Ajker Patrika

ভারতে নারী সরকারি কর্মকর্তাকে ‘রিল তারকা’ বলায় ৪ কলেজশিক্ষার্থী আটক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৩
রাজস্থানের বারমের জেলার জেলা কালেক্টর টিনা দাবি। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
রাজস্থানের বারমের জেলার জেলা কালেক্টর টিনা দাবি। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ভারতে এক নারী সরকারি কর্মকর্তাকে ‘রিল তারকা’ বলে মন্তব্য করায় চার কলেজশিক্ষার্থীকে আটকের অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী কর্মকর্তা হলেন রাজস্থানের বারমের জেলার জেলা কালেক্টর টিনা দাবি। ২২ বছর বয়সে প্রথম চেষ্টাতেই ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নজির এই আলোচিত ভারতীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা (আইএএস)।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়,গত শনিবার বারমেরের মহারানা ভূপাল কলেজ (এমবিসি) গার্লস কলেজের বাইরে পরীক্ষার ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাতে জেলা কালেক্টরের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, এক কর্মকর্তা তাঁদের উদ্দেশে বলেন, টিনা দাবি তাঁদের ‘রোল মডেল’। ওই কর্মকর্তার বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করেন বিজেপি–সমর্থিত ছাত্রসংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)–এর সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘কালেক্টর কোনো রোল মডেল নন। তিনি যদি রোল মডেল হতেন, তাহলে শিক্ষার্থীদের দাবি শুনতে এখানে আসতেন। তিনি একজন রিল স্টার, সব জায়গায় গিয়ে রিল বানান। কিন্তু আমাদের সমস্যার দিকে কোনো নজর দেন না।’

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর পুলিশ তাঁদের আটক করে। এর প্রতিবাদে অনেক শিক্ষার্থী থানার সামনে জড়ো হন। আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি জানান তাঁরা।

তবে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা মনোজ কুমার দাবি করেন, এ ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।

তিনি এনডিটিভিকে বলেন, ‘পুলিশ কাউকেই আটক বা গ্রেপ্তার করেনি। কোনো শিক্ষার্থীর সঙ্গে, বিশেষ করে কোনো মেয়ের সঙ্গে, অসদাচরণও করা হয়নি। পরিস্থিতি শান্ত করতে চারজন ছেলেকে থানায় আনা হয়েছিল। পরে তাঁদের চলে যেতে বলা হয়। তবে এরপর শিক্ষার্থীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে কথা বলার পর কিছুক্ষণ পর তারা সরে যায়।’

শিক্ষার্থী আটকের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন জেলা কালেক্টর টিনা দাবিও। লিখিত বিবৃতিতে তিনি এনডিটিভিকে বলেন, ‘কাউকেই গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি। ফি বাড়ানোর বিষয়টি সমাধান হয়ে যাওয়ার পরও কয়েকজন শিক্ষার্থী রাস্তা অবরোধ করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছিল। আমার অধস্তন কর্মকর্তারা কথা বলা ও পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য তাঁদের থানায় নিয়ে যান। প্রায় দুই ঘণ্টা পর তারা চলে যায়। এরপর আর কোনো সমস্যা ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি এখন কেবল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই রয়েছে। সেখানে যা ছড়ানো হচ্ছে, তা শুধু বদনাম করা ও সস্তা প্রচারের চেষ্টা।’

এই বক্তব্যের পর টিনা দাবিকে ঘিরে সমালোচনা তীব্র হয়। রাজ্যসভার সদস্য প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীসহ অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী লেখেন, ‘ভারতে আমলাদের অসহিষ্ণু আচরণের আরেকটি উদাহরণ এটি। দুর্নীতি, ক্ষমতার দম্ভ এবং এখন অসহিষ্ণুতার পরও তাঁরা কঠোর জবাবদিহির বাইরে থেকে যান।’

এদিকে বিজেপি–সমর্থিত ছাত্রসংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) জানিয়েছে, মত প্রকাশের কারণে শিক্ষার্থীদের ‘গ্রেপ্তার’ করা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মূলে আঘাত করে।

এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে এবিভিপি প্রশ্ন তোলে, ‘মত প্রকাশ কবে থেকে অপরাধ হয়ে গেল?’

তারা জানায়, ‘এই দমনমূলক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবিভিপি এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ