Ajker Patrika

কাপ্তাইয়ে পাহাড় ধসের ৮ বছর: এখনো ঝুঁকিতে শত শত পরিবার

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙামাটি)   
২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ফাইল ছবি। ছবি: সংগৃহীত
২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ফাইল ছবি। ছবি: সংগৃহীত

২০১৭ সালের ১৩ জুন—রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের মানুষের জন্য এটি ছিল এক বিভীষিকাময় দিন। আগের রাত থেকেই টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভয়াবহ পাহাড় ধসে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় প্রাণ হারায় ১৮ জন। আট বছর পার হলেও আজও কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের ঢালে ও পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে শত শত মানুষ।

সেদিন সকালে প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১ নম্বর চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের মিতিঙ্গাছড়ি থেকে। ভয়াবহ পাহাড় ধসে নুরনবী নামের এক ব্যক্তির ছেলের সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ও শিশুপুত্র ঘটনাস্থলে মারা যায়। এরপর একে একে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের মুরালীপাড়া, রাইখালির কারিগরপাড়া ও চিৎমরম এলাকা থেকে আসতে থাকে মৃত্যুর খবর। পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় শত শত একর সবজিখেত, ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু ঘরবাড়ি। এখনো সেই দিনের কথা মনে করে শিউরে ওঠে এসব এলাকার মানুষ।

কাপ্তাইয়ের ৪ নম্বর ইউনিয়নের ঢাকাইয়া কলোনি, ওয়াগ্গার মুরালীপাড়া, রাইখালির কারিগরপাড়া, তিনছড়ি ও মিতিঙ্গাছড়িসহ বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় আজো বহু পরিবার বসবাস করছে পাহাড় ধসের ঝুঁকি নিয়ে। বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টি হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু পরিবারকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু তাদের স্থায়ী পুনর্বাসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

জানতে চাইলে ৪ নম্বর কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, ‘ঢাকাইয়া কলোনিসহ কয়েকটি এলাকায় এখনো বহু মানুষ পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। অতি বৃষ্টি হলে তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যায়। কিন্তু এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান একমাত্র পুনর্বাসন।’

২০১৭ সালের দুর্ঘটনার সময় কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন দিলদার হোসেন। তিনি বলেন, ‘সেদিন সকালে খবর পাই, চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের মিতিঙ্গাছড়িতে পাহাড় ধসে একটি পরিবার মাটিচাপা পড়ে আছে। আমি ঝুঁকি নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ সব বাহিনীকে নিয়ে উদ্ধারকাজ চালাই। এখনো অনেক মানুষ পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকির মধ্যে বাস করছে। বিশেষ করে ঢাকাইয়া কলোনির বাসিন্দারা সবচেয়ে ঝুঁকিতে। আমি সরকারের কাছে তাদের জন্য স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘কাপ্তাইয়ের ঢাকাইয়া কলোনিসহ রাইখালি ও ওয়াগ্গা ইউনিয়নে এখনো বহু পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। আমরা নিয়মিত এলাকায় গিয়ে মানুষকে সতর্ক করি, বিশেষ করে বর্ষাকালে। অতি বৃষ্টি হলে তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয় এবং থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তবে তারা যদি আগেভাগে নিরাপদ স্থানে চলে আসে, তাহলে জানমালের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণমাধ্যমে হামলা করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হয়েছে: ছাত্রদল সম্পাদক নাছির

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি 
গতকাল সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সুবর্ণচর সৈকত সরকারি কলেজ মাঠে বক্তব্য দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সুবর্ণচর সৈকত সরকারি কলেজ মাঠে বক্তব্য দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণমাধ্যমে হামলা করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সৈকত সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জিয়া স্মৃতি ক্রিকেট প্রীতি ম্যাচের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নাছির উদ্দিন বলেন, ওসমান হাদিকে হত্যার পর একটি শ্রেণির রাজনৈতিক কর্মীরা দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। একই সঙ্গে নির্বাচন যাতে না হয়, সে উদ্দেশ্যেও তারা তৎপর ছিল। তবে গণমাধ্যমে হামলা করে কখনো কণ্ঠরোধ করা যাবে না।

নাছির উদ্দিন আরও বলেন, অতীতেও প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো গণমাধ্যম হামলার শিকার হয়েছে। তখনো ওসমান হাদি বলেছিলেন, গণমাধ্যমে হামলা কোনো সমাধান নয়।

এ সময় তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান। পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীকেও পদত্যাগ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন ছাত্রদল সম্পাদক।

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে নেতা-কর্মীদের ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপি নেতা এনায়েত উল্যাহ বাবুলসহ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। খেলায় সদর উপজেলা দলকে হারিয়ে সুবর্ণচর উপজেলা দল জয়লাভ করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুর্গাপুরে বড়দিন উপলক্ষে ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
গতকাল রাতে বিরিশিরি ওয়াইএমসিএ চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কনসার্ট ও সংকীর্তন পরিবেশিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাতে বিরিশিরি ওয়াইএমসিএ চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কনসার্ট ও সংকীর্তন পরিবেশিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরিতে বড়দিন উপলক্ষে ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিরিশিরি যুব সদস্যদের আয়োজনে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিরিশিরি ওয়াইএমসিএ চত্বরে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কনসার্ট ও সংকীর্তন পরিবেশিত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পরিচালক কবি পরাগ রিছিল। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন নেত্রকোনা-১ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিরিশিরি ওয়াইডব্লিউসিএর সম্পাদিকা লুদিয়া রুমা সাংমা, দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান ও অ্যাডভোকেট সোহেল খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবি পরাগ রিছিল বলেন, বড়দিন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ও প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যিশুখ্রিষ্ট মানবজাতিকে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতে পৃথিবীতে এসেছিলেন—এটাই এই উৎসবের মূল বার্তা। বড়দিনে সব অশুভশক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয় হবে, এমন প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন তিনি।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের শিক্ষা, জীবনমান ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আরও বেশি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তিনি কাজ করবেন।

আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ব্রসলী রিছিল বলেন, বড়দিনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অনেক কৃষ্টি ও সংস্কৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে। সেগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এই আয়োজন করা হয়েছে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পীরা নিজ নিজ সংস্কৃতি তুলে ধরে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ঢাকা থেকে আগত শিল্পীরা কনসার্ট পরিবেশন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে তালা লাগিয়ে অগ্নিসংযোগ: চার দিন পর হত্যা মামলা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা এলাকায় বিএনপি নেতার ঘরে তালা লাগিয়ে অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনার চার দিন পর থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে দগ্ধ বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

তবে এই ঘটনার চার দিন পার হলেও এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এদিকে দগ্ধ বেলাল হোসেনের দুই কন্যা এখনো ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদ পারভেজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে কাজ চলছে। কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা বের করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এই ঘটনার পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি পরিদর্শন করেন। তাঁরা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত শুক্রবার গভীর রাতে সদর উপজেলার চরমনসা এলাকায় ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এতে ঘুমন্ত অবস্থায় সাত বছরের শিশু আয়েশা বেগম অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। গুরুতর দগ্ধ হন বেলাল হোসেন ও তাঁর দুই কন্যা। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে বেলাল হোসেনের দুই কন্যা বিথী আক্তার ও স্মৃতি আক্তারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের দুজনের শরীরের বেশির ভাগ পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও ১

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৫
ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার আজমির হোসেন আকাশ। ছবি: র‍্যাব
ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার আজমির হোসেন আকাশ। ছবি: র‍্যাব

ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় আজমির হোসেন আকাশ (২৭) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৩। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব-৩ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডেইলি স্টার ভবনে হামলা, স্টিলের গেইট ও কাঁচের দরজা ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের আজমির হোসেন আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বাবার নাম আলমগীর হোসেন। তিনি ঢাকার তেজগাঁওয়ের তেজতুরি বাজার এলাকার বাসিন্দা।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী দেশি অস্ত্র-শস্ত্র, লাঠিসোঁটা, দাহ্য পদার্থসহ সজ্জিত হয়ে মিছিল নিয়ে জনরোষ, দাঙ্গা ও অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রম সৃষ্টির উদ্দেশ্যে দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ের সামনে বেআইনিভাবে সমবেত হয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী স্লোগান দিতে থাকে।

দুষ্কৃতিকারীরা পরস্পরের যোগসাজশে ওইদিন রাত আনুমানিক ১২টা ৩৫ মিনিটে দ্য ডেইলি স্টার ভবনের স্টিলের গেইট ও কাঁচের দরজা ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থানরত কর্মীদের মারধর করার চেষ্টা করে এবং কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও বিভিন্ন মালামাল লুণ্ঠন করে।

আসামিরা ভবনের সামনের কাচ ভেঙে সোফা, টেবিল ও চেয়ারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র, সরঞ্জাম ও নথিপত্রে অনিষ্ট করে নিচে ফেলে দেয় এবং সেগুলো একটি জায়গায় জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেয়।

আসামিরা দ্য ডেইলি স্টার ভবনের বিভিন্ন তলায় রাখা দুই শতাধিক কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ক্যামেরা, লেন্স, টিভি, স্ক্যানার, সার্ভার, প্রিন্টার, স্টুডিও ইকুইপমেন্টসসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যার মূল্য অনুমান ৫ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন তলায় থাকা একাধিক লকারে রক্ষিত প্রতিষ্ঠানের আনুমানিক ৩৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা ভবনের বিভিন্ন তলায় অবস্থান করা দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মীদের অগ্নিদগ্ধ করে হত্যা ও ভবন ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে অগ্নিসংযোগ করে।

ওই ঘটনায় পরবর্তীতে তেজগাঁও থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ (সংশোধনী ২০১৩) এর ধারা ৬ (১), তৎসহ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) এবং তৎসহ সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর ২৬ (১) ধারায় গত ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি মামলা দায়ের রুজু হয়।

সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তার কার্যক্রম শুরু করে র‍্যাব। এরই অংশ হিসেবে গতকাল আজমির হোসেন আকাশকে রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তার আকাশের কাছ থেকে ২টি মনিটর,১টি সিপিইউ,১টি হার্ডডিক্স,৩টি ক্যাবল,১টি সুইচ অ্যাডাপটার ও ১টি মাউস উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মোট ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত