Ajker Patrika

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১ ও ২ আসনে আ.লীগের এমপিদের বিরুদ্ধে ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচনায়

মো. শফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০: ৪৯
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১ ও ২ আসনে আ.লীগের এমপিদের বিরুদ্ধে ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচনায়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনে ভোটের মাঠে মোট প্রার্থী ৪৫ জন। তাঁদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আলোচনায় রয়েছেন তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অনেকটা জোরে এবার মাঠে নেমেছেন।

ভোটাররা বলছেন, এই দুই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের গলার কাঁটা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। কেননা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী হতে হলে তাঁদের সঙ্গে কঠিন লড়াই করতে হবে। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে ছয়জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। তাঁদের অন্যতম বিএনপি চেয়ারপারসনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান। তিনি এই আসনে স্বতন্ত্র ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে একাধিকবার নির্বাচন করেছেন। তবে বিজয়ী হতে পারেননি। 

এই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন। তাঁর সঙ্গে লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের একটি অংশ সমর্থন জানিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে একরামুজ্জামানকে। 

এ ছাড়া নাসির নগরের ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে একাধিক চেয়ারম্যানও তাঁর সঙ্গে মাঠে নেমেছেন। পাশাপাশি নাসিরনগর উপজেলার শীর্ষ দুই-তিনজন ছাড়া মাঠপর্যায়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরাও তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। যদিও তাঁকে গত ২৮ নভেম্বর বিএনপি সব পদ থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। পরদিন ২৯ নভেম্বর তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। 

এই ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান বলেন, ‘আমার বিষয়ে বিএনপি কী বলল, এই ব্যাপারে মন্তব্য করব না। আমি জনগণের মতামত নিয়ে নির্বাচনে এসেছি। আমি জনগণের মনোনীত প্রার্থী।’ 

এ আসনের ভোটার শামিম সরকার জানান, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর গলার কাঁটা স্বতন্ত্র প্রার্থী  এ কে একরামুজ্জামন। কেননা, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী না হলে সহজেই জিততে পারতেন। এখন তাঁকে ভোটের মাঠে লড়াই করতে হবে। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজন হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। তাঁরা হলেন দুবারের মহাজোটের সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত জিয়াউল হক মৃধা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মঈন উদ্দিন। এই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শাহজাহান আলম সাজু। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা মহাজোটের সমর্থনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে ২০০৮, ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও ২০২৩ সালে এই আসনে উপনির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে তিনি আর জয়ী হতে পারেননি। 

আরেক প্রার্থী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন। সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে সামান্য ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। প্রস্তুতিও নিচ্ছেন ভোটের লড়াইয়ের জন্য। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘এই আসনে দুবার সংসদ সদস্য ছিলাম। আমি রওশন এরশাদপন্থী, তাই আমাকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই নির্বাচনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।’ 

স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈন উদ্দিন বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন মাঠে-ময়দানে জনগণের সঙ্গে কাজ করেছি। তৃণমূল পর্যায়ে আমার রয়েছে গভীর যোগাযোগ। বিগত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলাম। সামান্য ভোটে হেরেছি। জনগণের চাপে এবার আবারও প্রার্থী হয়েছি।’ 

এই আসনের ভোটার আবুল কাশেম জানান, এই আসনটি দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। আশুগঞ্জে ভোট কম, সরাইলে ভোট বেশি। ফলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাজাহান আলম সাজুর নিজ উপজেলায় আশুগঞ্জে বাড়ি মঈন উদ্দিনের। এই দুই প্রার্থী ভোটের ভাগাভাগি সুবিধা নেবে সরাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা। 

বাদ পড়লেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজ: 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ফিরোজুর রহমান। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদীর চৌধুরী। এই নির্বাচনে তাঁর সঙ্গে ভোটের লড়াই হওয়ার কথা ছিল স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমানের সঙ্গে। তবে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় ফিরোজুর রহমানের মনোনয়নপত্রটি বাতিল হয়েছে। 

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনী এলাকার ভোটারের ১ শতাংশ স্বাক্ষর জমা দিতে হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে যে ১০ জন ভোটারের স্বাক্ষর যাচাই করা হয়। এর মধ্যে একজন ভোটার স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমানকে স্বাক্ষর দেননি বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাঁর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদীর চৌধুরী ও তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুছা আনছারির চক্রান্তে আমার মনোনয়নপত্রটি বাতিল হয়েছে। আমি নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুর খবরে ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ, আগুন

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ঝালকাঠিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পরপরই ঝালকাঠি শহরের কলেজ মোড়ে জড়ো হতে থাকেন তাঁরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী ছাত্রশিবির ও গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা রাত সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ওসমান হাদির হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি চলমান থাকবে।

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়া ওসমান হাদি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার গণসংযোগের উদ্দেশ্যে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে তিনি হামলার শিকার হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, চলন্ত একটি রিকশায় থাকা অবস্থায় একটি মোটরসাইকেল থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর রাতেই তাঁকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।

ঢাকায় হাদির অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া নিউরোসার্জন অধ্যাপক আবদুল আহাদ বৃহস্পতিবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় জানান, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তায় বলা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, আটক ১২

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
গতকাল রাতে চট্টগ্রামের খুলশীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাতে চট্টগ্রামের খুলশীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ চলাকালে খুলশীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জের পাশাপাশি টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে ২টার মধ্যে খুলশী থানার কাছাকাছি ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে হাজারো বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-জনতা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা হাদির হত্যার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে পুলিশের অনুরোধে রাত ১টার দিকে তাঁরা কর্মসূচি শেষ করে চলে যান।

কর্মসূচি শেষ হওয়ার প্রায় পাঁচ মিনিট পর হঠাৎ ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল মিছিল নিয়ে আবার ওই কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পর তারা কার্যালয় লক্ষ্য করে বাইরে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে কার্যালয়ের ভেতরে দায়িত্বে থাকা তিন পুলিশ সদস্য সামান্য আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। বিক্ষোভকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

ঘটনার পর রাতেই ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয় পরিদর্শনে যান চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শুরুতে প্রায় এক হাজার মানুষ সেখানে অবস্থান নিয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর তারা শান্তিপূর্ণভাবে সরে যায়। তবে অল্প সময়ের ব্যবধানে একটি ছোট দল এসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

হাসিব আজিজ বলেন, ‘এই ঘটনাকে আমি হামলা বলব না। তারা কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশের কোনো চেষ্টা করেনি। কয়েকটি ইটপাটকেল গেট পেরিয়ে কিছুটা ভেতরে পড়েছিল। এতে আমাদের কয়েকজন সদস্য সামান্য আহত হয়েছেন। বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’

পুলিশ কমিশনার জানান, ঘটনাস্থল থেকে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হবে। ইটপাটকেল নিক্ষেপে জড়িত ব্যক্তিদের সংগঠিত করার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি আটক ব্যক্তিদের মধ্যেই রয়েছেন।

এদিকে ঘটনার পর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ঘটনার প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবাসিক হোটেল থেকে জাপা নেতার মরদেহ উদ্ধার

বাগেরহাট প্রতিনিধি
হাজরা শহিদুল ইসলাম বাবলু। ছবি: সংগৃহীত
হাজরা শহিদুল ইসলাম বাবলু। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে বাগেরহাট জেলা জাতীয় পার্টির (জাপা) সাধারণ সম্পাদক হাজরা শহিদুল ইসলাম বাবলুর (৬৮) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বাড়িতে আনার প্রস্তুতি চলছে। এর আগে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে দুপুরের দিকে রাজধানীর পল্টন এলাকার বিজয়নগর আবাসিক হোটেলের তৃতীয় তলার ৩২৪ নম্বর কক্ষ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে তিনি ওই হোটেলে উঠেছিলেন।

হাজরা শহিদুল ইসলাম বাবলু বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলা সদরের মৃত আকবর আলী হাজরার ছেলে। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি বাগেরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-২ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।

পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান জানান, হাজরা শহিদুল ইসলাম হোটেল কক্ষের বাথরুমে পড়ে ছিলেন। বিষয়টি হোটেল কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে।

নিহত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাজরা শহিদুল ইসলাম এর আগে একবার হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন। তাঁর মৃত্যু হার্ট অ্যাটাকে হয়েছে কি না তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

হাজরা শহিদুল ইসলামের নিকটাত্মীয় মো. শাহিন জানান, বুধবার দুপুরে পার্টি অফিসে মিটিং শেষ করে ওই হোটেলে যান শহিদুল ইসলাম। রাত ৮টার পর থেকে আর কেউ তাঁর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। বৃহস্পতিবার সকালেও যোগাযোগ করতে না পেরে বাগেরহাট থেকে ঢাকায় যাওয়া অন্য জাতীয় পার্টির নেতাদের জানানো হয়। তাঁরা হোটেলে গিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কক্ষ খুলে তাঁর মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে। তাঁর মরদেহ কচুয়ায় নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে। আজ জুমার নামাজ শেষে তাঁর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে শহিদুল ইসলাম বাবলুর মৃত্যুতে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নুরুল হুদা নুরসহ জেলা জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হান্নান মাসউদকে ফেসবুকে হুমকি

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
ফেসবুকে হুমকি দেওয়া পোস্ট। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
ফেসবুকে হুমকি দেওয়া পোস্ট। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে শাপলা কলি প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ‘রুপক নন্দী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া এক পোস্টে তাকে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

ভাইরাল হওয়া ওই পোস্টে দেখা যায়, রুপক নন্দী সরাসরি হান্নান মাসউদকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘হান্নান, আগুন নিয়ে খেলা করো না। পরে পস্তাতে হবে—বলে দিলাম।” পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদ (পিচ্চি আজাদ)কে যারা ভালোবাসেন, তারা হান্নান মাসউদকে ছাড় দেবেন না। এমনকি হালিম আজাদকে গ্রেপ্তার করা হলে হান্নান মাসউদকে হাতিয়ায় নিষিদ্ধ করার ঘোষণাও দেওয়া হয়।

এদিকে একই সময়ে আব্দুল হালিম আজাদের ছেলে ইসরাত রায়হান অমি এনসিপির জনৈক কর্মীকে মেসেঞ্জারে চরম উসকানিমূলক বার্তা পাঠান। ওই বার্তায় তিনি লেখেন, আব্দুল হালিম আজাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে হান্নান মাসউদ ও তানভীরসহ অন্যান্য নেতাদের হাতিয়ার উত্তর অঞ্চলে চলাচল ‘হারাম’ করে দেওয়া হবে। বার্তায় আরও বলা হয়, “ডাইরেক্ট গিলে খেয়ে ফেলবে আমাদের নেতা-কর্মীরা।”

স্থানীয়রা জানান, হাতিয়ার রাজনীতিতে আব্দুল হালিম আজাদ সরকার গঠনে সম্ভাবনাময় একটি দলের পক্ষে সম্প্রতি অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। এ নিয়ে এনসিপি প্রার্থী হান্নান মাসউদের সমর্থকদের সঙ্গে এক ধরনের স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। সম্প্রতি আব্দুল হালিম আজাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার গুঞ্জন শুরু হলে তার অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং এর দায় হান্নান মাসউদের ওপর চাপিয়ে এ ধরনের হুমকি দিতে শুরু করে।

এই ঘটনায় হাতিয়ার সাধারণ ভোটার ও এনসিপি সমর্থকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার বলেন, নির্বাচনের আগে একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে এভাবে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

এ বিষয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, “আমি এসব হুমকিতে মোটেও শঙ্কিত নই। জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার গুলির মুখে আমরা ভয় পাইনি, সেখানে এসব সন্ত্রাসীদের তোয়াক্কা করি না। প্রশাসন যদি শুরু থেকেই কঠোর ব্যবস্থা নিত, তাহলে তারা এত বড় সাহস পেত না। আজ হাদি’র মতো জুলাই অভ্যুত্থানের একজন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। এটা গভীর উদ্বেগের বিষয়।”

এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যারা পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা করছে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত