Ajker Patrika

হালদাপাড়ে তামাকের বিষ, বিপন্ন জীববৈচিত্র্য

  • অতিমুনাফার লোভে কিছু কৃষক তামাক চাষ করছেন।
  • চলতি মৌসুমে ২০ একর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে।
  • তামাকপাতা থেকে নির্গত পানি মিশছে হালদায়।
আব্দুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭: ৫৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

হালদাপাড়ে তামাক চাষ, অবাধে কাঠ পুড়িয়ে তামাক পোড়ানো ও মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে। তামাকের বিকল্প চাষাবাদে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রান্তিক কৃষকদের বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া সত্ত্বেও কিছু মানুষ আবার তামাক চাষে জড়িয়ে পড়ছেন। হালদায় চলছে বেপরোয়া বালু উত্তোলনও।

হালদা নদীর উজানে তামাক চাষে উদ্বেগ জানিয়ে চট্টগ্রামের হালদা রিসার্চ সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, হালদা হেরিটেজ আইনে হালদা অববাহিকায় তামাক নিষিদ্ধ সত্ত্বেও সম্প্রতি কিছু পরিবেশ বিনষ্টকারী মানুষের অজ্ঞতায় এবং তামাক কোম্পানির প্ররোচনায় তামাক চাষ হচ্ছে। ইতিমধ্যে হালদার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার তামাক চাষ বিষয়ে আইনে আরও কঠোরতা আনতে যাচ্ছে। তামাক চাষ বিষয়ে ইতিমধ্যে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। হালদা রক্ষায় প্রশাসন আরও কঠোর হবে।

হালদা বিশেষজ্ঞ মনজুরুল কিবরিয়া আরও বলেন, ‘হালদার উজানে তামাক চাষের ফলে তামাকের নিজস্ব বিষাক্ততা ও তামাক চাষে অত্যধিক মাত্রায় ব্যবহৃত কীটনাশক, রাসায়নিক সার হালদার পানিকে অতিরিক্ত মাত্রায় দূষিত করছে। এতে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ, ডলফিনসহ মিঠাপানির সকল মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। হালদাকে বাঁচাতে না পারলে মৎস্য খাতে আমাদের বিশাল ক্ষতি হবে।’

উপজেলা কৃষি ও মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে প্রথমে হালদা নদীর উজান খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার গোরখানা, কালাপানি, ছদরখীল, তুলাবিল, বড়বিল, যোগ্যাছোলা, গ্যাসফিল্ড, দক্ষিণ কালাপানি, দশবিল, ডাইনছড়ি, সালদা, বাটনাতলী এলাকায় শত শত হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়।

এ সময় এলাকার প্রান্তিক কৃষকদের বেশির ভাগ তামাক চাষ নির্ভর হয়ে পড়ে। স্কুল-মাদ্রাসা ঘেঁষে তামাক চাষ, অবাধে গাছ কেটে চুল্লিতে তামাক পোড়ানো এবং তামাক পাতা থেকে নির্গত পানি হালদায় মিশে মিঠা পানির মাছের অবাধ বিচরণ বাধাগ্রস্ত হয়। তখন সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারে তামাকের বিকল্প চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে এগিয়ে আসে প্রশাসন। ধীরে ধীরে কমতে থাকে তামাক চাষ। বিকল্প চাষাবাদে এগিয়ে আসে ৭০-৮০ শতাংশ কৃষক। কিন্তু অবশিষ্ট ২০-৩০ শতাংশ কৃষক অতিমুনাফার লোভে তামাক কোম্পানির প্রলোভনে তামাক চাষ অব্যাহত রাখে। চলতি মৌসুমেও ২০ একর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। একেবারে হালদা নদী ও এর উপশাখা ঘেঁষে লাগানো তামাক এখন দৃশ্যমান।

হালদার উৎপত্তি খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়ন হাসুকপাড়া এলাকার হালদাচড়ায়। দীর্ঘ ৯৮ কিলোমিটার বয়ে চট্টগ্রাম শহরের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় গিয়ে মিশেছে। মানিকছড়ি উপজেলার সদর থেকে ৫-৬ কিলোমিটার পশ্চিমে হালদা নদীর উজান ও শাখাপ্রশাখার চরে সবুজ শাকসবজি চাষ হলেও কিছু কৃষক অধিক লোভে তামাক কোম্পানি থেকে অগ্রিম বীজ, সার, কীটনাশক নিয়ে বিষাক্ত তামাক চাষ করছেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হালদার উজান গোরখানা, ছদরখীল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, হালদা নদীঘেঁষা জমিতে তামাকের চারা মাথা উঁচু করে বেড়ে উঠছে। গোরখানায় ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে তামাক চাষ করেছেন আছারতলীর চাষি মো. আবদুল মতিন। সবজি না করে তামাক চাষ কেন করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হালদা খাল চরের মাটির উর্বরতা শক্তি কমায় শাকসবজি চাষে লোকসান গুনতে হয়। অতিরিক্ত রাসায়নিক সারে তামাক ভালো হয়। তামাক চাষের প্রয়োজনীয় সব সার, ওষুধ তামাক কোম্পানি আমাদের অগ্রিম দিয়ে সহযোগিতা করে। এতে পুঁজি নিয়ে চাষিকে টেনশন করতে হয় না। গত বছর প্রতি কেজি শুকনা তামাকপাতা ভালোমন্দ হিসেবে ১৮০-২১৬ টাকা দরে দিয়েছে কোম্পানি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জহির রায়হান আজকের পত্রিকাকে বলেন, হালদা নদী আমাদের অমূল্য সম্পদ। এই নদীর উজানে এক দশক আগে যে হারে তামাক চাষ করা হতো, এখন তা একেবারে নিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। আগের তামাকচাষিদের তামাকের বিকল্প চাষাবাদে সম্পৃক্ত করতে কৃষি বিভাগ, মৎস্য বিভাগ ও আইডিএফ যার যার অবস্থান থেকে কাজ করছে। শাকসবজি চাষাবাদে জৈব সারের ওপর জোর দেওয়া এবং সরকারি প্রণোদনায় হালদাপাড়ের কৃষকদের অগ্রাধিকার দিয়ে তামাক নির্মূলে কাজ চলছে। জনসচেতনতা বাড়লে তামাক নির্মূল সহজ হয়। এই জন্য জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসা উচিত।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘তামাক চাষের ফলে ব্যবহৃত কীটনাশক ও তামাকের নির্যাস হালদা নদীর পানিতে মেশায় মাছের প্রজনন মৌসুমে প্রজননক্ষেত্র ব্যাপক পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানিকছড়ি মৎস্য অফিস এ বিষয়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি হালদার জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে হালদাপাড়সংশ্লিষ্ট এলাকায় তামাকের বিকল্প চাষাবাদ যেমন পুকুরে উন্নত জাতের মাছ চাষে উৎসাহ দিচ্ছে। সরকারি পোনা বিতরণেও ওখানকার লোকজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে মৎস্য অধিদপ্তর কাজ করছে। আগে হালদাপাড়ে তামাক চাষ বেশি হলেও এখন কমে আসছে। এবার ১১ জন চাষি ২০ একর জায়গায় তামাক লাগিয়েছেন। আশা করছি, ভবিষ্যতে আরও কমে আসবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুমকীতে অটো-টমটম সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২

দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের চেষ্টা: ব্যর্থ হয়ে ১৪ জনকে ফেরত নিল বিএসএফ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চলছে, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তৎপরতায় ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে জিরো লাইন থেকে ফেরত নিয়ে যায় বিএসএফ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, বিএসএফের আহ্বানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীন মহিষকুন্ডি বিওপিতে কর্মরত সুবেদার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধিদল এবং ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ উদয় কোম্পানি কমান্ডার এসি অনিল কুমারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএসএফ প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।

বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ১৫৪/০৭ এস-সংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে চাইডোবা মাঠে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের ফেরত নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

পুশ ইনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০); শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।

এই ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন স্পর্শকাতর সময়ে ভারতের এমন পুশ ইন চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নানা আলোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ২

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গবাদিপশুর খাবার (ভুসি) বহনকারী একটি ট্রাকের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই আরেকটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং অপরটি মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর রেকার দিয়ে ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহত চালক ও হেলপারের পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত