Ajker Patrika

আ. লীগের কর্মসূচি ঠেকাতে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে বিভিন্ন সংগঠনের খণ্ড মিছিল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আওয়ামী লীগের ডাকা সমাবেশকে প্রতিহত করতে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে খন্ডখন্ড মিছিল করছে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আওয়ামী লীগের ডাকা সমাবেশকে প্রতিহত করতে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে খন্ডখন্ড মিছিল করছে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আওয়ামী লীগের ডাকা বিক্ষোভ মিছিলকে প্রতিহত করতে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে খণ্ডখণ্ড মিছিল করছে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার সকাল থেকে এসব মিছিল শুরু করে তারা। তবে নগরীতে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আজ রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে ‘গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে’ বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বেলা ৩টায় এ কর্মসূচি পালন করার কথা রয়েছে। অন্যদিকে কর্মসূচিকে ঘিরে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার।

এ দিকে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘সেনাবাহিনী ও পুলিশ কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করবে না, আন্তর্জাতিকভাবে তাঁরা এমনিতেই অনেক চাপে আছে। সবাই নির্ভয়ে আসুন।’

এ দিন কর্মসূচির বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দখলদার, অসাংবিধানিক, অবৈধ ইউনূস সরকারকের হাত থেকে গণতান্ত্রিক, স্বাভাবিক মূল্যবোধ ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে ১০ নভেম্বরের কর্মসূচিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। দুঃশাসন, নিপীড়নে দিন পার করছে মানুষ। গণতন্ত্র ফিরে এলে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে দেশ ও দেশের মানুষ পরিত্রাণ পাবে।’

অন্যদিকে জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের জড়ো হতে দেওয়া হবে না বলে সরকারের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে লেখেন, আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল। বাংলাদেশে কোনো প্রতিবাদ করার অনুমতি দেওয়া হবে না তাদের।

তিনি বলেন, যারা গণহত্যাকারী ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নির্দেশে র‍্যালি, জমায়েত বা মিছিল করার চেষ্টা করবে, তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ণ শক্তি দিয়ে মোকাবিলা করবে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভঙ্গ করার কোনো প্রচেষ্টাকে সহ্য করবে না।

এ বিষয়ে গতকাল শনিবার ডিএমপির গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনার তালেবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আওয়ামী লীগ সমাবেশ বা গণজমায়েত করার জন্য এখন পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনো ধরনের অনুমতি চায়নি। অনুমতির বাইরে যে কোনো দল বেআইনিভাবে সমাবেশ করলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাসিনার রায়ে ১৬ বছরের গুম-খুনের শিকারদের ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হবে: বিএনপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাসিনার রায়ে ১৬ বছরের গুম-খুনের শিকারদের ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হবে: বিএনপি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় ১৬ বছরের গুম-খুনের শিকারদের ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। গতকাল সোমবার রায়ের পর দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এমনটি জানানো হয়।

আলোচনায় এই রায় নিয়ে দলটি একটি লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে। তা আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়, দীর্ঘ ষোলো বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ এর ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। এই দীর্ঘ রক্তাক্ত সংগ্রামে শতসহস্র বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সমাজের সর্বস্তরের অসংখ্য নাগরিক গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মামলা-হামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন ও অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।

অবশেষে ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা-শ্রমিক, নারী-শিশুসহ সহস্রাধিক নাগরিকের আত্মদান, অন্ধত্ব, চিরপঙ্গুত্ব বরণের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী বাকশালী শাসনামলের পতন হয়েছে। সারা বিশ্বের জনমত এবং বাংলাদেশের জনগণের দাবি ও প্রত্যাশা ছিল, যেন পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের মানবতাবিরোধী ও নৃশংস, জঘন্য হত্যাকাণ্ড এবং গণহত্যায় অপরাধের বিচার করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে আজকে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দুই দোসরের বিরুদ্ধে রায় ঘোষিত হয়েছে।

আরও বলা হয়, এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আইনের বিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করা হয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দোসর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের। পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার কারণে প্রাপ্য সাজা কমিয়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি এ ব্যাপারে জনগণকে সদা সর্বদা সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে বিএনপি অন্যান্য মামলায় অভিযুক্তদের সুবিচারের দাবি জানাচ্ছে।

আমরা মনে করি, দীর্ঘ ১৬ বছরের গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার এবং ২০২৪ এর ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার সহস্রাধিক শহীদের আত্মা শান্তি পাবে এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাসিনা পরিক্রমা: প্রভাবশালী রাজনীতিক যেভাবে মৃত্যুদণ্ডের ফেরারি আসামি

রয়টার্স
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত বছর ছাত্র আন্দোলনে প্রাণঘাতী দমন–পীড়নের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে অন্যতম প্রভাবশালী এই ব্যক্তির রাজনৈতিক পথচলাও শুরু হয়েছিল রক্তাক্ত ঘটনার মধ্য দিয়েই।

১৯৭৫ সালে সেনা অভ্যুত্থানে তাঁর বাবা বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং পরিবারের অধিকাংশ সদস্য নিহত হওয়ার পর হঠাৎ করেই তিনি রাজনৈতিকভাবে সামনে আসেন। শুরুর দিকে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেও পরের দীর্ঘ শাসনকাল গণতন্ত্র হরণের জন্য নিন্দিত হয়েছে। বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তার, বাকস্বাধীনতা সংকোচন ও ভিন্নমত দমনের একের পর অভিযোগে তার সেই সংগ্রাম চাপা পড়ে গেছে।

ছাত্র আন্দোলনের মুখে গতবছর আগস্টে পদত্যাগ করে দেশে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ১৫ মাস পর আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। হত্যার দায়ে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডও দিল।

গণতন্ত্রের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে এক কাতারে লড়েছিলেন

ক্ষমতায় চরম সমালোচিত হলেও ১৭ কোটি মানুষের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানো এবং তৈরি পোশাকশিল্পের ব্যাপক সম্প্রসারণের জন্য কৃতিত্ব পেয়ে আসছিলেন হাসিনা। মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল থেকেও তিনি প্রশংসিত হন।

কিন্তু সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা নিয়ে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলনের সূত্র ধরে তাঁর পতন হলো, যে আন্দোলনটি দ্রুতই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক গণবিক্ষোভে রূপ নিয়েছিল। পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মাত্র সাত মাসের মধ্যেই তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন।

ভারতে নির্বাসন থেকে হাসিনা মানবতাবিরোধী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এই রায় ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। তিনি আরও বলেন, ‘সঠিক ও নিরপেক্ষ আদালতে বিচার হলে আমি অভিযোগকারীদের সামনে দাঁড়াতে ভয় পাই না।’ রাষ্ট্রনিযুক্ত তাঁর আইনজীবীও আদালতে অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।

জাতিসংঘের ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সর্বোচ্চ ১,৪০০ মানুষ নিহত হতে পারে এবং সরকারি নির্দেশেই বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা ও দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে—এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে।

১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিষ্ঠিত এবং হাসিনার আমলে পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই এবার তাঁর রাজনৈতিক জীবনে নাটকীয় মোড় এনে দিল। ১৯৭৫ সালের অভ্যুত্থানের সময় ইউরোপে থাকায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি, সেই থেকেই তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু।

১৯৪৭ সালে গোপালগঞ্জে জন্ম নেওয়া হাসিনা শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজিলাতুন্নেছার পাঁচ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে ডিগ্রি নেওয়ার পর তিনি ছাত্রনেতাদের সঙ্গে তাঁর বাবার যোগাযোগের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।

পঁচাত্তরের অভ্যুত্থানের পর ভারতে দীর্ঘদিন নির্বাসনে থেকে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন হাসিনা। ১৯৯০ সালে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে হটাতে কট্টর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়ার সঙ্গে মিলে গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। তবে এ মিলন বেশিদিন টেকেনি। ‘বেগমদের দ্বন্দ্ব’ নামে পরিচিত দুই নেত্রীর তিক্ত লড়াই পরবর্তী কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ রাজনীতিকে বিভক্ত করে দেয়।

১৯৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন হাসিনা। পাঁচ বছর পর বিরতি দিয়ে ২০০৯ সালে ফের ক্ষমতায় ফিরে টানা চার মেয়াদ দেশ চালান।

অভিযোগ, পতন ও নির্বাসন

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী শাসনের অভিযোগ বাড়তে থাকে। বিরোধী নেতা ও কর্মীদের গণগ্রেপ্তার, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা— এসবই তাঁর শাসনের ‘অন্ধকার দিক’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলেছে, দেশটিতে কার্যত একদলীয় শাসন কায়েম হয়। তবে হাসিনার দাবি ছিল—স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থেই শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রয়োজন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে কারাবন্দী হন। তাঁর দল অভিযোগ করে, হাসিনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এসব মামলা করেছেন। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর খালেদা জিয়া মুক্তি পান। উভয় নেত্রী একে অপরকে গণতন্ত্রকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করতেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের একসময়ের দ্রুতগতির অর্থনীতি গতি হারায়। ফলে গত বছর বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ নিতে হয়।

গত বছরের আগস্টে অভ্যুত্থানের মুখে সেনা হেলিকপ্টারে বোনকে নিয়ে দেশ ছাড়ার পর হাসিনার পতন চূড়ান্ত হয়। এরপর উল্লসিত বিক্ষোভকারীরা কোনো বাধা ছাড়াই তাঁর বাসভবন গণভবনে প্রবেশ করে আসবাবপত্র, টেলিভিশনসহ নানা সামগ্রী লুটে নিয়ে যায়।

এরপর থেকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। তিনি হাসিনার সমালোচনার লক্ষ্য ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে এবং হাসিনা সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিতও হয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারির শুরুতে যে জাতীয় নির্বাচনের কথা রয়েছে, তাতে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না—এমন ঘোষণা দিয়েছেন ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিবন্ধন পেল এনসিপি ও বাসদ মার্ক্সবাদী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ১৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চূড়ান্ত নিবন্ধন পেল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্ক্সবাদী)। দল দুটির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জমা না হওয়ায় আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এ সংক্রান্ত গেজেট জারি করেছে ইসি। এর ফলে আসন্ন নির্বাচনে দল দুটি নিজ প্রতীকেই অংশ নিতে পারবে।

এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ বলেন, কোনো দাবি-আপত্তি না থানায় এনসিপি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক (মার্ক্সবাদী) এই দুইটি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। আর বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় দলটির নিবন্ধনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন।

এদিকে পরশু বুধবার ইসির সংলাপে এ দুটি দলকে আমন্ত্রণও জানিয়েছে ইসি।

ইসি সূত্র জানায়, গত ৪ নভেম্বর কমিশন তিন দলকে নিবন্ধন দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি জানানোর সময়সীমা নির্ধারণ করে। ওই সময়ের মধ্যে কোনো দাবি বা আপত্তি জমা হয়নি। এ তিন দলের মধ্যে শুধু বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টির বিরুদ্ধেই ১০ থেকে ১৫টি দাবি-আপত্তি কমিশনে জমা পড়ে। এসব আবেদন কমিশনের পর্যালোচনায় রয়েছে।

এ ছাড়া অনশনে করা তারেক রহমানের দল আমজনতার দলসহ কয়েকটি দলের আবেদন পুনর্বিবেচনার জন্য কমিশনে নথি উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসি সূত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এক মাসের মধ্যে শেখ হাসিনাকে দেশে এনে রায় কার্যকর করতে হবে: নাহিদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রোববার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: স্ক্রিনশট
রোববার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: স্ক্রিনশট

এক মাসের মধ্যে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান।

দলের পক্ষ থেকে রায়ের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন নাহিদ ইসলাম। রায়কে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ভাই আবু সাঈদকে যেদিন হত্যা করা হয়েছিল, ১৬ জুলাই; সেদিন আমরা শপথ নিয়েছিলাম—এই হত্যার বিচার আদায় করব। হাজারো শহীদ ও কয়েক হাজার আহত যোদ্ধার ওপর যে জুলুম করা হয়েছিল, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওপরে যে জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছিল, গুম-খুন মানবাধিকার হরণ, ভোটাধিকার হরণসহ এসব কিছুর বিচারের রায় আজকে পেয়েছি। আমরা এই রায়কে স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের বিচারের ইতিহাসে এটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। তবে আমরা শুধু এই রায়েই সন্তুষ্ট নয়, আমরা সেদিনই সম্পূর্ণভাবে সন্তুষ্ট হব, যেদিন এই রায় কার্যকর করা হবে। আমরা যেদিন আমাদের জীবদ্দশায়, আমাদের চোখের সামনে, আমাদের এই কানে আমরা শুনতে পাব—শেখ হাসিনাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকর করা হয়েছে, সেদিনই আমরা শান্তি পাব। সেদিনই জুলাই বিপ্লবের শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।’

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা জোর দাবি জানাব—এই রায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। অবিলম্বে দিল্লি থেকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত আনতে হবে। সেটার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যথাযথ ভূমিকা ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা শুনতে পেয়েছি, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারত সফর করছেন। আমরা আশা করব, তিনি শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা এখন খুন, গুম ও গণহত্যার দায়ে দণ্ডিত অপরাধী। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম, খুনি, রক্তপিপাসু ও ফ্যাসিস্ট হিসেবে শেখ হাসিনা পরিচিতি লাভ করেছে। ফলে শেখ হাসিনার বিচারের মধ্য দিয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে যত স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্ট শাসক রয়েছে, তার বিচারের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা দাবি জানাচ্ছি—আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই রায়কে দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত এনে এই রায় কার্যকর করতে হবে।’

শুধু শেখ হাসিনা নন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও মৃত্যুদণ্ডের রায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকরের দাবি জানান নাহিদ। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের রায়ের বিষয়ে নাহিদ বলেন, ‘আমরা মনে করি, উনিও একই অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন। হাজারো হত্যাকাণ্ডের পেছনে উনারও দায় রয়েছে। ফলে উনার এই পাঁচ বছরের যে সাজা হয়েছে, এটাতে আমরা সন্তষ্ট নই। আমরা মনে করি, উনি রাজসাক্ষী হলেও উনার সাজা আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল এবং এই সাজা পরবর্তীতে আপিল বিভাগে যাওয়া উচিত, এই সাজা পুনর্বিবেচনার জন্য।’

রায় ঘোষণার পর এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে বলেন, ‘ভারত যতদিন না মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিয়ে রায় কার্যকর করতে সহযোগিতা করবে ততদিন পর্যন্ত ভারতের সাথে বাংলাদেশের এবং বাংলাদেশের জনগণের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আ. লীগকে যে পরামর্শ দিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেভাবে তুলে ধরল বিশ্ব গণমাধ্যম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড, সাবেক আইজিপির ৫ বছরের জেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনে চালের বস্তায় পিস্তল, বুলেট ও ককটেল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত