Ajker Patrika

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও বন্ধ সাভার-আশুলিয়ার ৪০ কারখানা 

নিজস্ব প্রতিবেদক ও সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও বন্ধ সাভার-আশুলিয়ার ৪০ কারখানা 

সাভার-আশুলিয়ার বেশির ভাগ শিল্প কারখানায় আজ মঙ্গলবার কার্যক্রম চালু রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে শিল্পাঞ্চলে। তবে নানা কারণে এই এলাকার ৪০টি কারখানা বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, এপিবিএন ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিতে দেখা গেছে। সড়কেও টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা।

পোশাক শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে পোশাক কারখানায় নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ সমান অধিকার নিশ্চিত করা, হাজিরা বোনাস এবং টিফিন বিল বাড়িয়ে আজ থেকে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার সব কারখানা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় বিজিএমইএ। সকাল থেকে কারখানার শ্রমিকেরা নির্ধারিত সময়ে তাদের কর্মস্থলে যোগ দেন। গত কয়েক দিনের অশান্ত পরিবেশ আজ শান্ত।

আশুলিয়ার শিল্প পুলিশ-১ ও তৈরি পোশাক কারখানা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বেতন ও হাজিরা বোনাস দেওয়া, টিফিন বিল বৃদ্ধি এবং শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ কিছু দাবিতে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আশুলিয়া ও গাজীপুর শিল্প এলাকায় কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন। কোথাও কোথাও আন্দোলন রূপ নিচ্ছিল সহিংসতায়। সব মিলিয়ে এক অস্থির পরিস্থিতি পার করছিল পোশাক খাত।

বিভিন্ন দাবি নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষের বনিবনা না হওয়ায় এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে গতকাল সোমবার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে ৯০টি কারখানায় ছুটি ছিল। তবে এ সময়ে কোথাও বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত কয়েক দিন ধরেই মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ ও প্রশাসনসহ পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার বিজিএমইএ ভবনে বৈঠকে বসেন শ্রমিক-মালিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ায় এই শিল্প খাতে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় থাকবে বলে আশা মালিকপক্ষের।

আশুলিয়ার রাবাব গ্রুপের ফাউন্টেইন গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড কারখানার এমব্রয়ডারি অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মিজানুর রহমান সুমন বলেন, ‘এত দিন অস্থিরতা বিরাজ করছিল, আমরাও উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলাম। বিজিএমইএ ইতিমধ্যেই শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়েছে, শ্রমিকরাও ভালো সাড়া দিয়েছে। আমাদের কারখানা তো খোলা হয়েছেই। বেশির ভাগ কারখানাই খুলেছে। পোশাক শিল্প নিয়ে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র ছিল, আমার মনে হয় সেটা কেটে গিয়েছে। এখন আমরা পূর্ণোদ্যমে কাজ করতে পারব।’

একই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ম্যানেজার (মানবসম্পদ বিভাগ) আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিজিএমইএ গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলো মেনে নিয়েছে। আজ বেশির ভাগ কারখানাই খুলেছে। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি এখনো আশপাশের কিছু কারখানার শ্রমিকেরা অন্য দাবি তুলছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছেন, কিন্তু শ্রমিকদের তুলনায় সেটা অপ্রতুল। আমাদের অনুরোধ থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও বেশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের মাধ্যমে বিষয়টাকে যেন শিথিল পর্যায়ে নিয়ে আসে। আমরা সবাই চাই একটি সুন্দর, স্বাভাবিক দেশ। এটা নিশ্চিত করতে আমাদের সব পক্ষকেই মিলেমিশে কাজ করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন তৃতীয় পক্ষ এর ভেতরে ঢুকে কোনো সুযোগ-সুবিধা না নিতে পারে।

এদিকে, বিভিন্ন দাবি নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষের বনিবনা না হওয়ায় এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে আজও প্রায় ৪০টি কারখানায় ছুটি দিয়েছে কারখানা মালিকেরা। তবে এ সময়ে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলতার খবর পাওয়া যায়নি।

2-ashuliaবাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, ‘গতকাল বিজিএমইএ বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত হওয়ার পর আজকে অধিকাংশ কারখানা সচল রয়েছে। কিছু কারখানা আগে থেকে বন্ধ রয়েছে। কিছু কারখানায় শ্রমিকেরা অভ্যন্তরীণ কিছু দাবিতে কাজ বন্ধ করে ভেতরে বসে আছে। এমনিতে পরিস্থিতি ভালোই মনে হচ্ছে। বিজিএমইএর সিদ্ধান্ত যেটা হয়েছে শ্রমিকেরা এর অনেক কিছুই মেনে নিয়েছে। এখন থেকে নারী-পুরুষ বৈষম্যও থাকবে না। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর কারণে শ্রমিকরাও কাজে ফিরেছে।’

র‍্যাব ৪ সিপিসি-২–এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন, ‘পোশাক খাতে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা গত কয়েক দিন ধরেই টানা কাজ করে যাচ্ছি। র‍্যাব-৪ এর মোট ১৩টি টহল গাড়ি এখানে রয়েছে। এ ছাড়া বিজিবি, সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ কাজ করছে। আজকে বাইপাইল, ইপিজেড, আশুলিয়া, সাভার, জিরানীসহ পুরো এলাকায় যৌথ বাহিনী কাজ করছে। পরিস্থিতি আজ অনেকটাই স্বাভাবিক। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।’

শিল্প পুলিশ-১ (আশুলিয়া) এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘বেশির ভাগ কারখানাই খুলেছে। কাজ চলছে। আগের ১৯টি কারখানা বন্ধ ছিল। আর আজ ২১টি কারখানার শ্রমিকেরা কাজ করছে না। সব মিলিয়ে ৪০টি কারখানায় কাজ বন্ধ রয়েছে। এখানে কোনো সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত