Ajker Patrika

ধরা হোক হামলাকারীদের

সম্পাদকীয়
ধরা হোক হামলাকারীদের

ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোয় যারা হামলা চালিয়েছিল, তাদের কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার পর তাঁর লাশ পুড়িয়ে দেওয়া এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর। কথাগুলো তিনি বলেছেন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে।

যে জায়গাগুলোয় হামলা হয়েছে, যেখানে একজন মানুষকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে, সে জায়গাগুলোর অসংখ্য ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ইন্টারনেটে যুক্ত হতে পারেন, এমন যে কেউ সেই ফুটেজগুলোতে এই দুর্বৃত্তদের চেহারা স্পষ্ট দেখতে পাবেন। এই হামলাবাজদের শনাক্ত করা মোটেই কঠিন কাজ নয়। ফুটেজ দেখে কাউকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বটে, কিন্তু তাদের শাস্তি নিশ্চিত না হলে হামলার ঘটনাগুলো ঘটতেই থাকবে। মনে রাখতে হবে, ওসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যুর পর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু লোক পরিকল্পিতভাবে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে, যার সঙ্গে হাদি হত্যার কোনো সম্পর্ক নেই।

কোনো সন্দেহ হলেই ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে আঘাত করার রীতি চালু হয়ে গেলে কেউই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। তখন আইনকানুন বলে কিছু থাকবে না। সে সময় উচ্ছৃঙ্খল একদল মানুষের আক্রমণ থেকে জনগণকে বা জনগণের সম্পত্তি রক্ষা করতে হলে পাড়ায় পাড়ায় স্থানীয় জনগণকে তাঁর নিজ সম্পত্তি পাহারা দিতে হবে। সে হবে সামগ্রিকভাবে অন্য এক ব্যবস্থা। মতাদর্শগত পার্থক্য তখন পরিণত হবে সংঘাতে। প্রচলিত রাজনৈতিক আচরণ বদলে গিয়ে তখন একে অন্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রবণতাই চোখে পড়বে। আদালতের বিচারকেরা চাকরি হারাবেন, আইনজীবীদের পেশা বদলাতে হবে, পুলিশ বিভাগে কাজ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে না। নিজের মতের সঙ্গে না মিললে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালানোর সংবাদই হয়ে উঠবে পত্রিকার মূল সংবাদ।

ওসমান হাদির হন্তারককে গ্রেপ্তার করা যেমন জরুরি, তেমনি তাঁর মৃত্যুর পর পরিকল্পিতভাবে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ীদের গ্রেপ্তার করাও জরুরি। সিসি ক্যামেরায় হামলাকারীদের প্রত্যেকের চেহারাই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। গোয়েন্দা বিভাগ সক্রিয় হলে এত দিনে তাদের খোঁজে লেগে পড়তে পারত।

এ কথা সবাই বোঝে, পত্রিকা অফিস, সাংস্কৃতিক সংগঠনে হামলার ঘটনার আন্তর্জাতিক প্রভাব রয়েছে। ময়মনসিংহের ভালুকায় দীপু হত্যাকাণ্ডও কারও নজর এড়ায়নি। এই হামলাগুলোর সুষ্ঠু বিচার না হলে আন্তর্জাতিকভাবে বিপাকে পড়তে পারে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো বার্তা আসা দরকার, যেকোনো আইনবিরোধী আচরণের জন্য সরকারের থাকবে জিরো টলারেন্স। পুলিশ বাহিনীর মনে সেই সাহস ফিরিয়ে আনতে হবে, যে সাহসের বলে আইনের শাসনের প্রতি তারা জনগণকে ফিরিয়ে আনতে পারে। সরকার যদি চায়, তাহলে সেটা সম্ভব। জনগণকেও এই ধরনের হামলার বিরুদ্ধে সচেতন করে তুলতে হবে। মানুষের জানমাল রক্ষা করার কাজটি সরকারের, সেটা যেন সরকার মনে রাখে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ