Ajker Patrika

চামড়া খাত রক্ষা করুন

সম্পাদকীয়
চামড়া খাত রক্ষা করুন

জুতা আবিষ্কার নিয়ে হাজার বছর ধরে মজার সব গল্প, কবিতায় সমৃদ্ধ বিশ্বসাহিত্য। জুতাহীন জীবন থেকে সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এখন জুতা মানুষের জীবনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে গেছে। হলিউডের সুন্দরী অভিনেত্রী থেকে একজন খেটে খাওয়া মানুষও জুতা ছাড়া জীবনযাপন ভাবতেই পারেন না। এখন পৃথিবীতে যত মানুষ, অন্তত তত জোড়া জুতার চাহিদা তৈরি হয়েছে। এই বাড়তি চাহিদার কারণে সারা পৃথিবীতে জুতাসহ চামড়াজাত পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। তাহলে সহজেই বোঝা যাচ্ছে, জামার মতো জুতাও একটি অপরিহার্য পণ্যে পরিণত হয়েছে এবং এই পণ্যের দামও কমছে না, বরং বাড়ছে। আজকের আলোচনার বিষয় অবশ্য জুতা নয়; বরং এর অপরিহার্য কাঁচামাল চামড়া আর এর ব্যবস্থাপনা নিয়ে।

হ্যাঁ, কোরবানির ঈদে যখন বিপুল চামড়ার সরবরাহ তৈরি হয়, তখনই এর ব্যবস্থাপনা ও দাম নিয়ে তৈরি হয় চরম বিশৃঙ্খলা। বিষয়টি এমন যে, চামড়া আর বিশৃঙ্খলা যেন বাংলাদেশের চামড়া খাতের একটি অদৃশ্য পরিণতি! এটা যতটা না স্বাভাবিক চাহিদা জোগানের সমস্যা, তার চেয়ে বেশি কারসাজি। ফলে বিশ্বব্যাপী জুতার দাম বাড়লেও বাংলাদেশে চামড়ার দাম তলানিতে। এ এক বিস্ময়কর বিষয়!

চার বছর ধরে বিপর্যয় চলছে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ কার্যক্রমে। কাঙ্ক্ষিত দাম না থাকা ও সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়েছে শত শত কোটি কোটি টাকার চামড়া। আবার এই সংকটের জন্য সাভারের আমিনবাজারের চামড়াশিল্প নগরীকে যথাযথভাবে তৈরি করতে না পারাকেও দায়ী করা হয়।

এবার আরও কঠিন সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে ২৩ জুলাই থেকে ঘোষিত পরবর্তী লকডাউনের কারণে। ধারণা করা হচ্ছে, এই লকডাউনে চামড়া সংগ্রহ, পরিবহন ও সংরক্ষণের সুযোগ না দিলে এবারও পানির দামে বেচতে হবে জুতা ও চামড়াজাত পণ্য তৈরির অপরিহার্য এই পণ্য। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাকের মতো অপর সম্ভাবনাময় পণ্য হিসেবে বাংলাদেশের চামড়ার কদর থাকলেও শুধু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বিরাট বাজারটি অধরা থেকে যাচ্ছে।

সময় থাকতেই চামড়া খাত রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশে সবই হয়, সময় যাওয়ার পরে। ‘চোর গেলে বুদ্ধি বাড়ে’র মতো কৌশল না নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির আগেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্টেকহোল্ডাররা ইতিমধ্যে দাবি জানিয়েছেন এই খাতকে লকডাউনের আওতামুক্ত রাখতে। দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানো উচিত। সরকার যদিও তদারকির জন্য কমিটি করেছে, তবে শুধু কমিটি নয়, প্রথমত এই খাতের জন্য লকডাউন শিথিল করা, পাশাপাশি কেউ যেন কৃত্রিমভাবে কারসাজি করে দাম ফেলে না দেয়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে। না হলে রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনাময় খাতটি আবারও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। যদি এমনটি ঘটে, তবে তা হবে গলা টিপে একটি শিল্পকে হত্যা করার শামিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

ভারতে নারী সরকারি কর্মকর্তাকে ‘রিল তারকা’ বলায় ৪ কলেজশিক্ষার্থী আটক

এলাকার খবর
Loading...