Ajker Patrika

হাছান মাহমুদের কাছে ৬০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চান আলোচিত ব্যবসায়ী ইয়াছিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৪, ২১: ৩৪
হাছান মাহমুদের কাছে ৬০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চান আলোচিত ব্যবসায়ী ইয়াছিন

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে ৬০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী। তিনি দেশের অন্যতম শীর্ষ জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের চেয়ারম্যান। 

গতকাল রোববার ড. হাছান মাহমুদ ও তাঁর স্ত্রী নূরেন ফাতেমা বরাবর এ–সংক্রান্ত আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। নূরেন ফাতেমা দি বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। 

ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তাঁরা অন্যায়, নির্যাতন এবং মানসিক ও প্রশাসনিক হয়রানির মাধ্যমে এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও তাঁর প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের ৬০০ কোটি টাকা ক্ষতিসাধন করা হয়েছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। 

ইয়াছিন চৌধুরীর পক্ষে এই নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জিয়ান মাহমুদ ক্লিনটন। 

তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, নোটিশে ক্ষতিপূরণের ৬০০ কোটি টাকা পরিশোধের জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করা না হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলাসহ অন্যান্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

গত বছর প্রায় সাড়ে ১২শ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ ওঠার পর আলোচনায় আসেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ওই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন। 

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ইয়াছিন চৌধুরী বিদেশে পালিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। 

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে হাছান মাহমুদের অবস্থান জানা যাচ্ছে না। 

নোটিশে বিগত বছরগুলোতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাছান মাহমুদ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের সব কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি করেন। 

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, হাছান মাহমুদের স্ত্রীর মালিকানাধীন বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসের নামে ব্যাংক থেকে নেওয়া ৬৮ কোটি টাকার বেশি ঋণ অন্যায়ভাবে এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে ২০১২ সালে অক্টোবরে একটি কনটেইনার ভেসেল নির্মাণের জন্য এফএমসি ডকইয়ার্ডের সঙ্গে বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসের চুক্তি হয়। এর নির্মাণ মূল্য ধরা হয় ৪৯ কোটি ১৫ লাখ টাকার বেশি। কিন্তু বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিস সাড়ে ২৪ কোটি টাকা দেয়। বাকি সাড়ে ২৪ কোটি পাওনা থাকে। 

একই সময় ১৮ কোটি ৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফিশিং ট্রলার নির্মাণের চুক্তি করা হয়। চুক্তি মূল্য অনুযায়ী নোটিশ গ্রহীতারা ১৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। বাকি ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বকেয়া থাকে। 

টাকা পাওনা থাকার পরও এফএমসি ডকইয়ার্ড নিজস্ব উৎস থেকে টাকা বিনিয়োগ করে উভয় জাহাজ নির্মাণকাজ সম্পাদন করেছিল। এসব পাওনা টাকা বহু বছর পরিশোধ করা হয়নি। গত ১০ বছর প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব বিনিয়োগের বর্তমানে সুদ ও বিজনেস অপরচুনিটি কস্টসহ ৮০ কোটি টাকার অধিক হয়েছে। যা এফএমসি ডকইয়ার্ড বহন করছে। 

এ ছাড়া হাছান মাহমুদ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী থাকাকালে প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও লিজিং কোম্পানিগুলো আতঙ্কিত হয়ে ব্যবসায়িক সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। এতে ইয়াছিন চৌধুরী ও তাঁর প্রতিষ্ঠান চরমভাবে আর্থিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন ও দেশ–বিদেশে ভাবমূর্তি গভীর সংকটে পড়ে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। 

২০২১ সালে মার্চে চট্টগ্রামে এফএমসি ডকইয়ার্ডের অফিসে গিয়ে নিরাপত্তা রক্ষীদের মারধর করেন ড. হাছান মাহমুদের ছোট ভাই খালেদ মাহমুদ। ছবি: ভিডিও ফুটেজ থেকে নেওয়া নোটিশ বলা হয়েছে, হাছান মাহমুদের ছোট ভাই খালেদ মাহমুদের নেতৃত্বে এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেডে প্রধান কার্যালয় ও ডকইয়ার্ডে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এর ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। 

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর লাগোয়া বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদণ্ডী গ্রামে ৫০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় এফএমসি ডকইয়ার্ড লিমিটেড। এটি এখন বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এরই মধ্যে দেশ-বিদেশে স্বীকৃতি পেয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত