Ajker Patrika

পল্টন বোমা হামলার কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে: সেলিম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ২৭
পল্টন বোমা হামলার কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে: সেলিম

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, ‘কমিউনিস্ট পার্টির অগ্রযাত্রা থামাতেই পল্টনে মহাসমাবেশে বোমা হামলা চালিয়ে পাঁচজন কমরেডকে হত্যা করা হয়েছিল। পল্টন বোমা হামলার মূল কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।’

২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মহাসমাবেশে বোমা হামলার ২১ তম বার্ষিকী ছিল আজ বৃহস্পতিবার। সে হামলায় পাঁচজন নিহত ও শতাধিক লোক আহত হয়। সেদিনের শহীদদের স্মরণে পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনের সামনের অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মুজাহিদুল সেলিম এ কথা বলেন। 

সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘পল্টন হত্যাকাণ্ডে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই শোষণমুক্ত-শ্রেণিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করে গেছেন। হত্যা-নির্যাতন করে আদর্শের লড়াই থেকে কমিউনিস্টদের কখনই বিচ্যুত করা যাবে না। বর্তমানে দেশ “৯৯ বনাম ১” ধারায় বিভক্ত। এই ৯৯ ভাগ মানুষ যাতে তাঁদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে না পারে, তার জন্য নানা ষড়যন্ত্র চলছে।’ 

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি কমিউনিস্টদের স্তব্ধ করার জন্য বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। সেদিন পল্টন ময়দানে বোমা হামলার পর আলামত সংগ্রহ না করে সিপিবির নেতা-কর্মীদের তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বাহিনী লাঠিপেটা করে ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। হামলার পর জনগণের আরও বেশি অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সিপিবি এগিয়ে যাচ্ছে।’ 

সংক্ষিপ্ত এ সমাবেশে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম বলেন, ‘হামলা করে, নির্যাতন করে কমিউনিস্টদের থামানো যায়নি এবং ভবিষ্যতেও যাবে না। শহীদদের রক্ত পতাকা নিয়েই কমিউনিস্ট পার্টি এগিয়ে যাবে। বর্তমানে দেশ এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রহীনতা, লুটপাটতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা আজ চরম আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থা থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে বামপন্থার উত্থান ঘটাতে হবে।’ 

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সদস্য ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ-মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সদস্য জহিরুল ইসলাম, গণফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, ন্যাপ কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, সিপিবির কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, শামসুজ্জামান হীরা, সুকান্ত শফি কমল, জলি তালুকদার, আবিদ হোসেন, লুনা নূর, সাদেকুর রহমান শামীম প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আহসান হাবীব লাবলু। 

অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিপিবি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল, ন্যাপ, গণফোরাম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কৃষক সমিতি, ক্ষেতমজুর সমিতি, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, গার্মেন্টস টিইউসি, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন, সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ, সিপিবি ঢাকা উত্তর, সিপিবি ঢাকা জেলা কমিটি, সিপিবি নারী সেল এবং ঢাকা নগরের বিভিন্ন থানা ও শাখাসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। আন্তর্জাতিক সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়। 

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের এই দিনে রাজধানীর পল্টন ময়দানে সিপিবির মহাসমাবেশে বোমা হামলা চালায় প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতক চক্র। এই হামলায় খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা হিমাংশু মণ্ডল, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিক নেতা আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরা থানার লতিফ বাওয়ানি জুট মিলের শ্রমিক নেতা আবুল হাসেম ও মাদারীপুরের মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যান। হামলায় গুরুতর আহত খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা কমরেড বিপ্রদাস রায় ওই বছরেরই ২ ফেব্রুয়ারি মারা যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর-আগুন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো-ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর-আগুন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এসব ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রথম আলোর কার্যালয়ে আসেন। তারা প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপর কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। ভবনের সামনে অগ্নিসংযোগও করা হয়। এর পরপরই ডেইলি স্টার ভবনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিসংযোগের পর ভবনের ভেতর ৩০-৩৫ জন সাংবাদিক ও কর্মী আটকা পড়েন। বিক্ষোভের শুরুতেই রাত ১০টার সময় ফার্মগেট থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তেজগাঁও স্টেশন থেকে কয়েকটি ইউনিট ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয়ে দিকে রওনা হয়। তবে তাদের বাধা দেন বিক্ষুব্ধরা। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ডেইলি স্টার ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

এদিকে গতকাল রাতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করা হয়। রাত ২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ ও বিক্ষোভ চলছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো বা ডেইলি স্টারে হামলার পক্ষে না: আবরার ফাইয়াজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আবরার ফাইয়াজ। ফাইল ছবি
আবরার ফাইয়াজ। ফাইল ছবি

প্রথম আলো বা ডেইলি স্টারে হামলার পক্ষে না— এমন মন্তব্য করে পোস্ট করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাইয়াজ। তিনি ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার আবরার ফাহাদের ছোট ভাই।

আজ রাত পৌনে একটার দিকে নিজের ফেসবুকে এ পোস্ট করেছেন তিনি।

আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ লেখেন, ওসমান হাদি ভাই চেয়েছিলেন কালচারাল ফ্যাসিজমের মূলোৎপাটন করতে। ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে এত এত বই রাখার বা এক্টিভিটির কারণ ছিলো প্রথম আলো গং দের ন্যারেটিভের বাইরে মানুষকে চিন্তা করতে, কথা বলতে শেখানো।

তিনি তাঁর ফেসবুকে আরও লেখেন, ওসমান ভাইয়ের শাহাদাতকে স্যাবোটেজ দিয়ে চাপা দেওয়া এই চক্রান্তে পা না দিয়ে সঠিক লক্ষ্যে অটুট থাকুন। এজেন্সি গত এক সপ্তাহে স্যাবোটেজের অনেক পরিকল্পনা করেছে এটা মাথায় রাইখেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেইলি স্টার ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে ডেইলি স্টার ভবনে দেওয়া আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয় ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তর আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এর আগে, ডেইলি স্টার ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে তেজগাঁও ফায়ার স্টেশন ২টি ইউনিট কাজ করে।

বর্তমানে ডেইলি স্টার ভবনের সামনে এনসিপি নেতারা। সেখানে রয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন।

মুশফিক উস সালেহীন বলেন, ‘ডেইলি স্টার ভবনের সাংবাদিক অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে আমরা এখানে এসেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুর খবরে নওফেলের বাসায় অগ্নিসংযোগ, ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ২৩
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভকারীরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসায় ভাঙচুর ও বাড়ির সামনে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় ইন্ডিয়ান হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১ থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেট চশমা হিলে নওফেলের বাসার সামনে অবস্থান করে। একপর্যায়ে তারা বাসার ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। বাসার পার্কিংয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।

একই সময়ে আরেকটি দল নগরীর খুলশী এলাকায় ভারতীয় হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, ঘটনাস্থলে টিম রয়েছে। পুলিশ বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে থামানোর চেষ্টা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত