Ajker Patrika

যুদ্ধ বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ বাংলাদেশের 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪, ০২: ৪৫
যুদ্ধ বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ বাংলাদেশের 

বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত শেষ হতেই কুয়েতের জাবের আল-আহমাদ স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে ভেসে এলো ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ গর্জন। খেলাটা যেন কুয়েতে নয়, হচ্ছে বাংলাদেশের কোনো মাঠে। হাজার হাজার দর্শক যাদের অর্ধেকই প্রবাসী বাংলাদেশি। জাতীয় সঙ্গীত শেষ হতেই তাদের দিকে হাত মুঠো করে গর্জন তুললেন লাল-সবুজ ডিফেন্ডার ইসা ফয়সাল, চাইলেন সমর্থন।

র‍্যাঙ্কিংয়ে ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা ফিলিস্তিনের বিপক্ষে একটা পয়েন্ট পেতে হলে অসাধারণ কিছু করে দেখাতে হতো বাংলাদেশের রক্ষণকে। মঞ্চ ছিল প্রস্তুত, শুরুতে সব ঠিকঠাকও ছিল। কিন্তু সব তালগোল পাকিয়ে গেল প্রথমার্ধের শেষ দিকে এসে। এলোমেলো রক্ষণের ভুলে দশ মিনিটের ঝড়ে উড়ে গেলেন জামালরা। ২০২৬ বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ফিলিস্তিনের কাছে ৫-০ গোলে হারল বাংলাদেশ। ষষ্ঠবারের দেখায় বাংলাদেশের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় জয় যুদ্ধ বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের।

বাংলাদেশকে উড়িয়ে বাছাইপর্বের ‘আই’ গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে এলো ফিলিস্তিন। তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট দলটির। সমান ম্যাচে ১ পয়েন্টে সবার নিচে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে ৯ পয়েন্টে শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। ২ পয়েন্টে তিনে লেবানন।

অথচ জাবের আল-আহমাদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ যে  ম্যাচে এভাবে একের পর এক গোল হজম করবে, শুরুতে খেলা দেখে একটিবারের জন্যও বোঝা যায়নি। লাল-সবুজদের শুরুটা ছিল ইতিবাচক।

ফিলিস্তিন যথারীতি আক্রমণ করে গেছে, সেই আক্রমণ ঠেকিয়ে পাল্টা আক্রমণেও উঠেছেন রাকিব হোসেন-ফয়সাল আহমেদ ফাহিমরা। কিন্তু কে জানত, অপেক্ষায় এত বড় হার! 

আক্রমণ ঠেকিয়ে ম্যাচের ৭ মিনিটে ডান প্রান্ত ধরে ফিলিস্তিনিদের বক্সে ঢুকে পড়েন রাকিব। কাটব্যাক করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে। কিন্তু ফাহিম একটু বেশিই ছিলেন যার কারণে আর বলের নাগাল পাননি। 

দুই মিনিট পর ফিলিস্তিনের প্রথম সুযোগ। ফ্রি-কিক থেকে রাইটব্যাক থেকে সেন্টারব্যাক বনে যাওয়া  বিশ্বনাথ ঘোষ বল বিপদমুক্ত করতে না পারায় বক্সের মুখে বল পেয়ে যান ফিলিস্তিনের ওদেহ দাবাঘ। তবে তার ভলি লক্ষ্যে না থাকায় সে যাত্রায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ।

১৪ মিনিটে আরেকবার ফিলিস্তিনের রক্ষণকে পরীক্ষায় ফেলতে চাইলেন রাকিব। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে বক্সের ডান প্রান্ত ধরে শটও করলেন, তবে খুঁজে পেলেন না জাল।

পাল্টা আক্রমণে জবাব এলো ফিলিস্তিনের দিক থেকেও। ১৯ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বলে বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমাকে একা পেয়ে যান ইসলাম বাতরান। মিতুল এগিয়ে আসছেন দেখে তার মাথার ওপর দিয়ে চিপ করেন তিনি, কিন্তু এবারও শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় রক্ষা বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের সেরা সুযোগটা নষ্ট করেছেন সোহেল রানা। ২৭ মিনিটে ফাহিমের ক্রস ধরে ফিলিস্তিনের গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল পোস্টের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান সোহেল। গোল পেলে খেলার চিত্রটা অন্যরকমও হতে পারত। তাই সুযোগ নষ্ট করে নিজের মাথাতেই হাত পড়েছে এই মিডফিল্ডারের। 

ফিলিস্তিনও সুযোগ হারিয়েছে ৩২ মিনিটে। মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বলে মিতুল মারমাকে একা পেয়ে শট নেন ওদেহ দাবাঘ। জোরালো সেই শট পা দিয়ে ঠেকিয়ে আবারও বাংলাদেশকে রক্ষা করেন মিতুল। 

কিন্তু ৪৩ মিনিটে আর ফিলিস্তিনকে ঠেকাতে পারেননি মিতুল। প্রথম গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। দায়টা অবশ্য রক্ষণের।  মুসাব বাত্তাতের ক্রস ধরে দাবাঘের পা ছুঁয়ে বল পান মাহমুদ আবুওয়ার্দা। তার শট ফেরান মিতুল। ফিরতি বলে আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়িয়ে দেন দাবাঘ। 

বাংলাদেশকে নিয়ে যেন ছেলেখেলাই করেছে ফিলিস্তিন। ছবি: বাফুফে গোল হজম করে এলোমেলো বাংলাদেশের রক্ষণ। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে কর্নার থেকে গোল হজম করে বসল হাভিয়ের কাবরেরার দল। আবুওয়ার্দার নেওয়া কর্নার থেকে অরক্ষিত থাকা শিহাব কুম্বোর গোলে প্রথমার্ধেই দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে যায় ফিলিস্তিন। 

প্রথমার্ধে যেখানে শেষ করেছিল ফিলিস্তিন, দ্বিতীয়ার্ধের শুরু সেখান থেকেই। অর্থাৎ, আবারও গোল হজম বাংলাদেশের। ৪৯ মিনিটে মুসাব বাত্তাতের ক্রস থেকে বল রিসিভ করলেন শিহাব কুম্বোর, শট নিয়ে বল জড়িয়ে দিলেন জালে। দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না বাংলাদেশের রক্ষণের। 

তিন মিনিট বাদে চতুর্থ গোল হজম করল বাংলাদেশ। ৫২ মিনিটে বদলি ফরোয়ার্ড মাহমুদ ধাধার ক্রস থেকে আরাম আয়েস করেই বল আয়ত্ত্বে নেন ওদেহ দাবাঘ। নিলেন জোরালো এক শট। সেই শট ঠেকানোর সাধ্য ছিল না মিতুল মারমার। 

দাবাঘ হ্যাট্রিক পূর্ণ করলেন ৭৭ মিনিটে গিয়ে। মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বল ধরে মিতুলকে একা পেয়ে শট নিলেন ফিলিস্তিনি ফরোয়ার্ড। এক ইসা ফয়সাল ছাড়া বাংলাদেশি ডিফেন্ডারদের আর কেউ ছিলেন না আশপাশে। মিতুল প্রথম দফায় শট ঠেকালেন, ফিরতি বলে আবারও শট নিলেন দাবাঘ। বল এবার মিতুলকে ফাঁকি দিয়ে পঞ্চমবারের মতো জালে। বড় হার নিয়ে দেশে ফিরে আরেকবার ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষা বাংলাদেশের। ফিরতি লেগে ২৬ মার্চ কিংস অ্যারেনায় আবারও মুখোমুখি হবে এ দুই দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুলারদের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিতে তর সইছে না মেসির

ক্রীড়া ডেস্ক    
থমাস মুলারের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে মুখিয়ে আসেন লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি
থমাস মুলারের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে মুখিয়ে আসেন লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি

লিওনেল মেসি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন ট্রফির দিকে। কাছে এসেও পরম্য আরাধ্য বিশ্বকাপ শিরোপা ছুঁতে না পারার তীব্র আক্ষেপ কাজ করছে তাঁর। অনেকেই হয়তো বুঝতে পেরেছেন ২০১৪ ফুটবল বিশ্বকাপে মারাকানায় মেসির রানার্সআপ হওয়ার গল্প শোনা যাচ্ছে। মেসি যখন আক্ষেপে পুড়ছিলেন, টমাস মুলার তখন চ্যাম্পিয়ন জার্মানির হয়ে উল্লাস করতে ছিলেন ব্যস্ত।

১১ বছর পর এবার মুলারের বিপক্ষে প্রতিশোধ নেওয়ার অপেক্ষায় মেসি। এবারের মঞ্চ মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) কাপ ফাইনাল। চেজ স্টেডিয়ামে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় রাত দেড়টায় শুরু হবে এমএলএস কাপের ইন্টার মায়ামি-ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস ফাইনাল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের আগে মুলারকে এমএলএসে স্বাগত জানিয়েছেন মেসি। আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী ফরোয়ার্ড বলেন, ‘সবার আগে এটা শুনে ভালো লাগলা যে মুলার মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) খেলতে এসেছে। ফাইনালে মুখোমুখি হতে পেরে ভালো লাগছে। আবারও ফের মুখোমুখি হচ্ছি। আমরা ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে আগে খেলেছি। তারা কেমন দল, আমরা জানি।’

মেসি অবশ্য ২০১৪ সালের ফাইনালে জার্মানির কাছে হারের প্রতিশোধের দিকে ইঙ্গিত করেননি। এ বছরের ১ মে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ভ্যাঙ্কুভারের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছিল মায়ামি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলে হেরে টুর্নামেন্টের সেমি থেকেই বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল মেসির দলের। তখন মুলার ভ্যাঙ্কুভারে যোগদানও করেননি। জার্মান এই কিংবদন্তি এ বছরের আগস্টে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ভ্যাঙ্কুভারে এসেছেন।

আগামীকাল এমএলএস কাপ ফাইনালের আগে মে মাসে ভ্যাঙ্কুভারের কাছে হারের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মেসি। একই সঙ্গে আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড ফের উল্লেখ করেছেন মুলারের আগেও। ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে ফাইনালের আগে গত রাতে মেসি বলেন,‘কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে তারা (ভ্যাঙ্কুভার) আমাদের বিদায় করে দিয়েছিল। পুরো বছরজুড়ে দুর্দান্ত খেলেছিল। সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে শেষ অব্দি লড়ে গিয়েছিল। আশা করি, অনেক কঠিন একটা ম্যাচ হবে। মুলারের যোগ হওয়া দলকে আরও দারুণ করে তুলেছে। ম্যাচে কী করতে হবে, সেক্ষেত্রে দল (ইন্টার মায়ামি) আরও সচেতন থাকবে। বিশেষ একটা ফাইনাল হতে যাচ্ছে ও ফল আমাদের পক্ষে আসবে বলে আশা করি।’

ভ্যাঙ্কুভারে আসার পর সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ১২ ম্যাচ খেলে মুলার করেছেন ৯ গোল। অ্যাসিস্ট করেছেন ৪ গোলে। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছরে বায়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে তিনি খেলেছেন ৭৫৬ ম্যাচ। জার্মান ক্লাবটির হয়ে করেছেন ২৫০ গোল ও অ্যাসিস্ট করেছেন ২৭৬ গোলে। বায়ার্নের হয়ে ১৩ বার বুন্দেসলিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছেন দুইবার। এদিকে মেসি আগামীকাল ইন্টার মায়ামির হয়ে তৃতীয় শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে নামছেন। ২০২৩ লিগস কাপ, ২০২৪ সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটির জার্সিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিজেদের ইতিহাস নতুন করে লেখার সামনে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৫
চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শাই হোপ। ১৮৩ বলে ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ছবি: ক্রিকইনফো
চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শাই হোপ। ১৮৩ বলে ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ছবি: ক্রিকইনফো

ইতিহাস নিজেই নিজের পুনরাবৃত্তি ঘটায়—বহুল প্রচলিত প্রবাদের বেশির ভাগ সময় বাস্তব প্রতিফলন দেখা গেলেও অনেক সময় হয়ে ওঠে না। খেলার মাঠে এটা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ক্রিকেটে যেকোনো সময় ম্যাচের মোড় ঘুরে যেতে পারে।

টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জয়ের কীর্তি এখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজের দখলে। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্যারিবীয়রা এই রান তাড়া করে জিতেছিল। ২২ বছরে এর চেয়ে বড় লক্ষ্য বারবার চতুর্থ ইনিংসে দলগুলোর সামনে এসেছিল। কিন্তু কেউই সফল হয়নি। ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে এখন সেই ইতিহাস নতুন করে লেখার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ৫৩১ রানের লক্ষ্যে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৪ ওভারে ৪ উইকেটে ২১২ রানে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে। শাই হোপ আগামীকাল শেষ দিনে ১১৬ রানে ব্যাটিং করবেন। জাস্টিন গ্রিভস অপরাজিত ৫৫ রানে।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৫ ওভারে ৪ উইকেটে ৪১৭ রানে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে নিউজিল্যান্ড। এই দিনে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৯ রান যোগ করেছে কিউইরা। ১০৯তম ওভারের শেষ বলে জ্যাকব ডাভিকে (১০) কট এন্ড বোল্ড করেন কেমার রোচ। ডাফি আউট হওয়ার পর ১০৯ ওভারে ৮ উইকেটে ৪৬৬ রান হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে কিউইরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোচ ৭৮ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। টেস্টে এই নিয়ে ইনিংসে ১২ বার ৫ উইকেট নিয়েছেন ক্যারিবীয় এই পেসার।

নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৭৬ রান করেন রাচীন রবীন্দ্র। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪৫ রান আসে অধিনায়ক টম লাথামের ব্যাট থেকে। ৬৪ রান লিড যোগ হওয়ায় কিউইদের রান হয়েছে ৫৩০। ৫৩১ রানের লক্ষ্যে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর হয়ে যায় ২৮.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ৭২ রান। যেভাবে মুড়ি-মুড়কির মতো উইকেট পড়ছিল, তাতে আজই সফরকারীদের অলআউট হওয়ার শঙ্কা ছিল। তখনই প্রতিরোধ গড়েন শাই হোপ ও জাস্টিন গ্রিভস। পঞ্চম উইকেটে ২৭৫ বলে ১৪০ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন তাঁরা (হোপ-গ্রিভস)। জুটির ৫০.৯১ স্ট্রাইকরেটই বলে দেয়, প্রথাগত টেস্ট মেজাজে খেলে ইতিহাস গড়ার পথেই তারা এগোচ্ছে।

টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলতে হোপ খেলেছেন ১৩৯ বল। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর তিনি খেলতে থাকেন ধীরস্থির গতিতে। আজ চতুর্থ দিনের খেলা যখন শেষ করেছেন, তখন তাঁর নামের পাশে স্কোর ১৮৩ বলে ১১৬ রান। তাঁর সঙ্গী গ্রিভস টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি করেছেন। ১৪৩ বলে ১৬ চারে করেছেন ৫৫ রান। নিউজিল্যান্ডের জ্যাকব ডাফি নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল ও ম্যাট হেনরি। ডাফি এর আগে প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। তাঁর আগুনে বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে ১৬৭ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে করেছিল ২৩১ রান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রবাসী ফুটবলারদের জাত চেনানোর মঞ্চ এই লাতিন বাংলা সুপার কাপ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
লাতিন বাংলা সুপার কাপ শুরুর আগে অনুশীলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
লাতিন বাংলা সুপার কাপ শুরুর আগে অনুশীলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাফুফের অধীনে গত জুনে ঢাকায় ট্রায়াল দিতে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বীতশোক চাকমা। বাফুফের কাছ থেকে কোনো সবুজসংকেত না পাওয়ায় ফিরে যান অনিশ্চয়তা নিয়ে। দেশের ফুটবলপ্রেমীদের নজর এড়ায়নি তাঁর দক্ষতা। বরাবরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আলোচনায় ছিলেন প্রাসঙ্গিক।

ছয় মাসের ব্যবধানে ঢাকায় আবারও পা পড়ল বীতশোকের। শুধু তিনি নন, বেসরকারি উদ্যোগে আয়োজিত ‘লাতিন বাংলা সুপার কাপ’ খেলতে এসেছেন ইংল্যান্ডপ্রবাসী কাসপার হক, ইব্রাহীম নাওয়াজ ও অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী ইশান মালিক। সবার কাছে এবারের মঞ্চটি নিজেদের জাত চেনানোর।

ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরের তৃতীয় সারির ক্লাব সাও বার্নার্দো ও আর্জেন্টিনার অপেশাদার ক্লাব আতলেতিকো চার্লোনকে নিয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে দেশের একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রেড-গ্রিন ফিউচার স্টার’। এই দলের হয়েই খেলবেন বীতশোক-কাসপার। জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যা ৭টায় সাও বার্নার্দোর বিপক্ষে খেলবে রেড গ্রিন ফিউচার স্টার।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বীতশোক বলেন, ‘এই টুর্নামেন্ট নিয়ে আমি খুব রোমাঞ্চিত। আশা করি, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে আমরা ভালো খেলা উপহার দিতে পারব। আমরা আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব দুই ম্যাচে। ম্যাচ সহজ হবে না, তবে আশা করছি ভালো কিছু উপহার দিতে পারব।’

রেড-গ্রিন ফিউচার স্টারের কোচ এস এম ইমরুল বলেন, ‘ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার এই দল দুটি সম্পর্কে আমরা তেমন কিছুই জানি না। তবে লাতিন ফুটবলের সঙ্গে পরিচয় হতে আমাদের ফুটবলারদের জন্য এটি দারুণ একটা সুযোগ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বের চোখ থাকবে যেখানে

ক্রীড়া ডেস্ক    
২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র হবে আজ। ছবি: এএফপি
২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র হবে আজ। ছবি: এএফপি

আর মাত্র ছয় মাসের অপেক্ষা। এরপরই বিশ্বকাপের উন্মাদনায় মেতে উঠবে ফুটবলপ্রেমীরা। অবশ্য ছক কষা শুরু আজ থেকেই। কারণ, বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে হবে ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান। কারা কোন গ্রুপে জানা যাবে সেখানে—

বিশ্বকাপের ফরম্যাট

প্রথমবারের মতো ৪৮ দল নিয়ে ফুটবল বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে এবার। গ্রুপ সংখ্যাও ৮ থেকে পরিণত হয়েছে ১২টিতে। প্রতি গ্রুপে থাকছে চারটি করে দল। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল সরাসরি জায়গা করে নেবে শেষ ৩২ রাউন্ডে। তৃতীয় হওয়া সেরা আট দলেরও শেষ ৩২ রাউন্ডে খেলার সুযোগ থাকবে। সেখান থেকে ধাপে ধাপে হবে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল।

যেভাবে হবে ড্র

  • ফিফার নীতি অনুযায়ী, ইউরোপ বাদে কোনো গ্রুপে একই কনফেডারেশনের একাধিক দল থাকতে পারবে না। যেহেতু ইউরোপ থেকে ১৬টি দেশ বিশ্বকাপে খেলবে। তাই এই মহাদেশ থেকে সর্বোচ্চ দুটি দল থাকবে চার গ্রুপে।
  • এমনভাবে গ্রুপিং সাজানো হবে যে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা স্পেন ও দুইয়ে থাকা আর্জেন্টিনা ফাইনালের আগে মুখোমুখি হতে পারবে না। ঠিক একই নিয়ম তিন ও চারে থাকা ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের জন্যও প্রযোজ্য।
  • ৩ স্বাগতিক দেশ—মেক্সিকো, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের গ্রুপিং আগেই ঠিক করা। মেক্সিকো ‘এ ১’, কানাডা ‘বি ১’ ও যুক্তরাষ্ট্র ‘ডি ১’ হিসেবে থাকবে। গ্রুপ পর্বে যুক্তরাষ্ট্র ২ ম্যাচ লস অ্যাঞ্জেলেস ও এক ম্যাচ খেলবে সিয়াটলে। মেক্সিকো ২ ম্যাচ আসতেকা ও অন্য ম্যাচটি খেলবে গুয়াদালাহারায়। কানাডার এক ম্যাচ টরন্টো ও অন্য দুই ম্যাচ ভ্যানকুভারে।
  • ৪৮ দলকে চার পটে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি পটে থাকছে ১২টি করে দল। স্বাগতিক দল বাদে অন্য দলগুলোকে র‍্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে রাখা হয়েছে। পট ১-এর দলগুলো যে গ্রুপে পড়বে সেই গ্রুপের এক নম্বর দল হিসেবে বিবেচিত হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে পট ২, পট ৩ ও পট ৪ থেকে নাম তোলা হবে।
  • ৪৮ দলের মধ্যে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে ৪২টি দল। অন্য ৬ দল উঠে আসবে প্লে-অফ থেকে। তাই তাদের রাখা হয়েছে ৪ নম্বর পটে।

প্লে-অফে যারা

আন্তর্মহাদেশীয় প্লে-অফ থেকে দুটি ও ইউরোপীয় প্লে-অফ থেকে উঠে আসবে চার দল। নিউ ক্যালিদোনিয়া-জ্যামাইকা ও বলিভিয়া-সুরিনাম মধ্যকার জয়ী দল আন্তর্মহাদেশীয় ফাইনালে খেলবে যথাক্রমে কঙ্গো ডি আর ও ইরাকের বিপক্ষে। ইউরোপিয়ান প্লে-অফে রয়েছে ইতালি-উত্তর আয়ারল্যান্ড, ওয়েলদ-বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, ইউক্রেন-সুইডেন, পোল্যান্ড-আলবেনিয়া, তুরস্ক-রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া-কসোভো, ডেনমার্ক-উত্তর মেসিডোনিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র ও আয়ারল্যান্ড। আগামী বছরের মার্চে হবে প্লে-অফ।

ড্র ব্যবস্থাপনায় থাকছেন যাঁরা

ড্র পরিচালনা করবেন ইংলিশ কিংবদন্তি ডিফেন্ডার রিও ফার্ডিনান্ড। সহপরিচালক হিসেবে থাকবেন সামান্থা জনসন। পরিচালনায় সহযোগিতা করবেন ন্যাশনাল ফুটবল লিগের সাতবারের সুপার বোলজয়ী টম ব্রেডি, ন্যাশনাল হকি লিগের হল অব ফেমার ওয়েইন গ্রেটস্কি, বেসবলের সাতবারের অল-স্টার অ্যারন জাজ ও এনবিএর চারবারের চ্যাম্পিয়ন শাকিল ও’নিল। লালগালিচার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন এলি ম্যানিং।

পটবিন্যাস

পট ১: কানাডা, মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম ও জার্মানি।

পট ২: ক্রোয়েশিয়া, মরক্কো, কলম্বিয়া, উরুগুয়ে, সুইজারল্যান্ড, জাপান, সেনেগাল, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইকুয়েডর, অস্ট্রিয়া ও অস্ট্রেলিয়া।

পট ৩: নরওয়ে, পানামা, মিসর, আলজেরিয়া, স্কটল্যান্ড, প্যারাগুয়ে, তিউনিসিয়া, আইভরি কোস্ট, উজবেকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

পট ৪: জর্ডান, কেপ ভার্দে, ঘানা, কুরাসাও, হাইতি, নিউজিল্যান্ড, ইউরোপিয়ান প্লে-অফ থেকে ৪ দল ও আন্তর্মহাদেশীয় প্লে-অফ থেকে ২ দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত