো পড়ে থাকছে পরিত্যক্ত গর্তটি। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও নাচোল এবং নওগাঁর নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার উপজেলায় এ রকম শত শত পরিত্যক্ত গর্ত রয়েছে। এগুলোর ব্যাসার্ধ ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি। গত বুধবার এমন একটি মৃত্যুকূপে পড়েই মারা যায় রাজশাহীর তানোরের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের দুই বছরের সন্তান সাজিদ।
বরেন্দ্র অঞ্চলে মূলত কৃষকদের সেচ দেওয়ার কাজটি করে থাকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। কৃষিজমিতে সেচের জন্য এই অঞ্চলে তাদের কয়েক হাজার গভীর নলকূপ রয়েছে। এর পাশাপাশি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আরও কয়েক হাজার সেমিডিপ বসে গেছে ব্যক্তিমালিকানায়।
পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নামতে থাকায় ২০১৫ সালে বিএমডিএ সিদ্ধান্ত নেয়, তারা নতুন করে আর কোনো গভীর নলকূপ বসাবে না। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা আর গভীর নলকূপ বসাচ্ছেও না। কিন্তু ব্যক্তিমালিকানায় সেমিডিপ বসানোর কাজ থেমে নেই।
বিদ্যমান সেচ আইন অনুযায়ী বিএমডিএর অধিক্ষেত্রে ব্যক্তিমালিকানার গভীর বা অগভীর নলকূপ স্থাপনের কোনো সুযোগ নেই। তারপরও ব্যক্তিমালিকানার সেমিডিপের অনুমোদন দেওয়া হয় সেখানে। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে উপজেলা সেচ কমিটিকে ম্যানেজ করে এসব অনুমোদন দেওয়া হয়। সবশেষ গত বছর তানোরে ৩২টি সেমিডিপ বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুমোদন না নিয়েও সেমিডিপ
কৃষি দপ্তর থেকে জানা গেছে, তানোর উপজেলায় সেচযন্ত্র আছে ২ হাজার ১৯৫টি। এগুলোর মধ্যে বিএমডিএর গভীর নলকূপ ৫২৯টি। ব্যক্তিমালিকানায় গভীর নলকূপ আছে ১৬টি, বাকিগুলো অগভীর। এর বাইরে প্রায় আড়াই হাজার অনুমোদনহীন সেমিডিপ রয়েছে। শুধু তানোর নয়, গোটা রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ছাড়াও শত শত সেমিডিপ চলছে। এসব সেমিডিপ থেকে ৩০ থেকে ৪০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে সেচ দেওয়া যায়। কোথাও মুরগির খামার, কোথাও আবাসিক কিংবা ক্ষুদ্রশিল্পের নামে বিদ্যুৎ-সংযোগ নিয়ে নলকূপ বসিয়ে সেচপাম্প চালাচ্ছেন অনেকে।
নিহত শিশু সাজিদের বাড়ি যাওয়ার রাস্তায় পড়ে দুবইল গ্রাম। সরেজমিন দেখা যায়, এই গ্রামের একটি বাড়ির পাশে ‘মোহাম্মদ আলী পোলট্রি খামার’ লেখা সাইনবোর্ড। এর মালিক শফিকুল ইসলাম। খামারে কোনো মুরগি নেই। এর পাশেই বসানো হয়েছে সেমিডিপ। শফিকুল ইসলাম জানান, মুরগির খামারের বিদ্যুৎ-সংযোগ নিয়ে তিনি সেমিডিপ চালাচ্ছেন। তাঁর মতো আরও অনেকে এভাবে সেমিডিপ চালান বলে তিনি জানান।
সংকটের মধ্যে রমরমা ব্যবসা
রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূগর্ভস্থ পানি কমছেই। কোথাও কোথাও মাটির ২০০ ফুট গভীরে পানির স্তর পাওয়া যায় না। তাই এই তিন জেলার ৪ হাজার ৯১১ মৌজায় এখন খাওয়ার পানি ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য ভূগর্ভস্থ পানি তোলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। গত ৬ নভেম্বর এ-সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হয়।
তবে পানিসংকট নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, এই সংকটের মধ্যেও অবৈধভাবে নতুন নতুন সেমিডিপ ব্যক্তিমালিকানায়। উন্নয়নকর্মী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বরেন্দ্র অঞ্চলে পানি একটি দামি ব্যবসা। এখান থেকে ভালো মুনাফা হয়। অন্তত ৭৫ শতাংশ লাভ থাকে। তাই অবৈধভাবে সেমিডিপ বসানোর প্রতিযোগিতা চলছে। বিভিন্ন আলোচনায় বিএমডিএ দাবি করে, তাদের যত গভীর নলকূপ রয়েছে, তারও বেশি আছে অগভীর নলকূপ।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এমনিতে মাটির নিচে পানি নেই। তাই মাঝে মাঝে আমরা দেখি, দুই বছর পর এক স্থান থেকে সেমিডিপ সরিয়ে অন্য জায়গায় বসানো হচ্ছে। এটাকে রিবোরিং বলা হয়। খুঁজলে দেখা যাবে, তিন ভাগের এক ভাগ সেমিডিপ এভাবে স্থান বদল করেছে। স্থান পরিবর্তনের পর পাইপের গর্তটিও অনেক স্থানে থেকে গেছে। আবার নতুন সেমিডিপ বসানোর সময় নিচে পানির লেয়ার পাওয়া যায় না। তখন এক স্থান বোরহোলের পর আবার অন্য স্থানে বোরহোল করতে হয়। এভাবে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর সংকটাপন্ন এলাকাগুলোতে বহু গর্ত আছে। এমন একটি গর্তেই ছোট বাচ্চাটা পড়ে যায়।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীতে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় লিফলেট বিতরণের সময় মোটরসাইকেলে আসা দুজন অস্ত্রধারী খুব কাছ...
২ ঘণ্টা আগে
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম নকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ঘুষ- বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
৫ মিনিট আগে
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। ফলে প্রতিদিন পথচারীদের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মূল রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তাতে কাজ হচ্ছে না। দু-এক দিন পরই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আবার ফুটপাত দখল করছে।
৩৫ মিনিট আগে
চা-বাগান ও প্রবাসী-অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজার। জেলার প্রায় ১৬ লাখ ভোটারকে কাছে টানতে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। ভোটারদের মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজারই ৯২টি চা-বাগানের। সাধারণত ভোটও সবচেয়ে বেশি পড়ে তাঁদের। এ ছাড়া রয়েছেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন ভোটার।
৩৫ মিনিট আগেআনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম নকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ঘুষ- বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। পলাশবাড়ীর পাশাপাশি তিনি সাদুল্লাপুর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বেও রয়েছেন। এ সুযোগে ব্যাপক দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। অভিযোগকারীরা বলেন, নকিবুল হাসান কোনো উপজেলা অফিসেই নিয়মিত বসেন না।
১০ ডিসেম্বর তিন উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছয়জন প্রধান ও সহকারী শিক্ষক গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও আবেদন করতে চাইলে নকিবুল নানা অজুহাতে তাঁদের ফাইল ফেরত দেন। কিন্তু জাল সিল-স্বাক্ষর, টেম্পারিং করা সিএস কপি, ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিসহ ত্রুটিপূর্ণ ফাইল ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে গ্রহণ ও অগ্রায়ণ করেন।
অভিযোগে সাদুল্লাপুর উপজেলার হিংগারপাড়া উচ্চবিদ্যালয় ও বিএম কলেজের কথিত আইসিটি শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হকের ভুয়া নিয়োগের সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। অভিযোগকারীরা জানান, ভুয়া নিয়োগপ্রাপ্ত মোজাম্মেল হকের টেম্পারিং করা সিএস কপি, জাল সিল-স্বাক্ষর এবং ব্যাকডেট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিসহ সব কাগজপত্র ভুয়া দেখিয়ে কয়েক লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে তাঁর এমপিও আবেদন অগ্রায়ণ করা হয়েছে। অথচ ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি উপজেলা কমিটির যাচাই-বাছাইয়ে মোজাম্মেল হকের সিএস কপিতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর না থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। কিন্তু জালিয়াতি করে সেই সিএস কপি দিয়ে আবেদন করেন তিনি।
একইভাবে মাদারহাট আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে শতভাগ ‘সুবিধাভোগী’ দেখিয়ে দুজনের ভুয়া এমপিও আবেদনের ঘটনা ঘটেছে। সহকারী শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম (ভৌতবিজ্ঞান) ও আয়া খালেদা খাতুনের নিয়োগে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি, সৃজিত রেজল্যুশন ও টেম্পারিং করা কাগজপত্র ব্যবহার করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁদের এমপিও আবেদন দাখিল করেন।
অভিযোগকারীদের একজন ইদ্রাকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, নকিবুল হাসান বৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিও আবেদন নেন না; বরং ভুয়া নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাঁদের ফাইল অগ্রায়ণ করেন। তাঁর দুর্নীতির কারণে শিক্ষকেরা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
অন্যদিকে, হিংগারপাড়া বিএম কলেজের কথিত আইসিটি শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আগে যাচাই-বাছাইয়ে সিএস কপিতে স্বাক্ষর না থাকার মন্তব্য থাকলেও পরে তা ‘সঠিক হয়েছে’। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু না বলে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি না করার অনুরোধ করেন এবং প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানান।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম নকিবুল হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নানা ব্যস্ততার অজুহাতে কথা বলতে রাজি হননি। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সাদুল্লাপুর অফিসে পাওয়া গেলে তিনি বলেন, ‘শত শত শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। তিন-চার দিন সময়ের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারে বসে এসব আবেদন যাচাই করা সম্ভব নয়। ভুয়া ও জালিয়াতি সত্ত্বেও আবেদন অগ্রায়ণের বিষয়ে দায় সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকের বলে মন্তব্য করে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
গাইবান্ধা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, ভুয়া ও জালিয়াতি করে কোনো শিক্ষক-কর্মচারী আবেদন করলেও এমপিওভুক্তির সুযোগ নেই, এসব আবেদন বাতিল করা হবে।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম নকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ঘুষ- বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। পলাশবাড়ীর পাশাপাশি তিনি সাদুল্লাপুর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বেও রয়েছেন। এ সুযোগে ব্যাপক দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। অভিযোগকারীরা বলেন, নকিবুল হাসান কোনো উপজেলা অফিসেই নিয়মিত বসেন না।
১০ ডিসেম্বর তিন উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছয়জন প্রধান ও সহকারী শিক্ষক গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও আবেদন করতে চাইলে নকিবুল নানা অজুহাতে তাঁদের ফাইল ফেরত দেন। কিন্তু জাল সিল-স্বাক্ষর, টেম্পারিং করা সিএস কপি, ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিসহ ত্রুটিপূর্ণ ফাইল ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে গ্রহণ ও অগ্রায়ণ করেন।
অভিযোগে সাদুল্লাপুর উপজেলার হিংগারপাড়া উচ্চবিদ্যালয় ও বিএম কলেজের কথিত আইসিটি শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হকের ভুয়া নিয়োগের সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। অভিযোগকারীরা জানান, ভুয়া নিয়োগপ্রাপ্ত মোজাম্মেল হকের টেম্পারিং করা সিএস কপি, জাল সিল-স্বাক্ষর এবং ব্যাকডেট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিসহ সব কাগজপত্র ভুয়া দেখিয়ে কয়েক লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে তাঁর এমপিও আবেদন অগ্রায়ণ করা হয়েছে। অথচ ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি উপজেলা কমিটির যাচাই-বাছাইয়ে মোজাম্মেল হকের সিএস কপিতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর না থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। কিন্তু জালিয়াতি করে সেই সিএস কপি দিয়ে আবেদন করেন তিনি।
একইভাবে মাদারহাট আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে শতভাগ ‘সুবিধাভোগী’ দেখিয়ে দুজনের ভুয়া এমপিও আবেদনের ঘটনা ঘটেছে। সহকারী শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম (ভৌতবিজ্ঞান) ও আয়া খালেদা খাতুনের নিয়োগে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি, সৃজিত রেজল্যুশন ও টেম্পারিং করা কাগজপত্র ব্যবহার করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁদের এমপিও আবেদন দাখিল করেন।
অভিযোগকারীদের একজন ইদ্রাকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, নকিবুল হাসান বৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিও আবেদন নেন না; বরং ভুয়া নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাঁদের ফাইল অগ্রায়ণ করেন। তাঁর দুর্নীতির কারণে শিক্ষকেরা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
অন্যদিকে, হিংগারপাড়া বিএম কলেজের কথিত আইসিটি শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আগে যাচাই-বাছাইয়ে সিএস কপিতে স্বাক্ষর না থাকার মন্তব্য থাকলেও পরে তা ‘সঠিক হয়েছে’। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু না বলে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি না করার অনুরোধ করেন এবং প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানান।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম নকিবুল হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নানা ব্যস্ততার অজুহাতে কথা বলতে রাজি হননি। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সাদুল্লাপুর অফিসে পাওয়া গেলে তিনি বলেন, ‘শত শত শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। তিন-চার দিন সময়ের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারে বসে এসব আবেদন যাচাই করা সম্ভব নয়। ভুয়া ও জালিয়াতি সত্ত্বেও আবেদন অগ্রায়ণের বিষয়ে দায় সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকের বলে মন্তব্য করে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
গাইবান্ধা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, ভুয়া ও জালিয়াতি করে কোনো শিক্ষক-কর্মচারী আবেদন করলেও এমপিওভুক্তির সুযোগ নেই, এসব আবেদন বাতিল করা হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীতে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় লিফলেট বিতরণের সময় মোটরসাইকেলে আসা দুজন অস্ত্রধারী খুব কাছ...
২ ঘণ্টা আগে
পানির স্তর নিচে নামছে। নামতে নামতে একটা সময় আর পানিই পাওয়া যাচ্ছে না। তখন অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) তুলে অন্য জায়গায় বসানো হচ্ছে। কিন্তু পুরোনো নলকূপের গর্তটি সেভাবেই পড়ে থাকছে অনেক জায়গায়। আবার নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রেও পানি পেতে একাধিক জায়গায় খনন করার প্রয়োজন পড়ছে।
৫ মিনিট আগে
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। ফলে প্রতিদিন পথচারীদের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মূল রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তাতে কাজ হচ্ছে না। দু-এক দিন পরই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আবার ফুটপাত দখল করছে।
৩৫ মিনিট আগে
চা-বাগান ও প্রবাসী-অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজার। জেলার প্রায় ১৬ লাখ ভোটারকে কাছে টানতে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। ভোটারদের মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজারই ৯২টি চা-বাগানের। সাধারণত ভোটও সবচেয়ে বেশি পড়ে তাঁদের। এ ছাড়া রয়েছেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন ভোটার।
৩৫ মিনিট আগেজয়নাল আবেদীন, ঢাকা

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। ফলে প্রতিদিন পথচারীদের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মূল রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে।
সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তাতে কাজ হচ্ছে না। দু-এক দিন পরই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আবার ফুটপাত দখল করছে।
এই অবৈধ দোকানের মূলে রয়েছে চাঁদাবাজি। তাই চাঁদাবাজদের না ধরতে পারলে এর কোনো সমাধান নেই বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন নাগরিক ও বিশেষজ্ঞরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর নতুন বাজার এলাকা, নিউমার্কেট, পল্টন, ধানমন্ডির গ্রিন রোড এলাকা, গুলিস্তান, মতিঝিল, মিরপুর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা মেডিকেল এলাকাসহ বেশির ভাগ এলাকার ফুটপাত দখল করে ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা নানান পণ্যের পসরা সাজিয়েছে। অধিকাংশ ফুটপাতে জামাকাপড়ের দোকান, চাসহ খাবারের দোকান, জুতা, প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দোকান দেখা গেছে। তবে জামাকাপড়ের দোকানই বেশি। কোথাও কোথাও ফুটপাত ছাড়িয়ে সড়কের পাশে পণ্য সাজিয়ে বসতে দেখা গেছে। এমনকি ওভারব্রিজে রয়েছে ভাসমান দোকান।
পল্টন এলাকায় সড়ক দিয়ে হাঁটছিলেন আবু উবাইদা নামের একজন। ফুটপাত রেখে মূল সড়কে কেন হাঁটছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফুটপাত দিয়ে হাঁটার জায়গাই তো নেই। সবই তো দোকান। ক্রেতা-বিক্রেতায় গাদাগাদি। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছি।’
নতুন বাজার এলাকায় আরিফ শিকদার নামের এক পথচারী বলেন, ফুটপাত এখন পথচারীদের জন্য নয়, হকারদের জন্য। আর ফুটপাত দখল নেওয়ার জন্য তাদের তো বড় সিন্ডিকেট রয়েছে।
এদিকে ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসার বিষয়ে কথা বলতে চান না দখলদার ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতে হয় তাঁদের। কেউ কেউ দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক চুক্তিতে চাঁদা দেন স্থানীয় নেতাদের। আর এর বিনিময়ে ফুটপাতে নির্ধারিত স্থানে ব্যবসা করার অনুমতি মেলে।
চাঁদা দেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কে নেবে চাঁদা? আমরা বর্তমানে কাউকে চাঁদা দেই না। তবে কোনো কোনো ব্যবসায়ী উত্তর সিটি এলাকায় চাঁদা দিতে পারে, সেটি আমার জানা নেই।’
সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকায় অবৈধ দোকান উচ্ছেদের উদাহরণ টেনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে আসেন, পরে দেখা যায় আবারও দোকান বসেছে। স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এবং লোকজনের সহযোগিতা ছাড়া এসব উচ্ছেদ করা সম্ভব না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহরের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় চাঁদাবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ফুটপাত দখল করা হচ্ছে। যেকোনো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উচ্ছেদ কার্যক্রম আরও কার্যকর এবং শক্তিশালী করার পাশাপাশি উচ্ছেদের পর পুনরায় অবৈধ দখল বা স্থাপনা নির্মাণ রোধে আনসার সদস্য নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আসিফ-উজ-জামান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একদিন উচ্ছেদ করলে, আবার দু-তিন দিন পর তারা হাজির হচ্ছে, এটাই বড় সমস্যা। মানুষেরও কোনো প্রতিবাদ নেই যে কেন ফুটপাতে অবৈধ দোকান দিয়েছে। মানুষও এটার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে নিজের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নেমে চলাফেরা করছে। ৩০ সেকেন্ডের জন্য রাস্তায় নামলেও বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এককভাবে এর সমাধান সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজন, প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন—সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। না হলে উচ্ছেদের পরে ব্যবসায়ীরা আবার বসবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ও পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ফুটপাত থেকে যারা মাসোহারা নেয়, তাদের যদি সরকার কঠোরভাবে ডিল করে, তাহলে এটা দখলমুক্ত রাখা খুবই সম্ভব। কিন্তু যারা মাসোয়ারা নেয়, রাষ্ট্র তাদের কখনো ধরে না।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। ফলে প্রতিদিন পথচারীদের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মূল রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে।
সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তাতে কাজ হচ্ছে না। দু-এক দিন পরই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আবার ফুটপাত দখল করছে।
এই অবৈধ দোকানের মূলে রয়েছে চাঁদাবাজি। তাই চাঁদাবাজদের না ধরতে পারলে এর কোনো সমাধান নেই বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন নাগরিক ও বিশেষজ্ঞরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর নতুন বাজার এলাকা, নিউমার্কেট, পল্টন, ধানমন্ডির গ্রিন রোড এলাকা, গুলিস্তান, মতিঝিল, মিরপুর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা মেডিকেল এলাকাসহ বেশির ভাগ এলাকার ফুটপাত দখল করে ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা নানান পণ্যের পসরা সাজিয়েছে। অধিকাংশ ফুটপাতে জামাকাপড়ের দোকান, চাসহ খাবারের দোকান, জুতা, প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দোকান দেখা গেছে। তবে জামাকাপড়ের দোকানই বেশি। কোথাও কোথাও ফুটপাত ছাড়িয়ে সড়কের পাশে পণ্য সাজিয়ে বসতে দেখা গেছে। এমনকি ওভারব্রিজে রয়েছে ভাসমান দোকান।
পল্টন এলাকায় সড়ক দিয়ে হাঁটছিলেন আবু উবাইদা নামের একজন। ফুটপাত রেখে মূল সড়কে কেন হাঁটছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফুটপাত দিয়ে হাঁটার জায়গাই তো নেই। সবই তো দোকান। ক্রেতা-বিক্রেতায় গাদাগাদি। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছি।’
নতুন বাজার এলাকায় আরিফ শিকদার নামের এক পথচারী বলেন, ফুটপাত এখন পথচারীদের জন্য নয়, হকারদের জন্য। আর ফুটপাত দখল নেওয়ার জন্য তাদের তো বড় সিন্ডিকেট রয়েছে।
এদিকে ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসার বিষয়ে কথা বলতে চান না দখলদার ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতে হয় তাঁদের। কেউ কেউ দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক চুক্তিতে চাঁদা দেন স্থানীয় নেতাদের। আর এর বিনিময়ে ফুটপাতে নির্ধারিত স্থানে ব্যবসা করার অনুমতি মেলে।
চাঁদা দেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কে নেবে চাঁদা? আমরা বর্তমানে কাউকে চাঁদা দেই না। তবে কোনো কোনো ব্যবসায়ী উত্তর সিটি এলাকায় চাঁদা দিতে পারে, সেটি আমার জানা নেই।’
সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকায় অবৈধ দোকান উচ্ছেদের উদাহরণ টেনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে আসেন, পরে দেখা যায় আবারও দোকান বসেছে। স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এবং লোকজনের সহযোগিতা ছাড়া এসব উচ্ছেদ করা সম্ভব না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহরের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় চাঁদাবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ফুটপাত দখল করা হচ্ছে। যেকোনো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উচ্ছেদ কার্যক্রম আরও কার্যকর এবং শক্তিশালী করার পাশাপাশি উচ্ছেদের পর পুনরায় অবৈধ দখল বা স্থাপনা নির্মাণ রোধে আনসার সদস্য নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আসিফ-উজ-জামান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একদিন উচ্ছেদ করলে, আবার দু-তিন দিন পর তারা হাজির হচ্ছে, এটাই বড় সমস্যা। মানুষেরও কোনো প্রতিবাদ নেই যে কেন ফুটপাতে অবৈধ দোকান দিয়েছে। মানুষও এটার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে নিজের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নেমে চলাফেরা করছে। ৩০ সেকেন্ডের জন্য রাস্তায় নামলেও বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এককভাবে এর সমাধান সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজন, প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন—সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। না হলে উচ্ছেদের পরে ব্যবসায়ীরা আবার বসবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ও পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ফুটপাত থেকে যারা মাসোহারা নেয়, তাদের যদি সরকার কঠোরভাবে ডিল করে, তাহলে এটা দখলমুক্ত রাখা খুবই সম্ভব। কিন্তু যারা মাসোয়ারা নেয়, রাষ্ট্র তাদের কখনো ধরে না।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীতে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় লিফলেট বিতরণের সময় মোটরসাইকেলে আসা দুজন অস্ত্রধারী খুব কাছ...
২ ঘণ্টা আগে
পানির স্তর নিচে নামছে। নামতে নামতে একটা সময় আর পানিই পাওয়া যাচ্ছে না। তখন অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) তুলে অন্য জায়গায় বসানো হচ্ছে। কিন্তু পুরোনো নলকূপের গর্তটি সেভাবেই পড়ে থাকছে অনেক জায়গায়। আবার নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রেও পানি পেতে একাধিক জায়গায় খনন করার প্রয়োজন পড়ছে।
৫ মিনিট আগে
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম নকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ঘুষ- বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
৫ মিনিট আগে
চা-বাগান ও প্রবাসী-অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজার। জেলার প্রায় ১৬ লাখ ভোটারকে কাছে টানতে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। ভোটারদের মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজারই ৯২টি চা-বাগানের। সাধারণত ভোটও সবচেয়ে বেশি পড়ে তাঁদের। এ ছাড়া রয়েছেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন ভোটার।
৩৫ মিনিট আগেমাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার

চা-বাগান ও প্রবাসী-অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজার। জেলার প্রায় ১৬ লাখ ভোটারকে কাছে টানতে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। ভোটারদের মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজারই ৯২টি চা-বাগানের। সাধারণত ভোটও সবচেয়ে বেশি পড়ে তাঁদের। এ ছাড়া রয়েছেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন ভোটার। তাই বিশেষ করে চা-বাগান এলাকা এবং নতুন ভোটারদের প্রতি বাড়তি নজর দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। কেননা অনেক ক্ষেত্রে ভোটের ফল নির্ধারণে তাঁদের নির্ণায়ক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন, কিছুদিনের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক হবে। এরপর সবাই মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়বে। দলের বিরুদ্ধে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে দল থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী বলেন, ‘আমরা দলের ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। তবে জোট হলে শরিকদের আসন ছাড় দিতে কোনো আপত্তি নেই।’
মৌলভীবাজার-১
জুড়ী ও বড়লেখা নিয়ে গঠিত আসনে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাসির উদ্দীন মিঠু। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আমিনুল ইসলাম। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন কাতারপ্রবাসী লুকমান আহমদ। এনসিপি থেকে আলোচনায় আছেন জাকির চৌধুরী ও তামিম আহমেদ। জাতীয় পার্টির নেতা রিয়াজ উদ্দিনও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ২২ হাজার।
মৌলভীবাজার-২
কুলাউড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা আমির প্রকৌশলী এম সায়েদ আলী। দীর্ঘদিন ধরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তবে দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান এই আসনের বাসিন্দা হওয়ায় গুঞ্জন রয়েছে, শেষ পর্যন্ত তিনি এখান থেকে প্রার্থী হতে পারেন। কেন্দ্রীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গত কয়েক মাসে এলাকায় বেশ কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন তিনি। স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও তাঁকে প্রত্যাশা করছেন। মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী বলেন, ডা. শফিকুর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় এলাকাবাসী ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এখানে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। আশা করি, কেন্দ্র এই দাবি পূরণ করবে।
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের সাবেক উপজেলা সভাপতি শওকতুল ইসলাম শকু। তবে তাঁকে মেনে নিতে রাজি নন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা। প্রাথমিক মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। আনজুমানে আল-ইসলাহ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ফজলুল হক খান সাহেদও প্রার্থী হতে পারেন। জাতীয় পার্টির (জাফর) মনোনয়ন পেতে পারেন সাবেক এমপি নবাব আলী আব্বাছ খান। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন সাইফুর রহমান। এই আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ।
মৌলভীবাজার-৩
মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা নিয়ে এই আসন। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ছেলে এম নাসের রহমান। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক জেলা আমির আব্দুল মান্নান। খেলাফত মজলিসের মনোনয়ন পেতে পারেন রাজনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ বিলাল। এনসিপি থেকে এহসানুল হক জাকারিয়ার নাম শোনা যাচ্ছে। এই আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ। ভোটের মাঠে দৃশ্যত এম নাসের রহমানের পাল্লা ভারী। তবে হাল ছাড়তে রাজি নয় জামায়াত। নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন আব্দুল মান্নান।
মৌলভীবাজার-৪
শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ নিয়ে গঠিত আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজি মুজিব)। তবে তাঁর জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন দলের আরেক নেতা মহসিন মিয়া মধু। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র মহসিন আসনটি থেকে স্বতন্ত্র নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব। এনসিপি থেকে প্রীতম দাশ ও খেলাফত মজলিস থেকে নূরুল মোত্তাকিন জুনায়েদ মনোনয়ন পেতে পারেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন শেখ নুরে আলম হামিদি। এই আসনের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ভোটারের মধ্যে শুধু চা-বাগানের ভোটার ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। ফলে ভোটের ফল নির্ধারণে এসব বাগানের ভোট বড় ভূমিকা রাখবে।

চা-বাগান ও প্রবাসী-অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজার। জেলার প্রায় ১৬ লাখ ভোটারকে কাছে টানতে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। ভোটারদের মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজারই ৯২টি চা-বাগানের। সাধারণত ভোটও সবচেয়ে বেশি পড়ে তাঁদের। এ ছাড়া রয়েছেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন ভোটার। তাই বিশেষ করে চা-বাগান এলাকা এবং নতুন ভোটারদের প্রতি বাড়তি নজর দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। কেননা অনেক ক্ষেত্রে ভোটের ফল নির্ধারণে তাঁদের নির্ণায়ক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন, কিছুদিনের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক হবে। এরপর সবাই মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়বে। দলের বিরুদ্ধে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে দল থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী বলেন, ‘আমরা দলের ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। তবে জোট হলে শরিকদের আসন ছাড় দিতে কোনো আপত্তি নেই।’
মৌলভীবাজার-১
জুড়ী ও বড়লেখা নিয়ে গঠিত আসনে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাসির উদ্দীন মিঠু। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আমিনুল ইসলাম। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন কাতারপ্রবাসী লুকমান আহমদ। এনসিপি থেকে আলোচনায় আছেন জাকির চৌধুরী ও তামিম আহমেদ। জাতীয় পার্টির নেতা রিয়াজ উদ্দিনও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ২২ হাজার।
মৌলভীবাজার-২
কুলাউড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা আমির প্রকৌশলী এম সায়েদ আলী। দীর্ঘদিন ধরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তবে দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান এই আসনের বাসিন্দা হওয়ায় গুঞ্জন রয়েছে, শেষ পর্যন্ত তিনি এখান থেকে প্রার্থী হতে পারেন। কেন্দ্রীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গত কয়েক মাসে এলাকায় বেশ কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন তিনি। স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও তাঁকে প্রত্যাশা করছেন। মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী বলেন, ডা. শফিকুর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় এলাকাবাসী ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এখানে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। আশা করি, কেন্দ্র এই দাবি পূরণ করবে।
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের সাবেক উপজেলা সভাপতি শওকতুল ইসলাম শকু। তবে তাঁকে মেনে নিতে রাজি নন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা। প্রাথমিক মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। আনজুমানে আল-ইসলাহ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ফজলুল হক খান সাহেদও প্রার্থী হতে পারেন। জাতীয় পার্টির (জাফর) মনোনয়ন পেতে পারেন সাবেক এমপি নবাব আলী আব্বাছ খান। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন সাইফুর রহমান। এই আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ।
মৌলভীবাজার-৩
মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা নিয়ে এই আসন। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ছেলে এম নাসের রহমান। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক জেলা আমির আব্দুল মান্নান। খেলাফত মজলিসের মনোনয়ন পেতে পারেন রাজনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ বিলাল। এনসিপি থেকে এহসানুল হক জাকারিয়ার নাম শোনা যাচ্ছে। এই আসনে ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ। ভোটের মাঠে দৃশ্যত এম নাসের রহমানের পাল্লা ভারী। তবে হাল ছাড়তে রাজি নয় জামায়াত। নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন আব্দুল মান্নান।
মৌলভীবাজার-৪
শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ নিয়ে গঠিত আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজি মুজিব)। তবে তাঁর জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন দলের আরেক নেতা মহসিন মিয়া মধু। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র মহসিন আসনটি থেকে স্বতন্ত্র নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব। এনসিপি থেকে প্রীতম দাশ ও খেলাফত মজলিস থেকে নূরুল মোত্তাকিন জুনায়েদ মনোনয়ন পেতে পারেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন শেখ নুরে আলম হামিদি। এই আসনের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ভোটারের মধ্যে শুধু চা-বাগানের ভোটার ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। ফলে ভোটের ফল নির্ধারণে এসব বাগানের ভোট বড় ভূমিকা রাখবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীতে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় লিফলেট বিতরণের সময় মোটরসাইকেলে আসা দুজন অস্ত্রধারী খুব কাছ...
২ ঘণ্টা আগে
পানির স্তর নিচে নামছে। নামতে নামতে একটা সময় আর পানিই পাওয়া যাচ্ছে না। তখন অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) তুলে অন্য জায়গায় বসানো হচ্ছে। কিন্তু পুরোনো নলকূপের গর্তটি সেভাবেই পড়ে থাকছে অনেক জায়গায়। আবার নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রেও পানি পেতে একাধিক জায়গায় খনন করার প্রয়োজন পড়ছে।
৫ মিনিট আগে
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম নকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ঘুষ- বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
৫ মিনিট আগে
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। ফলে প্রতিদিন পথচারীদের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মূল রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তাতে কাজ হচ্ছে না। দু-এক দিন পরই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আবার ফুটপাত দখল করছে।
৩৫ মিনিট আগে