কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

বাড়িঘর ফেলে স্বজনদের সঙ্গে জীবন বাঁচাতে মানুষ ছুটছে আশ্রয়শিবিরে কিংবা নিরাপদ কোনো জায়গায়। এমনও হয়েছে, মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে আর ফেরেনি বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলেটি। খাবারের খোঁজে বাইরে বের হওয়া বাবা ফেরেননি সন্তানের কাছে। কয়েক দিন আগে এমনই ছিল ফিলিস্তিন নামের দেশটির গাজার অবস্থা। যুদ্ধবিরতির পর অবস্থা কিছুটা বদলেছে বলা চলে। কিন্তু কেউ জানে না, মৃত্যুর ছায়া তাদের পিছু ছাড়বে কি না।
শিশুর জন্মে নিরানন্দ জনপদ
গাজায় শিশুর জন্ম হলে অনাবিল আনন্দ বয়ে যায় না পরিবারগুলোয়; বরং নতুন প্রাণের সঞ্চারে সেখানে বাজে হতাশা আর হারানোর সুর। তারা নবজাতককে নোংরা পানিতে তৈরি ইনফ্যান্ট ফর্মুলা খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছে। সেই খাবার ডিহাইড্রেশন, হেপাটাইটিস এ এবং ত্বকের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, যুদ্ধের কারণে সেখানের গর্ভাবস্থা এবং যুদ্ধ-পরবর্তী সব বয়সী নারীর স্বাস্থ্যের অবস্থা গুরুতর। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, গাজায় গত ১৫ মাসের বোমাবর্ষণ এবং অবরোধের মধ্যে গর্ভবতী, পরবর্তী সময়ে মা এবং সব বয়সী মেয়ের স্বাস্থ্যের ওপর ‘গুরুতর এবং কখনো কখনো জীবন সংকটাপন্ন বিপদ’ সৃষ্টি করেছে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ
গত মাসের শেষ মঙ্গলবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘একটি ইনকিউবেটরে পাঁচটি শিশুর মতো গাজায় ইসরায়েলের হামলার মধ্যে গর্ভবতী নারীদের অধিকার লঙ্ঘন’ শীর্ষক ৫০ পাতার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজায় চিকিৎসাকেন্দ্র এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর আক্রমণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় ‘গর্ভাবস্থা, প্রসব এবং পরবর্তী সময়ে’ নারী ও মেয়েদের ওপর সরাসরি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। এই প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ইসরায়েলের ওপর যে অভিযোগগুলো এনেছে, সেগুলো হলো—
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দাবি করেছে, এসব বিষয় গর্ভবতী নারী ও মেয়েদের এবং তাঁদের সন্তানদের জন্য প্রাথমিক ও পরবর্তী চিকিৎসার অধিকার লঙ্ঘন করেছে।
চাপান-উতোর খেলা
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পুনরায় গাজায় গণহত্যার অভিযোগ করেছে। স্বাভাবিকভাবে এই অভিযোগ ইসরায়েল দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। এসব ঘটনায় ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কাছে দায় দিয়েছে হামাসকে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আবার অভিযোগ করেছে, হামাস হাসপাতালগুলোকে তার সামরিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছে।
গর্ভপাতের হার ৩০০ শতাংশ
ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানড প্যারেন্টহুড ফেডারেশন গত জুলাই মাসে জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় গর্ভপাতের হার ৩০০ শতাংশ বেড়েছে। দুজন নারী হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে জানান, একই বিস্ফোরণের ঘটনায় তাঁদের দুজনের স্বামীরা ও গর্ভের সন্তান মারা গেছে এবং তাঁরা আহত হয়েছেন। গর্ভবতী ও বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েরা সেখানে অস্থায়ী ও ভিড়ে ঠাসা জায়গায় শৌচাগার শেয়ার করছেন। এর ফলে বিশেষভাবে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এর ফলে প্রি-টার্ম লেবার, কম ওজনের শিশুর জন্ম এবং মৃত সন্তান প্রসবের আশঙ্কা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে নারীরা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়াতে অস্বস্তি কিংবা লজ্জা পান। এই গোপনীয়তার অভাব মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।
গত ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘের প্রজনন অধিকার সংস্থা জানিয়েছিল, ৪৮ হাজারের বেশি গর্ভবতী জরুরি বা বিপজ্জনক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হচ্ছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। এর শর্ত অনুযায়ী প্রথম ধাপে ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে কয়েক ধাপে। কাতার জানিয়েছে, প্রথম ধাপে মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের মধ্যে ছিল বেসামরিক নারী, নারী সেনা, শিশু, বয়স্ক, অসুস্থ ও আহত বেসামরিক নাগরিক।
একজন ইনশিরাহর গল্প
ইনশিরাহ দারাবেহ। গাজার অধিবাসী। যুদ্ধের সময় মেয়ে মারা গেলে তিনি শহরতলিতে শ্বশুরবাড়ি চলে যান। যুদ্ধবিরতির সপ্তম দিনে ইনশিরাহ সেখান থেকে ১০ কিলোমিটার পথ
হেঁটে গাজা শহরে নিজ বাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সংবাদমাধ্যমকে ইনশিরাহ জানান, যেভাবেই হোক, তিনি তাঁর মেয়ে মারামের মৃতদেহ খুঁজে বের করবেন এবং তাকে সম্মানজনকভাবে দাফন করবেন। ইনশিরাহ বলেন, ‘আমি আমার বাড়ি ফিরে যেতে চাই না। আমি শুধু তাকে খুঁজে বের করতে চাই এবং তার নাম একটি সমাধিফলকে লিখে দাফন করতে চাই।’
ইনশিরাহর মতো এমন অনেক নারী আছেন, যাঁরা স্বজনের লাশও দেখতে পারেননি। ইনশিরাহর গল্প তেমন হাজারো নারীর গল্পের মতো, যাঁরা সন্তান, স্বামী, বাবা ও ভাই হারানোর বেদনায় নীল হয়ে আছেন। যারা বেঁচে গেছে, তাদের দেখাশোনার ভার তাঁদের ওপর এসে পড়েছে। এ ভার বহন করা মুক্তির স্বাদ আসলে কেমন?
সূত্র: সিএনএন, আল জাজিরা

বাড়িঘর ফেলে স্বজনদের সঙ্গে জীবন বাঁচাতে মানুষ ছুটছে আশ্রয়শিবিরে কিংবা নিরাপদ কোনো জায়গায়। এমনও হয়েছে, মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে আর ফেরেনি বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলেটি। খাবারের খোঁজে বাইরে বের হওয়া বাবা ফেরেননি সন্তানের কাছে। কয়েক দিন আগে এমনই ছিল ফিলিস্তিন নামের দেশটির গাজার অবস্থা। যুদ্ধবিরতির পর অবস্থা কিছুটা বদলেছে বলা চলে। কিন্তু কেউ জানে না, মৃত্যুর ছায়া তাদের পিছু ছাড়বে কি না।
শিশুর জন্মে নিরানন্দ জনপদ
গাজায় শিশুর জন্ম হলে অনাবিল আনন্দ বয়ে যায় না পরিবারগুলোয়; বরং নতুন প্রাণের সঞ্চারে সেখানে বাজে হতাশা আর হারানোর সুর। তারা নবজাতককে নোংরা পানিতে তৈরি ইনফ্যান্ট ফর্মুলা খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছে। সেই খাবার ডিহাইড্রেশন, হেপাটাইটিস এ এবং ত্বকের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, যুদ্ধের কারণে সেখানের গর্ভাবস্থা এবং যুদ্ধ-পরবর্তী সব বয়সী নারীর স্বাস্থ্যের অবস্থা গুরুতর। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, গাজায় গত ১৫ মাসের বোমাবর্ষণ এবং অবরোধের মধ্যে গর্ভবতী, পরবর্তী সময়ে মা এবং সব বয়সী মেয়ের স্বাস্থ্যের ওপর ‘গুরুতর এবং কখনো কখনো জীবন সংকটাপন্ন বিপদ’ সৃষ্টি করেছে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ
গত মাসের শেষ মঙ্গলবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘একটি ইনকিউবেটরে পাঁচটি শিশুর মতো গাজায় ইসরায়েলের হামলার মধ্যে গর্ভবতী নারীদের অধিকার লঙ্ঘন’ শীর্ষক ৫০ পাতার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজায় চিকিৎসাকেন্দ্র এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর আক্রমণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় ‘গর্ভাবস্থা, প্রসব এবং পরবর্তী সময়ে’ নারী ও মেয়েদের ওপর সরাসরি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। এই প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ইসরায়েলের ওপর যে অভিযোগগুলো এনেছে, সেগুলো হলো—
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দাবি করেছে, এসব বিষয় গর্ভবতী নারী ও মেয়েদের এবং তাঁদের সন্তানদের জন্য প্রাথমিক ও পরবর্তী চিকিৎসার অধিকার লঙ্ঘন করেছে।
চাপান-উতোর খেলা
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পুনরায় গাজায় গণহত্যার অভিযোগ করেছে। স্বাভাবিকভাবে এই অভিযোগ ইসরায়েল দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। এসব ঘটনায় ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কাছে দায় দিয়েছে হামাসকে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আবার অভিযোগ করেছে, হামাস হাসপাতালগুলোকে তার সামরিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছে।
গর্ভপাতের হার ৩০০ শতাংশ
ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানড প্যারেন্টহুড ফেডারেশন গত জুলাই মাসে জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় গর্ভপাতের হার ৩০০ শতাংশ বেড়েছে। দুজন নারী হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে জানান, একই বিস্ফোরণের ঘটনায় তাঁদের দুজনের স্বামীরা ও গর্ভের সন্তান মারা গেছে এবং তাঁরা আহত হয়েছেন। গর্ভবতী ও বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েরা সেখানে অস্থায়ী ও ভিড়ে ঠাসা জায়গায় শৌচাগার শেয়ার করছেন। এর ফলে বিশেষভাবে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এর ফলে প্রি-টার্ম লেবার, কম ওজনের শিশুর জন্ম এবং মৃত সন্তান প্রসবের আশঙ্কা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে নারীরা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়াতে অস্বস্তি কিংবা লজ্জা পান। এই গোপনীয়তার অভাব মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।
গত ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘের প্রজনন অধিকার সংস্থা জানিয়েছিল, ৪৮ হাজারের বেশি গর্ভবতী জরুরি বা বিপজ্জনক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হচ্ছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। এর শর্ত অনুযায়ী প্রথম ধাপে ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে কয়েক ধাপে। কাতার জানিয়েছে, প্রথম ধাপে মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের মধ্যে ছিল বেসামরিক নারী, নারী সেনা, শিশু, বয়স্ক, অসুস্থ ও আহত বেসামরিক নাগরিক।
একজন ইনশিরাহর গল্প
ইনশিরাহ দারাবেহ। গাজার অধিবাসী। যুদ্ধের সময় মেয়ে মারা গেলে তিনি শহরতলিতে শ্বশুরবাড়ি চলে যান। যুদ্ধবিরতির সপ্তম দিনে ইনশিরাহ সেখান থেকে ১০ কিলোমিটার পথ
হেঁটে গাজা শহরে নিজ বাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সংবাদমাধ্যমকে ইনশিরাহ জানান, যেভাবেই হোক, তিনি তাঁর মেয়ে মারামের মৃতদেহ খুঁজে বের করবেন এবং তাকে সম্মানজনকভাবে দাফন করবেন। ইনশিরাহ বলেন, ‘আমি আমার বাড়ি ফিরে যেতে চাই না। আমি শুধু তাকে খুঁজে বের করতে চাই এবং তার নাম একটি সমাধিফলকে লিখে দাফন করতে চাই।’
ইনশিরাহর মতো এমন অনেক নারী আছেন, যাঁরা স্বজনের লাশও দেখতে পারেননি। ইনশিরাহর গল্প তেমন হাজারো নারীর গল্পের মতো, যাঁরা সন্তান, স্বামী, বাবা ও ভাই হারানোর বেদনায় নীল হয়ে আছেন। যারা বেঁচে গেছে, তাদের দেখাশোনার ভার তাঁদের ওপর এসে পড়েছে। এ ভার বহন করা মুক্তির স্বাদ আসলে কেমন?
সূত্র: সিএনএন, আল জাজিরা

ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়...
২১ ঘণ্টা আগে
ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের...
১ দিন আগে
পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র...
১ দিন আগে
একজন নারীর জীবনী ও চিঠিপত্র ঐতিহাসিকদের কাছে উনিশ শতকের নারী আন্দোলনের অমূল্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁর নাম মার্থা কফিন রাইট। তিনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী নারী অধিকারকর্মী, দাসপ্রথাবিরোধী ও সমাজসংস্কারক। ১৮৪৮ সালের ঐতিহাসিক সেনেকা ফলস কনভেনশনের পাঁচজন আয়োজকের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি।
১ দিন আগেকাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়; বরং নেটওয়ার্কিং, নতুন আইডিয়া বিনিময় এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের বিশাল খোলা বই। তবে চলতি বছর সেই মেলাগুলোর চিত্রটা কিছুটা ভিন্ন; বিশেষ করে উদ্যোক্তা মেলার সংখ্যা কমে যাওয়া এবং এর প্রভাব নিয়ে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
মেলার গুরুত্ব ও বর্তমান সংকট
এসএমই ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের ৬০ শতাংশ নারী। ফাউন্ডেশনটি এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আর্টেমিস লাইফস্টাইলের স্বত্বাধিকারী ফায়জা আহমেদ রাফা বলেন, ‘আমরা যারা অনলাইন বিজনেসের সঙ্গে জড়িত, তারা বছরে বেশ কিছু মেলায় অংশ নেওয়ার চেষ্টা করি, যাতে সরাসরি ভোক্তাদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি করা যায়।
এ ছাড়া উদ্যোক্তা মেলাগুলোতে পরিচিতি পাওয়ার সুযোগ থাকে। অনলাইন উদ্যোগ নিয়ে ভোক্তাদের অনেক সময় বিশ্বাস তৈরি করতে অসুবিধা হয়। মেলা করলে তাঁরা সরাসরি এসে পণ্য যাচাই করতে পারেন। এর ফলে অনেকে নিশ্চিন্তে অনলাইনে অর্ডার করেন।’ রাফা আরও জানান, সাধারণত ঈদ, ফাল্গুন, বৈশাখ বা দুর্গাপূজার মতো উৎসবগুলোকে কেন্দ্র করে মেলার আয়োজন করা হয়। তবে তাঁর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ‘লাস্ট দু-এক বছরে তুলনামূলক মেলার আয়োজন কিছুটা কম।’
কেন কমছে মেলার সংখ্যা
নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সভাপতি রাফিয়া আক্তার, যিনি ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে কাজ করছেন, তিনি এ বছর বড় কোনো মেলার আয়োজন করতে পারেননি। এর কারণ হিসেবে তিনি দেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন। রাফিয়া আক্তার বলেন, ‘আসলে দেশের পরিস্থিতির কারণে এ বছর মেলা আয়োজন করা হয়নি। যে কারণে অর্থনৈতিক দিকেও প্রভাব পড়েছে। এ মুহূর্তে ইনভেস্ট করে মেলায় কেউ অংশ নেবেন কি না, সেসব দিক বিবেচনা করে বড় কোনো মেলার আয়োজন করা হয়নি এবার।’
রাফিয়া আক্তার আরও যোগ করেন, ‘গত বছরের আগেও দেখা গেছে, সব সময় ফোন আসত, এখানে মেলা সেখানে মেলা। সেটা কমে গেছে। এটা আমার কাছে কম এসেছে কি না জানি না। মনে হয়, মেলার আয়োজন তুলনামূলক কমে গেছে।’
তবে এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন
মাইসারার স্বত্বাধিকারী এলমা খন্দকার এষা। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর আমি মেলা করিনি। তবে চলতি বছর বেশ কিছু মেলা করেছি। সেটা যদি হিসাব করি, তাহলে আমার চোখে মেলা কম মনে হয়নি।’
অর্থনীতিতে নারীর অবদান ও আগামীর প্রত্যাশা অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ অনুযায়ী, দেশের ১ কোটি ১৮ লাখ এসএমইর মধ্যে মাত্র ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ নারী মালিকানাধীন হলেও উদ্যোক্তা হওয়ার হার দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে দেশের ৩ কোটি ৭ লাখ কর্মজীবীর মধ্যে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ নারী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) একটি চমকপ্রদ তথ্য হলো, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে দারিদ্র্যসীমায় নতুন করে কোনো নারী যুক্ত হননি, যেখানে ১ লাখ ৬০ হাজার পুরুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন।
সৌন্দর্যশিল্প, হস্তশিল্প, বুটিক ও ব্লক প্রিন্টের মতো খাতে নারীদের জয়জয়কার। এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে মেলার মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অপরিহার্য। এতে ঢাকাসহ বড় শহরের ভোক্তাদের সঙ্গে সারা দেশের নারী উদ্যোক্তাদের সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হয়। এতে পণ্য ও ক্রয়বৈচিত্র্য বাড়ে, ভোক্তা এবং সরবরাহকারীদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা তৈরি
হয়। সর্বোপরি অর্থনৈতিক গতিশীলতা ঠিক থাকে। কিন্তু এ বছর দৃশ্যমানভাবে মেলার সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। তবু উদ্যোক্তারা অনেক আশাবাদী। এই আশাবাদ দেশের অর্থনীতির জন্যই।

ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়; বরং নেটওয়ার্কিং, নতুন আইডিয়া বিনিময় এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের বিশাল খোলা বই। তবে চলতি বছর সেই মেলাগুলোর চিত্রটা কিছুটা ভিন্ন; বিশেষ করে উদ্যোক্তা মেলার সংখ্যা কমে যাওয়া এবং এর প্রভাব নিয়ে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
মেলার গুরুত্ব ও বর্তমান সংকট
এসএমই ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের ৬০ শতাংশ নারী। ফাউন্ডেশনটি এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আর্টেমিস লাইফস্টাইলের স্বত্বাধিকারী ফায়জা আহমেদ রাফা বলেন, ‘আমরা যারা অনলাইন বিজনেসের সঙ্গে জড়িত, তারা বছরে বেশ কিছু মেলায় অংশ নেওয়ার চেষ্টা করি, যাতে সরাসরি ভোক্তাদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি করা যায়।
এ ছাড়া উদ্যোক্তা মেলাগুলোতে পরিচিতি পাওয়ার সুযোগ থাকে। অনলাইন উদ্যোগ নিয়ে ভোক্তাদের অনেক সময় বিশ্বাস তৈরি করতে অসুবিধা হয়। মেলা করলে তাঁরা সরাসরি এসে পণ্য যাচাই করতে পারেন। এর ফলে অনেকে নিশ্চিন্তে অনলাইনে অর্ডার করেন।’ রাফা আরও জানান, সাধারণত ঈদ, ফাল্গুন, বৈশাখ বা দুর্গাপূজার মতো উৎসবগুলোকে কেন্দ্র করে মেলার আয়োজন করা হয়। তবে তাঁর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ‘লাস্ট দু-এক বছরে তুলনামূলক মেলার আয়োজন কিছুটা কম।’
কেন কমছে মেলার সংখ্যা
নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সভাপতি রাফিয়া আক্তার, যিনি ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে কাজ করছেন, তিনি এ বছর বড় কোনো মেলার আয়োজন করতে পারেননি। এর কারণ হিসেবে তিনি দেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন। রাফিয়া আক্তার বলেন, ‘আসলে দেশের পরিস্থিতির কারণে এ বছর মেলা আয়োজন করা হয়নি। যে কারণে অর্থনৈতিক দিকেও প্রভাব পড়েছে। এ মুহূর্তে ইনভেস্ট করে মেলায় কেউ অংশ নেবেন কি না, সেসব দিক বিবেচনা করে বড় কোনো মেলার আয়োজন করা হয়নি এবার।’
রাফিয়া আক্তার আরও যোগ করেন, ‘গত বছরের আগেও দেখা গেছে, সব সময় ফোন আসত, এখানে মেলা সেখানে মেলা। সেটা কমে গেছে। এটা আমার কাছে কম এসেছে কি না জানি না। মনে হয়, মেলার আয়োজন তুলনামূলক কমে গেছে।’
তবে এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন
মাইসারার স্বত্বাধিকারী এলমা খন্দকার এষা। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর আমি মেলা করিনি। তবে চলতি বছর বেশ কিছু মেলা করেছি। সেটা যদি হিসাব করি, তাহলে আমার চোখে মেলা কম মনে হয়নি।’
অর্থনীতিতে নারীর অবদান ও আগামীর প্রত্যাশা অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ অনুযায়ী, দেশের ১ কোটি ১৮ লাখ এসএমইর মধ্যে মাত্র ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ নারী মালিকানাধীন হলেও উদ্যোক্তা হওয়ার হার দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে দেশের ৩ কোটি ৭ লাখ কর্মজীবীর মধ্যে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ নারী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) একটি চমকপ্রদ তথ্য হলো, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে দারিদ্র্যসীমায় নতুন করে কোনো নারী যুক্ত হননি, যেখানে ১ লাখ ৬০ হাজার পুরুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন।
সৌন্দর্যশিল্প, হস্তশিল্প, বুটিক ও ব্লক প্রিন্টের মতো খাতে নারীদের জয়জয়কার। এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে মেলার মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অপরিহার্য। এতে ঢাকাসহ বড় শহরের ভোক্তাদের সঙ্গে সারা দেশের নারী উদ্যোক্তাদের সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হয়। এতে পণ্য ও ক্রয়বৈচিত্র্য বাড়ে, ভোক্তা এবং সরবরাহকারীদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা তৈরি
হয়। সর্বোপরি অর্থনৈতিক গতিশীলতা ঠিক থাকে। কিন্তু এ বছর দৃশ্যমানভাবে মেলার সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। তবু উদ্যোক্তারা অনেক আশাবাদী। এই আশাবাদ দেশের অর্থনীতির জন্যই।

বাড়িঘর ফেলে স্বজনদের সঙ্গে জীবন বাঁচাতে মানুষ ছুটছে আশ্রয়শিবিরে কিংবা নিরাপদ কোনো জায়গায়। এমনও হয়েছে, মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে আর ফেরেনি বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলেটি। খাবারের খোঁজে বাইরে বের হওয়া বাবা ফেরেননি সন্তানের কাছে। কয়েক দিন আগে এমনই ছিল ফিলিস্তিন নামের দেশটির গাজার অবস্থা।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের...
১ দিন আগে
পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র...
১ দিন আগে
একজন নারীর জীবনী ও চিঠিপত্র ঐতিহাসিকদের কাছে উনিশ শতকের নারী আন্দোলনের অমূল্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁর নাম মার্থা কফিন রাইট। তিনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী নারী অধিকারকর্মী, দাসপ্রথাবিরোধী ও সমাজসংস্কারক। ১৮৪৮ সালের ঐতিহাসিক সেনেকা ফলস কনভেনশনের পাঁচজন আয়োজকের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি।
১ দিন আগেআল আমিন

ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। কিন্তু নিজের চেষ্টায় তিনি আজ অন্য নারীদের কাছে হয়ে উঠেছেন আদর্শ।
২০১৯ সালে একটি সেলাই মেশিন দিয়ে শুরু করেন নিজের ভুবনে যাত্রা। কিছু গজ কাপড় কিনে পোশাক তৈরির কাজ শুরু করেন প্রথমে। সেলাই মেশিনের আওয়াজের চেয়ে তখন বেশি শোনা যেত মানুষের কটূক্তির আওয়াজ। তাই ছোটবেলার রান্না করার শখ থেকে ছোট্ট পরিসরে শুরু করলেন ক্যাটারিং সার্ভিস। সেখানেও ডেলিভারি, প্রমোশনসহ নানা সমস্যার মুখে পড়লেন তিনি। তবে দমে গেলেন না। কয়েকজন নারীকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করলেন উদ্যোক্তা উন্নয়ন আবাসন নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ। তাঁর নিজের তৈরি পণ্যের পাশাপাশি শহরের নারীদের উৎপাদিত পণ্য সেই ফেসবুক গ্রুপে বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহের কাজ শুরু করেন রোজ।
খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে অল্প দিনেই তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন পঞ্চগড় শহরের চাউলহাটির নিউমার্কেট এলাকায় তাঁর ‘প্রত্যাশা’ ব্র্যান্ডের নিজস্ব একটি আউটলেট আছে। সেখানে বুটিকস ও হ্যান্ডপেইন্টের বিভিন্ন পণ্য তিনি পাইকারি বিক্রি করেন। এখন তাঁর অধীনে নিয়মিত কাজ করছেন ১০ জন নারী।
উদ্যোক্তা জীবনের শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতা পার করে তিনি জেলা পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে সফলতা অর্জনকারী নারী হিসেবে পেয়েছেন এ বছরের শ্রেষ্ঠ অদম্য নারী পুরস্কার। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে তাঁকে অদম্য নারী পুরস্কারে ভূষিত করেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান।
রোজাইয়া রাব্বি রোজের স্বপ্ন, তাঁর পণ্য যেন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তাঁদের জীবনমানের উন্নয়নে তিনি কাজ করে যেতে চান অন্য নারীদের সঙ্গে নিয়ে।

ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। কিন্তু নিজের চেষ্টায় তিনি আজ অন্য নারীদের কাছে হয়ে উঠেছেন আদর্শ।
২০১৯ সালে একটি সেলাই মেশিন দিয়ে শুরু করেন নিজের ভুবনে যাত্রা। কিছু গজ কাপড় কিনে পোশাক তৈরির কাজ শুরু করেন প্রথমে। সেলাই মেশিনের আওয়াজের চেয়ে তখন বেশি শোনা যেত মানুষের কটূক্তির আওয়াজ। তাই ছোটবেলার রান্না করার শখ থেকে ছোট্ট পরিসরে শুরু করলেন ক্যাটারিং সার্ভিস। সেখানেও ডেলিভারি, প্রমোশনসহ নানা সমস্যার মুখে পড়লেন তিনি। তবে দমে গেলেন না। কয়েকজন নারীকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করলেন উদ্যোক্তা উন্নয়ন আবাসন নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ। তাঁর নিজের তৈরি পণ্যের পাশাপাশি শহরের নারীদের উৎপাদিত পণ্য সেই ফেসবুক গ্রুপে বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহের কাজ শুরু করেন রোজ।
খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে অল্প দিনেই তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন পঞ্চগড় শহরের চাউলহাটির নিউমার্কেট এলাকায় তাঁর ‘প্রত্যাশা’ ব্র্যান্ডের নিজস্ব একটি আউটলেট আছে। সেখানে বুটিকস ও হ্যান্ডপেইন্টের বিভিন্ন পণ্য তিনি পাইকারি বিক্রি করেন। এখন তাঁর অধীনে নিয়মিত কাজ করছেন ১০ জন নারী।
উদ্যোক্তা জীবনের শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতা পার করে তিনি জেলা পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে সফলতা অর্জনকারী নারী হিসেবে পেয়েছেন এ বছরের শ্রেষ্ঠ অদম্য নারী পুরস্কার। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে তাঁকে অদম্য নারী পুরস্কারে ভূষিত করেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান।
রোজাইয়া রাব্বি রোজের স্বপ্ন, তাঁর পণ্য যেন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তাঁদের জীবনমানের উন্নয়নে তিনি কাজ করে যেতে চান অন্য নারীদের সঙ্গে নিয়ে।

বাড়িঘর ফেলে স্বজনদের সঙ্গে জীবন বাঁচাতে মানুষ ছুটছে আশ্রয়শিবিরে কিংবা নিরাপদ কোনো জায়গায়। এমনও হয়েছে, মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে আর ফেরেনি বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলেটি। খাবারের খোঁজে বাইরে বের হওয়া বাবা ফেরেননি সন্তানের কাছে। কয়েক দিন আগে এমনই ছিল ফিলিস্তিন নামের দেশটির গাজার অবস্থা।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়...
২১ ঘণ্টা আগে
পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র...
১ দিন আগে
একজন নারীর জীবনী ও চিঠিপত্র ঐতিহাসিকদের কাছে উনিশ শতকের নারী আন্দোলনের অমূল্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁর নাম মার্থা কফিন রাইট। তিনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী নারী অধিকারকর্মী, দাসপ্রথাবিরোধী ও সমাজসংস্কারক। ১৮৪৮ সালের ঐতিহাসিক সেনেকা ফলস কনভেনশনের পাঁচজন আয়োজকের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি।
১ দিন আগেফিচার ডেস্ক

পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র নয়—একটি স্যাটেলাইট। সেই কৌতূহলী কিশোরীটি আজকের মনীষা শ্রেষ্ঠা—নেপালের সফল জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জ্যোতিঃপদার্থবিদ এবং দেশটির প্রথম নারী অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার। তিনি এখন হাই-এনার্জি অ্যাস্ট্রোফিজিকস বিষয়ে পিএইচডি করছেন।
চ্যালেঞ্জের সঙ্গে শুরু যে লড়াই
মনীষার বিজ্ঞানের পথে আসাটা ছিল অনেকটা জেদের বশে। তিনি যে কলেজে পড়তেন, সেখানে পদার্থবিজ্ঞান ক্লাসে ছিল ১২০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মাত্র পাঁচ-ছয়জন মেয়ে। অথচ জীববিজ্ঞানের চিত্রটা ছিল ঠিক উল্টো। বন্ধুকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে উত্তর পান, মেয়েদের জন্য পদার্থবিজ্ঞানের চেয়ে জীববিজ্ঞান অনেক সহজ। মনীষা বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলেন। তিনি ভাবলেন, তাঁকে পদার্থবিজ্ঞানই পড়তে হবে।
ক্লাসে ঢোকার পর শুরু হলো অন্য এক লড়াই। পুরুষশাসিত সেই পরিবেশে অনেক সময় মেয়েদের বসার জন্য কোনো আসনই দেওয়া হতো না; তাদের দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হতো। এমনকি ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময়ও তরুণেরা কাজ করত, আর মেয়েদের দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখার অনুমতি ছিল। মাস্টার্স পর্যায়ে এসে এই সংকট আরও বাড়ে। পড়াশোনার পদ্ধতি ছিল শুধু নোট নেওয়া আর মুখস্থ করা। একপর্যায়ে হতাশ হয়ে মনীষা ডিগ্রি শেষ না করেই পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
নেপাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির যাত্রা
২০১৩ সালে মনীষা নেপাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটিতে (এনএএসও) প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে যোগ দেন। তখন সংগঠনটির কোনো অফিস ছিল না, ছিল খুব সীমিত সুবিধা। মনীষা ও তাঁর দল মিলে বছরের পর বছর পরিশ্রম করে সেটিকে আন্তর্জাতিক উচ্চতায় নিয়ে যান।
সম্প্রতি এই সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের সদস্যপদ পেয়েছে, যা নেপালের ১০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম।
আজ এনএএসও শিক্ষা, গবেষণা ও প্রচার—তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য সৃজনশীল চিন্তার উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। মনীষার দল সারা দেশে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং শিক্ষার্থীদের হাতে টেলিস্কোপ ও বই তুলে দিচ্ছে। যাতে তারাও বিজ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে পারে।
অলিম্পিয়াড ও বৈশ্বিক সাফল্য
মনীষা শ্রেষ্ঠা নেপালের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি নেপালি শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করেন। তাঁর হাত ধরে অনেক শিক্ষার্থী ফ্রান্স, আমেরিকা ও সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক মঞ্চে লড়াই করেছেন। এমনকি এই অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থী বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। ২০২০ সালে তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে স্টারস শাইন ফর এভরিওয়ান সংস্থা তাঁকে বিশেষ সম্মাননা দেয়।
ডার্ক স্কাই বা অন্ধকার আকাশ রক্ষা
মনীষা শুধু বিজ্ঞানী নন, তিনি একজন দক্ষ আলোকচিত্রীও। নেপালের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় তাঁর তোলা মহাকাশের ছবি নিয়মিত প্রকাশিত হয়। তিনি বর্তমান সময়ের বড় একটি সমস্যা আলোকদূষণ নিয়ে কাজ করছেন।
২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ মানুষ শহর ও অবকাঠামোর কৃত্রিম আলোর কারণে রাতের আকাশের আসল সৌন্দর্য দেখতে পায় না। মনীষা তাদের সতর্ক করে জানান, আগামী ২০ বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে নক্ষত্ররাজি অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। তাই নেপালে ‘অ্যাস্ট্রো-ট্যুরিজম’ কিংবা জ্যোতি-পর্যটন বিকাশের মাধ্যমে আকাশ রক্ষার স্বপ্ন দেখেন মনীষা শ্রেষ্ঠা।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন
মনীষার স্বপ্ন নেপালে একটি নিজস্ব মানমন্দির তৈরি করা, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। তিনি মনে করেন, নেপালের কাছে দামি যন্ত্রপাতি না থাকলেও বিশ্বের সবচেয়ে বড় ল্যাবরেটরি আছে। সেটা হলো, মাথার ওপরের অন্ধকার আকাশ। তিনি বিশ্বাস করেন, আকাশ আমাদের সবাইকে এক সুতোয় বাঁধে। তিনি চান তাঁর জীবনের গল্প শুনে অন্য মেয়েরাও যেন বিজ্ঞানের কঠিন পথে পা বাড়াতে পিছপা না হয়।
সূত্র: এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক, দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট

পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র নয়—একটি স্যাটেলাইট। সেই কৌতূহলী কিশোরীটি আজকের মনীষা শ্রেষ্ঠা—নেপালের সফল জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জ্যোতিঃপদার্থবিদ এবং দেশটির প্রথম নারী অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার। তিনি এখন হাই-এনার্জি অ্যাস্ট্রোফিজিকস বিষয়ে পিএইচডি করছেন।
চ্যালেঞ্জের সঙ্গে শুরু যে লড়াই
মনীষার বিজ্ঞানের পথে আসাটা ছিল অনেকটা জেদের বশে। তিনি যে কলেজে পড়তেন, সেখানে পদার্থবিজ্ঞান ক্লাসে ছিল ১২০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মাত্র পাঁচ-ছয়জন মেয়ে। অথচ জীববিজ্ঞানের চিত্রটা ছিল ঠিক উল্টো। বন্ধুকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে উত্তর পান, মেয়েদের জন্য পদার্থবিজ্ঞানের চেয়ে জীববিজ্ঞান অনেক সহজ। মনীষা বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলেন। তিনি ভাবলেন, তাঁকে পদার্থবিজ্ঞানই পড়তে হবে।
ক্লাসে ঢোকার পর শুরু হলো অন্য এক লড়াই। পুরুষশাসিত সেই পরিবেশে অনেক সময় মেয়েদের বসার জন্য কোনো আসনই দেওয়া হতো না; তাদের দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হতো। এমনকি ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময়ও তরুণেরা কাজ করত, আর মেয়েদের দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখার অনুমতি ছিল। মাস্টার্স পর্যায়ে এসে এই সংকট আরও বাড়ে। পড়াশোনার পদ্ধতি ছিল শুধু নোট নেওয়া আর মুখস্থ করা। একপর্যায়ে হতাশ হয়ে মনীষা ডিগ্রি শেষ না করেই পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
নেপাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির যাত্রা
২০১৩ সালে মনীষা নেপাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটিতে (এনএএসও) প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে যোগ দেন। তখন সংগঠনটির কোনো অফিস ছিল না, ছিল খুব সীমিত সুবিধা। মনীষা ও তাঁর দল মিলে বছরের পর বছর পরিশ্রম করে সেটিকে আন্তর্জাতিক উচ্চতায় নিয়ে যান।
সম্প্রতি এই সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের সদস্যপদ পেয়েছে, যা নেপালের ১০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম।
আজ এনএএসও শিক্ষা, গবেষণা ও প্রচার—তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য সৃজনশীল চিন্তার উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। মনীষার দল সারা দেশে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং শিক্ষার্থীদের হাতে টেলিস্কোপ ও বই তুলে দিচ্ছে। যাতে তারাও বিজ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে পারে।
অলিম্পিয়াড ও বৈশ্বিক সাফল্য
মনীষা শ্রেষ্ঠা নেপালের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি নেপালি শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করেন। তাঁর হাত ধরে অনেক শিক্ষার্থী ফ্রান্স, আমেরিকা ও সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক মঞ্চে লড়াই করেছেন। এমনকি এই অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থী বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। ২০২০ সালে তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে স্টারস শাইন ফর এভরিওয়ান সংস্থা তাঁকে বিশেষ সম্মাননা দেয়।
ডার্ক স্কাই বা অন্ধকার আকাশ রক্ষা
মনীষা শুধু বিজ্ঞানী নন, তিনি একজন দক্ষ আলোকচিত্রীও। নেপালের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় তাঁর তোলা মহাকাশের ছবি নিয়মিত প্রকাশিত হয়। তিনি বর্তমান সময়ের বড় একটি সমস্যা আলোকদূষণ নিয়ে কাজ করছেন।
২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ মানুষ শহর ও অবকাঠামোর কৃত্রিম আলোর কারণে রাতের আকাশের আসল সৌন্দর্য দেখতে পায় না। মনীষা তাদের সতর্ক করে জানান, আগামী ২০ বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে নক্ষত্ররাজি অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। তাই নেপালে ‘অ্যাস্ট্রো-ট্যুরিজম’ কিংবা জ্যোতি-পর্যটন বিকাশের মাধ্যমে আকাশ রক্ষার স্বপ্ন দেখেন মনীষা শ্রেষ্ঠা।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন
মনীষার স্বপ্ন নেপালে একটি নিজস্ব মানমন্দির তৈরি করা, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। তিনি মনে করেন, নেপালের কাছে দামি যন্ত্রপাতি না থাকলেও বিশ্বের সবচেয়ে বড় ল্যাবরেটরি আছে। সেটা হলো, মাথার ওপরের অন্ধকার আকাশ। তিনি বিশ্বাস করেন, আকাশ আমাদের সবাইকে এক সুতোয় বাঁধে। তিনি চান তাঁর জীবনের গল্প শুনে অন্য মেয়েরাও যেন বিজ্ঞানের কঠিন পথে পা বাড়াতে পিছপা না হয়।
সূত্র: এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক, দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট

বাড়িঘর ফেলে স্বজনদের সঙ্গে জীবন বাঁচাতে মানুষ ছুটছে আশ্রয়শিবিরে কিংবা নিরাপদ কোনো জায়গায়। এমনও হয়েছে, মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে আর ফেরেনি বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলেটি। খাবারের খোঁজে বাইরে বের হওয়া বাবা ফেরেননি সন্তানের কাছে। কয়েক দিন আগে এমনই ছিল ফিলিস্তিন নামের দেশটির গাজার অবস্থা।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়...
২১ ঘণ্টা আগে
ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের...
১ দিন আগে
একজন নারীর জীবনী ও চিঠিপত্র ঐতিহাসিকদের কাছে উনিশ শতকের নারী আন্দোলনের অমূল্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁর নাম মার্থা কফিন রাইট। তিনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী নারী অধিকারকর্মী, দাসপ্রথাবিরোধী ও সমাজসংস্কারক। ১৮৪৮ সালের ঐতিহাসিক সেনেকা ফলস কনভেনশনের পাঁচজন আয়োজকের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি।
১ দিন আগেফিচার ডেস্ক

একজন নারীর জীবনী ও চিঠিপত্র ঐতিহাসিকদের কাছে উনিশ শতকের নারী আন্দোলনের অমূল্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁর নাম মার্থা কফিন রাইট। তিনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী নারী অধিকারকর্মী, দাসপ্রথাবিরোধী ও সমাজসংস্কারক। ১৮৪৮ সালের ঐতিহাসিক সেনেকা ফলস কনভেনশনের পাঁচজন আয়োজকের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি।
১৮৪৮ সালের ১৯ ও ২০ জুলাই নিউইয়র্কের সেনেকা ফলসে অনুষ্ঠিত সে সম্মেলনটি ছিল আধুনিক নারী অধিকার আন্দোলনের বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ। সেটিই ছিল আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রকাশ্য সম্মেলন, যা আয়োজিত হয়েছিল শুধু নারীদের সামাজিক, নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার নিয়ে আলোচনার জন্য। শুধু এর আয়োজক হিসেবে নয়, উনিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে একাধিক জাতীয় নারী অধিকার সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মার্থা। ১৮৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আমেরিকান ইকুয়াল রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। সাম্যবাদে বিশ্বাসী একটি পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন মার্থা। তিনি কাজ করেছেন দাসপ্রথার বিরুদ্ধে। নিউইয়র্কের অবার্নে তাঁর বাড়িটি ছিল আন্ডারগ্রাউন্ড রেল রোডের একটি অন্যতম প্রধান স্টেশনের পাশেই। তিনি পালিয়ে আসা দাসদের আশ্রয় দিতেন এবং তাদের স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতেন।
সাত সন্তানের জননী মার্থা পারিবারিক দায়িত্বের পাশাপাশি রাজনৈতিক লড়াইয়ে কখনো পিছপা হননি। তাঁর জন্ম ১৮০৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর। ১৮৭৫ সালের ৪ জানুয়ারি মৃত্যুর পর তাঁকে অবার্নের ফোর্ট হিল সিমেট্রিতে সমাহিত করা হয়।

একজন নারীর জীবনী ও চিঠিপত্র ঐতিহাসিকদের কাছে উনিশ শতকের নারী আন্দোলনের অমূল্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁর নাম মার্থা কফিন রাইট। তিনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী নারী অধিকারকর্মী, দাসপ্রথাবিরোধী ও সমাজসংস্কারক। ১৮৪৮ সালের ঐতিহাসিক সেনেকা ফলস কনভেনশনের পাঁচজন আয়োজকের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি।
১৮৪৮ সালের ১৯ ও ২০ জুলাই নিউইয়র্কের সেনেকা ফলসে অনুষ্ঠিত সে সম্মেলনটি ছিল আধুনিক নারী অধিকার আন্দোলনের বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ। সেটিই ছিল আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রকাশ্য সম্মেলন, যা আয়োজিত হয়েছিল শুধু নারীদের সামাজিক, নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার নিয়ে আলোচনার জন্য। শুধু এর আয়োজক হিসেবে নয়, উনিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে একাধিক জাতীয় নারী অধিকার সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মার্থা। ১৮৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আমেরিকান ইকুয়াল রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। সাম্যবাদে বিশ্বাসী একটি পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন মার্থা। তিনি কাজ করেছেন দাসপ্রথার বিরুদ্ধে। নিউইয়র্কের অবার্নে তাঁর বাড়িটি ছিল আন্ডারগ্রাউন্ড রেল রোডের একটি অন্যতম প্রধান স্টেশনের পাশেই। তিনি পালিয়ে আসা দাসদের আশ্রয় দিতেন এবং তাদের স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতেন।
সাত সন্তানের জননী মার্থা পারিবারিক দায়িত্বের পাশাপাশি রাজনৈতিক লড়াইয়ে কখনো পিছপা হননি। তাঁর জন্ম ১৮০৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর। ১৮৭৫ সালের ৪ জানুয়ারি মৃত্যুর পর তাঁকে অবার্নের ফোর্ট হিল সিমেট্রিতে সমাহিত করা হয়।

বাড়িঘর ফেলে স্বজনদের সঙ্গে জীবন বাঁচাতে মানুষ ছুটছে আশ্রয়শিবিরে কিংবা নিরাপদ কোনো জায়গায়। এমনও হয়েছে, মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়ে আর ফেরেনি বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলেটি। খাবারের খোঁজে বাইরে বের হওয়া বাবা ফেরেননি সন্তানের কাছে। কয়েক দিন আগে এমনই ছিল ফিলিস্তিন নামের দেশটির গাজার অবস্থা।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়...
২১ ঘণ্টা আগে
ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের...
১ দিন আগে
পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র...
১ দিন আগে